গোদার বিপ্লব। গোদার নাশকতা। গোদার ধ্বংস, সৃষ্টি, স্পর্ধা সব কিছুই। বিংশ শতাব্দী জ পল সাত্র, বব ডিলান বা বিটলস ছাড়া এরকম সুগভীর চুম্বনের স্বাদ খুব একটা পেয়েছে বলে মনে করা যায় না। তাঁর যাবতীয় রহস্য, দুর্বোধ্যতা, ইমেজ সমস্ত কিছু নিয়ে পাতার পর পাতা লেখাপত্র হয়েছে, তুফান উঠেছে চায়ের কাপে, গবেষণা কাটাছেঁড়া বিতর্ক কিছুই নেই যা এই নামটিকে ঘিরে হয়নি। তিনি সিনেমার শতাব্দী স্পন্দিত নায়ক। তাঁর অরৈখিক সম্পাদনা, কাহিনী বিরোধিতা, জাম্প কাট, প্রতিবিল্পব ও প্রতিসংস্কৃতি প্রায় রূপকথার মতন পঠিত। আজ বিয়োগের মুহূর্তে সেইসব আলোচনা করে আমি এই শূন্য দেবস্থানে বিলাপ করতে চাইনা। কেবল রইল গোদার নামক কোন এক ধ্রুবতারার সাথে একুশ শতকের একটি তাল-ভোলা যুবকের আলাপ আর সম্পর্কের কিছু চিরকুট। ... ...
ইদের দিন সকালে মা গরম পানি করে কাকিমা'র ঘরের ছাদে সাবান শ্যাম্পু মাখিয়ে গা ধোয়াতো, তারপর নতুন জামা পরিয়ে, চুলে ক্লিপ বেড়ি (হেয়ার ব্যান্ড) লাগিয়ে, পন্ডস বডি লোশন গায়ে ও মুখে পন্ডস ক্রিম লাগিয়ে, লিপস্টিক কাজল টিপ দিয়ে সাজিয়ে এমনকি জুতো পরিয়ে দিতো, তারপর দুই ভাইকে পাঞ্জাবি পায়জামা পরিয়ে আব্বার সঙ্গে আমাদের পাঠাতো ইদগাহে। তখনো মেয়েরা তৈরি হইনি, মেয়েদের ইদ গাহে যেতে নেই, মেয়েরা ছেলেরা একসঙ্গে তৈরি হয়ে কী হবে? আগে ছেলেরা স্নান করে তৈরি হয়ে চলে যাক। তারপর ঝট করে স্নান করে রান্না ঘরে রকমারি রান্না করতে বসে পড়ার মত মেয়ে হইনি। ... ...
– আর ‘পুতুলখেলা’র প্রয়োজন? ২০০৪ সালে? – ‘পুতুলখেলা’ প্রথম হয়েছিল ২০০২ সালে। পুংশাসিত সমাজে নারী এবং পুরুষের কিছু নির্দিষ্ট ভূমিকা থাকে তো! যেমন, পুরুষকে রোজগার করতেই হবে, তাকে নিজেকে নির্ভরযোগ্য বলে প্রমাণিত করতেই হবে আর মেয়েকে ইনফিরিওর হতেই হবে, মিষ্টি মিষ্টি হতেই হবে। এগুলি কিন্তু সমাজ-আরোপিত ভূমিকা। যে যা নয়, সেরকম তাকে করতে হচ্ছে, ভান করতে হচ্ছে। এখন এরকম ব্যাপার তো স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও ঘটছে। স্বামী-স্ত্রীর ইউনিট-এর মধ্যে, অর্থাৎ যেটা সমাজের মূল অংশ, সেখানে যদি ভান থেকে যায়, মিথ্যাচার থাকে, আর তার মধ্যে বাচ্চারা বড় হয় – সেই মিথ্যাচার তারাও গ্রহণ করবে, আর সেই মিথ্যাচারের বিষ সমাজে ছড়াবে। সমাজকে সুস্থ করতে হলে অসুখটা সারানো দরকার, সিম্পটম দূর করে তো অসুখ সারানো যাবে না। দরকার হল, নিজেদের নিজেরা ঠিক করা। আবার ‘ডলস্ হাউস’-এ নোরার বান্ধবী ক্রিস্টিন, এখানে যে কৃষ্ণা – এই চরিত্রটাকে কিন্তু ভর দিয়ে দাঁড় করানো হয়নি। ব্যক্তি হিসেবে রিয়ালাইজেশনের খুব দরকার আছে। একটি নারী তো আগে একজন ব্যক্তি। এই ব্যক্তি মানুষ হিসেবে নারীর বা তার স্বামীর রিয়ালাইজেশনটা খুব দরকার। ... ...
জানো, ভাবলাম সিগারেট খেয়ে দেখি। বাবার প্যাকেট থেকেই সিগারেট খেলাম। মা তো বাথরুমের সামনে গিয়ে (বাবা তখন স্নানে) চেঁচাচ্ছেন... দ্যাখো, তোমার মেয়ে কী করছে! বাবা কিছুই বললেন না! তারপর আরো এক কাণ্ড। বহুরূপীতে হিমাংশু কাকা বললেন – তুই সিগারেট খেতে পারিস? আমি বললাম – এ আর এমন কী? পারি তো! তবে আমি ঐ সব চারমিনার-টিনার খাই না, ডানহিল-টিল হলে খাই। হিমাংশুকাকা বললেন – এই নে, খা। ছোটবেলায় একেকটা অদ্ভুত জায়গায় অহংকার থাকে না? যে এটা আমি পারব না? খেলাম। আর বহুরূপী ভীষণ ডিসিপ্লিন্ড জায়গা। সেখানে আমি সিগারেট খাচ্ছি – সবাই ভয়ে কাঁটা। যথারীতি বাবার কানে উঠে গেল। বাবা ডেকে বললেন – তুই সিগারেট খেয়েছিস? খেতে পারিস, সেটা কিছু নয়, তবে কিনা গলাটা খারাপ হয়ে যাবে... অভিনয়টা আর করতে পারবি না। বাবার ঐ ধরণ ছিল। ... ...
এতদিন লিখেছেন ব্যক্তিগত স্মৃতি ও অনুভবের আখ্যায়িকা, সেগুলোও কোন উপন্যাসের চেয়ে কম নয় । উনি কোথাও পাত্রপাত্রীর বা স্থানকালের বর্ণনা বদলে দেননি। কিছুই লুকোনোর দরকার বোধ করেননি। ‘ কোথাও কোন মিল দেখা গেলে তা কাকতালীয়’ গোছের ক্লিশে হয়ে যাওয়া বাক্যবন্ধে ওনার ছিল ঘোর আপত্তি। একজন নামজাদা প্রকাশককে , ওনার ভাষায়, কলার ধরে শূন্যে তুলে দিয়েছিলেন। কারণ সে ভদ্রলোক টাকাপয়সার ব্যাপারে কথার খেলাপ করে উলটে অস্বীকার করছিলেন। ... ...
বাংলার বৃহৎ সংবাদপত্র নিন্দা করেছে। আমাদের ভয় ছিল সুভাষ ভৌমিক আবার আসবেন কি না? সুভাষ ভৌমিক যথারীতি এলেন। যাঁরা লিখেছেন তাঁদের ধন্যবাদ দিলেন। বাকিদের সাতদিন সময় দেওয়া হলো। এরপরের অভিযান গড়িয়াহাট মোড়। সেখানেও সুভাষ ভৌমিক সব হাজির। সঙ্গে শ্রী লেদার্সের মালিক সত্যব্রত দে সহ বহু লেখক শিল্পী। এরপরের অভিযান রবীন্দ্র সদন, পার্ক স্ট্রিট এলাকা। পরের বছর ১৯ মে বেলেঘাটা এলাকায়। সেখানেও ছিলেন। আসেন ২০০৫-এর পয়লা বৈশাখ উদযাপনে আকাদেমির সামনে। শৈলেন মান্না পিকে বন্দ্যোপাধ্যায়, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে। কেন আসেন? সুভাষদার জবাব ছিল, বাংলা ভাষা না বাঁচলে বাঙালি বাঁচবে না। বাঙালিত্ব মরে গেলে ময়দানের ফুটবলও মরে যাবে। কথাটা খাঁটি সত্য। বাংলা বাঙালি বাঙালির সংস্কৃতি শিক্ষা খাবার ফুটবল জীবনচর্যা একসূত্রে গাঁথা। একটা বাদ দিয়ে আরেকটা হয় না। ... ...
পরের গান মিশ্র পাহাড়িতে একটি দাদরা। 'ছোড় ছোড় বিহারি নারি দেখে সগরি'। দুই ধৈবতকে নিয়ে খেলছেন, পাহাড়ি ধুনে মন উদাস। 'ম্যায় জল যমুনা, ভরন গয়ি বিন্দা, লপট ঝপট সে মে ফোরি গাগরি'। রাধার কলসি ভাঙে, মনও কি ভাঙে? ভাঙন কি একদিনের? একটু একটু করে ভাঙে নদীর পাড়। বিরহ অক্ষয় হবে, প্রিয় ফিরবে না কোনোদিন। তারই প্রস্তুতি চলে যেন, পাহাড়ির আকুল করা সুরে। এটি প্রচলিত কথা ও সুরের দাদরা। আগেও শুনেছে। কিন্তু এমন করে মন হারায়নি। সে নিশ্চিত, বিরজু মহারাজ জাদু জানেন। ... ...