"কে কাকে রেখেছে মনে?
হিজলের বনে দোল খায় পুবদেশী হাওয়া
আজীবন যাকে চাওয়া সে হয়েছে ঈশানের মেঘ..."
সেই পুবদেশী আশ্চর্য হাওয়া আজও বয় কলকাতায় তথা মফস্বলে। সে দেশ একটাই ছিল, তারপর কাদের প্ররোচনায়, কাদের বিট্রেয়ালে কবে ভাগ হয়ে গেল গঙ্গায় পদ্মায়? দেশভাগ উদ্বেল করেছিলো সাদাত মান্টো আর ঋত্বিক ঘটককে, যুগপৎ। সমরেশ বসুর আদাব আমরা আঠারো পার করার আগেই পড়েছি। এই নিয়ে বিস্তর চর্চা ঐতিহাসিকদের। সম্প্রতি পড়লাম দময়ন্তীর লেখা ' সিজনস অব বিট্রেয়াল'। তিনি 'দ' নামে লেখেন গুরুচন্ডা৯ তে। দ বলে একটি লোকশব্ ... ...
"তুমিও হয়ত লিখবে একদিন। আসলে, একটা নদী আছে কোথাও, দেখা যায় না, তবে আছে। সেই নদীর ধারে, সন্ধ্যার পরে অদ্ভূত এক হাট বসে। সেখানে দুঃখের বেচাকেনা হয়। ঐ নদী যেদিন দেখতে পাবে, লেখা ছাড়া গতি থাকবে না।"
বোধহয় ইন্দ্রাণী ওই নদীটি দেখে ফেলেছেন। আর দুঃখের বেচাকেনা করেন সেই হাটে যারা, তাঁদের কথা লেখেন ইন্দ্রাণী। আমরা যারা পাঠক, তারা শিউরে শিউরে উঠি এসমস্ত তীব্র আখ্যানে।
কাদের কথা লেখেন দুখজাগানিয়া ইন্দ্রাণী? কারা এই গল্পের চরিত্র? পাঠক পড়ুন, নিজেদের চিনবেন একভাবে। পাঠিকারা হয়ত চিনবেন আরো অন ... ...
'ভালো লাগছে না রে তোপসে' বা 'ডিলাগ্রান্ডি' বললে বাঙালি মননে এক ধরনের রিফ্লেক্স অ্যাকশন কাজ করে যেন। ফেলুদা/তোপসে, টেনিদা, ঘনাদা ইত্যাকার নামগুলি বাঙালির আড্ডার স্বাভাবিক উপাদান। এই অনুষঙ্গগুলি দিয়ে বাঙালি তার হিউমারের অভ্যাস ঝালিয়ে নেয়, কিছুটা আক্রান্ত হয় নস্টালজিয়াতেও।
তবে, এইসবের মধ্যে বাল্যবেলায় পড়া কিছু কিশোরচরিত্ররা হারিয়ে গেছে, কিছুটা উপেক্ষিতই যেন তারা। ক'জন আর নগণ্য সাধু কালাচাঁদকে মনে রেখেছে? ট্যাঁপা-মদনা বললে আমরা ক'জনই বা সহসা আবার ক্লাস ফোরের পূজাপ্রাক্কালে চলে যাই? এইসব চরি ... ...
ফাটাও বিষ্টু
এবার ফাটাও বিষ্টু, সামনে ট্রেকার,
পেছনে হাঁ হাঁ করে তেড়ে আসছে দিঘাগামী সুপার ডিলাক্স।
আমাদের গন্তব্য অন্য কোথাও,
নন্দকুমারে গিয়ে এক কাপ চা,
বিড়িতে দুটান দিয়ে অসমাপ্ত গল্প শোনাব
সেই মেয়েটার,
সেই যার
জয়া প্রদার মত ফেস কাটিং, রাখীর মত চোখ।
বাঁয়ে রাখো, বিষ্টুপদ, মেজাজ হারিও না,
যতক্ষন হারু আছে জমিয়ে চালাও,
সঙ্কেত শুনে নিও, কখন বলছি, 'আস্তে, লেডিজ'
এখন দুধারে ধানক্ষেত, পাগলা হাওয়া...
তোমার জন্য চালিয়ে দিচ্ছি, ' কি আশায় ... ...
শীতের সেই শিহরিত সন্ধেগুলো মনে পড়ে, আশিস?
হাড়জমানো বাঘের মত জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়ত দক্ষিণবঙ্গের ডিসেম্বর-অধ্যুষিত 'মাওয়া' গ্রামে। বাঁদর টুপি, রঙিন মাফলার ও ধূসর চাদরে ঢেকে যেত নানাবয়সের মুখ, কান, নাকসকল। সন্ধে থেকে রাত শীতকালীন গ্রামবাংলা মেতে উঠত পাঁচদিন ব্যাপী যাত্রানুষ্ঠানে। এ সেই সুসময়, যখন খেজুর রসের মৌতাত ও শস্যফলনের হাসি বাংলার ঘরে ঘরে, আপামর বাংলার গ্রামীণ জীবনের এ এক ঐকান্তিক উদযাপন। গ্রামের, গঞ্জের আবালবৃদ্ধবনিতাকে জাপটে ধরত শীতের বিশ্রুত যাত্রাজ্বরের তাড়স।
ক্লাস ফোরে দে ... ...
কাঁসাইয়ের থেকে আনুমানিক একশো দেড়শো মিটার দূরে মাটির বাঁধ। কংসাবতী ব্রিজ আড়াআড়ি এই বাঁধকে দ্বিখন্ডিত করেছে। আশির দশকে সেই বাঁধ ধ'রে ক্যানালের দিকে হেঁটে যেত এক তরুণ। তাকে দেখলেই সদরঘাট ও গান্ধীঘাট অঞ্চলের ছেলেছোকরারা এই গান ধরত:
'ওরে, ট্যাংরা তবু কাটন যায়,
মাগুর মাছে ক্যাটক্যাটায়,
আর, শিঙ্গি মাছটা মারল কাঁটা,
পরাণ যায় জ্বলিয়া রে!
কি মাছ ধরিছ বড়শি দিয়া?
ও দরদী, কি মাছ ধরিছ বড়শি দিয়া?'
যাকে উদ্দেশ্য করে এই গান, সেই দরদী, 'বামুণ ঘরের পিন্টা' , মিটমিট ক'রে হাসত, ... ...
ছোটবেলা থেকেই মামাবাড়ির 'পুরোনো ঘর' ব'লে একটি পরিত্যক্ত কক্ষে ঝিমধরা দুপুরগুলি অতিবাহিত হতো। ঘরটি চুন সুরকির, একটি অতিকায় খাটের নীচে ডাই হয়ে জমে থাকত জমির থেকে তুলে আনা আলু, পচা গন্ধ বেরুত।দেওয়ালের এক কোণে ছিল বিচিত্র এক ক্ষুদ্র নিরীহ প্রজাতির মৌমাছির বাসা। বাতিল হয়ে যাওয়া গ্রামোফোন রেকর্ড, সেজমামার '১৯৭২ সালের কবিতাগুচ্ছ' সম্বলিত ডায়ারি, অজস্র আত্মীয়স্বজনের চিঠিপত্র, দাদুর হাতের লেখায় 'সান্ত্বনার ফ্রকের মাপ' এসব তুচ্ছাতিতুচ্ছ জিনিসের ভিড় দৃষ্টি আকর্ষণ করত। দ্বিপ্রাহরিক নির্জনতায় অধিকতর আকর্ষণ ছ ... ...
ক্লাস ফোরে যখন পড়ছি তখনও ফেলুদার সঙ্গে পরিচয় হয়নি, পড়িনি হেমেন্দ্রকুমার। কিন্তু, যথাক্রমে, দুটি প্ররোচনামূলক বই পড়ে ফেলেছি। একটির নাম 'শয়তানের ঘাঁটি' ও অপরটি 'চম্বলের দস্যুসর্দার'। উক্ত দুটি বইয়ের লেখকের নাম আজ প্রতারক স্মৃতির অতলে। যতদূর মনে পড়ে, এই বইদুটি ছিল দেব সাহিত্য কুটিরের প্রকাশনা।সে সময়ে দেব সাহিত্য কুটির ছিলো বালকদিগের অনিবার্য ঠিকানা, রহস্য ও রোমাঞ্চে একেবারে ঠাসা।
দুটি বইই পড়তে দিয়েছিলেন মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের লাইব্রেরিয়ান পানুদা।শয়তানের ঘাঁটির প্লট এরকম: পদ্মার চর থেকে ... ...
এক বন্ধুর কাছে শুনলাম আই.আই. টির এন্ট্রান্স টেস্ট নাকি পৃথিবীর কঠিনতম পরীক্ষাগুলোর মধ্যে অন্যতম। সেই প্রসঙ্গে খানিক আলোচনা হলো বন্ধুদের সঙ্গে। কিছু তথ্য, ফিটজি ইত্যাদি সংস্থা, এম সি কিউ, বইপত্তর ইত্যাকার বিষয়ে খানিক খোঁজ নেওয়ার পর একটি আশ্চর্য তথ্য পেলাম। যেখান থেকে এই লেখা লিখতে প্ররোচিত হলাম।
আই আই টির এন্ট্রান্স যারা ক্র্যাক করেন তাঁরা নিঃসন্দেহে প্রতিভাবান, তাঁদের অনেকেই বিদেশে প্রতিষ্ঠিত হন, কেউ হন নামী সংস্থার সি ই ও, কেউ বা গবেষণায় সফল, বিশেষত পলিসি মেকিং এও তাঁদের ভূমিকা থাকবেই। ... ...
ক্লাস সিক্স কি সেভেন তখন। মনের মধ্যে সাইকেল শেখার অদম্য ইচ্ছে। আমাদের সময়ে বাড়িতে আমাদের বয়সোপযোগী মানানসই ছোট সাইজের সাইকেল কিনে দেওয়ার খুব একটা চল ছিলো না। সমবয়সী ছেলেমেয়েদের দেখতাম বড়দের সাইকেল নিয়েই হাফ-প্যাডেলে পাড়া মাতাচ্ছে। আমার এক কাকার সাইকেল নিয়ে হাফ প্যাডেলে মকশো করতে শুরু করলাম। সাইকেল বা সাঁতার, দুটোতেই এই পদ্ধতি, শেখার জন্য অপরিহার্য। সাঁতারে জলে নেমে হাত পা ছোঁড়া, আর সাইক্লিং এর জন্য ডাঙায় দু চাকায় ব্যালেন্সিংয়ের কসরৎ।
সাইকেলের তিনটি রডের মধ্যবর্তী 'ব' বা ডেল্টার মতো ফা ... ...