এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বই

  • ওয়ারহলিয়ানার পনের মিনিট

    প্রগতি চট্টোপাধ্যায়
    আলোচনা | বই | ২৫ নভেম্বর ২০০৭ | ১০৫৭ বার পঠিত
  • "In future, everybody would be famous for fifteen minutes."
    --- Andy Warhol, 1968.

    উর্দ্ধলিখিত ভবিষ্যবাণীটির প্রবক্তা, পৃথিবীর প্রথম পপ-চিত্রকর অ্যাণ্ডি ওয়ারহলের খ্যাতি পনের মিনিটের অনেক বেশী সময় স্থায়ী হয়েছে।
    ওয়ারহলিয়ানা বা ওয়ারহল-তত্ত্বের ব্যবহার/ আলোচনা/ গবেষণার চলোর্মি তাঁর জীবিতকালে তো বটেই, ১৯৮৭-এ মৃত্যুর কুড়ি বছর পরেও প্রবহমান। বই, সিনেমা, শহুরে জনতার জামাকাপড়, পত্রপত্রিকার নিবন্ধে প্রায়ই দেখা যায় ওয়ারহলকে। যাঁর ছবির আইকনগুলি এতদিন এইভাবে দেখার পর বেশ চেনা আমাদের।

    সম্প্রতি গিল্ডা উইলিয়ামসের একটি ছোটো লেখা চোখে পড়লো।
    ( ‘Warhol stumbled across The Real America in the pantry of a woman who never adapted to the American life’ --- Gilda Williams, Tate Etc, Issue 10/ Summer 2007.)
    যথারীতি, ওয়ারহলিয়ানার খাঁজ-পরত খুলে একটি ভিন্ন কৌণিকতায় গিল্ডা আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। ওয়ারহলের মা, জুলিয়া ওয়ারহলা অনেকটাই এসেছেন এই নিবন্ধে।

    মেরিলিন মনরোর মুখ, ক্যাম্পবেল স্যুপের টিন, হাইন্‌জ্‌ কেচাপের বোতল, কেলগ- সিরিয়ালের বাক্স, এলভিস, জ্যাকি কেনেডি -- প্রভৃতি ষাটের আমেরিকার চেনা চিহ্নলিপি থেকে সত্তরে আঁকা বৃদ্ধ মাও জে দং-এর মুখ, মিক জ্যাগারের পোর্ট্রেট, সবই ওয়ারহল-নির্মিত বিপুল সাম্রাজ্যের চূড়ান্ত প্রতীক। নিখাদ আমেরিকানার সঙ্গে সদ্যোজাত পপ-আর্টকে চার-আনা আট-আনা মিশেলে ওয়ারহল বানাতেন তাঁর ক্যানভাস, যে-গুলির জন্ম হতো তাঁর ম্যানহাটনের স্টুডিয়োয়--যাকে তিনি বলতেন , 'দ্য ফ্যাক্টরি'। মেরিলিনের মুখ থেকে ক্যাম্পবেল টিন, ভিন্ন ভিন্ন মোটিফগুলির একই ক্যানভাসে পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছেন সিল্ক স্ক্রীন পদ্ধতির মাধ্যমে। এই প্রক্রিয়াটি ওয়ারহলের কাছে নিশ্চিত ভাবেই ছিলো একটি সুতীক্ষ্ণ আয়ুধসম -- যাকে বারংবার কাজে লাগিয়েছেন ষাটের আমেরিকার বাজারি-বিপন্নতায় আক্রান্ত সমাজের টীকাকরণে। এ-ছাড়াও ওয়ারহলের ছবি হয়ে উঠেছে যুদ্ধোত্তর বেবি-বুমার আমেরিকার কৈশোরের, স্বপ্ন সফল করার দিকে ক্রমাগত ধেয়ে যাওয়া সরল, সযৌন, সপাট বাস্তব।

    এই 'আমেরিকান স্বপ্নধাবন'এর সূত্রটি অ্যাণ্ডি ওয়ারহলের অভিবাসী পরিবারের প্রেক্ষাপট আলোচনায় বেশ কাজে আসে।
    ১৯২৮ থেকে ১৯৩১ এর মধ্যে যে কোনো এক বছরে ওয়ারহলে জন্ম। পিট্‌স্‌বার্গ শহরে। ওয়ারহলের বাবা ১৯০৯ সাল নাগাদ পূর্বতন চেকোস্লোভাকিয়ার এক প্রত্যন্ত প্রদেশ থেকে আমেরিকায় আসেন। মা জুলিয়া আরও বেশ কিছুদিন পর। পিট্‌স্‌বার্গের পূর্বইউরোপীয় গেটোর মধ্যে বড় হতে থাকা অ্যান্ড্রু ওয়ারহলা, যিনি কালক্রমে হবেন অ্যাণ্ডি ওয়ারহল, ছবি আঁকার দিকে ঝুঁকে পড়েন। ১৯৪২ তে বাবা মারা যাবার পর তীব্র অর্থকষ্টে পড়েন জুলিয়া আর তাঁর ছেলে-মেয়েরা। পরিবারের কিশোর ছেলেটি ততদিনে 'আমেরিকান স্বপ্নের একটি প্রাথমিক খসড়ার দিকে এগিয়ে চলেছেন। কার্নেগি ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে শিল্পবিদ্যা শেষ করে ওয়ারহল চলে আসেন নিউ ইয়র্কে। পঞ্চাশের নিউইয়র্কের ফিফ্‌থ অ্যাভিনিউ- ম্যাডিসন অ্যাভিনিউ'র দোকান-পশরার উতরোলে , বিজ্ঞাপন বানানোর টানটান ছিলেকাটা, উচ্ছল জগতে গ্রাফিক আর্টিস্ট হিসেবে কাজ পেলেন ওয়ারহল।

    প্রথম-পঞ্চাশের দশকের আমেরিকায় তখনও ঠিক আম-জনতার দ্বারা শিল্পের উপভূক্তিকরণের ধারণাটি শিকড় গাড়েনি। পপ-আর্টের আদি ক্যানভাসটি তখনও গ্যালারিতে ঝোলেনি। পপ-পূর্ব জমানায় তখনও আমেরিকায় রমরম করে চলছে অ্যাবস্ট্রাক্ট এক্সপ্রেসনিজম'এর যুগ। জ্যাকসন পোলক ক্যানভাসে রঙের উড্ডীন বিন্দু ছুঁড়ে ছুঁড়ে এঁকে চলেছেন সম্পূর্ণ বিমূর্ত ছবি। পরাবাস্তবে ভালো রকম মজে আছে আমেরিকা।
    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বিষণ্ন, ধূসর ইউরোপের হাত থেকে নিয়ে নেওয়া শিল্প-আখড়ার পড়ে পাওয়া চোদ্দো আনার শিরোপাটি তখন নিউ ইয়র্কের। পপ-আর্টের হাওয়া উঠতে উঠতে শেষ-পঞ্চাশ। রয় লিখটেনস্টাইন শুরু করলেন কমিক স্ট্রিপের কল্পনাবৃত আমেরিকান তারুণ্যের দুর্দান্ত ইমেজগুলির ব্যবহার। কমিক স্ত্রিপের চরিত্রগুলিকে প্রায় ফোটো -রিয়েলিজমের বাস্তবতায় আর্টের তথাকথিত হস্তিদন্তমিনারে বসানোর মজা আর চমক থেকেই জন্ম নিলো পপ-আর্ট। ওয়ারহল এই নববিধানে দীক্ষিত হলেন খুব তাড়াতাড়ি-ই। তাঁর হাতে পপ-আর্ট হয়ে দাঁড়ালো আরও বিস্তৃত, বহুগামী -- আমেরিকার স্ফূরিত , বর্ণাঢ্য, উচ্চকিত বাজারিআনার মোড়ক খুলে নেওয়া ললিপপের মতন।

    ষাটের দশকের গোড়াতেই 'আমেরিকান স্বপ্নের অনেকখানি-ই নিজের আঁটোসাটো লেদার জ্যাকেটের পকেটে পুরে ফেলেছিলেন ওয়ারহল। আমেরিকা ছাড়িয়ে, যুদ্ধের ঘা- শুকিয়ে-আসা ইউরোপের নিও-ইন্টেলেকচ্যুয়ালদের কাছেও ওয়ারহল হলেন বেশ বিখ্যাত। বাজারি পণ্যনাম, সেলিব্রিটি- মুখের বারংবারত্বে এরা তখন খুঁজে পাচ্ছেন একটি সূক্ষ্ম সামাজিক ক্রিটিক।

    গিল্ডা উইলিয়ামসের লেখা থেকে পাওয়া জুলিয়া ওয়ারহলা-র প্রসঙ্গ একটু দেখে নেওয়া যাক। জুলিয়া ওয়ারহলা তাঁর শিল্পী-সন্তানের জীবনের সমস্ত উৎকেন্দ্রিকতা, জাগতিক বিষয়াধিক্যের ডমিনো-প্রভাবের মধ্যে থেকে গেছেন একটি ধ্রুবক হিসেবে। জুলিয়ার জন্ম পূর্ব ইয়োরোপের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে, মিকোভায়। কার্পাথো-রুসিন নামের এক স্লাভিক গোষ্ঠীতে। বিবাহের পরে আমেরিকায় আসা জুলিয়া পিট্‌স্‌বার্গের চেকোস্লোভাক গেটোয় সংসার পাতেন। ইংরেজি শিখলেও উচ্চারণে থেকে যায় ভারী স্লোভাক টান। গান গাইতেন জুলিয়া, আর সেই রুসিন-ফোকের মধুর গীতিগুলি ওয়ারহল পরবর্তীকালে রেকর্ড করে রেখে দেন। ছোটোবেলায় অসুস্থ থাকার সময় মায়ের ভাঙ্গা ইংরেজি উচ্চারণে দেদার শুনতেন সুপারম্যান-ডিক ট্রেসি ইত্যাদি কমিক-হিরোদের কাহিনীগুলি। জুলিয়ার একটি প্যাশন ছিলো -- ইংরেজি অক্ষরের ক্যালিগ্রাফির মকশ করা। এ-ছাড়া ছবিও আঁকতেন জুলিয়া। নানা রকম বেড়ালের ছবির একটি বই দ্বৈতভাবে প্রকাশ করেন জুলিয়া আর তাঁর ছেলে অ্যাণ্ডি। গিল্ডা বলছেন, জুলিয়ার ভাঁড়ারঘর থেকে পরবর্তী কালে ওয়ারহলের ছবির শুদ্ধ আমেরিকান ইমেজগুলির কিছু কিছু উঠে আসে। যেমন, ক্যাম্পবেল স্যুপের টিন। ফেলে দেওয়া স্যুপের টিনগুলিতে অল্প-স্বল্প রঙের ছোপ লাগিয়ে এক ধরণের নাইভ মুনশিয়ানায় সাজিয়ে রাখতেন জুলিয়া। ওয়ারহলের 'পনের মিনিটের খ্যাতি' কিছুটা লম্বা হতে ছেলের কাছে নিউ ইয়র্কে থাকতে চলে আসেন জুলিয়া। তারপর থেকে জুলিয়া ছেলের কাছেই থেকেছেন, শুধু ১৯৭১-এ মৃত্যু'র কিছুদিন আগে পিট্‌স্‌বার্গে চলে যান। পরে, মায়ের মৃত্যুর পর, অসুস্থ মা-কে দূরে পাঠিয়ে দেবার জন্য অন্তর্দাহে বিমর্ষ হয়েছেন ওয়ারহল।

    জুলিয়া-ওয়ারহলের নিউ ইয়র্কের অ্যাপার্টমেন্টে থাকতো অনেকগুলি বেড়াল। হুলোবেড়ালদের প্রত্যেকের নাম রাখা হতো 'স্যাম', আর মেনিবেড়ালদের 'হেস্টার'। একই ইমেজ যেমন পুনরাবৃত্ত হতো ওয়ারহলে ক্যানভাসে, বেড়ালদের থাকতো একই নাম, বংশপরম্পরায়।

    অ্যাণ্ডি ওয়ারহল ষাট-সত্তরের দশকে অজস্র ছবি এঁকেছেন । এ-ছাড়া তিনি বানিয়েছেন ষাটটির মতন ফিল্ম। প্রত্যেকটি-ই পপ-নিসিক্ত , তথাকথিত আভঁ গার্দ। উনিশ শো তেষট্টি তে তৈরি, 'স্লীপ'। এ-ছবিতে ওয়ারহল সেলুলয়েডে তুলে রেখেছেন তাঁর তৎকালীন প্রেমিক জন জর্নো'র পাঁচ ঘন্টার ঘুম। তেষট্টির-ই আরেক ফিল্ম, যেখানে এক ব্যক্তির পঁয়তাল্লিশ মিনিট ধরে একটি মাশরুম খাওয়ার দৃশ্য দেখিয়েছেন ওয়ারহল। বা, আর একটি, যেখানে আট ঘন্টা ধরে এম্পায়ার স্টেট বিল্ডিং-এর দিকে স্থির তাকানো ক্যামেরা। সব ফিল্মগুলির মধ্যেই রয়েছে ওয়ারহলের স্বতোৎসারিত উৎকেন্দ্রিকতা আর ষাটের দশকের নিউ ইয়র্কের আন্ডারগ্রাউন্ড পপ-সংস্কৃতির তীব্র মিশেল। 'ফ্যাক্টরিতে' ছবি বানাতে বানাতে খানিকটা ক্লান্ত হয়ে আসা শিল্পীর একটু নতুন মাধ্যম নিয়ে নাড়াচাড়া। ষাট-সত্তরের প্রগাঢ় ওয়ারহলিয়ানায় অভিষিক্ত আন্ডারগ্রাউন্ড শিল্পীমহল, বন্ধুবৃত্ত আর স্তাবকদের মধ্যেই এই ফিল্মগুলি একধরণের কাল্ট হিসেবে চর্চিত হয়েছে। তবে এখনও মাঝেমাঝেই ওয়ারহল মিউজিয়ম আর আর্কাইভ থেকে গবেষণা/ ডকুমেন্টারি ইত্যাদি'র খাতিরে এদের বার করে আনা হয়।

    ষাটের ওয়ারহলের ধাকা দেওয়া ছবির ধার সত্তরে এসে কিছুটা বহু-ব্যবহৃত হয়ে যায়। মূলত প্রতিকৃতি-নির্ভর ছবির মিছিলে ক্লান্তির শিথিলতা লাগতে শুরু করে। ওয়ারহল নিজেই তখন যথেষ্ট সেলিব্রিটি , হয়তো খানিকটা নিজের সেলিব্রিটিত্ব নিয়েই মগ্ন থাকতে থাকেন এই সময়। সত্তরে এসে যে-প্রতিকৃতিগুলি আঁকেন, তার মধ্যে ঘেঁষাঘেষি করে দাঁড়িয়ে থাকেন মাও থেকে লেনিন, ফ্রয়েড থেকে মিক জ্যাগার। সত্তরের নিহিত প্রশ্নগুলির গূঢ়তা স্বভাবতই ষাটের থেকে আলাদা, অসংলগ্ন ছিলো। যা , ওয়ারহল কিছুটা অবহেলা করেন। আস্তে আস্তে কাল্ট-মহিমা আর সেলিব্রিটি পোর্ট্রেট-সিরিজের মত তিনিও পুনরাবৃত্ত, যন্ত্র-নিয়ন্ত্রিত রঙের ছোপে ঢেকে যেতে থাকেন। এই ক্লান্ত প্রতিকৃতির মিছিলে ওয়ারহলের একটি ছবি ব্যাতিক্রমী। ১৯৭৪-এ আঁকা জুলিয় ওয়ারহলার পোর্ট্রেট। আঙ্গুলে রঙ নিয়ে আঁকা এই ছবিতে যন্ত্র-নির্ভরতা নেই, শুধু জুলিয়ার বয়সাক্রান্ত, সাদামাঠা মুখ দর্শকের দিকে তাকিয়ে থাকে।

    ষাটের দশকেই আরেকটি মুখচ্ছবি সারা পৃথিবীর হাটেবাজারে , কলেজ-ইস্কুলে, কারখানায়, ফরাসি কেতার কাফে থেকে ছাত্রনেতাদের ডায়েরি'র ভাঁজে ছড়িয়ে পড়ে। এর্নেস্তো 'চে' গেভারার মুখ। দূরের দিকে তাকিয়ে থাকা, হালকা দাড়িতে ঢাকা একটি অসামান্য মুখ... কপালের ওপর বেরে-টুপিতে গাঁথা একটি লাল তারা। এই ছবিটির ফোটোগ্রাফটি তোলেন , আলবের্তো কোর্দা, ১৯৬০ তে। আইরিশ গ্রাফিক আর্টিস্ট জিম ফ্রিৎজপ্যাট্রিক ছবিটির গ্রাফিক ফর্ম্যাটটি তৈরি করেন ১৯৬৮ এ । এর পর থেকে শেষ-ষাটের বিপ্লবাধীর বাতাবরণে ছবিটি বিপুল জনপ্রিয় হয় , বিশেষত, ১৯৬৭ এ চে-র হত্যার পর। শোনা যায়, চে'র এই মুখচ্ছবিটি নিয়ে ওয়ারহল একটি ছবি আঁকেন, কিন্তু পরে জানা যায় ছবিটি জাল, অন্য কারোর করা।

    প্রশ্ন হল, ওয়ারহলের 'পনেরো মিনিটের খ্যাতি' কতটা লম্বা হতে পেরেছিলো?
    এ-বিষয়ে ওয়ারহলের ওপর লেখা একটি বইতে লেখক বেনেডিক্ট তাসচেন ( Andy Warhol 1928-1987, Commerce into Art, Benedikt Taschen ) লিখছেন, ওয়ারহলের প্রধান কুশলতা ছিল সমাজের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বর্তমানের প্রতিটি সেকেণ্ডকে কাজে লাগিয়ে, দিনগত 'ট্রিভিয়া'গুলিকে একজন সমাজতাত্ত্বিকের মতন ব্যবহারে। ক্যাম্পবেলের স্যুপের টিনের ছবি, হলিউডের যৌনপ্রতিমার ফোটোগ্রাফ, দৈনিকে প্রকাশিত প্লেনক্র্যাশের সাদা-কালো বিবরণ-- সবকিছুকে নিয়ে একটি বিশ শতকের অস্থির, বাণিজ্যনির্ভর কালের ধারাভাষ্য হল ওয়ারহলের ছবি। ভোগবাদী সমাজের আয়নায় বিম্বিত আইকনগুলি খুলে দেখাতে গিয়ে ওয়ারহল খুব স্বচ্ছ, সরল মোটিফগুলির আশ্রয় নিয়ে ছিলেন।

    ওয়ারহল বেঁচে থাকতেই কাল্টচরিত্রে পরিণত হন। মৃত্যুর কুড়ি বছর পরে, সবাই যেমন ঝাপ্‌সা হতে থাকেন , তিনিও তেমন।
    তবে,একুশ শতকের শিল্পকলায় ওয়ারহল এখনও একবারে মুছে যান নি। গ্যালারিতে গ্যালারিতে নতুন ধরণের ইনস্টলেশনে, নতুন ভাষ্যের ক্যানভাসে, ওয়ারহলের শিল্পভাবনার ছায়া মাঝে মাঝেই ভেসে থাকে-- এমন মনে করেন শিল্পকলাবিদরা।

    আর, 'ব্যাক্তি ওয়ারহল' কে নিয়ে কৌতূহল, সিরিয়াস আলোচনা,সত্য-মিথ্যার গুজব বোধহয় আরও বেশ কিছুকাল স্থায়ী হবে।

    নভেম্বর ২৫, ২০০৭
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৫ নভেম্বর ২০০৭ | ১০৫৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন