এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  বইপত্তর

  • জগদীশ গুপ্ত - গল্প ও উপন্যাস

    Somnath
    বইপত্তর | ২১ আগস্ট ২০০৭ | ১৯৬৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • r | 59.162.191.115 | ২১ আগস্ট ২০০৭ ১৪:২২392620
  • বাপ রে! অ্যাদ্দিনে!
  • Somnath | 61.14.13.7 | ২১ আগস্ট ২০০৭ ১৫:২৪392624
  • জগদীশ গুপ্ত-র নাম আমি প্রথম পাই এক ট্রেনযাত্রার দুপুরবেলায়, সহযাত্রীর থেকে চেয়ে নেওয়া "দেশ'-এ জয় গোস্বামীর লেখা সমালোচনায়। বোধহয়, তখনও ডিকনস্ট্রাকশন আমার চরাচরে নেই, আর সে লেখাটি এখন স্মৃতিতেও নেই। তবে মনে হয় "দেজ" প্রকাশিত 'জগদীশ গুপ্তের গল্প" বইটার সমালোচনাই হবে লেখাটা।

    তারপরে অনেকদিন, বোধিদা বইমেলার বাজারে খুঁচিয়ে দিল, বসুমতি প্রকাশিত হলুদ মলাটের র্বইটার একটা ছিন্নভিন্ন এডিশন সহ, যেটা অবধারিত আমায় কিনতে হল ফেরত দেবার প্রচুর তাগাদা থেকে বাঁচতে। ফলে জগদীশ গুপ্তের বাকি যে দুটো বই এখনো পাওয়া যাচ্ছে - দেজ-এর বইটা আর সপ্তর্ষি প্রকাশিত "দুÖপ্রাপ্য জগদীশ গুপ্ত" ভিকিরও যেটা এতদিনে পড়ে ফেলার কথা, কিনতে হল। এই তিনটে বই পড়ে, জগদীশ গুপ্ত কে নিয়ে লিখতে চাইছি, লিখব, অর্থাৎ পাতি পাকামো মারব। সুতরাং বাকিদের ও লিখতে হবে পুরো ব্যপারটাকে ঠিকঠাক গোছানোর জন্যে।
  • saikat | 59.93.178.46 | ১৪ মার্চ ২০০৯ ১৬:০৫392625
  • "I am a sick man....I am a wicked man. An unattractive man. I think my liver hurts." (Notes From Underground, Dostoyevsky)

    ""সিদ্ধার্থ বলিল, - ব'স; বড় অন্ধকার, বন্ধু।
    দেবরাজ হাসিয়া ঊঠিল।
    ইদানীং সিদ্ধার্থের চালচলন দেখিয়া আর কথাবার্তা শুনিয়া বেচারীর মস্তিষ্ক সম্বন্ধে তাহাদের দারুন একটা সন্দেহ জন্মিয়াছে।
    তাই দেবরাজ ফিক ফিক করিয়া হাসিতে হাসিতে বলিল, - অন্ধকার কোথায়? দিব্যি দিনের মত ফুট্‌ফুটে জ্যোছনা।
    -- বাইরে নয়, ভাই, ভেতরে। - বলিয়া অনিচ্ছুক দেবরাজের ডান হাতখানা বুকের উপর টানিয়া তুলিয়া লইয়া সিদ্ধার্থ বলিল, - অন্ধকার এইখানে। কান পেতে থাকো, একটা শব্দ শুনতে পাবে। ভগবানের অভিসম্পাত বুকের গহ্বর জুড়ে চেপে বসে আছে, তার ভেতর থেকে অবিশ্রান্ত উঠছে পৃথিবীর ক্ষুধার গোঙানী।"" (অসাধু সিদ্ধার্থ, জগদীশ গুপ্ত)

    "অসাধু সিদ্ধার্থ" বইটি উৎসর্গ করা হয়েছিল "" ছায়াপথ যার আভরণ - ধূমকেতু যার কলঙ্ক - সেই শূন্যকে।"" শূন্য, মানে সেই মহাশূন্য। সেখানে তো মাইল মাইল অন্ধকার, কিছু জ্যোতিষ্কের আলো। আর মহাশূন্যের তলায় সিদ্ধার্থ (আসলে যদিও সে নটবর, নটবর দাস)। সিদ্ধার্থের ভেতরেও তো অন্ধকার দানা বেঁধে আছে, যদিও তার "ভাবনাটা যেন মাঝে মাঝে থমকিয়া হা হা করিয়া শূন্যে উঠিয়া যাইতেছে - যেমন দীপের চঞ্চল শিখাগ্রটা উর্দ্ধের অন্ধকারের অঙ্গে সূক্ষতম রেখায় বিদ্ধ হইয়া অদৃশ্য হইয়া যায় - "। (জগদীশ গুপ্তর লেখার একটা মূল সুত্র হয়ত এটাই) কিন্তু একটু আশা কি সিদ্ধার্থ করে না? যখন বাহ্যিক ভাবে সহানুভুতির ধার না ধারলেও "" ভিতরটা তার অন্য রকম - কিছুদিন হইতে সেখানে অগ্নিগিরির অগ্নিবমন শুরু হইয়া গেছে। ভিতরে সে শ্রান্ত, অতিশয় পরমুখাপেক্ষী।"

    কিন্তু এ অন্ধকারের মানে কি? অভাব ? আর সেই জন্যই তাকে টেনে নামানো যায় জালিয়াতিতে? কিন্তু তার অপেক্ষাকৃত শিক্ষিত মনে ""অনুমানের অতীত একটা স্থানে কু ও সু-এর কলহ এখনো ঘটে।"" বাংলা উপন্যাসের প্রথম anti hero কি এই সিদ্ধার্থ? যে জারজ সন্তান, বেশ্যার সহচর। নটবর দাস থেকে যে সিদ্ধার্থ বসু হয়ে আনুষঙ্গিক সুবিধাগুলি প্রাণপণে খাটিয়ে নেয় এবং তার পরেও যত দুষ্কৃতি, যত অপকার্য, যত অধর্ম দিয়ে ভরা তার জীবন। সে ""গৃহী নয়; গৃহ তার নাই। বৈরাগী সে নহে। বৈরাগ্য তার জন্মে নাই। মাঝখানে সে দুলিতেছে।""
    আরো বলা যায় -
    ""আশা ফলিত, ছিল সবই, কিন্তু ছিল না কেবল সেইটি - যার সংগা নাই, যার স্বরূপ বলিয়া বুঝান যায় না; যাহাতে উদ্যম সফল হয়, বড় আরো বড় হয়, ছোট উঠিতে থাকে, ছিল না তাই। - সে অদৃষ্ট নয়, দৈব নয়, পুরুষকার নায় - এই সকলের মিলিত সে নিরুপাধিক অজ্ঞাত একটা বস্তু - ছিল না তার তাই।
    পালাইয়াছে সবাই। সংগে আছে কেবল শয়তান।"" কিন্তু মনে রাখতে হবে দীপের ঐ চঞ্চল শিখাগ্রটি। আর ""ঊর্দ্ধে নিস্তরঙ্গ নীলিমা - নিম্নে তরঙ্গায়িত শ্যামলিমা" - দুটিতে যেখানে মিশছে , সিদ্ধার্থ আসলে সেখানেই যেতে চায়, কিন্তু জীবন কেবল তাকে অতীতের দিকেই টেনে রাখে। ফলে যাওয়া তার হয় না। জীবনে প্রেম (আঁধারে জ্যোতিষ্কসম) এলেও হয় না। কারন সে তো সিদ্ধার্থ নয়, তাকে ফিরে যেতে হয় আবার সেই নটবরের পরিচয়ে।

    কিছু লেখা আছে, যেগুলি সম্বন্ধে লিখতে গেলে উদ্ধৃতিই উঠে আসে শুধু। যেমন দিবারাত্রির কাব্য, মাল্যবান, চাঁদের অমাবস্যা। যেমন বিজনের রক্তমাংস। তেমনি অসাধু সিদ্ধার্থ। পুরোন এই টইটা গতকাল খুঁজে পেয়ে উপন্যাসটির প্রথম চ্যাপ্টারটি বার তিনেক আবারো পড়লাম। আর পড়তে গিয়ে বুঝলাম যে লেখাটি সরাসরি যা বলে, তার চেয়ে বেশী বলে শব্দ আর বাক্যের মাঝে ফাঁকগুলো, নৈ:শব্দ্যগুলো। (মিলিয়ে নিলাম একটা সাক্ষাতকারে এই উপন্যাসটি সম্বন্ধে সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়ের বলা "" রিডিং বিটউইন দা লাইনস"" কথা কটি)

    যেমন :
    ""সিদ্ধার্থ হঠাৎ চমকিয়া উঠিয়া বলিল - ভয় করে। আমি পারব না, ভাই।
    হাসিয়া দেবরাজ বলিল - জেলের?
    - না। যদি টাকা হাতের ওপর জ্বলে ওঠে।""

    কিংবা :

    ""ঋণ কিছু কিছু পরিশোধ করিয়া সিদ্ধার্থ পূর্বের বাসস্থান ত্যাগ করিয়াছে। পলায়ন ছাড়া তার আর উপায় ছিল না ।
    অধুনা সে এইখানে, একটা পার্বত্য জলপ্রপাতের খাদের ধারে।"""

    (পাওনাদার এখানে আসছে না, কিন্তু তাও তার মরতে ইচ্ছা করছে। কেন? নিজের থেকে, নিজের স্মৃতি থেকে পালাতে পারছে না বলে?)
  • saikat | 59.93.178.46 | ১৪ মার্চ ২০০৯ ১৬:৪৭392626
  • একটা দীর্ঘ উদ্ধৃতি দিই। উদ্ধৃতিটি মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের "আত্মহত্যার অধিকার" নামে ১৯৬২ সালে লেখা একটি প্রবন্ধ থেকে। প্রবন্ধটি ছাপা হয়েছিল তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের জার্নালে। প্রবন্ধটি মূলত মানিক, জীবনানন্দ এবং জগদীশ গুপ্তর লেখায় আত্মহনন নিয়ে। ""অসাধু সিদ্ধার্থ"" সম্বন্ধে লেখা হয়েছে -

    ""কতগুলি গুপ্ত সংযোগ ও পৌন:পুনিক উল্লেখের সাহায্যে গোটা উপন্যাসটিকে ধীরে ধীরে অত্যন্ত সচেতনভাবে গড়ে তোলা হয়েছে; ব্যবহার করা হয়েছে স্বপ্ন ও সাধনা, ভাবনা ও শিহরন, রূপ আর সংকেত। ...... অনেক জিনিস আছে যা ভোজবাজির মতো ঘটে যায়; আবার বহু কিছু লক্ষ্য করা যায়, যেখানে কিছুতেই কিছু ঘটে না। সিদ্ধার্থর দু:স্বপ্নএসে আতংকে যেমন নিখিল ব্রক্ষান্ড ভরে দিয়ে যায়, তেমনি তারই ভিতর সংগোপনে গড়ে ওঠে এক অপার মন্দাকিনীর প্রবাহ, যার নাম করুণা। .....

    বস্তুত স্বাভাবিকতা নামক একটি আশ্চর্য বিষয় আছে লেখকদের দখলে , যার পরাকাষ্ঠা আমদের স্বাভাবিকতা অতিক্রম করতে শিখিয়ে দেয়। আমদের মনে হয় এই পুঙ্খানুপুঙ্খ স্বাভাবিকতা বোধহয় কোনো ছল, কোনো উপায়, কোনো ছদ্মবেশ, যার ভেতর দিয়ে লেখক তার মূল বাণীকে, কৌটোর ভেতরে গন্ধের মতো লুকিয়ে রাখতে চান।"" .....

    ""অসাধু সিদ্ধার্থ"" এই ধরনের স্বাভাবিকতার অন্যতম উঙ্কÄল নিদর্শন। বাংলা সাহিত্যে পরবর্তীকালে এই স্বাভাবিকতাকেই ব্যবহার করেছিলেন মাণিক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর "দিবারাত্রির কাব্য", "পুতুলনাচের ইতিকথা" ও "হলুদপোড়া"য়। .....

    আসলে এই স্বাভাবিকতা হোল প্রতারক এক প্রচ্ছদ, যার মনোমুগ্‌ধকর প্রভাব অনেককে এতটাই ভুলিয়ে দেয় যে, আমরা সহজে আর খেই ধরতে পারি না, পারি না গুন্ঠন মোচন করতে।""
  • অভিষেক | 52.110.147.236 | ২৭ জুন ২০১৭ ২৩:৫৬392627
  • প্রথমেই যেটা চোখে পড়ে সেটা হলো অভাবের প্রাচুর্য!
    অভাব! সুসময়ের , আলোর,আশার , উত্তরণের ,বিশ্বাসের ,যোগ্যতার, চিন্তাসূত্রের, ইচ্ছার এবং হয়ত কিছুটা যত্নেরও।
    সৈকতদা লিখেছেন চমৎকার। এই উপন্যাস ভর করে আছে এর ফাঁকফোকরের স্থিতিজাড্যে। স্প্রিঙের মতন অদ্ভুত অদ্ভুত মুহূর্তেরা দমকে দমকে উপাখ্যান এগিয়ে নিয়ে চলে। চরিত্র,প্লট,সংলাপে সবেতেই ক্যামন এক অন্ধকার গুঁড়ি মেরে থমকে আছে। যেকোনো আলোর দিশা দেখতে পেলেই তার ঘাড়ে চেপে বসে বস্তাবন্দী করে কুঁজো বুড়োর মতন এই অন্ধকার ঘষটে ঘষটে কিছু ঘটনা এগিয়ে নিয়ে চলে।
    থেকে যায় একটা ঘষটে যাওয়ার দাগ। ধাতুর গায়ে ধাতু ঘষলে এক শিড়শিড়ে অস্বস্তিকর যে শব্দ শোনা যায় এই দাগ জুড়ে সে শব্দের আলিম্পন টুকরো টুকরো করে এক আদিম কবন্ধের গোপন লোভ,রিরংসার ছবি আঁকে। সে ছবির হ্লাদিনীশক্তি অমাবস্যারাতের দীগন্তব্যাপী মেঠোপথে মাঝে মাঝে আলেয়া হয়ে জ্বলে ওঠে আর পলকে পলকে নিভেও যায়। সেই নিভে যাওয়া মুহূর্তগুলোই মর্গে কাটা মড়া সেলাইয়ের মতন জুড়ে জুড়ে তৈরি হয় 'অসাধু সিদ্ধার্থ'। এ য্যানো মেরী শেলীর ডাক্তার ফ্র‍্যানকেস্টাইনের হাতেগড়া এক এন্টি-চরিত্র।
    এখানে ফ্র‍্যাংকেস্টাইন হলেন জগদীশ গুপ্ত।ইনি অত্যন্ত কম পঠিত এক লেখক। অদ্ভুতরস পরিবেশন করে তার গল্প এবং উপন্যাস। এনাকে কি পুওর ম্যান্স মাণিক বন্দোপাধ্যায় বলা যেতে পারে!!
    এই উপন্যাস বাংলা ভাষায় বিরল কিছু মুহূর্ত জন্ম দিয়েছে। কোনো উত্তরণ কিম্বা তার সম্ভাবনার কথা মেলেনা এখানে। মরে যায় চরিত্রের ভেতরের চরিত্রেরাও। বারবার।
    শুধু আরএকটু যত্ন প্রত্যাশিত ছিলো এমন মাপের এক নির্মাণে। লেখক য্যানো সমস্তটা সমান যত্ন নিয়ে লেখেননি। কে জানে চরিত্রদের এই মরে যাওয়াগুলো ভাবতে ভাবতে নিজের মধ্যেও বড় কাজের যত্নশীল পরিসমাপ্তিটার ইচ্ছাটাও মরে যাচ্ছিল কিনা? তাই কি চটপট শেষ করে দিলেন, পাছে শেষ না হয়। পাছে পেড়ে ফ্যালে নিজের নির্মাণেরই রক্তাল্পতা। লেখক কি নিজের লেখাকেও ভয় পাচ্ছিলেন!!
  • h | 213.132.214.83 | ২৮ জুন ২০১৭ ১০:৫০392628
  • সৈকত (২য়) র লেখা এক লাইনের জন্য আমি পৃথিবীর শেষ প্রান্তে যেতে পারি, কিন্তু সে সেটুকুও লেখে না। এটা বিট্রেয়াল না, কারণ স্বল্প পঠিত সাহিত্যের প্রতি তার কমিটমেন্ট কমেছে মনে করার কোন কারণ ঘটে নি, কিন্তু না লেখাটা এক ধরণের শুন্যতা। মন খারাপ করে।
  • কল্লোল | 233.176.88.6 | ২৯ জুন ২০১৭ ১৭:০০392629
  • অসাধু সিদ্ধার্থ বহুকাল আগে পড়ে ছিলাম। আর বহু খুঁজেও পাইনি। কেউ কি খোঁজ দিতে পারেন?
  • খোঁজ | 52.110.168.200 | ২৯ জুন ২০১৭ ২০:২০392630
  • amarboi.com এ জগদীশ রচনাসমগ্রের প্রথম খন্ডে পেয়ে যাবেন অসাধু সিদ্ধার্থ।
  • খোঁজ খবর | 127.194.193.87 | ২৯ জুন ২০১৭ ২১:৩২392631
  • আমার বই তে যেতে হবে না archive.org তেই সব আছে। প্রথম দ্বিতীয় সব খণ্ড। এমনকি গোটা dli টাও সেখানেই ঢুকেছে।
  • কল্লোল | 233.176.82.54 | ২৯ জুন ২০১৭ ২১:৪৯392621
  • খোঁজ আর খোঁজ খবর কে ধন্যবাদ।
  • Ishan | 180.202.22.2 | ২৯ জুন ২০১৭ ২৩:০৮392622
  • পুওর ম্যানস মানিক কেন? যৌনতা, বিশেষ করে আলো-আঁধারি যৌনতা নিয়ে জগদীশ গুপ্ত মানিকের চেয়ে সম্পূর্ণ আলাদা। অনেক বেশি অন্ধকার বললেও কম বলা হয়না। ইন ফ্যাক্ট জগদীশ গুপ্তের যে কটা গল্প মনে করতে পারছি, সবকটাই যৌনতার নানা রঙে রাঙানো। ওটাই জগদীশ গুপ্তর ধরন। এই ধারার আরেকজন লেখককেই মনে করতে পারছি এর পরে। তিনি জ্যোতিরিন্দ্র নন্দী। প্রেমেন্দ্র মিত্রও ক্রুরতা নিয়ে লিখেছেন, কিন্তু যৌনতা তাঁর খেলার মাঠ ছিলনা। আর মানিকের খেলার মাঠ অনেক বড়, তাতে ক্রুরতা, যৌনতাও এসেছে, কিন্তু ধরনটা আলাদা। ডার্ক যৌনতা নিয়ে আরেকজন লেখক তো খুবই বিখ্যাত, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়, কিন্তু তাঁর ধরণটা আবার অন্যরকম।
  • অভিষেক | 52.110.172.153 | ৩০ জুন ২০১৭ ০০:০৫392623
  • ঠিক কথা। সন্দীপন,জীবনানন্দ,মাণিক,জগদীশ,জ্যোতিরিন্দ্রদের এরকম ভাবে একে অপরের লঘু কিম্বা বিত্তশালী ভারসান বলা অনুচিত। এতে এদের এবং এদের নির্মাণের যথাযথ মূল্যায়ন এবং অবস্থান চিহ্নিত হয়না।
    তবে পুওর ম্যান্স মাণিক বা লেসার মাণিক বলার উদ্দেশ্য ছিলো বড় ক্যানভাসে, উপন্যাসে জগদীশের অযত্ন,দুর্বলতাকে চিহ্নিত করা। মাণিক য্যানো অন্ধকার,উত্তরণ, বিশ্লেষণ বর্ণনে কী গল্পে কী উপন্যাসে- একদম হিমালয়প্রতিম।জগদীশ যতটা ছোটো গল্পে বিত্তবান ততটা উপন্যাসে লাগেনি। তবে মানছি,শব্দচয়ন সঠিক ছিলোনা।
    অসাধু সিদ্ধার্থ অদ্ভুত কিছু কিছু মুহূর্ত বানিয়ে আয়না একদম মুখের সামনে সটাং ধরেছে, কিন্তু য্যানো একটু পরে পরেই খেই হারিয়ে যাচ্ছিলো। এইটা লেখক আর তার নির্মাণের মধ্যে সূত্র কেটে কেটে দিচ্ছিলো।
    তবে বড় অন্ধকার থাকে তার লেখাগুচ্ছে!এ কথা সত্যি। এ বড় শক্তির কাজ। ওই যুগে তো জগদীশ একদম একা! স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ওযুগে মানদন্ড এবং পরাকাষ্ঠা গড়ছেন তখন।সুষমা,লাবণ্য,আশাবাদ,সৌন্দর্য,সত্যম শিবম অদ্বৈতমের এদিক আর ওদিক ( মোটেই তাকে ছোটো করছিনা) এমনকি এর বিদ্রোহীরাও ওই রবির আদলেই য্যানো তাদের বিরোধীতার ভিত গড়ছেন বড়জোর রুদ্রজ নটরাজের প্রলয়নাচনের দল খুলে।তখন জগদীশ এমন লিখছেন! অবিশ্বাস্য ভাবে একক!! রবীন্দ্রনাথের ছবির জগৎ য্যানো জগদীশের কলমে ভর করেছিলো কবির ক্যানভাসে আসার কিছু বছর আগেই।
    জগদীশ যে যোগ্য সম্মান এবং প্রচার পাননি তার এক বড় কারণ মনে হয় পাঠকের কাছে খুব কাছাকাছি সময়ে ওনার যুগের পরপরেই কিছুটা একরকম ( সত্যিই কী আর তাই!!) ওই প্রেমেন,জীবনানন্দ,মাণিকের উপস্থিতি।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন