এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • গুজরাট দাঙ্গা, ও মহামান্য আদালত

    Sarosij
    অন্যান্য | ০২ এপ্রিল ২০১৭ | ১২৭৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Sarosij | 113.252.164.198 | ০২ এপ্রিল ২০১৭ ২০:৩৪364764
  • একটি মামলার গল্প। গল্প হলেও সত্যি। সত্যি হলেও মিথ্যে। কিন্তু মিথ্যে হলেও আজগুবি নয়। আজগুবি নয় কারণ এমনটা তো প্ৰায়েই ঘটে। রোজ কত কি ঘটে যায়, কজনেই বা খোঁজ রাখে।
    আমাদের দেশেরই একটি অঙ্গরাজ্যে প্রায় ১৫ বছর আগের এক ফেব্রুয়ারী মাসে এরকম ভাবেই ঘটে যায় এক সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। ঘটে যায় বলতেই হচ্ছে, কারণ দাঙ্গা হয়েছিল আমরা সবাই জানলেও, কে বা করা ঘটিয়েছিল তা আজও অজানা। কিন্তু, এত অজানার মাঝেও, জানা ঘটনা গুলোর মধ্যেই আসবে, ওই সময়ে ঘটে যাওয়া অসংখ্য মৃত্যুর মধ্যে, একটি। এহসান জাফরী'র নাম আমরা সবাই জানিনা হয়তো, কিন্তু তিনি ছিলেন, সেই অঙ্গরাজ্যের একজন নির্বাচিত এম.এল.এ। ওই দাঙ্গায় তারও মৃত্যু ঘটে, আরো অনেকের মতনই। মৃত্যুর পর, খুনের অভিযোগ জানাতে যান, কোনোক্রমে প্রাণে বেঁচে যাওয়া তাঁর স্ত্রী, জাকিয়া নাসিম এহেসান। তাঁর অভিযোগের কেন্দ্রে ছিলেন সেই অঙ্গরাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী সহ শাসক দলেরই আরো বেশ কিছু নেতা-মন্ত্রী। বলা বাহুল্য, তার অভিযোগ গ্রহণ করা হয়নি।। পুলিশকেও সংসার চালাতে হয়, খেয়ে-পরে বেঁচে থাকতে হয়, এই অভিযোগ গ্রহণ করলে, চাকরিতে সংশয় আসতেই পারতো, তাই তারাও দোষী নন। এমনটা আমি নই, খোদ মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট বলেছে !
    যাগ্গে, উপায়ন্তর না দেখে, পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করছেনা এবং, তদন্তের কোনো লক্ষণ তিনি দেখতে পাচ্ছেননা, এই দাবি নিয়ে বারংবার সেই অঙ্গরাজ্যের হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন, জাকিয়া নাসিম এহেসান। এসবের মাঝেই, ধীর গতিতে তদন্ত আরম্ভ এবং দুরন্ত গতিতে শেষ হয়ে যেতে, হাইকোর্টে বিফল হয়ে, মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন, জাকিয়া নাসিম এহেসান। সুপ্রিম কোর্ট তখন বিভিন্ন দক্ষ পুলিশ অফিসারদের নিয়ে একটি স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টীম বা সি.আই. টি. গঠন করে, সুপ্রিম কোর্টের তত্বাবধানেই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত আরম্ভ করতে নির্দেশ দেয়। তদন্তের ওপর নজর রাখতে, ও স্বাধীন তদন্তের স্বার্থে সুপ্রিম কোর্ট, রামচন্দ্রাম নামের একজন সিনিয়র অ্যাডভোকেট বা বরিষ্ঠ আইনজীবীকেও নিযুক্ত করে, আমিকাস-কিউরি বা কোর্টের অফিসার হিসেবে, সমস্ত সাক্ষ্য-প্রমান সংগ্রহ করে একটি পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট তৈরি করতে। সময়মাফিক কোর্টে জমা হয়, রামচন্দ্রামের রিপোর্ট। তার থেকে জানা যায়, প্রাপ্ত সাক্ষ্য-প্রমানের ভিত্তিতে সেই অঙ্গরাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের ১৫৩এ (১)(এ) ও (বি), ১৫৩বি(১)(সি), ১৬৬ এবং ৫০৫(২) ধারায় ফৌজদারি মামলা রুজু করা যায় ! এসব অপরাধের সাক্ষ-প্রমান ওই পুলিশি তদন্তের মধ্যে দিয়েই সংগ্রহ করে কোর্টে জমা দিয়েছিলেন রামচন্দ্রাম সাহেব।
    আলোচনার প্রয়োজনেই আসুন এবার বুঝে নিই স্বল্প-কথায় অপরাধগুলি ঠিক কি কি ছিল :
    ১. বক্তৃতা দিয়ে বা লিখে বা কোনো কাজের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মের ভিত্তিতে বিভেদ বা শত্রুতা তৈরি করা, ও শান্তি বিঘ্ন হতে পারে এমন কোনো বক্তৃতা দেওয়া, লেখা বা কাজ করা।
    ২. বক্তৃতা দিয়ে বা লিখে বা কোনো কাজের মধ্যে দিয়ে কোনো বিশেষ ধর্মালম্বী ব্যক্তিবর্গের ধর্মীয় অনুভূতিকে জাগ্রহ করে তুলে, অন্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সাথে বৈরিতা বা শত্রুতা তৈরি করবার চেষ্টা করা।
    ৩. সরকারি ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে, জেনে বুঝে আইন লঙ্ঘন করে, এমন কিছু করা যা সমাজে অস্থিরতা তৈরি করবে ও অন্যের ক্ষতি করবে।
    ৪. বক্তৃতা দিয়ে বা লিখে বা কোনো কাজের মধ্যে দিয়ে জেনে বুঝে গুজবের খবর ছড়িয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে ধর্মের ভিত্তিতে বিভেদ-বৈরিতা-শত্রুতা তৈরি করা।
    নানা, ধর্মের রাজনীতি আমাদের দেশে কেউ করেনা, ওসব কথা মুখে নাও 'পাপ', উচ্চারণ করলেই শাস্তি। আর, উক্ত অপরাধ গুলোর শাস্তি ? প্রমান হলে, সর্বাধিক ৩ থেকে ৫ বছরের জেল ও জরিমানা। চারটির মধ্যে তিনটি অপরাধ নন-বেলেবেল ও কোগনিজেবেল, অর্থাৎ, তদন্তের স্বার্থে এরেস্ট করতেই পারে পুলিশ।
    এক্ষেত্রে এরেস্ট কেউ হননি। কারণ ? অপরাধের সাক্ষ্য-প্রমান সহ তদন্তের রিপোর্ট সুপ্রিম কোর্টে জমা হওয়ার পর, যেহেতু শুধু মামলা রুজু হওয়া ছাড়া আর বিশেষ কিছুই বাকি ছিলোনা, তাই কোর্ট সিদ্ধান্ত নেয়, বাকি টুকু ওই স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টীম নিজেরাই করে নিতে পারবে, রামচন্দ্রাম সাহেবের আর প্রয়োজন নেই। আর তার পরেই ম্যাজিক ! স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টীমের ফাইনাল রিপোর্টে দ্যাখা যায় যে যথেষ্ট এভিডেন্স বা সাক্ষ্য-প্রমান পাওয়া যাচ্ছেনা, এবং যেটুকু পাওয়া যাচ্ছে, তা বিশ্বাসযোগ্য হচ্ছেনা ! এবং শেষ অব্দি ওই স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টীম এই সিদ্ধান্তেই আসে যে সাক্ষীর অভাবে, আজ্ঞে হ্যাঁ, শুধু সাক্ষীর ওভাবেই ওই অঙ্গরাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা রুজু করা যাচ্ছেনা !
    প্রশ্ন যথাযথ, তাহলে সেই সাক্ষ্য-প্রমান গুলো, যেগুলো জোগাড় করে কোর্টে জমা করা হয়েছিল, সেগুলো গেলো কোথায় ? সেই সাক্ষীরা নাকি, আর মুখ খুলতে চাননি, সেই পত্র-পত্রিকা নাকি আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা, মামলা রুজু করলে প্রমান করবার মতন যথাযত এভিডেন্স নাকি আর স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টীমের হাতে নেই। অন্যদিকে, প্রমান ছাড়া হরদম মামলা রুজু হচ্ছে, প্রমানের অভাবে, ২৭ বছর জেল খাটাবার পর সমস্ত অপরাধ থেকে বিনাশর্তে মুক্তি পাচ্ছে অনেকেই, এসব অজানা নয় আমাদের, কিন্তু, এই ঘটনায়, উপযুক্ত প্রমানের অভাবে, ফৌজদারি মামলা টুকুই রুজু করতে চাইলোনা পুলিশ। যেহেতু মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট তদন্ত পদ্ধতির বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে পারেনা, ও শুধু সেই কারণেই স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টীম তৈরি করা হয়েছিল, তাই, উক্ত ফাইনাল রিপোর্টই মেনে নিতে বাধ্য হয় আদালত।
    অতএব, মিডিয়া আমাদের বলে দিলো ক্লিন-চিট দিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিভাবে দিলো ? কোথায় দিলো ? কোন কাগজে লেখা আছে ? সুপ্রিম কোর্ট কি ক্লিন-চিট আদৌ দিতে পারে ? ট্রায়াল কি কখনো শুরু হয়েছিল যে ক্লিন-চিট পাওয়া যাবে ? ফৌজদারি মামলা টুকু কি রুজু হয়েছিল, যাতে ট্রায়ালটা অন্তত শুরু হতে পারে ? এসব প্রশ্ন বৃথা। আমরা সব্বাই যথারীতি ভুলে গেলাম যে, সুপ্রিম কোর্টই ওই মামলাতে উক্ত রাজ্যের সেই তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রীকে ও সেই রাজ্যসরকারকে রোমের সম্রাট নিরোর সাথে তুলনায় করেছিল। ভুলতে আর কতক্ষনই বা লাগে, আর ভুলতে আমরা ভালোই বাসি।
    তথ্যসূত্র :
    ১. Jakia Nasim Ahesan & Anr. vs. State of Gujrat and Ors. [2011 (12) SCC 302]
    ২. Report of the Amicus Curie Mr. Ramchandran, Sr. Advocate, available at :
  • Sarosij | 113.252.164.198 | ০২ এপ্রিল ২০১৭ ২০:৪২364765
  • লেখায় দু-তিনটে ভুল রয়েছে। প্রথমত, আমিকাস কিউরি হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল বরিষ্ঠ আইনজীবী রাজু রামচন্দ্রানকে। দ্বিতীয়ত, স্পেশাল ইনভেস্টিগেশন টীম কে ছোট করে, "এস. আই. টি." বলা হয়ে থাকে। এবং তৃতীয়ত, এহসান জাফরী ছিলেন, ওই অঙ্গরাজ্যেরই একজন প্রাক্তন সাংসদ। এছাড়া মূল লেখার বাকিটা অপরিবর্তিত থাকলো।
  • dc | 181.61.234.196 | ০২ এপ্রিল ২০১৭ ২০:৪৪364766
  • এই "ক্লিন চিট" নামের আজগুবি ঘোড়ার ডিমটি ভক্তকুলে অতি প্রচলিত।
  • sarosij | 113.252.164.198 | ০২ এপ্রিল ২০১৭ ২১:০৩364767
  • হাঁ, এ এক অদ্ভুত ব্যাপার।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন