এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  স্মৃতিচারণ

  • সমর বাগচী: আমার স্মৃতির বেলাভূমিতে

    অশোক মুখোপাধ্যায়
    স্মৃতিচারণ | ২৩ জুলাই ২০২৩ | ১০৯৫ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • ২০ জুলাই, ২০২৩-এ সমর বাগচীর প্রয়ান দেশ বিদেশের বিজ্ঞানচর্চা ও চেতনার ক্ষেত্রে এক অপূরনীয় ক্ষতি। বিজ্ঞানশিক্ষক, সমাজকর্মী ও ব্যক্তি সমর বাগচীকে নিয়ে লিখলেন অশোক মুখোপাধ্যায়।
    ছবিঃ উইকিমিডিয়া কমনস, কৃতজ্ঞতা ও কপিরাইটঃ বিশ্বরূপ গাঙ্গুলি


    Between the iron gates of fate
    The seeds of time were sown
    And watered by the deeds of those
    Who know and who are known
    Well, knowledge is a deadly friend
    When no one sets the rules
    The fate of all mankind I fear
    Is in the hands of fools

    পিটার সিনফিল্ড ও অন্যান্যদের লেখা এবং কানাডার কিং ক্রিমসন-এর গাওয়া এক বিখ্যাত গানের এই স্তবকটি সামনে রেখেই শ্রদ্ধেয় সমরদাকে স্মরণ করি। অন্তরের গভীরে যে ব্যথা বহন করে তিনি গত ২০ জুলাই ২০২৩ আমাদের থেকে চিরবিদায় নিলেন, সেখানে বিশ্ব মানব জাতির ভবিষ্যতের জন্য দুশ্চিন্তার পীড়া ছিল সদা বহমান! The fate of all mankind I fear is in the hands of fools! এরকমই ছিল তাঁর আশঙ্কা।

    সেটা ১৯৯০-এর ঝোড়ো দশকের শুরুর দিক। তিনি তখন সদ্য বিড়লা ইন্সটিটিউট অফ টেকনজি অ্যান্ড মিউজিয়াম (BITM)-এর মহাধ্যক্ষের পদ থেকে অগ্রিম অবসর নিয়ে ফেলেছেন। অগ্রিম কেন না, ইতিমধ্যেই তিনি যে বিজ্ঞান লোকপ্রিয়করণের এক মহাযজ্ঞে নেমে পড়েছেন, সেখানে তাঁকে আরও সময় দিতে হবে, যা তিনি চাকরির বাঁধাধরা জীবনে আকাশে সূর্য বিচরণ কালীন পাচ্ছেন না বা খুব কম পাচ্ছেন। তিনি তখন সারা দেশের কোনায় কোনায় স্কুল কলেজের ছাত্রদের কাছে পৌঁছতে চান, সেখানকার বিজ্ঞানের শিক্ষকদের কাছেও যেতে চান। সকলকে চান বিজ্ঞানটা বিজ্ঞানের মতো করে শেখাতে, যাঁরা অন্যদের শেখাবে তাঁদেরও বুঝিয়ে দিতে। বিজ্ঞানের মূল কিছু ধারণা তাদের মাথায় হাতে কলমে এক গুচ্ছ সহজ সরল পরীক্ষার মাধ্যমে ঢুকিয়ে দিতে। পরীক্ষাগুলি তারাও নিজেরা করবে—এই তাঁর চাওয়া।

    কলকাতা দূরদর্শনের এক নম্বর চ্যানেলে তখন তিনি নিয়মিত একটা প্রোগ্র্যাম করতেন কোয়েস্ট নামে। পরে সেই সব আলোচনা ও কর্মসূচি তিন খণ্ডে বই আকারেও বেরয়। তার মধ্য দিয়েও তিনি অনেকের কাছে পরিচিত। সেই সুবাদেই আমাদের তখন ইংরেজি বিজ্ঞানের পত্রিকা Brekthrough-গোষ্ঠীর তরফ থেকে তাঁকে একটা বিজ্ঞানের শিবিরে প্রেসিডেন্সি (তখন) কলেজের ফিজিক্স লেকচার থিয়েটার-এক হলে আমন্ত্রণ জানানো হল। ১৯৯২ সালে। বিজ্ঞানের ইতিহাস নিয়ে আলোচনার জন্য। চিন্তায় রেনেশাঁস, বিজ্ঞানে রেনেশাঁস বিষয়ে।

    যেমনটা আরও অনেকের সঙ্গেও হয়েছে, আমাদের সাথেও হল। আমাদের যেমন সমর বাগচীকে পছন্দ হয়ে গেল, সমরদারও আমাদেরকে ভালো লেগে গেল। সেই থেকে দুই দশক ধরে ব্রেকথ্রু সায়েন্স সোসাইটিতে আমাদের সঙ্গে তিনি বহু জায়গায় গেছেন, প্রায় প্রতিটি বার্ষিক বিজ্ঞান শিবিরে উপস্থিত থেকেছেন। সব সময় যে আলোচনা করতে এসেছেন, এমনও নয়। অনেক সময় একেবারে শ্রোতা হিসাবেই তিনি যোগ দিতেন।

    আমাদের শিবিরের বিশেষ করে প্রশ্নোত্তর অধিবেশন ওনার খুব পছন্দের ব্যাপার ছিল। বিভিন্ন ঘরে ঘরে ঘুরে দেখতেন, শুনতেন। প্রতিনিধিরা এক একজন প্রশ্ন তুলছে, প্রতিনিধিদেরই অন্য কেউ কেউ উত্তর দিচ্ছে। সঞ্চালক নিজে থেকে কারও প্রশ্নের উত্তর যোগাচ্ছে না। শুধু বিতর্ক উষ্ণতর হতে গেলে শান্তবারি নিক্ষেপ করে দিচ্ছে। মনে পড়ে যাচ্ছে, ২০০৭ সালে পুরুলিয়ায় আমার প্রায় শেষ অনুষ্ঠানেও তিনি দুদিন উপস্থিত ছিলেন বক্তা না হয়েই।

    ২০১০ সাল নাগাদ আমি এবং আরও কয়েক জন সেস্টাস গঠন করলে (প্রয়াত) ডঃ শুভাশিস মাইতিকে নিয়ে সমরদার বাড়িতে গেলাম। খবরটা শুনে বললেন, পারবেন এই বয়সে এরকম একটা প্ল্যাটফর্ম চালাতে? ভরসা দিলেন তিনি থাকবেন আমাদের সঙ্গে। তার পর থেকে সেস্টাসেরও কিছু কিছু ঘরোয়া সভায় এসে তিনি ভাষণ দিয়েছেন। আবার কোনো কোনো প্রোগ্র্যামে তিনি শুধু শুনতেই এসেছেন। কর্মসূচির স্কেল আগের তুলনায় অনেক ছোট হয়ে গেছে দেখে নিজে থেকেই আমাদের সান্ত্বনা দিয়েছেন, করতে থাকুন। ধীরে ধীরে দাঁড়িয়ে যাবে।

    ২০১৮ সালে হাওড়া জেলার আমতার কাছে আল আমিন মিশনে আমরা সেস্টাসের থেকে একটা টিম নিয়ে গিয়েছিলাম সম্প্রীতি প্রদর্শন করতে। সেবারে সেই স্কুল থেকে দশম শ্রেণির পরীক্ষায় একটি হিন্দু পরিবারের মেয়ে চতুর্থ স্থান অধিক্লার করেছিল। যাব, এরকম একটা আভাস দিতেই সমরদা সোৎসাহে বলে বসলেন, তিনিও যাবেন আমাদের সঙ্গে। বেশ কষ্টকর ছিল দুপুর রোদের মধ্যে ছোট দুখানা গাড়িতে ঠাসাঠাসি করে অতটা দূরের সেই যাত্রা। কিন্তু তাঁর উৎসাহ যেন আমাদের চাইতেও অনেক বেশি ছিল।

    করোনা সংক্রমণের জন্য আমাদের যে All India People’s Science Meet ২০২০ সালে করা সম্ভব হল না, তার জন্যও তিনি আমাদের আর্থিক ও অন্য নানা ভাবে সাহায্য করেছিলেন। ওনারই উদ্বোধন করার কথা হয়েছিল। কর্মসূচিটা শেষ পর্যন্ত আয়োজন করতে না পারায় আমাদের মতোই তিনিও খুব দুঃখ পেয়েছিলেন।

    বিজ্ঞানের লোকপ্রিয়করণের পাশাপাশি প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে সমরদার ছিল এক তীব্র অন্তর্দহন। গাছপালা বনাঞ্চল সবুজের আচ্ছাদন পাহাড়ের গালিচা ক্রমবর্ধমান হারে উচ্ছেদ ও ধ্বংস দেখতে দেখতে তিনি মনে হয় যেন পাগল হয়ে উঠতেন। আমাদের বলতেন, মানুষ এত মূর্খ হয়ে যাচ্ছে। সবাইকে বোঝান। জল জমি বায়ু চলে গেলে পশু পাখি নিঃশেষিত হয়ে গেলে মানুষ বাঁচবে কী করে? বাজার দোকান মল আর কেনাকাটার ভিড় দেখতে দেখতে দেশে ক্রমবর্ধমান ভোগবাদের প্রতি আকর্ষণ নিয়ে তাঁর ছিল অন্তহীন ক্ষোভ। বিভিন্ন সভায় গিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলতেন, আমাদের এত জামা জুতো ব্যাগ কেন লাগবে? রাস্তায় আর কত গাড়ি চালাতে পারবে? আর কত কারখানা করতে পারবে না দেশের সীমিত সম্পদকে ব্যবহার করে? সমস্ত সম্পদ যদি আমরাই শেষ করে দিয়ে যাই, ভবিষ্যতের শিশুদের জন্য আমরা কী রেখে যাব? আর তখনই যেন এক বেদনাতুর আক্ষেপ বেজে উঠত তাঁর কণ্ঠে – যারা দেশটা চালাচ্ছে, তারা কি কিছু বুঝতে পারছে না? তারা কি মূর্খ? এভাবে জল জমি জঙ্গল প্রকৃতির লাগাতার ধ্বংস সাধন চলতে থাকলে প্রজাতি হিসাবে মানুষ আর একশ বছরও টিকবে কিনা বলা মুশকিল।

    “বিজ্ঞান ইতিহাসে” শীর্ষক ওনার শেষ যে বইটার প্রকাশ উপলক্ষে একটা ছোট ঘরোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন কয়েকজনের সাহায্য নিয়ে আমি করে দিয়েছিলাম বাঘা যতীন লায়েলকার কাছে যাদবপুর অবসারিকার ঘরে, সেখানেও তাঁর ক্ষুদ্র ভাষণের কথকতায় নিজের ভেতরের এই উদ্বেগের অভিব্যক্তি ঘটেছিল।

    সমর বাগচী ছাত্র জীবনে রাজনীতি করেছেন, ছাত্র ফেডারেশনের সদস্য ছিলেন। সিপিআই-এর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন তখন। পরবর্তী কালে দলের সঙ্গে সম্পর্ক আর ছিল না, কিন্তু জীবনভর মার্ক্সবাদে আস্থা ছিল এবং বামপন্থী ঘরানায় যুক্ত ছিলেন।

    মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে এক সময় তিনি বিড়লা মিউজিয়ামে যোগ দেন এবং কালক্রমে মহাধ্যক্ষ পদে আসীন হন। ভারতের পক্ষ থেকে তিনি তিন বছর ইউনেস্কোর মিউজিয়াম বিভাগে যুক্ত ছিলেন। সেই সময় বিভিন্ন দেশ ঘুরেছেন এবং বহু বুদ্ধিজীবীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন বিজ্ঞান এবং পরিবেশ নিয়ে। অনেকে ভুল করে তাঁকে ডঃ এবং প্রফেসর বলে সম্বোধন করতেন। তিনি হাসতে হাসতেই ভুলটা ধরিয়ে দিতেন।

    গত প্রায় তিন দশক তিনি অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়েছিলেন মেধা পাটেকারের নেতৃত্বে নর্মদা বাঁচাও আন্দোলনে এবং তার অঙ্গ হিসাবে এনএপিএম-এ যোগ দেন। এই সংগঠনের পক্ষ থেকে তিনি ছুটে গেছেন দেশের প্রান্তে প্রান্তে। পরিবেশ রক্ষার আবেদন নিয়ে। আবার এই আন্দোলনের সূত্র ধরেই তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর প্রকৃতি ও পরিবেশ অনুরাগী রচনার সঙ্গে পরিচিত হন এবং কমেই তাঁদের প্রতি অনেকটা আকর্ষণ বোধ করতে থাকেন। ওনার বাড়িতে আমার সঙ্গে সমরদার অনেক বার তর্কাতর্কি হয়েছে। আমরা কেউ কারও জমি ছাড়িনি; কিন্তু আমাদের মধ্যেকার সম্পর্ক কখনও এতটকুও খারাপ হয়নি। বরং অনেক জায়গায় বিজ্ঞানের আলোচনা সভায় ওনাকে আমন্ত্রণ জানালে উনি আমার নাম সুপারিশ করে পাঠাতেন। উদ্যোক্তাদের বলতেন, আলোচ্য বিষয়ে . . .  

    এক সময় (সম্ভবত ১৯৯৪ সাল নাগাদ) তিনি আমার কাছ থেকে সোভিয়েত রাশিয়ার পদার্থবিজ্ঞানী বরিস হেসেনের বিখ্যাত বই Social and Economic Roots of Newton’s Principia হাতে পেয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছিলেন। ২০১৫ সালে এটার একটা বাংলা অনুবাদ করে আমার হাতে তুলে দেন সেস্টাস থেকে প্রকাশের জন্য। আমরা মূল ইংরেজি পাঠ এবং সেই অনুবাদ সামান্য সম্পাদনা সহ আলাদা আলাদা পুস্তিকা হিসাবে প্রকাশ করি। পরে আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের আলীগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদত্ত ১৯২২ সালের সমাবর্তন ভাষণও তিনি অনুবাদ করে দেন প্রেক্ষা পত্রিকায় প্রকাশের জন্য। আশির উপর বয়সে এই সব কঠিন অনুবাদের কাজ করতে পারা খুব সহজ ব্যাপার নয়, ব্যাপকতম আগ্রহ না থাকলে।

    সাহিত্য এবং সঙ্গীতে সমরদার গভীর অনুরাগ ছিল। চারু মার্কেটের পুরনো বাড়িতে মাঝে মাঝে বিশিষ্ট পছন্দের শিল্পীদের ডেকে এনে গান বাজনার আসর বসাতেন। ধ্রুপদী গান এবং যন্ত্রসঙ্গীত শুনতে খুব ভালো বাসতেন। শেক্সপিয়রের হ্যামলেট যেন তাঁর কণ্ঠস্থ ছিল। রেনেশাঁস নিয়ে আলোচনা এলেই তিনি যখন আধুনিক সমাজে মানবতাবাদের অভ্যুত্থান বোঝাতে  হ্যামলেট নাটকের সেই বিখ্যাত সংলাপ আবৃত্তি করতেন, সারা মঞ্চ, সমস্ত হল যেন গমগম করে উঠত! সেই সব সভার আওয়াজ যেন আজও আমার কানে বেজেই চলেছে।

    What piece of work is a man, how noble in reason,
    How infinite in faculties, in form and moving,
    How express and admirable in action, how like an angel in apprehension,
    how like a god!

    ২০১৮ সালে ক্যান্সার ধরা পড়েছে, চিকিৎসা করিয়ে এক প্রস্থ তাকে পরাস্ত করে যেই সুস্থ হয়েছেন, আবার একই রকম দৌড়াদৌড়ি শুরু করেছেন। ছুটে গেছেন বাঁকুড়ার রাধানগরে, নদীয়া জেলার শান্তিপুরে, এমনকি ওড়িশার ব্রহ্মপুরে। বিজ্ঞানের বৈজ্ঞানিক বার্তা নিয়ে, আর পরিবেশ রক্ষার এক আকুল আহ্বান বহন করে।

    তাঁর সঙ্গে আমাদের অনেক স্মৃতি ভিড় করে আসছে। আমার সঙ্গেও তাঁর ছিল ব্যক্তিগত স্তরে খুবই অন্তরঙ্গ সম্পর্ক। দুই খেপে তিনি আমাকে সেস্টাসের লাইব্রেরি করার জন্য অনেক বইপত্র দান করেছেন।

    সেই সমস্ত কিছু নিয়েই তিনি আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকবেন।
    তাঁর উদ্দেশে জানাই আমার অন্তরের অনন্ত বিনম্র শ্রদ্ধা!  


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • স্মৃতিচারণ | ২৩ জুলাই ২০২৩ | ১০৯৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Kuntala | ২৪ জুলাই ২০২৩ ০৫:১৩521638
  • চমৎকার লেখা। বাংলায় পরিবেশ চর্চায় সমরদার অবদান অতুলনীয়।
    মেধাজীর সংগে ঘোরাঘুরি এবং দামোদর নদ নিয়ে ভাবনায় ওনার সংগে নৈকট্য বেড়েছিল। এখন সেই সব স্মৃতি কত দূরে।
  • Abak Chittri | ২৪ জুলাই ২০২৩ ১০:৫১521644
  • চমত্কার তথ্য সমৃদ্ধ। সমরবাবুর চলে যাওয়া আমাদের মতো বিজ্ঞানকর্মীদের কাছে অপূরণীয় ক্ষতি।
  • Sara Man | ২৪ জুলাই ২০২৩ ১৯:০০521653
  • ১৯৮৬ সালে আমাদের নিবেদিতা ইস্কুলে বিড়লা মিউজিয়াম থেকে কম্পিউটার এবং বেসিক প্রোগ্রামিং এর ওপরে একটি আলোচনা সভা হয়েছিল। কিছু হোম ওয়ার্ক দেওয়া হয়েছিল। সেই হোম ওয়ার্ক সফলভাবে করতে পেরে আমি আর আর এক বন্ধু অঞ্জনা ইস্কুল থেকে নির্বাচিত হলাম। মাধ‍্যমিক পরীক্ষা শেষ হবার সঙ্গে সঙ্গে বিনামূল্যে বিড়লা মিউজিয়ামে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং শিখতে যেতাম। সেখানেই সমর বাগচীকে প্রথম দেখি। দীর্ঘদেহী সৌম‍্যদর্শন এক মানুষ, পরণে শার্ট প‍্যান্ট থাকলেও মুখ, দৃষ্টি ও দেহভঙ্গি ঋষিসুলভ। সদ‍্য ইস্কুল পেরোনো কিশোরী অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকতাম তাঁর দিকে। সেই শুরু, তারপর কর্মজীবনে আরও বহুবার তাঁর অপার মনীষার দ্বারা সমৃদ্ধ হয়েছি। 
  • Angsuman Ghosh | ২৬ জুলাই ২০২৩ ১১:৪৪521780
  • বি আই টি এম =বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এন্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়াম 
  • শেখর দত্ত | 2405:201:9009:291a:d1cb:fdd0:1e99:f1a8 | ২৭ জুলাই ২০২৩ ০৯:৩৯521805
  • অশোক মুখোপাধ্যায়ের সমর বাগচীর উপর লেখাটা ভালই লাগলো। অসাধারণ প্রাণবন্ত এই মানুষটির এই পরিবেশ ধ্বংসকারি, মানবতা বিরোধী অবৈজ্ঞানিক যুক্তিহীন চিন্তায় ভরপুর সমাজ ও রাষ্ট্র সম্পর্কে ছিল বিশাল ক্ষোভ। আদ্যোপান্ত রোমান্টিক মনের মানুষটি ছিলেন দারুন আশাবাদী ও সবসময় পজিটিভ। বাচ্চাদের বিজ্ঞানের খুঁটিনাটি বোঝাতে সমরদার প্রকাশ ছিল অতি সহজ সরল। সিঙ্গুরে কৃষকদের জমি আন্দোলনে বা পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে, অথবা এনআরসির বিরুদ্ধে সংগ্রামে মিছিলে মিটিংয়ে সমরদার ছিল সোচ্চার অংশগ্রহণ। তিনি বুঝেছিলেন সমাজটা বদলাতে না পারলে শিশু কিশোর জন্তু জানোয়ার গাছপালার বাসযোগ্য থাকবে না এই দেশ - এই পৃথিবী। তাই, নিছক বিজ্ঞান শিক্ষকই নন, শৈল্পিক মনের রোমান্টিকতায় ভরপুর সমর বাগচি দর্শনে রাষ্ট্রচিন্তায় ছিলেন একজন রাজনৈতিক মানুষও। 
  • পার্থ প্রতিম রায় | 2409:4060:2d85:cca1::fb09:170a | ২৯ জুলাই ২০২৩ ১৫:৩০521864
  • লেখাটি পড়ে ভালো লাগলো। তবে দু একটি সংশোধন প্রয়োজন মনে হয়। যেমন, সমরদা পদার্থ বিজ্ঞান-এর ছাত্র ছিলেন না। উনি মাইনিং ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। ডক্টরেট ডিগ্রি সম্ভবত ওনার ছিল না। হাতে কলমে বিজ্ঞান শিক্ষার জগতে সমরদার অবদানের জন্য হয়তো বহু ডক্টরেট ওনার প্রাপ্য। তাছাড়া পরিবেশ ও সমাজ আন্দোলনে তাঁর অবদানও মানুষ বহুদিন শ্রদ্ধার সাথে মনে রাখবে।
  • Animesh Kr Saha, Ex IIT, Kharagpur &Dy Chief Engr, NCSM | 203.212.243.69 | ২৯ আগস্ট ২০২৩ ১৪:০৪523055
  • প্রয়াত বাগচী সাহেবের এই মৃত্যু সমাজের বিজ্ঞান সচেতন মানুষের কাছে একটা বড় মাপের ক্ষতি। উনি আমাদের বিড়লা মিউজিয়াম থেকে নির্দেশক হিসাবে সময়ের আগেই অবসর নিয়েছিলেন আরো বেশি মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানকে শেখানোর লক্ষে। ওনার এই অবদানের জন্য ভারত সরকারের পক্ষ থেকে মরণোত্তর পদ্মশ্রী পুরষ্কার দেওয়া উচিত। 
    অনিমেষ কুমার সাহা, Ex IIT, KGP এন্ড Dy Ch.Engr (retd) ,NCSM, MOC, GOI 
  • গঙ্গারাম | 115.187.40.82 | ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩ ০০:২২526997
  • সমর বাগচী, সলিল বিশ্বাস, সমীরন মজুমদার, ব্রজ রায় এই সমস্ত মনস্বী বিজ্ঞানকর্মীর কাজগুলোকে সংরক্ষণ করা খুব দরকার। সঙ্গে বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী আন্দোলনের পূর্ণাঙ্গ ইতিহাস চর্চাও দরকার।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই প্রতিক্রিয়া দিন