এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  পরিবেশ

  • সেন্ট্রাল ভিস্তা এবং লাক্ষাদ্বীপ - পরিবেশের ওপর জোড়া আক্রমণ

    প্রতিভা সরকার
    আলোচনা | পরিবেশ | ০৫ জুন ২০২১ | ৩৭৩৭ বার পঠিত | রেটিং ৪.৪ (৫ জন)
  • স্বাধীনতার পর যত শাসক দেখেছে এই দেশ, তাদের মধ্যে পরিবেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি সাধিত হয়েছে নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদির দ্বারা। কতরকম ভাবে তছনছ করা যায় স্থিতাবস্থা, আইনকে বাঁকিয়ে চুরিয়ে কিভাবে বনবাসী মানুষকে বঞ্চিত করে কর্পোরেটের হাতে তুলে দেওয়া যায় বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল, খনির অধিকার, উন্নয়নের নামে ধ্বংস করে দেওয়া যায় ভঙ্গুর বাস্তুতন্ত্র, তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ মোদি শাসনের সাত বছর। প্রধানমন্ত্রীর আরো অনেক 'কৃতিত্বে'র কথা এই তালিকায় জুড়ে দেওয়া যায়। গুরুচন্ডা৯-র পাতায় হনন সিরিজে বেশ কয়েকটি পর্বে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেছেন প্রতিভা সরকার। পুনরাবৃত্তি এড়াতে একেবারে ঘাড়ের ওপর এসে পড়েছে যে দুটি পরিবেশ ধ্বংসের নিষ্ঠুর আয়োজন, সে দুটি নিয়েই আজ কথা বলেছেন তিনি - সেন্ট্রাল ভিস্তা এবং লাক্ষাদ্বীপ। হনন সিরিজের লেখাগুলি পড়তে পারেন এই লিংকে

    সাধের সেন্ট্রাল ভিস্তা



    সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রজেক্টে শুধু নতুন করে পার্লামেন্ট ভবন তৈরি হবে এমনই একটা কথা হাওয়ায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। আসলে কিন্তু পার্লামেন্ট ভবনের সঙ্গে তৈরি হবে প্রধানমন্ত্রীর নতুন বাসভবন, কমন সেন্ট্রাল সেক্রেটারিয়েট বিল্ডিং, সেন্ট্রাল কনফারেন্স সেন্টার, স্পেশাল প্রটেকশন গ্রুপের জন্য নতুন ভবন, উপরাষ্ট্রপতির এনক্লেভ। বোঝাই যাচ্ছে রাজধানী জোড়া এক বিরাট কর্মযজ্ঞ। ময় দানবের ইন্দ্রপ্রস্থ নগরী বানাবার মতোই অতি দ্রুত চোখের পলকে রাজপথের দুধারে গড়ে উঠছে বিশাল বিশাল অট্টালিকা। হঠাৎ ভঙ্গুর বাস্তুতন্ত্রের রাজধানীতে এই বিশাল নির্মাণকার্য শুরু করবার কারণ হিসেবে মোদি সরকার যা বলছে তার নির্যাস হলো এই যে গোটা পৃথিবীর ট্যুরিস্টদের কাছে একে এদেশের প্রধান আকর্ষণ করে তোলা হবে। ভারতীয়ত্ব বলতে যা বোঝায়, এ দেশের একমাত্র 'কালচারাল হাবে'র মাধ্যমে তারই সঠিক প্রকাশ হবে এখানকার বিশাল হর্ম্যরাজিতে, অলঙ্করণে, সৌকর্যে।

    ল্যুটিয়েনের দিল্লিতে পরম্পরাঋদ্ধ ভারতীয়ত্বের খোঁজ সম্পূর্ণ না মিললেও, আমরা ভুলে যেতে পারি না লালকেল্লার কথা। পরম্পরার সঠিক প্রতীক হয়ে উঠবার সমস্ত সম্ভাবনা থাকা সত্বেও বিজেপি আমলে কিভাবে ধীর বিষক্রিয়ায় মৃত্যুর মতো করে তার ওপর নামিয়ে আনা হচ্ছে ধ্বংস ও মৃত্যু, একটু চোখকান খোলা রাখলেই তা টের পাওয়া যায়। সেখানে মুঘল আমলের বিরল বস্তু নিয়ে অসাধারণ একটি মিউজিয়াম ছিল, প্রথমেই সংস্কারের নামে সেটিকে উঠিয়ে দিয়ে প্রবেশ পথের বাঁদিকে কেল্লার ভেতরে তৈরি করা হলো বিশাল চারটি অট্টালিকা। তাতে নাকি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস রক্ষিত হবে। আসলে তেমন কোনো প্রদর্শন বস্তুর অভাবে আশ্রয় নেওয়া হলো উচ্চকিত মাইকের মাধ্যমে ধারাবিবরণী, কিছু ছবি এবং তীব্র আলোর ধাঁধানি। সারাদিন অগুনতি মানুষ সেখানে ঢোকে আর বেরোয়, দেখবার কিছু নেই, কেউ দেখতে চায়ও না। কিন্তু হেরিটেজের হেরিটেজ লাল কেল্লার ভেতরে অবলীলায় উঠে গেল চার চৌকো কংক্রিটের কুৎসিত বাড়ি। আর সংস্কারের নামে গোটা লালকেল্লাকে বাঁশের বাঁধনে বেঁধে ফেলা হল। যতদিন পর পরেই দেখতে যাওয়া যাক, সে বাঁধন অক্ষয়। কাজের কাজ কিছুই আর এগোয় না। অথচ পরিবেশের বিন্দুমাত্র ক্ষতি না করে গোটা পৃথিবীর ট্যুরিস্টদের কাছে ভারতীয়ত্বের নির্যাস বলে তুলে ধরা যেতো লালকেল্লাকেই। কিন্তু আজকের শাসকের মুসলমান বিদ্বেষ এবং নিজের জমানাকে অমর করে রাখবার সদম্ভ মানসিকতার জন্য দরকার হয়ে পড়ল আর একটি স্থলের। সংক্ষেপে এই হল সেন্ট্রাল ভিস্তার জন্মকথা।

    সত্যিই এর কাজ চলছে অতি দ্রুত, অনেক বিতর্ক সত্বেও এ বছরের শুরুতেই পরিবেশসংক্রান্ত ছাড়পত্র বার করে নেওয়া হয়েছে। সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে যে ২০২১-এর নভেম্বর মাসে নতুন পার্লামেন্ট ভবন নির্মাণ শেষ করে, ডিসেম্বর মাসেই নতুন বাড়িতে প্রধানমন্ত্রীজর গৃহপ্রবেশের ব্যবস্থা করতে হবে। এই লক্ষ্যে ভয়ংকর অতিমারীর মধ্যে, যখন লকডাউনে দেশের সর্বত্র মানুষের জীবন পর্যুদস্ত, তখনও সেন্ট্রাল ভিস্তার কাজ চলছে অনবরত। এই কর্মকাণ্ডকে অত্যাবশ্যকীয় পরিসেবা হিসেবে দেখাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। ফলে অতিমারি সংক্রান্ত সমস্ত সাবধানতাকে হাওয়ায় উড়িয়ে দিয়ে হাজার হাজার শ্রমিককে এই নির্মাণে ব্যস্ত রাখা হয়েছে।

    বাদবাকি বিল্ডিংগুলো গড়ে ওঠার সময়সীমা ঠিক করা হয়েছে ২০২৪-২৬ এর মধ্যে। মোট খরচ হবে মোটামুটি ২০ হাজার কোটি টাকা। একটি অতিমারী পীড়িত দেশে, যেখানে গত ৪০ বছরে জিডিপি কখনও এইরকম তলানিতে এসে ঠেকেনি, যেখানে বেকারত্ব ও মুদ্রাস্ফীতি আকাশছোঁয়া, যেখানে পি এম কেয়ারস এবং সদৃশ ফান্ডগুলির কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রচুর প্রশ্ন রয়েছে, সেখানে পুরনো হেরিটেজ পার্লামেন্ট ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে পিএমের ঘনিষ্ঠ গুজরাতি আর্কিটেক্ট ফার্মকে দিয়ে এইরকম আলিশান উপনগরী বানাবার যৌক্তিকতা কী সেই প্রশ্ন তোলা যদি অন্যায় হয়, তাহলে শুধু দেখে নিই পরিবেশের ওপর এই নির্মাণের প্রভাব কী।

    কিন্তু সেটাও বোধহয় সম্ভব নয়। পরিবেশের ওপর এই প্রজেক্টের প্রকৃত প্রভাব কী সেটা যাতে কোনোদিনই না জানা যায়, সে কারণে একটি বিরাট চাতুরির আশ্রয় নেওয়া হয়েছে। এটিকে সব মিলিয়ে একটিই প্রজেক্ট হিসেবে নথিপত্রে না দেখিয়ে পিসমিল বা খন্ড খন্ড করে দেখানো হয়েছে। তাতে সহজ হয়েছে পরিবেশের ক্ষতিকে লঘু করে দেখাবার কাজটি। সব মিলিয়ে একটি বিশাল শহরের মতো নির্মাণকে টুকরো টুকরো কয়েকটি বাড়ি বানাবার মতন দেখালে যা হয় আর কী। কিন্তু এ তো সবারই জানা, পৃথিবীর মধ্যে পরিবেশের প্রশ্নে দেখলে সবচেয়ে নিকৃষ্ট রাজধানী হচ্ছে দিল্লি। যেমন এর দূষিত বাতাস, তেমনি তার প্রভাবে ছোট হয়ে আসা দিল্লিবাসীর গড় আয়ু। আর ভূগর্ভস্থ জলভাণ্ডার ক্রমশ শুকিয়ে যাচ্ছে। নেমে যাচ্ছে জলতল। বায়ুদূষণের কারণে রোজ এখানে ৮০টি মৃত্যু হয়। মোট অপরিণত মৃত্যুর (প্রিম্যাচিওর ডেথ) ৪৫% ঘটে এই জন্য। সেই রাজধানীতে গোদের ওপর বিষফোঁড়ার মতো সেন্ট্রাল ভিস্তা নির্মাণ। হাজারে হাজারে বৃক্ষচ্ছেদন। এবং বাস্তুতন্ত্রে বিপুল পরিবর্তন আনয়ন। অক্সিজেন দেওয়া, উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ, বৃষ্টির জল মাটিতে ধরে রাখা, বায়ু এবং শব্দ দূষণ কমানো,বাতাসে ধুলোর পরিমাণ কমানো, গাছের কাজ কি কম? এছাড়াও শহরে কোনোভাবে টিঁকে থাকা বন্যপ্রাণেরও আশ্রয় এই গাছগুলি। প্রজাপতি মৌমাছি, পাখি, কাঠবিড়ালি তার অন্যতম।

    কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরোবার মতো সেন্ট্রাল ভিস্তার কারণে ২০০০-এর বেশি গাছ কাটার প্রতিবাদ করতে গিয়ে বেরিয়ে এসেছে আরেক তথ্য, যাতে দেখা যাচ্ছে দিল্লিতে গাছ কাটা কতো অপরিণামদর্শী হতে পারে। এক আরটিআই-এর উত্তরে জানা গেছে আমাদের রাজধানীতে গত ১০ বছরে কোনো বৃক্ষ সেন্সাস হয়নি। বৃহত্তর দিল্লিতে, যেখানে সেন্ট্রাল ভিস্টা তৈরি হচ্ছে, চিত্রটি আরো ভয়াবহ, গত ২০ বছরে এই সংক্রান্ত সেন্সাস হয়নি। তার মানে এই অঞ্চলে বৃক্ষের ঘনত্ব বৈচিত্র্য এবং অবস্থা সম্বন্ধে কোনো অফিসিয়াল তথ্য ভারত সরকারের হাতে নেই। অথচ ঢালাও বৃক্ষহননের পারমিট আছে! গাছপালা শুদ্ধ ৮০ একরের বেশি জমিকে কংক্রিটের জঙ্গলে পরিণত করে নাগরিকদের জীবন আরও বিষিয়ে তুলবার ব্যবস্থা পাকা! শুখা নগরীতে যত গ্যালন জল লাগতো ২৩ লক্ষ মানুষের প্রয়োজন মেটাতে, এই প্রজেক্টে তার সমপরিমাণ জলের ব্যবহার হবে। অথচ এই বিশ্বের যে ২০টি শহর জলকষ্টের দিক থেকে দুর্বিষহতম, তাদের মধ্যে দিল্লির স্থান দ্বিতীয়।

    খুবই আশ্চর্যের বিষয়, রাষ্ট্র কোনভাবেই পরিবেশ প্রতিবেশের আরো অবনতি হতে পারে এমন বিষয়কে ছাড়পত্র দেবে না, যদি না পক্ষে খুব শক্তিশালী যুক্তি থাকে, এটা এদেশের পরিবেশ আইনের একেবারে মূল কথা। কিন্তু গত জানুয়ারি মাসে সুপ্রিম কোর্ট সেন্টাল ভিস্তার ওপর যে রায় দিয়েছে তাতে এর কোনো ছাপ নেই। যদিও পিটিশনাররা সবিস্তারে জানিয়েছিলেন কিভাবে দিল্লি ডেভেলপমেন্ট এক্টকে কলা দেখিয়ে জমির ব্যবহারে দ্রুত পরিবর্তন করা হয়েছে, কিভাবে হেরিটেজ এবং আর্কিটেকচারাল বিবেচনাকে জলাঞ্জলি দেওয়া হয়েছে এবং পরিবেশের পক্ষে এই প্রজেক্ট কতখানি ক্ষতিকারক সে সম্বন্ধে কোনোরকম বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা না করেই এনভায়রনমেন্টাল ক্লিয়ারেন্স দেওয়া হয়েছে,তবুও সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে কোনো পরিবর্তনে বাধ্য না করেই পুরো প্রজেক্টকে ছাড় দেয়। শেষ পয়েন্টটিতে তাদের মনে হয়েছে বৃক্ষ সংরক্ষণের সরকারি প্রতিশ্রুতিতেই কাজ হবে এবং পরিবেশ দূষণ ঠেকাতে খানকতক স্মগ টাওয়ার বসালেই যথেষ্ট হবে। পরিবেশ ভাবনা এবং দূষণ কমানো যে এক ও অভিন্ন বিষয় নয়, সেটা বোঝার মানুষ ও প্রতিষ্ঠান আমাদের দেশে দেখা যাচ্ছে বিরল।

