এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ইস্পেশাল  উৎসব ২০১২

  • Wong Kar Wai’s In the Mood for Love – একটি রমন্যাস

    রাজু রায়চৌধুরী লেখকের গ্রাহক হোন
    ইস্পেশাল | উৎসব ২০১২ | ২৩ নভেম্বর ২০১২ | ১৩৭২ বার পঠিত
  • হংকং নব্য তরঙ্গ সিনেমার পুরোধা ওং কার ওয়াই । তার ছবি নিয়ে হাজারো আলোচনা হয়েছে সে আলোচনা শুরু করলে তার শেষ হয় না। ওং কার ওয়াই এর সিনেমার কথা বলতে গিয়ে প্রথমেই মনে পড়ছে চলচ্চিত্র সমালোচক ল্যারি গ্রসের একটি বিখ্যাত উক্তির কথা

    "The first time you see Wong Kar-Wai's movies,  you feel you are watching the work of a delicious visual mannerist indifferent to narrative structure……The sheer hedonistic absorption in architectural surfaces, in light sources, in décor of  every possible fabric and material, and the absence of overtly literary seriousness in the plots, make you feel trapped in the world of a super-talented hack. Then you go back and take another look, and the movies change, more drastically  than any I know of. They seem  richer, more intricately organized, more serious………"

    দালি ও সুরিয়্যালিস্ট সময়

    পথ চলতে চলতে হঠাৎ দেখা সেই লাস্যময়ী নারীটির সাথে, যার নাগরটি গোপনে প্রণয়াবদ্ধ হয়েছে আমার দয়িতার সাথে। হ্যাঁ, এরকম তো হতেই পারে, তখন আমরা কি করবো? "কি করি আজ ভেবে না পাই, পথ হারিয়ে কোন বনে যাই"। বাধনহীন যৌনকামনা আমাকে প্রতি মুহূর্তে আচ্ছন্ন করে, কখনো বা ভাবি আমাদের দুজনের এই উভয়সঙ্কট বুঝি জন্ম দেবে এক মৌন অমর ভালবাসার। হয়তো কাল আমাদের ক্ষমা করে দেবে আমাদের মত এমন দুটি ব্যথিত হৃদয়ের গল্প শুনে সবাই হর্ষাবিষ্ট হবে। নিভৃত হৃদয় যুগলে লুকিয়ে থাকা বিষাদসিন্ধুর সন্ধান কারই বা জানা আছে? এমন দুটি ব্যকুল হৃদয়ের দৌর্মনস্য, নিবিড় গোপনীয়তা আবার আলিঙ্গনাবদ্ধ হয়ে নতুন করে প্রেমের ইতিহাস লেখার যে ক্ষণস্থায়ী সুযোগ রচিত হয়েছিল Wong Kar-Wai এর "In the Mood for the Love" ছবিতে, তা দেখে এক কথায় হতচকিত না হয়ে উপায় নেই। একজন অর্কেস্টার নির্দেশক যেমন, Wong Kar-Wai ও ঠিক তেমনভাবেই সেই ব্যথিত যুগলের মনের মণিকোঠা থেকে উদ্ধার করেছেন এক আবেগবিহ্বলতা, এক চেতনাময় সংগীত, যা ধরা পড়েছে ছবিটির পরতে পরতে, প্রত্যেকটি শটে। Andrei Tarkovosky যাকে বলেছেন "Time Pressure"  তার সঠিক ব্যবহারই চলচ্চিত্রটির অনুযাত ইমেজগুলির মধ্যে এনেছে এক অদ্ভুত ছন্দ বা লয়। আবার একই সাথে যেন কোন এক চিত্রকর কালিক অনির্দিষ্টতার রং দিয়ে এক রূপক রচনা করেছেন সমস্ত ছবি জুড়ে। হ্যাঁ, সত্যিই ইমেজগুলো কথা না বলেও কত কথা বলে "যেন আমার না বলা বানীর ঘনযামিনীর মাঝে"। আবেগমথিত হৃদয়ে দীর্ঘায়িত হয় Mr. Chow (Tony Leung) এবং Mrs. Chan (Maggie Cheung) এর অবস্থান। তাদের প্রাত্যহিক সাক্ষাৎ, ক্ষণিক দৃষ্টিপাত, পরস্পরের প্রতি গভীর আসক্তি এক প্রণয়রসের জন্ম দেয়, সময়কেও যা দ্রবীভূত করে। আর এই আকস্মিক সামীপ্য বা সম্ভাবনাময় নৈকট্যই জন্ম দেয় "What if"  কিছু স্মৃতিমেদুর প্রতিবিম্বর যেগুলি Space and Time এ নিলম্বিত। এই চারিত্রিক আত্মনিষ্ঠ প্রতিমূর্তিগুলি দীর্ঘায়িত হয়, গতানুগতিক তুচ্ছতার ঊর্ধ্বে সময়ের এক সংজ্ঞা রচিত হয়। কালিক নিয়মের বাইরে গিয়ে 'filmic image'  গুলো যেন চিরস্মৃতিস্থাপক, সময়ের স্মারক হয়ে ওঠে।

    In the mood for love – রম্য উপাদান

    Wong Kar-Wai একবার বলেছিলেন: "I was born in Shanghai and moved to Hong Kong the year I was five (i.e. around 1963). For me it was a very memorable time. In those days, the housing problems were such that you'd have two or three families living under the same roof, and they'd have to share the kitchen and toilets, even their privacy. I wanted to make a film about those days and I wanted to go back to that period."

    সেই ভাবে দেখলে ওং কার ওয়াই এর 'period film' In the mood for love  কে একটি রম্য নাটক ও বলা চলে। নাটকের দুই কেন্দ্রীয় চরিত্রে একটি বিবাহিত পুরুষ এবং একটি বিবাহিতা নারী, হংকংএর একটি ভাড়াটে বাড়ির সংলগ্ন কামরায় এদের বাস। হঠাৎ করে এরা একদিন আবিষ্কার করে ফেলে এক লড়াকু সত্য, এদের প্রণয়স্থানীয়রা এদের বিশ্বাসভঙ্গ করে নিজেরা অবৈধ গুপ্ত প্রেমের পথ বেছে নিয়েছে। এক অনিশ্চিত আবহে ক্ষান্ত পুরুষ-নারীটি নিজেরা একে অপরের প্রতি অনুরক্ত হয়েও লৌকিক যাথার্থ্য এবং নৈতিক উদ্বেগ এদের চূড়ান্ত অভিসারের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের গূঢ় প্রণয়াবেগ এক অদৃষ্ট স্বজ্ঞা, এক নিলীন অবকাশের গ্রাসে গ্রস্ত। বিখ্যাত চলচ্চিত্র সমালোচক Stephen Teo এর কথায়,

    'As Maggie Cheung's character says 'We will never be like them!'(referring to the off-screen but apparently torrid affair of their respective spouses). The affair between Cheung and Leung assumes an air of mystique touched by intuitions of fate and lost opportunity : is it a Platonic relationship based on mutual consolation and sadness arising out of the betrayal of their spouses? Is it love? Is it desire? Did they sleep together? Such ambiguity stems from the postmodern lining of the picture, which is mere in line with Wong Kar-Wai's reputation as a cool, hip artist of contemporary cinema'.

    তাই "In The Mood For The Love" ছবিটিতে আপনি হয়তো খুঁজে পাবেন কামজ অভিপ্রায় কিংবা নৈতিক সংবরণ কিন্তু তবু যেন আখ্যানের চক্রান্ত মুক্ত হয়ে ছবিটির তার ইংরেজি নামকরণের উপযুক্ততা প্রমাণ করে যথার্থ একটি 'Mood Piece' হয়ে উঠেছে যার সারবত্তা নিষ্ক্রিয় তবুও পরিবর্তনশীল, যেন দ্রুত ধাবমান মুহূর্তের একটুকরো অনুভব।  ওং কার ওয়াই এর দক্ষ চলচ্চিত্র পরিচালনা ছবিটিকে প্রায় একটি "প্রতিচ্ছায়াবাদী কক্ষ নাটিকা" র পর্যায় উন্নীত করে। সমালোচকের ভাষায়,

    "Added to all this is Wong Kar-Wai's dense-looking mise en scene that combines the acting, art direction, cinematography, the colors, wardrobe, the music into an aesthetic if also impressionistic blend of chamber drama and miniature soap opera. Wong's key elements – what older critics might call 'atmosphere'  and 'characterizations' are thus grounded in abstraction rather than plot, and it's hard to think of a recent movie that offers just such abstract ingredients  that are by themselves sufficient reasons to see the picture. But it is precisely this quality of aesthetic abstraction that makes up an ideal dream time of Hong Kong, which is Wong's ode to the territory".

    গলায়ে গলায়ে বাসনার সোনা
    তোমারে আমি করেছি রচনা

    ওং কার ওয়াই এর চলচ্চিত্রের নায়ক নায়িকারা (সে Chunking Express এর Faye-ই হোক কিংবা In The Mood For Love  এর Mr.Chow) যেন শমিত বাসনার আকুতি গেয়ে চলেছে। ওং কার ওয়াই এর ছবিতে পরতে পরতে তাই পরিপ্লুত আবেগের প্রচ্ছন্ন ছাপ, অন্তঃশীলা কামরসের ফল্গুধারায় প্রোটাগনিস্টদের অবগুন্ঠন লক্ষণীয়। এলিজাবেথ রাইট তার গবেষণাপত্রে লিখছেন 

    "It is about what is not said or acted upon on screen, that which the audience is aware but nor shown. There is three dimensional depth that exists behind every character and every door. Loneliness, isolation and yearning consume protagonists Mr. Chow and Mrs. Chan in The Mood For Love.  Their characters'  status as outsiders is constantly reiterated as they often choose to eat alone and avoid human contact and interrogation".

    আমরা দেখতে পাই Mrs. Chan একাকী সিনেমা দেখতে যাচ্ছেন, পর্দার রঙিন পৃথিবীকে উপভোগ করছেন। আবার দুজনেই (Mr. Chow and Mrs. Chan) মার্শাল আর্টের অলীক জগতের বাসিন্দা, এগুলি সবই পলায়ন প্রবৃত্তির সূচক। এক কক্ষ থেকে আর এক কক্ষে যাবার ঘিঞ্জি পথ, দরজা বন্ধ করার শব্দ, সঙ্কীর্ণ সিঁড়িপথ নাগরিক জীবনের আবদ্ধতাভীতির দ্যোতকরূপে বারবার ফিরে আসে। এক শরীর আর এক শরীরের নাগাল পায়, তবুও সেই আনন্তর্য ঘনিষ্ঠ অধিকরণ জুড়ে রয়েছে এই দুই হৃদয়ের বিচ্ছেদ বিরহ, বিয়োগ উদ্ব্যক্তি। সমালোচকেরা কীভাবে দেখছেন বিষয়গুলো, তার দিকে একবার যদি তাকাই তাহলে প্রথমেই উল্লেখ্য  ওং কার ওয়াই কে নিয়ে রচিত একটি থিসিসের বক্তব্য বিষয়। চলচ্চিত্র সমালোচক এলিজাবেথ রাইট তার গবেষণাপত্র 'Film Aesthetic of Wong Kar-Wai' তে লিখেছেন,

    'In the mood for love's protagonists are often seen talking to other characters off-screen, highlighting the separateness between individuals. Consequently, when characters share on-screen space, it is almost claustrophobic because of the heavy presence of repressed longings and unspoken desires. Intersecting paths and missed moments are the only key to the characters' true intent. Dictating the arbitrary nature of romance, Wong creates a visual pastiche of eccentric visual rhymes and coincidences. Ultimately, the desires and yearnings of his characters ensure an ambiguity, continuing a thematic tradition that runs throughout Wong's previous films Chunking Express, Fallen Angels and  Happy Together'.

    সময়ের মূর্ছনা

    ওং কার ওয়াই এর বলিষ্ঠ নির্দেশনা দর্শককে অসাড় করে দেয়, তাই হয়তো পৃথকীকরণ সর্বদা সম্ভবপর নয়। অলীক স্বপ্নসম্ভব সময়ের অংশীদার হয়েও প্রতীয়মান প্রতীকীবাদে আমাদের ইচ্ছাপূরণ হয় না, যেমনটি হয় দালির বিখ্যাত চিত্র "The Persistence  of Memory" তে, যেখানে ট্যাঁক ঘড়ির সময়ও মরুপ্রান্তরে বিগলিত হয়, যেন ক্ষয়িত সময়ের চিহ্ন।  দালির ছবির প্রসঙ্গে এই কারণেই এলাম ওং কার ওয়াই এর ছবিতেও আমরা দেখি অধ্যবসায়ী আলোকচিত্রের প্রয়োগ যেখানে দেওয়াল ঘড়ির দ্যোতনায় ধরা পড়েছে সুরিয়্যালিস্ট শিল্পীর দৃষ্টিতে নিলীন সময়ের গলনের অনুভূতি। তাই In The Mood for Love এ ক্যামেরায় যখন ধরা পড়ে Mrs. Chen এর কর্মক্ষেত্রে দেওয়ালে ঝোলান বিশালাকার Siemens  ঘড়ি এবং পরক্ষণেই দেখতে পাই বিষণ্ণ চিন্তামগ্ন নায়িকার মুখাবয়ব তখন যেন পরিচালক ওং কার ওয়াই এর চরিত্রগত লক্ষণ আরও একবার বোধগম্য হয়।

    In The Mood for Love এ যে রহস্যময় কালিক যাত্রার সম্ভবনা সুপ্ত রয়েছে তা অনেকটাই David Lean  এর ১৯৪৫ এর ছবি "Brief Encounter" এর কথা মনে করিয়ে দেয়। উত্তরাধুনিক এই ইলিপটিক ফিল্মে ধরা পড়েছে দমিত, সংযত মধ্যবিত্ত সমাজের কঙ্কাল চিত্র ওং কার ওয়াই এর জাদুস্পর্শে যা অখণ্ড রূপক সম্বলিত স্পৃহাসূচক এক নির্বিকার উপকথার রূপ নিয়েছে। যেন স্বপ্ন, আবেগ ও ইন্দ্রিয়চেতনার সম্মিলিত উপস্থাপনা। অবচেতন ও কৌমচেতনার কাব্যময় এই প্রকাশকে ব্যাখ্যা করেছেন সমালোচক Dmetri Kakmi

    "In Wong Kar Wai, physical reality, if not altogether obsolete, is malleable clay. It can melt, change color or vanish to allow the players to stand against a universe of varying shades representative of their complete and utter surrender to the act of yearning. Time exists only in so far as when the loved one will call or depart. As for the flesh and blood human beings suffering for our delectation, they become god and goddesses, able to  transmute the base metal of their anguish into the embodiment of a lost time, of what might have been had fate been on their side".

    শেষ হইয়া না হইল শেষ

    ওং কার ওয়াই এর সাহিত্যানুগ সংবেদনশীলতার কথা উল্লেখ না করলেই নয়, নইলে কি আর এমন এক অনন্যসুলভ উপসংহারকে  গর্ভে ধারন করে এতটা পথ চলা যায়!  সেই সমাপ্তি যার মর্মে রয়েছে কাব্য ভাবনা কিন্তু তা অনুবিদ্ধ হয়েছে পুরাকথার মোড়কে বলা শ্রুতি কাহিনীতে। আঙ্কোরভাট মন্দিরের ধ্বংসাবশেষে দাঁড়িয়ে নায়ক, এক বিষাদগ্রস্ত অভিজ্ঞানে ভূষিত সে, গূঢ় গোপনীয় নিভৃত হৃদয়ের কথা সে ফিসফিস করে বলছে একটা ছিদ্র মুখে , তারপর সে গর্তের মুখ আবৃত হয়, কালের নিয়মে লতাপাতা, পঙ্ক তার আবরণ রচনা করে। এমন চূড়ান্ত হৃদয়বিদারক মুহূর্ত উত্তর আধুনিক কালের ছবিতে খুব বেশী দেখেছি বলে মনে পড়ে না। এমন এক অনুদ্ঘাটিত সত্য যা চিরকাল চাপা থাকবে ঐ কোটরের মুখে। এ যেন দর্শকের সাথে পরিচালকের গোপন চুক্তি যার সাথে অনুপ্রবিষ্ট হয়েছে গতানুশোচনা এবং মহাযান বৌদ্ধ মহানুভবতা।

    Mr. Chow এবং Mrs. Chan এর বিচ্ছেদ বিয়োগের বিমর্ষতা প্রদানকারী অন্তিমদৃশ্যে এমন তো কোনও তুরীয় আত্মীয়তার বন্ধন দেখিনা যা চূড়ান্ত ফ্রেমে যে শূন্যস্থান সৃষ্টি হয়েছিল তা পূর্ণ করতে পারে। মনে পড়ে যায় মিকেল্যাঞ্জেলো আন্তনিওনির ছবি 'লেক্লিশে'র কথা, যেখানে দেখতে পাই এক সংযমী তরুণ দম্পতিকে। সেই ছবিটিও শেষ হয়েছিল কিছু নিশ্চল স্থির আলোকচিত্র দিয়ে আর আমরা দেখতে পেয়েছিলাম সেইসব স্থানের কিছু স্মারক চিত্র যেখানে একদিন ঘোরাঘুরি করতে দেখা যেত সেই যুগলকে। দুটি ছবিতেই খুঁজে পাই প্রচ্ছন্নভাবে লুকিয়ে থাকা এক অপ্রতিভ অর্থ যা আমাদের বোধ থেকে বোধির আলোকে নিয়ে যায়, শেখায় ইতিহাস কিভাবে পর্দার ফ্রেমে প্রবিষ্ট হয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে রক্তমাংসের চরিত্রকেও। ভগ্নাবশেষের মধ্যে দিয়ে অনুসন্ধানরত ক্যামেরার চোখ দেখে আমাদের মনে পড়ে অ্যালেন রেনের  'Last Year at Marienbad'  প্রারম্ভে ঐশ্বর্যশালী একটি প্রাসাদের হলঘরে 'বিদেহীর ন্যায়' ক্যামেরার চালন। চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞের ভাষায়,

    "Thus In the Mood for Love we can identify a splicing of the nostalgia film with the aesthetics of European modernist cinema, a technique that disrupts our investment in the narrative's nostalgic temporality. The limit of identification surfaces in our very relationship with the characters, as Mr. Chow recedes from the frame, disappearing  among the ancient ruins".

    একটি কবিতা

    It is a restless moment.
    She has kept her head lowered,
    to give him a chance to come closer.
    But he could not, for lack of courage.
    She turns and walks away.

    That era has passed.
    Nothing that belonged to it exists any more.

    He remembers those vanished years.
    As though looking through a dusty window pane,
    the past is something he could see, but not touch.
    And everything he sees is blurred and indistinct.


    শুধুমাত্র উপরোক্ত উত্তরণটুকু দিয়েই বুঝতে পারি মানুষের পূর্ব স্মৃতির উপর সময়ের আমোঘ প্রভাব। একটি 'এপিটাফ' এর মতো এটাই যেন ছবিটির নিদর্শন চিহ্ন, প্রজ্ঞান স্বরূপ।

    ওং কার ওয়াই উপাখ্যানের কথক নন বরং উত্থাপক। তিনি কিছুই উচ্চারণ করেন না তবুও কত ইঙ্গিত দেন। তার চরিত্রগুলো যেন আরও বলিষ্ঠ হয়ে ওঠে মনুষ্য অনুরক্তি, সততা আর বিশ্বস্ততার ছোঁয়ায়, তাই তো দর্শকেরও অনুমিতির অধিকার জন্মায়। মানবীয় বিশ্বাস আর সততার গভীরতম কোঠরে যে প্রাণশক্তি চালিত হয়, হিমশীতল অনিশ্চয়তার মাঝারে নিছক এক টুকরো প্রতিক্ষেপক চকিত পলকের আঘাতেও তলিয়ে যেতে পারে বিশালাকায় দুর্গের প্রাচীর, তবু তো মন আহুতি দেয় না তাতে। ওং কার ওয়াই  এর ছবিতে তাই বারবার খুঁজে পাই মানবতার নিষ্কর্ষ, খুঁজে পাই এক অবদমিত বিরাগ পূর্ণতার উদ্দেশ্যে। নিত্য অধরা ছলনাময় যে সম্ভবনার বাসনা আমাদের প্রতিনিয়ত কুঁড়ে কুঁড়ে খায় তার প্রতি এক অদ্ভুত ঔদাসিন্য নাকি বিতৃষ্ণা? আর এই নির্দয় যাদুমন্ত্রকে কবচ করে এক অন্যন্য সাধারণ প্রতিভায় দীপ্ত ওং কার ওয়াই আধুনিক সিনেমায় তার স্থানকে করেন দৃঢ়তম, 'Timeless Impressionist' এর মত অতীতের রঙে বর্তমানকে পরিবেশন করেন। বুনুয়েল একবার বলেছিলেন 'পর্দার চোখের সাদা পাতা যথার্থ আলো প্রতিফলিত করলে মহাজগৎ দাউদাউ করে জ্বলে উঠত। তবে আপাতত আমরা নিশ্চিন্তে নিদ্রা যেতে পারি, কেননা সিনেমার দৃষ্টিশক্তিকে বেশ করে ওষুধ খাওয়ানো আর প্রাণশক্তিকে বেড়ি পরানো হয়েছে'। ওং কার ওয়াই এর In The Mood for Love আমাদের কালনিদ্রা থেকে জাগিয়ে তোলে, সিনেমার গলায় যে বেড়ি পরানো হয়েছে তাকে খুলে ফেলার নিবিড় প্রয়াস করে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ইস্পেশাল | ২৩ নভেম্বর ২০১২ | ১৩৭২ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    বকবকস  - Falguni Ghosh
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • sosen | 125.241.59.38 (*) | ২৯ নভেম্বর ২০১২ ০২:০৩89645
  • তোমার ত্রুটি কেন? আমার ও এক অবস্থা। তাছাড়া এত আবেগে উথাল পাতাল , এইট নাইনের এসে লেখার মত রচনা আর যাই হোক-সিনে-সমালোচনা নয়। আগে পড়ে গেছি, বাক্যব্যয় বাহুল্য মনে হয়েছে।
  • ekak | 69.99.230.125 (*) | ২৯ নভেম্বর ২০১২ ০৯:১০89646
  • ইটা কী হইছে ? কোটের পর কোট তার পরে কোট । ইস্কুলের ওয়াল ম্যাগে এর চে বেটার লেখা বেরোয় । গুরু তে কি ঝারায়বাছাই পর্ব উঠে গ্যালো :(
  • i | 147.157.8.253 (*) | ২৯ নভেম্বর ২০১২ ১২:২৮89644
  • অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে পাঠ শুরু করে ধাক্কা খেলাম। প্রথমে একটা দুটো শব্দ তারপর বাক্যবন্ধে ধাক্কা খেতে শুরু করলাম। যেমন-'কিছু স্মৃতিমেদুর প্রতিবিম্বর যেগুলি Space and Time এ নিলম্বিত। এই চারিত্রিক আত্মনিষ্ঠ প্রতিমূর্তিগুলি দীর্ঘায়িত হয়, গতানুগতিক তুচ্ছতার ঊর্ধ্বে সময়ের এক সংজ্ঞা রচিত হয়। ' বা 'মানবীয় বিশ্বাস আর সততার গভীরতম কোঠরে যে প্রাণশক্তি চালিত হয়, হিমশীতল অনিশ্চয়তার মাঝারে নিছক এক টুকরো প্রতিক্ষেপক চকিত পলকের আঘাতেও তলিয়ে যেতে পারে বিশালাকায় দুর্গের প্রাচীর, তবু তো মন আহুতি দেয় না তাতে। '
    -ফলে যা হোলো এই সব বাক্য শব্দ বাক্যবন্ধ আমার আর এ লেখার মাঝে অলঙ্ঘ্য পাঁচিল হয়ে দাঁড়াল- আমারই ত্রুটি মানি।
  • অবাস্তব | 71.95.189.220 (*) | ৩০ নভেম্বর ২০১২ ০৫:২৫89647
  • লেখাটি পরিসংখ্যানগতভাবে ইংরাজি না বাংলায় লেখা বলা শক্ত, শব্দ গুনে বলতে হবে। আর সেই কারণেই সমস্যা। যেমন ঐ নিলম্বিতের বদলে prolongated বললে বা পুরো বাক্যটাই ইংরাজি করে পড়লে আমার বুঝতে সুবিধে হচ্ছে।
  • Raju | 24.39.160.157 (*) | ০১ ডিসেম্বর ২০১২ ০২:০০89649
  • আমার লেখার পাঠকদের ধন্যবাদ। তবে হ্যাঁ বুঝতেই পারছি আপনাদের খুশি করতে পারি নি। আমি কিন্তু লেখাটাকে ঠিক review না করে একটা analysis এর মত লিখতে চেয়েছিলাম, তবে কখনই সম্পূর্ণতা দিতে চাই নি, তাই হয়তো অনেক কিছুই ছোঁয়া হয় নি।
  • sumeru | 127.194.80.100 (*) | ০১ ডিসেম্বর ২০১২ ০৫:৫৫89648
  • হল না।
    মিউজিকের স্ট্রাকচার নিয়েই লেখা জরুরি, তাও মিসিং।
    বাংলা ভাষাও ভাল না।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে মতামত দিন