এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  গপ্পো

  • এক কাল্পনিক পুস্তক বিক্রেতার গল্প

    সহস্রলোচন শর্মা
    গপ্পো | ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ | ১৪০১ বার পঠিত | রেটিং ৪.৯ (১১ জন)
  • There are people who cultivate science … without looking for fame. – A. M. Legendre


    ।। ১ : আগন্তুক ।।



    প্যারিস, ১৮০৬ সালের দ্বিতীয়ার্ধ। বিখ্যাত ফরাসি গণিতজ্ঞ এড্রিয়ান-মারি লেজানড্রার (Adrien-Marie Legendre) বাড়িতে তাঁর সাথে দেখা করতে এলেন অপরিচিত এক ব্যক্তি। লেজানড্রার হাতে একটা বই ধরিয়ে দিয়ে আগন্তুক বললেন, ‘বইটা যদি একবার পড়ে দ্যাখেন’। খানিক অবাক হয়ে লেজানড্রা জিজ্ঞাসা করলেন, ‘কি বই এটা?’ সসংকোচে আগন্তুক জানালেন, ‘আজ্ঞে, কাল্পনিক সংখ্যার (Imaginary number) উপর ... আমার নিজের কিছু মতামত’। ‘কাল্পনিক সংখ্যা!’ হালকা চমক লাগে লেজানড্রার। ‘বলে কি লোকটা! হালফিল গণিতের বেশ বিরল বিষয় এটা। লোকটাকে দেখে তো তেমন পণ্ডিত বলে মনে হয় না’ মনে মনে ভাবতে থাকেন লেজানড্রা। আগন্তুকের দিকে তীব্র অনুসন্ধানী দৃষ্টি নিক্ষেপ করে লেজানড্রা বলে উঠেন, ‘আচ্ছা, ... দেখব ক্ষণ পড়ে’। লেজানড্রার থেকে সদর্থক প্রত্যুত্তর পেয়ে আর কথা না বাড়িয়ে খুশি মনে দ্রুত স্থান ত্যাগ করেন আগন্তুক। লেজানড্রা তখন বইয়ের মলাটটা উল্টে প্রথম পাতার শিরোনামে নজর বুলাচ্ছেন : Essai sur une manière de représenter les quantités imaginaires dans les constructions géométriques (ইংরাজি : Essay on a method of representing imaginary quantities in geometric constructions)। আরে কি আশ্চর্য, লেখকের নাম কই? শিরোনামের নিচে তো কোনও লেখকের নাম ছাপা নেই! ‘আরে ও মশাই, লেখকের নাম ... !’ চোখ তুলে দেখেন সামনে তো কেউ দাঁড়িয়ে নেই। ভারি অদ্ভুত তো! লেখকের নাম নেই অথচ বই ছাপা হয়ে গেছে! এমন আবার হয় নাকি কখনও? বইটা আবার হাতে ধরিয়ে দিয়ে চলে গেল, নাম ধাম কিছু বলে গেল না! অবাক হয়ে লোকটার যাত্রা পথের দিকে তাকিয়ে রইলেন লিজানড্রা। ‘ঠিক আছে, বইটা ফেরত নিতে তো আসবে, ... আর পড়তে যখন দিয়েছে, একটা মতামত নিতে নিশ্চয় আসবে’ বিড় বিড় করতে থাকেন লিজানড্রা, ‘তখনই না হয় ওঁর নাম ঠিকানা জেনে নেব’।


    লেখকের নামহীন সেই বই। পরে, নীচের অংশে কেউ লিখেছেন, Mr Argand, rue de Gentilly. (পর্ব ৩ দ্রষ্টব্য)


    কিছুটা অনীহা নিয়েই বইটার পাতা উলটাতে থাকেন লিজানড্রা। বইটা যত পড়তে থাকেন, ততই বিস্ময়াবিষ্ট হয়ে উঠেন তিনি। কাল্পনিক সংখ্যাকে চমৎকার ভাবে জ্যামিতিক উপায়ে ব্যাখ্যা করেছেন লেখক। অভূতপূর্ব! এমন ব্যাখ্যা তো আগে কেউ কল্পনাই করতে পারেন নি। সত্যি বলতে কি, প্রথম দর্শনে লোকটা দেখে তিনিও ঠিক ঠাহর করতে পারেন নি যে এই লোকটা এমন জটিল বিষয় নিয়ে ভাবতে পারে। বইটা পড়ার পর এখন উলট কথাই ভাবতে হচ্ছে তাঁকে। এই বইটা পড়ার অভিজ্ঞতা নিয়ে পরে লিজানড্রা লিখেছেন, "At first I showed the author I was very doubtful, but I promised to read his memoir. I found contrary to my expectation, quite original ideas, very well presented, supported by a rather deep knowledge of calculation, …"। উচ্ছ্বসিত লিজানড্রা লেখকের দেখা পাওয়ার জন্য উন্মুখ হয়ে উঠেন। দিন যায়, সপ্তাহ যায়, কিন্তু সে লোক আর আসে না। মাস গড়িয়ে গেল, তাও তাঁর দেখা মেলে না। এ তো ভারি অদ্ভুত লোক! বইটা পড়তে বলে গেল, অথচ পাঠকের মতামত জানার কোনও তাগিদই নেই! কোনও তাগিদ নেই ফিরতি দেখা করার। উলটে লিজানড্রা নিজে এখন তাগিদ অনুভব করছেন। সোনার খনির থেকেও মূল্যবান সম্পদ রয়েছে যে তাঁর হাতে! এই খবরটা কাউকে না জানান পর্যন্ত স্বস্তি পাচ্ছেন না তিনি।

    দক্ষিণ-পশ্চিম ফ্রান্সের মাইন্‌জ শহরে থাকেন তাঁর বিশিষ্ট বন্ধু, গণিতজ্ঞ ফঁসোয়া যসেফ ফঁসে (François Joseph Français)। ২ নভেম্বর ১৮০৬, ফঁসেকে গোটা বইটাই পাঠিয়ে দিলেন তিনি। একটা চিঠিতে লেখক ও তাঁর রচনা সম্পর্কে দু’কলম লিখেও দিলেন। কিন্তু মজার বিষয় হল, সে লেখক আর কোনও দিনও লিজানড্রা সাথে দেখা করতে আসেন নি। লিজানড্রা আবার সেই লেখকের নাম ঠিকানা কিছুই জানেন না। ফলে বেওয়ারিশের মতো সেই বই পড়ে রইল ফঁসোয়ার কাছে।

    ঘটনার ৪ বছর পর, অক্টোবর ১৮১০ সালে মারা যান ফঁসোয়া। তখনও সেই বইয়ের লেখক বেপাত্তা। সেই বই তখনও পড়ে আছে ফঁসোয়ার দেরাজে। ফঁসোয়া মারা যাওয়ার আড়াই বছর পর, ফঁসোয়ার দেরাজে থেকে লিজানড্রার চিঠি সমেত সেই বই উদ্ধার করেন ফঁসোয়ার ভাই জাক ফ্রেদেরিচ ফঁসে (Jacques Frédéric Français)। পেশায় গণিতজ্ঞ ছিলেন জাক ফঁসেও। বইটা পড়ে তার মর্ম বুঝতে ভুল হয় নি জাকের। এতদিন ধরে গণিত চর্চা করছেন তিনি, কাল্পনিক সংখ্যা নিয়ে এমন অভিনব ব্যাখ্যার কথা তো আগে কখনও শোনেন নি! জাক বুঝতে পারেন এক অমূল্য সম্পদ রয়েছে তাঁর জিম্মায়। এই তত্ত্বকে এখনই জগতের সামনে তুলে ধরতে চান তিনি। প্যারিস থেকে তখন প্রকাশিত হতো যোসেফ ডিয়াজ জাগন (Joseph Diaz Gergonne) সম্পাদিত গণিতের নামজাদা মাসিক পত্রিকা ‘এনাল ডি ম্যাথামেটিক পিয়ো এট এ্যপ্লিকে’ (Annales de Mathématiques Pures et Appliquées)। সেপ্টেম্বর ১৮১৩, ‘এনাল’এ প্রকাশিত হল কাল্পনিক সংখ্যা নিয়ে জাক ফঁসের ১০ পাতার নিবন্ধ Nouveaux principes de Géométrie de position, et interprétation des symboles imaginaires (ইংরাজি : New Principles of Positional Geometry, and Interpretation of Imaginary Symbols)। লিজানড্রা চিঠি ও সেই বইয়ের প্রথম পাতা থেকে জাকের বিলক্ষণ জানা ছিল, গণিতের এমন যুগান্তকারী তত্ত্বের উদ্ভাবকের কোনও হদিশ নেই। নেই কোনও দাবীদারও। জাকের কাছে তাই সুযোগ ছিল সেই তত্ত্বকে নিজের আবিষ্কার বলে চালিয়ে দেওয়ার। প্রকাশনার জগতে এ তো আকছারই হয়ে থাকে। কিন্তু সে পথ মাড়ান নি জাক। নিবন্ধের শেষে ঋণ স্বীকার ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে জাক লিখলেন, “I owe it, moreover, to justice to declare that the substance of these new ideas does not belong to me. I found them in a letter from M Legendre to my late brother …”।

    এনালে জাকের নিবন্ধ প্রকাশ পাওয়ার পর, ঘটল অপ্রত্যাশিত এক ঘটনা। এনালের দপ্তরে চিঠি পাঠিয়ে এক সজ্জন জানালেন জাকের লেখা প্রবন্ধের আসল লেখক তিনি। অর্থাৎ তিনিই সেই ব্যক্তি, যিনি লিজানড্রাকে বইটা পড়তে দিয়েছিলেন। এই রচনা যে তাঁরই, তার প্রমাণ স্বরূপ রচনার মূল পাণ্ডুলিপিটা এনালের দপ্তরে প্রেরণ করেন পত্রলেখক। সেই পাণ্ডুলিপি পড়ে সম্পাদক বুঝলেন, এ তো অকাট্য প্রমাণ। না, কোনও সন্দেহ নেই যে, ইনিই সেই কাল্পনিক সংখ্যার লেখক। ৭ বছর পর কাল্পনিক সংখার সেই লেখকের হদিশ পাওয়া গেছে! মনে মনে উত্তেজনা অনুভব করতে থাকেন সম্পাদক জাগনও। কিন্তু, কে এই লেখক? কি তাঁর পরিচয়? লেখকের পাঠান সেই চিঠির নিচে দ্রুত চোখ বুলিয়ে দেখেন, চিঠির নিচে সাক্ষর করা- ‘আরগ্যান্ড’ (Argand)। আরগ্যান্ড হল একটা পদবী। ওই পদবীটুকুই শুধু লিখেছেন তিনি। পুরো নাম লেখেন নি। এরপর থেকে সারা পৃথিবীর গণিত প্রিয় মানুষের কাছে আরগ্যান্ড নামেই খ্যাত হয়ে উঠেন তিনি। তাঁর এই পদবী অনুসরণেই তাঁর সৃষ্ট কাল্পনিক তলের নাম দেওয়া হয় ‘আরগ্যান্ড প্লেন’।


    ।। ২ : ঘূর্ণন ।।


    প্রাথমিক স্তরের ছাত্রছাত্রীরাও জানেন যে 25-এর বর্গমূল হল ± 5। এবার যদি জিগ্যেস করা হয় - 1-এর বর্গমূল কত, তাহলে কিন্তু অনেকেই সেই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবেন না। কারণটা খুবই সহজ, - 1-এর বর্গমূল নির্ণয় করাই যায় না। - 1 বা যে কোনও ঋণাত্মক সংখ্যার বর্গমূল নির্ণয়ের জন্য সচেষ্ট হয়েছিলেন বহু গণিতজ্ঞই, কিন্তু কেউই এই প্রশ্নের কোনও সদুত্তরই দিতে পারেন নি। ১৫৪৫ সালে এই বিষয়ে প্রথম ইতিবাচক আলোচনা করেন ইতালিয় গণিতজ্ঞ জেরোলামো কারদানো (Gerolamo Cardano)। ওই বছর প্রকাশিত তাঁর Artis Magnae, Sive de Regulis Algebraicis (ইংরাজি: The Great Art, or The Rules of Algebra) গ্রন্থের ৩৭ নম্বর অধ্যায়ে ত্রিঘাত সমীকরণ সমাধান প্রসঙ্গে ‘৫ যোগ মাইনাস ১৫-এর বর্গমূল’ এবং ‘৫ বিয়োগ মাইনাস ১৫-এর বর্গমূল’ বাক্য দু’টো ব্যবহার করেন। কারদানোর বক্তব্যর আধুনিক ভাষ্য রূপটা হল 5 + √(- 15) এবং 5 - √(- 15) । স্পষ্টতই ঋণাত্মক সংখ্যার বর্গমূলের উল্লেখ করেছেন তিনি। এখান থেকেই ঋণাত্মক সংখ্যার বর্গমূল বা কাল্পনিক সংখ্যার ইতিহাসের সূত্রপাত। বছর ৩০ পর, ১৫৭২ সালে প্রকাশিত হয় আরেক ইতালিয় গণিতজ্ঞ রাফায়েল বোমবেল্লির (Rafael Bombelli) গ্রন্থ L'Algebra Parte maggiore dell Arimetica (ইংরাজি: Algebra, a major Part of Arithmetic)। এই গ্রন্থে কাল্পনিক সংখ্যার গুণের নিয়ম ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে তিনি যা লেখেন তার ভাবানুবাদ হল, ‘ঋণাত্মক সংখ্যার বর্গমূলের সাথে ঋণাত্মক সংখ্যার বর্গমূল গুণ করলে ওই ঋণাত্মক সংখ্যা পাওয়া যায়’। বোমবেল্লির বক্তব্যর আধুনিক ভাষ্য রূপ হল, √(- n) x √(- n) = - n। গণিতশাস্ত্রের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সূত্র এটা। কারণ, √(- n) কাল্পনিক সংখ্যা হলেও, তাদের গুণফল - n কিন্তু বাস্তব সংখ্যা। বিষয়টা যথেষ্টই প্রণিধানযোগ্য। কারণ, দুটো কাল্পনিক সংখ্যার গুণফল আর কাল্পনিক সংখ্যা থাকছে না। সেটা বাস্তব সংখ্যা হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টা আরও পরিষ্কার করে ফুটে উঠে ফরাসি গণিতজ্ঞ রেনে দেকার্তের (Rene Descartes) আলোচনা থেকে। ১৬৩৭ সালে প্রকাশিত হয় দেকার্তের গ্রন্থ La Geometrie (ইংরাজি: Geomerty)। এই গ্রন্থে কার্তেসিয় জ্যামিতি বা স্থানাঙ্ক জ্যামিতির উপস্থাপনা করেন তিনি, সহজ ভাষায় যাকে আমরা গ্রাফ বলে থাকি। স্থানাঙ্ক জ্যামিতিতে বা গ্রাফে, দুটো লম্ব অক্ষ টানা হয়, যার পরস্পরকে মূলবিন্দুতে ছেদ করে। মূলবিন্দুর উভয়দিকে সমদূরত্বে বিভিন্ন ধনাত্মক ও ঋণাত্মক সংখ্যা স্থাপন করা হয়। তাঁর সৃষ্ট এই X ও Y অক্ষ দু’টোর উপর সমস্ত সংখ্যাকে স্থান দিতে পারলেও - 1-এর বর্গমূলকে কোথাও স্থান দিতে পারেন নি। অনেক ভাবনা চিন্তার পর তিনি বললেন, - 1-এর বর্গমূল হল একটা কাল্পনিক সংখ্যা। সেই সংখ্যাকে সংখ্যারেখার ওপর স্থাপন করা যায় না বা জ্যামিতিক উপায়ে ব্যাখ্যা করা যায় না। উল্লেখ্য, দেকার্তেই হলেন প্রথম গণিতজ্ঞ যিনি 'Imaginary number' (কাল্পনিক সংখ্যা) কথাটা ব্যবহার করেন।

    দেকার্তের মতানুসারে √(- n) হল কাল্পনিক সংখ্যা এবং একে গ্রাফ কাগজে স্থাপন করা যায় না। অথচ বোমবেল্লি বলেছেন √(- n) x √(- n) = - n = বাস্তব সংখ্যা। তাহলে √(- n) x √(- n) কে তো নিশ্চয় গ্রাফ কাগজে স্থাপন করা সম্ভব। আর ঠিক এই বিষয়টা নিয়েই ধন্ধে পড়ে যান গণিতজ্ঞরা। একটাই গ্রাফে কি করে কাল্পনিক সংখ্যা আর বাস্তব সংখ্যাকে স্থান দেওয়া সম্ভব? ১৭০৭ সালে কাল্পনিক সংখ্যার তত্ত্বকে বিস্তার ঘটিয়ে বিষয়টার সাথে ত্রিকোণমিতি যুক্ত করে (cos θ + i sin θ )n –এর সূত্রটা লিপিবদ্ধ করেন ফরাসি গণিতজ্ঞ আব্রাহাম ডি মোয়েভার (Abraham de Moivre)। এর ফলে বিষয়টা আবার বেশ ভারী ও জটিল হয়ে উঠে। বিপরীতে, কাল্পনিক সংখ্যার চর্চাকে আমজনতার জন্য সহজতর তোলেন সুইস গণিতজ্ঞ লিওনহার্ড অয়লার (Leonhard Euler)। ১৭৭৭ সালে তিনিই প্রথম – 1-এর বর্গমূলকে ইংরাজি i অক্ষর দিয়ে চিহ্নিত করেন। এতে কাল্পনিক সংখ্যার যোগ-বিয়োগ-গুণ-ভাগ সহজতর হয়ে উঠে। যেমন, i + i = 2i, কিম্বা 7i - 4i = 3i ইত্যাদি। এখন আমরা বলতেই পারি, i = √(- 1) হলে i2 = - 1 হবে। এই - 1 কিন্তু বাস্তব সংখ্যা, যা সংখ্যারেখায় দিব্যি স্থাপন করা যাচ্ছে। আবার i3 = i2 x i = - 1 x i = - i = কাল্পনিক সংখ্যা, কিন্তু i4 = i2 x i2 = (- 1) x (– 1) = 1 = বাস্তব সংখ্যা। দেখা যাচ্ছে, সূচকের মান বৃদ্ধির সাথে সাথে বাস্তব ও অবাস্তব সংখ্যায় পরিবর্তিত হয় চলেছে i। in-এর বাস্তব মানগুলোকে না হয় সংখ্যারেখায় স্থাপন করা সম্ভব, কিন্তু অবাস্তব মানগুলোকে কি ভাবে সাংখ্যারেখায় স্থাপন করা যায়? আর ঠিক এই সমস্যাটারই সমাধান করে ফেলেছিলেন আরগ্যান্ড। তিনিই প্রথম যিনি একই গ্রাফ কাগজের ওপর বাস্তব এবং অবাস্তব সংখ্যাকে স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তবে আরগ্যান্ডের কাজটা কিছুটা সহজ করে দিয়েছিলেন জার্মান গণিতজ্ঞ কার্ল ফ্রেডরিচ গাওস (Johann Carl Friedrich Gauss)। কাল্পনিক সংখ্যার ইতিহাসের গোড়াতেই কারদানো 5 + √(- 15) সংখ্যাটা ব্যবহার করেছিলেন। লক্ষণীয় √(- 15) অবাস্তব বা কাল্পনিক হলেও 5 কিন্তু বাস্তব সংখ্যা। ১৭৯৭ সালে গাওস বললেন, বাস্তব ও অবাস্তব সংখ্যার সংমিশ্রণে a + ib আকারে যে সংখ্যা উৎপন্ন হয় তাকে জটিল রাশি (complex number) বলা হয়, যেখানে a ও b বাস্তব সংখ্যা কিন্তু i অবাস্তব সংখ্যা। এখানে খেয়াল রাখা প্রয়োজন, কেবলমাত্র i-কে কাল্পনিক সংখ্যা বা অবাস্তব সংখ্যা বলা হয়, বিপরীতে a + ib-কে বলা হয় জটিল রাশি।

    এই a + ib আকার বা জটিল রাশিই আরগ্যান্ডের ভাবনাকে প্রভাবিত করেছিল। আরগ্যান্ড বললেন, গ্রাফ কাগজের X-অক্ষটাকে বাস্তব অক্ষ আর Y-অক্ষটাকে অবাস্তব অক্ষ ধরা হোক আর a + ib কে কার্তেসিয় স্থানাঙ্কের মত (a, ib) ভাবা হোক। যে কোনও জটিল রাশিকে তাহলে সহজেই গ্রাফ কাগজে স্থাপন করা সম্ভবপর হবে। আরগ্যান্ড প্রস্তাবিত বাস্তব অক্ষ আর অবাস্তব অক্ষ সম্বলিত এই কাল্পনিক তলই পরবর্তীকালে ‘আরগ্যান্ড প্লেন’ নামে পরিচিত হয়।

    দেকার্তে প্রস্তাবিত কার্তেসিয় জ্যামিতিতে X-অক্ষকে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ৯০ ডিগ্রি ঘোরালে Y-অক্ষ পাওয়া যায়। আরগ্যান্ড প্রস্তাব দিলেন, ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে প্রতিটি ৯০ ডিগ্রি ঘূর্ণনের অর্থ সংখ্যাকে i দিয়ে গুণ করার সমতুল্য ধরতে হবে। X-অক্ষের ওপর 1 একক দৈর্ঘ্যকে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ৯০ ডিগ্রি ঘোরানোর অর্থ, 1 কে i দিয়ে গুণ করার সমতুল্য। অর্থাৎ 1 x i = 1i = i যা অবাস্তব সংখ্যা এবং যা Y-অক্ষ বা অবাস্তব অক্ষের ওপর অবস্থিত হবে। Y-অক্ষের ওপর অবস্থিত এই i একক দৈর্ঘ্যকে ফের ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ৯০ ডিগ্রি ঘোরানোর অর্থ i কে পুনরায় i দিয়ে গুণ করার সামিল। এবার i x i = i2 = - 1 যা বাস্তব এবং যা X-অক্ষ বা বাস্তব অক্ষের ঋণাত্মক দিকের ওপর অবস্থিত। অনুরূপে X-অক্ষের ঋণাত্মক দিকের ওপর অবস্থিত - 1 একক দৈর্ঘ্যকে ফের ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে ৯০ ডিগ্রি ঘোরানোর অর্থ - 1 কে i দিয়ে গুণ করা। এবার - 1 x i = - 1i = - i যা অবাস্তব এবং যা Y-অক্ষ বা অবাস্তব অক্ষের ঋণাত্মক দিকের ওপর অবস্থিত। পরিশেষে, Y-অক্ষের ঋণাত্মক দিকের ওপর অবস্থিত - i একক দৈর্ঘ্যকে ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে আবার ৯০ ডিগ্রি ঘোরালে - i কে ফের i দিয়ে গুণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে - i x i = - i2 = - (-1) = 1 যা বাস্তব এবং যা X-অক্ষের ধনাত্মক দিকের ওপর পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসবে, সম্পূর্ণ হবে একটা বৃত্তাকার পরিক্রমণ।


    ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে প্রতিটি ৯০ ডিগ্রি ঘূর্ণনের অর্থ সংখ্যাকে i দিয়ে গুণ করার সমতুল্য।


    কাল্পনিক সংখ্যাকে তাঁর গ্রাফে স্থান দিতে পারেন নি দেকার্তে। ৯০ ডিগ্রি ঘূর্ণনকে i দিয়ে গুণ করার সমতুল্য ধরে সেই সমস্যার সমাধান করে দিলেন আরগ্যান্ড। খুলে গেল দীর্ঘ দিন ধরে অমীমাংসিত গণিতের এক সমস্যার জট। আরগ্যান্ডের এই সমাধানকে ingenious and profound বলে আখ্যা দিয়েছেন স্কটিশ গণিতবিদ জর্জ ক্রিস্টাল। এহেন ingenious মানুষটা কিন্তু তখনও লোকচক্ষুর অন্তরালেই রয়ে গেছেন। তবে তাঁর মহিমা ছুঁয়ে গেছে প্রতিটি গণিতপ্রেমীকে। অজ্ঞাত এক গণিতপ্রেমী তাই আরগ্যান্ড কে নিয়ে গান বেঁধেছেন (প্রথম স্তবকের ভাবানুবাদ)-



    দেখেছি আরগ্যান্ড তলের মহিমার ছটা
    আমি দেখেছি ডি মোয়েভারের i ও থিটা
    বড় অনিন্দ্য প্রাণবন্ত জটিল মূল
    আর এই মাইনাস একের বর্গমূল
    জটিল রাশি কি সরল
    জটিল রাশি কি সরল
    জটিল রাশি কি সরল।

    ।। ৩ : কাল্পনিক ।।


    অবাস্তব সংখ্যা নিয়ে আরগ্যান্ডের বই প্রকাশের প্রায় ৭০ বছর পরের কথা। ১৮৭৪ সালে জটিল রাশি সংক্রান্ত যাবতীয় তত্ত্বকে একত্রিত করে চার খণ্ডের এক পুস্তক প্রকাশ করেন ফরাসি গণিতজ্ঞ গিওম-জুল উয়েল (Guillaume-Jules Hoüel)। জটিল রাশি নিয়ে এত বিস্তারিত কাজ ইতিপূর্বে কখনও হয় নি। জটিল রাশি নিয়ে কাজ করতে গিয়ে উয়েল দেখলেন, জটিল রাশির উপর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন আরগ্যান্ড। অথচ আরগ্যান্ড সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না কেউই। অবাস্তব সংখ্যার এই উপেক্ষিত নায়কের জীবনী লেখার উদ্যোগ নিলেন উয়েল। কিন্তু অনেক খোঁজাখুঁজি করেও আরগ্যান্ড সম্পর্কে কোনও তথ্যই সংগ্রহ করতে পারলেন না তিনি। আগামী প্রজন্মকে কী তবে আরগ্যান্ড সম্পর্কে কিছুই জানিয়ে যেতে পারবেন না তিনি? বিষয়টা ভেবেই খানিকটা যেন মুষড়েই পড়লেন উয়েল। সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে হঠাৎই তাঁর আমি আরগ্যান্ডের (Ami Argand) নামটা মনে পড়ে। পদার্থবিদ ও রসায়নবিদ হিসেবে পরিচিত আমি আরগ্যান্ড প্যারিসের বাসিন্দা ছিলেন। আঠেরো শতকের শেষের এক বিশেষ ধরণের ল্যাম্প প্রস্তুত করে সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। এহেন আমি আরগ্যান্ড আদতে কিন্তু ফরাসি নাগরিক ছিলেন না। আমি আরগ্যান্ডের আদি বাড়ি ছিল সুইৎজারল্যান্ডের জেনেভাতে। শিক্ষা ও কর্মসূত্রে প্যারিসে আসেন তিনি। আমি আরগ্যান্ডের নামটা মনে পড়তেই, উয়েলের মনে হল, গণিতের এই অখ্যাত আরগ্যান্ডের আদি বাড়িও জেনেভাতে হলেও হতে পারে। জেনেভাতে তাঁর অনেক বন্ধুবান্ধব থাকেন। তাঁদের কাছ থেকে আরগ্যান্ড সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে দেখা যেতেই পারে। উয়েলের এমনই এক বন্ধু হলেন এম. আর. উল্‌ফ (M. R. Wolf)। সুইৎজারল্যান্ডের বিজ্ঞানের ইতিহাস নিয়ে প্রগাঢ় পাণ্ডিত্য রয়েছে উল্‌ফের। এহেন উল্‌ফের সাথে পত্র মারফৎ সত্বর যোগাযোগ করলেন উয়েল। জানালেন, গণিতবিদ আরগ্যান্ড ও তাঁর বংশ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তিনি। উয়েলের পত্র পেয়ে আরগ্যান্ড সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে শুরু করলেন উল্‌ফ। অনেক খোঁজাখুঁজির পর জনৈক জঁ-রবার্ট আরগ্যান্ড (Jean-Robert Argand) নামের এক ব্যক্তির খোঁজ পেলেন তিনি, ১৮০৬ সাল নাগাদ যিনি প্যারিসেই থাকতেন বলে জানা যাচ্ছে। কিন্তু এই জঁ-রবার্ট আরগ্যান্ডই যে সেই গণিতবিদ আরগ্যান্ড তার তেমন কোনও নিশ্চয়তা কিন্তু পেলেন না তিনি। কারণ বহু জেনেভাবাসীই কর্মসূত্রে প্যারিসে বসবাস করতেন এবং এখনও করেন। তাঁদের অনেকেরই পদবী আবার আরগ্যান্ড। তবু, যেটুকু তথ্য সংগ্রহ করতে পেরেছেন, সেই তথ্যটুকুই উয়েলকে পাঠিয়ে দিলেন তিনি। সাথে এটা জানাতে ভুললেন না যে, এই তথ্য কিন্তু সংশয়হীন নয়।

    আরগ্যান্ডের জীবনী প্রকাশ করতে তখন যেন বদ্ধপরিকর ছিলেন উয়েল। ফলে উল্‌ফের পাঠানো সেই তথ্যকে প্রামাণ্য বলে ধরে নিলেন তিনি। ১৮৭৪ সালে অবাস্তব সংখ্যা নিয়ে আরগ্যান্ডের লেখা মূল পুস্তিকাটা পুনঃপ্রকাশ করলেন উয়েল। সেই বইয়ের শুরুতে ১২ পাতার এক মুখবন্ধ সংযোজন করেন তিনি। সেই মুখবন্ধের শেষ দুটো অনুচ্ছেদে মাত্র ২২ লাইনের মধ্যে আরগ্যান্ডের জীবনী লিপিবদ্ধ করলেন। উয়েল লিখিত আরগ্যান্ডের সেই জীবনীর সারাংশ এই রকম :

    ১৮ জুলাই ১৭৬৮ সালে জেনেভায় জন্মগ্রহণ করেন জঁ-রবার্ট আরগ্যান্ড। তাঁর বাবার নাম জাক আরগ্যান্ড ও মায়ের নাম ইভ কানাক। পেশাগত ভাবে একজন একাউন্টটেন্ট ছিলেন জঁ-রবার্ট আরগ্যান্ড। গণিত চর্চা ছিল তাঁর নেশা। ১৮০৬ সালের আগেই প্যারিসে চলে আসেন আরগ্যান্ড। এখানে একটা বইয়ের দোকান খোলেন তিনি এবং প্যারিসেই পরিবার নিয়ে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন। পরিবার বলতে, আরগ্যান্ডের এক পুত্র এবং এক কন্যা সন্তানের কথা জানা যায়। তাঁর পুত্রের নাম জানা যায় না। তাঁর মেয়ের নাম জান-ফঁসোয়া-দোহুথি-মারি-এলিসাবেথ আরগ্যান্ড। জার্মানির স্টুটগার্ট শহরের জনৈক ফেলিক্স বুসকেটকে বিবাহ করেন এলিসাবেথ। প্যারিস শহরেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন গণিতজ্ঞ জঁ-রবার্ট আরগ্যান্ড।

    এই পর্যন্ত উল্লেখ করা তথ্যগুলো উলফের কাছ থেকে সংগ্রহ করেছিলেন উয়েল। এরপর নিজের এক সূত্র উদ্ধৃত করে উয়েল জানাচ্ছেন, ১৮১৩ সাল নাগাদ প্যারিসের দক্ষিণ শহরতলির ১২ রুই ডি জঁতিই (rue de Gentilly) তে থাকতেন আরগ্যান্ড। সেই সময়ে ‘এনাল’ পত্রিকার সম্পাদক জাগনের কাছে যে মূল পাণ্ডুলিপিটা পাঠিয়েছিলেন আরগ্যান্ড, সেই পাণ্ডুলিপিতে স্বহস্তে নিজের বাড়ির এই ঠিকানা লিখে দিয়েছিলেন বলেই জানালেন উয়েল।

    উয়েল লিখিত এই ছত্রকটাই আজ পর্যন্ত পাওয়া আরগ্যান্ডের একমাত্র জীবনী। গত ১৫০ বছর ধরে এই জীবনীটাই প্রশ্নাতীত ভাবে সর্বত্র গৃহীত ও প্রচারিত হয়েছে। ১৯৯০ সাল নাগাদ আরগ্যান্ডকে নিয়ে পুনরায় তদন্তে নামেন জার্মান গণিত-ইতিহাসবিদ গার্ট শ্চুবরিং (Gert Schubring)। না, আরগ্যান্ড সম্পর্কে নতুন কোনও তথ্যই সামনে আনতে পারেন নি শ্চুবরিং। তবে একটা বিষয়ে তিনি নিশ্চিত করলেন আমাদের। আরগ্যান্ডের জীবনীর যেটুকু অংশ আমরা জানতে পেরেছি, তা প্রমাণ সাপেক্ষ। তিনি বললেন- ‘these few known data seem to be doubtful’। অন্য কিছু গবেষকরা আবার আরগ্যান্ডের জন্মসাল নিয়ে প্রশ্ন তুললেন। তাঁরা বললেন, উয়েলের বক্তব্য অনুসারে ১৭৬৮ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন আরগ্যান্ডের। সেই হিসেবে ১৮০৬ সালে তাঁর বয়স দাঁড়ায় ৩৮ বছর। ১৮০৬ সালেই লিজানড্রার সাথে দেখা করেছিলেন আরগ্যান্ড। ফঁসোয়া যসেফ ফঁসেকে লেখা তাঁর চিঠিতে আরগ্যান্ডকে ‘ইয়ং’ বলে বর্ণনা করেছেন লিজানড্রা। গবেষকরা প্রশ্ন করেন, ৩৮ বছরের কোনও মানুষকে দেখে কি ‘ইয়ং’ বলে মনে হতে পারে? এই প্রশ্নটাকে সামনে রেখেই কিছু গবেষক মনে করেন আরগ্যান্ডের জন্মসালটা আদৌ সঠিক নয়। সঠিক নয় জন্মদিনটাও। এই সমস্ত দোলাচলের মধ্যে আরগ্যান্ড সম্পর্কে একটা মতামত ক্রমেই প্রবল হতে থাকে। সেই মতানুসারে, গণিতবিদ আরগ্যান্ড আর উয়েল উল্লিখিত জঁ-রবার্ট আরগ্যান্ড মোটেও এক ব্যক্তি নন। না তিনি কোনও একাউন্টটেন্ট ছিলেন, না তিনি ছিলেন কোনও পুস্তক বিক্রেতা। তাঁর ঘর-বাড়ি, ছেলে-মেয়ে সম্পর্কে কোনও তথ্যই গ্রহণযোগ্য নয়।

    বোঝো কাণ্ড! আরগ্যান্ড সম্পর্কে যেটুকু তথ্য আমরা জানতাম সেটাও নাকি ভুলে ভরা! তাহলে আরগ্যান্ড সম্পর্কে আমরা কি কিছুই জানি না? জবাবে গবেষকরা বললেন, হ্যাঁ জানি তো। ১৮০৬ থেকে ১৮১৩ সাল পর্যন্ত প্যারিসে থাকতেন আরগ্যান্ড। এই সময়কালের আগের ও পরের তথ্য সমূহ প্রমাণ সাপেক্ষ। ১৮০৬ সালে কাল্পনিক সংখ্যা নিয়ে তাঁর মতামত লিপিবদ্ধ করেন আরগ্যান্ড। নিজের উদ্যোগে গুটিকয়েক বই ছাপিয়ে ছিলেন তিনি। অল্প কয়েকজনের মধ্যে বণ্টন করেছিলেন সেই বইগুলো। সেই বইয়ের এক কপি পড়তে দিয়েছিলেন লিজানড্রাকে। লিজানড্রা একবার মাত্র চাক্ষুষ করেছিলেন আরগ্যান্ডকে। লিজানড্রা ছাড়া তেমন আর কেউই আরগ্যান্ডকে প্রত্যক্ষ করেন নি। তাঁকে চিনতেন না প্রায় কেউই। এবং আজও তাঁকে চেনেন না কেউই। অথচ তিনিই আমাদের চিনিয়ে দিয়ে গেলেন ‘আরগ্যান্ড প্লেন’। তাঁর সৃষ্ট এই কাল্পনিক তলের মতোই তাঁর জীবনীর অধিকাংশ ঘটনাই যেন কাল্পনিক। তাঁর জীবনের কিছুটা অংশ X-অক্ষের মতো বাস্তব আর কিছুটা অংশ Y-অক্ষের মতো কাল্পনিক। ধরা দিয়েও বাস্তব জগতের কাছে অধরাই রয়ে গেলেন কাল্পনিক পুস্তক বিক্রেতা আরগ্যান্ড।


    – i –

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • গপ্পো | ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ | ১৪০১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • dc | 2401:4900:1f2b:b0c2:7c45:ef34:5e22:a096 | ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২০:৪৭527743
  • অসাধারন, দুর্দান্ত লেখা। বহুদিন গুরুতে এতো ভালো লেখা পড়িনি। আর্গান্ড প্লেন কলেজে পড়েছিলাম, তখনও আমার ব্যাপারটা খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছিল। অথচ আরগান্ড এর সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। লেখককে অনেক ধন্যবাদ এই লেখাটার জন্য। আর পড়ে তো মনে হচ্ছে আর্গান্ডকে নিয়ে রীতিমতো সাই ফাই গল্প লেখা যায়! 
     
    কবিতাটা কি সহস্রলোচনবাবুর নিজের অনুবাদ? ব্যপক হয়েছে!! 
  • শুভদীপ | 2402:3a80:1132:75e4:d4ef:91ff:fe1e:e77d | ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:৫৬527744
  • বেশ ভালো। আমরা সাধারণত অয়লার, গাওসের মত মানুষজনের কথা শুনি, কিন্তু আরগ্যান্ডের মত অঙ্কের দুনিয়ার আরও অনেকের কথা শুনতে চাই ।
  • সমরেশ মুখার্জী | ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ২৩:৩৮527745
  • একটি জটিল গাণিতিক বিষয় সুন্দর ভাবে পেশ করেছেন সহস্রলোচনবাবু ওরফে প‍্যালারাম‌বাবু (ঠিক তো?)। তেমনি আকর্ষণীয় সেই ইলিউসিভ মানুষ‌টি - আরগ‍্যান্ড। কেন যে তিনি লোকচক্ষুর অন্তরালে রয়ে গেলেন - কে জানে।
     
    তেমনি নমস‍্য জাক ফঁসে। কারণ সুযোগ থাকা সত্ত্বেও তিনি আরগ‍্যান্ডের কাজ নিজের নামে ছাপিয়ে দেন নি। এই মুহূর্তে মনে পড়ছে না তবে শুনেছি বিখ্যাত কিছু বিজ্ঞানীরাও তাঁদের অধীনে গবেষণা‌রত ছাত্রদের আইডিয়া / কাজ নিজের নামে গবেষণা‌পত্রে প্রকাশ করতে কুণ্ঠিত বোধ করেন না। তাই জাক প্রণম‍্য।
  • সমরেশ মুখার্জী | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০০:৫৭527747
  • সহস্রলোচনবাবু,

    বিখ্যাত বিজ্ঞানীর তাঁর ছাত্র বা সহকারী‌র কৃতিত্ব নিজের নামে চালিয়ে দেওয়ার একটি ঘটনা মনে পড়েছে - তিনি আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু। সেপ্টেম্বর ২০২২এ শংকরের একটি লেখা পড়ে খুব অভিভূত হয়ে বিশদে সেই লেখার পাঠ অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছি‌লাম মুষ্টিমেয় কজন বন্ধু‌কে। আপনার লেখায় জাক ফঁসের নৈতিকতার পরিচয় পেয়ে শংকরের লেখায় তার বিপরীত চিত্রটি মনে পড়ে গেল। তার জন‍্য অবশ‍্য বৈজ্ঞানিক হিসেবে আচার্য বসুর  কৃতিত্ব কিছুমাত্র কমে না কিন্তু মানুষ হিসেবে তাঁর চরিত্রে ঐ সংকীর্ণতার দিকটি জেনে খারাপ লেগেছিল। সেই পাঠ অভিজ্ঞতা‌টি বড়। তাই এখানে দে‌ওয়ার বদলে সেটা একটু সংক্ষেপিত করে একটা লেখা হিসেবে আমার ব্লগে পোষ্ট করলাম - শিরোনাম : “শংকরভাষ‍্যে বশীবন্দনা”। ইচ্ছে হলে, সময় পেলে পড়বেন।
     
  • Arindam Basu | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০২:৪৬527750
  • ভারি সুন্দর লেখাটা | বিশেষ করে আরগাণ্ড বা কমপ্লেক্স প্লেনের এমন সুন্দর সহজ ব্যাখ্যা আগে কোথাও পড়িনি। 
  • dc | 2401:4900:1cd1:9fe:f846:737:cdcf:9206 | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:২৬527752
  • আরগাণ্ড সম্বন্ধে আরেকটু পড়ে দেখলাম, উনি ফান্ডামেন্টাল থিওরেম অফ অ্যালজেব্রারও প্রথম রিগোরাস প্রুফ বার করেছিলেন, কিন্তু এখানেও ওনার নাম বেরোয়নি। কচি একটা বই ছাপিয়েছিলেন ১৮২১ সালে, সেখানে আরগাণ্ড এর প্রুফ ছিল কিন্তু নাম ছিল না। আর সেই সময়ে, মানে ১৮১৬ সালে, গস এই থিওরেম এর কিছু ইনকমপ্লিট প্রুফ বার করেছিলেন, যার জন্য এখন এটাকে ডি'অ্যালেমবার্ট-গস থিওরেম ও বলা হয়। 
     
    তবে সবচাইতে বড়ো কথা, এই ম্যাথামেটিশিয়ানটি সব জায়গায় নিজের নাম হিসেবে শুধু "আর্গান্ড" ব্যবহার করেছেন, কোথাও পুরো নাম লেখেন নি। কাজেই "আর্গান্ড" তাঁর ছদ্মনামও হতে পারে। ভারি ইন্টারেস্টিং ব্যপার! 
  • | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৫৬527754
  • লেখাটা যে ক্কি ভাল কি ভাল। 
    খুব ইন্টারেস্টিং মানুষ এই আরগ্যান্ড।
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:১৮527766
  • দুর্দান্ত লাগল আর্গন্ড এর গল্প। ভাবা যায়, কাল্পনিক সংখ্যা নিয়ে কাজ করতেন যে গণিতবিদ, তাঁর জীবন কাহিনীই প্রায় কাল্পনিক ! 
  • Sahasralochan Sharma | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:৪৪527775
  • এত পাঠক যে লেখাটা পড়লেন, এটাই আমার পাওনা। ধন‍্যবাদ জানাই প্রত‍্যেকে। আর তাঁদের মতামত পাওয়া তো আমার আগামী লেখার প্রেরণা। 

    dc| 2401 ... , হ‍্যাঁ কবিতাটা আমিই অনুবাদ করেছি। তবে আরগ‍্যান্ড সম্পর্কে আরও কত দিক তুলে ধরে আপনি তো আমায় লজ্জায় ফেলে দিলেন মশাই। ছদ্মনাম ব‍্যাপারটা তো ভেবেই দেখিনি। সেভাবে উল্লেখও পাই নি কোথাও। আপনার উল্লেখ করা বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ। 

    অরিন্দম বাবু : অনেকের কাছে পর্ব ২ এ উল্লিখিত ঘূর্ণনের গাণিতিক ব‍্যাখ‍্যাটা অস্বস্তিকর মনে হতে পারে ভেবে পর্ব ২ টা বাদ দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। fb তে share করে সেই রকমই লিখেছি। পরে ভাবলাম, তাতে আরগ‍্যান্ডের জীবন বর্ণনা করা হলেও, তাঁর কর্মই বাদ চলে যাচ্ছে। কিছু গণিতপ্রেমীর কথা ভেবে এবং আরগ‍্যান্ডকে সম্পূর্ণ রূপ দিতেই পর্ব ২ রেখে দিলাম। আপনার মন্তব‍্য পড়ে মনে হল, ভুল সিদ্ধান্ত নিই নি। 

    সমরেশ বাবু : টেনিদার প‍্যালারামের কথা বলছেন ? জটিল রাশির থেকেও জটিল ধাঁধাঁয় ফেললেন মশাই। সেই প‍্যালার সাথে আমার কোনও মিল বা অমিল কিছুই তো খুঁজে পাচ্ছি না। না কি অন‍্য প‍্যালার কথা বললেন ? দেখি আরও ভেবে,প‍্যালা ধাঁধার সমাধান করতে পারি কি না। .... কুম্ভীলকবৃত্তি অতি প্রাচীন পন্থা। না, জগদীশচন্দ্র বসুর ঘটনাটা জানা ছিল না। তবে জগদ্বিখ্যাত চার দিকপাল মনীষীর কুম্ভীলকবৃত্তি নিয়ে আকর্ষণীয় দু'টো কাহিনী জানি, যাকে সম্পূর্ণ রূপদান করে দু'টো পৃথক প্রবন্ধ রচনার ইচ্ছা আছে।
  • dc | 171.79.58.83 | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:৫১527776
  • সহস্রলোচনবাবু, আরগান্ড ছদ্মনাম হতে পারে, সেটা এখানে পড়লামঃ 
     
     
     
    We must add one last note to this, necessarily rather unsatisfactory, biography of Argand. His letters and published work all appear under the name Argand with no other names. This would look to us more like a non-de-plume that the actual name of the author. Of course, if this is true, it would mean that any attempt to identify Argand in future would be made even more difficult (probably impossible).
     
  • সমরেশ মুখার্জী | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৪৮527778
  • সহস্রলোচনবাবু
     
    আমি বয়সে প্রবীণ (৬৩+) হলেও গুরুতে নবীন। মাত্র বছর পাঁচেক সেথায় আনাগোনা আমার। সেপ্টেম্বর ২০২৩ এর আগে ওখানে কিছু লিখিও নি, কারুর লেখায় কোনো মন্তব্য‌ও করিনি। ভাটিয়ালি‌তে হয়তো অক্টোবর থেকে মাঝে মাঝে চোখ রাখি। তবু ভাটলিং এবং পুস্তকের প্রচার থেকে ক্রমশ কিছু নিকের নানা রূপ বা কখনো স্বরূপ‌ও উদ্ঘাটিত হচ্ছে।

    তো ১২.৩.২৩ এ্যান্ডর ( &/ ) লিখলেন - “সহস্রলোচন শর্মা নামে কি প‍্যালারাম‌ই লেখেন?”

    জবাবে প‍্যালারাম লিখলেন - “আজ্ঞে, আমি ঐ এক নামেই লিখি”।

    এর পরেও কী সহস্রলোচনবাবু‌র “প‍্যালারাম” উল্লেখ জটিল ধাঁধা বলে মনে হচ্ছে? 


     
  • | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২১:৫৫527781
  • "আমি ওই এক নামেই লিখি'  এর বাংলা মানে আমি তো বুঝি  ওই এক প্যালারাম নামেই লিখি অন্য কোন নিকে নয়।  
  • প্যালারাম | ১৯ জানুয়ারি ২০২৪ ২২:১৬527783
  • বেমক্কা আইডেন্টিটি ক্রাইসিস দেখে খুবই লজ্জিত। পোষ্কার করে বলি,আমি প্যালারাম, ওরফে বলরামের গদা, ওরফে নারায়ণ। আমি সহস্রলোচন শর্মা নই। 
    ক্ষমা !
    তবে এই ফাঁকে একটা নতুন লেখা পড়ে ফেললাম yes
  • সমরেশ মুখার্জী | ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ০০:২৭527790
  • এবার বোঝা গেল:

    (প‍্যালারাম)  Not =  (সহস্রলোচন শর্মা)

    সুতরাং আমার ভুল হয়েছে। 

    অত‌এব সহস্রলোচনবাবু‌কে অযথা ধাঁধায় ফেলা‌র জন‍্য মার্জনা‌প্রার্থী।
     
  • Prabhas Sen | ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:৪৮527803
  • আরগ্যান্ড থেকে সহস্র লোচন হয়ে প্যালারাম! জটিল রাশি নিয়ে এই সুখপাঠ্য রচনার লেখকের নাম নিয়ে বেশ জটিল সমস্যার উদ্ভব দেখছি।
  • dc | 171.79.50.20 | ২০ জানুয়ারি ২০২৪ ১০:২৯527807
  • একদম! ইম্যাজিনারি নম্বর নিয়ে কিছু করতে গেলেই দেখছি জটিলতা বেড়ে যায়! laugh
  • Ranjan Roy | ২৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৬:৫৮527928
  •   সহস্রলোচন  ,
    আপনি পর্ব 2 বাদ দিলে লেখার ওজন এবং সেটি পাঠ করার আনন্দ অনেক কমে যেত।
     আপনার লেখায় ইমাজিনারি নাম্বার এর মত দুরূহ বিষয় বেশ প্রাঞ্জল হয়েছে।  
       আরো লিখুন,  প্লীজ। 
  • নিরমাল্লো | ২৭ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:১০527972
  • বেশ লাগলো। অর্গান্ড-এর ইতিহাসটা জানতাম না আগে।
  • Sahasralochan Sharma | ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:২৭527989
  • পাঠকের মতামত আগ্ৰহ নিয়েই পড়ছি। প্রত‍্যেককেই পৃথকভাবে ধন‍্যবাদ জানাই। এক্ষেত্রে অ্যাডমিনের কাছে কয়েকটা সমস‍্যা ও তার প্রতিকারের সাম্ভাব‍্য উপায় প্রস্তাব আকারে রাখছি।  
    1) এই যে আমি মতামত রাখছি, সেটা কিন্তু মন্তব‍্য লেখার সময় অনুসারে নিরমাল্লো বাবুর (শেষ মন্তব‍্যকারী) মন্তব‍্যর পর প্রকাশিত হবে। এমনকি আমি যদি শুধুমাত্র (উপরের) প্রভাস সেনকে ধন‍্যবাদ জানাতে চাই, সেটাও প্রকাশ পাবে নিরমাল্লো বাবুর পরে। ফেবু অনুসরণে বলি, প্রভাস বাবুর মন্তব‍্যর নীচে, তাঁর মন্তব‍্যর পরিপ্রেক্ষিতে অন‍্যান‍্য মন্তব‍্যগুলো প্রকাশ পেলে ভালো হয়। 
    2) বারংবার শুষ্ক ধন‍্যবাদ জানানোর বদলে, স্বীকৃতিমূলক উদ্ধত বৃদ্ধাঙ্গুলি (
  • Sahasralochan Sharma | ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:২৮527990
  • পাঠকের মতামত আগ্ৰহ নিয়েই পড়ছি। প্রত‍্যেককেই পৃথকভাবে ধন‍্যবাদ জানাই। এক্ষেত্রে অ্যাডমিনের কাছে কয়েকটা সমস‍্যা ও তার প্রতিকারের সাম্ভাব‍্য উপায় প্রস্তাব আকারে রাখছি।  
    1) এই যে আমি মতামত রাখছি, সেটা কিন্তু মন্তব‍্য লেখার সময় অনুসারে নিরমাল্লো বাবুর (শেষ মন্তব‍্যকারী) পর প্রকাশিত হবে। এমনকি আমি যদি শুধুমাত্র (উপরের) প্রভাস সেনকে ধন‍্যবাদ জানাতে চাই, সেটাও প্রকাশ পাবে নিরমাল্লো বাবুর পরে। ফেবু অনুসরণে বলি, প্রভাস বাবুর মন্তব‍্যর নীচে, তাঁর মন্তব‍্যর পরিপ্রেক্ষিতে অন‍্যান‍্য মন্তব‍্যগুলো প্রকাশ পেলে ভালো হয়। 
    2) বারংবার শুষ্ক ধন‍্যবাদ জানানোর বদলে, স্বীকৃতিমূলক উদ্ধত বৃদ্ধাঙ্গুলি (
  • Sahasralochan Sharma | ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:৩১527991
  • পুরো লেখাটা দেখাচ্ছে না কেন বুঝলাম না। লেখার পরবর্তী অংশ এখানে যুক্ত করলাম।

    2) বারংবার শুষ্ক ধন‍্যবাদ জানানোর বদলে, স্বীকৃতিমূলক উদ্ধত বৃদ্ধাঙ্গুলি (
  • Sahasralochan Sharma | ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:৩৪527992
  • যাঃ এবারও হল না। 
  • Sahasralochan Sharma | ২৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১৩:৩৬527993
  • পাঠকের মতামত আগ্ৰহ নিয়েই পড়ছি। প্রত‍্যেককেই পৃথকভাবে ধন‍্যবাদ জানাই। এক্ষেত্রে অ্যাডমিনের কাছে কয়েকটা সমস‍্যা ও তার প্রতিকারের সাম্ভাব‍্য উপায় প্রস্তাব আকারে রাখছি।  
    1) এই যে আমি মতামত রাখছি, সেটা কিন্তু মন্তব‍্য লেখার সময় অনুসারে নিরমাল্লো বাবুর পর প্রকাশিত হবে। এমনকি আমি যদি শুধুমাত্র (উপরের) প্রভাস সেনকে ধন‍্যবাদ জানাতে চাই, সেটাও প্রকাশ পাবে নিরমাল্লো বাবুর পরে। ফেবু অনুসরণে বলি, প্রভাস বাবুর মন্তব‍্যর নীচে, তাঁর মন্তব‍্যর পরিপ্রেক্ষিতে অন‍্যান‍্য মন্তব‍্যগুলো প্রকাশ পেলে ভালো হয়। 
    2) বারংবার শুষ্ক ধন‍্যবাদ জানানোর বদলে, স্বীকৃতিমূলক উদ্ধত বৃদ্ধাঙ্গুলি বা smiley ব‍্যবহারের ব‍্যবস্থা করতে পারলে কেমন হয় ? 
    3) Refresh করলেই site এবং নির্দিষ্ট page , দু'টো ক্ষেত্রেই 'পঠিত' সংখ‍্যা বেড়ে যাচ্ছে। এতে একটা false interpretation তৈরি হচ্ছে। 
    4) একই ব‍্যক্তি (with same ip) site বা pageএ বারংবার প্রবেশ করলে 'পঠিত' সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ‍্যে (ধরা যাক 5 min বা অন‍্য কিছু একটা) একই ব‍্যক্তির একাধিকবার প্রবেশ করাটা 'পঠিত' সংখ‍্যা হিসেবে গণ‍্য করাটা কি ঠিক হবে ? পাঠক কী বলেন ?

    এক্ষেত্রে, IT Technical সমস্যাগুলো অবশ‍্য জানা নেই আমার। তাই হয়তো একটু কাঁচা মন্তব‍্য করে ফেললাম। তবে ইচ্ছাগুলো কিন্তু এক্কেবারে পাকা।
  • Ekak | 103.157.36.71 | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:৫৬528274
  • দুর্দান্ত আলোচনা ! পড়ার পর , এগুলো সব ফেভারিট করে রাখছি। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক প্রতিক্রিয়া দিন