    শত সমালোচনা দূরে ঠেলে সেন্ট্রাল ভিস্তা দ্রুত বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের সরকার অন্ধ ও বধির। নাহলে পরিবেশের এই সর্বনাশ ঘটিয়ে নিজেদের জেদ ও অহংকারের বশে দেশের রাজধানীকে একটি বিশাল মরুভূমি বানাবার জন্য এতো তাড়াহুড়ো করতো না। অবস্থা যেদিকে এগোচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে দিল্লি একটি সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত নগরীতে পর্যবসিত হতে পারে।

    স্মগ টাওয়ার বায়ুদূষণ কমানোর লক্ষ্যে ব্যবহার করা হয়। ২০ ফিটেরও বেশি এই দৈত্যাকৃতি টাওয়ারগুলিতে একাধিক একজস্ট ফ্যানের দ্বারা বাতাসে ভেসে বেড়ানো ক্ষতিকারক অতি ক্ষুদ্র পদার্থ গুলিকে শোষণ করে নেবার ব্যবস্থা রয়েছে।



    লক্ষ্য এবার লাক্ষাদ্বীপ



    লাক্ষাদ্বীপের অসাধারণ সৌন্দর্য আর ঈর্ষণীয় প্রাকৃতিক পরিবেশ আজ দাঁড়িয়ে আছে খাদের কিনারায়। কৃতিত্ব আবার সেই প্রধানমন্ত্রীজীর, যার ঘনিষ্ঠ বিজেপি রাজনীতিক প্রফুল্ল খোড়া প্যাটেল লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসক নিযুক্ত হয়েই একগুচ্ছ নতুন নিয়মাবলি চাপিয়ে দিয়েছেন দ্বীপবাসীর কাঁধে।

    আরব সাগরে কচ্ছপের পিঠের মতো ইতিউতি ভেসে থাকা লাক্ষাদ্বীপ ৩৬টি ছোট ছোট দ্বীপের সমষ্টি। এর মোট জনসংখ্যা প্রায় ৭০,০০০ এবং তাদের গরিষ্ঠ অংশ ইসলাম ধর্মাবলম্বী। যদিও দূরত্ব মাপলে এই দ্বীপমালা কেরালার খুব কাছে, লাক্ষাদ্বীপবাসী কিন্তু চিরকালই নিজস্ব সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক পরিচয়কে খুব শক্তিশালী এবং অনন্য করে রেখেছে। ইউনিয়ন টেরিটোরি হবার সুবাদে এর শাসক এতোদিন বুরোক্রাসি থেকেই নিযুক্ত হত। মোদিশাসনে তার ব্যত্যয় ঘটলো, এবং মোদিঘনিষ্ঠ প্রফুল্ল খোড়া প্যাটেল দ্বীপমালার শাসনভার পেলো এবং একগুচ্ছ নতুন নিয়ম চালু করবার নির্দেশ দিল। এই স্বনামধন্য রাজনীতিক দাদরা এবং নগর হাভেলির, দামন এবং দিউ-এর শাসনভার আগে থেকেই কুক্ষিগত করে রেখেছিল এবং সেখানে ঠিক এইরকম গোলমালই পাকিয়ে তুলেছে। সর্বত্রই এই প্যাটেল নাকি স্থানীয়দের সর্বনাশ করে নিজের পেটোয়াদের লাভবৃদ্ধির ব্যাপারটি অতি যত্ন সহকারে দেখভাল করে। দেখে নেওয়া যাক, লাক্ষাদ্বীপে জারি হওয়া কী সেই কুখ্যাত নিয়মাবলি।

    এর প্রথমটি হচ্ছে প্রস্তাবিত ভূমিসংস্কারের পরিকল্পনা। এতে শাসকের হাতে জমি অধিগ্রহণের এবং ইচ্ছেমতো স্থানীয়দের পুনর্বাসন দেবার বিপুল ক্ষমতা তুলে দেবার কথা বলা আছে। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী দ্বীপপুঞ্জের সমস্ত খনি এবং খনিজ পদার্থ নিয়ে যথেচ্ছাচার করা যাবে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ( ৯৭%) দ্বীপে গোহত্যা বন্ধ এবং গোমাংস নিষিদ্ধ পণ্য। এদিকে মদ বিক্রির ওপর থেকে তুলে নেওয়া হয়েছে সমস্ত রকম নিষেধাজ্ঞা। গুন্ডা এক্ট বা প্রিভেনশন অব এন্টি-সোশাল একটিভিটিজ (PASA) রেগুলেশন অনুযায়ী এখন থেকে যে কাউকে এক বছরের জন্য আটকে রাখা যাবে। কাকপক্ষীও জানতে পারবে না। অথচ লাক্ষাদ্বীপে অপরাধের হার এই দেশের মধ্যে সবচেয়ে কম। তাহলে কেন এই মশা মারতে কামান দাগা!

    আপতদৃষ্টিতে এই সমস্ত নিয়মাবলি নাকি চালু করা হবে দ্বীপমালার অর্থনৈতিক অবস্থাকে উন্নত করার জন্য এবং মালদ্বীপের মতো ট্যুরিস্টস্পট গড়ে তোলার জন্য। ঠিকই, মালদ্বীপের মতো ট্যুরিস্টদের জন্য ঝাঁ চকচকে ব্যবস্থা লাক্ষাদ্বীপে নেই। কিন্তু এই উন্নয়নের ঢাকের বাদ্যিতে চাপা পড়ছে না প্যাটেল এন্ড কোং-এর অন্য গভীর মতলব। স্থানীয় মানুষের মালিকানাধীন জমি হস্তান্তরের ফিকিরে কর্পোরেটের কাছে বিকিয়ে যাবে ছবির মতো সুন্দর সমুদ্রতীর। কারণ জমি কেড়ে নেবার আইনে স্পষ্ট করে বলা আছে আদত মালিকের রাজি হওয়া বা না হওয়ায় কিছুই যাবে আসবে না। এমনকি যৎসামান্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে কিনা তা নির্ভর করবে কর্তৃপক্ষের মর্জির ওপর।

    এর মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে গেছে। সৈকত ছাড়া করা হয়েছে জেলেসম্প্রদায়কে, এমনকি তাদের নৌকো রাখবার লেগুনগুলিও বেহাত হয়ে গেছে রিসর্ট তৈরির তাড়ায়। তারা এখন কর্মহীন। প্রতিবাদ করলেই PASA তে চালান করবার ভয়। দুর্জনে বলাবলি করছে এই রিসর্টগুলির মালিকরা বেশির ভাগই নাকি গুজরাতি বড় ব্যবসায়ী। সবচেয়ে ভয়ংকর বিপদ নেমে আসছে দ্বীপপুঞ্জগুলোর ভঙ্গুর বাস্তুতন্ত্রে। যে প্রবাল প্রাচীর দ্বীপগুলিকে ঘিরে রেখে রক্ষণের কাজ করছে, সেগুলিকে বংশপরম্পরায় দেখাশুনা করে আসছে দ্বীপমালার আদি অধিবাসীরা। এই প্রাচীর সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের মতো ঝড়-ঝঞ্ঝার হাত থেকে দ্বীপমালাকে রক্ষা করে, যাদের অনেকগুলিরই অবস্থান সমুদ্রতলের নিচে। উত্তাল জলরাশি এবং তীরভূমির মধ্যে বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে প্রবালপ্রাচীর। ফলে প্রবালের বৃদ্ধি ও রক্ষণ দ্বীপবাসীর জীবন ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। এখন সমুদ্রতীরই যদি বানিয়াদের কাছে বেহাত হয়ে যায়, তাহলে কী হবে এই প্রবালপ্রাচীরের? কী হবে যুগ যুগ ধরে বহমান ভুমি সংরক্ষণ, সমুদ্র ব্যবহারের পরম্পরানির্দেশিত যাপনের? আদি জনগোষ্ঠীর জন্য কোনো সম্মান, তাদের নির্দেশিত বহু প্রাচীন পথের কোনো আত্তীকরণের বদলে কাটা ঘায়ে নুনের ছিটের মতো আদেশ জারি করা হয়েছে দুটির বেশি সন্তান থাকলে গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য থাকা যাবে না। যেন বিজেপি দলটির রাজনীতিকরা এই ব্যাপারে পথিকৃৎ। এখানকার বাস্তুতন্ত্রনির্ভর অর্থনীতি, যার মধ্যে প্রধান সামুদ্রিক মৎসশিকার, নারকেল চাষ, শুটকি মাছের কেনাবেচা, তাকে তছনছ করে, পারস্পরিক সহযোগিতা, সহিষ্ণুতা এবং নির্ভরতার সামাজিক বাতাবরণকে ধ্বংস করে বিজেপি দেশের অনেক বড় ক্ষতি করছে।

    প্রতিবাদ হচ্ছে। বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতের বহু মানুষ এবং খ্যাতিমানরাও এই যথেচ্ছাচারের বিরুদ্ধে মুখর হয়েছেন। শুধু মিটিং মিছিল নয়, সামাজিক মাধ্যমেও রাহুল গান্ধি ও অন্যান্যরা তীব্র ক্ষোভ ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু সংস্কারের নামে খামখেয়ালিপনা বন্ধ হবার কোনো লক্ষণ এখনো দেখা যায়নি। বরং এই খামখেয়ালিপনার ফলাফল কী হতে পারে তার প্রমাণ হাতেনাতে দেবার জন্য আসরে নেমেছে অতিমারি। ভারতীয় মূল ভূখণ্ডে কোভিডের আত্মপ্রকাশের পর থেকে এক বছর কেটে গেলেও লাক্ষাদ্বীপে কোনো কোভিডপীড়িত ছিল না। ২০২১-র জানুয়ারি অব্দি লাক্ষাদ্বীপে কোভিডরোগীর সংখ্যা শূন্য। একই বছরের মে মাসে, মানে চার মাসের দূরত্বে কোভিডরোগীর সংখ্যা ৭,২০০। এখন অব্দি ৪,৯৫০ জন আরোগ্য লাভ করেছে। মৃত ২৬, লক্ষণহীন রোগীর সংখ্যা ২২০০। সৌজন্যে মহা প্রতাপাণ্বিত প্রফুল্ল খোড়া প্যাটেল।

    এতদিন এটাই নিয়ম ছিল যে এই দ্বীপে বাইরে থেকে যেইই ঢুকুক না কেন, ট্যুরিস্ট বা ব্যবসায়ী, তাকে ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক কোয়ারান্টাইন বিধি পালন করতে হবে। প্যাটেল ক্ষমতা পেয়েই নিয়ম বদলে দিলেন, হয়ত শুভ লাভের আশায়, হয়তো গূঢ় রাজনৈতিক অভিসন্ধিতে। নতুন নিয়ম হল একটি আর টি পিসি আর নেগেটিভ রিপোর্ট যোগাড় করে পকেটে রাখতে পারলেই কেল্লা ফতে। আমরা ভারতীয়রা ক্যালপল খেয়ে জ্বোরো শরীরে প্লেনে চাপি, যাতে দেহের তাপমাত্রা স্বাভাবিক দেখানো যায়, আর নেগেটিভ রিপোর্ট যোগাড় করা কী এমন কঠিন। ফলে যা হবার তাইই হয়েছে।

    এইভাবে লাক্ষাদ্বীপ দ্বীপপুঞ্জে শারীরিক মানসিক পরিবেশগত যে বিপর্যয় নেমে আসতে চলেছে শাসকের বদান্যতায়, তার বিরুদ্ধে মূল ভূখণ্ডেও প্রতিবাদের ঝড় উঠুক। সহমর্মিতার প্রবাল প্রাচীর উড়িয়ে দিলে আপনি আমি খড়কুটো। থাকবে শুধু মালিক আর চাকর, শাসিত এবং শোষিত।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৫ জুন ২০২১ | ৩৭৩৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ০৫ জুন ২০২১ ১৯:৩১494597
  • প্রতিভা ম্যাম,


    আসাম হোক বা দিল্লি, নিও-লিব্যার‍্যাল উন্নতির রথের চাকায় গুঁড়িয়ে যাওয়া পরিবেশের যন্ত্রণা আপনি যেভাবে নিয়মিত অথক পরিশ্রমে ও সংবেদী কলমে তুলে ধরছেন-- তাকে কুর্ণিশ!

  • aranya | 2601:84:4600:5410:8862:7f21:da44:dd72 | ০৬ জুন ২০২১ ০০:৫৫494613
  • কী ভয়ানক অবস্থা যে তৈরী করেছেন, উনিজি আর তার সাঙ্গোপাঙ্গোরা :-((

  • aranya | 2601:84:4600:5410:8862:7f21:da44:dd72 | ০৬ জুন ২০২১ ০১:১৯494615
  • লাক্ষাদ্বীপের ব্যাপার- টা ভাসা ভাসা শুনেছিলাম। প্রতিভা-কে ধন্যবাদ গুছিয়ে লেখার জন্য। 


    পরিবেশ সর্বদাই দুয়োরাণী :-(

  • অমর মিত্র | 103.242.188.196 | ০৬ জুন ২০২১ ০৪:৫৪494621
  • ধন্যবাদ দুটি লেখার জন্য। পরিত্যক্ত নগরী হবে দিল্লি একদিন। আর লাক্ষা দ্বীপ আমার উপন্যাস ধনপতির চর। প্রায় একই অবস্থা। এখন দ্বীপ নিয়ে পালাতে হবে ভয়াবহ উন্নয়নের হাত থেকে রক্ষা পেতে।   

  • বিপ্লব রহমান | ০৬ জুন ২০২১ ০৫:৩৯494624
  • “শত সমালোচনা দূরে ঠেলে সেন্ট্রাল ভিস্তা দ্রুত বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের সরকার অন্ধ ও বধির। নাহলে পরিবেশের এই সর্বনাশ ঘটিয়ে নিজেদের জেদ ও অহংকারের বশে দেশের রাজধানীকে একটি বিশাল মরুভূমি বানাবার জন্য এতো তাড়াহুড়ো করতো না। অবস্থা যেদিকে এগোচ্ছে, অদূর ভবিষ্যতে দিল্লি একটি সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত নগরীতে পর্যবসিত হতে পারে।”

    এপারেও অনেকটা তাইই। বুড়িগঙ্গা নদী দখল করে সরকার খোদ নিজের আইন ভেঙে প্রকাশ্যে কেরানীগঞ্জে বিশাল কেন্দ্রীয় কারাগার বানালো, রমরমা করে সে কারাগার দিব্যি চলছে। সমস্ত প্রতিবাদ অগ্রহ্য করে সোহরাওয়র্দী উদ্যানের শতাধিক প্রাচীন গাছ কাটা পড়লো, কারণ সেখানে ট্যুরিস্ট স্পট হবে! বুড়িগঙ্গার দুষণ ঠেকাতে ট্যানারি কারখানাগুলো স্থানান্তর করা হলো সাভারে। কিন্তু পরিশোধনাগারের অভাবে এরই মধ্যে দুষিত হয়েছে স্থানীয় বংশী নদী!

    এতোসব উন্নয়নের চাপে ভবিষ্যত প্রজন্ম শ্বাস নিতে পারবে তো? নাকি শৈশবেই মুখে এঁটে দিতে হবে অক্সিজেন মাস্ক?

    প্রতিভাদিকে ধন্যবাদ অনলাইন প্রতিবাদ জারি রাখায়। আরো লেখ।

    আর অফলাইনেও হোক জোর প্রতিবাদ।

    “আমার মাটি আমার মা/ মরুভূমি হবে না!...”

  • শিবাংশু | ০৬ জুন ২০২১ ১১:১৮494636
  • এই সব পরাজয়ের জন্য ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের কীভাবে দায়ী করবে, কাঠঘরায় তুলবে তা তারাই জানে। কিন্তু সারা দেশকে এভাবে বণিকের রাক্ষসী গ্রাসে  তুলে দেবার অপরাধ আমাদের প্রজন্মকে কোনও দিন রেহাই দেবে না। 

  • Santosh Banerjee | ০৬ জুন ২০২১ ১১:৪৯494638
  • শত বর্ষ পরে ।...আমাদের উত্তর সূরীরা জানবে বা ইতিহাসে পড়বে ।...""নরেন্দ্র মোদী নামক এক হিন্দু তালিবান রাজা এই ভবন টি নির্মাণ করেন """, অথবা এও ইতিহাসে থাকবে """তৎকালীন দেশ বাসি এবং স্বাধীনতা প্রিয় সেক্যুলার বুদ্ধিজীবী গণ  ।..কেউ এর বিরুদ্ধে পথে নেমে আসেন নি , এও লেখা থাকবে """বিচার বিভাগ মেরুদণ্ডহীন কীট হয়ে রাজার পদ লেহন করেছিল ।..তার ফল স্বরূপ তাহারা সেবা নিবৃত্ত হইয়া লোভনীয় সব পদে ।।।যথা ""রাজ্য সভার সদস্য "",""manabadhikar কমিটির চেয়ারম্যান ""অথবা ""ভারত রত্ন ""পাইয়াছেন !!!!একটা কথা ইতিহাস বলবে না হয়তো ,""" অতিমারী তে দিল্লী এবং আশে পাশের রাজ্যে হাজার হাজার নিরীহ মানুষ শুধুমাত্র অক্সিজেনের অভাবে মারা গিয়াছেন ""!! বা মৃতদেহ গঙ্গা নদীতে ভাসিয়া আসিতেছিল এবং ইহা দেখিয়া বিদেশের সাংবাদিক গণ (( দেশীয় সাংবাদিক গণের বেশ্যা বৃত্তি শুরু হইয়া গিয়েছিল )) চিৎকার চেঁচামেচি করিয়াছিল এবং তাহাতে তালিবান হিন্দু রাজা ভীষণ রাগান্বিত্ব হন ।..এবং বৈদ্যুতিন মাধ্যম গুলো কে জেল এ পোড়ার হুমকিও দেন ....!!!!

  • | ০৬ জুন ২০২১ ১২:২০494639
  • সেন্ট্রাল ভিস্তা রূপায়ণের আরেকটা  কারণ সম্ভবত এই ছুতোয় ন্যাশনাল আর্কাইভকে অন্যত্র সরানোর নামে সাভারকর ইত্যাদির ইতিহাস মোছা। এই প্ল্যানড এলাকার মধ্যে পড়ছে ন্যাশনাল আর্কাইভ। তো সরানোর ছুতোয় সংরক্ষিত ইতিহাস বদলানোর সম্ভাবনা খুবই বেশী। 

  • মৃগাঙ্ক | 2402:3a80:a42:2ab4:a863:67de:78c5:4119 | ০৬ জুন ২০২১ ১৬:৫০494657
  • বাহ। জরুরি একটি লেখা। 

  • সুকি | 49.207.201.37 | ০৬ জুন ২০২১ ১৬:৫৫494658
  • পৃথিবীর বেশীর ভাগ সেন্সেবল দেশের সরকার যখন পরিবেশ নিয়ে রেগুলেশন টাইট থেকে টাইটতর করছে, নানাবিধ পলিসি দিয়ে কর্পোরেট আগ্রাসন রোখার চেষ্টা করছে, তখন আমাদের মহান ভারত হাঁটছে উল্টোপথে - প্রচন্ড উদার ভাবে আমরা যা ইচ্ছে করে চলেছি ! 

  • অলক বসুচৌধুরী | 2401:4900:3c71:704c:98d0:89d4:5684:95ea | ০৬ জুন ২০২১ ১৮:৪৬494663
  • "দেখিলাম একালের আত্মঘাতী মূঢ় বর্বরতা/ দেখিনু সর্বাঙ্গে তার বিকৃতির কদর্য বিদ্রূপ... "! 


    একথাই আজ আবার মনে হচ্ছে। এমন সর্বাত্মক বিনাশের সামনে এই হতভাগ্য দেশ আর কখনও দাঁড়ায়নি যেমনটা এই নয়া তুঘলকের রাজত্বকালে ঘটছে।

  • অভিভূষণ মজুমদার | 117.227.123.217 | ০৬ জুন ২০২১ ১৯:২৯494667
  • কর্পোরেট দালাল, ফার্মাসিস্টদের একনায়কতন্ত্র কায়েম হলে এমনটাই প্রত্যাশিত নয় কি?

  • অপূর্ব কর | 223.235.127.240 | ০৬ জুন ২০২১ ২২:০৯494679
  • এই সরকারের একটা বৈশিষ্ট্য আছে। সারা দেশ প্রতিবাদে তোলপাড় হলেও, অজস্র লেখালেখি হলেও, অনেক আইন লঙ্ঘন করলেও এরা নিজেদের দুষ্কর্মে অটল থাকে। আইনসহ গণতন্ত্রের চারটি স্তম্ভই যে এদের গোলাম! তাই সবকিছুকেই থোড়াই কেয়ার। মানুষ মরলে মরুক। পরিবেশের অপূরনীয় ক্ষতি হয় হোক। স্বার্থসিদ্ধি হলেই হোল।

  • অর্পন বোস। | 2409:4060:2081:e1ea:1883:61f9:95f2:9fd4 | ০৮ জুন ২০২১ ০৮:৫০494728
  • প্রতিভাদি " গুরুত্ব ও তথ্যের নিরিখে যা উপস্থাপন করলেন তা সত্যিই চমকে দেবার মতন। কতগুলি ভাঙ্গাচোরা মানবধিকার সংগঠন এর কি সত্যিই কোন দাম আছে?  সুপ্রীম কোর্ট কি শুধুই কাঠপুতল হয়ে মোদীর কথাই শুনবে???  


    আমার মতন মূর্খও বোঝে দেশের ভাল, দশের ভাল। অথচ দেশের প্রধানমন্ত্রী নামে একটা গো মুখ্যর কাছে আমাদের নতুন কিছুই চাওয়ার নেই। এবার এনাকে বিদায় করতেই হবে যেন তেন প্রকারেন। 


    জানিনা কি হতে চলেছে। এই লেখাটা কত লোকের কাছে পৌঁছাবে তাও জানিনা। শেয়ার করি যত বেশি করে সম্ভ।।

  • অর্পন বোস। | 2409:4060:2081:e1ea:1883:61f9:95f2:9fd4 | ০৮ জুন ২০২১ ০৮:৫০494729
  • প্রতিভাদি " গুরুত্ব ও তথ্যের নিরিখে যা উপস্থাপন করলেন তা সত্যিই চমকে দেবার মতন। কতগুলি ভাঙ্গাচোরা মানবধিকার সংগঠন এর কি সত্যিই কোন দাম আছে?  সুপ্রীম কোর্ট কি শুধুই কাঠপুতল হয়ে মোদীর কথাই শুনবে???  


    আমার মতন মূর্খও বোঝে দেশের ভাল, দশের ভাল। অথচ দেশের প্রধানমন্ত্রী নামে একটা গো মুখ্যর কাছে আমাদের নতুন কিছুই চাওয়ার নেই। এবার এনাকে বিদায় করতেই হবে যেন তেন প্রকারেন। 


    জানিনা কি হতে চলেছে। এই লেখাটা কত লোকের কাছে পৌঁছাবে তাও জানিনা। শেয়ার করি যত বেশি করে সম্ভ।।

  • Soumitra Sasmal | ০৮ জুন ২০২১ ২১:৩৪494748
  • আপনার এই মহামূল্য বান মতামত সুপ্রীম কোর্টে তো দাখিল করতে পারতেন? 


    আপনি না করলেও কেউ কেউ না কেউ করেছে, ওখানে হারার পরেও সেন্ট্রাল ভিস্তা নিয়ে কথা বলার মানে কি শুধুই রাজনীতি? 

  • শ্রাবনী বসু | 103.118.50.183 | ০৯ জুন ২০২১ ০১:৫২494767
  • অতি গুরুত্বপূর্ণ লেখা. সাজানো আইনে হারজিতের বাতুলতা না করে যারা লেখাটির মর্ম নিজেদের মর্মে অনুভব করেছেন তাঁদেরও নমস্কার জানাচ্ছি. 

  • ডলি ব্যানার্জি | 2409:4064:210:3090::87c:50ad | ১১ জুলাই ২০২১ ১৬:৫৩495725
  • মতলব বাজ আর স্বৈরাচারী শাসনের পরিণতি জন সাধারণের দুর্দশা

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন