এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ইস্পেশাল  নববর্ষ ২০১৩

  • শ্যামাপোকা

    রূপঙ্কর সরকার লেখকের গ্রাহক হোন
    ইস্পেশাল | নববর্ষ ২০১৩ | ১৭ এপ্রিল ২০১৩ | ৮০৭২ বার পঠিত
  • - এক থাপ্পড় লাগাব অসভ্য মেয়ে, সিনিয়ারদের সঙ্গে কিভাবে কথা বলতে হয় জাননা ?

    - যাব্বাবা, আমি কোথায় ভাল মনে বলতে গেলাম, তোমার জীন্‌সটা ফ্যান্টা, আর তুমি চমকে দিলে ? দেখ, সিনিয়ার বলে অত এয়ার নিওনা, মোটে তো দুবছরের বড় –

    - চমকে দিলাম আবার কী ভাষা, ঠিক করে কথা বল। আমাকে কী বলে ডাকলে তুমি ? আমার নাম শুচিস্মিতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ছোট করে, স্মিতা। বুঝলে ?

    - কী করে জানব দিদিভাই, দুনিয়ার লোক তোমায় শ্যামা বলে ডাকে শুনি, তাই আমিও বললাম, শ্যামাদি। খুব অন্যায় করেছি না? পায়ে ফায়ে ধরতে হবে নাকি?

    নাম জিনিষটা খুব ডেঞ্জারাস। একবার রটে গেলে কোথা থেকে কোথায় চলে যায় কেউ বলতে পারেনা। এই যে সমাদ্দার সাহেব, কোথায় হ্যামিলটনগঞ্জ বলে নর্থ বেঙ্গলের এক প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বদলি হয়ে এলেন। ওঁর বাড়িও ঐদিকেই। কিন্তু এতদূর এসেও নিস্তার নেই। নতুন জায়গায় জয়েন করার পর এক হপ্তাও কাটেনি, কেবিন থেকে হলে বেরোলেই চার দিকে আওয়াজ, ভুতো - ভুতো – প্রথম প্রথম একটু সন্দেহ ছিল, এরা কি আমায় বলছে? যাঃ, সে নাম এতদূরে বারাসতে লোকজন জানবে কী করে – কোথায় উত্তরবঙ্গের হাসিমারা আর কোথায় চব্বিশ পরগনার বারাসত। কিন্তু সন্দেহ নিরসন হল অচিরেই। অবশ্য সমাদ্দার সাহেবের সঙ্গে শুচিস্মিতার কোনও পরিচয় নেই, কোনও সম্পর্কও নেই। একটাই কমন ফ্যাকটর – বারাসত।

    ক্ষুদিরাম পল্লী থেকে বারাসত কলেজ কতই বা দূর, যাতায়াতেরও সুবিধে। কিন্তু সহ্যেরও একটা সীমা আছে। সেদিন ফার্স্ট ইয়ারের মেয়েটার ওপর রেগে গিয়ে দুকথা বলায়, হ’ল আরো বিপদ। চতুর্দিকে এত ‘শ্যামাচরণ’ গজিয়ে গেল, যে কলেজ যাওয়াই এখন মুশকিল। ঐ যে, সেকেন্ড ইয়ারের হিস্ট্রির দেড়েলটা, হৃদয়পুর না কোত্থেকে যেন আসে। সেদিন হেঁড়ে গলায় শুরু করল, নেচে নেচে আয় মা স্যামাআআ – আমি মা তোর সঙ্গে যাব।  স্মিতার কান ফান লাল হয়ে গেল। কিন্তু যেদিন ব্যাটাচ্ছেলে আরও এক ধাপ আওয়াজ তুলে শুরু করল, স্যামা মা কি আমার কালোরে, স্যামা মা কি আমার কালো – কালো রূঊঊপে দিগম্‌বোরি হিদিপদ্‌দো করে মোর আলো – স্মিতা ছুটে কলেজ থেকে বেরিয়ে এল।

    স্মিতা বলল, বাপি, আমায় কোলকাতার কলেজে ভর্তি করে দাও, ইয়ার লস হলে হবে।  বাপি বললেন, সেকিরে, তুই কোলকাতায় যাবি পড়তে ? মরে যাবি মা, ট্রেনে এখন কুম্ভমেলার ভিড়। জনসংখ্যা কী হারে বেড়েছে তুই জানিস ? আবার ট্রেন থেকে নেমে বাস। সরাসরি বাসেও অবিশ্যি যাওয়া যায়, কিন্তু তুই পারবিনা মা। মা বললেন, সব নষ্টের গোড়া তুমি। ‘শ্যামাপোকা’ নামটা কে দিয়েছিল শুনি? এখন সাধু সাজছ ? বাপি বললেন, আহা সে তো আমার আদরের নাম, সেটা সবাই জানবে কেন। কিরে মা, তোকে সবাই শ্যামাপোকা বলে নাকি? স্মিতা বলল, চুপ কর বাপি, পোকা ফোকা বলেনা এখন। কিন্তু বাকিটাই বা বলবে কেন। আমি বারাসত কলেজে পড়বনা ব্যাস।

    মা বললেন, তোমার জন্য মেয়েটার কী সব্বোনাশ হ’ল বল দেখি। ওই রকম বিদ্ঘুটে নাম কেউ দেয় ? বাপি বললেন, কী আশ্চর্য, সে তো কোন ছোটবেলায় ও আলো দেখলেই ছুটে আসত বলে আমি আদর করে ডাকতাম। তোমার মনে নেই, সেবার ভাগলপুর থেকে বড়দি এল। বাংলার তেল মশলা সহ্য হয়নি, রাত্তিরে বারো চোদ্দবার বাথরুম গেছে। তা যতবার ওঘরের আলো জ্বলে আমার শ্যামাপোকা ততবার জেগে উঠে বারান্দায় বেরিয়ে যায়। মা বললেন, থামবে তুমি? আবার সেই অলুক্ষুণে নাম। মেয়েটা এক্ষুণি কেঁদে ভাসাবে। দরকার নেই ওর এখানে পড়ে। ও কোলকাতাতেই পড়বে।

    কোলকাতার কলেজে এসেও কি শান্তি আছে ? সেদিন জিসেক অর্চনাদি বলল, অ্যাই শুচিস্মিতা, তুমি নাচতে পার? এবার আমাদের সোশালে কবিগুরুর ‘শ্যামা’ নৃত্যনাট্য হচ্ছে, তুমি নাচবে তো ? প্রশ্নটা মোটেই ইনোসেন্ট নয়। অর্চনাদির মুখটা যে ফিচেল ফিচেল ছিল, তা ঠিক চোখে পড়েছে। স্মিতা সেদিন বাড়ি ফিরে বলল, বাপি, আমি আর পড়বনা। আমার বিয়ে দিয়ে দাও।

    ব্যানার্জিবাবু বললেন, বিয়ে? সে তো খুব ভাল কথা মা, কিন্তু একটাও পাশ দিবিনা ? না না, তোকে চাকরি করতে হবে তা বলছিনা, তবে ইয়ে, মানে পাত্রপক্ষও তো আজকাল একটু লেখাপড়া চায়। তুই না হয় আবার কলেজ বদল করে – স্মিতা বলল, তুমি আমার বিয়ে দেবে কিনা। হ্যাঁ আর দেখো, পাত্র যেন প্রবাসী হয়। আমি ওয়েস্ট বেঙ্গলে থাকব না।

    সাত সকালে দরজায় টিংটং। ব্যানার্জীবাবু হন্তদন্ত হয়ে দরজা খুলেই দেখেন হাতে ব্যান্ডেজ বাঁধা একটা মোটাসোটা হাসিহাসি মুখ। কে, কী বৃত্তান্ত, এসব জিজ্ঞেস করার আগেই বলে কিনা, ও মশাই, আপনার মেয়েটাকে আমার চাই। ব্যানার্জীবাবু একটু ঘাবড়েই গেলেন, বারাসত আজকাল জায়গা ভাল নয়। প্রায় রোজই কাগজে চোখ কপালে তোলা খবর। ভাগ্যি ভাল মেয়েটা কলেজ যাওয়া বন্ধ করেছে। না ফেরা ইস্তক যা চিন্তা – কিন্তু এরকম মোটাসোটা হাসিমুখ হাফবুড়ো কিডন্যাপার ? লোকটাকে কোনওদিন বারাসতে দেখেছি বলেও তো মনে হচ্ছেনা।

    ব্যানার্জীবাবু ছ’খানা মাদুলি বাঁধা সিড়িঙ্গে হাতে বাইসেপ্‌স খুঁজে পেলেননা। স্যান্ডো গেঞ্জির ফাঁক দিয়ে তেত্তিরিশ ইঞ্চি বুকটাকে ফুলিয়ে ছত্তিরিশ করতে গেলেন, তাও হ’লনা। তবে কথা হ’ল, নিজের বাড়ি, এটা নিজের পাড়া, তার ওপর দিনের বেলা, মামদোবাজি নাকি? – কি ক্কি ক্কি ব্যাপার কী, মেয়েটাকে চাই মানে ? কী ভেবেছেন কী, দেশে আইন কানুন সব উঠে গেছে নাকি? যদিও এ ব্যাপারে খানিক সন্দেহ নিজেরও ছিল, তবু বললেন, সাহস তো কম নয় – মোটা লোকটা বলল, সে আপনি যাই বলেন, মামনিকে আমি নিয়ে যাবই। আজ প্রিলিমিনারি কথাবার্তা বলে গেলাম। আর একদিন আসব চা খেতে।

    আবার চা খেতে আসবে বলছে। শ্যামাকে, থুড়ি স্মিতাকেই বোধহয় মামনি বলল, কিচ্ছু বোঝা যাচ্ছেনা। ব্যানার্জীবাবু বললেন, তা সে চা নাহয় আজই খেয়ে যান, কিন্তু ব্যাপারটা – লোকটা বলল, আমি সমাদ্দার, ব্লক অফিসে সবে চার্জ নিয়েছি। আজ চাপাডালির মোড়ে বাস থেকে নামতে গিয়ে কাদা ভর্তি গত্তে পা পড়ে কি আছাড়টাই না খেলাম। চশমাটা কোথায় চলে গেল, কিচ্ছু দেখতেও পাচ্ছিনা, হঠাৎ দেখি একটা মেয়ে এসে আমায় তুলে ধরল, ওড়না দিয়ে কাদা মুছিয়ে দিল, আবার ডাক্তারখানায় নিয়ে গিয়ে ব্যান্ডেজ – না মশাই এ মেয়ে আমার চাই। তাবলে ছেলে আমার ফ্যালনা নয়, রীতিমত আর্কিটেক্ট, বরোদায় পোস্টেড। এই বৈশাখেই –

    বাড়ি বয়ে সম্বন্ধ ? আবার এই মেয়েই চাই ? ওদিকে মেয়ে যেমনটি বলেছিল, ছেলে ওয়েস্ট বেঙ্গলের বাইরে – কার মুখ দেখে উঠলাম আজ, কিন্তু – কিন্ত, আমতা আমতা করে ব্যানার্জীবাবু বললেন, ইয়ে, মানে আজকাল এগুলো অনেকে মানেনা, তবে আমাদের আত্মীয়স্বজন একটু গোঁড়া বুঝলেন, মানে সমাদ্দার ফমাদ্দার – মোটা লোক রেগে গেল। ফমাদ্দার মানে? এইযে, এটা কী ? বলে জামার তলা থেকে খামচে একটা তেলচিটে পৈতে বের করল। নির্ভেজাল বামুন মশাই, রীতিমত ভরদ্বাজ। আপনি তো শান্ডিল্য, ওহ্‌একেবারে রাজযোটক মশাই। ব্যানার্জীবাবু তবু বললেন, ইয়ে মানে, এদেশি রাঢ়ী ফাঢ়ী নয় তো? সমাদ্দার বললেন, আরে মশাই ঢাকা অর্জিনাল। এই বৈশাখেই কিন্তু –

    সমাদ্দার জুনিয়রের ভাল নাম অলকেন্দু, ডাক নাম আলো। জামাই দেখে তো ব্যানার্জী পরিবার থ। এতো সত্যি আলো করে আছে গো, আমাদের মেয়ের চেয়েও তো জামাই দেখতে ভাল। জামাইয়ের ছুটি শেষ, বরোদায় উড়ে গেল তারা। সেখানে আলোর সারাদিন কাজ আর কাজ, স্মিতার সময় আর কাটতে চায়না। বেশ রাত করেই ফেরে আলো। স্মিতা দৌড়ে গিয়ে বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে আদর খায়। দুষ্টুমি করে জামাই বলে, ও, আলো দেখলেই দৌড়ে আসো, তুমি আমার শ্যামাপোকা।

    - খি ? খি ভললে থুমিঃ ? খি ভললেঃ ? নাকের পাটা ফুলে আছে, স্মিতা ফোঁস ফোঁস করে নিঃশ্বাস ফেলে – ছিটকে সরে যায়। আমি কালই বারাসত চলে যাব। এক সপ্তাহের মধ্যে উকিলের চিঠি পাবে তুমি – পেছন পেছন আলো দৌড়য়, আরে আরে হ’লটা কী, কী এমন বললাম – দড়াম করে মুখের ওপর দরজা বন্ধ হয়ে গেল। নাও এবার সোফায় ঘুমোও।

    ব্যানার্জীবাবু বললেন, কিন্তু মা, সেই নামটা তো আলোর  জানার কথা নয়, বরোদার লোক বারাসতের নাম জানবে কেমন করে, ওটা ও কিছু না ভেবেই – স্মিতা বলে, তুমি চুপ কর। আমার শ্বশুরের নাম ভুতো তুমি জান ? হ্যামিল্টনগঞ্জের নাম বারাসতের লোক জানল কী করে ? তুমি একটা ভাল উকিল দেখ। ব্যানার্জী বাবু বললেন, কী বিপদ, একটা বিয়ে দিতেই তো প্রভিডেন্ট ফান্ডের অর্ধেক বেরিয়ে গেল। যদি আবার দিতে হয় – আচ্ছা তুই না হয় ক’দিন একটু ভেবে নে। স্মিতা বলল, ভাবার কিছু নেই। তুমি উকিল ডাক, ডিভোর্সের কারণ দেখানো হবে, মেন্টাল টর্চার। ব্যানার্জীবাবু বললেন, কাউকে শ্যামাপোকা বললে মেন্টাল ইয়ের কেস দাঁড়াবে? মানে, আমিও ও তোকে আদর করে শ্যামাপো – স্মিতা দৌড়ে বেরিয়ে গেল।

    আট দিনের দিন একটা ফোন এল স্মিতার মোবাইলে –

    - স্মিতা ফোন অন করল। ওদিক থেকে -

    - হ্যালো – হ্যালো –

    - এদিকে চুপ।

    - হ্যালো, আমি আলো বলছি –

    - হ্যাঁ দেখা যাচ্ছে, নামেই সেভ করা আছে।

    - সাত দিন তো কেটে গেছে, উকিলের চিঠি পাইনি।

    - এদিকে চুপ।

    - ভাল উকিল কি পাওয়া গেছে? আমার চেনা একজন ছিলেন –

    - ইয়ার্কি হচ্ছে? ফোন কেটে দেব কিন্তু –

    - বলছি কি, চলে এলে হ’তনা? এখানে এসেও তো সেপারেশন চাওয়া যায়।

    - আমার ভাল লাগছেনা –

    - ভাল কি আমারই লাগছে –

    - যদি ফিরে যাই, কী নামে ডাকবে আমায় ?

    - ওই যে, আলোর সঙ্গে যে নাম ওতপ্রোত না কি যেন বলে, -শ্যামাপোকা -

    স্মিতা গিয়ে বলল, বাপি আমায় প্লেনের টিকিট কেটে দাও প্লীজ, একটু খরচা হবে তোমার। তা দুবার বিয়ে দেয়ার চেয়ে তো অনেক কম।

     


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ইস্পেশাল | ১৭ এপ্রিল ২০১৩ | ৮০৭২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সে | 203.108.233.65 (*) | ০৩ মে ২০১৩ ০৭:৫২76213
  • নারীবাদ=Feminism?
    এতো কোনো খারাপ জিনিস নয়।

    http://en.wikipedia.org/wiki/Feminism

    n.b মূল গল্পটা আমি পড়িনি। হ্ঠাৎ এই লিংক ওপরে দেখে এখানে ঢুকলাম। তারপরে একদম লেটেস্ট কিছু কমেন্ট দেখে মনে হলো নারীবাদী শব্দটা শুধুই নেগেটিভ অর্থে নেওয়া হচ্ছে।
  • G | 81.60.40.245 (*) | ০৯ মে ২০১৩ ০৩:১৩76217
  • আমি গুরুর পাতায় শুধুই পাঠক। কিন্তু না লিখে পারলাম না।
    গল্পের বা গল্পকারের আদৌ কোন দায় আছে কি?
    কীসের দায়? সমাজ কিরকম সেটা ড্কুমেন্ট করার? নাকি কিরকম হওয়া উচিৎ সেই পথ দেখানোর?

    যাঁরা বলছেন আজকের কোন মেয়ে এরকম করবে না, তাঁরা "আজকের সমাজ" বলতে শুধু নিজের আশপাশটাকে দেখেন। আজও অধিকাংশ মেয়ে (হ্যাঁ স্ট্যাটিস্টিকলি অধিকাংশ) মেয়ে এরকমই করবেন। কিন্তু সেটা কথাই নয়। কে বল্ল লেখকের দায় সমাজের modal মানুষটিকে রিপ্রেজেন্ট করার? এ কি সেন্সাস রিপোর্ট? তাহলে তো রবিবাবুর নাটকের অধিকাংশ মানুষকেই পাওয়া যেত না।

    অন্য আপত্তিটা এইরকম হতে পারেঃ লেখকের চরিত্রগুলো ঠিক প্রগতিশীল নয় (অর্থাৎ আদর্শ সমাজব্যবস্থায় এঁদের স্থান নেই)। সেটাও অদ্ভুত যুক্তি। এটা তো গপ্পো - ম্যানিফেস্টো নকি? নকি গুরুর গম্ভীর প্রবন্ধ? লেখায় কোথাও তো কোন উচিত-অনুচিতের কথাই আসেন।

    লেখকের ওসব কোন দায়ই নেই। লেখকের কাজ পাঠককে একটা অন্য জগতে নিয়ে যাওয়া। লেখক যতক্ষণ সেই জগৎটর প্রতি সৎ, তিনি তাঁর কাজ করেছেন - ইরেস্পেক্টিভ অফ সেই জগৎটা এই দুনিয়ায় আছে কিনা, সেটা ডনপন্থী না বামপন্থী, সেইখানে শেয়ালে কথা বলে কিন, সেইখানের লোকজনের সংগে বাস্তব জগতের সম্পর্ক কি, সেইখানে লোক টেকস্টিংয়ের যুগে পায়রা উড়িয়ে চিঠি পাঠায় কিনা, ইত্যাদি ইত্যাদি।

    আমার এই লেখা পড়ে তো বেশ ভালই লাগল - মেয়েটাকে বেশ রক্তমাংসে দেখতে পেলাম। আবার কি?

    আর একটা জেনারেল আলপটকা কমেন্ট - গুরুতে আজকাল বড় লেবু চটকানো হচ্ছে।
  • ranjan roy | 24.99.247.244 (*) | ০৯ মে ২০১৩ ০৬:২৬76218
  • আমি বেসিক্যালি স্বঘোষিত ফচকে,ওই বিদ্রোহী নাগাদের স্বঘোষিত কম্যান্ডারের মত। কেউ মানুক বা না মানুক!ঃ))

    তাই টইটা নিভে যাচ্ছে দেখে একটু ম্যাচিস মারতে ইচ্ছে করছেঃ

    একটি মেয়েকে নিয়ে লেখা চেকভের একটি গল্প পড়ে ( নামটা ভুলে গেছি, কেউ ধরিয়ে দিলে আনন্দ পাব,) তলস্তয় বলেছেন ঈশ্বর ওমুককে অভিশাপ দেবেন বলে পাহাড়ের চুড়োয় উঠে শেষে ওকে আশীর্বাদই করলেন। তেমনি চেকভ ওই অগভীর ন্যাকা মেয়েটিকে নিয়ে বিদ্রূপ (পড়ুন খিল্লি!) করতে গিয়ে চরিত্রটিকে ভালোবেসে ফেললেন।
    ( খিল্লি, করুণা ভালোবাসায় পরিবর্তিত হল!)
    এবার হয়ে যাক, আমি নিরাপদ দূরত্বে বসে মজা দেখি।ঃ))))
  • ranjan roy | 24.99.238.38 (*) | ০৯ মে ২০১৩ ০৭:২৪76221
  • ধন্যবাদ!
    ঠিক বলেছেন। আমারও কলেজ জীবনে পড়া।
    The Darling এবং Olga।
  • brc - slg | 37.125.203.133 (*) | ০৯ মে ২০১৩ ১০:০৮76219
  • @ Ranjan Roy

    লেখা গল্পের নামটি কি "The Darling" এবং মেয়েটির নাম ওলগা?
    [ অনেক বছর আগে , college life -এ চেকভ পড়া --- ভুল হতে পারে :) ]
  • brc - slg | 37.125.203.133 (*) | ০৯ মে ২০১৩ ১০:১৪76220
  • উপপস্ ... upload গোলমেলে ...

    চেকভের লেখা গল্পের নামটি .. ইঃ
  • G | 160.212.69.221 (*) | ১৩ মে ২০১৩ ০৪:৪৬76226
  • শ্বরদিন্দু? শরদ্বিন্দু?
  • ranjan roy | 24.96.46.37 (*) | ১৩ মে ২০১৩ ০৬:৩৪76227
  • শরৎ+ইন্দু= শরদিন্দু, হবে মনে হয়।
  • pi | 172.129.44.120 (*) | ১৩ মে ২০১৩ ০৬:৩৭76228
  • রঞ্জনদা, আমার তো মনে হয় জি শরদিন্দুর (নির্মোহ) ব করছিলেন !
  • নিরমাল্লো | 24.139.97.73 (*) | ১৩ মে ২০১৩ ০৯:৩৩76222
  • গপ্পটা পড়ে আমার বেশ ভালো লাগলো ... পড়ার পরে দেখি লেখার শেষে এক পুঁথি আলোচনা দেখে তো আমি হাঁ!! এমন একটা নিরামিষ গপ্প নিয়ে এত দু:খ, ক্ষোভ ... কি না মেয়ে বাবাকে বলেছে যে প্লেনের টিকিট কেটে দাও ... যে মেয়ে গ্রাজুয়েশানটাও শেষ করেনি সে প্লেনের টিকিট কি প্রাইভেট টুইশানি করে যোগাড় করবে!! কে জানে বাবা!!

    শরদিন্দুর এমন কটা গল্প আগেও পড়েছিলাম, সেগুলো যেমন ভালো লেগেছিল এটাও তেমনি ভালো লাগলো ... আর কে না জানে -"... দাম্পত্যকলহেচৈব বহ্বারম্ভে লঘুক্রিয়া"! সেসব তাহলে আজকাল সবার পড়তে ভাল লাগেনা!
  • Blank | 180.153.65.102 (*) | ১৩ মে ২০১৩ ১০:১২76223
  • শরদিন্দুর বেশীরভাগ গপ্প (ব্যোমকেশ বাদে) প্রচন্ড ঘ্যানঘ্যানে টাইপ বোরিং লাগে। সেদিন ফের একবার গল্পসমগ্র পড়া শুরু করে ছেরে দিলাম।
    আজকাল অনেক নতুন লেখক দারুন সব লিখছেন, সেসব পাশে শরদিদ্ন্দুর ঘ্যানঘ্যানানি বড়ই বাজে লাগলো।
    মাহবুব আজাদের ম্যাগনাম ওপাস রেকো দিলাম।
  • নিরমাল্লো | 69.162.23.73 (*) | ১৩ মে ২০১৩ ১০:২৪76224
  • নিশ্চই পড়ে দেখার চেষ্টা করব :)

    শরদিন্দুকে নিয়ে নির্মোহ টহ আছে নাকি, থাকলে পড়ে দেখতাম। আমারতো কেন জানিনা ভালই লাগে :O
  • dukhe | 212.54.74.119 (*) | ১৩ মে ২০১৩ ১০:২৪76225
  • শরদিন্দুর ব শুরু হচ্ছে? আলাদা একটা টই খুললে হত না?
  • ranjan roy | 24.99.10.79 (*) | ১৪ মে ২০১৩ ০১:০৪76229
  • পাই,
    সরি , সরি! ঘুমচোখে ছড়িয়েছি। একেবারে যা তা! এখন থেকে ঘুমচোখে কিছু লিখব না। মাক্কালি! G কে ও বলছি,
  • অভিষেক | 127.194.199.188 (*) | ১৩ মে ২০১৭ ০৭:৫০76230
  • লেখার প্রসাদগুণ উচ্চমানের তাই একদমেই পড়ে নেওয়া যায়। এক সাধারণ মধ্যবিত্ত মননের মেয়ের সুখ দুখ আশা বেদনার ছোটো ছোটো মুহূর্তের কিছু কথা। রক্তমাংসে মেয়েটাকে তার পরিবেশ সহ লেখক দেখিয়ে দিতে পেরেছেন - তাতেই তাঁর কলমের জোর এবং লেখক হিসেবে ক্ষমতা প্রকট। কলেজের মৌখিক ভাষা পুরাতনী কাজেই বোঝা যায় লেখক অন্ত্যত ষাটোর্ধ এবং সামাজিক রিয়ালিজমের ভাষা জানলেও যুবাদের নব্যভাষার থেকে কালিক দূরত্বে। এমনকি আশ্চর্য হবোনা যদি জানি যে ওনার ধারেপাশে কোনো তিরিশের নিচের মানুষ থাকেন এখন।
    চেখফের Darling সত্যি সত্যি ম্নে আসে। আলী সাহেব এই দুলালী নামের গল্প নিয়ে আপন মুগ্ধতা বয়ান করেছেন বেশ বিস্তারে।
    নারীসত্ত্বার অপমান হয়েছে বলে মনে হয়নি একবারও।অপমান বরং সমাজের প্রতিই কিছুটা হয়েছে যদিও লেখার মূল উদ্দেশ্য তা ছিলোনা বলেই মনে হয়েছে।
  • অভিষেক | 127.194.199.188 (*) | ১৩ মে ২০১৭ ০৭:৫৩76231
  • ** তিরিশের নিচের মানুষ থাকেন না এখন।

    ওপরের পোস্টের প্রথম অনুচ্ছেদের শেষ লাইনের 'না' বাদ পড়েছিলো..
  • paps | 340112.218.673423.94 (*) | ০৭ জুন ২০১৮ ০৯:৪৬76232
  • তুললাম
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন