এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • পিশাচ, ভয়, তন্ত্র, ও কালীপুজো

    Raja Podder লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ০৯ নভেম্বর ২০১৫ | ৩৫১০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Raja Podder | ০৯ নভেম্বর ২০১৫ ২৩:৩৪688212
  • সময়ঃ ১৬৪০ এর আশেপাশে
    একশ বছরে বেশী সময় গড়িয়ে গেছে, নীলাচলে অস্তমিত হয়েছেন মহাপ্রভু। বৈষ্ণবদের দৌরাত্মও তখন অস্তাচলে । বাড়বাড়ন্ত তন্ত্র মন্ত্রের। গভীর রাতে শ্মশানে মশানে লকলকে লেলিহান শিখাকে কে বেষ্টন করে, শবদেহ সামনে রেখে তাণ্ডব নেত্য করেন ভীষণাকারা অতিকায় কিছু মানুষ। টকটকে লালবর্ণের শালু পরিধেয়, গলায় রুদ্রাক্ষের মালা। মৃতদেহ, হাড়, মানুষের করোটি, বানরের করোটি নিয়ে তাদের কাজকারবার। মদ চুর হয়ে আগুনের ধারে খুলি আর হাড় হাতে গোল হয়ে ঘুরে ঘুরে তান্ডব নেত্য করেন তারা। আর হ্রিং, ব্রিং করে বিকট চীত্কারে মন্ত্র আউড়ে চলেন। তার পর চলে শবসাধনা, ভীষণা দর্শণা, কুরূপা কালী মুর্তির সামনে শব রেখে নাগাড়ে মন্ত্র আর হুঙ্কার চলে সেই ভোররাত পর্যন্ত। সাধারণ মানুষ তাদের থেকে শতহস্ত দুরে থাকেন। কেউ মারা গেলেও অমবস্যার রাতে হাজার কাকুতি মিনতি করলেও শব নিয়ে কেউ শ্মশানের দিকে ভুলেও পা মারাতে চান ন। পিশাচ সিদ্ধ তান্ত্রিক কাপালিক দের দৌরাত্মে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। একে ভুত, প্রেত, পিচাশ নিয়ে সাধারণ মানুষদের কুসংস্কার তার ওপর এই কাপালিকদের অনাচার। এদিকে মায়ের অারাধনা করতেও বড় সাধ জাগে। কিন্তু মন্ত্র তো কিছুই জানা নেই। সাধারণ ব্রাহ্মণ পুরুত রাও বিশেষ কিছু জানেন না এই পুজোর। শক্তি সাধনা তখন তান্ত্রিক কাপালিক দের কুক্ষীগত। অন্যদিকে গভীর জঙ্গলের মধ্যে অধিষ্ঠান ডাকাত কালীর। তিনিও ভীষণা দর্শনা। সে মুর্তি দেখলে হৃদপিন্ড ছলাৎ করে উঠে আসে গলার কাছে। ওই ডাকাতদের ভয়ালরূপের মত রূপ ওই মুর্তির।গভীর রাতে জঙ্গলের মধ্যে থেকে ভেসে আসে মা, মা মহেন্দ্র গর্জন, পশুর করুণ আর্তি। তারপরই বিকট হুঙ্কার হারে-রে-রে-

    সাধক রামপ্রসাদ আসবেন আরও প্রায় আশি বছর পর, বামাক্ষ্যাপা আসবেন প্রায় দুশো বছর ।
    পর।
    সময়ঃ ১৬৪৫ এর আশেপাশে
    এর প্রায় চল্লিশ বছর আগে কৃষ্ণনগর , নবদ্বীপ, নদীয়ার বিস্তির্ণ অঞ্চল নিয়ে জমিদারী পত্তন করলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের পূর্বপুরুষ ভবানন্দ মজুমদার। মূলত শক্তির আরাধনাই করতেন এই রাজপরিবার। কিন্ত কি ভাবে শক্তি আরাধনাকে সাধারণ মানুষের মধ্যে পৌঁছান যায় তা নিয়ে উদ্বিগ্ন রাজ পরিবার।

    সময়ঃ ১৬৪৫-১৬৫০
    শুদ্ধাচারে কালী সাধনায় মেতেছেন এক ব্রাহ্মণ। সেই মুর্তির রূপ বড়ই স্নিগ্ধ। একেবারে মায়ের মতই। ঘরোয়া তার আয়োজন। কোন বাহুল্য নেই তাতে। লাল বসনে পুজোয় বসেছেন কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ । নবদ্বীপের ছোটবাজার এলাকায় তার ছোট্ট মন্দির। সাধারণ গৃহীরাও কি ভাবে কালী সাধনা করতে পারেন তার পথ নির্দেশ করেছেন সু পন্ডিত এই মানুষটি।
    ১৭০ টি তন্ত্র ঘেঁটে মহাপন্ডিত এই ব্যাক্তিটি তৈরী করেছেন বৃহৎ তন্ত্রসার। তাতেই লেখা আছে গৃহীদের কালীসাধনার আয়োজন। ১৬১০ সালে নবদ্বীপে জন্ম আগমবাগীশের। ছোটবেলাথেকেই পরিচয় পাওয়া গিয়েছিল তার আসাধারণ মেধার। ১৫৩৫ থেকে ১৬৪৪ এর মধ্যে তৈরী করেন বৃহৎ তন্ত্রসার। ১৬৫০ সাল নাগাদ দক্ষিণাকালীর প্রতিষ্ঠা করে শুরু করলেন মাতৃ আরাধনার। সেই প্রথম কালীর মধ্যে মায়ের রূপ দেখলেন সাধারণ মানুষ।

    ধীরে ধীরে কাটতে লাগল ভয়। গৃহীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পেল কালীপুজো । মায়ের আরাধনায় মেতে উঠলেন ছা পোষা গৃহষ্থরাও। অশুভ শক্তির বিনাশে মায়ের পুজো তে মেতে উঠলেন গ্রাম বাংলার সাধারণ মানুষ।
  • b | 135.20.82.164 | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ১৪:২৯688213
  • ভালো লাগলো। কিন্তু ইয়ে, রকেটের মত শুরু হয়ে হঠাৎ ছুঁচোবাজীর মত শেষ হল।
  • Anirban Ghosh | 7845.11.784523.219 | ০৪ জুলাই ২০১৮ ১৫:০২688214
  • কালো বিড়াল ধরে মন্তপূত করার
    পর তিন দিন তিন রাস্তার মোড়ে
    পুতেঁ দিয়ে তাকে তুলে। গঙ্গার জোয়ারের জলে হার গুলো ধুয়ে
    মন্ত্র দিয়ে চালনা করতে হয় ।
  • Anirban Ghosh | 7845.11.230123.29 | ০৪ জুলাই ২০১৮ ১৫:০৫688215
  • গল্প টি কেমন লাগল আপনাদের
  • সমীর সরকার | 2409:4060:2d49:214c::2e0b:180d | ০৫ নভেম্বর ২০২৩ ১১:৫৩741139
  • কৃষ্ঞানন্দ আগমবাগীশ কালীর মূর্তিরূপ কোথায় পেলেন?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল মতামত দিন