এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • শরাব-বন্দী আন্দোলনঃ দল্লী-রাজহরার অভিজ্ঞতা

    Punyabrata Goon লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১২ অক্টোবর ২০১৪ | ১৩২৪ বার পঠিত
  • দল্লী-রাজহরার ঠিকাদারী শ্রমিকদের মধ্যে বড়ো অংশটাই ছিলেন আদিবাসী, অল্প কিছু অ-আদিবাসী। আদিবাসীরা মদ খাওয়াকে অপরাধ বলে মনে করেন না। জঙ্গল থেকে মহুয়া কুড়িয়ে এনে তাঁরা ঘরে মদ চোলাই করেন। পারিবারিক যে কোনও অনুষ্ঠান, যে কোনও সামাজিক উৎসবের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ মদ্যপান। স্ত্রী-পুরুষ, বয়স্ক-অল্পবয়স্ক—উৎসবে সবাই মদ খাবেন—এটাই রীতি।

    এ রীতি ভেঙ্গে গিয়েছিল দল্লী-রাজহরায়। ’৭৭-এ ছত্তিশগড় মাইন্স শ্রমিক সংঘ ইউনিয়ন গঠনের আগে যেখানে প্রায় ৯৫% শ্রমিক মদের নেশা করতেন, সেই হার নেমে এসেছিল ৫%-এরও কমে। অথচ শংকর গুহ নিয়োগী শহীদ হওয়ার সময় অর্থাৎ ১৯৯১-এ এঁরা সারা ভারতের ঠিকাদারী খনি শ্রমিকদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দৈনিক মজুরি পাওয়া শ্রমিক। কেমন করে এঁরা মদের নেশা ছাড়লেন তা নিয়েই আজকের কাহিনী।

    আগেই বলেছি ১৯৭৭-এর আগে এই শ্রমিকরা বিভক্ত ছিলেন দুটো কেন্দ্রীয় শ্রমিক ইউনিয়নে। দিনে ১২ ঘন্টা অক্লান্ত পরিশ্রম করে মজুরি মিলত ৩ টাকা থেকে সাড়ে ৩ টাকা। পেটভরা খাবার, পরনের কাপড় জুটতো না, শ্রমিক পরিবারের শিশুরা স্কুলের মুখ দেখতে পারতো না।

    ’৭৭-এ অর্থনৈতিক আন্দোলনে প্রথম বিজয়ের পর দৈনিক মজুরি বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ১৬ টাকা। শ্রমিকদের মজুরি-বৃদ্ধির প্রভাব পড়ল মদ বিক্রির ওপর। ১৯৭৬-’৭৭-এ দল্লী-রাজহরায় দেশী মদ বিক্রি হয়েছিল ২৪,৫৮৮ প্রুফ লিটার, ’৭৭-’৭৮-এ তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৫,৩০৪ প্রুফ লিটারে। নিয়োগী উপলব্ধি করলেন, শ্রমিক-নেতাদের বোঝালেন—যদি শ্রমিকদের মদের নেশা দূর না হয় তাহলে মজুরি বাড়লেও শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে না।

    সিএমএসএস মদ্যপান-বিরোধী প্রচার শুরু করে। মদের শারীরিক, পারিবারিক ও সামাজিক কুপ্রভাবগুলো বোঝানোর জন্য ছোট ছোট সভা, প্রচার-পত্র, পোস্টার, ইত্যাদির সাহায্য নেওয়া হয়। শ্রমিকরা বুঝতে থাকেন, কিন্তু মদ খাওয়া ছাড়ানোর জন্য একটা ধাক্কার দরকার ছিল।

    ’৭৮-এ একটা ঘটনা ঘটে। শহর থেকে ৬-৭ কিলোমিটার দূরে একটা গ্রাম চিখলী, সেই গ্রামের একটা আদিবাসী পরিবার নিজেদের ব্যবহারের জন্য চোলাই করে কিছুটা মদ বানায়। আইন আদিবাসীদের মদ বানানোয় কিছু ছাড় দেয়—তাঁরা নিজেদের জন্য ঘরে মদ বানাতে পারেন, কিন্তু সে মদ বিক্রি করতে পারেন না। আদিবাসী যদি নিজের মদ নিজেই তৈরী করে নেন তাহলে মদের ঠিকাদারের দোকানের মদ কিনবে কে? তাই স্বভাবতই শরাব-ঠিকাদার চায় না যে আদিবাসীরা নিজেদের মদ নিজেরাই বানান। সে সময় দল্লী-রাজহরার শরাব-ঠিকাদার ছিল তৎকালীন শাসক দল কংগ্রেসের সদস্য, আবার স্থানীয় বিধায়ক (সে সময় রাজ্যের অর্থমন্ত্রী) ঝুমুকলাল ভেড়িয়ার খুবই ঘনিষ্ঠ। ঠিকাদার খবর পেয়ে চিখলী গ্রামের সেই আদিবাসী স্ব্বামী-স্ত্রীকে আবগারী পুলিশ দিয়ে গ্রেপ্তার করায়, তাঁদের ধরে আনা হয় ঠিকাদারের ঘরে। তাঁদের মারধোর চলতে থাকে, গায়ে এসিড ঢেলে দেওয়া হয়। স্বামী-স্ত্রীর আর্তনাদের আওয়াজ শুনতে পান মদ খেতে যাওয়া কিছু সিএমএসএস সদস্য। ইউনিয়ন দপ্তরে খবর পৌঁছয়। অল্প ক্ষণের মধ্যে কয়েক হাজার ভাটিখানা ঘিরে ফেলেন, গুন্ডাদের হাত থেকে স্বামী-স্ত্রীকে রক্ষা করেন। ঠিকাদার পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে বাঁচে।

    বছর খানেক ধরে বারবার শ্রমিকরা নেতাদের মুখে শুনছিলেন যে পুঁজিপতিরা কিভাবে মদের মাধ্যমে শ্রমজীবী মানুষদের শোষণ করে। এই ঘটনায় তাঁরা প্রত্যক্ষ করলেন শোষণের নগ্নতম রূপ। এক সভায় হাজারো শ্রমিক শহীদদের নামে মদ ছাড়ার শপথ নেন। কিন্তু ছাড়ব বললেই কি মদ ছাড়া যায়? শ্রমিকরা নিজেরাই শপথ ভঙ্গকারীদের জন্য কিছু আর্থিক ও সামাজিক শাস্তি নির্ধারণ করলেন। কিছু শ্রমিক এমন ছিলেন যাঁরা মদের ওপর শারীরিক ভাবে নির্ভরশীল (physically dependant)—তাঁদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হল, তাঁদের পারমিট দেওয়া হতো, সেই পারমিট দেখিয়ে তাঁরা দোকান থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ মদ কিনতে পারতেন।

    মদ ছাড়ানোর জন্য ছত্তিশগড় মাইন্স শ্রমিক সংঘ কতোগুলো অভিনব ব্যবস্থা নেয়, ব্যবস্থাগুলোকে কার্যকর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিত
    নারী শ্রমিক ও এলাকার মহিলাদের সংগঠন মহিলা মুক্তি মোর্চা—
    •কাউকে নেশাগ্রস্ত অবস্থায় পাওয়া গেলে পরের দিন তাঁকে ইউনিয়ন অফিসে উপস্থিত মানুষ-জনের সামনে আধঘন্টা মদ্যপানের স্বপক্ষে ভাষণ দিতে বলা হতো।
    •পুরুষ শ্রমিক মদ খেয়ে স্ত্রী-সন্তানদের মারধোর করলে তাঁরা ইউনিয়নে অভিযোগ জানাতেন। দোষীর বিচার করতেন মহিলা মুক্তি মোর্চার মুখিয়ারা—কখনও কখনও শাস্তি হিসেবে অর্থদন্ড করা হতো, অর্থের ৫-১০% ইউনিয়ন ফান্ডে জমা পড়ত, বাকীটা শ্রমিকের অজান্তে তাঁর স্ত্রীকে দিয়ে দেওয়া হতো।
    •বারবার শপথ ভঙ্গ করলে শ্রমিককে খনির কাজ থেকে সাসপেন্ড করে ইউনিয়নের কাজে ডিউটি দেওয়া হতো।
    •যাঁরা মদ ছাড়তে চাইছেন কিন্তু ছাড়তে পারছেন না, তাঁদের ইউনিয়ন নেতারা একটানা বেশ কিছুদিন সন্ধ্যাবেলা (মদ খাওয়ার সময়টা) নিজেদের সঙ্গে রাখতেন। এতে করে একদিকে মদ খাওয়ার সময় পেরিয়ে যেতো, অন্যদিকে নেতার জীবনযাত্রা-চিন্তাভাবনা-কাজকর্ম শ্রমিকের ওপর প্রভাব ফেলতো।
    •মদ থেকে শ্রমিকদের দূরে রাখতে সন্ধ্যায় লোকগীতি, নাটক, ইত্যাদি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মনোরঞ্জনের আয়োজন করা হতো।

    এইসব ব্যবস্থায় কতোটা ফল হয় তার একটা ধারণা পাওয়া যায় ১৯৮২-তে প্রকাশিত পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিস (PUCL)-এর রিপোর্ট ‘জনবাদী আন্দোলন বনাম শরাব, পুঁজি ও হিংসা কী রাজনীতি’ থেকে। দেখা যায় ’৭৮ থেকে ’৮২-র মধ্যে দশ হাজারেরও বেশী মানুষ মদ ছেড়েছেন। ২০শে জানুয়ারী, ’৮১-তে এক সাংবাদিক দেখেন—যেখানে আগে পাক্ষিক বেতনের দিন দল্লী-রাজহরায় প্রায় ৫০০০ বোতল মদ বিক্রি হতো, সেখানে মাত্র ৪০-৫০ বোতল বিক্রি হচ্ছে। তিনি খোঁজ নিয়ে দেখেন মদের দোকানের ঠিকাদার ১৬ লাখ টাকা দিয়ে মদের দোকানের ঠিকা নিয়েছিল, কিন্তু তার ২ লাখ টাকাও আয় হয়নি।

    শাসকচক্র ও মদ-ব্যবসায়ীরা কিন্তু চুপ বসে থাকেনি। আন্দোলনকে ভাঙ্গতে ’৮১-র ১১ই ফেব্রুয়ারী ইউনিয়নের তৎকালীন সভাপতি সহদেব সাহু ও সংগঠন সচিব শংকর গুহ নিয়োগীকে এনএসএ (National Security Act)-এ গ্রেপ্তার করা হয়। ’৮২-র ১৮ই এপ্রিল অখিল ভারতীয় নশাবন্দী পরিষদের দল্লী-রাজহরা শাখার সভাপতিকে ট্রাক চাপা দিয়ে মারার চেষ্টা করা হয়। এসব দমন-পীড়নে আন্দোলন ভাঙ্গেনি, বরং শ্রমিকরা আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হন।

    নিয়োগী এই আন্দোলনের ওপর শাসকদের আক্রমণের ধারকে ভোঁতা করতে গান্ধীবাদীদের উদ্যোগে গড়ে ওঠা অখিল ভারতীয় নেশাবন্দী পরিষদকে আন্দোলনের সমর্থনে যুক্ত করেছিলেন। পরিষদের নেত্রী সুশীলা নায়ার, পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মন্ত্রী ফরওয়ার্ড ব্লকের ভক্তিভূষণ মন্ডল আন্দোলনের সংহতি শ্রমিকদের পাশে দাঁড়ান।

    মদ্যপান-বিরোধী আন্দোলন যখন পুরোদমে চলছে তখন ১৯৮১-তে কিছু সমাজসচেতন তরুণ চিকিৎসক শ্রমিক সংঘের সঙ্গে কাজ করতে আসেন, যাঁদের কথা স্বাস্থ্য আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেছি। এঁরা মদ্যপানের শারীরিক কুপ্রভাব সম্বন্ধে মানুষকে সচেতন করতে ছোট ছোট আলোচনাসভা চালান, পত্র-পত্রিকায় লিখতে থাকেন। ’৮০-র দশকের শেষে লোক স্বাস্থ্যশিক্ষামালার পুস্তিকা বেরোয়—‘মদ্যপান কে বারে মেঁ সহী জানকারী’। মদের ওপর শারীরিক ভাবে নির্ভরশীলদের হাসপাতালে ভর্তি রেখে মদ ছাড়ানোর চেষ্টা করা হয়।

    ১৯৭৮ থেকে ১৯৯০ (অর্থাৎ যে সময় এই লেখাটা প্রথম লিখি)—দল্লী-রাজহরায় ঠিকাদারের মদের দোকান নেই, মদ বিক্রি হয় সরকারী দেশী মদের দোকানে। যে সামান্য কিছু মানুষ মদ খেতেন, তাঁরাও আন্দোলনের আগেকার মতো খোলাখুলি মদ খেতেন না বা নিয়মিত মদ খেতেন না। মদ্যপান এলাকার মানুষ সামাজিক অপরাধ বলে মনে করতেন। আশার বিষয় ছিল—পরবর্তী প্রজন্ম অর্থাৎ সিএমএসএস-এর সদস্যদের সন্তানদের মধ্যে মদ্যপানের হার ছিল প্রায় শূন্য।

    মদ্যপান বিরোধী আন্দোলনের প্রভাবে শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হয়। ’৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় কাজের খোঁজে গ্রাম ছেড়ে চলে এসে যেসব মানুষ লোহাখনিতে ঠিকাদারী শ্রমিক হিসেবে ভর্তি হন, তাঁদের অধিকাংশ গ্রামে ভূসম্পত্তির অধিকারী হন। ব্যাংকে প্রত্যেকের সঞ্চয় জমে ওঠে। আগে শ্রমিকদের কাছে সাইকেল অবধি ছিল না, এখন সবার কাছে সাইকেল তো আছেই, অনেকে মোপেড, স্কুটার বা মোটরসাইকেল কেনেন। ২০-২৫ বছর আগে যাঁরা ট্রাকের ড্রাইভার হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছিলেন, অর্থ-সঞ্চয় করে তাঁদের অনেকে ট্রাকমালিক হন। শ্রমিক পরিবারের সন্তানরা প্রায় কেউই নিরক্ষর নন—এমনকি গ্র্যাজুয়েট, পোস্টগ্র্যাজুয়েট হয়েছেন কেউ কেউ। অনেকে স্কুল-কলেজের শিক্ষক, সরকারী কর্মচারী। তহশীলদার, এমনকি ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদেও দল্লী-রাজহরার শ্রমিক পরিবারের সন্তান পৌঁছান। শরাব-বন্দী আন্দোলন সত্যিসত্যি দল্লী-রাজহরার জীবনধারাকেই বদলে দেয়।

    দল্লী-রাজহরার সফল আন্দোলন থেকে শিক্ষা নেন তেলেঙ্গানার সামাজিক আন্দোলনের সংগঠকরা, উত্তরপ্রদেশের উত্তরাখন্ড সংঘর্ষ মোর্চার সংগঠকরা—নিজেদের এলাকায় তাঁরা অনেক মানুষকে মদের নেশা থেকে মুক্ত করেন।

    [ দুঃখের বিষয় হলো—নিয়োগীর মৃত্যুর পর পরবর্তী নেতৃত্বের বিচ্যুতি, মেশিনীকরণে সায় দিয়ে শ্রমিক সংগঠনকে অবলুপ্তির পথে নিয়ে যাওয়া—এসবের ফল দেখা যায় শরাব-বন্দী আন্দোলনেও। ২০০৭-এ দল্লী-রাজহরায় গিয়ে আমার নিজের কানে শোনা-চোখে দেখা—যাঁরা মদ ছেড়েছিলেন তাঁদের অনেকে, এমনকি ইউনিয়নের নেতৃত্বে যাঁরা ছিলেন তাঁরাও কেউ কেউ আবার মদ ধরেছেন হতাশা কাটাতে। শহীদ হাসপাতালে আমাকে অপারেশনে এসিস্ট করত যে যুবক, এক ল্যাবরেটরী টেকনিশিয়ান (গ্র্যাজুয়েট—যার বাবা শ্রমিক-গীতিকার, মদের বিরুদ্ধে অনেক গান লিখেছেন-গেয়েছেন যিনি)—এরা অবসর সময়ে মদ খায় অন্য কিছু করার নেই বলে। ]
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১২ অক্টোবর ২০১৪ | ১৩২৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বিভীষণ | 233.223.151.253 (*) | ০৬ নভেম্বর ২০১৪ ০৭:২৪75196
  • এক রাজনৈতিক পরিবারে বেড়ে ওঠার কারনে দল্লী-রাহজরা সম্বন্ধে কিছু জানতাম। আজ আরো একটি অসাধারন আন্দোলনের কথা জানলাম। এ প্রসঙ্গেই মনে উঁকি মারছে আর কিছু প্রশ্ন। স্বল্পবিত্ত শ্রমিক মহল্লার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মত মধ্যবিত্ত মহল্লাতেও মদ্যপানের একটা কালচার বহুদিন-ই রয়েছে। যে মধ্যবিত্ত যুব সমাজ (আমি নিজে যুবক বলে বোধহয় যুব সমাজ নিয়েই প্রশ্ন করতে বেশি আগ্রহী) একদিন সত্তরের দশকে দাপিয়েছিল, আজ সেই সমাজের এক বৃহৎ অংশ অবসর যাপনের হাতিয়ার করে নিয়েছেন ভদকা হুইস্কি সহযোগে বন্ধুবান্ধবের সাথে আড্ডা এনজয় করাকে। এমন কি, কখনো চোখে পড়ে রাজনীতি-সচেতনতাও এই সংস্কৃতির বাইরে বের করে আনছে না। প্রশ্ন হল দিন বদলের আদর্শের সঙ্গে এই কালচার কি আদৌ খাপ খায়? শুধু মদ্যপান নয়, টোট্যালিটিতে এই সংস্কৃতিকে দেখলে কী যুক্তিগ্রাহ্যভাবে পরিস্ফুট করা যায়, এ কালচার যেমন আন্দোলন বিমুখতার জন্য দায়ী তেমনি আবার দীর্ঘদিনের আন্দোলন বিমুখতার মানসিকতা এই সংস্কৃতির ভিত্তি দৃঢ় করছে? না কী এই সংস্কৃতির এমন সামর্থ্য আছে যে, এ জন্ম দেবে নতুন করে দিন বদলের নতুন স্বপ্ন দেখা? হয়তো সময়ের সামর্থ্য রয়েছে প্রশ্নগুলোর সঠিকতম উত্তর দেওয়ার। কিন্তু বহু্দিনের বহু আন্দোলনের আঁচে দৃঢ়, লেখকের অভিজ্ঞতার মাপকাঠিতে আমার প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে খুব ইচ্ছে করছে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই প্রতিক্রিয়া দিন