এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • কলকাতা ফুটবল - ৭০ দশক .....

    Binary
    অন্যান্য | ১৬ জুন ২০০৭ | ৬৫০৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Tim | 71.67.115.14 | ২৩ জুন ২০০৭ ০৭:১৫389756
  • আশির দশকের কথা শুরু হলেই মুন্নার কথা বলবো ভাবছিলাম। বাপ্পাদা মোটামুটি সে-কাজটাও করে দিয়েছেন।
    মুন্নার সাথেই এসেছিল আরো দুজন, রুমি আর আসলাম। এদের তিনজনেই বোধহয় আবাহনী ক্রিড়াচক্রের প্লেয়ার ছিল।
    পরের দিকে মহমেডান ও দেখাদেখি কয়েকজনকে আনে। কিন্তু শিল্ড ফাইনালে ৩-০ হেরে সবাইকে বাড়ি পাঠাতে বাধ্য হয়। সেই ম্যাচে কৃশানুর করা বাঁ পায়ের সোয়ার্ভিং শট দেখে স্বর্গত অজয় বসু বলেছিলেন, "" বল যেন ঝরা পাতার মত বাঁক খেয়ে গোলে ঢুকে গেল।""
  • Tim | 71.67.115.14 | ২৩ জুন ২০০৭ ০৭:১৭389757
  • অপ্পনদা,
    ওটা সঞ্জয় মাঝি হবে মনে হয়।
  • Arpan | 80.44.119.28 | ২৩ জুন ২০০৭ ১৩:৫৭389758
  • নারে ভাই সঞ্জয় মাঝি অনেক পরের। উত্তম নামটা মনে আছে পদবী ভুলে গেছি। মুখার্জিও হতে পারে।
  • Tim | 71.67.115.14 | ২৩ জুন ২০০৭ ২২:৪৮389759
  • হ্যাঁ মুখার্জি, মনে পড়েছে।
  • Bappa | 59.93.205.151 | ২৪ জুন ২০০৭ ১২:৩৫389760
  • শুধু সাব্বির আলি কেন, অনেকের কথাই ক্রমান্বয়ে আসতো, আসবেও হয়তো। তার আগে যে সুরজিৎ-এর মত অসাধারণ বল প্লেয়ারের কথায় কিছু কথা এসে পড়লো। তবে আটাত্তরের থেকে কর্মজীবন শুরুর ধাক্কায় সে স্মৃতিচারণে কিছু মালিন্য ঘোচানোর দায়িত্ব বাকি সবাইয়ের।

    সুরজিৎএর আগে ইষ্টোবেঙ্গলের রাইট আউটে খেলে গেছে সুভাষ ভৌমিক আর তার আগে স্বপন সেনগুপ্ত, যিনি তিয়াত্তরে ইষ্টোর অধিনায়কও বটে। এই স্বপন, সুধীর, সমরেশ সবাই এসেছিলেন ১৯৬৯-এ (নাকি পরের দুজন সত্তরে?)। ইষ্টোর এক চিরস্থায়ী নিয়ম ছিলো, হয়তো আজও আছে, দলবদলের খাতায় যে আগে সই করবে, সে আগে অধিনায়ক হবে, যদি তারা প্রত্যেকেই টানা খেলে যায় দলে। সেই নিয়মে চুয়াত্তরে সমরেশের আগে তিয়াত্তরে স্বপন হয়েছিলো অধিনায়ক। কল্লোলের চিঠিগুলোতে ব্যারাকপুরের স্বপন সেনগুপ্ত, বা মাঠের 'চিংড়ি'র নাম অনেক আগে আসতে পারতো, আমার চিঠিতেও, কারণ ইরানের প্যাস ক্লাবকে শেষ মুহূর্তে পরিমল দে যে গোল করেছিলেন, সেই গোলের পাসটা এসেছিলো স্বপন সেনগুপ্তর পাস থেকেই। অসম্ভব স্পীড ছিল, সাইডলাইন ধরে দৌড়ে তখনকার কোন সাইডব্যাকের পক্ষে তাকে সামলানো সম্ভব ছিলো না। খুব রাফ ট্যাক্‌ল্‌ হলে ভয় পেতো, কিন্তু স্পীডের জন্য রাফ সাইডব্যাকেরা খুব সফল হোত না। ডজের স্কিল কম ছিলো, বেশীর ভাগ ডজই করতো স্পীডের সাহায্যে। কিন্তু অচ্যুৎ ব্যানার্জীর ছাত্র স্বপনের বড় গুন ছিলো অত্যন্ত ভদ্র আর ঠাণ্ডা মাথার। ফলে মাঠ থেকে বসিয়ে দিলে চিন্তা করতো কেন বসানো হোলো, চেষ্টা করতো ভুল শুধরোনোর।

    উয়াড়ীর হয়ে ইষ্টোকে গোল দেওয়া, ব্যারাকপুরের সেই উত্তম চক্রবর্তীর ভাই বিশ্বরূপ যাদবপুরে আমার কেবল সহপাঠীই ছিলো না, আজও সে আমার অন্যতম সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু। চুয়াত্তরে বিশ্বরূপের পক্স হলে ওর মশারির মধ্যে ঢুকে ওকে শুশ্রুষা করার অতি সাধারণ কাজের জন্য ওদের পুরো পরিবারে ওদের দশ ভাই বোনের আরেক ভাইয়ের মতই স্থানও পেয়ে যাই মাসিমার আর ওঁদের ভালোবাসার গুনে। ওঁদেরই দৌলতে ব্যারাকপুরে লাটবাগানে যেতাম টুর্ণামেণ্ট খেলতে বা খেলা দেখতে আর অন্যান্য কাজে। সেখানে চিংড়ি-দার মুখে শুনেছিলাম ডুরাণ্ডে/রোভার্সে জে সি টি-মোহনবাগান ম্যাচে এরকম একটা ঘটনা। স্বপন সেনগুপ্ত চুয়াত্তরেই মোহনবাগানে চলে যান, সুভাষ আর সুরজিৎএর পাশে জায়গা হবে না বুঝতে পেরে। সে বছর ডুরাণ্ডে বা রোভার্সে সেমিফাইনালে জে সি টি-র সাথে মোহনবাগানের খেলা পড়ে। জে সি টি আর পাঞ্জাবের সাইড ব্যাক দরবারা সিং ছিলো খুব মারকুটে। আর চিংড়িকে আটকানোর সহজ উপায় ওর জানা ছিলো। প্রথম সেমিফাইনালে স্বপনকে কেউ বল বাড়ালেই ও দু পায়ে লাফ দিয়ে ওর গায়ের উপর প্রায় ঝাঁপিয়ে পড়ছে, আর স্বপন কুঁকড়ে যাচ্ছে। বসিয়ে দিলেন কোচ তাঁকে। মাঠের ধার থেকে উনি লক্ষ্য করলেন দরবারা যখনই ঝাঁপাচ্ছে, তখন দু পায়ের মধ্যে যথেষ্ট ফাঁক রেখে হাঁটু শক্ত করে ধাক্কা মারার চেষ্টা করছে। সে খেলা ড্র হোলো। পরের খেলায় স্বপন নিজেই চাইলেন প্রথম থেকে খেলতে। দরবারা ঝাঁপানোর আগের মুহূর্তে উনি একটু এগিয়ে গিয়ে বল রিসিভ করতে করতেই ওই বল দিলেন দরবারার দু পায়ের মাঝখান দিয়ে গলিয়ে। আর তাঁকে ধরে কে। সে খেলায় মোহনবাগান বোধহয় তিন গোলে জিতেছিলো। দরবারা মনে হয় মাথা গরম করে লাল কার্ডও দেখে।

    আর সেই টুর্ণামেণ্টেই ফাইনালে মোহনবাগান ইষ্টোকে ভারতের যে কোন জায়গায় পাঁচ বছর পরে(৬৯-এর শীল্ড ফাইনালের পর) প্রথম হারায় উলগানাথনের গোলে। উলগা তখন মোহনবাগানের লেফ্‌ট্‌ আউট।

    পিছনে সুধীর সামনে স্বপন, এই দুই অতিরিক্ত ঠাণ্ডা মাথার খেলোয়াড়ের শীতলতাকে ব্যালান্স করতো রাইট হাফে ইষ্টো বা বাংলার দীর্ঘদিনের বেকেনবাউয়ার বলে পরিচিত গৌতম সরকার, যার খেলা দেখে সবাই বলতো যে ওর নিশ্চয়ই দুটো অতিরিক্ত ফুসফুস আছে। গৌতম বা হাবিব সব সময়েই খুব বেশী মাত্রায় ইন্‌ভল্‌ভ্‌ড্‌ থাকতো বলে বহু সময় মাঠে মারামারিতে জড়িয়ে পড়তো। এদের সাথে পরে যুক্ত হলো আরেক মাথা গরম সুভাষ ভৌমিক। এদের ঠাণ্ডা করতে গিয়ে সুধীর আর স্বপনকে অনেক সময় দিতে হোতো।

    এরকমই গোলমাল থামাতে গিয়ে ঠাণ্ডা মাথার স্বপনকেও লাল কার্ড দেখে মাঠ ছেড়ে বেরোতে হয়েছিল, খুব সম্ভবত: তিয়াত্তরে। সে খেলায় শেষার্দ্ধ ইষ্টো নজনে আর মোহন দশজনে খেলে। মোহনের মার্চিং অর্ডার পেয়েছিলো মোহন সিং, আর ইষ্টোর সুভাষ নাকি হাবিব বা গৌতম, মনে নেই, আর স্বপন।
    (ক্রমশ:)
  • Bappa | 59.93.200.29 | ২৪ জুন ২০০৭ ১৯:৫০389761
  • সুরজিৎ এলো যখন ওর পাশে ছিলো একদিকে সুভাষ আর মাঝে শ্যাম আর রঞ্জিত মুখার্জী। রঞ্জিৎ তিনজনের তুলনায়ই কম বুদ্ধির, কম কোয়ালিটির, কিন্তু গোল চিনত, তাই টিঁকে রইলো। হায়েস্ট স্কোরারও হোলো দুবার।

    কিন্তু সুভাষ ভৌমিকের রাইট আউটের থেকে ভিতরে ঢোকার জোর আর গতি, শোল্ডার স্টিফ রেখে হাত দুটোকে দেহের সাথে লাগিয়ে দৌড়ের যা থ্রাস্ট, যে থ্রাস্টের শেষ মোহনবাগানের সঙ্গে প্রতিটি খেলায় ছ গজ বাক্সের মধ্যে গিয়ে তছনছ করে দিয়েছে প্রতিপক্ষকে, তাকে ভোলা সম্ভব ছিলো না কারুর পক্ষেই। তার সাথে ছিলো ১৯৭৩-এ উত্তর কোরিয়ার পিয়ং ইয়ং সিটিকে (ওখানকার লোকেরা ফু ইয়ং বলে শুনেছি পরে) ৩-১ গোলে হারানোর দিনে ভৌমিকের তৃতীয় গোল, যেটা প্রায় গোল লাইনের উপর থেকে আউট স্টেপে করেছিলেন তিনি। বস্তুত: তিয়াত্তরের ভৌমিকের কথা মাথায় এসেছিলো বলেই হয়তো পিকে মজিদের সাথে তুলনা করেছিলেন। ভৌমিকের মত পজিটিভ স্ট্রাইকার আর সব অ্যাটাক প্রায় নিজে বা অন্যকে দিয়ে গোলে শেষ করার মত ক্ষমতা পরবর্তী সময়ে কারুর মধ্যে কি দেখা গেছে? স্বদেশী খেলোয়াড়দের মধ্যে? তাঁর সময়ে মগন সিং বা আগের রঞ্জিত থাপা অথবা ইন্দার সিংকে কাছাকাছি রাখা যায়। পরে কেউ নেই।

    এ ছাড়া খেলাকে নিজেদের ক®¸ট্রালে নিয়ে আনার, মাঠে ভেঙে পড়া দলকে উজ্জীবিত করে সহজাত দাদা হওয়ার মত যে ক্ষমতা হাবিব, ভৌমিক, সমরেশ, গৌতম-দের মধ্যে ছিলো, তা অনেকটাই কম ছিলো সুরজিৎএর। হতে পারে ও আসার পরে সুভাষ বেরিয়ে গেছে, গৌতম আর সুধীরও চলে গেলো, ওকে ঠিক ঠিক পাস বাড়ানোর জন্য শুধু বাঁ পা নির্ভর সমরেশ বা প্রশান্ত যথেষ্ট ছিলো না, অনেক নিম্ন মানের মিহির, শুভঙ্কর, রঞ্জিতকে পাশে নিয়ে ওকে খেলতে হোলো, কিন্তু সে রকম খেলা ঘোরানোর ক্ষমতা থাকলে ও সুমিত বাগচী, কাজল চ্যাটার্জী আর খাবাজি-র মত হাফকে নিয়ে ভাঙা দলেও ফুল ফোটানোর কাজটা যা মজিদ করে গেছে তা অপেক্ষাকৃত অনেক বড় খেলোয়াড়দের, যাদের ও পেয়েছিলো, তাদের নিয়ে করতে পারতো।

    সুকুমার সমাজপতির পরে সঙ্গীতের আড্ডায় গুনী (সুচিত্রা মিত্রর সাথে তবলা বাজানোর ছবি তো তখনকার অনেক কাগজেই বেরিয়েছিলো) সুরজিৎ হয়তো সহ খেলোয়াড়দের থেকে একটু অন্য ঘরাণার ছিলো, তাই অসহিষ্ণুও ছিলো খুবই।

    ছোটো দলের খেলোয়াড়দের বড় দলের খেলোয়াড়েরা নিজেদের মাঠে, ভর্তি সমর্থকদের সামনে যা করতো, বা আজও করে, তা কলোসিয়ামের দিনগুলোকেই মনে পড়ায়। বল নিয়ে বেরোতে না পারলে, বা কেউ ডজ করে টপকে গেলে যে অশ্রাব্য ভাষায় বড় দলের খেলোয়াড়রা ছোটো দলের খেলোয়াড়কে আক্রমণ করে, তার কিছুই প্রায় শুনতে পায় না কেউ গ্যালারী থেকে, টিভির সামনে থেকে তো নয়ই। জঘন্য ফাউল করা তো তার পরে। গ্যালারিও চেঁচাচ্ছে, "মার, ....কে।"

    এ ব্যাপারে সুরজিৎ ছিলো ফরোয়ার্ডদের মধ্যে সবচেয়ে আগে। আটকে গিয়ে জঘন্য ফাউল করা বা ধাক্কা দেওয়া এক নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার ছিলো ওর। পাশের নিম্নমানের খেলোয়াড়দের কম ক্ষমতা নিশ্চয়ই এটাকে জাস্টিফাই করে না। মনা-সুব্রতর রাফনেসের ব্যাপারে কল্লোলের উদার সার্টিফিকেট দেওয়া নিয়ে অবাকই লাগলো। মোহনবাগানের 'লগা' বা ইস্ট্‌বেঙ্গলের 'মনা'কে তো কখনও কখনও খুনী ব্যাকও মনে হয়েছে আমার। মনোরঞ্জন একবার মহামেডানের লেফ্‌ট্‌ আউটকে মারাত্মক জোরে মারতে গিয়ে সেই খেলোয়াড়ের বুদ্ধিতে আকাশে ফল্‌স্‌ কিক করে তার হাঁটুর লিগামেণ্টে এত বড় চোট পায় যে দীর্ঘদিন মাঠের বাইরেই বসে থাকে। গালিগালাজ, পা চালানোতে গৌতম, প্রসূন, অশোকলাল, সুভাষ এবং অবশ্যই সুরজিৎএর নাম থাকবে সামনের সারিতে। সমরেশ এ ব্যাপারে অন্য পদ্ধতি অবলম্বন করতো, গলা পাল্টে 'ম্যান অন ইউ' বলে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে অন্যমনস্ক করতো, হাবিবও কিছুটা সেরকমই করতো।

    সুরজিৎ নয়। বিদ্যুৎ কুণ্ডুকে যে খেলায় ও মারে সে খেলায় ইস্ট্‌বেঙ্গল হেরে যায়। বিদ্যুৎ যাদবপুরে ইলেক্ট্রিকাল নিয়ে পড়তো আমাদের ব্যাচেই, কট্টর ইস্ট্‌বেঙ্গল সমর্থক। কিন্তু মাঠে ওর লড়াই ছিলো অদম্য। ওরকম মারের অ্যাটেম্প্‌ট্‌-এ বেঁচে গিয়ে ও সুরজিৎকে মারতে যায়, মারতে আসে উত্তমদাও(যিনি গোল করেছিলেন উয়াড়ীর হয়ে)। উত্তমদার দাদা শঙ্কর চক্রবর্তী পুলিশের সার্জেণ্ট আটাত্তর সালে। পরিস্থিতি খুব ঘোরালো হয়েছিলো আর সুরজিৎএর মাথা গরমের জন্যই সেদিন মাঠ বিশ্রী আকার নেয়। হারেও ইস্ট্‌বেঙ্গল।

    ঠাণ্ডা ভদ্র খেলোয়াড়দের সংখ্যা হাতে গোনা হলেও তাদের নাম বলতেই হয়। সুধীর, শ্যাম, বিদেশ, উলগা, বাবু মানি, শ্যামল ঘোষ, সাব্বির আলি এদের মধ্যে সবচেয়ে আগে ছিলেন।
    (...... পরে কোনদিন)
  • Arijit | 128.240.233.197 | ২৫ জুন ২০০৭ ২০:৫৭389762
  • আরেকজনের কথা দেখছি কেউ লিখছে না (আমার লেখার ক্ষ্যামতা নেই) - সুকল্যাণ ঘোষদস্তিদার (পদবীটা এই তো??) - মতি নন্দীর গল্পে নাম দেখেছি, আর আমার এক বন্ধুর বে হয়েছে ভদ্রলোকের মেয়ের সাথে...
  • kallol | 192.77.110.18 | ২৬ জুন ২০০৭ ১৩:০৮389763
  • একজন একদম অখ্যাত মানুষের কথা বলি।
    ভাতৃ-সংঘের গোপাল মুখার্জি (গোপালের ভালো নাম ভুলে গেছি)। ৭০-এর মাঝামাঝি থেকে ৮০র মাঝামাঝি অবধি খেলেছে।
    গোপালও পিন্টু শুর-সুভাষ-সুকল্যান-প্রশান্ত ব্যানার্জির মত এভিনিউ সম্মিলনির প্রোডাক্ট। ওর খেলা আমি প্রথম দেখি লেক ইস্টের মাঠে। সাউথ ক্যালকাটা লিগের খেলা ছিলো। এভিনিউ বানাম (প্রতিপক্ষের নাম ভুলে গেছি)। আমরা কলেজ (সাউথ সিটি) থেকে ফিরছি লেকের ভিতর দিয়ে হেঁটে হেঁটে। খেলা হচ্ছে দেখে দাঁড়িয়ে গেলাম। দেখি কালো মত একটা ছেলে, খুব সুন্দর চেহারা, লম্বা, পেটানো শরীর, রাইট উইংএর জায়গায় চুপচাপ দাঁড়িয়ে। কাছ দিয়ে বল গেলেও গা করছে না। সাইড লাইন থেকে ময়দান-সুভাষিতাবলী দাগা হচ্ছে ছেলেটির উদ্দেশ্যে। তখনই নাম শুনলাম - গোপাল।
    অনেক্ষন ধরে নানা প্রকার সৃস্টিশীল গালাগালি শোনার পর, ছেলেটা, যারা গালাগালি করছিলো, তাদের দিকে এলো।
    - কি, কি চাই। গোল, গোল দেখবি?
    বলে ঐখান থেকেই বল প্রায় চেয়ে নিলো। তারপর যা দেখলাম তা প্রায় স্পিলবার্গের ফিল্ম।
    বল ধরে দৌড় শুরু করল নিজেদের মাঝমাঠ থেকে। পরপর প্রায় চারজনকে ইনসাইড-আউটসাইড ডজে ছিটকে দিয়ে, বক্সের কোনা থেকে গোলার মত শট জাল কাঁপিয়ে দিলো। গোলকিপারটাকে স্রেফ দাঁড় করিয়ে রেখে।
    ওমা, আবার খেলা শুরু হতেই সেই সাইড লাইনে গিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়ে রইলো।
    পরে রাসবিহারীর বন্ধুদের গল্প করতেই সকলে হাঁ হাঁ করে বলে উঠল
    - আরে ও তো আমাদের অনুপের ভাই। পাগলা গোপাল।
    চিরকাল ভাতৃতে খেলে গেলো। আমার সামনে ইস্টবেঙ্গলের অফার ফিরিয়ে দিয়েছে (যেবার সক্কলে মহমাডান চলে গেলো), নিয়মিত খেলতে হবে বলে।
    ওর সম্পর্কে পিন্টুদাকে (পিন্টু শুর) বলতে শুনেছি ""ও যদি মন দিয়ে খেলে, আমরা ওর পায়ের নখের জুগ্যি নই''।

  • . | 59.93.246.206 | ০৩ জুলাই ২০০৭ ২৩:৫১389651
  • B | 59.93.246.206 | ০৪ জুলাই ২০০৭ ০২:১৫389652
  • অরিজিৎএর বন্ধুর শ্বশুর সুকল্যাণ সম্বন্ধে তো লিখেছিলেন বাইনারি বা এল সি এম। তারপরে সে ঘটনাটা একটু বড় করেও লেখা হয়েছে। তবে ওটা খেলা নিয়ে নয়, অ-খেলা নিয়ে। ওঁর খেলা নিয়ে খুব একটা বলার মত কিছু থাকলে ছিলো স্কোরিং এবিলিটি আর শটে গোলার মত জোর। সেই শেষের যাচ্ছেতাই ঘটনাগুলোর ই-মো ম্যাচে তাই দিয়েই, প্রায় মাঝমাঠ থেকে, অনেক দূর থেকে উঁচু রেইনবো শটে গোল করেছিলেন ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে।

    সেই যে বছর অরিজিৎ জন্মেছিল, মানে ওর মেল আই ডি থেকে যা মনে হয় আর কি, সেই উনিশশো বাহাত্তর সালে। ঠিক তো??

    এটুকু অবশ্য না লিখলে অন্যায় হবে যে কলকাতা মাঠে ফরোয়ার্ডে জুটি খেলোয়াড় বলতে শেষ দীর্ঘকালীন জুটি ছিল সম্ভবত: মানস (ভট্টাচার্য)-বিদেশ(বসু)। তার আগের জুটিই কিন্তু সুভাষ(ভৌমিক)-সুকল্যাণ(ঘোষ দস্তিদার)। মানস-বিদেশের আগে ওদেরই লোকে জোড়া ফলা হিসেবে ময়দান জানতো। রাজস্থানের হয়ে আটষট্টিতে বড় দলগুলোকে হিমসিম খাওয়ানোর পরেই, উনসত্তর সালে সুভাষ ভৌমিককে তুলে নেয় ইষ্টো আর সুকল্যানকে মোহন। সুভাষ ইষ্টো ছেড়ে মোহনে যায় সত্তরে। মোহনে খুবই আশার সঞ্চার হলেও ইষ্টো সে বছর তিনটি(দুটি পুরো আর একটি আর্ধেক হয়ে বৃষ্টিতে বন্ধ) সাক্ষাতেই মোহনকে হারায়। শ্যাম থাপা সে বছরই আবার কলকাতায় খেলতে এসে নিজেকে ভালো ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে। আর্ধেক ম্যাচটাতে ইডেনে মোহনকে শ্যামই মাঝমাঠ থেকে ওরকম গোল করে এগিয়ে দিয়েছিলো।

    সুকল্যাণ আর সুভাষ এমনিতে মোহনকে যথেষ্ট এগিয়েই দিয়েছিল, কিন্তু ওই যে ইষ্টোর কাছে হেরে যাওয়া..., তাতেই আর সেভাবে নাম হলো না। পরে তিয়াত্তরে আবার জুটি ভেঙে গেলো। আর সেভাবে জুটি হয় নি। যদিও ইষ্টোতে সুকল্যাণ শেষদিকে একবছরের জন্য এসেছিলেন।

    সুকল্যাণ সম্ভবত: একবার কি দুবার সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়েছিলেন। কিন্তু পুঙ্গম কান্নন, সুভাষ আর প্রণব গাঙ্গুলীর মত ফরোয়ার্ডের পাশে উনি একটু কম মানেরই ছিলেন, কিছুটা অসীম মৌলিকের ধাঁচের, তাই.....

    কিন্তু বাহাত্তরের ওই গোলটার একটা অন্য তাৎপর্য্য ছিলো। উনিশশো এক সালের পর দীর্ঘ একাত্তর বছর পরে কলকাতা লীগে একটা প্রায় অনতিক্রম্য রেকর্ড করেছিলো ইষ্টো সে বছর লীগে(আজও তা ভাঙে নি)। সে বছর লীগে ইষ্টো একটিও গোল খায় নি। ১৯০১ সালে রেকর্ড করেছিলো রয়্যাল আইরিশ রাইফেল্‌স্‌ একটিও গোল না খেয়ে সব কটি ম্যাচ জিতে লীগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে। বাহাত্তরে ইষ্টো একটি খেলায় ড্র করে হাওড়া ইউনিয়নের বিরুদ্ধে, যে খেলাতে শিবাজী ব্যানার্জী ছিলেন হাওড়ার গোলকীপার, কিন্তু গোল একটিও খায় নি।

    পরে ১৯৭৫ আর ১৯৭৭ সালে সব পয়েণ্ট পেয়ে, একটিও পয়েণ্ট না খুইয়ে লীগ জিতলেও ওই গোল না খাওয়ার রেকর্ড আর হলো না।

    সনৎ শেঠ, থঙ্গরাজ, বলাই দে, কানাই সরকার, কমল সরকারকেও বহু লোক তরুণ বসু, ভাস্কর গাঙ্গুলীদের নামের পাশে মনে রেখেছে, রেখেছে তনুময় বসু, হেমন্ত ডোরা, শিবাজী ব্যানার্জিকেও। কিন্তু, ইষ্টোর সে বছরের বা যে কোন ভারতীয় বা বাঙালী দলের হয়ে খেলা কলকাতা লীগে অপরাজিত সেই একমাত্র গোলকীপারের নাম আমরা প্রায় সবাই ভুলে গেছি। লোকে বলে ওরকম ডিফেন্সের জন্য ও নাকি বারের নীচে ঘুমিয়েই কাটাতো। কিন্তু অনেকেই জানেন না বা মনে রাখেন না যে তার আগের বছর একাত্তর সালে রাজস্থানের হয়ে খেলতে খেলতে ওই গোলকীপারটিই আটটি অথবা নটি পেনাল্টি বাঁচিয়েছিলেন সারা লীগে।

    আজও বিভিন্ন ফোরামে, কোন জায়গায়, ইষ্টোর সত্তর দশকের প্রাক্তন খেলোয়াড়দের কোন সম্বর্ধনায়ই শোনাও যায় না অজস্র উঙ্কÄল তারকায় ঢাকা পড়া সেই বেচারা, ভদ্র, শান্তশিষ্ট গোলকীপার অরুণ ব্যানার্জীর নাম, যাকে সুকল্যাণই সে বছর প্রথম পরাস্ত করেন।
  • bhabuk | 209.6.168.231 | ০৪ জুলাই ২০০৭ ০৭:৫৩389653
  • বাপ্পা-দা, '৯০ এর দশকে দেবাশিষ মুখার্জী সারা লিগে গোল না খাওয়ার এরকম একটা রেকর্ড ছিলো না? ৯০ মিনিটের খেলা হ'তনা বলে ফিফা স্বীকৃতি দেয়নি।
  • B | 59.93.195.166 | ০৪ জুলাই ২০০৭ ১৩:০৯389654
  • নব্বইয়ের দশকের থ্রেড না হলেও ভাবুক-বাবুর উত্তরের জন্য "নিয়মো নাস্তি" হতেই পারে। তাতে অন্যায় কিছু নেই।

    দেবাশিস মুখার্জীর কিছু খেলা হয়তো দেখেছি। 'হয়তো' কেন তা বলে নিই। ওই আশির ষোলোই আগস্টের পর আমার দাদা মাঠে যাওয়া একদম ছেড়ে দেন। আর কোনদিন যান নি। ফলে খেলা দেখা আমারও বেশ কমে যায়। আগের মত ঢক্কানিনাদ সহকারে তো হোতই না। পাশাপাশি মাঝেমধ্যেই কলকাতা ছাড়া ৮৩ থেকে।

    ৮৫-৮৬র পর কলকাতায় থাকাকালীন সময়গুলোতে আবার একটু যাতায়াত শুরু হচ্ছিলো। কিন্তু ক্লাব কমিটি দখলের লড়াইয়ে কংগ্রেস-সিপিআইএম-এর আঁতাত, সি পি আইএম-এরই শচীন সেনকে অপদস্থ করার/হারানোর তাগিদে ক্লাব লনে সি পি আইএম-এর আরেক নেতা মানস মুখার্জীর গোষ্ঠীর এগ্‌জিস্টিং কংগ্রেসী প্রাক্তন গুণ্ডাচক্রের সাথে হাত মিলিয়ে বোমাবাজি, মাঠের ব্যাপারে অনেকটা বীতস্পৃহ করে দেয়। নির্লিপ্ত খেলা দেখা, তাও কচিৎ কদাচিৎ, তাই চলছিলো। পুরোনো চেনারা চাপাচাপি করতো কলকাতার বাইরে টুর্ণামেণ্টে কোন পদাভিষিক্ত হয়ে দলের সাথে যেতে। কিন্তু কখনই তাতে সায় দিই নি। যদিও স্বপন বল, দেবব্রত সরকাররা "অন্য কারণে" ডাকাডাকি করতই। লতা মুঙ্গেশকারের অনুষ্ঠানের আগে হয়তো তার দরকারও ছিল। কিন্তু বিরানব্বইয়ের এক সন্ধেবেলায় জনৈক নেতার বাড়িতে সোমেন(মিত্র/কংগ্রেস)-সুভাষ(চক্রবর্তী/ক্রীড়ামন্ত্রী)-টুটু(বসু/মোহনবাগান)-পল্টু(দাস/ইস্ট্‌বেঙ্গল)-মীর মোহম্মদ ওমর(মহামেডান)-দের মিলিত র‌্যাকেটের যে ভয়ঙ্কর চেহারা চোখের সামনে খুলে যায়, তাতে খুব বিতৃষ্ণা জেগেছিলো। পরে আর মেম্বারশিপ গ্যালারিতে কোনদিন যাই নি। খেলা দেখতামই না প্রায়। বিদেশী দলের খেলা বা কোন কোন বড় ম্যাচে মাঝেসাঝে সল্ট লেক স্টেডিয়ামে যেতাম।

    তখনকার জ্ঞান তাই খবরের কাগজ-ভিত্তিক বেশী, হয়তো টিভি-ভিত্তিকও কিছুটা। ঠিক মনে পড়ে না। যদিও মাঠের লোকজনের সাথে রাস্তায় দেখা হলে সব খবরটুকুই পেতাম।

    দেবাশিস মুখার্জীর ওরকম রেকর্ড হলেও হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু যেহেতু দল হিসেবে সারা লীগে গোল না খাওয়ার রেকর্ডটা হয় নি, হয়তো তাই অরুণ ব্যানার্জীর অ্যাচিভ্‌মেণ্ট্‌টা একটু ভিন্ন।

    দেবাশিস মুখার্জী খুব সাহসী গোলকীপার ছিলো বলে মনে পড়ছে। কোন খেলাতে বোধহয় ডাইভ দিয়ে বিপক্ষের খেলোয়াড়ের পা থেকে বল তুলতে গিয়ে মুখের উপর মারাত্মক চোটও পায়। ঝাঁপাঝাঁপি করে গোল বাঁচানোর, বল ধরার ফলে বৃষ্টিভেজা মাঠে দাড়িতে কাদামাখামাখি হবার ভয়েই বোধহয় বেশীর ভাগ গোলকীপাররা দাড়ি রাখে না এদেশে, তাই সাহসের পাশাপাশি লম্বা চওড়া চেহারার দেবাশিস মুখার্জীর দাড়িটা মনে পড়ছে। সম্ভবত: দাড়িওয়ালা গোলকীপার দেবাশিসই ছিলো।
  • Arpan | 193.134.170.35 | ০৪ জুলাই ২০০৭ ১৪:৫৫389655
  • বাপ্পাদা, ৯১ সালে ইস্টবেঙ্গল একটাও গোল না খেয়ে লীগ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। যতদূর মনে পড়ছে দেবাশিস মুখার্জি শুধু সারা লীগেই গোল খাননি তাই নয়, একটানা সবচেয়ে বেশি সময় ধরে গোল না খাবার (সবগুলো টুর্নামেন্ট ধরে) সর্বভারতীয় রেকর্ডও করেছিলেন।

    এখানে দেখতে পারো।

    http://www.eastbengalfootballclub.com/search/index.asp?news_id=35
  • Arijit | 128.240.233.197 | ০৪ জুলাই ২০০৭ ১৫:০৫389656
  • সুকল্যাণ ঘোষদস্তিদারের কথা প্রথম এবং শেষ "স্ট্রাইকার'-এই পড়েছি - ও বইতে সুকল্যাণ-সুভাষ দুজনেই তখন রাজস্থান ক্লাবে। কাজেই জ্ঞান ওখানেই সীমিত।

    দেবাশিস মুখার্জী আমার দ্বিতীয় "আইডল' (ছোটবেলার) - প্রথম হল শিবাজী। ইস্কুল লেভেলে প্রচুর পেনাল্টি আটকেছিলুম, তার কারণ শিবাজীর দুটো কথা...বলেছিলো শট মারার আগে লাফানোর চেষ্টা করবে না, বরং শট মারার সময় নজর রাখবে কোথায় লাগলো।
  • kallol | 192.77.110.18 | ০৪ জুলাই ২০০৭ ১৬:১০389657
  • কাজল মুখার্জিকে নিয়ে লেখা হোক।
  • B | 59.93.223.234 | ০৪ জুলাই ২০০৭ ১৬:২২389658
  • ধন্যবাদ অর্পণ, এই সাইটটা আমার কনিষ্ঠ পুত্র উষ্ণীষ প্রায় রোজই খুলতো, খোলেও। তবে আমার সব সময় দেখা হয়ে ওঠে না ওর সাথে বসে। বসলেও এটা চোখে পড়ে নি।

    খেলার মাঠের নেশার থেকে মুক্তি বা স্বেচ্ছা অবসরের বিষয় নিয়ে একটা বড় লেখা লিখেছিলাম, এই থ্রেডে প্রথম দিকে LCM আর Binaryর ছোটোখাটো ভুলগুলোকে দেখাতে গিয়ে, এরকম ভুল যে আমারও একটা সময়ের পরে অজস্র হয় বা হবে, সেই কথার ব্যাখ্যায়। তখন দিই নি, তবে সেটা রয়েছে আমার কাছে। দেখি কখন দিতে পারি, বা আদৌ দেব কিনা। ওর থেকে টুকিটাকি অনেক কিছুই তো ইতিমধ্যে পোস্ট করা হয়ে গেছে।

    তোমার খবরে সমৃদ্ধ হলাম, নতুন করে। আরেকবার ধন্যবাদ।

    ***
    ওই টেব্‌ল্‌টাতে আগের বছরগুলো দেখলাম না, জানি না পাওয়া যায় কিনা সেগুলো। তাই ১৯৭২, ১৯৭৫ আর ১৯৭৭-এর টেব্‌ল্‌টার সংখ্যাগুলো দিয়ে দিলাম।

    ১৯৭২ - ১৯ম্যাচ, ১৮জয়, ড্র১, পরাজয় ০, স্বপক্ষে ৪৪, বিপক্ষে ০, পয়েণ্ট ৩৭।

    ১৯৭৫ - ২১, ২১, ০, ০, ৫৩, ৪, ৪২।
    ১৯৭৭ - ২২, ২২, ০, ০, ৫৩, ৪, ৪৪।

    প্রসঙ্গত: একটিও পয়েণ্ট না খুইয়ে চ্যাম্পিয়ন হবার ব্যাপারেও ইস্ট্‌বেঙ্গলই প্রথম ভারতীয় দল (১৯৭৫ আর ১৯৭৭)।

    তার আগে এ কৃতিত্ব ছিলো শুধু বিদেশী দলের -

    রয়্যাল আইরিশ রাইফেল্‌স্‌ (১৯০১) - ১৪, ১৪, ০, ০, ৪৫, ০, ২৮।
    গর্ডন লাইট ইন্‌ফ্যা¸ট্রী (১৯০৮) - ১৪, ১৪, ০, ০, ৩৪, ৪, ২৮। আর
    ব্ল্যাক ওয়াচ্‌ (১৯১২) - ১৪, ১৪, ০, ০, ২৯, ৩, ২৮।
  • B | 59.93.223.234 | ০৪ জুলাই ২০০৭ ১৬:৪২389659
  • অরিজিৎ তোর কথাটা শিবাজী ব্যানার্জীর প্রসঙ্গে মাথায় এসেছিলো। তুই আগে একবার বা কয়েকবার লিখেওছিলি মনে পড়ে, যেটাতে তুই মানস-বিদেশ, প্রসূনের কথাও মনে হয় লিখেছিলি। আজ দেবাশিস মুখার্জীর নাম লিখতে গিয়ে তোর গোল কিপিংএর কথা মনে এসেছিলো। সাথে সাথে সংগ্রাম মুখার্জীর নামও। ভাবছিলুম গোলকীপারদের নিয়েই না আরেকটা 'মুখুজ্জে পরিবার'-এর মত বাংলা ছবি তৈরী হয়। তাতে টিম টিম করে জ্বলবে রজত ঘোষ দস্তিদার।

    স্ট্রাইকার বলতে কি তুই মতি নন্দীর গল্পটা বলছিস। কেন জানি না, ও গল্পের প্রসূন(নায়কের নামটা তাই তো ছিলো?) আর তার থেকেও বড় করে তার বাবার কথা, বাবার কপালে কাটা দাগটার কথাই মনে পড়ে আজও। বাকি শোভাবাজার, যুগের যাত্রী নামগুলো আবছা ভাবে আসলেও বাকি সব বিলীন। মতি নন্দীর প্রথম গল্পটা 'ননীদা নট আউট'(?) তো মুছেই গেছে। ও গল্পে সুকল্যাণ সুভাষের কথাও তাই মনেই পড়লো না।

    ওদুটোর থেকে অনেক উঙ্কÄল 'স্টপার', তার কমল গুহ, বিশেষত: পল্টুদার মৃত্যুর সময় পল্টুদার নাতিকে কাল্পনিক প্রতিপক্ষ ধরে নিয়ে বল নাচানোর সময় পল্টুদার মেয়ের গলায়," কমলদা, বাবা বোধহয় চলে গেলেন" কথাটা অথবা পল্টুদার সেই অমর কথা, "কমল, ব্যালান্স হারাস নি।"

    এ কথা আরেক 'পল্টু'র কাছ থেকে তো শুনতুম আমিও। বুঝলাম কই, পারলামই বা কই।

    সময়ে অসময়ে শুধু কানে আসে ক্ষিদ্দার, "ওই যন্ত্রণাটাই তো আমি"। চোখে ভাসে আরেক "ক্ষিতীশ সিঙ্গি", আমার ......
  • Arijit | 128.240.233.197 | ০৪ জুলাই ২০০৭ ১৬:৪৭389660
  • প্রসূন প্রথম কোন ক্লাবে যেন ঢুকেছিলো? শোভাবাজারই মনে হচ্ছে। তাদের সাথে রাজস্থানের খেলায় সুভাষ ভৌমিক দুটো গোল করার পর ক্ষেপে ওঠে হ্যাটট্রিকের জন্য, সুকল্যাণের আচমকা একটা শট গোলে ঢুকে যাওয়ায় সুভাষ ভৌমিক ক্ষেপে যায়...ইত্যাদি ইত্যাদি...

    শোভাবাজার ছিলো, তবে যুগের যাত্রী বলে কোন ক্লাব ছিলো কি কখনও?
  • B | 59.93.223.234 | ০৪ জুলাই ২০০৭ ১৬:৫০389662
  • প্রথম ডিভিশনে নেই, অন্য ডিভিশনে নামটা দেখেছি। লেখাগুলো বেরোনোর আগে না পরে মনে নেই।
  • B | 59.93.223.234 | ০৪ জুলাই ২০০৭ ১৭:১৯389663
  • কাজল মুখার্জীকে নিয়ে লিখতে গেলে কোন ফাঁকে ওঁর পরবর্তী অধ্যায় এসে পড়বে তা জানা নেই। কারণ ওঁরই হাতে বা পায়ে আমার দুই ছেলেরই ফুটবল শিক্ষার ঘাস-মাঠ-বল-গোল-পরিচয়। আর যাদবপুর-সন্তোষপুরের কিশোর ভারতী ক্রীড়াঙ্গনে প্র্যাক্‌টিস্‌ শেষে মাঝে মধ্যে কাজলদার সাথে আমার একান্ত আলাপচারিতা। মাঠ, ময়দান, খেলা নিয়ে কাজলদার একটা সুন্দর লেখা নিয়ে ক্লাবের স্যুভেনির-এ ছাপানো.....

    উনি যদিও ষাটের মধ্যভাগ থেকে শুরু করেছেন, তবু পরে লিখতে চেষ্টা করবো স্মৃতি থেকে।
  • b | 117.193.41.223 | ০১ আগস্ট ২০০৯ ২১:৩৮389664
  • সুরজিৎ এর গল্প। সত্তর সালের বহু পরের ঘটনা। দিল্লিতে তখন। মা, দিদি আর ভাগনী হঠাৎ করে আসার প্ল্যান করল পূজোর সময়। আসার টিকিট পাওয়া গেলেও ফেরার জন্য পাওয়া মুশকিল, কারণ পূজোর ঠিক এক মাস বাকি। যাই হোক, লাইনে গিয়ে তো দাঁড়িয়েছি কীর্তিনগরে। ডেট দেখেই গোমড়া সর্দার ক্লার্ক বললেন ইয়ে তো নেহি হোগা। নেহি হোগা তো কি আর করা যায়, ওয়েট লিস্টের পজিশন দেখার জন্যে বললাম। তখন ক্লার্ক দ্বিতীয় এক ঝলক দেখে আমার দিকে তাকিয়ে পুছলেন "আপ সেনগুপ্তা হো'? ঘাড়টা রিফ্লেক্স অ্যাকশানে নড়তেই আবার জিজ্ঞাসা "সুর্জিৎ কো জানতে হো? সুর্জিৎ সেনগুপ্তা?' নাম শুনেছি তো এক জনেরই, তাই একটু নার্ভাস গলায় বললাম "ফুটবল (৫০% স্টেটমেন্ট আর ৫০% জিজ্ঞাসা মিলিয়ে)?। বলার সাথে সাথে ক্লার্ক এক রাশ হেসে বললেন 'আরে হাঁ দাদা ওহি সুর্জিৎ। ক্যা প্লেয়ার থা দাদা,হম তো ময়দান মেঁ হি পড়ে রহতে থে। এক বার ডুরান্ড মে..
    (আমি কিন্তু সুরজিতের খেলা দেখিনি কোনদিন, তাই বিশেষ উত্তর দিতে পারিনি। হাঁ হুঁ দিয়ে চালাচ্ছিলাম)। তবে সর্দারজি পরোয়া না করে এসব কথা বলছেন আর টাইপ করছেন। তারপরে হাত বাড়িয়ে বললেন, লো দাদা, আপকা টিকিট কনফার্মড। আমি অবাক বিস্ময়ে তাকাতেই বললেন, লেডিজ কোটা মে লগা দিয়া। আপ বে ফিকর রহো। সুর্জিৎ সে কভি মিলা হ্যায়?
    একটা মিথ্যা ঘাড় নেড়ে লাইনের থেকে বেরিয়ে স্বস্তির নি:শ্বাস ফেললাম। জয় সুরজিৎ। জয় ফুটবল।
  • . | 69.15.164.33 | ০২ আগস্ট ২০০৯ ১৮:২৪389665
  • মিহির বসুকে নিয়ে গল্প। '৭৭ এ টিভিতে দেখেছিলাম মিহির আর সমরেশ (?) এর দেয়া গোলে মোহনবাগানের হার। সেই মিহির বোসকে আবিষ্কার করি আবার '৯৭ সালে জীবনদীপের নিচে Bank of India তে কর্মরত দেখে। বাল্য বয়েসের নায়কের এহেন দশা দেখে সতি মনে একটা ধাক্কা লেগেছিল। কেন জানি মনে হয়, এদের আরো বেশি সম্মান প্রাপ্য ছিল।
  • MR | 72.190.83.142 | ০৫ আগস্ট ২০০৯ ০১:১৮389666
  • সুরজিত সেনগুপ্তর গল্পটা ভালো লাগলো। "আজকালে" ওর লেখাটাও ভালোলাগে।
  • বিদেশ বসু | 7845.15.457812.183 | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:৫৩389667
  • আমিও লিখতে চাই
  • aranya | 3478.160.342312.238 | ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:৩৪389668
  • এই টই ছিল ভীষণ প্রিয়..

    'নীল রঙ ছিল ভীষণ প্রিয়' - এরকম একটা গান ছিল না?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন