এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ভাষা, আত্মসম্মান ও অধিকার – পা চাটতে লাগে শুধু জিভ

    Garga Chatterjee লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ | ৮৪৪২ বার পঠিত
  • পুরো দুনিয়া জুড়ে ব্যবসার একটা প্রাথমিক নিয়ম আছে। ইংরেজিতে এই নিয়ম-কে বলে ‘কাস্টমার ইজ কিং’ অথবা ‘কাস্টমার ইজ অলওয়েজ রাইট’। এর ভাবার্থ হলো, কোন পরিষেবা দানের ক্ষেত্রে, গ্রাহকের সুবিধে-অসুবিধে, সেইটাই আসল। যে পরিষেবা দিচ্ছে, যেহেতু যে গ্রাহকের থেকে টাকা নিচ্ছে, তাই তার দায়িত্ব হলো গ্রাহক-কে তার সুবিধে মত পরিসেবা দেওয়া। গ্রাহকের কাজ নয় পরিষেবা-দাতার সুবিধে মত ছাঁচে নিজেকে তৈরী করা। দুঃখের বিষয় হলো, নিখিল বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ শহর আমাদের এই কলকাতায় এই নিয়মটি বাঙালিদের ক্ষেত্রে খাটে না। একটু ভেঙ্গে বলি।

    সম্প্রতি আমি প্লেনে চেপে চেন্নাই গেছিলাম। দমদম বিমানবন্দরে পৌছনোর পর ঘোষণায় জানলাম যে গেটটি থেকে প্লেন ছাড়ার কথা ছিল, সেটি পাল্টে গেছে। আমাকে যেতে হবে আরেকটি গেটে। অগত্যা তাই গেলাম। আমি ছিলাম প্লেনে ওঠার লাইনের একদম শেষের দিকে। আমরা সকলে প্রায় প্লেনে উঠে পরেছি তখন দেখলাম একজনকে বেশ ধমক দিতে দিতে একজন এয়ার ইন্ডিয়া কর্মী আমাদের লাইনের দিকে দেখাচ্ছেন। উনি বেশ অপদস্থ ও লজ্জিত বোধ করে গুটি গুটি আমাদের লাইনের দিকে এগিয়ে এলেন। আমি ওনাকে ব্যাপারটা জিজ্ঞেস করলাম। উনি আমাকে জানালেন যে উনি বাংলা জানেন কিন্তু ইংরেজি-হিন্দী জানেন না। না জানতেই পারেন। অধিকাংশ বাঙালি-ই ইংরেজি-হিন্দি জানেন না। বিশ্বজুড়ে অধিকাংশ মানুষই নিজেদের মাতৃভাষা ছাড়া অন্য ভাষা জানেন না। না জানাটা অপরাধ নয়। অধিকাংশ রুশ, অধিকাংশ জাপানি, অধিকাংশ চীনা মানুষ-ই নিজেদের মাতৃভাষাই শুধু জানেন। যেহেতু এই বাংলার সর্ববৃহৎ শহরের সর্ববৃহৎ বিমানবন্দরে এই বাঙ্গালীটি শুধু বাংলা জেনেই ঢুকে পড়েছেন প্লেনে চাপতে, তাই স্রেফ হিন্দি ও ইংরেজি-তে করা ঘোষণাগুলি উনি ঠিক ধরতে পারেননি। ফলে পুরনো গেটেই এদিক সেদিক করছিলেন। তারপর সেখানে চেন্নাই-এর প্লেন ছাড়ার কোন চিহ্ন না দেখে শেষে একে তাকে জিজ্ঞেস করে এই নতুন গেটে এসছেন। যেহেতু দেরি করে এসছেন, তাই যে এয়ার ইন্ডিয়াকে উনি গুনে গুনে প্লেনে চড়তে অনেক টাকাই দিয়েছেন, তারা তাকে দেরি করার জন্য ধমক দিচ্ছিলেন। উনি লজ্জা করে আর বলে উঠতে পারেননি যে উনি হিন্দি-ইংরেজি জানেন না। আসলে লজ্জা পাওয়ার কথা এয়ার ইন্ডিয়ার। যে কোম্পানি কারুর থেকে কড়ায়গন্ডায় টাকা বুঝে নিয়ে গ্রাহকের নিজের ভাষায় তাকে পরিষেবা দিতে অস্বীকার করে। আর লজ্জা পাওয়ার কথা আমাদের – যারা বাংলায় বসে বাঙালির সাথে এয়ার ইন্ডিয়ার এই হিন্দি-ইংরেজি খবরদারি নীতিকে স্বাভাবিক মনে করি এবং স্রেফ বাংলা জানা বাঙালির হিন্দি-ইংরেজি না জেনেই তার নিজেদের দেশ বাংলার মাটিতে গড়া বিমানবন্দরে এসে প্লেনে চড়ার ‘ধৃষ্টতা’কে অস্বাভাবিক মনে করি।

    আমরা ভারতীয় ইউনিয়ন নাম এক অদ্ভূত রাষ্ট্রের অধীন। এখানে সরকারী এয়ারলাইন কোম্পানি, যা কিনা অনেকের মতই বাঙালির দেওয়া টাকার ভর্তুকি-তে চলে, এলাকার মানুষকে এলাকার ভাষায় পরিষেবা দিতে চায় না। বলে নিয়ম নেই। আসলে এই নিয়ম ভারত সরকারের। এ নিয়ম সচেতন। এ নিয়ম এই রাষ্ট্রে হিন্দি-ইংরেজি ভাষী ছাড়া আর সকলকে দ্বিতীয় শ্রেনীর নাগরিক করে রাখার এক সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। এই নিয়মতন্ত্র চলছে আমার আপনার টাকায়। এই নিয়মকে অনেক উড়ুক্কু বাঙালি সঠিক মনে করেন। আমাদের মতো নির্লজ্জ ও ক্ষমতার পা-চাটা জাত আর হয় না। বাঙালি এলিট-রা এককালে ইংরেজ-দের পা চাটত, এখন তারা পা চাটে দিল্লীর। এই পা চাটার মাধ্যমেই স্রেফ নামে একটি বাঙালি শ্রেণী সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রাণে-বচনে-যাপনে বাঙালিদের দাবিয়ে রেখেছে। এই শ্রেনীর উত্খাত এমন এক মঙ্গলময় প্রকল্প যাতে বঙ্গলক্ষ্মীর আশীর্বাদ থাকবে বলে আমি নিশ্চিত।

    ওই প্লেন যাত্রায় বাঙালির বিড়ম্বনা এখানেই শেষ না। প্লেন যাচ্ছে বাংলা থেকে তামিল নাডু। প্লেনের অধিকাংশ যাত্রীর মাতৃভাষা হয় বাংলা কিম্বা তামিল। কি করে সিট-বেল্ট বাঁধতে হয় থেকে শুরু করে বিপদ হলে কি কি করতে হবে, এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলি এই সরকারী প্লেনে বাংলা বা তামিল, কোন ভাষাতেই বিমান-সেবিকারা ঘোষণা করলেন না। এমনকি লিখিত অবস্থাতেও সেটি সে তথ্য কথাও ছিল না। যে সরকার তার নীতির অংশ হিসেবে বাঙালি ও তামিলদের সুরক্ষা নির্দেশাবলী শোনায় হিন্দি-তে, সে সরকার আর যাই হোক বাঙালি বা তামিলের প্রাণ ও সুরক্ষা নিয়ে চিন্তিত নয়। তাহলে এ কেন্দ্রীয় সরকার আসলে কার? যাদের ভাষায় তারা সুরক্ষা নির্দেশ দিল, তার। আমার বলতে লজ্জা করছে যে মধ্য-প্রাচ্য থেকে অনেক বিমানে চড়ে আমি কলকাতা এসছি, যেখানে প্লেনের নানা অংশে নানা নির্দেশ (যেমন দরজায় লেখা ‘টানুন’ বা ফ্লাস করতে কোথায় টিপতে হবে) বাংলা-তামিল-হিন্দি-আরবী-ইংরেজি এমন অনেক ভাষায় লেখা থাকে। কেন? তাদের কাছে বিমান একটি পরিষেবা, যেখানে তারা গ্রাহকের সুবিধা করতে চায়। আমার দেশ যে রাষ্ট্রের অধীন, তারা দুরদর্শন থেকে ব্যাঙ্কের পাশবই থেকে সরকারী বিমানের সুরক্ষা নির্দেশ, সবখানেই হিন্দি প্রচারের মাধ্যমে তেরঙ্গা জাতীয়তাবাদ প্রচারে ব্যস্ত। ঐক্যের মধ্যে বৈচিত্রের স্লোগানের নাম যে জুয়াচুরি অ-হিন্দিভাষীদের সাথে চলেছে দেশভাগের পর থেকে, তার হিসেব কি আমরা নেব না? আমরা নিজেদের কাছে আর কত ছোট হবো? এ কোন একতা যা বজায় রাখতে আত্মসম্মান বন্ধক রাখতে হয়? একতা চাই – এমন একটা, তার পূর্বশর্ত হবে পারস্পরিক সম্মান।

    প্লেনে যে ওঠে, সে শুধু বাংলা জানুক বা ইংরেজি পণ্ডিত হোক, নিখিল বাংলাদেশের নিরিখে সে একজন এলিট। সেখানেই যদি ভাষার ক্ষেত্রে এমন করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়, একবার ভেবে দেখুন রোজকার সেই অভিজ্ঞতাগুলির কথা – যেখানে বাংলার সীমান্তের বিএসএফ, কলকাতার মেট্রোতে রেল পুলিশ, বর্ধমানে সরকারী বেঙ্কের ম্যানেজার এবং আরো অনেকে যারা নাকি আমাদের ‘পরিসেবা’ দ্যান বাংলা না জেনেই। উত্তরপ্রদেশে হিন্দি না জেনে এই কাজগুলি করতে চাইলে স্থানীয় মানুষ তাদের কি অবস্থা করত, সেটা নাই বললাম। অনেকেই এসব শুনে বলবেন – হিন্দী তো রাষ্ট্রভাষা বা জাতীয়ভাষা। তাদের জানিয়ে রাখি, হিন্দি রাষ্ট্রভাষা নয়, জাতীয় ভাষাও নয়। এগুলি রাষ্ট্র হিতার্থে চালু গুজব। গুজরাট হাইকোর্ট রায়তে জানিয়েছেন যে গুজরাটের ক্ষেত্রে হিন্দী ‘ফরেন’ বা বিদেশী ভাষা। আর রয়েছি আমরা। এমন এক জাতি, যারা কোথাও ঢুকতে গেলে দরজা খুলতে বলিনা, দরজার ফাঁক দিয়ে নিজেকে বেঁকিয়ে গলানোর চেষ্টা করি। এই বাঙালিই বাংলার মাটিতে টেক্সীকে হাত দেখিয়ে হিন্দিতে জিজ্ঞেস করে ‘যায়েগা?’। চম্পারন বা ভোজপুর জেলা কলকাতায় গতর খাটতে আশা আমার সেই টেক্সী-চালক ভাই-এর ভাষা যে হিন্দি নয়, ভোজপুরি, আমরা তাও জানিনা। এও জানিনা যে সে বাংলা বোঝে। দিল্লি-তে তো কত বাঙালি শ্রমিক কাজে যান – কোন হিন্দিভাষী সেখানে তাদেরকে বাংলায় হাঁক দ্যান?

    সম্প্রতি মহারাষ্ট্র সরকার নিয়ম করেছেন যে নতুন অটো-রিক্শ পারমিট পেতে হলে মারাঠি বলতে জানতে হবে। কোন প্রতিবাদ হয়নি এ ঘোষণার কারণ এটি স্বাভাবিক। সেখানে অধিকাংশ অটো-চালকের মাতৃভাষা মারাঠি নয়। তারা বাইরে থেকে আসা। কিন্তু তারা জানে না এক্ষেত্রে যাকে পরিসেবা দেওয়া হচ্ছে, সেটাই অগ্রধিকার পায়। সেই বহিরাগতরাও মারাঠি শিখে নিয়েছে এবং সৎভাবে রোজগার করে খাচ্ছে। এটা এই বাংলায় সম্ভব না। কারণ এর জন্য লাগে আত্মসম্মান ও শিরদাঁড়া। পা চাটতে লাগে শুধু জিভ।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২২ ডিসেম্বর ২০১৫ | ৮৪৪২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • h | 213.99.211.81 (*) | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:২৯69594
  • একক ঃ-))) এস্পারান্তো ফেল করেছে।।।।ঃ-))) তোমার এটাকে ক্যাচাল মনে হচ্ছে, কল্লোল দার আর আমার এটাকে ডাইভার্সিটির গণতান্ত্রিক আলোচনা পদ্ধতি মনে হচ্ছে। কেন একটা ন্যাশনাল লিঙ্গো লাগবে কেন? মানে তোমার বানানো রোবোট যদ্দিন একটা সোজা মত হিন্দী বানিয়ে দেয় ঃ-)))
  • Ekak | 113.6.157.186 (*) | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৪৯69595
  • কোনো ভাষা বন্ধ করতে বলছি না তো । হিন্দি -তামিল-বাংলা সবাই থাকুক । একটা কৃত্রিম ভাষার উদ্যোগ দরকার যেটা কমন ল্যন্গুএজ হিসেবে ব্যবহার হবে। যেকোনো সিস্টেমে মাঝে মাঝে ঝুঁটি বেঁধে দিলে আবার নতুন করে খুলতে সুবিধে হয় । কৃত্রিম একটা খাঁচা দেওয়া হোক। এবার সবাই সেই খাঁচায় নিজের শব্দ-রীতি গুঁজে দেওয়ার চেস্টা করুক । মজা হবে বেশ :) বোঝাতে পারছিনা বোধহয় । এস্পেরেন্ত বা ইন্লিন্গুয়া এরকম সেন্ট্রালি কন্ত্রল্ড ব্যাপর না । একটা বেসিক লুক আপ থাকবে। তারপর সবাই সেটা নিয়ে লড়বে । হিন্দি না তামিল এই আলোচনা টা ঠিক কোথাও পৌছয় না । মজা নাই :|
  • Ekak | 113.6.157.186 (*) | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৫৭69596
  • মানে এরকম বলা যায় হয়ত , কোনো অফিসিয়াল ভাষাই তো ন্যাচেরাল নয় , ভাষা যার ব্যকরণ ইত্যাদি আছেঃ তা কৃত্রিম , কাজের প্রয়োজন এ কোনো না কোনো সময় কেও বা কাহারা ঝুঁটি বেঁধেছে তারপর সেই কন্স্ত্রাক্ষণ আবার ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে সো কল্ড ন্যাচেরাল হয়ে গ্যাছে , তো আবার ওরকম একটা বাঁধা গেলে এবং এবার ,যন্ত্র যেহেতু আগেচ্চে উন্নত , সবাইকেই গুঁত গুঁটির এতটা চান্স দিলে বেশ মজা হয় । বোঝন যোগ্য হলো বোধায়।
  • T | 190.255.250.159 (*) | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:২৬69597
  • না, এখনো হয় নি।
  • avi | 113.252.164.73 (*) | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:৪৪69598
  • আমার এক কেরালাইট দিদির বর উর্দূভাষী। তারা কলকাতায় থাকে। তাদের মেয়ে ৩-৪ বছর বয়সে কথা বলার সময় মালয়ালী, উর্দূ, বাংলা আর ইংরেজি একসাথে ব্যবহার করত। র‍্যান্ডমলি একটার গ্রামার, আরেকটার নাউন, অন্যের ভার্ব এইভাবে। দিদি তা নিয়ে বেশ চিন্তিত থাকতো। এই ধাঁচে কি নতুন ভাষা তৈরি হবে? লার্জ স্কেলে?
  • SC | 117.206.249.8 (*) | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৫:৪১69592
  • আচ্ছা, লেখকের মতে কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড এ দাঁড়িয়ে, এইভাবে হিন্দিভাশায় বক্তৃতা করা কি উচিত?
    যারা বুঝতে পারলেননা, তাদের জন্য অল্টারনেট ব্যবস্থা করতে হবে।
  • কল্লোল | 111.63.196.185 (*) | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৬:৫৫69599
  • তৈরী করা ভাষা টেঁকে না। একক যেভাবে বলছিস, অনেকটা সেরকম "ঝুঁটি" বেঁধেই পরেকার সংষ্কৃত তৈরী হয়। শাসনের প্রয়োজনে কমন ভাষা। সে দেবভাষা বলেই রয়ে গেলো ও কালে কালে মরেও গেলো।
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৭:০৪69600
  • কিন্তু সব পার্টিই তো ভোতের সময় একই ভাষায় কথা বলে। ভাষা দিয়ে ভোটে বাজিমাত - ধুস্‌, এমন হয় নাকি !
  • potke | 126.203.27.115 (*) | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৭:৩৯69601
  • টি, বুঝলি না? এককের ধান্ধা একটা মডেল নামানোর ঃ)
  • কল্লোল | 111.63.68.119 (*) | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ১২:৫৯69590
  • এবার বামেদের পালা। বুদ্ধবাবু নাকি মমতার ঢংএ স্লোগান দিয়েছেন - তৃণমূল হঠাও - বাংলা বাঁচাও। এবং জনতাকে তার সাথে স্লোগান দিতে বলেছেন। এমন জাহ উনি আগে কখনো করেছেন কি না তা কেউ মনে করতে পারছেন না। কিন্তু মমতা তো এটাই করতেন। বাংলা বাঁচাওটা কমন।
    এভাবেই পাল্টায়।
  • কল্লোল | 111.63.68.119 (*) | ২৮ ডিসেম্বর ২০১৫ ১২:৫৯69591
  • *কাজ
  • কল্লোল | 111.63.211.146 (*) | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৩:৫৮69602
  • লসাগু।
    গ্রহনযোগ্যতার সাথে ভোটের ততো নির্দিষ্ট সম্পর্ক নেই।
    ভাষা বিষয়টা শুধু কথা বা লেখার মধ্যে আটকে থাকে না। তার সাথে বক্তার কথার সুর, শব্দচয়ন, আওয়াজের স্তর, চাহনি, সব মিলিয়ে শরীরভাষাও যোগ হয়।
    গতকাল ব্রিগেডে বামেরা বলছে শিল্প চাই, না হলে বাংলার উন্নয়ন হবে না। একই কথা ২০০৯-১০এও বলেছিলো। পার্থক্যটা ঐ কথার সুর, শব্দচয়ন, আওয়াজের স্তর, চাহনি, সব মিলিয়ে শরীরভাষাতে। আজ তারা অনেক বিনয়ী।
    মমতাও উন্নয়নের কথা বলছে। সে বলার মধ্যে শাসকের অহমিকা ফুটে উঠছে।

    গ্রহনযোগ্যতা একটা অন্য বিষয়। ৫০এর দশকে কমিউনিস্ট পার্টির কর্মীদের সমপ্র্কে সাধারণের মনোভাব ছিলো - ওরা খুব ভালো ছেলেমেয়ে, সৎ, বিনয়ী, কিন্তু বাউন্ডুলে। তাই ওদের সাথে আমার ছেলেমেয়ে মিশলে তারা গোল্লায় যাবে।
    ৬০এর প্রথম দিকে বিশেষ করে ৬২র চিন-ভারত যুদ্ধের পর গ্রহনযোগ্যতা কমে যায়। ঐ ছেলেমেয়েগুলো-ই চিনের দালাল, দেশদ্রোহী হয়ে যায়।
    ঐ সময়ে কমিউনিস্ট কর্মীরা তাদের আচার আচরণের মধ্য দিয়ে মানুষের মনে গ্রহনযোগ্যতা ফিরিয়ে আনে। তবেই না খাদ্য আন্দোলন এতো সফল হয় সাধারণ মানুষের যোগদানে। তখন কোন ভোট ছিলো না। ভোট হয় ১৯৬২তে তারপর ১৯৬৭তে।
  • lcm | 83.162.22.190 (*) | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:৩৩69604
  • কল্লোলদা, সেটা ঠিক। তবে কি সেদিন আর নেই। ভদ্র সভ্য আচরণকে চারিত্রিক দুর্বলতা, বেসিক অনেষ্টিকে স্টুপিডিটি, আর, মিথ্যা কথা বলাকে যে সমাজ স্মার্টনেস বলছে সেখানে টাফ্‌।
  • PT | 213.110.246.230 (*) | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:৫৯69605
  • বামেদের গ্রহণযোগ্যতা ও বর্জনযোগ্যতা নিয়ে এমন অতিসরলীকরণ এর আগে কেউ করেছে বলে মনে করতে পারি না। তার ওপরে "তৃণমূল হঠাও - বাংলা বাঁচাও" নাকি মমতার ঢং-এ স্লোগান!! কার কিসে পেটেন্ট নেওয়া আছে কে জানে!!

    "কৃষি আমাদের ভিত্তি আর শিল্প আমাদের ভবিষ্যত"-এই শ্লোগানের মধ্যে বিশেষ অহমিকা ছিল বলে তো মনে করতে পারিনা। ঐ শ্লোগান দেওয়ার পরেই তো বুদ্ধবাবু হৈ হৈ করে জিতে ক্ষমতায় ফিরেছিলেন।
  • Ekak | 113.6.157.186 (*) | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৬:০০69606
  • " Comment from কল্লোল on 29 December 2015 00:25:57 IST 111.63.196.185 (*) #
    তৈরী করা ভাষা টেঁকে না। একক যেভাবে বলছিস, অনেকটা সেরকম "ঝুঁটি" বেঁধেই পরেকার সংষ্কৃত তৈরী হয়। শাসনের প্রয়োজনে কমন ভাষা। সে দেবভাষা বলেই রয়ে গেলো ও কালে কালে মরেও গেলো।"

    "মরে গ্যালো " মানে কি ? ভাষা কি সেজ মামা নাকি ? :( ছোট ছোট গোষ্টি তে তৈরী হওয়া লোকাল ন্যাচেরাল ল্যন্গুএজ ঝুঁটি বেঁধে কন্স্ত্রাক্তেদ ল্যন্গুএজ তৈরী করা হয় । আবার এই কন্স্ত্রাক্তেদ ল্যান্গুএজ বিবর্তনের নিয়মে আলাদা আলাদা গোষ্টি তে আলাদা আলাদা রূপে মিশে যায় । সংস্কৃত ও তাই হয়েছে । "টেঁকে না" মানে কি বলছ সেটাই ক্লিয়ার হলো না । এই যে চুলে ঝুঁটি বেঁধে রাখা সে কি ঝুঁটি টিঁকবে বলে ? না, জট পাকানো যাতে কমে তাই ।

    আমি অবিশ্য়ী যেটা বলছিলুম সেটা ঠিক পুরনো অর্থে "ভাষা " নয় । ভাষা র কমন মডেল গোছের ।
  • কল্লোল | 125.185.153.107 (*) | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ ১০:২৩69607
  • পিটি।
    একটু মনে করে বলো। ....বাঁচাও - স্লোগান বামেদের থেকে শুনেছো কখনো? এটা কংগ্রেসী ঘরানার স্লোগান। লাল হঠাও বাংলা বাঁচাও - নব-যুবদের স্লোগান ছিলো। পরে মমতা দিয়েছে, সিপিএম হঠাও বাংলা বাঁচাও। এই প্রথম বামেরা দিলো এমন স্লোগান।
    জরুরী অবস্থার সময়েও বামেরা স্বৈরতন্ত্র বিরোধী স্লোগান দিয়েছে, কিন্তু ইন্দিরা হঠাও ভারত বাঁচাও স্লোগান উত্তর ভারতেই জনপ্রিয় হয়েছে - রাজনারায়ণের স্লোগান।
    আর আমি তো বারবার লিখ্ছি ভাষা গ্রহনযোগ্যতা তৈরীর একটা মাপকাঠি মাত্র, তাও ছোট মাপের। বড়গুলো অবশ্যই আন্দোলন, রাজনৈতিক পরিস্থিতি ইঃ কিন্তু ভাষাও ম্যাটার করে।

    একক। ভাষা সেজমামা তো বটেই। সে জম্মায় ও মরেও। পৃথিবীতে বহু ভাষা পটল তুলেছে - দুটো কারনে। ১) সে ভাষায় কথা বলা গোষ্ঠী বিলুপ্ত হয়েছে। ২)অন্য ভাষা আধিপত্য কায়েম করায় সে ভাষার ব্যবহার বন্ধ হয়ে গেছে। দ্বিতীয়টার উদাহরণ সংষ্কৃত আর ল্যাটিন।
  • h | 213.99.211.81 (*) | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৫ ১০:৫৩69608
  • কল্লোল দা, দ্বিতীয়টার অন্য উদা ওয়েল্শ আর আইরিশ গেলিক।

    আশা করেছিলাম, কল্লোলদা কলিম খানের লেখায় রেটোরিক ইত্যাদির ব্যাবহার নিয়ে কিসু বলবে তো দেহ ভাষা আর বডি ল্যাংগুয়েজ দিয়েই ছেড়ে দিল।

    মডেল আপাতত সেজমামা হয় কিনা সেটাই যা দেখার ঃ-)
  • Abhyu | 109.172.116.187 (*) | ০৮ জানুয়ারি ২০১৬ ১২:৩৩69609
  • ছ তারিখ বুধবার কলকাতা ডোমেস্টিক টার্মিনালে তিন ঘন্টা বসে ছিলাম। শুধু ইংরেজিতে ঘোষণা। মাঝে মাঝে দু একটা বাক্য হিন্দীতেও বলছে কিন্তু বাংলার নাম গন্ধ নেই। কোনো এয়ারলাইন্সেই বাংলার ব্যবহার নেই।
  • Ujbuk | 96.159.139.243 (*) | ১৭ জানুয়ারি ২০১৬ ১১:১০69610
  • আমি যখন পড়াশুনো করতাম তখন আমার দ্যাশ এর হাল শুনে আমার এক মার্কিনি দোস্ত বলেছিল আমাদের দেশে একটা ন্যাশনাল orgy চালু করতে । দুই generation এই সব ধর্ম, জাতি, ভাষা ঘেঁটে ঘ হয়ে যাবে।

    ওটা এয়ারপোর্ট থেকেই চালু করা যেতে পারে
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন