এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • বিচার

    dd লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ | ৬৫২ বার পঠিত
  • বিচার

    বিচারক বল্লেন " তাহলে আপনার নিজের ছেলেও স্বীকার করলো? " তাঁর গলায় শ্লেষ ছিলো। আর আসন্ন বিজয়ের গৌরব।

    আমি চুপ করে থাকি। বলবার মতন কথা তো কতই রয়েছে। কোথার থেকে শুরু করবো। কোথায় শেষ।

    বড় ছেলে স্থির দাঁড়িয়ে। সে আমার চোখে চোখ রাখতে দ্বিধা করছে না। উন্নত শির। সা জোয়ান। মরদের বাচ্চা আমার ছেলে।

    বিচারক আমার বড় ছেলের দিকে তাকায়। " আর কিছু ? আর কিছু বলার আছে?"

    " না "। আমার দিকে ফিরে তাকায় বড় ছেলে। প্রত্যয়ী কন্ঠে বলে " বাবা, তুমি মেনে নেও। এতে তোমারই ভালো হবে। মেনে নাও "। হয়তো বাক্যবন্ধের শেষে একটু অনুনয়ের ছোঁয়ায় ওর গলাটা নরম হয়ে আসে। আমার শুনতে ভালো লাগে। কতদিন তো আমার কাছে কিছু চায় নি। শেষ কবে কিছু আবদার করেছে? ছেলে তো চাইবেই, বাবার কাছে। চাইবে না ?

    আমি শুধু মাথা নাড়ি। আমার আর কিছুই বাকী নেই। দেবার নেই। পাওয়ার নেই। শুধু নিজের উপর এই বিশ্বাসটুকু। এই শ্রদ্ধা টুকু। সেটা বিসর্জন দিলে আর কি থাকে আমার।

    নাটকীয় ভাবে,মাথা দুলিয়ে,শুন্যে হতাশ হাত ছুঁড়ে ,সবাইকে শুনিয়ে এক বিরাট দীর্ঘশ্বাস ফেলে আমার বড় ছেলে ফিরে যায়। আমি ওর স্বাস্থ্যবান পিঠের দিকে তাকাই। ইচ্ছে করে ,খুব ইচ্ছে করে ওর ঘাড়ে হাত রাখি।মাথার চুলে হাত বুলিয়ে দেই। একবার।

    তাকাই। আমার স্ত্রী উঠে দাঁড়ায়। বড় ছেলেকে জড়িয়ে ধরে । আমার দিকে তাকায় না। মাথা নীচু করে হেঁটে যায় বিচারকক্ষের বাইরে। আধো অন্ধকার ঘরের আধ খোলা দরজা দিয়ে গল গল করে বয়ে যাচ্ছে সুর্য্যের আলো। ঘরের আবছা বাদামী আর আবলুশ কালো ছায়া জমাট অন্ধকারের সামনে ঝর ঝর করে সুর্য্যের আলো ঝরে পরে।

    বেরোনোর ঠিক আগের মুহুর্ত্তে আমার ছোটো ছেলে ফিরে তাকায় আমার দিকে। ভালো করে নজর পরবার আগেই ওরা মিলিয়ে যায়। আমার মা, স্ত্রী,বড় আর ছোটো ছেলে। বাইরের ঝলসানো রোদ ওদের গ্রাস করে।

    রক্ষী চিৎকার করে বলে " ফাটক, ফাটক "।

    ফাটকে ঢুকবার অনেকটা আগের থেকেই উৎকট গন্ধটা নাকে আসে। ঠিক কিসের গন্ধ ? একটা কটু তিক্ত গন্ধ। ফাটকে কোনো হাওয়া নেই। আবছা অন্ধকারের চোখ সইয়ে নিতে সময় লাগে খানিকটা। ঐ ওপরের ঘুল্ঘুলি দিয়ে একটা ক্ষীন রশ্মি এসে পরে, মেঝেতে একটা পাঁশুটে বৃত্ত এঁকে দেয়। ছোটো ধুলিকনা কাঁপতে কাঁপতে উঠে যায় ঘুলঘুলির দিকে।

    অধ্যাপক বলেছিলেন শ্লেষ্মা বিজড়িত কন্ঠে " ওরা ত্রসরেণু। ভয় পায়। কাঁপতে থাকে। তাই দেবতারা পুরোহিতেরা এদের বলে ত্রসরেণু "। অধ্যাপক আর নেই। সেই যে গেলো বিচার সভায় ,তারপর নিশ্চয়ই ঘাতকেরা নিয়ে গেছে। আমার পাশে বসে ফিস ফিস করে কথা বলতো। আধো অন্ধকারে দেখতাম চোখদুটো ঘোলাটে। মুখের চামড়া কুঁচকে আছে। দেখতাম চোখের চারিপাশে বলিরেখা। না কি কলংক রেখা।

    অধ্যাপককে ছাত্ররা ভালোই পিটিয়েছিলো। ছাত্রীরাও । নাকি চুল খিমচে তুলে নিয়েছিলো। গল্প শুনেছিলাম। তখনো আমি ফাটকের বাইরে। দিন গুনছি কখন ডাক পরবে। ভাবিনি অধ্যাপকের সাথে দেখা হবে এই দক্ষিনের ফাটকে।

    তখন খবর শুনতাম। অধ্যাপকের রক্তাক্ত দেহকে কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে, বাইরে আছড়ে পরছে নগরের হাজার তরুন তরুনী। ফুঁসছে দেশের যৌবন। আকাশে মুঠি তুলে গর্জাচ্ছে। বিচার চাই। বিচার চাই। অধ্যাপকের শাস্তি চাই। ফাঁসী চাই। ফাঁসী চাই।

    আমি তখন প্রহর গুনছি। এবার আমার পালা । পেয়াদা আসবে আমাকে নিয়ে যেতে।
    নর্মদা নদীর দুকুল ছাপানো ভরা শরীর, উথাল পাথাল খায় ঢেউ। ছুটে চলে সাগরের দিকে। তার পাশ দিয়ে আকাশ ছোঁয়া বন্দীশালা। বিচারভুমি। খাড়া পাহাড়ের মতন উঠে গেছে। চোখ আটকে যায় আকাশের গায়। কালো নিশ্ছিদ্র প্রাচীরের মধ্যে যে ঢোকে সে আর বেড়োয় না।

    আমার বিচারের দিনওতো ফুরিয়ে এলো। আর নতুন কোনো সাক্ষী নেই। অশীতিপর মা এসে বলে গেলো কাঠগরায় দাঁড়িয়ে।

    "হ্যাঁ, এই আমার ছেলে।

    " বুড়ী, সত্য বলো। তোমার ঐ ছেলের কোমড়ে অমন লালচে জরুল ছিলো? "

    " না, হুজুর। সত্যি বলি। ঐ জরুল ওর জন্ম থেকে ছিলো না "

    " বুড়ী, সত্যি বল। "

    " হুজুর সত্যি বলি। এক বছর আগেও দেখি নি। জানি না এখন ওর কোমড় জুড়ে কি করে ঐ তাগড়া লাল জরুল "

    " বুড়ী, সত্যি বল। তোর ছেলের ফাঁসী হয়ে যাবে। এই জরুল ওর জন্ম দাগ নয় ? "
    " না হুজুর। সত্যি কথা বলি। এ ওর জন্ম দাগ নয় "

    বড় পেয়াদা হা হা করে হাসে। " ছেলেকে বাঁচাতেও বুড়ী মিছে কথা কইলো না। বুড়ীকে প্রসংসা করি "।

    বিচারক ও যোগ দেন " বুড়ী তোমার সত্যবাদিতা সকলের আদর্শ। তোমার ছেলের নির্ঘাত ফাঁসী শুনেও তুমি সত্যের পথ থেকে সরো নি। তোমার ভালো হোক "

    মা আশীর্বাদের ভংগীতে হাত তোলে। ঠক ঠক করে কাঁপতে কাঁপতে নেমে যায়। আমার দিকে দেখে না।

    ফাটকে ফিরে গেলে অধ্যাপক চুপি চুপি প্রশ্ন করে "মানলো ? মা মানলো ? "

    আমি নিঃশব্দে ঘাড় নাড়ি। ঘুলঘুলি দিয়ে একটা নিষ্প্রভ আলো আসে। পরন্ত রোদ। তেমন তেজ নেই। বিচার সভায় দরজা খোলার সময় মনে হলো বাইরে মেঘলা ছিলো। এক ঝলকের দেখা।

    অধ্যাপক দুঃখ পান। " আমার মেয়েটাও মেনে নিলো। আমার চোখে চোখ রেখে বল্লো আমার চোখের মনি রুপালী হয়ে গেছে। সে দেখেছে নিশুতি রাতে। আমার রুপালী চোখ ঝিক মিক করছে। একবার। দুবার।

    কাঁদলো না। ওর গলা কাঁপলো না। বল্লো আমার নিঃশ্বাসে পেয়েছে কেয়া ফুলের গন্ধ। দেখেছে আমার চুল রুপালী হয়ে গেছে। "

    " আমার খুব প্রিয় ছাত্র। তার রাগে গা কাঁপছিলো। সে আমার টুটি চেপে ধরেছিলো। তার রাগী মুখের থুথু আমার চোখে মুখে এসে পরছিলো। আমার জ্বালা করছিলো।

    দেখছিলাম কেমন মনোযোগ দিয়ে সে মুঠি পাকায়। আমার গায়ে মারবে বলে। লক্ষ্য স্থির করে আমার মুখে মেরেছিলো। আমার দাঁতে। আমার রক্ত ওর হাতে লেগেছিলো। ওর জামায়। জ্ঞান হারাবার আগে দেখেছিলাম ।

    **********************

    খোঁড়া আসে আমার কাছে। " আজ কি হলো, মশাই ?
    খোঁড়াকে বলি আমার বড় ছেলের কথা। বুকের ভিতরটা কেমন ভারী হয়ে আসে। যেন পঞ্চবটীর পাশে রাখা মহাশিলা। গুরুপুকুরে আধেকটা ডুবে থাকে। সবুজ শ্যাওলায় ঢেকে গেছে তার গা । বুকের ভিতর অনুভব করি সেই প্রগৈতিহাসিক কাছিমের মতন বিরাট পাথর। আস্তে আস্তে আরো বড় হচ্ছে।

    সে আমার চোখের দিকে তাকায়। মমতায় হাত বুলায়। বলে " মশাইএর বড় দুঃখ? নয় ?" আমি চুপ করে থাকি। সত্যি ,উত্তরটা আমার জানা নেই।

    " নিজের ছেলে। সে আজ তার বাপকে দোষী করলো। বললে মেনে নিতে। তবে তার ঠাকুমা মা ।।। ইস্তক সবাই তো একই কথা বল্লে। তাকে শুদু মুদু দুষে আর কি হবে ?"

    " মশাই, কি ঠিক কল্লে ? " খোঁড়া বলে।

    ধোঁয়াটে আলো আবছায়ায় তাঁর চোখের কোনাটা ঝিক ঝিক করে জ্বলে। জোনাকীর মতন। আমি কোনো উত্তর দেই না। অধ্যাপক আমায় চিনিয়ে দিয়েছেন। এই খোঁড়া মোটেই বিদ্রোহী নয়। আসলে পেয়াদাদের চর। ফাটকে থাকে ,অন্য বন্দীদের পেটের খবর বার করবার জন্য।

    "সারা জীবনটা লড়াই কল্লাম। কি ফ্যায়দাটা হলো? কিসু না। কিসু না। কিস্সু না। শুদু জ্বলে পড়ে মল্লাম।" খোঁড়া বলে " এই অন্ধকার ঘরে সারাদিন। একে অপরের মুখখানিও দেখতে পাইনে। বাইরের দুনিয়ায় বিষ্টি কি রোদ, টের পাই না হেথায়....."

    একদিন, কবে যেন, ভোরের দিকে ,যেন শুনতে পেয়েছিলাম মেঘের ডাক। চমকে জেগে মনে হলো ঘুলঘুলির ছোটো ফাঁক ফোকরেও দেখতে পেলাম বিদ্যুতের ঝটকা। চোখ ধাঁধানো আলোর এক চাবুক। আছড়ে পরেই মিলিয়ে গেলো।

    একটা সিরসিরে ভাব। ঘুম ভাঙলে টের পাই ঘরের মধ্যে থাকা আরো অনেক বন্দীদের নিঃশ্বাস। কেউ কাঁদে ,ফুঁপিয়ে। কেউ মন্ত্র জপতো সারা রাত। আর এখন শুনি না। বোধহয় সেই মন্ত্রউচ্চারকের বিচার শেষ হয়েছে। গলায় মোটা দড়ির মালা পরে দোল খেয়ে খেয়ে তার নিষ্প্রান দেহটা অনেক উপরের পাহাড়ের গর্ত্ত দিয়ে পরেছে নীচের নর্মদার জলে। কালো জলে ফেনা তুলে পাকসাট খেয়েছে ক্ষুধার্ত্ত হাঙরের দল।

    ফাটকের কটু গন্ধ বড় কষ্ট দেয়। অধ্যাপক বলেছিলেন ওটা পিশাচের রক্তের গন্ধ। পিশাচের রক্ত হলুদ হয়। তেলের মতন ভারী। থিকথিকে। এই ফাটকের আলো আঁধারীতে কে জানে কজন পিশাচ আছে।

    খোঁড়াও বল্লে " পিশাচের রক্তে অমন গন্ধ থাকে। তবে পিশাচ রক্ত আর মানুষের রক্ত একই রকম। দেখতে আর শুঁগতে। পিশেচ যখন মারা যায় , যখন মানুষের দেহ ছেড়ে চলে যায় তখন মানুষেরে মেরে রেখে যায়। সেই মানুষের শরীর সব ফুটা দিয়ে তখন হলুদ রক্ত পরে। "
    " তুমি দেখেছো খোঁড়া ? অমন হলুদ রক্ত? "

    " দেখিচি। দেখিচি তো। করেকবারই দেখিচি। আমাদের বস্তীতে। মেয়েমানুষটার চোখ ঝিকিয়ে উঠতে রাত্তিরে। চাঁদের আলোয় নখগুলান জ্বল জ্বল কত্তো। মাথার চুল গুলো যেন রুপার সুতো। ফন ফন করে উড়তো হাওয়ায়। আবার যে কে সেই। তো জহ্লাদেরা খুব মাল্লে। গরম লোহার মোটা লাঠি ঢুকিয়ে দিলো ... হেঁ হেঁ হেঁ । চোখের সামন চামড়া পুরে লোমটোম সব জ্বলে উঠলো। পেটের থেকে মুখের থেকে থক থকে হলুদ রক্ত গড়িয়ে পরলো। কি দুর্গন্ধ। "।

    জেরা কর্ত্তাকে পাল্টা প্রশ্ন করেছিলাম একদিন "পিশাচে আপনার কিসের ভয় ? রাত্রিবেলা তাঁদের চোখ জ্বলে পিদিমের মতন। হঠাৎ ই তাঁদের চুল সব রুপালী সুতো হয়ে যায়। কিন্তু তাঁরা আর কি ক্ষতি করছে? "
    জেরাকর্ত্তা জোর গলায় বলেন " পিশাচেরা পিশাচ। আর আমরা মানুষ। আমাদের শরীর দখল করে আমাদের লাল রক্ত বদলে ওরা ঐ দুর্গন্ধ হলদে রক্ত দিয়ে ভরে দেবে, এটাই বা কেমন কথা? আর তোদের মতন কিছু নোংরা লোক ঐ পিশাচদের পুজা করতে বসিস ?" আবার এক থাপাড়। সপাটে।

    " আমি তো পিশাচদের সমর্থন করি নি।" নাকের থেকে গড়িয়ে পরা রক্ত মুছে আমি বলি।" আমি শুধু বলেছিলাম পিশাচ সন্দেহে এতো লোক,বাচ্চা বুড়ো, সবাইকে অমন মেরে ফেলা হচ্চে .... সেটার বিরুদ্ধে"
    " শুধু মেরে ফেলার পরেই জানা যায় কেউ পিশাচ ছিলো। নিশ্চিত হয়ে। তাই তো আমরা এখন বিচার সভা শুরু করেছি। পিশাচেরা মেনে নিলে আমরা তাঁদের আর অত্যাচার করি না... "

    " মিষ্টি একটা ঘুমের ওষুধ দি। ব্যাস। এক পাত্তর। খেলেই ঘুম পাবে। ঝিম ঝিম করবে। কোনো ব্যাথা নেই। যন্ত্রনা নেই। একেবারে চিরকালের ঘুম। বন্দীর শরীর তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দেবো। ঠিক আছে ? সৎকার টৎকার। পুরোহিতেরা যা করতে চায়। করবে।

    আর পরিবারের কোনো অসুবিধে নেই। উপযুক্ত ছেলে মেয়ে থাকলে তাঁদের রোজগারের বন্দোবস্ত আমরা করে দি। নইলে মাসোহারা" এই পর্য্যন্ত বলে বিষম চটে যান জেরাকর্ত্তা " এই নিয়ে কতোবার বলেছি এ কথা। তোকে ? পঁচিশ বার? খালি চুপ করে থাকিস? কেনো স্বীকার করিস না তুই পিশাচ? তোর হলুদ রক্ত দেখে তবে তোকে ছাড়বো আমি । "
    আমার ঠোঁটের উপর তার বিরাট থাপ্পর পরে। নোনতা স্বাদ। ফুলে যাওয়া চোখের ফাঁক দিয়ে দেখি লাল রক্ত গড়াচ্ছে,আমার চিবুক ভাসিয়ে।

    *************

    ছোটোছেলেকে কাঠগরায় তোলে পেয়াদা। সে কাঁদে। শুধু কাঁদে। আহারে ! এগারো বছরের বাচ্চা। এতো শান্ত্রী দেখে কতই না ভয় পেয়েছে।

    " ভয় পেয়ো না। তোমার বাবার গায়ের থেকে কোনো গন্ধ পেয়েছো কখনো? কেয়া ফুলের মতন। ঝাঁঝালো ? পেয়েছো ?"

    ছোটো ছেলে কথা বলে না। তাকায় না বিচারকর্ত্তার চোখের দিকে। সে মাথা নীচু করে থাকে। ফোঁপায়। একবার কান্না থামে। আমার দিকে তাকায়। তাকায়। তাকায় যেমন সব ছেলেই তাকায় তার বাবার দিকে। তাকায়। যেমন আমি দেখতাম আমার বাবাকে।
    সে আমায় দেখে। তাঁর ঠোঁট ফুলে ওঠে। সে আরো কাঁদে। বুক খালি করে কাঁদে। আমি বড় শংকিত হই।

    বিচারকর্ত্তা নির্দেশ দেন ছেলের মাকে কাছে আসতে। বউ এসে জাপ্টে ধরে ছোটো ছেলেকে। তাকে বোঝায়। আশ্বাস দেয়। বউ দেখে না আমায়। চোখে চোখে রাখে না চোখ। সে শুধু ছোটো ছেলেরে আঁকড়ে ধরে।

    বিচারকর্ত্তা আবার প্রশ্ন করেন " বলো,বলো। বাবার গেলে পেয়েছো অমন গন্ধ? নাক জ্বালিয়ে দেয়। এক মিষ্টি গন্ধ। হঠাৎ করে। কখনো পেয়েছো?"

    ছোটো ছেলে তার মা তার হাত ধরে থাকে। আমার বউ ছেলেকে জড়িয়ে রাখে। আদর করে। সাহস দেয়। ছেলে মাথা নাড়ে। একবার।

    বিচারকর্ত্তা তাতেই খুসী। লিপিকারকে বলেন " লিখে নিন। ছোটো ছেলেও স্বীকার করলো।"

    ছোটোছেলে আর আমার দিকে দেখলো না। জন্মের মতন চলে গেলো। পিছন ফিরলো না একবারও। খুব, খুব, খুব চাইছিলাম - যেন একবার পিছন ফিরে দেখে। দেখে আমি হাসি মুখে । দেখে যেন তার বাবার কোনো রাগ নাই অভিমান নাই দুঃখ নাই।

    একবার ও তাকাতো। একবার। আমি হাসতাম।

    অমন করে দুচোখ ভরে চেয়েছিলাম ছোটোছেলের দিকে আর কিছু খেয়াল করি নি। পরে ফাটকে গিয়ে মনে হয়েছিলো বউ যেন একবার ,আচমকাই। আমার দিকে চোখ তুলে চেয়েছিলো।

    ঠিক মনেও পরে না। কেমন ঘোর লেগে থাকে।

    ****************

    "আমাদের সংসারের শত্রু। শুধু লোকেদের ক্ষেপিয়ে বেড়ায়। বলে পিশাচ ভেবে কত লোকের সর্বনাশ করছেন আপনারা " বউ রাগে ফেটে পরে।" আর আমাদের সংসার? ভাবে কখনো ? " আমার দিকে তাকিয়ে বউএর মুখ ঘৃনায় বেঁকে যায়, সব কটি পেশী কুঁচকে ওঠে। " ও তো পিশাচ। ঐ তো পিশাচ। নিজেই পিশাচ তাই তাদের জন্য ওর অতো ভালোবাসা " চিৎকার করে বলে আমার বউ। আর হাঁপায়।

    বিচারকর্ত্তা সব সময়েই চান বিচারের আদব কায়দা যেন সুষ্ঠু থাকে। তিনি আমার বউকে নির্দেশ দেন আবেগ তারিত না হতে। " ঠান্ডা মাথায় বলুন, আপনার স্বামী কি করতেন ?"
    " আমি টের পেতাম কেমন করে জোর নিঃশ্বাসের সাথে ছড়িয়ে দিচ্ছে কেয়া ফুলের গন্ধ। আমাকে গুরুদেব বলেছিলেন ঐ ঝাঁঝালো মিষ্টি গন্ধ দিয়ে পিশাচেরা ভালো মানুষদের অবশ করে দেয়। তারপরে ওদের মধ্যে ঢুকে পরে। "
    বিচারকর্ত্তা খুসী হন। বলেন " আপনি ঠিকই শুনেছিলেন। "
    আমার বউ বল " আর সারাক্ষনই পিশাচদের হয়েই কথা বলতো। বলতো কে সঠিক দেখেছে পিশাচগ্রস্থ মানুষ মরে গেলে কটু গন্ধে হলুদ রক্ত বার হয়। ও সব গুজব। কেউ নিজের চোখে দেখে নি। বলতো, ও সব গল্প কথা।"
    " আর ? "
    " ছেলেদেরও শেখাতো। বলতো পিশাচ বলে কিছু নেই। ও শুধু ভয় দেখানো। "
    " আপনি দেখেছেন ওর চোখের থেকে আলো বের হচ্ছে ? হঠাৎ করে মনি হয়ে উঠছে জ্বলন্ত রুপোর টুকরো ? মাথায় হিল হিল করছে রুপালী সাপ ? "

    বউ একটু দোনোমনা করে। " না, তেমন তো দেখি নি। কিন্তু টের পেতাম ও বদলে গেছে। একা থাকে। নিজের মনে কথা বলে । আমার দিকে যখন তাকায় তখন মনে হয় হাজার মাইল দুরে কিছু দেখছে।রাতের বেলা চুপ করে বসে থাকে। একা। একা। এইসব "

    বিচারকর্ত্তা হাঁ হাঁ করে ওঠেন। " আরে এতোদিন একসাথে সংসার করছেন। টের তো পাবেনই ই। আপনি ই তো প্রথম বুঝতে পারবেন।"

    ******************

    খোঁড়া বলে " তাইলে বাবু , আপনের আর তো কিছু শোনার বলার নেই। পরিবারের কথা ভেবে মেনে নেন। মেনেই নেন। কেন অদের কষ্ট দেন ? "

    " খোঁড়া, আমি জানি তুমি কে ? তুমি বিদ্রোহী নও। তুমি ও এক পেয়াদা। গুপ্তচর। কেন করো তুমি এই সব? কি পাও ? কি পাও? এই ফাটকের আন্ধারে বসে? "

    খোঁড়া দীর্ঘশ্বাস ফেলে। " মা নাই বাবা নাই। সংসার নাই। এই ই আমার জীবন গো। এই ফাটকে থাকি। রোজকার দিনে আমারে বাইরে আনে - ভালো মন্দ খাওয়ায়। আমি ভিতরের কথা জানাই। শান্ত্রীরা সুখ্যাত করে। বলে আমায় পদক দেবে।"

    " আর তুমি? বাবু ? তোমার তো জীবন শেষ হয়ে এলো। আরে কয়েক ঘন্টা। তারপর গলায় পড়বে শক্ত পিয়েলের দড়ি গাছ। তোমায় তো রেশমের রুমাল দে মারবে না। পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে টান মারবে। দম বন্ধ হবার আগেই পিয়েলের ফাঁস তোমার গলা কেটে ফ্যালবে। হড় হড় করে হলদেটে রক্তো পরবে। হাঃ "
    " তুমি সত্যি ভাবো আমি পিশাচ ?"
    " কি জানি। সন্দেহ হয়। সাবধানের মার নেই। জানো তো ? শুনেছি সান্ত্রীদের কাছে, মরবার আগে, গলায় ফাঁস লাগানোর আগেই পিশাচ মানুষের দেহ ছেড়ে পালায়। ফাঁসী কাঠে যাবার আগেই হলদে রক্ত বেড়িয়ে পরে। এই ফাটকেও। তাই অমন গন্ধ পাও। "

    " লাও। ঐ এয়েছে " খোঁড়া বলে আর আমার কাছ থেকে সরে যায়।

    পেয়াদা এসে ডাকে আমায়।

    শেষবারের মতন ফাটক একবার দেখে নেই। সেই রকম আবছা ধোঁয়া ধোঁয়া অন্ধকার। কোথাও একটু টিম টিমে আলো। গাঢ় ছায়া। জমাট বেঁধে আছে। ঘুপচিতে দেওয়ালে ঠেস দিয়ে কত মানুষ। ভয়ে হতাশায় তালগোল পাকিয়ে শুয়ে বসে আছে। ফিশ ফাস করে কথা কেউ বলে। কেউ ফোঁপায়। ব্যাথায় আঃ বলে একজন। একজন মন্ত্র পরতো। একজন গান গাইতো। অধ্যাপক কানের কাছে মুখ নিয়ে বিড় বিড় করতেন। খোঁড়া পিছন ফিরে আর চায় না। ফাটকের ভিতরের খোঁদলে আরো গাঢ় অন্ধকারে সে মিশে যায়।
    দীর্ঘ ঢাকা বারান্দা দিয়ে হেঁটে চলি। সামনে পিছনে সান্ত্রীর জুতার খটমট। অস্ত্রের ঝন ঝন। ঢাকা বারান্দার ঐ উপরে কোনো ঘুলঘুলি। টের পাই না দিন না রাত। যে টুকু আলো তা ঐ পাথুরে টানা বারান্দার কোনে খাঁজে কুলুংগীতে। তেলের পিদিম। ধোঁয়া।

    বধ্যভুমির বালুর উপরে এক মিনিটের নীরবতায় চেষ্টা করি ভাবতে কার কথা মনে হছে সবথেকে বেশী। মায়ের কথা? স্মরন করি ,কুঁজো হয়ে কাঠগরা থেকে নেমে যাচ্ছে। শীর্ন হাত । সারা মুখে বয়সের কাটাকুটি। দু হাত তুলে আশীর্বাদের ভংগী করছে বিচারকর্ত্তাকে।
    আর ছোটো ছেলেকে। সে কেঁদেছিলো। তার নিষ্পাপ চিবুক। সে পিছন ফিরেছিলো। বড় বড় চোখে চেয়েছিলো আমার দিকে। তার দু গাল বেয়ে টস টস করে পরছিলো কান্নার ফোঁটা।

    বুকের মধ্যে গুরু পুকুরের মস্ত পাথরটা আরো বড় হয়ে ওঠে। বড় ভারী।

    কেউ পরিয়ে দেয় কালো টুপী। চোখ ঢেকে যায়। মুখ ঢেকে যায়। সব টুকু আলো চলে যায়। আর তখনই নিঃসীম আন্ধারে ঝিকিয়ে ওঠে আমার চোখ। রুপালী আলোয় টের পাই কষ থেকে গড়িয়ে পরছে হলুদ রক্ত।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ | ৬৫২ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    চম - dd
    আরও পড়ুন
    ও শানওয়ালা - dd
    আরও পড়ুন
    দ্রোণ পর্ব - dd
    আরও পড়ুন
    কর্ণসংহার - dd
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ranjan roy | 132.162.250.17 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০১:৩১65786
  • চুপচাপ বসে আছি। কেমন পাগল পাগল লাগছে। অনুভূতিগুলোকে ঠিক গোছাতে পারছি না। নিজের মেয়েদের বলছি-- খাওয়াদাওয়ার পরে একটা অন্যরকম গল্প পড়ে শোনাবো।
  • dd | 116.51.24.196 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:৫১65772
  • খুব জরুরী তো নয়, তাও ও প্রেক্ষিতটা জানিয়ে দি'।

    বছর দশেক আগে একটা ওয়েবজিনে পর পর "শারদীয়া" সংখ্যায় আমার একটি করে লেখা "ছাপা" হোতো।

    প্রথম বছরে একটি দমফাটা হাসির গল্প ছাপা হোলো প্রবন্ধ বিভাগে। ফলতঃ কেউ হাসলো না। দ্বিতীয় বছরে গোলান পাহাড় নিয়ে মিলিটারী হিস্ট্রীর প্রবন্ধটি ছাপা হোলো কবিতা বিভাগে। সবাই থ হয়ে গ্যালো।তৃতীয় ও লাস্ট বছরে এই গল্পোটা সত্যি গল্প বিভাগেই ছাপা হোলো কিন্তু আমার নাম আর পদবী দুটো'ই ভুল করে।ওফ।

    তাই সেই গল্পো যদি দু তিন জন পড়ে থাকেন,আর তাদের মধ্যে দু একজনের কিছুটা মনে থাকে আর তাদের মধ্যে এক আদ জনের যদি "লেখকের তো অন্য নাম ছিলো তখন" মনে হয় - সেই বাবদেই এই প্রেক্ষতটি জানিয়ে গেলেম।
  • T | 24.139.128.21 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:৫৮65787
  • আমার গল্পটা পড়ে কিছু মনে এলো না। সারাক্ষণ মাথার ভেতর লে ধড়াদ্ধড় লে ধড়াদ্ধড় চলচে বলেই বোধহয় অ্যামন হয়ে যাচ্চি।
  • | 24.97.236.197 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:১৬65773
  • সাংঘাতিক ধারালো গল্প ডিডি। অবিশ্বাস্য!!

    কিন্তু ... কিন্তু .... নর্মদায় হাঙর!!?
  • b | 135.20.82.164 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৫৩65774
  • বহুত খুব।
    ডিডির গল্পগুলো পড়লে অস্বস্তি হয়। গথিক টেলস।
  • aranya | 154.160.226.96 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৪:৪৫65788
  • অসাধারন
  • anandaB | 60.46.178.89 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৫:২৬65775
  • অবিশ্বাস্য লিখতে গেছিলাম তো দেখলাম "দ" আগেই বলে দিয়েছেন, তো তাই লিখি দুর্ধর্ষ কিন্তু এরকম পাঠপ্রতিক্রিয়া লিখে ঠিক শান্তি পাই না। অথচ যুতসই কিছু মাথাতেও আসে না আজকাল

    আর, আর, ওই ব্যাপার টার সাথেও একমত (কি যেন লিখতে হয় "ক" দেওয়া তাইত?) বড় অস্বস্তি হয়, আগেও হয়েছে কিন্তু বলা হয় নি
  • byaang | 132.172.131.62 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৫:৩৫65776
  • একদম একদম আনন্দবিয়ের সাথে একমত। গল্পটা ফাটাফাটি। কিন্তু আরো অনেক কিছু লিখতে চেয়েছিলাম। ফাটাফাটিটা ঠিকঠাক পাঠপ্রতিক্রিয়া নয় আমার । কিন্তু প্রতিক্রিয়াটা প্রকাশ করার মত কোনো শব্দও মনে পড়ছে না।
  • শ্রী সদা | 113.16.71.8 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৫:৪১65789
  • কাঁপিয়ে দেওয়া লেখা। কুডোস ডিডিদা।
  • কল্লোল | 125.248.76.233 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৬:২১65777
  • কেমন দম বন্ধ হয়ে আসে।
    তুলনা করছি না, কোনভাবেই না, কিন্তু একই অস্বস্তি হয় ইলিয়াস আর মার্কেজ পড়তে।
  • Blank | 24.96.60.73 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৬:২৩65790
  • ডিডি দা অসাধারন। লাইক শেয়ার সব কিছু।
  • san | 113.245.14.140 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৬:৩২65778
  • সাংঘাতিক !
  • Arpan | 125.118.171.69 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৬:৩৭65779
  • একটা দম আটকে আসা অনুভূতি।
  • ব্লগার | 105.211.101.230 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৭:১২65780
  • সাংঘাতিক গল্প। নাস্তিকদের গায়েও কি এরকম হলুদ রক্ত বয়?
  • anag | 208.182.56.5 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৭:৩৬65781
  • মান্টো, চুগ্তাই আর তারাশন্কর এও এক ই রকম অস্বস্তি বোধ করি, কল্লোল-দা। ডিডি জিন্দাবাদ।
  • sosen | 78.105.152.253 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৮:৫৩65791
  • আমি পরে আবার পড়ব। এবার পড়ে আমারও কিছু মাথায় এলো না
  • Nina | 83.193.157.237 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৮:৫৫65792
  • টানটান নিঃশ্বাস বন্ধ করা --------
  • Amit Sengupta | 116.51.133.181 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১০:২৪65782
  • dd,
    উ: কি অস্বস্তিকর লেখা। তবু ছাড়া যায়না। নিজের ভালোলাগাটা নিজের কাছে রেখে বিশেষণ খোঁজার ঝামেলার গেলামনা।
  • Amit Sengupta | 116.51.133.181 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১০:২৬65783
  • ঝামেলায়।
  • i | 134.171.13.42 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১০:৪৫65784
  • বির কথাটাই লিখতাম। গথিক টেলস। আমার একটা সমস্যা হয় গথিক উপাখ্যানে। সেটা পরে লিখব।
  • de | 69.185.236.53 (*) | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১১:৪৬65785
  • উফ্‌!
  • Tim | 108.228.61.183 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০১:২৪65793
  • কাললেই পড়েছিলাম, প্রতিক্রিয়া কী দেব বুঝিনি। মারাত্মক!
  • pi | 192.66.71.210 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৯:৩১65794
  • মারাত্মকই । তবে শেষটা নিয়ে একটু অন্যরকম প্রত্যাশী ছিলাম কি ? আগের গল্পটাতেও।
  • Du | 107.79.230.34 (*) | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৫৭65795
  • উঃ বুকের ভিতর ধড়াদ্ধর ধরাদ্ধর
  • রৌহিন | 113.42.126.205 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:২৮65797
  • ক ফ দেবার আমি কে? লেখকের অনুমতি পেলে এটা ফেবুগুরু এবং আমার দেওয়ালে শেয়ার করব
  • রুণা | 125.187.59.18 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৪৯65798
  • ফাটকের ভিতরে বসে অন্ধকার কাটছি টুকরো টুকরো করে। আগের লোকটাকে পেয়াদা নিয়ে গেল। পিশাচ আমাকে ঘর করল...।
  • dd | 116.51.225.16 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৩:৫৪65799
  • রৌহিনকে।

    (খুবই বিগলিত হয়ে) আরে অনুমতি দিলেম। যেথায় খুসী শেয়ার করুন।
  • সব্যসাচী | 122.79.35.46 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৪:৩২65800
  • দমবন্ধ হয়ে আসছিলো...রুদ্ধবাক..!!
  • বাবুরাম সাপুড়ে | 127.194.224.121 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০৫:৪২65801
  • কি মারাত্মক লেখা
  • Du | 107.79.230.34 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ১২:২৬65796
  • আবার পড়লাম।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন