এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  নাটক

  • বিভৎস বাংলার কঠিন বস্তবতা

    Faridul Islam লেখকের গ্রাহক হোন
    নাটক | ০৭ মে ২০১৮ | ২২০০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Faridul Islam | ০৭ মে ২০১৮ ০৩:২৬375763
  • নির্মম বাস্তবতা
    !
    অনেক ছোট বেলা,যখন পড়তে শিখেছি,তখন থেকেই শুনে আসছি" মানি ইজ দা সেকেন্ড গড"বা টাকাই হলো দ্বিতীয় খোদা। ব্যপার ঠিক তেমনি, যখন যৌবনে পদার্পণ করলাম তখনই বুজলাম।বাবা চৌত্রের খড়ো রোদ্দদুরে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে পারিশ্রমিক পায় তা দিয়েই সংসারিয়ানার পাশাপাশি সন্তানের মহৎ উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য জ্বালানী জোগাতে হয়।মায়ে কতো বেলা যে না খেয়ে সন্তানের জন্যে রেখে দিয়েছে পরিপাটি ভাতের পেয়ালা তা সন্তান কি করে জানবে?
    বাবা মায়ের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে অমূল্য সম্পদ হলো তাদের সন্তান।
    গ্রামের দরিদ্র বাবা মা তাদের ভিটামাটি ব্যতিরে সমস্ত সহায় সম্পত্তি বিক্রি করে ছেলেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করায় একটি মাত্র আশায় ছেলে ভালো চাকরি পাবে।
    গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় পরিবেশ, সহজ সরল বাবা মা আর ভালোবাসার ময়েটিকে নিয়ে অত্যান্ত সুখেই জীবন কাটাচ্ছিলো,ডিগ্রী পাশ করা হাবাগোবা ছেলেটি, তাদের সুখ হয়তো বেশী দিন লেখেনি বিধাতা।কি জানি রুগে ভর করে মায়ের শরিরে, ঘরে খাবার কেনার টাকাই সর্ট তার উপর ঔষদ! পরম বেকায়দায় পড়ে যায় জাহিদ।মায়ের শরির দিন দিন খারাবের দিকে! চিন্তায় মলিন হয়ে যায় মুখ খানা একটা কিছু করতেই হবে। এমন ডিগ্রী পাশ ছেলে থাকতে বিনা চিকিৎসায় মা মারা যাবে তা কি করে হয়?তাই জাহিদ সিদ্ধান্ত নেয় ঢাকায় যাবো,একটা না একটা চাকরি হবেই! বাবা মাকে অনেক বুঝিয়ে রাজি করে একদিন ঢাকার উদ্দেশে রওনা হলো মাত্র কয়েক টাকা তার পাথেয়। ঢাকায় এক বন্ধুর বাসায় অবস্থান নেয় জাহিদ, ইট পাথরে গড়া ঢাকা শহর এর মানুষ গুলোও বড়ই কঠিন পাথর! এখানে কে শুনে কার দুঃখের কথা?কে দেখে কেউ অনাহারে ঘুমিয়ে পড়েছে। অনেক ঘুরেও একটা চাকরির জোগাড় করতে না পারায় জাহিদের হৃদয়ে যেন আকাশের সমস্থ মেঘ এসে জমা হয়। দুড়ুম দাড়ুম ডাকতে শুরু করে হঠাৎ হঠাৎ।ঢাকায় তো আর বসে বসে খাওয়া যায় না তারপরও পকেটের যে অবস্থা! একটা কিছু করতেই হবে।
    সমস্থ দিন তীর্থের মতো ঘুরে সন্ধায় বাসায় ফিরে বন্ধুকে বলে একটা কাজের সন্ধান মেলে রাত্রিতে বিভিন্না চামচা, পাতি নেতাদের পোষ্টার রাস্তায় রাস্তায় লাগাইলে নগদ পাঁচ-শ টাকা পাওয়া যায়।
    এভাবেই চলতে থাকে বেশ কিছু দিন।একটা ইন্টার্ভিউ বোর্ডে ডাক আসে
    লন্ড্রি করা শার্ট পেন্ট (যা শুধু ইন্টার্ভিউ দওয়ার জন্য) পড়ে হাজির হয়।ভাইবা বোর্ডে অত্যন্ত ভালো করে,বোর্ড প্রধান তার প্রতি খুশি প্রকাশ করেন।
    এবং বলেন আপনি এখন চলে যান আমরা আপনাকে ডাকবো।
    কিছুক্ষণ পর জাহিদ আবার যখন জিগ্যেস করে

    স্যার আমি কি তাহলে আশা করতে পারি?
    আমার চাকরিটা হবে।
    এবার বোর্ড প্রধান তার পাশের স্যারের প্রতি মুখ চাওয়া চাওয়ি করতে থাকে এবং ম্লান মুখে বলেন
    দেখুন আমাদের টপ মেনেজমেন্ট আপনার পদটিতে পূর্বই লোক ঠিক করে রেখেছেন।,আপনি এ আশাটা ছেড়ে দিন।
    এবার জাহিদের হৃদয় আকাশ মেঘ গুলি আস্তে আস্তে জল কনার সৃষ্টি হচ্ছে। তৃষ্ণার্ত হৃদয়ে স্পষ্ট ভাষায় ধীর থেকে উচ্চস্বরে বলিতে লাগলো
    এখানে আসা অবধি কতো টাকা খরচ হয়েছে? আমার বাসা থেকে এ অফিস পর্যন্ত ভাড়া লাগে দশ টাকা কিন্ত আমার ষাট টাকা খরচ হয়েছে।কেন জানেন? এই যে শার্টটা দেখতাছেন এই শার্ট, পেন্ট ধোয়া আার আয়রণ করা সহ আমার ষাট টাকা খরচ। কারন এই পোষাক আমার ইন্টার্ভিউ পোষাক যাতে ইন্টার্ভিউ বোর্ডে আমাকে আন স্মার্ট বলতে না পারে এজন্যে!
    যদি আগেই লোক নিয়ে থাকেন তাহলে আমাদের মতো মানিষের সাথে কেন এই নাটক করছেন? আপনার টপ মেনেজমেন্ট মুর্খ হলে আপনারা তো শিক্ষিত আপনারা কেন এ ভুল করছেন।কোন উত্তরের আশা না করে ফাইল নিয়ে চলে আসে জাহিদ। বাহিরে এসে নির্বাক হয়ে দাড়িয়ে আছে জাহিদ গ্রাম থেকে ফোন করেছে ময়না
    আপনি কেমন আছেন?
    ভালো আছি, তুমি কেমন আছো ময়না?
    কথা বলতেই হাউমাউ করে কেঁদে উঠে জাহিদ।
    বাসায় ফিরে রাত্রিতে পোষ্টার লাগানোর জন্য বেরিয়ে পড়ে হঠাৎ তার বাবা ফোন করে বলে বাবা জাহিদ তোর মায়ের অবস্থা ভালো না, ক দিন থেকেই খারাপ তোকে বলিনি আজ আর চাপা রাখতে পারলাম না
    --আমি এক্ষনি বাড়ি আসছি বাবা।
    --আচ্ছা দেখে শুনে আইসো।
    রাতেই বাড়ি ফিরলো একদম শুন্য হাতে মার জন্য দ টাকার ফল ও কিনার জো নেই।মায়ের শিয়রে বসে কাদছে জাহিদ, হঠাৎ দরজার কড়া নাড়ার শব্দ পেয়ে এগিয়ে গেলো জাহিদ। হাতে ভাতের বাটি নিয়ে দাড়ানো ময়নাকে দেখে জাহিদ চোখের পানি আটকাতে পারলোনা কয়েক ফোটা জল নিমিষেই ঝড়ে পড়লো।
    বাটি রেখে ময়না জাহিদের হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলো ময়নাদের বাড়ির উঠানে।
    এখানে দাড়িয়ে থাকেন কোত্থাও যাবন না।ময়না বাড়ির ভিতর থেকে একটা রঙিন মাটির ব্যাংক এনে জাহিদের হাতে দিয়ে বললো মায়ের চিকিৎসার জন্য টাকা লাগবো না! এটা ভেঙে টাকাগিলো রেখে দিবন।
    এটা আমি শখ করে কিনেছিলাম যখন আপনি আমার পথ আগলে রাখতেন তখন কিনেছিলাম ভাবছিলাম ভেঙে একটা বড় উপহার দিবো আপনাকে।
    আবার বলে এখানে তো অল্প কটা টাকা! আমার হাতের বালা জোড়া ও নেন! তাও তো হবে না!দুল দুল জোড়াও লেন! তবু মায়েরে ঢাকার বড় ডাক্তার দেখান।
    ঢাকায় আনা হলো এবং বড় হাসপাতালে ভর্তি করা হলো।দুদিনপর ডাক্তার পরিক্ষা করে বলে
    --আপনার মায়ের বড় ধরনের অপারেশন করা লাগবে।
    -কতে টাকা লাগবে ডাক্তার সাব।
    -তা ধরেন লাক্ষ পাঁচেক।
    -ডাক্তার সাব এতো টাকা কয় পামু!
    চোখে মুখে হতাসার ছাপ, দুচোখে অন্ধকার দেখতে লাগলো জাহিদ।
    পরদিন সকালে হাসপাতালের বারন্দায় দাড়ানো জাহিদ, তার বন্ধু হঠাৎ কাদো কাদো গলাই বলছে জাহিদ জাহিদরে খালাম্না আর নাই!! জাহিদ দৌড়ে গেলো মায়ের বেড়ে দেখে মায়ের নিথর দেহ টি নিস্তব্ধ হয়ে পড়ে আছে।
    জাহিদের বন্ধু পকেট থেকে একটা চিঠি জাহিদের হাতে দিলো চিঠি খানা দেখে জাহিদ অধরে মায়ের পা জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকে।
  • b | 24.139.196.6 | ০৭ মে ২০১৮ ২২:১৫375764
  • প্রোচোনডো বিভৎশো লাগলো।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি প্রতিক্রিয়া দিন