এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ও বিশ্বকবি

    PJ Roy Jit লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ | ২১২৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • PJ Roy Jit | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৭:৫৬369739
  • বহুকাল পূর্বের কথা । সৎসঙ্গের তৎকালিন সভাপতি ঋত্বিকাচার্য্য শ্রীযুক্ত কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য্য (এম.এ) , শ্রীশ্রীঠাকুরের রচিত ‘সত্যানুসরণ’ পুস্তিকাখানি লইয়া একবার কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সাক্ষাৎ করিয়াছিলেন। রবীন্দ্রনাথ বইখানির কিছুটা পাঠ করিয়াই জিজ্ঞাসা করিলেন, ‘ইহার বয়স কত?’ কৃষ্ণপ্রসন্ন তদুত্তরে বলেছিলেন, ‘তাঁর বয়স বেশী নয়, সবে মাত্র যৌবনে পদার্পণ করেছেন’। পুস্তকখানার আরও কিয়দংশ পড়িয়া কবিগুরু পুনরায় জিজ্ঞাসা করিলেন, ‘কত বয়স বললে?’ কৃষ্ণপ্রসন্ন পূর্বপ্রদত্ত উত্তরেরই পুনরাবৃত্তি করিলেন। পুস্তকের আরো কিয়দংশ পাঠ করিয়া রবীন্দ্রনাথ আবার সেই একই প্রশ্ন করিলেন, ‘কত বয়স বললে যেন?’ রবীন্দ্রনাথ বিস্মিত হইয়া গিয়েছিলেন – এত অল্প বয়সে এরূপ স্বচ্ছ সাবলীল ছন্দে, অপরুপ ভঙ্গিতে, গভীর তত্ত্বসমূহের এমন অপূর্ব প্রকাশ কি করিয়া সম্ভব হয়!
    ইহার কিছুদিন পরে সৎসঙ্গের তৎকালিন সহ-সভাপতি শ্রদ্ধেয় শ্রীযুক্ত সুশীল চন্দ্র বসু (বি.এ.) কবিগুরুর সাক্ষাৎ করেন। কবিগুরু সুশীলচন্দ্রের সহিত শ্রীশ্রীঠাকুর ও সৎসঙ্গের কর্মপ্রতিষ্ঠান সম্বন্ধে আগ্রহ সহকারে নানা আলাপ-আলোচনাদি করিয়াছিলেন। এ সাক্ষাৎকারের কথা বিবৃত করে সুশীলচন্দ্র লিখেছেন:Ñ

    শ্রী শ্রী ঠাকুর ও বিশ্বকবি
    শ্রীশ্রীঠাকুর ও বিশ্বকবি
    “একবার শান্তিনিকেতনে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলাম। নানা কথার পর শ্রীশ্রীঠাকুর ও তাঁর কর্মপ্রতিষ্ঠান সম্বন্ধীয় আলোচনা প্রসঙ্গ উঠিতেই, তিনি বললে, ‘আমি শুনিয়াছি তোমরা কাজকর্ম খুব ভালই করিতেছ, তোমাদের কোন অভাব অভিযোগ নাই, কিন্তু দেখ, আমার এই বৃদ্ধ বয়সে অপটু শরীর লইয়া ছেলে মেয়ে নাচাইয়া আমার এই প্রতিষ্ঠানের জন্য অর্থ সংগ্রহ করিতে হইতেছে!’ তাঁর কথা শুনে আমি অবশ্যই খুব দুঃখবোধ করিয়াছিলাম, তাহাকে বলিলাম, ‘অন্যের নিকট হইতে একথা শুনিলে বিস্মিত হইবার কোন কারণ ছিল না, কিন্তু আপনার নিকট হইতে শুনিয়া বিস্ময় বোধ না করিয়া পারিতেছি না। আপনি নিজে এ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলিয়াছেন। কর্ম প্রতিষ্ঠান গড়িতে দেশের লোকের সক্রিয় সহানুভূতি কিরূপ পাওয়া যায় তাহা আপনি বিলক্ষণ অবগত আছেন। আপনি ধনী পিতার সন্তান, আপনি বিশ্বকবি, জগৎজোড়া আপনার খ্যাতি, তথাপি প্রতিষ্ঠানটিকে চালাইতে ছেলে মেয়ে নাচাইয়া আপনাকে অর্থসংগ্রহ করিতে হইতেছে, বৃদ্ধ বয়সে এজন্য আপনার উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার সীমা নাই। আর আমাদের প্রতিষ্টানের প্রাণপুরুষ শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র দরিদ্র ব্রাহ্মণের সন্তান – আপনার ন্যায় খ্যাতি প্রতিপত্তি তো দূরের কথা, তিনি তাঁহার নিজের দেশবাসীর কাছেই এখনও একরূপ অপরিচিত – এমতাবস্থায় আমাদের প্রতিষ্ঠানের কোন অভাব-অভিযোগ নাই, ইহা আপনি কিরূপে অনুমান করিতে পারিলেন? ’ আমার কথা শুনিয়া তিনি নিরুত্তর রহিলেন। – বস্তুত যাঁহারাই কোন কর্মপ্রতিষ্ঠান (বিশেষত অভিনব ধরণের ) গড়িয়া তুলিয়াছেন তাহারাই জানেন যে এই দেশে কোন প্রতিষ্ঠান গড়িয়া তুলিতে কি পর্বতপ্রমাণ বাধার সম্মুখীন হইতে হয়। ”
  • T | 165.69.191.251 | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৮:৪৩369740
  • পুরো বিবরণটা আমি দিয়ে দিচ্ছি।

    বহুকাল পূর্বের কথা। প্রভাত হইয়াছে। পুষ্করিণীতে শাপলা ফুটিয়াছে। গাছে গাছে কোকিল ডাকিতেছে। সবেমাত্র ফেউগণ নিদ্রা গিয়াছে। হেনকালে গুরুদেব আড়মোড়া ভাঙিলেন। উঁফফ, আঁফফ, ইঁইয়ুফস, হেঁউউ, ইত্যাদি শব্দপূর্ব্বক আশে পাশে তাকাতেই দেখিলেন জুলজুল চোখে একটি ভক্ত হাতজোড় করিয়া আছে। গুরুদেব দিব্যদৃষ্টি সম্পন্ন লোক, অতএব বুঝিলেন, ইহা শ্রীযুক্ত কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য্য, এম.এ, সৎসঙ্গ।
    -- তারপর, কি মনে করে।
    এই যে, গুরুদেব। মৎগুরুদেব রচিত একখানি পুস্তক আপনার শ্রীচক্ষুগোচরনিমিত্ত আনিয়াছি। পাঠ করিয়া কৃতার্থ করিবেন যা হোক। দুই চারি লাইন লিখিয়া দিলেও হইবে। কিছু কাটতিও বাড়িবে। বাঁচা-বাড়ার ব্যাপার কিনা।
    গুরুদেব গলা খাঁকারি দিলেন। সহজপাঠের চন্দ্রবিন্দুর চ্যাপ্টার বাকি রহিয়াছে। প্যাঁচা ব্যাতীত কোনো কিছুই মাথায় আসিতেছে না। এই সময় এইসব আবদার। দূর বাবা।
    -- তা দেখো কৃষ্ণধন, আ আ আমি--
    -- আজ্ঞে কৃষ্ণধন নয়, উটি কৃষ্ণপ্রসন্ন, গুরুদেব। না, না আপনি না করবেন না, সামান্য কটি পৃষ্টা বইত নয়।
    আচ্ছা বেশ। গুরুদেব পড়ার টেবিল হইতে রিডিং গ্লাসটি চাহিলেন। সুনীল, শ্যামল, সন্দীপন ইত্যাদি কিছু তরুণ সকালবেলাতেই ভিড় জমাইয়া রাখে। তাহাদেরই একজন চশমাটি হাতে তুলিয়া দিল।
    গুরুদেব বইখানির কিছুটা পাঠ করিয়াই জিজ্ঞাসা করিলেন, ‘ইহার বয়স কত?
    কৃষ্ণপ্রসন্ন বিগলিত হইয়া কহিলেন, বেশী নয়, বেশী নয়। তা যৌবনই ধরুন না কেন। তাছাড়া দেওঘর অনেক দূর। যেতে যেতেই বয়স কমে যায়।
    গুরুদেব পুনরায় বইখানির কিছুটা পাঠ করিয়াই সুনীলের দিকে তাকাইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, তোমার বয়স কত?
    কৃষ্ণপ্রসন্ন পুনরায় বিগলিত হইয়া কহিলেন, দেকেচেন! কিরম স্বচ্ছ সাবলীল ছন্দ। একেবারে ন্যায্য যা হোক।
    গুরুদেব পুনরায় কিয়দংশ পাঠ করিয়া জনান্তিকে কহিলেন, উহার বয়স কত?
    কৃষ্ণপ্রসন্ন উত্তরোত্তর বিলগিত হইয়া কলিহেন, গরবী তত্ত্বসমূহের এইরূপ নিত্তরুর প্রকাশ, ছাগোন্দ্য উপদিনষের পর আর কেই বা ললকেচেন।
    গুরুদেব পুনরায় কিয়দংশ পাঠ করিয়া জনান্তিকে কহিলেন, আমার বয়স কত?

    ব্যাপারটা ভালোর দিকে যাচ্ছে না দেখে সুনীল শ্যামল সন্দীপন ইত্যাদিরা কৃষ্ণবাবুকে পাঁজাকোলা করিয়া বাহিরে অপেক্ষারত ফিটন গাড়ীতে তুলিয়া দেয়। শান্তিনিকেতন ক্রনিকলে সেইরকমই লিখেছিল। গুরুদেব স্বস্তি পান। সহজ পাঠের শেষ চ্যাপ্টারে লেখা হয়,
    বাঁশগাছে বাঁদর। ওকে দেখে পাঁচু ভয় পায়। পাছে কামড় দেয়।

    প্রথম মাঘ, ১৩৩৮
  • PJ Roy Jit | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৯:০০369741
  • আপনার কথার যুক্তি বুঝলাম না
  • সিকি | 158.168.40.123 | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৯:৪১369742
  • চরম! চ্রম!! আহা, রানারা!
  • PP | 138.97.245.101 | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৯:৪৯369743
  • টি পুরো ফাটিয়ে দিলেন যে!! আপনাকে ক
  • de | 192.57.114.91 | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ২১:৩২369744
  • :))))))
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন