আমার দাদার বন্ধুরা গ্রামে এলে প্রকৃতি প্রকৃতি নিয়ে বড্ড কোলাহল করে। এসেই বলে ছিপ নিয়ে আয়। মাছ ধরবে ওরা। বাতাস বইলেই বলে আহা কি মধুর হাওয়া। সেদিন ঝড়ো হাওয়া বইছিলোভাঙ্গা জানালা দিয়ে ঢোকে বাতাস।সব তোলপাড়আমাদের কুসুম পিসীর চিৎকার। আর দাদার বন্ধুদের সে কি উত্তেজনা।উঠোনে নেমে আসে তারাহৈ হৈ করে নাচেআর বলে প্রকৃতির কি ভীষন রূপ। তারপর ওরা গান ধরল। আমাদের গ্রাম নিয়েও কি ওদের কম উৎসাহ?ছেলেমেয়েদের ডেকে কত কি প্রশ্ন। অমুক কে, তমুক কে? প্রধান মন্ত্রীর নাম? গ্রামের একে ওকে ডেকে জিজ্ঞেস করে ছেলেমেয়েরা স্কুলে যায় তো?না না, শুধু প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কাজ চলবে না মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক, বিশ্ব বিদ্যালয়আরো কত কি যে বলে ওরা!আমি বাচ্চাদের তাড়াই। ... ...
জোয়ারে নাকি সব নতুন ঢেউরা আসে। প্রথমে আসে ‘মা’ ঢেউ। হটাত করে হুরমুর করে উপরে উঠে এসে পারের বালি ভিজিয়ে ফিরে চলে যায়। তারপর ছোট ছোট ঢেউগুলি আসে। একটা, দুটো, তিনটে আসতেই থাকে ওরা। অতটা উপরে উঠে আসতে পারে না। ফিরে যায়। মিলিয়ে যায়। আবার একটা বড় ঢেউ আসে। ... ...
রুবি পাড়ার মাঠ। ছেলেটা বললো ওর কাকাই নাকি বলেছিল বস্তায় ভরে নিয়ে যেতে। জিজ্ঞেস করলাম বস্তায় কেন? বললো যাতে ও ফেরার পথ না চিনতে পারে। দম বন্ধ হয়ে মরে যায় নি? সে কি করে জানি? তারপর একটু ভেবে বলে, না না, মরবে কেন? প্লাস্টিকের বস্তা তো নয়। চটের বস্তা। হাওয়া ঢোকে। ... ...
না, বাঘ ভাল্লুক স্ত্রীর এক্কেবারে পছন্দ না। সাফারি বাদ। ওরা শহর দেখতে আরম্ভ করলো। নিউইয়র্ক স্ট্যাচু অফ লিবার্টি, সেন্ট্রাল পার্ক, নাইট ক্লাব, সিঙ্গাপুর, লা ভেগাস, লন্ডন প্যারিস সিডনি মেলবোর্ন আরো কত কি। ... ...
মানুষ ঘুম থেকে উঠে দেখে জানালার বাইরে পৃথিবীটা সবুজ হয়ে গেছে। আকাশ আরো পরিষ্কার। বাগানে উদ্যানে রাস্তায় মাঠে ঘাটে গাছ গাছড়ায় লতায় পাতায় সমস্ত উদ্ভিদকুলে এক বিরাট অস্থিরতা যেমন ইচ্ছা বেড়ে উঠেছে। যেদিকে ইচ্ছা ছড়িয়ে পড়েছে। চেনা অচেনা লতা জড়িয়ে ধরেছে গাছগুলিকে। কোত্থেকে এলো এরা? চারদিকে এক বেপরোয়া ভাব। মিউনিসিপ্যালিটির লোকটা এলো তার লম্বা ঝাড়ু নিয়ে। সে খুশী নয় মোটেই খুশী নয়। তার চোখে মুখে বিভ্রান্তি। কোত্থেকে এল সব। ফ্যালফ্যাল করে চারদিকে চায়। বাগানে গাছের শিকড় বাথরুমের পাইপ অব্দি চলে এসেছে। কাল বিকেলের হাঁটু সমান চাঁপা গাছটা এক লাফে উঠে এসেছে জানালা অব্দি। বন্য ঘাস বাগানগুলোকে প্রায় গ্রাস করে ফেলেছে। গাড়ীর ... ...
সেই একই খবর। নতুন কিছু খুঁজছিলাম। পাঞ্জাবের এক পুলিশ কনস্টেবল একটা ডিম চুরি করেছিল বলে, তাও আবার কাঁচা ডিম, তাকে নাকি সাসপেন্ড করা হলো। ... ...
পাঁচ পাঁচজনকে পিটিয়ে মেরেছে ওরা। গাছের ডালে ঝুলিয়ে আগুনে জ্বালিয়ে মেরেছে। পুরো গ্রামের চোখের সামনে মেরেছে । উফ্ কি বর্বরতা! পুলিশ প্রশাসন ! ঘুমিয়ে ছিল নাকি ওরা? না বাবা, তা নয়। এদের নয়; ওদেরকে মেরেছে। বুঝুক ওরা যে জনতা জেগেছে। ওঃ তাই বল। বাবা শান্ত হলেন। চায়ের কাপে দুধ পড়ল বেশী। বাবা কিন্তূ মাইন্ড করলেন না। মাকে কিছু বললেন না। নিজেই চাএর পট টা টেনে নিয়ে আরো খানিকটা লিকার ঢেলে নিলেন। তারপর আমাদের কে খেয়াল করে বললেন,এটা অন্যায়। পুলিশের হাতে দেওয়া তুলে দেওয়া উচিত ছিল। এই ভাবে নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া, এটা ঠিক নয়। বিকেলে শম্ভু কাকু, দিলীপ জ্যাঠা ওদের হোয়াটস অ্যাপ দলের আরো ... ...
মানুষ রাস্তায় চলছে ফিরছে বা বসে আছে ঘরের সিঁড়িতে বা পার্কের বেঞ্চিতে একা, বা খেলছে । লোকটা দৌড়চ্ছে - রোজকার অভ্যেসবশে দৌড়চ্ছে, ট্রেন না মিস হয়ে যায় তার জন্য দৌড়চ্ছে? রোগা হতে দৌড়চ্ছে নাকি যৌবন ধরে রাখতে দৌড়চ্ছে? বিয়ে করেছে সে। বৌ ভালো। বাড়ী সামলায়, সন্তান সামলায়, রাঁধে বাড়ে। সে রোজ দৌড়য়। কেন? লেখক হিসাবে কারণটা তোকে বের করতে হবে। ... ...
ধাক্কা শীতের দুপুরে আমার দোতলার ছোট্ট বারান্দাটিতে, যতক্ষণ রোদটাকে ধরে রাখা যায় আর কি, গায়ে রোদ লাগিয়ে বসে থাকি আমার আরামকেদারাটায়। বই পড়ি, রাস্তা দেখি, বই বন্ধ করে কিছুক্ষন ফেসবুক হোয়াটসঅ্যাপ করি। আবার রাস্তার দিকে তাকাই। আবার বইটা উঠিয়ে নিই। পড়তে পড়তে ঢুলি। যখন মোটা উলের আফগানি টুপিটা মাথায় দিয়ে ১৪১১ এর মৃগাঙ্ক বাবু হাঁটতে বের হন, তখন বুঝি যে সূর্য এবার ঢলতে আরম্ভ করবে। আজও বসে আছি বারান্দায় শরীরটাকে রোদে ডুবিয়ে। সাকির মস্ত মোটা বইটা হাতে। মিসেস জোয়ান চিন্তায় পড়েছেন, কি করে তাঁর অতিথির আগমনটাকে আটকানো যায়। সাকির ছোট ছোট গল্পগুলো ধীরে সুস্থে এগোতে থাকে। রসিয়ে রসিয়ে পড়া যায়। কোলের ... ...
শেষ রাতের দিকে আঁধি উঠেছিল। ক্ষুব্দ হাওয়ার বদ্ধ জানালা সার্সিগুলির উপর ধমাদ্ধম আঘাত। তারপর ফাঁক ফোঁকর ছিদ্র খুঁজে ধুলো হাওয়া ঢুকে আনন্দকুঞ্জ এপার্টমেন্টের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরগুলির মধ্যে নিদ্রিত লোকগুলিকে জাগিয়ে তুলে দিল দিল্লীর আঁধি। নিদ্রা চোখে মানুষগুলি ছোটাছুটি করলো কিছুক্ষন এ ঘর থেকে ও ঘরে, রান্না ঘরে, বাথরুমে, এখানে ওখানে, খোলা আধখোলা জানালাগুলি বন্ধ করতে।৫নম্বর গেটের গায়ে গুলমোহর গাছগুলির ডালপালা ভেঙ্গে পড়ার সশব্দ আওয়াজ শুনেছে অনেকে। তারপরেই তো বিজলী চলে গেল। ধক ধক শব্দে বন্ধ হয়েছে এসি। ইনভারটারের জোরে কিছু সিলিং ফ্যান ঘুরে যাচ্ছে আপন মনে। বাইরে আরো কয়েক মিনিট মাতামাতি করার পর হাওয়ার শান্ত হয়েছে। মৃদু মৃদু মেঘের আওয়াজ ভেসে আসছে দূর থেকে। ... ...