এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • বাংলার ব্রতপার্বণ ও স্ত্রী আচার

    damayantee
    অন্যান্য | ২৭ আগস্ট ২০০৬ | ১৪০৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • damayantee | 61.246.16.124 | ২৭ আগস্ট ২০০৬ ২২:৫২672100
  • বাংলার বারো মাসে তেরো পার্বন ও বিভিন্ন স্ত্রী আচার নিয়ে যে যা জানেন লিখে ফেলুন এখানে। একটা জিনিষ লক্ষ্য করেছি, বিভিন্ন ব্রত ও স্ত্রী আচারের মন্ত্রগুলিতে বেশীরভাগই নিজের জন্য সুখ এবং সতীনের জন্য চরম দুর্দৈব প্রার্থনা করা হচ্ছে। এর থেকে অনুমান করতে পারি তখনকার মহিলাদের মধ্যে এটি কতবড় একটি সমস্যা ছিল।

    যাই হোক, এই মুহুর্তে মনে পড়ছে 'পথের পাঁচালী' তে পড়া পুন্যিপুকুর ব্রতের কথা। দূর্গা মায়ের ধমকে ব্রত রাখছে ও মন্ত্র পড়ছে ---
    পুন্যিপুকুর -------
    কে পুজে গো দুকুরবেলা।
    আমি সতী লীলাবতী
    ভায়ের বোন ভাগ্যবতী।

    এই শুনে অপু হিহি করে হেসে ওঠে।
  • dam | 61.246.16.124 | ২৭ আগস্ট ২০০৬ ২৩:০৮672105
  • বৈশাখ মাসে অক্ষয় তৃতীয়ায় কাসন্দ তৈরী ছিল অন্যতম একটি স্ত্রী আচার। কাসন্দ তৈরীর জন্য সমস্ত বাসনপত্র নতুন কিনতে হত। আর 'শুদ্ধবস্ত্র' ইত্যাদি আচার তো ছিলই। কাসন্দ তৈরীর উপকরণ ছিল

    ১। কাসন্দের বড় হাঁড়ি ------------- ২ টি নুতন।
    ২। হাঁড়ি বসানোর বিড়া ------------ ২ টি নুতন।
    ৩। হাঁড়ির ঢাকনি ------------------ ২ টি নুতন
    ৪। নূন ঘড়ার ছোট্ট ভাঁড় ------------ ১ টি নূতন।
    ৫। ঐ ভাঁড়ের ছোট ঢাকনি ----------- ১ টি নূতন।
    ৬। কাসন্দ নাড়িবার কাঠের হাতা বা খুন্তী -- ১ টি।

    কাসন্দের সরষে নিজে হাতে ধোয়া নিয়ম। ১ বছর সরষে ধোয়া বাদ গেলে নাকি ১২ বছর ধোয়া নিষেধ। তবে বাড়ীর বৌ বা অপর কোন মহিলা যদি না পারেন, সেক্ষেত্রে ব্রাহ্মণকে দিয়ে ধোয়ানো নিয়ম ছিল। কাসন্দ তৈরী না করলেও সরষে ধোয়াতেই হবে। পরে সেই সরষে ঠাকুরবাড়ী বা ব্রাহ্মণকে দান করে দেওয়া হত।

    বাপরে কি নিয়মের ঠ্যালা!! বারবেলা, কালবেলা বাদ দিয়ে সরষে ধুতে হবে। আবার পুরুষমানুষের কাপড়ে সরষে ধুতে হবে মেয়েদের কাপড়ে ধোয়া নিষেধ।

    বানানোরও হাজারো ঝকমারী। এই বিবরণ কালীপুরের রেণুকা দেবী চৌধুরাণীর।
  • atithi | 203.197.97.19 | ৩০ আগস্ট ২০০৬ ১৫:১৪672106
  • এ বাবদ পড়ে দেখুন গিরিবালা দেবীর "রায়বাড়ী"

    অতিথি
  • Parolin | 213.94.228.210 | ৩০ আগস্ট ২০০৬ ১৫:১৯672107
  • অতিথির কথা শুনে মনে পড়ল আর একটা বইয়ের কথা -
    মনোজ বোসের "সেই গ্রাম সেই সব মানুষ"।
  • shrabani | 124.30.233.101 | ১৯ আগস্ট ২০০৯ ১৬:২৩672108
  • আমাদের বাড়ীর মঙ্গলচন্ডীর ব্রত
    ---------------------------------------
    জ্যৈষ্ঠ মাসের মঙ্গলবারগুলিতে (একটি দুটি বাদ দিয়ে) হত মঙ্গলচন্ডীর ব্রত। সধবাদের ব্রতপালন পতির দীর্ঘায়ূ কামনা করে। সকাল থেকে নির্জলা উপবাস। মঙ্গলচন্ডীর কাছে রাখা হত বাড়ির /পাড়ার প্রতিটি বউমানুষের নামের থলিকৌটো। লাল শালুর থলে আর কাঠের বড় সিঁদুর কৌটোর মত কৌটো একসাথে সেলাই করে তৈরী এই থলিকৌটো।
    নতুন বউ এলে তার জন্য নতুন বানানো হত নাহলে প্রতিবছর একই ব্যবহার করা হত। মাসের শেষে আবার যে যার ঠাকুরঘরে তুলে রাখত নিজের কৌটো সারাবছরের মতো। তৈরীর সময় লাল শালুর কাপড়ের ওপর সুতো দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হত বৌয়ের ভাল নাম (যে নাম অনেক সময়ই প্রচলিত নয়, কাকী জেঠী মেজ রাঙা নতুন বউ সম্বোধনে চাপা পড়ে যাওয়া নাম!)। কখনো সখনো কাপড়টা নষ্ট হয়ে গেলে আবার নতুন লাল শালু কিনে থলিকৌটো সেলাই করা হত শুদ্ধকাপড়ে শুদ্ধাচারে। থলিকৌটোর মধ্যে অনেক কিছু থাকত সিঁদুর পাতা, ছোট আয়না, লোহার নোয়া, কড়ি ইত্যাদি। কেউ বিধবা হলে তার শাঁখা সিঁদুরের সঙ্গে থলি কৌটো বিসর্জন দেওয়া হত।

    মঙ্গলচন্ডীর পুজোতে নৈবেদ্য ইত্যাদি সরঞ্জামের সাথে দেওয়া হত বাঁটা আর খিলি, প্রত্যেকের আলাদা আলাদা। বাঁটা মানে একটি ভাল পিতলের বা কাঁসার থালা/কাঁসি তে বিভিন্ন কাটা/ছাড়ানো ফলমুল (পাকা চাঁপাকলা মাস্ট), ভিজানো মুগ ছোট ছোটো মুঠি করে আটমুঠি রাখা হত। প্রত্যেকের তরফ থেকে একটি বাঁটা নিজের জন্য আর একটি ঠাকুরের জন্য। খিলি তৈরী হত বটপাতার মধ্যে গোটা যব ধান ইত্যাদি আটটি শস্য দানা দিয়ে পানের আকারে গড়ে। গিন্নীদের হয়ে বাঁটা আর খিলি তৈরী করে দিত বাড়ির অবিবাহিত অল্পবয়সী মেয়েবউরা বা বিধবারা অবশ্যই শুদ্ধ কাপড়ে।

    মঙ্গলচন্ডীর পুজো ঠাকুরমশাই করতেন নিত্যি পুজা শেষ করে (নিয়মই তাই) তাই বেলা হত মেলা। ততক্ষণে উপোসী বধূরা স্বামী সন্তানদের খাওয়া দাওয়া মিটিয়ে নিত। নিজেরা না খেলেও বাড়ির আর সবাইকে খেতে দিতে, খাওয়ার ব্যবস্থা করতে ছোঁয়াছুঁয়িতে যেতেই হত। তাই সব মিটে গেলে আর একবার স্নান করে, নাপিতানীর কাছে আলতা পরে, নতুন শাড়ী পরে (না হলে গরদ বা সিল্ক পরে) সবাই ঠাকুরদালানে জড়ো হত বাঁটা খেতে (এটা জরুরী নিয়মের মধ্যে পড়তনা তবু এটা আমাদের বাড়ীর নিয়ম ছিল। অনেক বাড়ীতে বউয়েরা যে যার ঘরে বসে বাঁটা খেত)।
    প্রত্যেক বাড়ী থেকে মাথাপিছু আসন, ঘটিতে জল আর ছোট বাটিতে গুড় নিয়ে আসতে হত। এসব নিয়ে আসার কাজ করত ছোটরা। মা কাকী জেঠীমাদের বাঁটা খাওয়া দেখতে তারা গ্রীস্মের দুপুরে রোজকার মত না ঘুমিয়ে জড়ো হত ঠাকুর দালানে। অবশ্য পুজোর পরে ঠাকুর প্রণাম করে পূজোর ওখান থেকে যে যার বাঁটাটা নিজেরাই নিয়ে আসত বউয়েরা গিন্নীরা।
    তারপরে খাওয়া? না, আসল কাজটাই তো বাকী। এবার আসনে বসে চোখ বুজে হাত জড়ো করে মঙ্গলচন্ডীর কথা শোনা। এটি পাঠ করত বাড়ীর বয়জেষ্ঠ্যা কোনো বিধবা।

    "অষ্ট চাল দূর্বা মাগো চিনি চাঁপা কলা
    সর্ব পূজে মাগো পূজিলাম মা সর্বমঙ্গলা।
    মঙ্গলবারেতে মাগো চন্ডী অবতার
    বিপদে পড়িলে মাগো করিও উদ্ধার।
    আটকাঠি আটমুঠি সোনার মঙ্গলচন্ডী, রুপোর ভারা।
    কেন মা মঙ্গলচন্ডী এত বেলা?
    হাসতে নাচতে পাটের দোলায় দুলতে
    নির্ধনীকে ধন দিতে, অপুত্রকে পুত্র দিতে
    কানার চক্ষু দিতে, খোঁড়ার পা দিতে
    দেওয়ানে দরবারে রক্ষা করতে
    হাটেবাজারে রক্ষা করতে
    বউমুখ দেখতে, শাঁখাশাড়ী পরতে
    গুজরীর হাট বসাতে
    তাই মা এত বেলা।"

    তিনবার শুনতে হত এই ছড়া। এরপরে প্রথমে খিলি খুলে তার ভেতরের সব জিনিসকে অল্প কলা দিয়ে চটকে এক ঢোকে গিলে নিয়ে তবে দিনের প্রথম জলটুকু খাবে সব। তারপরে গুড় আর মুগ খেয়ে বাকী ফল খাওয়া শুরু। বাঁটার কোনো কিছু ফেলতে নেই তাই যে যতটুকু খেতে পারবে ততটুকুই দেয় বাঁটাতে। গরমে ঘামে কপালময় ছড়ানো সিঁদুরে নতুন পাটভাঙা তাঁতের খসখস আওয়াজে, স্বামী সন্তানের মঙ্গলকামনায় জ্বলজ্বল করে ওঠে সারি সারি বসে থাকা মুখগুলি।
    গল্পগুজবের মধ্যে খাওয়া শেষ করে পুকুরঘাট থেকে থালা বাটি ঘটি ধুয়ে বাড়ি এসে নিয়মরক্ষে অল্প দুধ কলা আম চিঁড়ে বা মুড়ির ফলার।
  • shyamal | 24.117.233.39 | ১৯ আগস্ট ২০০৯ ১৮:১৩672109
  • মঙ্গলচন্ডীর ব্রত কোনদিন দেখিনি কিন্তু আগের প্রজন্ম থেকে শুনে এসেছি কিছু কিছু। যেমন এই ব্রত করলে কি কি লাভ হয়? বাঙ্গালভাষায়,
    হারাইল পায় , মইল জিয়ে
    নির্ধনীর ধন হয়, অবিয়ার বিয়া হয়

    (অর্থাৎ হারানো জিনিষ খুঁজে পায়, মরা বেঁচে ওঠে ইত্যাদি)
    আর যেমন মনসামঙ্গলে তেমনি এতেও একটা গল্প ছিল। গল্পের সার হল মঙ্গলচন্ডীকে পুজো করলে তিনি কুইড প্রো কুও করতে ভোলেন না। পূজারীর সব সুখের ব্যবস্থা করেন। গল্পটা একেবারেই মনে নেই। তবে হান্সেল গ্রেটেলের মত দুই ভাই বোন অত্যাচারিত হয়ে প্রায় খেতে পায় না।
    বাড়ি বাড়ি ঘুরে ফেলে দেওয়া শালপাতায় যেটুকু তরকারির ঝোল লেগে আছে তাই চেটে খায়। শুধু মনে আছে "" দ্যান এক চাটন""। শেষে মঙ্গলচন্ডীর ব্রত করায় তারা সুখী হল ।
  • Paramita | 63.82.71.141 | ২০ আগস্ট ২০০৯ ০১:৫০672110
  • মঙ্গলচন্ডী পুজো আমাদের কাছে ভীষণ ইন্টারেস্টিং ছিল। দিদিমা করতেন। শ্রাবণী কি ময়মনসিং? যদ্দুর মনে পড়ে অ্যানুয়াল পরীক্ষার আগে হত। শ্রাবণীর লেখা পড়ে মনে হচ্ছে সেটা ভুল হতে পারে। (কনফার্ম করার মানুষ এখনো আছেন, জেনে লিখবো)। শেষে একটা খেলা হত - পিঠে হরিল্লুট। নুনওলা ও নুনছাড়া পিঠে মিশিয়ে হরিল্লুট হত। যে নুনওলাটা পাবে সে পাশ, নুনছাড়া পেলে পরীক্ষায় ফেল। ভাইবোনরা নুন ছাড়া পেলে কাঁদতে শুরু করত আর অন্যরা করুণা বশত: "এই নে" "আমি নুন পেয়েছি ভাগ নে" বলে মেকাপ দেওয়ার চেষ্টা করত। শেষ পর্যন্ত সবাই পাশের গ্যারান্টিযুক্ত প্রসাদ পেতো।

    এখনও প্রতি বছর পারিবারিক ইমেল অ্যালিয়াসে মঙ্গলচন্ডী পুজোর পিঠেভাগের রেজাল্ট প্রকাশিত হয়। ভাইপো-ভাইঝিদের আয়নায় দেখতে পাই।
  • shrabani | 124.30.233.101 | ২০ আগস্ট ২০০৯ ০৯:২২672111
  • পারমিতা,
    আমি এপারের লোক। তবে দেখেছি মঙ্গলচন্ডীর ব্রতের নিয়মকানুন জেলা বাঙাল ঘটি হিসেবে নানারকম হয় তাই হেডিং!
    কিন্তু আমি যতদুর জানি জ্যৈষ্ঠমাসটা কমন। অনেকে জয় মঙ্গলবার ও বলে।
  • bitoshok | 76.113.141.128 | ২০ আগস্ট ২০০৯ ০৯:৪০672112
  • ঐ পিঠে গুলোর কি নাম ছিল যেন -- আস্কে পিঠে/চিতই পিঠে?
  • Shranabir hoye | 69.94.104.154 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ১১:৩৭672101
  • IP Address : 69.94.104.154 (*) Date:14 Apr 2013 -- 11:24 AM

    শীতলানন্দ খুব অনাদরের দেবতা ছিল। ছোট একটা ঘর, টিনের চাল, ছোট্ট দুয়ার, মোরামের রাস্তার গায়ে লাগা। টিনের চাল যাতে ভর দিয়ে আছে সেই খুঁটিগুলো আলকাতরা রাঙিয়েও সেই উইধরা খয়াটে । দুয়ারে মেঝের সিমেন্ট চটা ওঠা। বাইরের কেউ এলে বলে না দিলে বোঝা যেত না এ মন্দির। ছাগল কুকুরের আস্তানা ছিল দুয়ারটা, বর্ষার দিনে গরুও উঠে পড়ত, ফুটো চাল সত্বেও যতটা বাঁচে মাথা।
    দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলে বসত তাসের আসর, তবে ভদ্রলোকদের নয়, এপাড়া বেপাড়ার যাদের নিম্নশ্রেণী বলা হয় তাদের, কী তাস খেলা কে জানে, হুল্লোড় হত খুব, সবাই একটু দুরে শীতলানন্দের মন্দির এড়িয়েই পথ চলত তখন। রক্ষণশীলেরা নাক কুঁচকে বলত "জুয়ার আড্ডা"। আর ভদ্রজনের কেউ কেউ রসিক বৃদ্ধ আসতে যেতে প্রশ্রয়ে তাকিয়ে বলত, "তা বাবার ঘর তো, সেখানে তার চেলা সব ভুতেদের আড্ডা হবেনা তো কার হবে।"
    উঠতাম না কখনো ঐ দাওয়াটা, সবসময় বাজে গন্ধ ছাড়ত, ছাগল নাদি আর গোবরের, ঘেয়ো কুকুরের গায়ের বিচ্ছিরি বোটকা গন্ধ। আর কেনই বা উঠব, এক পা গেলেই তো বারোয়ারী আটচালা, কালীমন্দির, সেসব জায়গা ছেড়ে শীতলানন্দের মন্দির!
    মানতে মানসিকে, জল ঢালতে মা কাকীমারা যেত শম্ভুনাথের মাড়োয়........সেখানে সুন্দর মন্দির, রাস্তা থেকে একটু দুরে, সিঁড়ির ধাপ উঠে গেছে চাতালে, এ দেবতা মাটি থেকে অনেক ওপরে থাকে। চারিদিকে শান্ত পরিবেশ, বড় বড় গাছগাছালিতে ভরা, পাশে শানবাঁধানো পুকুর, ঠাকুরের নিজস্ব সম্পত্তি। পুকুরে হাত পা ধুয়ে উঠে মন্দিরের সিঁড়িতে পা রাখলে পুরোহিত চকচকে পৈতে, পাটের কাপড়ে সর্বদা হাসিমুখে অভ্যর্থনা করত পুজারিণীদের। মন্দিরের সামনে মন্দিরের মাঠ, সেখানে এমনি সময়ে ছেলেরা খেলত, আর চৈত্রে বসত চড়কের মেলা!

    IP Address : 69.94.104.154 (*) Date:14 Apr 2013 -- 11:21 AM

    বছরে এই একটা সময় কিন্তু শীতলানন্দও কিছুটা কৌলীন্য ফিরে পেত। শীত গিয়ে নতুন গরম সইয়ে নিতে পুকুরের ধারের ঠান্ডা হাওয়ায় সবাই খিড়কী দিকে জড়ো হওয়া এক সকালে হঠাৎঅই পাওয়া যেত তার আভাস, সদর দুয়ারে ডাক শোনা যেত,
    "শীতলানন্দের চরণে সেবা
    সেবা করিলে সেবা
    মহাদে এ এ এ এ ব"
    সঙ্গে সঙ্গে সবাই হুড়মুড়িয়ে দৌড় সব কাজ ফেলে, "ভক্তরা এসে গেছে, ভক্তরা এসে গেছে।
    কালো কালো চেহারা, ঝাঁকড়া চুলো মাথা (সবারই যে একইরকম হত তা না, তবে রুক্ষ চুলে ওরকমটাই লাগত), লালচে কোরা ধুতির ওপরে নতুন গামছা, খালি পা, মোরামের ধুলো আর শুকনো বাতাসে লালচে ধূসর অবয়ব। আশেপাশের লোকেদের আলোচনায় বোঝা যেত এরা চেনা লোক, লখা বাগদী, কানু দোলই, চেনাই তো। তবু সেসময় সব অচেনা লাগত, একটু ছমছমে অচেনা।
    যাদের এমনি দিনে আমাদের মন্দিরে ওঠার অনুমতি নেই (হয়ত শম্ভুনাথের ওখানেও নেই, এরা শীতলানন্দের চেলা), তাদের নমস্কার করে সিধে দেওয়া হচ্ছে দেখে কি অবাক লেগেছিল, কে জানে!
    এমনিতে যাই হোক, তখন ওরা সন্ন্যাসী, বাবার ভক্ত সব। শুরু হয়ে গেল গাজনের পালা।
    বিকেলের দিকে বারোয়ারীতলায় গেলে তখন আর দুয়ারে তাসের (জুয়ার?) আড্ডা দেখা যেতনা, দিনের গরমে ঘোরাঘুরিই করে ভক্তের দল কাহিল হয়ে খুঁটিতে হেলান দিয়ে বসে থাকত ছড়িয়ে ছিটিয়ে। ম্ন্দিরের দরজাও থাকত খোলা, আবছা অন্ধকার অন্দরে এই প্রথমবার দেখা যেত ঠাকুর, আর ধুপ ধুনোর গন্ধে অন্য মন্দিরের মতই লাগত এই একসময়।

    IP Address : 69.94.104.154 (*) Date:14 Apr 2013 -- 11:24 AM

    * শীতলানন্দের চরণে সেবা
    সেবা করিলে সেবা
    তোমার ভক্ত তোমায় ডাকে
    মহাদে এ এ এ ব
  • Shrabanir hoye | 69.94.104.154 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ১২:০৭672102
  • IP Address : 69.94.104.154 (*) Date:14 Apr 2013 -- 11:59 AM

    বছরে এই একটা সময়ে লোকে বারোয়ারীর আটচালায় দাঁড়াতো কালীমন্দিরের দিকে পেছন করে, গাজনের নানা দিনে। মেলা বসত না, একই গাঁয়ে শম্ভুনাথের মত জমজমাট আয়োজন, তবে উল্টোদিকে ময়রা পোকা পাল, দু তিনটে আইটেম বেশী বানাতো। রোজকার গুড়ের শুঁটি (বা কাঠি) ভাজার সাথে চিনির শুঁটিভাজাও, লবঙ্গলতিকা, দরবেশ।
    চ্ড়ককাঠও উঠতনা এখানে। শম্ভুনাথের ওখানে পুকুরে ভেজানো চড়ক কাঠ পোঁতা হত মাঠের মাঝে। হা পিত্যেশ করে ছোটরা বসে থাকত কখন বড়রা নিয়ে যাবে চড়কের মাঠে, বিকেলে কখনো চড়কের আগেই ভক্তদের প্র্যাকটিস সেশন চলত, আকাশছোঁয়া উঁচু কাঠের মাথায় বড় বাঁশের মাঝামাঝি গাঁথা, বাঁশটার দুদিকে দুই ভক্তকে বেঁধে বাঁই বাঁই ঘোরানো হত।
    যতক্ষণ অপেক্ষা ততখন একটু দুর থেকে এই মন্দিরের ভক্তদের দেখা, খুব খুব ভয় করত, কেমন লাল লাল চোখ, ওরা নাকি নেশা করত মানে করতেই হত, বাবার প্রসাদ, শিবের পুজোর এই নিয়ম।
    আমাদের সাথে সাথে আরো কেউ কেউ দাঁড়িয়ে থাকত, ওদের দিকে তাকিয়ে, বাড়ির লোক সব, কারুর ছেলেমেয়ে, কোনো ভাইয়ের বোন। বাড়িতে তো যেতে পারতনা এই কদিন, সন্ন্যাসী যে তাই বাড়ির লোকেরা আসত। তাদের চোখে আমাদের মত ভয় মেশানো কৌতূহল থাকতনা, থাকত উদ্বেগ চিন্তা, এ বড় ক্ঠিন ব্রত, একটু এদিক ওদিক হলে সপরিবারে বাবার রোষে পড়বে।
    সব জেনে শুনে ভক্ত হতে আসত এরা, কেউ মানসিকে, মানত করেছে বলে, কেউ দারিদ্র্যে, কিছু পাওনার আশায়, কেউ কেউ আবার বাবুদের আদেশে। শীতলানন্দের মত ঠাকুরের ভক্ত জোগাড় করা সহজ হতনা খুব। এদের চেহারা কদিনে ভেঙে পড়ত (যাদের ভাঙা ছিলনা), ওদিকে শম্ভুনাথের ভক্ত বা একটু দুরে ভুতনাথের ভক্ত হবার জন্যে লাইন লেগে যেত, এই কদিনে তাদের ওজন বেড়ে যেত নাকি বাবার প্রসাদে, এমনটাই বিশ্বাস ছিল।

    চড়ক না হলেও কাঁটা গড়ানো ছিল আর হেলাফেলার নয়, শীতলানন্দের কাঁটা গড়ানো দেখতে আশেপাশের গ্রামের লোক ভিড় করত। এমনি দিনেও এরা পুকুর থেকে চান করে দন্ডী কেটে আসত। কাঁটা গড়ানোর দিন হাতে থাকত একগুচ্ছ কুল ডাল। সেটা মাটিতে পেতে তার ওপর খালি গায়ে গড়াতো। এমনি করত করতেই আসত মন্দিরের দিকে। গা ক্ষতবিক্ষত হয়ে ছড়ে রক্ত বেরোত আর তা দেখে লোকের কী উল্লাস, "আরো আরো, ওই ছেলেটা ঠিকমত গড়াচ্ছে না। কেন নেয় এই বাচ্চা গুলোকে। লখা কে দ্যাখো, পিঠটা একেবারে লাল হয়ে গেছে। এই না হলে কাঁটা গহানো। শিবের ভক্ত হওয়া কী এতই সোজা"!

    শম্ভুনাথের ওখানে গাজনের দিন রাতের বেলায় হত বাণ ফোঁড়া আর আগুনের ওপর দিয়ে হাঁটা, সে দেখতে ছোটদের নিয়ে যেতনা কেউ। কাকীমাদের চাকর গেঁড়ুদা সন্ধ্যেবেলায় এসে সবাইকে বলত, জেগে থাকবি সব, বাণ ফোঁড়া দেখতে যেতে হবে। ওঃ, সে যা জিনিস, না দেখলে বুঝতে পারবিনি। জিভ এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে যায়।
    আমার চিন্তা ছিল জিভটা কী ত্খুনি সেলাই করে দেয়, কে করে সেলাই। নাহলে পরে তো আর কথা বলতে পারবে না।
    গেঁড়ুদা হাসত শহরের মেয়ের অজ`যতায়, "আরে ভক্তের জিভ, ওতে ডাক্তার লাগেনাকি সেলাই করতে, বাবার চরণামৃত পড়লে প্রে ফুটোর চিহ্ন টুকুও দেখা যাবেনি কখনো।
    তবে যতক্ষণ দুচোখ খোলা থেকেছে, যাওয়ার সময় হয়নি, সময় হলে আমরা নাকি সব অচৈতন্য তাই গেঁড়ুদা নিয়ে যায়নি কোনোদিনই।
    পরের দিন শুধু চড়কের চরকি ঘোরা দেখা আর মেলায় ঘোরা।

    শীতলানন্দের কাঁটা গড়ানো দেখা আমাদের বাণ ফোঁড়া আগুনে হাঁটা বঞ্চিত হৃদয়ের অনেকখানি জুড়ে থাক তাই।
  • sosen | 125.242.179.136 | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ১২:১২672103
  • স্মৃতি উদ্ধার-

    অশ্বথ পাতা ব্রত

    চড়ক -সংক্রান্তি থেকে এক সপ্তাহ। মতান্তরে দেখছি, সম্পূর্ণ বৈশাখ মাস।

    পাঁচ খানা অশ্বত্থ পাতা, মাথায় ঠেকিয়ে ডুব দিয়ে, ভাসিয়ে দিতে হবে
    ডুব দেওয়ার মন্ত্র-কিছু ভুল ও হতে পারে--

    অশ্বত্থ পাতা , পুণ্যলতা
    শ্যাম ঠাউরের ঝি
    স্নান করতে যায় সায়রে
    বাজি দ্যাখবা কি ?
    সাত বউ যায় সাত দোলাতে
    সাত বিটা যায় সাত ঘোড়াতে
    কত্তা যায়েন শ্বেত হাতিতে
    রত্ন সিংহাসনে চলেন
    শ্যাম ঠাউরের ঝি।

    তার পর একেকটি ডুবে
    ১। পাকা পাতাটি মাথায় দিলে, পাকা চুলে সিন্দুর পরে
    ২। কাঁচা পাতাটি মাথায় দিলে, কাঁচা সোনার গয়না পরে
    ৩। কচি পাতাটি মাথায় দিলে কচি ছ্যানা কোলে করে
    ৪। শুগনা পাতা মাথায় দিলে সুখে আটচ্যালা ভরে
    ৫। ঝুরঝুরে পাতা মাথায় দেয়, হীরা মুক্তায় শুইতে পায়

    স্নান সেরে উঠে এক ঘটি জল নিয়ে অশ্বত্থের গোড়ায় ঢেলে প্রণাম করতে হবে
    তথ্যাদি: আমার মায়ের ঠাকুমা। সেই লোকায়ত আচারের ডায়রিখানা না থাকায় অনেক ছড়া আর মনে পড়ে না, যে দুচারখান মনে আছে লিখে ফেলবো ভাবছি।
    সম্প্রতি এর-ই অন্য ভার্সন দেখলাম কোথাও , পশ্চিমবঙ্গীয় ভাষায়।
  • Shrabanir hoye | 69.94.104.154 (*) | ১৪ এপ্রিল ২০১৩ ১৩:১৬672104
  • IP Address : 69.94.104.154 (*) Date:14 Apr 2013 -- 12:50 PM

    তা সেই কাঁটাগড়ানো দেখতে তো মহা উৎসাহে দুপুরে খাওয়াদাওয়ার পরে জড়ো হয়েছি আটচালায়। শীতলানন্দ অনাদরের বলেছি, ঘরোয়া বলা হয়নি। মোয়ানের দিক দিয়ে একটা পা চলা রাস্তা ছিল বারোয়ারী তলায় আসার, সদর বাজারে সবার চোখ এড়িয়ে বাড়ির মেয়েরা সেই রাস্তা দিয়ে এসে একটু দুরে দাসেদের দুয়ারে দাঁড়িয়ে কালীতলার কান্ডকারখানা দেখতে পারত। তাই শম্ভুনাথকে এখানে হারিয়ে দিত শীতলানন্দ, বাড়ির বউ ঝিরা দুর থেকে হলেও কিছুটা এই গাজন প্রত্যক্ষ করত যেটা শম্ভুনাথের ওখানে সম্ভব ছিলনা।
    মা কাকী জেঠীরা দুরে হলেও কাছে থাকার সুবাদে ছোটদেরও সাহসী হবার অবকাশ, আট্চালার সামনের দিকের সারিতে দাঁড়ানো একা একা ভিড়ের ফাঁকে গলে গিয়ে। অবশ্য গাঁঘরে একা হওয়ার সুযোগ কোথায়, যাদের পরপুরুষের সমুখে যাওয়ার ছাড়পত্র আছে সেইসব বিধবা ঠাকুমা পিসীমা বাএকটু বড় ওপাড়ার দিদি, সেপাড়ার পিসীরা হাত ধরেই নিত।
    লখাকাকার কাঁটা গড়ানো কারোর মত নয়, একেবারে আলাদা। অবাক হয়ে দেখি, ওই ঝিমকালা লম্বা একহারা লোকটি যখন জেঠুর খামারে চুপচাপ মুনিষ খাটে তখন বোঝাও যায়না যে তার পেটে এত কেরামতি আছে।

    ঝাঁকড়া চুলো মাথা, পাথরে খোদাই চেহারা যেন, জলে ধুলো কাদায় মাখামাখি পরণের কাপড় জড়িয়ে কোনোরকমে দেহের নীচভাগে, লজ্জা নিবৃত্তি।
    কাঁটাগোছার ওপর এপিঠ ওপিঠ গড়িয়ে গড়িয়ে আসছে, যেন সত্যিই শিবের ভর হয়েছে মানুষটার ওপর। ভিড়ের মধ্যে শোরগোল ওঠে তাকে আসতে দেখে, ঘন হয়ে আসে ভিড় রাস্তার ধারে।

    কাঁটার ওপর অমন গড়ানো দেখে বিস্ময়ে চোখ গোল গোল আমার, মুখের হাঁ বুজছে না.........সে মন্দিরের দিকে চলে যাওয়ার পরে আরও অন্য ভক্ত আসছে (বেশী না, গরীব শিবের বরাতে গুটি চারেকের বেশী ভক্ত জুটত না), সেদিকে নজর তবে “লখাকাকার মত কেউ নয়”, চাপা ফিসফাস ওঠে মেয়ে মহলে।
    এমন সময় সবার দৃষ্টি অনুসরন করে নজর গিয়ে পড়ে মিষ্টির দোকানের সামনের খালি জায়গাটায়.......মন্দির থেকে কাটা ছাগলের মত (বড়রা এরকম বলেছিল পরে) গড়াতে গড়াতে আসছে সেজন, শুধু পিঠে হাত দিয়ে ধরা কাঁটার গোছা নেই আর, মুখে ফেনা উঠছে।..........ঢাকের আওয়াজ থেমে গেলে শোনা যায় এক অমানুষিক অসহায় শব্দ ওই মুখ দিয়ে......সম্বিত ফিরে পেয়ে দিদি বা জেঠি কেউ তার হাত দিয়ে চোখ ঢেকে দেওয়ার আগে যা দেখার দেখা হয়ে গেছে...........আবার যখন চোখ খোলা পাই তখন ছটফটানি থেমে গেছে, আওয়াজ গেছে থেমে। কিছুক্ষনের মধ্যে সবাই ঘিরে ফেলল জায়গাটা, ভিড়ের মধ্যে দিয়ে আর কিছু দেখা গেলনা..................

    "শীতলানন্দের আর পুজো নেবার ইচ্ছে নেই, এবার তোমরা বন্ধ করো। সেবাইত শক্তি নাপিত হাত জোড় করে বসে আছে আটচালায় আর তার সামনে কর্তা ব্যক্তিরা। নাপিতরাই শীতলানন্দের সেবাইত।
    "এত অনাচার সয়? শুনি তো নিত্যপুজাও ঠিকমত করোনা।"
    "আজ্ঞে, বাড়ি বাড়ি ঘুরে কামিয়ে ফিরতে দেরী হয়ে যায়, মেয়েরা তো ওনার পুজো করতে পারেনা আর বামুনকে দেবার পয়সা নেই আমার। দেরী হয় বটে তবে রোজ নিত্যিপুজো করিতো সাধ্য মত, ডোবার আয়ে আর কত হয় ঠাকুরের! অপনারা একটু দেখুন, না হলে আমার কার দ্বারা ....."

    সেবছরই একবার নয়, প্রায় প্রতিবছর এক ভক্তকে টেনে নিতেন বাবা, অন্তত অনেকে এমনটা ভাবত।
    যারা ঠিক তেমন বিশ্বাসী ছিলনা তাই এরকম মৃত্যুর কারণ শুধুমাত্র বাবার ইচ্ছেঅনিচ্ছে, এটা মেনে নিতে তাদের বেধেছিল।
    গরীব লোক সব, এমনিতেই শরীরে কিছু নেই, খাওয়া জোটেনা ঠিকমত। কিছু পাওনার আশায় ভক্ত হয়, ঠাকুরের কৃপা, সামান্য কিছু জিনিসপত্র,তাছাড়া ভাবে কিছুদিন মাঠে ঘাটে পরিশ্রম থেকে রেহাই মিলবে।
    শেষের দিনে, ওই নির্জলা উপোস, ঠা ঠা গরমে পুকুরের জলে গা চুবিয়ে উঠে ভিজে গায়ে দণ্ডী কাটা, তারপরে কাঁটা গড়ানো, অতটা নিতে পারেনা দুর্বল দেহ......অযৌক্তিক হয়ত নয়, কারন যাদের মৃত্যু হয়েছিল সে কবছরে, তারা সবাই একটু বয়স্ক ছিল, কম বয়সী ভক্তরা কেউ এভাবে গেছে শুনিনি!
    গাজনের নামে যে একটা গা শিরশিরানি রয়ে গেছে চিরকাল তা ওই মৃত্যু চোখের সামনে দেখার পর থেকে............

    তবু জানিনা, সে বয়সে তখন হয়ত তেমন কিছু লাগেনি, এখন ভাবলে বেশী লাগে। হয়ত তারপরের দিনই আবার গেছি চড়ক দেখতে, নাহলে চ্ড়কের মেলায় কেনা সরার ওপর চামড়া জড়ানো ডুগডুগিটা কোথা থেকে এসেছে যা এখনো আমার গাজন, চড়ক দেখার সাক্ষী হয়ে গ্রামের বাড়ির ভাঁড়ার ঘরের দেওয়ালে ঝোলে।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন