এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • গ্রীক ও বাঙালি জাতি: সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য

    Ankur Chakraborty লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | ২৮ জুলাই ২০১৭ | ২১৮২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ankur Chakraborty | ২৮ জুলাই ২০১৭ ১৭:৫৯368411
  • দিন কয়েক আগে বন্ধু মনোমিতের অনুরোধ ছিল গ্রীক ও বাঙালি জাতির সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য সম্পর্কে আমার ধারণাবহুল একটা লেখা দেওয়ার।
    সেই সুবাদেই লিখছি।
    ভুলত্রুটি থাকলে ধরিয়ে দেবেন।
    ***

    গ্রীক ও বাঙালি: কিছু সাদৃশ্য, কিছু বৈসাদৃশ্য
    ***
    গ্রীক এবং বাঙালি জাতি দুটি পৃথিবীর অন্যতম সেরা দুই সাংস্কৃতিক জাতি হিসেবে পরিগণিত হয়। যদিও আমি জন্মগত ভাবে বাঙালি হলেও মানসিক সত্ত্বাগতভাবে নিজেকে গ্রীক বলে দাবী করি।
    সেই বিরানব্বই সালে, ছয় বছর বয়সে "সক্রেটিসের জবানবন্দি" নাটক দেখে বাবার মুখে গ্রীস দেশের নাম শোনা এবং সেই সুবাদে আলেকজান্ডার এর সাথে পরিচয় এবং আত্মিক যোগাযোগ। তারপর প্রায় ২৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে গ্রীস,গ্রীক জাতি ও আলেকজান্ডার কে নিয়ে পড়াশুনা ও গবেষণা করার সুবাদে এই লেখার অবতারণা।
    আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক।

    ***

    একটি জাতির সম্পর্কে জানতে গেলে আগে তার ভৌগোলিক ও ঐতিহাসিক অস্তিত্ব নিয়ে বলা দরকার। তারপর অর্থনৈতিক,রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক আলোচনা।
    ভৌগোলিক ভাবে গ্রীস ও বাংলার মিল এখানেই,যে দুই দেশের উত্তরেই রয়েছে পর্বতশ্রেণী ও দক্ষিণে সাগর। বাংলার উত্তরে যেমন হিমালয়,তেমনই গ্রীসের উত্তরে বলকান এবং রোডোপি পর্বত। যদিও বাংলায় সমুদ্র কেবল দক্ষিণে,যা বাংলার নামে নামাঙ্কিত। বঙ্গপসাগর। সেদিকে গ্রীস উপদ্বীপ হওয়ায় তার তিনদিকে সমুদ্র। পূর্বে ইজিয়ান,পশ্চিমে আইওনিয়ান ও দক্ষিণে ভূমধ্যসাগর।

    ^^^

    জলবায়ু বিচার করলে আজকের যুগে দাঁড়িয়ে গ্রীসের রাজধানী এথেন্সের গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা ৩৮-৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে যায়। এই তাপমাত্রার সাথে দক্ষিণ বঙ্গ পরিচিত। তবে উত্তর গ্রীস এবং উত্তরবঙ্গের তাপমাত্রা গরমকালে ৩০-৩৪ ডিগ্রির আশেপাশে থাকে। কিন্তু শীতকালীন তাপমাত্রা গ্রীসে বেশ কম। গত দশ বছরে অন্তত ৫ বা ৬ বড় এথেন্সে বরফ পড়েছে। উত্তরবঙ্গ মাঝেমধ্যে বরফ পেলেও দক্ষিণের ভাগ্যে সেই সুখ বা দুঃখ জোটেনি।

    ^^^

    বাংলার মত এত নদনদী না থাকলেও গ্রীসের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি নদীর ওপর নির্ভরশীল। পিন্ডস পর্বতের থেকে আসা বেশ কিছু নদনদী যেমন এভরস, আর্দা বা উত্তর পূর্ব গ্রীসের বুক চিরে যাওয়া হালিয়াকমোনাস বা পশ্চিমের আখেলুস বা দক্ষিণী উপদ্বীপের পিনেয়াস প্রভৃতি উল্লেখ্য। যদিও গ্রীসের পাথুরে ভুমিভাগের উচ্চতার ও ভূমির ঢালের কারনে এইসব নদনদী উত্তর বাদে প্রায় সব দিকেই বয়ে চলে। অপরপক্ষে বাংলার প্রায় সব নদীই দক্ষিণমুখী। গ্রীসের কোন নদীই আবার ভাগীরথী হুগলির মত এত চওড়া নয়। বাংলার মাটি মূলতঃ পলিগঠিত কিন্তু গ্রীসের মাটি পাথুরে পডজল গোত্রের।

    ^^^

    বাংলার দক্ষিণে সুন্দরবনের মত দ্বীপ বা বদ্বীপ যেমন আছে,তেমনি আবার গ্রিসে অন্তত ইজিয়ান,আইওনিয়ান,সাইকলেডস ই ডোডেকানিস, এই চারটি দ্বীপসমষ্টি বর্তমান।

    ^^^

    ঐতিহাসিক দিক থেকে দেখতে গেলে গ্রীসের ইতিহাসের প্রাচীনতম নিদর্শন পাওয়া যায় অন্তত ৫০০০ বছর আগে,ক্রিট দ্বীপের মিনওয়ান সভ্যতায়। যদিও সেই একই সময়ে বাংলার বদ্বীপে কোন সভ্যতা ছিল কি না জানা না গেলেও সেখানে জনবসতি ছিল,তা জানা যায়।

    ^^^

    গ্রীক সভ্যতার পূর্বপুরুষ রা যেমন সম্পুর্ন অর্যভাষা গোষ্ঠীর নয় বলেই প্রমাণিত। অপরপক্ষে বাংলার প্রাচীনতম সভ্যতা সংস্কৃতি মূলতঃ অনার্য গোষ্ঠীর দান। যদিও পরবর্তী কালের বাঙালি জাতির নৃতাত্বিক বিশ্লেষন অনুযায়ী আমরা এক অদ্ভুত মিশ্র জাতি। আমাদের নৃতাত্বিক নাম ব্রাকিসিফেলাস বা চওড়া মাথা ওয়ালা মানুষ এবং তার মধ্যেও আবার কন্নড়,মারাঠি ও তেলুগু জাতি থাকলেও বদ্বীপীয় বাঙালির জাতিগত বিভাগ এপিরোটিক। যে নাম পশ্চিম গ্রীসের এপিরাস অঞ্চলের সাক্ষ্য বহন করে। সমগ্র উত্তর ও পশ্চিম গ্রীসের এপিরাস,ম্যাসেডোনিয়া,থ্রেস বা থেসালী অঞ্চলে এই জাতিগোষ্ঠীর মানুষই প্রধান।
    তাহলে কি নৃতাত্বিক ভাবে উত্তরের গ্রীক ও দক্ষিণবঙ্গের বাঙালি তুতো ভাইবোন?
    যদিও উত্তর গ্রিসে এখনও সোনালী চুল ও নীল বা হালকা বাদামি চোখের মানুষ দেখা গেলেও এদিকে তার চিহ্নমাত্র নেই।

    ^^^

    গ্রীসের ইতিহাসে ফিলিপ ও আলেকজান্ডার এর সাম্রাজ্যের বিস্তারের মতোই বাংলার পরবর্তী কালের পাল সাম্রাজ্য উল্লেখ্য। যদিও গ্রীক সাম্রাজ্যের বিস্তার হয়েছিল পশ্চিম থেকে পূর্বে,পাল সাম্রাজ্যের গতিধারা ঠিক এর বিপরীতে।
    যদিও রাজনৈতিক ভাবে প্রাচীন গ্রীক সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব নিঃসন্দেহে আলেকজান্ডার,দুঃখের বিষয় স্পষ্ট ইতিহাসের অভাবে বাংলার এইরূপ কোন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কোন উল্লেখ নেই। যদিও সিংহল বিজয়ী বিজয়সিংহ অনেকেরই মতে পৌরাণিক ( যদিও সিংহলি DNA ও বাঙালি DNA র সাদৃশ্য এই বিপক্ষে প্রমান দেয়)

    ^^^

    পরবর্তী ইতিহাসের যুগে নজর দিলে দেখব, গ্রীস ও বাংলায় প্রায় একই সময়ে মুসলিম আক্রমন ঘটে। যদিও বখতিয়ার খলজি বাংলায় হানা দেওয়ার সময়েও গ্রিসে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্য চলছে। যদিও অদূর ভবিষ্যতে অটোমান তুর্কিরা গ্রীস দখল করে নেয়।

    ^^^

    এখানে বাংলা ও গ্রীসের ইতিহাসের একটা অমিল পাওয়া যায়। বাংলায় যখন ইসলামের অন্য এক ধারা জন্মাচ্ছে আবার বহু মানুষ হিন্দুত্বের জাতপাতের জ্বালায় দলে দলে ইসলাম গ্রহণ করছে(বিশেষতঃ পূর্ববঙ্গে),গ্রিসে অটোমান অত্যাচার গ্রিকদের করছে ইসলাম বিমুখ এবং আরও শক্ত করছে গ্রীক অর্থোডক্স ক্রিশ্চিয়ান ধর্মের শাখা কে (গ্রিকদের ইসলাম বিদ্বেষ আজও বর্তমান। খেলাধুলা এবং রাজনৈতিক কারন ছাড়া গ্রীক সরকার আজও মুসলিমদের ভিসা দিতে একবারের বেশি দুই বার বিবেচনা করে)

    ^^^

    এরপরের গ্রীক ও বাংলার ইতিহাসে ঘটে এক আশ্চর্য পরিবর্তন। একদিকে গ্রীস যেমন ভিয়েনা চুক্তির ফলে তার হারানো অনেক এলাকা (ম্যাসেডোনিয়া,থ্রেস এবং ইজিয়ান দ্বীপপুঞ্জ) ফেরত পাচ্ছে ১৯২৩ এর লুসানের সন্ধির মাধ্যমে,আর তার এক যুগ আগেই বঙ্গভঙ্গ রদ হয়ে বাঙালি পেয়েছে তার নিজের ভাষাভাষী এলাকা। যদিও আবার দুই যুগের পর বাংলা দেখল দেশ-ভাগ। বহু মানুষ পশ্চিম পাকিস্তান থেকে চলে এলো এপারে। ধর্মের নামে হানাহানি। বিরাট জাতি ধর্মীয় ভিত্তিতে হল ভাগ।
    আবার ১৯২৩ সালেই গ্রীস আর তুরস্কের মধ্যে জনসংখ্যার হস্তান্তর করা হল। গত প্রায় ৫০০ বছর ধরে তুর্কীদের হাতে অত্যাচারিত এশিয়া মাইনর ও পনটাস অঞ্চলের গ্রীকরা দলে দলে সাগর পেরিয়ে চলে এলো মূল ভূখণ্ডে।
    তার আগে অবশ্য গ্রীক এবনঃ আর্মেনিয়ান গোষ্ঠীর ওপর তুরস্ক সরকার চালায় গণহত্যা। পনটাস এলাকার ট্রেবিজনড শহরে। যা অনেকটাই নোয়াখালীর গণহত্যার সাথে তুলনীয়। বহু গ্রীককে মেরে ফেলা হয়,অথবা জোর করে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার কাজ চলে। যায় সাথে বাংলাদেশে বাঙালি হিন্দুর অবস্থার মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

    ^^^

    ঠিক যেভাবে এপার আর ওপার বাংলার মানুষের মধ্যে সামান্য উপভাষাগত বৈসাদৃশ্য দেখা যায়,তেমনি গ্রীসের মূল ভূখণ্ডে ডোরিক বা কৈনে(doric/koine) আর এশিয়া মাইনর থেকে আগত গ্রিকদের মধ্যে আইওনিক(ionic) উপভাষা দেখা যায়। এবং বাংলার ঘটি বাঙাল এর মত মিঠেকড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতাও খুঁজে পাওয়া যায়।
    গ্রীসের বর্তমান কালের বহু কবি সাহিত্যিকের পূর্বপুরুষ বা নিজেদের জন্মস্থানও এশিয়ায়,ঠিক যেমন পশ্চিমবাংলার অনেক বিখ্যাত মানুষের ক্ষেত্রেও। এর উল্টোটাও তুলনায় কম। যেমন বাংলাদেশের খুব কম কবি সাহিত্যিকের শিকড় পশ্চিমবঙ্গে,তেমনিই মূল ভূখণ্ডের গ্রীকদের মধ্যেও এটা লক্ষ্যণীয়।
    এপারের ইস্টবেঙ্গল মোহনবাগানের মতোই গ্রীসের ফুটবল ইতিহাসের সাক্ষী অলিম্পিয়াকস,প্যানথিনাইকস ও AEK আথেন্স।

    ^^^

    অর্থনীতিগতভাবে গ্রীকরা গত দশ বছরে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া সদস্য,তেমনিই পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতিও মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। এদিকের একটা যুবা প্রজন্ম গুরগাঁও,নয়ডা,ব্যাঙ্গালোরে যেমন পাড়ি দিয়ে সেখানে তাদের জনগোষ্ঠী বাড়িয়েছে,তেমনিই গ্রীকরাও প্রচুর পরিমানে পাই জমিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন বা যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোয়।
    বর্তমান গ্রীসের জনসংখ্যা অনুযায়ী গ্রীক জনসংখ্যা এথেন্সের পরেই সর্বাধিক মেলবোর্নে। বাঙালিরও আর কিছুদিন পর কলকাতার জনসংখ্যার পরেই ব্যাঙ্গালোর হলেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু থাকবে না।

    ^^^

    এর সাথে যোগ করা যায় সরকারি ধার দেনা। গ্রীক সরকারের দুর্নীতি আজ বিশ্বজনীন। IMF এর কাছে গ্রীস দেনায় ডুবে আছে। কিন্তু গ্রিকরা প্রতিবাদ করছে।পশ্চিমবাংলাও দেনায় ডুবে যাচ্ছে,অথচ বাঙালি চুপচাপ ঘুমাচ্ছে।
    গ্রীসের ওপর ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন আরও বোঝা চাপাচ্ছে আর গ্রীসের ক্ষমতা খর্ব করা হচ্ছে। গ্রীক মানুষের অধিকাংশই চাইল EU থেকে বেরিয়ে আসতে,কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আলেক্সিস সিপ্রাস গণভোটের ফলাফল খারিজ করে দিল। যদিও এদিকে এখনো ভারতীয় ইউনিয়ন অখন্ড রাখতেই পশ্চিমের বাঙালি সচেতন বাংলার ক্ষমতা কেন্দ্র গ্রাস করে নেওয়া সত্ত্বেও।

    ^^^

    বাংলার আরেকটা সমস্যাও গ্রিকদের মত। আর তা হল বহিরাগতদের সংখ্যার ক্রম বৃদ্ধি। বলকান এলাকার অন্য দেশগুলি,বিশেষতঃ অর্থনীতির দিক থেকে পিছিয়ে থাকা আলবেনিয়া,বুলগেরিয়া ও রোমানিয়া থেকে নিত্যদিন প্রচুর মানুষ গ্রিসে এসে ভিড় জমাচ্ছে। ঠিক যেভাবে পশ্চিমবাংলার ভিতরে রোজ ঢুকছে বিহারী, উড়িয়া, উত্তরপ্রদেশী,গুজরাটি আর মারওয়ারী। এই বহিরাগতদের চাপে গ্রিকরা অতিষ্ঠ। বাঙালির অবস্থাও শোচনীয়।

    ^^^

    এতদসত্ত্বেও গ্রিসে এখনো টিকে আছে প্রাচীন সঙ্গীত সিরতাকি,প্রাচীন নৃত্যশৈলী ও স্থাপত্যরীতি। যেমন গ্রীক attica বা attiki অঞ্চল থেকে বাড়ির চিলেকোঠার ইংরেজি নামকরণ হয়েছে attic, তেমনিই ভারতীয় স্থাপত্যে বাংলার নামে ছাপ রেখেছে জোড়-বাংলা শিল্পশৈলী। বাংলার গৌড়ীয় নৃত্য,ছৌ নাচ বা জারি,সারি,মুর্শীদি, ভাটিয়ালি গ্রীক সঙ্গীত শৈলীকেও লজ্জা দিতে পারে। গ্রীকদের বাদ্যযন্ত্র ম্যান্ডোলিনের মতোই বাঙালির আছে একতারা।

    ^^^

    ইউরোপের কর্মব্যস্ত জীবনে যেমন গ্রীকরাই একমাত্র জাতি,যারা আড্ডা দেওয়া কে প্রাচীন কাল থেকেই শিল্পের জায়গায় নিয়ে গেছে,তেমনিই ক্রমবর্ধমান দ্রুত ভারতীয় জীবনের আড্ডার ধারক বাহক বাঙালি। কিন্তু গ্রীক আড্ডা অনেকটাই গাঠনিক। বাঙালি সেখানে সমালোচনা প্রবন।

    ^^^

    বাংলার সামুদ্রিক তটভূমি মানুষের এলাকার মতোই সামুদ্রিক বা দ্বীপবাসী গ্রীকরা শুঁটকি মাছের ভক্ত। তবে সামগ্রিকভাবে গ্রীক ও বাঙালি মাছ-তুতো ভাই। বলা হয়,জলের মধ্যে যাইই নড়াচড়া করে,গ্রিকরা তাকেই খায়। এ কথা বোধহয় বাঙালির ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।

    ^^^

    আজও বর্নহিন্দুত্বের আগ্রাসনের মাঝে বাঙালি বাঁচিয়ে রেখেছে লোকায়ত বনবিবি,কালু খাঁ ও গাজীবাবা কে। তেমনই গ্রীসের অর্থডক্সির মধ্যে মিশে গেছে জিউস প্রমুখ। এমনকি আলেকজান্ডার গ্রীক ক্রিষ্টান দের কাছে সেন্ট জর্জ (হাজিওস ইয়োরগস) হয়ে ইউরোপীয় নানা দেশে পার্শ্ব দেবতার তকমা পেয়েছেন। (এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে আলেকজান্ডার এর পার্শী নাম সিকান্দার। যা দক্ষিণ ভারতে স্কন্দ নামে দেবসেনাপতি কার্তিকের রূপ নিয়েছে)

    ^^^

    মূলতঃ বাঙালি ও গ্রীক দুইই সাংস্কৃতিকভাবে সমৃদ্ধ দুই জাতিগোষ্ঠী। তাদের মিলও অনেক,অমিলও প্রচুর।
    কিন্ত,আমার গ্রীক বন্ধুদের কাছ থেকে শোনা যে গ্রীকরাও আজ নিজস্বতা বিসর্জন দিয়ে অস্তিত্ব সঙ্কটে। বাঙালিও সেই পথে হাঁটছে।

    যদিও নিজের জন্মভূমি কে চিনি জানি, আরও চেনা বা জানা বাকি। ঠিক তেমনিই নিজের মানসভূমিকে চেনার জন্যও একদিন পাড়ি দেবো এথেন্সের উদ্দেশে।
    ৩২৮ খ্রিস্টপূর্বে যেমন আলেকজান্ডার গ্রীস থেকে পূর্ব দিকে যাত্রা করে ভারতে এসে পৌঁছন এবং পরবর্তীতে মেগাসথেনিস গাঙ্গেয় বদ্বীপে গঙ্গারিদি জাতির খোঁজ দেন পৃথিবীকে,তেমনিই হয়তো শীঘ্রই আমিও পাড়ি জমাব গাঙ্গেয় বাংলা থেকে পশ্চিমে,যবন দেশে। খুঁজে নিতে নতুন কোন সাদৃশ্য আর বৈসাদৃশ্য, গ্রীক এবং বাঙালি জাতির মধ্যে।
  • + | 168.125.117.4 | ২৮ জুলাই ২০১৭ ১৮:১৪368421
  • গ্রীক-বাঙালী উভয়েই গুছিয়ে ল্যাদ খায়।
  • sswarnendu | 113.242.198.2 | ২৮ জুলাই ২০১৭ ২০:২৪368422
  • লেখাটায় সাদৃশ্যগুলো খুব জোর করে মিল দেখানোর চেষ্টা মনে হল, কিছুটা সুপারফিসিয়াল ও লাগল।
    আর "গ্রীক সভ্যতার পূর্বপুরুষ রা যেমন সম্পুর্ন অর্যভাষা গোষ্ঠীর নয় বলেই প্রমাণিত।" - এই লাইনটায় ঠিক কি বলতে চাওয়া হয়েছে বুঝতে পারলুম না।
  • SS | 160.148.14.139 | ২৮ জুলাই ২০১৭ ২৩:০৭368423
  • গ্রীক বাবারাও বাঙালী বাবাদের মত মেয়ের বিয়ে দেওয়া অত্যন্ত গুরূত্বপূর্ণ কর্ত্যব্য বলে মনে করে। আর গ্রীক বিয়ে বাঙালী বিয়ের মতই কেওটিক।
    রেফারেন্সঃ মাই বিগ ফ্যাট গ্রীক ওয়েডিং।
    খাবার ব্যাপারেও একটা মিল আছে। পুরো ইউরোপ যখন ল্যাম্ব খায়, তখন গ্রীকরা একমাত্র ছাগলের মর্ম বোঝে।
  • pi | 57.29.235.119 | ২৮ জুলাই ২০১৭ ২৩:১২368424
  • বর্ষার কোলকাতা ভেনিস হয়ে যাওয়ার সাদৃশ্যটাই এল না!!
  • pi | 57.29.235.119 | ২৮ জুলাই ২০১৭ ২৩:১৯368425
  • কীসব লিহচি ঘুমচোখে। ইগনোর। ইগনোর।
  • s | 108.209.202.160 | ২৮ জুলাই ২০১৭ ২৩:২৬368427
  • ভেনিস তো রোমা। ওটা রোমানদের সংগে সাদৃশ্যে আসবে।
  • DaanabKrishhna Deoan | 233.186.47.208 | ২৮ জুলাই ২০১৭ ২৩:২৬368426
  • তাই বলি, গ্রীক ইওগার্ট আর মোল্লারচকের দইয়ে এত সাদৃশ্য কেন।
  • Ankur Chakraborty | ২৯ জুলাই ২০১৭ ১৩:০৩368428
  • মিনওয়ান সভ্যতা গ্রিকদের প্রাচীনতম সভ্যতা। তাদের সাথে আর্য ভাষাগোষ্ঠী সম্পর্কিত নয়।

    এবং

    ভেনিস উত্তর ইতালিতে। ওখানে আলাদা সাম্রাজ্য ছিল। তাও বাইজেন্টাইন যুগের পরে। গ্রিকদের উপনিবেশ ছিল দক্ষিণ ইতালির সিসিলি দ্বীপে। ম্যাগনা গ্রেসিয়া বলা হত ওই অঞ্চলকে।
    আর আথেন্স পাহাড়ের কোলে। সেরকম জল দাঁড়ানোর সমস্যা নেই।
  • pi | 57.29.220.12 | ২৯ জুলাই ২০১৭ ১৩:১৬368412
  • ইগনোর মানে জানা নাই? ঃ(
  • জো | 230123.134.900.141 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৯:৩৩368413
  • বাঙালি তার পরো বাঙালি। ঘা খাবে সেইদিন যেদিন সূক্ষ্ম বিবেচনায় অন‍্য কোন জাতিকে নকল করতে চাইবে। কিন্তু না, আশার কথা এই তাদের নিজেদের ই আছে রবীন্দ্রনাথ নজরুল এর মতো অসংখ্য প্রতিভা। গ্রিস অত‍্যন্ত গ্লোবাল কিন্তু কালীদেবির তীক্ষ্ণ চোখ এর কাছে চিরকালই বিজাতীয়। অথচ অনেক গ্রিক ইন্টেলেকচুয়াল মুগ্ধ বাংলাদেশ এর ব‍্যাপারে। খুব সম্ভব বাংলা দেশকে জয় করতে হলে হৃদয়ে র প্রয়োজন যেটা সময়ের সাথে ইন্দো হেলেনিক বংশগুলো শিখেছে। অ‍্যাফিরেসতো!
  • জোজো | 230123.134.900.141 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ১৯:৪৬368414
  • কলকাতা আছে কলকাতা তেই। গ্রিক জাতি ইংরেজ নয়। উপনিবেশে বিশ্বাস করে না। চার হাজার হাতির ভয়ে হেলেনা রা পালিয়েছিল তা নয় তারা ইন্ডিয়াকে ভালবাসতে শিখেছিল। পোরাস সহ বীরদের সম্মান দিতে জানত। সবাই জানে পরবর্তীতে ইন্দো হেলেনারা বৌদ্ধ ধর্ম​ গ্রহণ করে। ও ইসলাম আগমনের পর মুসলমান হয়ে যায়। যারা মূল ভূখণ্ডে ছিল তারা। গ্রিস যদি কখনো বাংলার পতাকা তুলে ধরে বাঙালি ভালবেসেই গ্রিসকে জড়িয়ে ধরবে কারণ পৃথিবীতে এ দুটো জাতিই ভাবে চক্করে এক ই রকম।
  • b | 4512.139.6790012.6 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২০:৩৯368415
  • খুব ভালো হইছে। এইবার কসাক ও বাঙালীজাতির একটি সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য চাই।
  • Ekak | 90045.207.5656.9 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:২৩368416
  • ব্যপার্টা এরোকোম এন্থ্রপসেন্ট্রিক করে রেখে দেওয়া কি ঠিক হচ্চে ! কাবুলি বেড়াল বা ব্ল্যাক বেঙ্গল ছাগলের সঙ্গে বাঙ্গালির তুলনা করে কবে নাব্বে আশায় রইলুম।
  • dc | 232312.164.673423.163 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২২:৩১368417
  • সাদৃশ্য ও বৈসাদৃশ্য কিন্তু টেবিল আকারে লিখতে হয়, নাহলে নম্বর কাটা যাবে।
  • কল্লোল | 342323.191.90045.103 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২৩:৩৫368418
  • বহু বহু বাঙ্গালীর সক্রেটিসের মত টাক অছে। আর কলকাতায় গ্রীক অর্থোড্ক্স চার্চও আছে ঠিক কালীঘাটের উল্টোবাগে। তাছাড়া আমরা ছোটবেলায় দেবসাহিত্য কুটিরের ইলিয়ড আর অডিসি পড়েছি, বড় হয়ে আন্তিগোনেও দেখেছি।
  • $ | 457812.254.013412.192 | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:০১368419
  • ঠিক। টেবিল করে লিখতে হয়।
  • greek | 5678.80.1290012.128 | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২২:০৭368420
  • মেরা গ্রীক মহান
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট প্রতিক্রিয়া দিন