এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বাকিসব  মোচ্ছব

  • লাফ 

    Saswati Basu লেখকের গ্রাহক হোন
    বাকিসব | মোচ্ছব | ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ১২৭৫ বার পঠিত
  • পার্কিং লটে গাড়িটা রেখে ছোট্ট কাঠের গেটটা খুলে রেস্তোরাঁর লনে ঢুকেই মনটা খুশি হয়ে ওঠে অনিমেষের। ঠিক এরকমটাই চেয়েছিল সে আজকের রাতের আসরের জন্য। নাতিপ্রশস্ত আয়তাকার লনটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পাতা বড় বড় টেবিল আর চেয়ার। লনটির একপ্রান্তে ক্যামেলিয়ার সারি। বাঁ দিকে রেস্তোরাঁটি। ডানদিকে পাকদণ্ডী। হ্যাঁ। রেস্তোরাঁটি একটা ছোট্ট পাহাড়ের ওপর। অনিমেষদের জন্য নির্দিষ্ট টেবিলটি পাকদণ্ডী ঘেঁষে – যেখান থেকে সারা শহরের জোনাকজ্বলা দৃশ্যপটটি চোখে পড়ছে। অনিমেষ টেবিলে এসে বসে। ঝিঁঝিঁর ঐকতান ভেসে আসছে দূর থেকে। মাঝে মাঝে কোন গাছের ডালে রাতচরা প্রাণীর চলাফেরা। অনেক আগেই পৌঁছে গেছে সে। বসন্তর মাঝামাঝি - ঝিরঝিরে হালকা হাওয়ায় মৃদু ঠাণ্ডা আমেজ। অনিমেষ গরম পানীয়র জন্য বেয়ারাকে ডাকে। বাকিরা এখনো এসে পৌঁছোয় নি। আকাশে ম্রিয়মাণ তারার পাশে ঝকঝকে পূর্ণিমার চাঁদ। সাদা জ্যোৎস্নায় চরাচর ভেসে যাচ্ছে।

    - সরি রে – একটু আটকে গেছিলাম।

    অনিমেষের চমক ভাঙ্গে। নিখিল ততক্ষনে টেবিলে রাখা পানীয় ঢেলে নিচ্ছে গ্লাসে।

    - আজ তো তোর টার্ন। স্টকে সত্যি কিছু আছে মালকড়ি? না ঝেড়ে দিবি?

    গ্লাসে একটা চুমুক দিয়ে ঠোঁটকাটা সদাহাস্যময় আড্ডাবাজ নিখিল খ্যা খ্যা করে হাসে।

    - না ওরকম বলিস না। অনিমেষ আমাদের সাধু সন্ত মানুষ। ও মিথ্যে বলবে না। দেখছিস না কি রকম মহর্ষির ধ্যানের স্থান নির্বাচন করেছে। মৃগাঙ্ক বসতে বসতেই ফুট কাটে।

    - যা বলেছিস। ফোড়ন কাটে স্বর্ণেন্দু। দলের সবাই এসে গেছে ততক্ষনে।

    বেয়ারা স্ন্যাক্সের প্ল্যাটার আর পানীয় নিয়ে আসছে। এই অনিমেষের দলটি এক আশ্চর্য খেয়ালে নেমেছে। সবাই মধ্য বয়সী, জীবনে মোটামুটি স্থিত। এরা ঠিক করেছে যে প্রতি মাসের পূর্ণিমা রাতে একসাথে কোথাও গিয়ে বসবে। বলবে জীবনের কোন ঘটনার কথা – যা এযাবৎ কাউকে সবটা বলা হয় নি – গোপন রাখা হয়েছিল। আজ অনিমেষের পালা।

    ছানার পুর ভরা একখণ্ড ক্যাপসিক্যাম মুখে তোলে অনিমেষ। চোখ সুদূরে স্থির।

    সেদিন আকাশে চাঁদ ছিল না। ছিল ছেঁড়া ছেঁড়া ধূসর মেঘ। জলের বাষ্প সে মেঘে যথেষ্ট ছিল না যাতে অচিরেই ঝরে পড়তে পারে। পূবের হাওয়া বইছিল। একটু ঠাণ্ডা। হয়ত শেষ রাতে নামবে আবার। যা হয় এই বর্ষাকালে। ক্ষণে রোদ ক্ষণে বৃষ্টি। তবে বৃষ্টি সেবার অনেক বেশী। বন্যায় শহরের নিচু জায়গা গুলো ভেসে গেছে। মনে আছে রাত তখন এগারটা হবে। আচমকা ‘মুছে যাওয়া দিনগুলো আমারে যে পিছু ডাকে ......’ গানের সুরে জানলার সামনে এসে দাঁড়িয়েছিলাম। ছোট্ট মফঃস্বল শহরের সেই মাঝরাতে আমাদের বাড়ির সামনের নয়ানজুলির ওপর ক্যালভার্টে সত্যদা শুয়ে চোখে হাত চাপা দিয়ে গান গেয়ে চলেছে। বন্যার জল নয়ানজুলি ছাড়িয়ে রাস্তায় উঠেছে তখন।

    ফ্যাকাশে সেই জ্যোৎস্না রাতে নিঃশব্দ জলপ্লাবিত চরাচরে সত্যদার সেই গানের হৃদয় ভাঙ্গা আর্তি ছোট্ট আমাকেও স্তব্ধবাক করে দিয়েছিল। সেই সত্যদার সঙ্গে শেষ দেখা। আরও একবার দেখেছিলাম সত্যদাকে। তবে সম্পূর্ণ অন্যরকম ভাবে।

    আমাদের পাশের বাড়ির বারান্দায় তখন দেখেছিলাম আর একটি ছায়া মূর্তি। নিঃশব্দে দাঁড়িয়ে। মায়াদি। সবাই বলে মায়াদির জন্যে সত্যদার মায়া আছে। তবে মায়াদির জন্যে কারই বা মায়া নেই? আচ্ছা, মায়াদি কি সুন্দরী? আমি সেটা বুঝি না। তবে মায়াদিকে আমিও ভালবাসি। মায়াদির সারা শরীরে চোখে অদ্ভুত এক স্নেহ ঝরে পড়ে সবসময়। মায়াদি ফর্সা নয়, লম্বা নয় – তার নাক খুব চোখা নয় – কিন্তু মায়াদি যখন কথা বলে তখন কী ভালই যে লাগে। মায়াদিকে কখনো স্কুল বা কলেজে যেতে দেখিনি। দাদার কঠোর শাসন ছিল ওঁর ওপর। অথচ মায়াদিদের বাড়িতে দেখতাম রোজই একটা লোক গাড়ি থেকে নেমে টুক করে ভেতরে ঢুকে যায়। লোকটা যে কখন ফেরে সেটা কোনদিন দেখিনি। মায়াদির বাবার ছোট্ট শাড়ির দোকান। বাড়ির সঙ্গেই লাগোয়া। হয়ত লোকটা শাড়ি কিনতে আসে সাব্যস্ত করেছিলাম।

    মায়াদি আমার দিদির বন্ধু। পাশাপাশি বাড়ি আমাদের। সামান্য একটা উঁচু বেড়া ডিঙ্গিয়ে অনায়াসে যাওয়া যায়। দিদির সাথে মায়াদিদের বাড়িতে মাঝে মাঝেই যাই। তবে দিদি সামনে দিয়ে আর আমি পেছন দিয়ে। ওরা সারাক্ষন গল্প করে যতক্ষণ একসাথে থাকে। আমাকে ঘেঁষতেই দেয় না কাছে। বলে -

    - ‘পেয়ারা খা না গিয়ে’ বা অন্যকিছু।

    ওদের পেয়ারা গাছটা বেড়ার ধারে। অনেক দূরে। সেখানে গেলে দিদি আর মায়াদিকে একদম ছোট্ট দেখায়। সেখানে একটা চৌবাচ্চা আছে। মাটির নিচে। ঢাকা দেওয়া থাকে সব সময়। ঢাকনাটায় খুব ছোট ছোট ফুটো আর মাটির ওপর এমনভাবে থাকে যে বোঝাই যায় না ওখানে একটা চৌবাচ্চা আছে। আসে পাশে রকমারি গাছ – তাদের বড় বড় পাতা। আর এই দিনের বেলাতেও ঝুঝকো অন্ধকার। সেই অন্ধকারে কেমন ভয় ভয় লাগে। মনে হয় কোথা থেকে কে যেন তাকিয়ে আছে। প্রসূনদার কথা মনে হয়। প্রসূনদা গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলছিল ঘরে। মাকে লুকিয়ে আমি দেখতে গেছিলাম প্রসূনদাকে। সে কী ভয়ঙ্কর চোখ তার। ঠেলে বেরিয়ে আসছে। মা কাঁদছিলেন , বলছিলেন ‘আহা রে ! কতো কষ্টই না পেয়েছে ছেলেটা’।

    দিদিরা যখন আমাকে সরিয়ে দেয় ওদের সামনে থেকে তখন আমি প্রায়ই ঢাকা চৌবাচ্চার প্লাস্টিকের দড়ি দিয়ে আটকান ঢাকনাটা খুলে ভেতরে গিয়ে বসি। খুব নিশ্চিন্ত লাগে। একদম ভয় করে না। পকেট থেকে ফল কাটার ভাঁজ করা ছুরিটা বের করে পেয়ারা কাটি।

    একদিন চৌবাচ্চায় বসে আর ভাল লাগছিল না। আমি দৌড়ে দৌড়ে দিদি আর মায়াদি যে ঘরে আড্ডা দিচ্ছিল সে ঘরের জানালায় এসে উঁকি দিই। ওমা দেখি সেই গাড়ি করে আসা লোকটা! তেলতেলে চুল পাট পাট করে আঁচড়ান। এতো বড় মুখ। গালে একটা বড় কালো আঁচিল। সরু গোঁফ। দাঁত গুলো ফাঁক ফাঁক। পান খাচ্ছে। হাসি হাসি মুখে গা এলিয়ে চেয়ারে বসে আছে। মায়াদি সামনের তক্তপোষের কোণে পা ঝুলিয়ে বসে। মুখ নিচু। আঙ্গুলের নখ খুঁটছে। লোকটা হেসে হেসে কী যেন বলছে। আমার কী রকম একটা লাগলো। আমি ছুট্টে বাড়ি এলাম।

    - দিদি দিদি ওই লোকটা কে রে?

    - কোন লোকটা? দিদি ভুরু কোঁচকায়।

    - ওই যে গালে আঁচিল – তেলতেলে চুল – মায়াদিদের বাড়িতে ...

    - তোমার কী দরকার এসবে? দিদি বিরক্ত হয়ে চলে যাবার জন্যে পা বাড়ায়।

    - ও ভাবে কথা বলছিস কেন? কার কথা জিজ্ঞেস করছে পুলু? মা বলেন।

    - হ্যাঁ ওকে এখন লক্ষ্মণ চৌধুরীর কথা বলতে শুরু করি – তুমিও না – বলে দিদি সত্যি সত্যি এবার ঘর ছাড়ে। মা সঙ্গে সঙ্গে চুপ করে গেলেন।

    লক্ষ্মণ চৌধুরী – নামটা মনে রেখে মুশকিল আসান পাড়ার অভ্রদার কাছে গেলাম। সে আমার ভীষণ প্রিয় দাদা, সব প্রশ্নের উত্তর দেয়। আমায় একদম ছোট বলে ‘তোমার এসবে কী দরকার’, এসব বলেই না। অভ্রদা বলল, মায়াদির বাবা, লক্ষ্মণ চৌধুরীর কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন কী কারণে সেটা এখনো শোধ করেন নি। শোধ করতে পারছেন না আর কী। সেই সূত্রে যাতায়াত। তিনি মায়াদিকে বিয়ে করতে চান। যদিও তিনি বিবাহিত। বড় বড় ছেলে মেয়ে আছে। সত্য বড় ছেলে।

    অ্যাঁ ! সত্যদার বাবা লক্ষ্মণ চৌধুরী? আমি অবাক। ওই বিচ্ছিরী লোকটার ছেলে সত্যদা? যে ছোড়দাদের ক্লাবের বেষ্ট ছেলে? যে ক্যালভার্টে শুয়ে রাতে গান করে? কী ভাল গান গায় সত্যদা। তাই মায়াদিও এসে দাঁড়ায় বারান্দায়। দাঁড়াবেই। আমি দেখেছি। সত্যদা নিশ্চয়ই মায়াদির সাথে গল্প করতে চায়। অবশ্য বিয়ে কী করতে চায় ওর বাবা লক্ষ্মণ চৌধুরীর মত? কে জানে? খুব গোলমেলে ব্যাপার। লক্ষ্মণ চৌধুরীর অনেক টাকা। এ শহরে তার বিশাল বাড়ি। আর কতো যে জমি তার শেষ নেই। তার মহাজনী ব্যবসা। লোকে তার কাছ থেকে টাকা ধার করে শোধ করতে না পারলে তার জমি বাড়ি যা থাকে লক্ষ্মণ চৌধুরী গুন্ডা লাগিয়ে দখল করে নেয়। দরকার হলে নাকি সে খুন করায় লোককে। অভ্রদা বলল।

    এই ছোট্ট শহরে জীবনে ছোট একটি ঢেউ উঠলেও তা চারদিকে ছড়িয়ে যায়। অবশ্য ঢেউ সহজে ওঠে না। জীবন এখানে নিস্তরঙ্গ। মানুষ শান্তিপ্রিয়। তবে ঢেউ এবার উঠলো।

    - জানো রাজেনটাকে কে যেন খুন করেছে? গত রাতে ওর ডেডবডি ভেসে উঠেছে হাসপাতালের দিঘিতে। ঘাড় ভাঙ্গা। মুখটা একেবারে থেঁতলে দিয়েছে যাতে কেউ চিনতে না পারে।

    বাবা চেম্বার থেকে ফিরে মা কে বলছেন শুনলাম।

    - সে কী বলছ ! মা ভীষণ চমকে উঠলেন শুনে। কারা মেরেছে? ও কী করেছে? কেন?

    বাবা চুপ করে রইলেন। মাথা নাড়লেন বিষণ্ণ মুখে।

    মার চোখ ছলছলে। রাজেনদা হাসপাতালের চৌকিদার ছিল রাতের বেলার। আমাদের বাড়িতে আসত। মুখ থেঁতলে দিয়েছে? আহারে কী কষ্ট আর ভয়ই না পেয়েছিল রাজেনদা সেই সময়। মার কথাটাই মনে এসে গেলো।

    দুদিন পরে এবার ছোড়দার উত্তেজিত গলা শোনা গেলো দিদির ঘর থেকে।

    - হ্যাঁ একই ভাবে মেরেছে দিনুকেও। লুকিয়ে ও কদিন ধরে যাচ্ছিল দিঘির পাড়ে মাঝরাতে। রাজেনদা কী করে খুন হোল এটা ওকে ভাবাচ্ছিল খুব। ও দেখেছিল হাসপাতালের গুদাম থেকে মাল চুরি করে ট্রাকে তুলছে কতগুলো লোক। দিনু চিনেছিল যে তারা সবাই লক্ষ্মণ চৌধুরীর লোকজন। সে নিজেও ছিল। দিনু বাধা দিতে গেছিলো। চার পাঁচজন একসাথে পেড়ে ফেলেছে ওকে। ঘাড় ভেঙ্গেছে, চুল উপড়েছে, হাত পা দাঁত কিছু আস্ত রাখে নি।

    লক্ষ্মণ চৌধুরী? দিদি চমকে ওঠে।

    - হ্যাঁ। দিনুর সঙ্গে সত্যও ছিল। ওই পালিয়ে এসে থানায় বলেছে, তারপর আমাদের। এবার দেখনা কী হয়। ওকে আমরা ছাড়ব না। কেউ ছাড়বে না। ছোড়দা বেরিয়ে গেলো ঝড়ের বেগে।

    দিনুদা মারা গেছে? ছোড়দা দিনুদা সব একই ক্লাবের মেম্বার। সব কাজ একসাথে করে। বন্যা, ঝড়, আগুন - দিনুদা ছিল সবার আগে। অরণ্যদেবের মত চেহারা। আমাদের প্রিয় সেই দিনুদা নেই? লক্ষ্মণ চৌধুরী খুন করিয়েছে? হাঁ হয়ে গেলাম। অস্থির লাগছিল।

    পরদিন বাবা এসে বললেন

    - সত্য আত্মহত্যা করেছে।

    আমার চুল খাড়া হয়ে গেল। ছোড়দা কিছুক্ষনের জন্য বাড়িতে এসেছিল। বলে গেলো

    - শহরের লোক খেপে গিয়ে লক্ষ্মণ চৌধুরীর বাড়ি লুট করছে, আগুন দিয়েছে। খুঁজে বেড়াচ্ছে লক্ষ্মণ চৌধুরীকে সারা শহরে। বিশেষ করে যে সব বাড়িতে সে যেত। তার খোঁজ নেই। আমি সত্যর কাছে যাচ্ছি।

    কিছুক্ষণ পরেই ছোড়দারা বন্যার জলে ডুবে যাওয়া রাস্তায় ভেলায় করে সত্যদা্কে নিয়ে যাচ্ছে দেখেছিলাম।

    আমি বুঝিনি যে উন্মত্ত জনতা মায়াদিদের বাড়িতেও চলে আসবে। আমি মায়াদিদের বাড়িতে ঢুকেছিলাম পেছন দিয়ে। যা সব সময় করি। চৌবাচ্চায় ঢুকে চুপচাপ একটু বসব বলে। কিন্তু যেন শুনতে পাচ্ছিলাম অনেক লোকের উত্তেজিত কণ্ঠস্বর বাড়ির সামনের দিকে। যেন কোলাহলটা ক্রমে এগিয়ে আসছে এদিকে। স্পষ্ট হচ্ছে। ঢাকনার প্লাস্টিকের দড়িটা টেনে অভ্যাস মত দুটো পা চৌবাচ্চার ভেতরে নামাতেই কিসে যেন একটা পা ঠেকে গেলো। চমকে উঠে পা টেনে নিলাম। ভাল করে নিচু হয়ে তাকাতেই দেখি একটা লোক উবু হয়ে বসে আছে। মুখ তুলে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। ভয়ে তার চোখ সাদা - থর থর করে কাঁপছে সারা শরীর।। কালশিটে পড়া মুখ। কপাল কেটে মুখ রক্তারক্তি , চুল উস্কখুস্ক। গালে একটা কালো বড় আঁচিল।

    - কে এ? এখানে এলো কী করে লোকটা? কে? চিনতে পারছি না তো ! কিন্তু চেনা চেনা যেন ...... আঁচিলটা ...... মুহূর্তেই চিনতে পেরে গেলাম। লক্ষ্মণ চৌধুরী। কিন্তু ওই চোখ? – ওই ভয়ে সাদা হওয়া চোখ – ওতো লক্ষ্মণ চৌধুরীর নয় – ও চোখ তো প্রসূনদার -ফাঁস লাগিয়ে ঝুলতে থাকা প্রসূনদার। ‘আহারে কী কষ্ট’ ! মা যেন বলছেন শুনলাম। আমার হৃদপিণ্ড সহসা থেমে গেলো। বাড়ির সামনের কোলাহল ক্রমশ এগিয়ে আসছে এই পেছনে। কী যেন হয়ে গেলো আমার। এক লহমায় চৌবাচ্চার ঢাকনাটা বন্ধ করে দিলাম। বেড়া ডিঙ্গোতে যাব। হঠাৎ পেছন ফিরে দেখি প্লাস্টিকের দড়িটা স্পষ্ট হয়ে আছে ওপরে। ফিরলাম। পকেটের ধারাল ছুরিটা দিয়ে প্রাণপন শক্তিতে দড়িটা কেটেই জীবনের সবচেয়ে উঁচু লাফটা দিলাম।

    অনিমেষ থামল। একটা রাতজাগা পাখি ডানা ঝাপটে উঠে এক ডাল থেকে অন্য ডালে গিয়ে বসল।

    আবহমান পত্রিকার জুলাই ২০২১ সংখ্যায় প্রকাশিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন