এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  অন্য যৌনতা

  • এ আমির অন্তরালে .....বীভৎস বিবর

    তিস্তা দাস লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্য যৌনতা | ২৫ অক্টোবর ২০০৯ | ৬৪৯ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • যত টাকা থাকলে সরকারী হাসপাতালে হেনস্থা হবার বিপর্যয় (বোধহয় শব্দটির ভুল প্রয়োগ হলো, কারণ এটাই সত্যি যে হেনস্থা হওয়াটাই সেখানে ঘটনা, "দুর্ঘটনা' নয়) আমাদের ঘাড়ে নিতে হত না, ততটা আর্থিক স্বচ্ছলতা আমাদের ছিলনা। ফলে নিতান্ত বাধ্য হয়েই ভিক্ষের ঝুলি বাড়িয়ে ধর্ণা দেবার মত হাজির হতে হয়েছিলো এস. এস. কে.এম হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগে।

    রাষ্ট্রপ্রণীত "অপমান' সিরিয়ালের প্রথম পর্ব শুরু হয়েছিলো আমার লিঙ্গ পরীক্ষা দিয়ে। যেখানে যৌনাঙ্গের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পর সার্জেন সহ সহকারী চিকিৎসকেরা তীব্র বিরক্তি প্রকাশ করে বলেছিলেন -- ""ধুস, এটা তো পুরোপুরি ছেলে। তাহলে কেন আমরা ঝামেলা নেব!'' আমার মা-বাবা সহ সেদিনের মেডিকেল বোর্ডে আমার তরফ থেকে উপস্থিত থাকা সদস্যদের জানানো হয় -- ""প্র্যাক্টিক্যালি এসব হয়না, এগুলো সব বাজে কথা।'' আমি জানি না ওঁরা ঠিক কতটা ডাক্তার ছিলেন আর কতটা শুধু রক্ষণশীলতার প্রতিনিধি। আমি বুঝে উঠতে পারছিলামনা বিষয়টা! ওঁরা কি সত্যি সত্যিই আমার যৌনাঙ্গের স্থানে শিশ্নের বদলে যোনীর মত কিছু একটা দেখবার আশা করেছিলেন? কিন্তু একজন প্লাস্টিক সার্জেনের তো অন্তত জেন্ডার আইডেন্টিটি ডিস্‌অর্ডার কি এবং এর ফলপ্রসূ সমাধানের উপায় ভালোভাবেই জানা উচিৎ! তাহলে কি জেনে বুঝেও .....!! আমি এক মূহুর্ত দেরি না করে আমার সঙ্গে নিয়ে যাওয়া যাবতীয় মেডিক্যাল লিটারেচার আর তৎকালীন গবেষণার (সেই সময় আমি টেক্সাস ক্রিশ্চান ইউনিভার্সিটির এক বঙ্গ-তনয়ার অধীনে গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করতাম।) কাগজপত্র দেখাই। এটা মোটেই বাজে কথা বা বুজরুকি নয়, এটা বৈজ্ঞানিক ভাবেই সম্ভব ও ঘটেছে খোদ কলকাতাতেও। তবু ভালো এর পর ওঁরা এই বলে আর পাল্টা আক্রমণ করেননি যে ওগুলো বৈজ্ঞানিক তথ্যই ছিলোনা।

    দ্বিতীয় পর্বে প্লাস্টিক সার্জারীর বহির্বিভাগে আমার প্রেস্‌ক্রিপশনে ছাপ্পা মেরে দেওয়া হয় - 'NO BED VACANT' । সপ্তাহ দু তিনেক পরে খোঁজ নিতে বলা হয়। তথাস্তু বলে চলে আসা ছাড়া আমার আর উপায় ছিলো না সেদিন।

    তৃতীয় পর্বটি নিতান্তই প্রহসন মূলক। পাঁচ নম্বরে আমার নাম থাকা সত্ত্বেও আমার ডাক পড়েছিলো সবার শেষে। কারণ আমার কেসটা তো "আলাদা'! ডাক পড়ার পর ভয়ানক ব্যস্ততা নিয়ে কাগজপত্র গোছাতে গোছাতে সার্জেন জানালেন ওয়ার্ড মাস্টার জানিয়েছেন যে আমায় ভর্তি নেওয়া যাবেনা। কারণ পুরুষ না স্ত্রী কোন ওয়ার্ডে আমায় ভর্তি নেওয়া হবে সেটা নিয়ে বেজায় ধন্দে পড়েছেন কর্তৃপক্ষ। আইনের গেরোয় আটকাতে তাঁরা কেউ রাজী নন! অতএব ডাক্তারেরও কিছুই করবার নেই। যদি স্বাস্থ্য দপ্তর লিখিত অনুমতি (এই মর্মে যে, এই অপারেশনে কোন আইনগত বাধা নেই। অর্থাৎ এই অস্ত্রপোচারটি করা হলে সেটি আইনত অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবেনা) দেয় একমাত্র তাহলেই ডাক্তাররা আবার নতুন মেডিকেল বোর্ড বসিয়ে (মানে আবার অপদস্থ করে) পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।

    এরপর চতুর্থ পর্বে আমাদের সামনে জমাট কুয়াশা। যেটা না অন্ধকার, না আলোকিত অবস্থান। আমার ব্যক্তিগত হর্মোন চিকিৎসক জানিয়ে দিয়েছেন একই মাত্রায় হর্মোন তখনো নিতে থাকলে নঞর্থক প্রতিক্রিয়া শুরু হবে শরীরে। অথচ আমাদের করণীয় কিছু নেই। যাঁরা আশ্বাস দিয়েছিলেন -- ""কোনো চিন্তা কোরো না, আমরা তো আছি'', তাঁরা তখন আউট অফ ফ্রেম। পরিত্রাণের সমস্ত দরজাগুলো যখন মুখের ওপরে বন্ধ হয়ে গেছে তখন হঠাৎই একদিন একটা ইনকামিং টেলিফোন কল ... লিঙ্গান্তরকামিতা বিষয়ক গবেষণার সুবাদে যে যে প্লাস্টিক সার্জেনদের সাথে আমায় কথা বলতে হত, তাঁদেরই একজনের। ঘুলঘুলির ফোকর দিয়ে সরু একফালি আলোর মত। উনি জানালেন কম খরচে (যদিও সেটুকু জোগাড় হওয়াটাও আমাদের পক্ষে বেশ চাপের ছিলো) অপারেশনটা করতে রাজী আছেন। খাঁচার গরাদের ফাঁক দিয়ে উত্তাল আকাশে ওড়ার ইশারার মতো সেই টেলিফোন কল।

    পরের ঘটনাটা শুধু আমার ইচ্ছে পূরণের। জন্মসূত্রে পাওয়া যে পুরুষ শরীরটা ছিলো আমার সবচেয়ে অস্বস্তিকর, অপমানের সেই শরীরটি আমার জন্মদিনেই ডাক্তারদের ছুরি-কাঁচির কেরামতিতে (অবশ্য বিজ্ঞানের কল্যাণে) হয়ে ওঠে নারী-শরীর। আমার মনের শরীর। কিন্তু আমি তো শুধু শরীরেই নারী হয়ে উঠতে চাইনি, চেয়েছি এর আইনি স্বীকৃতিও। তাই না চেয়েও আবার অস্ত্র হাতে নেমে পড়তে হয়েছে যুদ্ধের ময়দানে। প্রতিপক্ষ সেই সরকারি ব্যবস্থা। লিঙ্গান্তরের পাঁচ বছর পরেও এখন স্বাস্থ্য দপ্তর আমায় লিঙ্গান্তরের অনুমতি দিয়ে উঠতে না পারায় ভেবেছিলাম অন্তত এবার জন্মপত্রের নবীকরণ টা করে দিক!

    সুপারডুপার হিট এই সরকারি সিরিয়ালের অন্তিম পর্বটি বেশ মজাদার। কামারহাটি মিউনিসিপ্যালিটির "ডিপার্টমেন্ট অফ হেল্‌থ অ্যান্ড বার্থ' এ লিঙ্গান্তরিত হবার সমস্ত প্রমাণপত্র নিয়ে আমি চেয়ারপার্সনের কাছে হাজির হই জন্মপত্রের নবীকরণের জন্য। আবেদনপত্রটি পড়ার পরে বিরক্তিতে (ঘেন্নাতেও হতে পারে) চোখ মুখ কুঁচকে উনি সেটিকে টেবিল থেকে বাঁ হাতে ফেলে দিতে দিতে বলেছিলেন -- ""এসব উল্টোপাল্টা কাজ যে ডাক্তার করেছেন তাকেই বলুন সার্টিফিকেটটাও পাল্টে দিতে! এসব আজেবাজে কাজ আমাদের সরকার ( মানে বামফ্রন্ট সরকার) করেনা।'' ""ঠিক আছে, এরপর আপনার সাথে আবার হাইকোর্টে দেখা হবে।'' ব'লে মেঝেতে পড়ে থাকা আবেদনপত্রটি নিয়ে আমি ফিরে আসি। কলকাতার উচ্চ আদালতে মামলাটি আজও পর্যন্ত অমীমাংসিতই পড়ে আছে। যেখানে বিশ্বের বহু রাষ্ট্রে লিঙ্গান্তরের ও লিঙ্গান্তরিত ব্যক্তিদের সবরকম সুরক্ষার (ব্রিটেনের মত রক্ষণশীল রাষ্ট্রেও) স্বপক্ষে আইন প্রণীত হয়েছে, সেখানে এই সর্বমতের মিলনতীর্থ ভারতবর্ষের আইনী পরিকাঠামো আজও বিষয়টির প্রতি উন্নাসিক! এ এক বীভৎস বিবরে আমার বসবাস যেখানে নির্বাচনী পরিচয়পত্র, রেশন কার্ড, প্যান কার্ড আর পাসপোর্টে আইনত আমার নারীত্ব স্বীকৃত, অথচ জন্মপত্র ও আকাদেমিক সার্টিফিকেটগুলোয় আজও আমি লিপিবদ্ধ পুরুষ হিসেবে।

    আসলে এটাই সত্যি যে অসভ্যতার, নিষ্ঠুরতার কোনো শ্রেণী বিভাজন হয় না, হয় না লিঙ্গ-বিভাজন বা কোনো আর্থসামাজিক ভেদ রেখাও। গত বছর "বিশ্ব নারী দিবস' উপলক্ষে একটি জনপ্রিয় বাংলা পত্রিকা মহিলা নাট্যকর্মী হিসেবে আমার সাক্ষাৎকার নেয় এবং তাদের প্রচ্ছদকাহিনীর মডেল হিসেবে আমার ছবি তুলে নিয়ে যায়। তারা কোনোটিই শেষ পর্যন্ত প্রকাশ করেনি। কারণটা অন্য কিছু নয়, ঠিক আগের দিন (বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, যিনি ঐ পত্রিকার চিত্র সাংবাদিক) কর্তৃপক্ষ আমার লিঙ্গান্তরের ঘটনাটি জানতে পারেন। সম্পাদকমন্ডলীর বিচারে আমি "আসল নারী' নই! সেই গর্হিত অপরাধে আমার স্থান মেলেনি পত্রিকায়। সেই অমার্জনীয় অপরাধেই রূপান্তরের বছর তিনেক পর জনবহুল এক ডগমগে বিকেলে আমায় শারীরিক ভাবে তীব্র লাঞ্ছিত হতে হয় প্রতিবেশী এক যুবকের হাতে। আজও সে বীরদর্পে ঘুরে বেড়ায় সমাজে। কেউ তাকে এখনো বাজেয়াপ্ত করেনি। এখনও আমার কাছে "অর্ধেক আকাশ'ও উন্মুক্ত নয়, যেখানে আমি অবলীলায় উড়ান দিতে পারি। এখনও চারপাশের অনেক দুপেয়ে জীবদের কাছে আমি "আসলে মেয়ে সেজে ঘুরে বেড়ানো ছেলে' কিংবা "পুংলিঙ্গ কাটিয়ে আসা হিজড়া'। সংবাদ প্রতিদিন এর "রোববার' (৩০ মার্চ, ২০০৮) পত্রিকায় প্রিয় লেখিকা নবনীতা দি (দেবসেন) আমার প্রসঙ্গে লিখেছিলেন -- ""সাফল্যের ঔজ্জ্বল্য তার সর্বাঙ্গে ঝলমল করছে। এখন সুখী তিস্তার কাছে সারা পৃথিবী উন্মুক্ত''।

    দিদি, আমি আজও কিছু শ্রেণীর কাছে অসফল। আজও তাঁরা ইতরের মত বলেন -- ""বাস্‌সা তো অইব না, তাইলে আবার কিসের মেয়ে!!'' এখনও কেউ কেউ ভব্যতার ধার না ধরে জিজ্ঞেস করেন -- ""তোমার ওখান দিয়ে ছেলেদের লিঙ্গটা পুরো ঢুকবে?'' কোনো স্ত্রীলিঙ্গ বিশিষ্ট জীব যখন পুরুষতন্ত্রের নিখাদ প্রতিনিধির ভূমিকায় এহেন ইতর প্রশ্নের মুখোমুখি হয় তখন তা পুরুষতন্ত্রের চাইতেও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। এঁরা সেই শ্রেণীর জীব যাদের আমায় নিয়ে যাবতীয় নোংরা আলোচনার শেষ নেই, অথচ এঁদেরকেই যখন আমি প্রস্তাব দিয়েছিলাম লিঙ্গান্তর বিষয়ক বৈজ্ঞানিক তথ্য জানবার বা লিঙ্গান্তরের কিছু ছবি দেখাবার তখন এঁরা -- ""এ রাম, ছি:'' ব'লে আমার কাছ থেকে ছিটকে সরে গিয়েছিলেন। এটাই এঁদের সামাজিকতার, সভ্যতার চরিত্র।

    এ কি শুধুই অজ্ঞজনের ধৃষ্টতা? একদমই নয়। কিছু তথাকথিত বিজ্ঞজনও কম যান না নিষ্ঠুরতায়। একজন জনপ্রিয় নকশাল নেতা এ প্রসঙ্গে বলেন (আমার রূপান্তরের কথা না জেনেই) -- যে দেশে অর্ধেক মানুষ খেতে পায় না সেখানে ঐসব বাজে কাজে অর্থ অপচয় করাটাকে উৎসাহিত করতে আমার লজ্জা করেনা? আমার তো জমি হস্তান্তর নিয়ে আন্দোলনে নামা উচিৎ ছিলো, সেখানে আমি কিনা এইসব .... ছি:!!! নিজেকে সংযত রাখতে না পেরে উনি আরো বলতে থাকেন -- ""আমি প্যাটের চিন্তা করি, চ্যাটের (যৌনতার) চিন্তা করিনা, বুঝলা? তুমি ভদ্র ঘরের মাইয়া বইলা আর বেশি কিছু বললাম না।'' নেহাত গবেষণার খাতিরেই সেই সময় আমায় চুপ থাকতে হয়েছিলো। কারণ আপামর জনতার প্রতিক্রিয়া লিপিবদ্ধ করাই আমার ঐদিনের কাজ ছিলো। (সত্যিই তো, যে দেশে মানুষ খেতে পায় না সেখানে টাকা খরচ করে লিঙ্গান্তরিত হওয়াটা অপচয়, কিন্তু কোটি কোটি টাকা খরচ করে মারাদোনাকে স্রেফ মনোরঞ্জনের জন্য ভারতবর্ষে বেড়াতে নিয়ে আসার মধ্যে এতটুকুও অপচয় (অর্থ এবং মনন এর) নেই! কি রঙ্গ!! )

    ঐ বর্ষীয়ান নকশাল নেতাকে, যিনি তাঁর একমাত্র পুত্র সন্তানটিকে ইংরেজী স্কুল-কলেজে রীতিমতো সুপারিশ করে পড়িয়েছেন, ভাষা শহীদ দিবসের আন্দোলনের পুরোভাগে অনেকেই গলা মেলাতে শুনেছেন। তাঁর গুণের এখানেই শেষ নয়। তিনি একবার নন্দন চত্বরে "পেপসি কোকাকোলা হঠাও' আন্দোলনে সামিল থেকেও ক'দিন পরে সেখানেই বসে কাগজের গ্লাসে কোকাকোলা পান করেছিলেন মহানন্দে। বড় মধুর সে দৃশ্য!

    এক প্রখ্যাত নৃত্যশিল্পী ও অভিনেত্রীর (যাকে কিনা তার সকল ছাত্র-ছাত্রী "মম' বলে মনে করেন) ব্যখ্যানুসারে -- এটা খোদার ওপর খোদকারি। এটাকে আর কেউ সমর্থন করলেও তিনি কোনদিনও করবেন না। কারণ বিষয়টা নিতান্তই অ-প্রাকৃতিক।

    আর একজন ভাস্কর এ ব্যপারে আগে কয়েক কাঠি এগিয়ে বলেছেন -- বিষয়টা অ-সামাজিক। সমাজের নিয়মানুবর্তিতা যতই কঠিন হোক, সেটা মানুষের কল্যাণই করে। তাই যদি সমাজ চায় কেউ সারা জীবন অন্ধ হয়ে বা পঙ্গু হয়ে বেঁচে থাকবে, নিয়মানুবর্তিতার কারণে তার সেটাই মেনে নেওয়া উচিৎ। নিয়মের বিরুদ্ধে চলতে চাইলে তার তো শাস্তিই প্রাপ্য। "নিয়ম' মানে "পুরুষের জন্য নারী, নারীর যৌন সঙ্গী পুরুষ' এটাই। "নিয়ম' মানে "পুরুষ শরীরে নারীত্ব লালন' বা উল্টোটা গর্হিত অপরাধ।

    ঔপন্যাসিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ তো এ ব্যপারে বেশ খেদোক্তি করেই বললেন -- ""ডাক্তাররা কি যে সব করে! পৃথিবী থেকে অ্যাজমা, ব্রংকাইটিস তাড়াতে পারছে না, লিঙ্গ পরিবর্তন করে দিচ্ছে! এরা কি আজকাল অন্য রোগী পায় না! যেটা মানুষের সত্যিকারের অসুবিধে সেটার সমাধান না করে করছে কিনা লিঙ্গ পরিবর্তন! যতই করুক, "ব্যাটাছেলে ব্যাটাছেলেই আর মেয়েছেলে মেয়েছেলেই' থাকে।''

    একবার রাজাবাজার সায়েন্স কলেজে ইস্টার্ন জোনাল সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশান আয়োজিত লিঙ্গচেতনা বিষয়ক এক সম্মেলনে বক্তা হিসেবে এক ইংরেজী শিক্ষক খুব গর্বিত হয়ে বলেন -- লিঙ্গান্তরকামিতাকে তিনি আধুনিক সময়ের লজ্জাজনক ব্যাধি বলে মনে করেন। শুধু তাই নয়। তাঁর স্কুলের দু একটি মেয়েলী ছাত্রের এহেন বেঠিক আচরণের জন্য তাদের বেধড়ক ঠেঙিয়েওছিলেন। সুখের বিষয় (একই সাথে স্বস্তিরও) এই যে, আমার পাল্টা বক্তব্যের পর এবং আমার পরিবর্তিত হবার ইতিহাস জানবার পর উনি সবার সামনে মার্জনা চেয়ে বলেছিলেন -- ""বিশ্বাস করুন, ব্যপারটা যে আপনার মত এত সাকসেসফুলি ঘটে সেটা জানতাম না, তাই ....''। চমৎকার, অতুলনীয় আদর্শ। তাহলে কি এটাই যে পরিস্থিতির মারে সাফল্যের মুকুট যাদের মাথায় উঠবেনা তারা ওভাবেই সারা জীবন ঠ্যাঙানি খেয়ে যাবে? সারা জীবন সভ্যতা কি এভাবেই তাদের অবলীলায় ধর্ষণ করে যাবে?!!

    (সমাপ্ত)

    ২৫শে অক্টোবর, ২০০৯

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • অন্য যৌনতা | ২৫ অক্টোবর ২০০৯ | ৬৪৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে প্রতিক্রিয়া দিন