এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • সবার জন্য স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিমা

    ডাঃ পুণ্যব্রত গুণ লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | ১১২৭ বার পঠিত
  • ১৯৪৭-এর পর যাঁরা ভারতের শাসনক্ষমতায় এসেছিলেন, তাঁরা কল্যাণকর রাষ্ট্রের কথা বলতেন। রাষ্ট্র অর্থাৎ সরকার কতোটা নাগরিকের মঙ্গলের জন্য কাজ করতো, সে কথা থাক, কিন্তু সরকার চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তুলেছিল — উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র, প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, মহকুমা হাসপাতাল, জেলা হাসপাতাল, মেডিকাল কলেজ...। না চিকিৎসার উৎকর্ষের কেন্দ্র কোন বেসরকারী হাসপাতাল নয়, উৎকর্ষের কেন্দ্র ছিল মেডিকাল কলেজগুলো আর এস এস কে এম-এর মতো বিশেষ হাসপাতাল। স্বাস্থ্য কিন্তু দেশের সংবিধান-স্বীকৃত মৌলিক অধিকার ছিল না, এখনও নেই। তবু সরকার কিছুটা করতো। এর মধ্যে ১৯৭৮-এর সেপ্টেম্বরে আলমা-আটা অধিবেশনে লক্ষ্য ঘোষিত হয়েছে — ‘২০০০ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে সবার জন্য স্বাস্থ্য’ — বিশ্বের সব দেশের সরকার নিজ নিজ নাগরিকের স্বাস্থ্যের দায়িত্ব নেবে। এই ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছে আমাদের দেশের সরকারও।

    ১৩ বছর পর, ১৯৯১-এ অবস্থাটা বদলে গেল। বিশ্ব ব্যাংক আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভান্ডারের কাছ থেকে ঋণ নেওয়ার শর্ত মেনে সরকার সরে যেতে থাকল স্বাস্থ্য, শিক্ষার মতো পরিষেবা ক্ষেত্র থেকে। আর খালি জায়গা দখল করতে লাগল বেসরকারী স্বাস্থ্য, শিক্ষা ব্যবসায়ীরা। কলকাতার কথাই ধরুন, আগে বড়ো বেসরকারী হাসপাতাল বলতে ছিল বেল ভিউ, উডল্যান্ডস আর ক্যালকাটা হসপিটাল। পরের বছরগুলোতে শহরে, বিশেষত বাইপাসের দুই ধারে গজিয়ে উঠতে লাগলো কর্পোরেট হাসপাতালে সারি। সরকারী হাসপাতালগুলোর পরিকাঠামো ভেঙ্গে পড়তে লাগল, চিকিৎসার খোঁজে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ততো বটেই এমনকি নিম্নবিত্তরাও ভিড় জমাতে লাগলেন কর্পোরেট হাসপাতালে, অনেক ক্ষেত্রে ঘটিবাটি বিক্রি করে।

    নিম্নবিত্তদের জন্য তো বটেই, এমনকি মধ্যবিত্তদের জন্যও কর্পোরেট হাসপাতালে খরচ বহন করা সহজ নয়। সমাধান হিসেবে প্রচারিত হতে থাকল স্বাস্থ্যবিমা বা মেডিক্লেম। সাধ্যমতো বার্ষিক প্রিমিয়াম দিতে হয়, প্রিমিয়াম অনুযায়ী বছরে এক নির্দিষ্ট অঙ্ক অবধি হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসার খরচ বিমা কোম্পানি দেয়। ২০০৮ থেকে আরেক ধরনের স্বাস্থ্যবিমা দেখা যেতে লাগল, যেখানে যাঁর বা যে পরিবারের নামে স্বাস্থ্যবিমা, তিনি প্রিমিয়াম দেন না, দেয় সরকার।

    এই ধরনের স্বাস্থ্যবিমার মাধ্যমে নাগরিকের চিকিৎসার দায়িত্ব নেবে সরকার — এমনটাই আমাদের বোঝানোর চেষ্টা চলছে। আসুন বোঝার চেষ্টা করি আসলে এই স্বাস্থ্যবিমাগুলো কি।

    রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা

    ২০০৮-এর ১লা এপ্রিল দারিদ্রসীমার নীচে থাকা মানুষদের জন্য ভারত সরকার রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনা বা RSBY নামে এক স্বাস্থ্যবিমা চালু করে। অন্য স্বাস্থ্যবিমায় যার নামে বিমা তাকে প্রিমিয়াম দিতে হয়। এই বিমায় কিন্তু সরকার সেই ‘প্রিমিয়াম’ দিয়ে দেন। বিমাকারীকে পরিবার-পিছু এককালীন ত্রিশ টাকা দিয়ে কার্ড করাতে হয়। একটি কার্ডে এক পরিবারের পাঁচজন পর্যন্ত বিমার আওতায় আসতে পারেন। কোনও পরিবারে পাঁচজনের বেশি সদস্য থাকলেও কিন্তু পাঁচজনের বেশি বিমার সুবিধা পাবেন না। কোন পাঁচজন পাবেন সেটা পরিবারের প্রধান ঠিক করে দেন। তালিকাভুক্ত হাসপাতালে বা নার্সিং হোমে ভর্তি থাকাকালীন চিকিৎসার খরচ বছরে পরিবার পিছু ৩০ হাজার টাকা অবধি বিমা কোম্পানী বহন করে। কিন্তু পরিবারের একজনের জন্য সর্বোচ্চ বরাদ্দ ১৫ হাজার টাকা। আউটডোর চিকিৎসার খরচ RSBY বহন করে না। RSBY-এর ধাঁচে অনেক রাজ্য নিজ নিজ স্বাস্থ্যবিমা প্রকল্প শুরু করে। পশ্চিমবঙ্গে শুরু হওয়া তেমন স্বাস্থ্য বিমা হল স্বাস্থ্য সাথী।

    স্বাস্থ্য সাথী

    পশ্চিমবঙ্গে এক সমষ্টি স্বাস্থ্য বিমার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ১৭ই ফেব্রুয়ারী, ২০১৬-এ মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে, অর্থদপ্তরের বিজ্ঞপ্তি বেরোয় ২৫শে ফেব্রুয়ারী। মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন ৩০শে ডিসেম্বরে। যাত্রা শুরু ২০১৭-র ১লা ফেব্রুয়ারী।

    দ্বিতীয় এবং অন্তিম স্তরের চিকিৎসার জন্য দেড় লাখ টাকা অবধি বিমা। ক্যান্সার, নিউরোসার্জারি, কার্ডিওথোরাসিক সার্জারি, লিভারের রোগ, রক্তের রোগের জন্য ৫ লাখ টাকা অবধি। ২০১৮-র ৪ঠা অক্টোবর সব রোগের ক্ষেত্রেই বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫ লাখ টাকা।

    ২৮শে ফেব্রুয়ারী ২০১৮ অবধি ন্যাশানাল ইনসিওরেন্স কোম্পানী ছিল ৯টা জেলার দায়িত্বে, ১১টার দায়িত্বে ইউনাইটেড ইন্ডিয়া ইনসিওরেন্স কোম্পানী। ১লা এপ্রিল ২০১৮ থেকে বাজাজ এলায়েন্স ১৮টা জেলায়, ইফফকো টোকিও ৫টা জেলায়। অর্থাৎ সরকারী বিমা কোম্পানিগুলির স্থান এক বছরের মধ্যেই নিয়ে নিয়েছে বেসরকারী বিমা কোম্পানি।

    কাগজ ছাড়া, ক্যাশলেস স্মার্ট কার্ড।

    পরিবারের সদস্য সংখ্যার কোনও সীমা নেই। স্বামী-স্ত্রী উভয়ের বাবা-মা-ই বিমায় অন্তর্ভুক্ত। ২১ বছর বয়স অবধি অবিবাহিতা কন্যা এবং পরিবারের সব নির্ভরশীল শারীরিক প্রতিবন্ধী বিমায় অন্তর্ভুক্ত।

    আগে থেকে যে রোগগুলি আছে সেগুলির চিকিৎসাতেও বিমার সুবিধা পাওয়া যাবে।

    প্রিমিয়াম দেয় রাজ্য সরকার, বিমাকৃত পরিবারকে কিছু দিতে হবে না।

    স্বাস্থ্য সাথীর ওয়েবসাইটে দেখা যাচ্ছে ৫০ লাখ পরিবার অর্থাৎ প্রায় আড়াই কোটি মানুষ স্বাস্থ্য সাথীর সুবিধা পান। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির পরিবার, আইসিডিএস কর্মী ও সহায়করা, আশা কর্মীরা, সিভিক ভলেন্টিয়ার ফোর্স, সিভিল ডিফেন্স ভলেন্টিয়াররা এবং কয়েক ধরনের ঠিকাদারী শ্রমিক এই বিমার সুবিধাভোগী। রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার সব সুবিধাভোগী, SECC বঞ্চনার মাপকাঠিতে যোগ্য পরিবারগুলিকেও এই বিমায় আনা হয়েছে। বর্তমানে ১৪২ লক্ষ পরিবার স্বাস্থ্য সাথীর সুবিধা পাওয়ার যোগ্য বলে হিসেব করা হয়েছে।

    ১৩০০-রও বেশী হাসপাতাল ও নার্সিং হোম তালিকাভুক্ত। এ, বি এবং সি তিনটি গ্রেডে এরা বিন্যস্ত।

    ৩১ আগস্ট ২০১৮ অবধি ৩ লক্ষ ১৮ হাজার পরিবার ৩০১ কোটি ৫৭ লক্ষ টাকা মূল্যের ক্যাশলেস চিকিৎসা পেয়েছে।

    এবং আয়ুষ্মান ভারত...

    ১লা ফেব্রুয়ারি ২০১৮ রাষ্ট্রীয় বাজেট পেশ করার সময় ঘোষিত হয়েছিল এক নতুন স্বাস্থ্য প্রকল্প যার নাম National Health Protection Scheme (NHPS)। বলা হল দেশের দশ কোটি গরীব পরিবার অর্থাৎ প্রায় পঞ্চাশ কোটি মানুষের জন্য পরিবার পিছু হাসপাতালে ভর্তি থাকলে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিমার সুবিধা দেওয়া হবে এই প্রকল্পে।

    কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের পরই আমরা খতিয়ে দেখেছিলাম সবার জন্যে স্বাস্থ্যের দিকে হাঁটার কোনো লক্ষণ সরকারের এই বাজেটে দেখা যাচ্ছে কিনা। দেখেছিলাম —

    দেখলাম স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বেড়েছে গতবছরের বরাদ্দের ২.৫% মাত্র।

    বলা হয়েছে ১.৫ লক্ষ স্বাস্থ্য ও ভালো থাকার কেন্দ্র (Health and Wellness Centre) থাকবে যার জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১২০০ কোটি টাকা অর্থাৎ কেন্দ্রপিছু মাত্র ৮০ হাজার টাকা করে। আমরা দেখলাম দেশে এখন সাবসেন্টার আছে ১৫৬২৩১ টি। তার মাত্র ১১% মান সম্মত। বেশির ভাগ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যথেষ্ট ওষুধ বা কর্মী নেই। ২০% সাবসেন্টারে জলের ব্যবস্থা নেই, ২৩% শতাংশে নেই বিদ্যুৎ সংযোগ।

    প্রাথমিক স্তরের স্বাস্থ্যব্যবস্থার বেহাল অবস্থা নিয়ে কোনো যৌক্তিক সমাধানের উল্লেখ ছিল না প্রকল্পে।

    দীর্ঘস্থায়ী অ-সংক্রামক রোগ (Chronic Non-Communicable Diseases) যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস নিয়ে কোনো কথা ছিল না।

    স্বাস্থ্য-বাজেটে প্রাধান্য পেয়েছিল হাসপাতালে ভর্তি হয়ে নিতে হয় সেই সমস্ত চিকিৎসা, অপারেশন ও পরীক্ষা নিরীক্ষা—দ্বিতীয় স্তর (secondary) এবং অন্তিম স্তর (tertiary)-এর হাসপাতালে যেগুলি পাওয়া যায়।

    ১৫ই আগস্ট লাল কেল্লায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করলেন ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মদিনে সূচনা হবে প্রধান মন্ত্রী জন আরোগ্য অভিযানের। ইতিমধ্যে প্রকল্পের জনপ্রিয় নাম দেওয়া হয়েছে। আয়ুষ্মান ভারত বা জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা মিশন (National Health Protection Mission) — শাসকদলের প্রশংসকেরা ডাকছেন ‘মোদীকেয়ার’ নামে। ঘোষণা মতো প্রকল্পটির আনুষ্ঠানিক সূচনা করা হয়েছে ২০১৮-র ২৫শে সেপ্টেম্বর।

    ঘোষণা অনুযায়ী এটি নাকি বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো চিকিৎসা উদ্যোগ, প্রায় ২৭-২৮টি ইউরোপিয়ান দেশের মিলিত জনসংখ্যার সমান জনসংখ্যাকে এটি নাকি পরিষেবা দেবে। কানাডা, মেক্সিকো আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিলিত জনসংখ্যার প্রায় সমান নাকি হবে এই প্রকল্পে সুবিধাভোগীর সংখ্যা। দেশের গরীব ও বঞ্চিত মানুষ নাকি এই প্রকল্পে লাভবান হবেন।

    কিন্তু প্রকল্পটিকে খুঁটিয়ে দেখলে দেখা যায়, এটি বিশ্বের এই ধরনের সর্ববৃহৎ প্রকল্প নয়। তাছাড়া এই প্রকল্পটি এমন ভাবে পরিকল্পিত হয়েছে যাতে, দুর্নীতির বন্যা বয়ে যাবে। তার চেয়েও বড় ব্যাপার হল দেশের সংবিধান রাজ্যগুলিকে যে অধিকার দিয়েছে, তার ভিত নড়িয়ে দেবে এই প্রকল্প।

    আয়ুষ্মান ভারতে ১০.৭৪ কোটি পরিবারকে পরিবার পিছু ৫ লাখ টাকা অবধি দেশব্যাপী সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে ক্যাশলেস চিকিৎসার সুবিধা দেওয়ার কথা। বিভিন্ন রাজ্যগুলির স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তথ্য দেখা যাচ্ছে — রাজ্যগুলি বিনামূল্যে চিকিৎসার যে বিভিন্ন প্রকল্প চালায় সেগুলির মিলিত সুবিধাভোগী পরিবারের সংখ্যা ১২ কোটিরও বেশি।

    মহারাষ্ট্রের মহাত্মা জ্যোতিবা ফুলে জন আরোগ্য যোজনায় ২.২ কোটি কম আয়ের পরিবারকে বিনামূল্যে উন্নত মানের চিকিৎসা দেয়, আয়ুষ্মান ভারত মহারাষ্ট্রে ৮৩ লাখ পরিবারের দায়িত্ব নেবে। গোয়ার চিকিৎসাব্যবস্থা সবার জন্য বিনামূল্যে, প্রায় ২.২৫লক্ষ পরিবারের জন্য। আয়ুষ্মান ভারত কিন্তু গোয়ায় দায়িত্ব নেবে মাত্র ৩৭,০০০ পরিবারের।

    পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্যবিমা যোজনা ও স্বাস্থ্যসাথী মিলিয়ে ১.৫১ কোটি পরিবারকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেয়, আয়ুষ্মান ভারত ১.১২ কোটি পরিবারের দায়িত্ব নেবে।

    কারিগরী সহায়তার জন্য সরকার যে জার্মান কোম্পানীকে নিযুক্ত করেছে, সেই GIZ রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় দুর্নীতির অভিযোগে আগে থেকেই অভিযুক্ত।

    যে আর্থ-সামাজিক ও জাতি জনগণনার ওপরে ভিত্তি করে এই ১০ কোটি পরিবারের সংখ্যা ঘোষণা করা হয়েছে, সেটি ২০১১-র, ৭ বছরের পুরোনো। আয়ুষ্মান ভারত যাঁরা কার্যকর করছেন, তাঁদের অন্দরমহলের খবর, যে পরিবারগুলি এখন আর বঞ্চনার মাপকাঠি পূরণ করে না, তাদের বাদ দেওয়া হবে।

    জানা যাচ্ছে যাদের থার্ড পার্টি এডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে নিযুক্ত করা হচ্ছে, তাদের বেশির ভাগই বিজেপি-আরএসএস-এর ঘনিষ্ঠ।

    বলা হচ্ছে ১৩,০০০ হাসপাতাল আয়ুষ্মান ভারতের জন্য তালিকাভুক্ত। রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় যে হাসপাতালগুলি তালিকাভুক্ত ছিল তারা আপনা থেকেই আয়ুষ্মান ভারতে তালিকাভুক্ত হয়ে যাবে। এই হাসপাতালগুলির মধ্যে অনেকগুলির পরিকাঠামোই যথাযথ নয়।

    আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, গুরুতর দুর্নীতিতে লিপ্ত হলেও সহজে কোন তালিকাভুক্ত হাসপাতালকে তালিকা থেকে বার করা যাবে না। জালিয়াতিকে পাঁচটি শ্রেণীতে বিন্যস্ত করা হয়েছে। কোন এক শ্রেণীতে তিনবার অভিযুক্ত না হলে তাকে তালিকা থেকে বার করা হবে না। মানেটা এরকম বিভিন্ন শ্রেণীতে জালিয়াতি করার মোট অন্তত ১০টা সুযোগ পাবে একেকটা হাসপাতাল।

    প্রস্তাব করা হয়েছে সরকারী হাসপাতালে আয়ুষ্মান ভারতের অধীনে অপারেশন হলে ইনসেন্টিভ দেওয়া হবে। এতে অপ্রয়োজনে অপারেশনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা, যেখানে অপারেশন না করলেও হয় সেখানে অপারেশন করার প্রবণতা বাড়বে। যেমন রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনায় দেশের অনেক জায়গায় মহিলাদের মাসিক রজোস্রাব সংক্রান্ত যে কোন সমস্যার জন্যই হিস্টেরেকটমি (জরায়ু কেটে বাদ দেওয়া) করে দেওয়া হয়।

    স্বাস্থ্য সুরক্ষার একটি বহু-পরীক্ষিত মডেল হল বিমা মডেল যেখানে ক্লেম (চিকিৎসা খরচের দাবী) পর্যালোচনা করে মঞ্জুর বা নাকচ করা হয়। কিন্তু আয়ুষ্মান ভারতে নেওয়া মডেলটি হল ট্রাস্ট মডেল, যেখানে ক্লেম পর্যালোচনার কোনও ব্যাপার নেই। আশংকা করা যায় মিথ্যা দাবী পেশ করে বিজেপি-র কোষ ভর্তি করার জন্যই ট্রাস্ট মডেল বেছে নেওয়া।

    আরও সমালোচনা এসেছে প্রকল্পটি সম্পর্কে —

    সংবিধানের সপ্তম তপশিল অনুযায়ী স্বাস্থ্য রাজ্যের বিষয়। AIIMS-এস এর মতো কিছু প্রতিষ্ঠান বাদে অধিকাংশ হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্র রাজ্য সরকারগুলি চালায়। দেশ-জোড়া স্বাস্থ্যবিমা ব্যবস্থা রাজ্যের দায়িত্বকে লঘু করে দেবে।

    এই প্রকল্পে অংশগ্রহণের মানে হল রাজ্যগুলিকে বিমার প্রিমিয়ামের জন্য টাকা দিতে হবে। ফলে যে টাকা রাজ্যে চিকিৎসা পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজে লাগতে পারত তা বিমার প্রিমিয়াম দিতে খরচ হবে। বিমাকৃত ব্যক্তিরা দেশের যে কোন রাজ্যে তালিকাভুক্ত হাসপাতালে বিনামূল্যে চিকিৎসা পেতে পারবেন। তাই যে সব রাজ্যের চিকিৎসা পরিকাঠামো অপেক্ষাকৃত উন্নত, সেখানে রোগীরা ভীড় জমাবেন।

    দেশের সব রাজ্যে মানুষ সমান মাত্রায় চিকিৎসা-পরিষেবা পান না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মান হল প্রতি ১০০০ মানুষ পিছু একজন করে ডাক্তার থাকা উচিত। ভারতে গড়ে ১০০০ জন মানুষ পিছু ডাক্তারের সংখ্যা ০.৬৫ জন। কিন্তু কর্নাটক, তামিলনাড়ু, কেরালা, পাঞ্জাব, গোয়া আর দিল্লীতে ১০০০ জনে ডাক্তারের সংখ্যা ১-এর বেশি। তামিলনাড়ুতে ২৫৩ জন মানুষ পিছু ১ জন ডাক্তার আর দিল্লীতে ৩৩৪ জন পিছু ১ জন। তার ফলে চিকিৎসার উপলব্ধতার বিচারে এই রাজ্যদুটি নরওয়ে এবং সুইডেনের সঙ্গে তুলনীয়। আবার ঝাড়খন্ড, হরিয়ানা আর ছত্তিশগড়ে ৬০০০জন মানুষ পিছু ১ জন ডাক্তার।

    যে রাজ্যগুলির পরিকাঠামো ভাল, সেগুলিতে বছর বছর স্বাস্থ্য খাতে বেশি খরচ করা হয়েছে। ২০১৮-এ নিতি আয়োগের এক রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে স্বাস্থ্যসূচকের বিচারে সর্বোচ্চ তিনটি রাজ্য হল কেরালা, পাঞ্জাব এবং তামিলনাড়ু। আবার দেখা যাচ্ছে ২০০৪-’০৫ থেকে ২০১৫-’১৬ অবধি স্বাস্থ্যখাতে সবচেয়ে বেশি খরচও করেছে এই তিনটি রাজ্য। ২০০৪-’০৫-এ দেশের মধ্যে স্বাস্থ্যখাতে সবচেয়ে কম খরচ করা তিনটি রাজ্যে গড় মাথাপিছু স্বাস্থ্য খরচ ছিল ১২২ টাকা, বেশি খরচ করা রাজ্যগুলির তুলনায় ১৩০টাকা কম। তারপরের ১০ বছরে এই ফারাক ১৩০ টাকা থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছ ৫৬১ টাকায়।

    ভালো পরিকাঠামোর রাজ্যগুলিতে অন্য রাজ্যগুলির রোগীদের ভীড়ের ফলে দু ধরনের অবস্থা হতে পারে। প্রথমত রোগীর চাপে এই রাজ্যগুলির পরিকাঠামো ভেঙ্গে পড়তে পারে। উল্টোটাও হতে পারে। খারাপ পরিকাঠামোর রাজ্যগুলি তার অধিবাসীদের বিমার প্রিমিয়াম বাবদ যা খরচ করবে তা উন্নত পরিকাঠামোর রাজ্যগুলিতে চলে যাওয়ায় তাদের পরিকাঠামো আরও উন্নত হতে পারে। দুটো পরিস্থিতিতেই পিছিয়ে থাকা রাজ্যগুলি নিজেদের পরিকাঠামোর জন্য অর্থবিনিয়োগ করতে নিরুৎসাহ হবে। বরং তারা উন্নত পরিকাঠামোর রাজ্যগুলির ওপর এবং বেসরকারী ক্ষেত্রের ওপর বেশি বেশি করে নির্ভরশীল হয়ে পড়বে।

    আমাদের বক্তব্যঃ

    যে সব দেশে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বিমাব্যবস্থার প্রাধান্য বেশি সেই দেশে সার্বিক স্বাস্থ্যের মান আশানুরূপ নয়। আমেরিকার উদাহরণ দেখে তা ভালোভাবে বোঝা যায়। চিকিৎসা অপ্রয়োজনে ব্যবহার হতে বাধ্য বিমাব্যবস্থার দেশগুলিতে। সেখানে চিকিৎসার বেশ কিছু খরচ রোগীর নিজের পকেট থেকে দিতে হয়। এইরকম খরচের পরিমাণও কমানো সম্ভব নয় বিমাব্যবস্থায়।

    RSBY, স্বাস্থ্য সাথী, National Health Protection Scheme (NHPS) আউটডোরের রোগীদের কোনো সুবিধা দেবে না। অথচ তথ্য বলছে, পকেট থেকে যে চিকিৎসা-খরচ একজন রোগী করেন তার শতকরা ৬৩ ভাগ করতে হয় আউটডোর চিকিৎসার জন্য। মানে রোগীর মোট নিজস্ব চিকিৎসা খরচের শতকরা মাত্র ৩৭ ভাগ টাকা বিমা ব্যবস্থা দিলেও দিতে পারে।

    সরকার সরাসরি সেবাপ্রদানকারীর (Service Provider) দায়িত্ব না নিয়ে বরং বিমা ব্যবস্থার মাধ্যমেই স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটাতে চাইছে। আগেই বলেছি প্রায় ১২ কোটি পরিবার RSBY আর বিভিন্ন রাজ্য সরকারী বিমা যোজনার আওতাভুক্ত হয়ে আছেন। তা সত্ত্বেও কিন্তু চিকিৎসা পরিষেবা পেতে সাধারণ মানুষকে নিজের পকেট থেকে যে খরচ দিতে হয়, তার পরিমাণ ক্রমশ বেড়েছে।

    শিক্ষা সেস ৩% থেকে বাড়িয়ে ৪% করা হল যা নেওয়া হবে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সেস হিসাবে। এতে আয় বাড়বে ১১০০০ কোটি টাকা, যার ১০% এর কাছাকাছি মাত্র স্বাস্থ্যখাতে দেওয়া হবে।

    আয়কর ছাড়ের জন্য হেলথ ইন্সুরেন্স প্রিমিয়ামের ন্যুনতম পরিমাণ বাড়িয়ে ৫০০০০টাকা করা হয়েছে।

    আমরা পরিষ্কার ভাবে মনে করি আয়ুষ্মান ভারত বা অন্য সরকারী পয়সায় স্বাস্থ্য বিমা আসলে বেসরকারী বিমা কোম্পানী ও কর্পোরেট হাসপাতালগুলিকে জনগণের করের টাকা উপহার দেওয়ার প্রকল্প। স্বাস্থ্যবিমা কোম্পানিগুলির মোট ব্যবসা এখন ৩০,৩৯২ কোটিরও বেশি! আর এই ব্যবসার বৃদ্ধির হার এখন প্রতি বছরে ২৫%! বিমা কোম্পানিগুলির এই স্বাস্থ্যোন্নতির পেছনে সরকারী স্বাস্থ্যব্যবস্থা ও তার হাজাররকম স্বাস্থ্য প্রকল্পের ভূমিকা অসামান্য। নীতি আয়োগ পুষ্টি জোগাবে এই বিমা ব্যবস্থাতে। নীতি আয়োগ প্রথম থেকেই অন্য খাতে খরচ কমিয়ে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়ানোর পরিবর্তে স্বাস্থ্যে বেসরকারি বিনিয়োগের পক্ষে জোর সওয়াল করে এসেছে।

    স্বাস্থ্যবিমা ছাড়া কি আর কোনো উপায় ছিল না দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবান করে তোলার?

    আমাদের হাতের কাছেই আছে ইএসআই। বেতনের উর্ধসীমা তুলে দিয়ে সমস্ত শ্রমিক কর্মচারীকে এর আওতায় চিকিৎসার সুবিধা দেওয়া যায়। অসংগঠিত শ্রমজীবীদের ইএসআই-এর আওতায় আনার ব্যবস্থা নেওয়া যায়। আমরা আশ্চর্য হয়ে দেখছি একটা সফল সরকারি বিমাব্যবস্থার মডেল থাকতে বেসরকারি বিমাব্যবস্থাকে জায়গা করে দেওয়া হচ্ছে।

    ২০১০-এ যোজনা কমিশন দ্বারা গঠিত সবার জন্য স্বাস্থ্যের লক্ষ্যে উচ্চস্তরীয় বিশেষজ্ঞ দল হিসেব করে দেখিয়ে সুপারিশ করেছিল স্বাস্থ্যখাতে খরচ দেশের মোট আভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি-র ২.৫% থেকে ৩% এর মধ্যে আনতে পারলেই সরকার দেশের সমস্ত নাগরিককে অত্যাবশ্যক সমস্ত প্রাথমিক স্তরের, দ্বিতীয় স্তরের এবং অন্তিম স্তরের পরিষেবা সমস্ত মানুষকে বিনামূল্যে দিতে পারে। বরাদ্দ জিডিপি-র মাত্র ০.৫% বাড়ালে সমস্ত নাগরিককে তাদের প্রয়োজন মাফিক অত্যাবশ্যকীয় সমস্ত ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া সম্ভব। জিডিপি-র ২.৫% স্বাস্থ্যখাতে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে ২০১৭-র জাতীয় স্বাস্থ্য নীতিতেও। সেখানে এখন আমরা চলছি ১%-রও কম নিয়ে।

    সরকারী স্বাস্থ্যব্যবস্থা থাকলে সাধারণ মানুষও বিমার প্রিমিয়াম না দিয়ে স্বাস্থ্যের জন্যে কিছু বাড়তি ট্যাক্স দিতে কুন্ঠিত হন না। সেই টাকায় সকলের জন্যে স্বাস্থ্যের ব্যবস্থা করা যায়, হাসপাতালে ভর্তি বা অপারেশন জাতীয় সুবিধা ছাড়াও দীর্ঘস্থায়ী রোগের ওষুধ সরবরাহ করা যায়, রোগ যাতে না হয় তার জন্যে সমাজের স্তরে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরালো করা যায়, অন্তিম স্তরের স্বাস্থ্যপ্রতিষ্ঠানের তুলনায় প্রাথমিক ও দ্বিতীয়স্তরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিকে আরো বেশি কার্যকরী করা যায়, হাসপাতালগুলিতে যাতে সবসময় ডাক্তার নার্স থাকেন তার ব্যবস্থা করা যায়, সাধারণ অসুখের চিকিৎসা, আপতকালীন চিকিৎসার অবস্থার উন্নতি করা যায়।

    RSBY, স্বাস্থ্য সাথী, আয়ুষ্মান ভারত সর্বজনীন নয়, কেবল নাকি বঞ্চিতদের জন্য। যে স্বাস্থ্যব্যবস্থায় সকলের জন্য একই রকম সুবিধা থাকে না, সেখানে কেবলমাত্র গরীবদের জন্যে নেওয়া কোনো প্রকল্প শেষ পর্যন্ত দাঁড়ায় না, অবহেলায়, দুর্নীতিতে চাপা পড়ে যায়—এটাই অন্যান্য দেশেরও অভিজ্ঞতা। সকলের জন্যে ব্যবস্থা থাকবে একটাই, আর সকলেই প্রয়োজনমত সেই ব্যবস্থার সুযোগ নেবে, এটাই কার্যকর ব্যবস্থা। এমনটা না হলে যেটা হয় যে, যার দরকার সে পায় না, আর কেউ প্রয়োজনের অতিরিক্ত পায়।

    স্বাস্থ্য বিমা নয়, সবার জন্য স্বাস্থ্যের দাবীতে সোচ্চার হোন।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ | ১১২৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন