এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  অন্যান্য  মোচ্ছব

  • সুড়সুড়ি ঝর্ণা‌র জলে

    Samaresh Mukherjee লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্যান্য | মোচ্ছব | ০২ অক্টোবর ২০২৩ | ৩৬৭ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  •    এ লেখার শিরোনামে‌ আছে আমার প্রিয় লেখক সুনীলের "সুদুর ঝর্ণা‌র জলে" উপন্যাসের সুস্পষ্ট মিল। তবে পূজাসংখ‍্যায় প্রকাশিত ঐ  উপন্যাস‌টি যে ব‌ইয়ের অন্তর্ভুক্ত - (ছবির দেশে কবিতা‌র দেশে) - সেটির প্রথম পর্বে ছিল ঐ মেদুর রোমান্টিক‌তায় মাখামাখি সুখপাঠ্য আখ‍্যানটি। দ্বিতীয় পর্বে ছিল অনবদ‍্য লেখনী‌তে মনোরম ভ্রমণ অভিজ্ঞতার সাথে ফরাসি দেশের কবিতা, চিত্রশিল্প নিয়ে ঋদ্ধ আলোচনা। আর এটা একটি সরল, তরল স্মৃতি‌চারণ।

       সম্বলপুর রৌরকেলা রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পে ১৯৯২এর অক্টোবর থেকে ৯৭এর মার্চ - সাড়ে চার বছর - ওড়িশার সুন্দরগড়ে ছিলাম। তখন ওখানে কিছু আকর্ষণীয় মানুষের সাথে পরিচয় হয়েছিল। দীর্ঘ সময়ের ব‍্যবধানে, নানান ঘটনাচক্রে আজ আর কারুর সাথে‌ই তেমন যোগাযোগ নেই। কয়েকটি নম্বর কেবল কোমায় পড়ে আছে ফোনে। তবে ওখানে থাকার সময় কয়েকজনের বৈশিষ্ট্য, কিছু দলবদ্ধ ভ্রমণ‌ অভিজ্ঞতা, অনেক আকর্ষণীয় ঘটনা আজ‌ও স্মৃতি‌তে রয়ে গেছে অমলিন। 

        ভ্রাতৃপ্রতিম সুদীপের সাথে সুন্দরগড়ে আসার আগেই আলাপ হয়েছিল L&T তে চাকরি পেয়ে মধ‍্যপ্রদেশের বলোদাবাজারে টাটা সিমেন্ট প্ল‍্যান্ট নির্মাণ প্রকল্পে। তখন ছত্তিশগড় হয়নি। সমবয়সী ইঞ্জিনিয়ার দেবজ্যোতির সাথে আলাপ হলো সুন্দর‌গড়ে এসে। ওখানে থাকতে‌ই ওর বিয়ে হলো দেবলীনার সাথে। পরিচয় গাঢ় হলে কারুর ডাকনাম দেওয়া আমার স্বভাব। পরে সম্পর্ক ফিকে হয়ে গেলে সম্বোধনে ফিরে আসে মূল নাম, কখনো কোনো নামেই ডাকার তাগিদ‌ ফুরোয়। আমি ওদের নাম দিয়েছিলাম দ‍্যাবা ও দেবী। দেবী ছিল প্রাণোচ্ছল মেয়ে। হুল্লোড় করার কোনো ছুতো পেলে হয়, সে সবার আগে এক পায়ে খাড়া। বিয়ে করে ঘোর সংসারী হয়ে ন‍্যাতাজ‍্যাবড়া হ‌ওয়া ওর ঠিকুজিতে ছিল না। সেটা সুন্দরগড় ছেড়ে চলে আসার তেরো বছর পরে বরোদা‌তেও দেখেছি‌লাম। তখন‌ও সুন্দর‌গড়ের নানা স্মৃতি নিয়ে।নাড়াচাড়া হয়েছে।

       প্রায়ই বিকেলে ঘরে তালা দিয়ে বাড়িওলা‌কে কিছু না জানিয়ে আশপাশে এর তার বাড়ি আড্ডা মারতে চলে যেতো দেবী। দ‍্যাবার সাইট থেকে বাড়ি ফিরতে সাধারণত সন্ধ্যা পেরিয়ে যেতো। তবে কোনোদিন তাড়াতাড়ি ফিরে এলে দরজায় তালা দেখে বাড়ি ঢুকতে পেতো না। আর একটা চাবি রাখলেও পারতো দ‍্যাবা। সেও একটু কাছাখোলা, বিনদাস। তাই রাখেনি। তখন মোবাইল আসে নি। ল‍্যান্ডলাইন‌ও বিরল। তাই ছাড়তে আসা সাইটের জীপ নিয়ে সে চেনা‌জানা বাড়িতে ঢুঁ মারতে যেতো দেবী‌র খোঁজে। সুন্দরগড় জায়গা‌টা ছোট তবু তার‌ই মধ‍্যে আমাদের বাড়ি‌টা ছিল  একান্তে ডেঙ্গিবাড়ি এলাকায়। কোম্পানির বাকি সব লোকজন থাকতো শহরের মাঝে ভারতী ভবন এলাকায়, প্রায় পৌনে কিমি দুরে। 

        আমার তখন অফিসে কাজ। মাসের শেষে বিলিংয়ের সময় না হলে আমি ছটা নাগাদ বাড়ি চলে আসতাম। এমন‌ও হয়েছে দু চার বাড়িতে ঢুঁ মেরে দেবী‌কে না পেয়ে ক্লান্ত দ‍্যাবা আমাদের বাড়ি এসে আমায় দেখে জীপ ছেড়ে দিয়ে বৌকে বলেছে, বৌদি চা খাওয়ান।  তিনজনে ছাদে চায়ের কাপ নিয়ে আড্ডা জমি‌য়েছি। দ‍্যাবা রসিক আড্ডা‌বাজ। আড্ডার ঘোরে ঘরে ফেরা মাথায় উঠেছে। 

       রান্না‌তে‌ দেবী ছিল ভজহরি মান্নার মহিলা সংস্করণ। একদিন দ‍্যাবা আমাদের বাড়িতে নেমন্তন্ন খেতে এসে দেবী‌র সামনেই গম্ভীর মুখে বলে, জানেন বৌদি, সেদিন না দেবী পরমান্ন করেছি‌ল। বৌমণি আগ্ৰহ নিয়ে বলে, ওমা তাই, কীসের পায়েস? দ‍্যাবা বলে, চালের‌ই পায়েস,  তবে প্রথম চামচ মুখে দিয়েই …। বাঞ্ছিত এফেক্টের জন‍্য দ‍্যাবা একটু মেজারড্ পজ নেয়। বৌমণি বলে, কী হোলো? দ‍্যাবা বলে, মোক্ষম সংলাপ বলার সময় অজয় দেবগণের ঘাড়টা যেমন একদিকে হেলে যায়, আমার ঠোঁটদুটোও তেমনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত রুগীর মতো একদিকে বেঁকে গেল। বৌ বলে, ওমা সে কী! কেন? আর বলেন কেন। সেদিন ও অভিনব নোনতা পায়েস রেঁধেছিল। দ‍্যাবা‌র বলার ভঙ্গিতে আমরা দুজনে অট্টহাস‍্য চাপতে পারি না। দেবী‌ও হাসছে এবং এতটুকু অপ্রস্তুত না হয়ে বলে, আমার কী দোষ বলতো বৌদি, দ‍্যাবা‌ রান্নাঘরে গিয়ে কখন চিনি নিয়ে সে জায়গায় নুনের শিশি রেখে দিয়ে‌ছে আমি জানি না। দুটো শিশি এক‌ই রকম দেখতে। তাই গুলি‌য়ে গেছে। ব‍্যাটাছেলের রান্নাঘরে গিয়ে ঘুরঘুর করার কী দরকার তুমি‌ই বলো? আমায় বললেই হতো। 

         দ‍্যাবাও ছাড়বে না, নির্বিকার মুখে রসিয়ে রসিয়ে এ্যাক্টো করে বলে, তো শুনুন না বৌদি, তারপর কী হলো। সেই নোনতা পায়েসে প্রচুর চিনি আর একটু জল ঢেলে ওভেনে নেড়ে ঘেঁটে ও যেটা দাঁড় করালো সেটা‌র স্বাদ বাসে বিক্রি করা চার আনায় তিনটে নোনতা মিষ্টি লজেন্সের মতো। সেটা থেকে দ্বিতীয় চামচ মুখে দিতে ব‍্যাঁকা ঠোঁট টুকুন সোজা হলো। খারাপ নয়। ভাবলাম এবার তাহলে রুটি দিয়ে খাই। তবে সেখানেও ঝটকা। সে যা শক্ত হয়েছিল না, ওঃ কী বলবো, তবে হার্ড ট‍্যাক রুটি‌র মতো নয়। বৌমণি বলে সে আবার কী? দ‍্যাবা বলে, শুনেছি কয়েকবার বেক করে বানানো ঐ রুটি সৈনিক‌রা যুদ্ধ‌ক্ষেত্রে বা নাবিকরা দীর্ঘ সমূদ্রযাত্রা‌য় নিয়ে যায়। ফ্রীজ ছাড়াই ওসব বছরখানেক বা তার বেশী‌ও ভালো থাকে। তবে এতো শক্ত যে ছেনি হাতুড়ি দিয়ে কাটতে হয়। সেদিন নোনতা পায়েসের সাথে ও যা রুটি বানিয়ে‌ছিল সেটা ছিঁড়তে‌ও আমার গলদঘর্ম অবস্থা। অনেক টানাটানি ধস্তাধস্তির পর শেষে রুটির একটা দিক দু পায়ে চেপে অন‍্য দিক‌টা সাঁড়াশি দিয়ে ধরে টানতে এক টুকরো হাতে এলো।

       বৌ দ‍্যাবা‌র ক‍্যারিকেচার দেখে শুনে হেসে কুটোপাটি হয়ে বলে, যাঃ, যত্তোসব বাড়িয়ে চড়িয়ে আজে বাজে কথা বলে বৌয়ের বদনাম করা। ও বিয়ের আগে বাড়িতে রান্নাবান্না বিশেষ করেনি তাই ঠিক জানে না। সদ‍্য বিয়ে হয়ে এসেছে। আস্তে আস্তে সব শিখে যাবে। তবে দ‍্যাবা‌র জোকারি দেখে দেবী‌ রাগ তো করে‌ই না উল্টে সেও হি হি করে হাসে। দ‍্যাবা কুকার তুলে হাত দিয়ে মুরগির মাংসের কাই চাটতে চাটতে বলে, আঃ, মাংসটা হেব্বি হয়েছিল বৌদি। সচরাচর বরের মুখে অন‍্য কারুর বৌয়ের রান্না‌র প্রশংসা শুনে মেয়েদের একটু হিংসে যায়। কিন্তু দেবী‌র মধ‍্যে ওসব নেই, তাই সেও অকপটে বলে, সত‍্যি বৌদি, দারুণ রেঁধেছো তুমি।

        দেবী ছিল একটু গেছো টাইপের‌। তা না হলে অল্পবয়সে, অবিবাহিত জীবন গেল আলেঝালে দেড় মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সালোয়ার কামিজ পরে কেউ মাঠে সাইকেল চালানো শিখতে যায়! ধাড়ি বয়সে সাইকেল চালানো শেখা অত সহজ নয়। ব‍্যাস, যা হবার তাই হলো। ধরাম করে আছাড় খেয়ে পড়লো। শুরু হলো রক্তস্রাব। হাসপাতালে ভর্তি হতে হলো। হয়ে গেল গর্ভপাত। কিছুদিন মনমরা হয়ে থেকে দেবী আবার স্বাভাবিক। বৌমণি‌কে বলেছিল, ভাগ‍্যে এখন ছিল না তো কী আর করা যাবে বলো বৌদি। তা বলে প‍্যাঁচার মতো ব‍্যাজার মুখ করে থাকার কোনো মানে হয় না, তাই না বলো তুমি। বৌমনি বলে, ঠিক‌ই তো, মন খারাপের কী আছে। এটা তো একটা দূর্ঘটনা। তোমার অল্প বয়স। আবার কনসিভ করবে তুমি। তবে সেবার কিন্তু একটু সাবধানে থেকো। দেবী‌র মতো জীবনদর্শন হলে জীবনের নানান মারপ‍্যাঁচে‌ সহজে কাবু হতে  হয় না। 

         আমার আজীবন বালখিল্য‌পনা দেখে বৌ মাঝে মাঝে বলে, তোমার সাথে দেবী‌র মতো কোনো ধন‍্যি মেয়ের বিয়ে হ‌ওয়া উচিত ছিল। তাহলে তোমরা দুজনে মিলে চার পা তুলে নেত‍্য করতে পারতে। তবে ক্ষতি হতো তোমাদের ছেলের। সে অযত্নে গড়াগড়ি খেতো। বলি, যা হয়নি তা নিয়ে ভেবে কী লাভ। যা হয়েছে তাও তো মন্দ হয় নি। আমি তো বেশ একাই দু পা তুলে নেত‍্য করছি আর তুমি লক্ষীমন্ত গৃহিনী হয়ে সব কিছু সুন্দর সামলাচ্ছো। আমি বেশ গায়ে হাওয়া লাগিয়ে গাছের‌ও খাচ্ছি, তলার‌‌ও কুড়োচ্ছি। এমন সৌভাগ্য কজনের হয় বলো। বৌ মুখঝামটা দেয়, এক নম্বরের স্বার্থপর কোথাকার। সে ঝামটা অর্ধসত‍্য হলেও আমি ব‍্যাজ হিসেবে জামায় আঁটি, গায়ে মাখি না।
      
         একবার গরম কালে কলকাতা থেকে সুদীপের বাবা মা আসতে চাইলেন ছেলের কাছে কদিন ছুটি কাটাতে। সুন্দরগড়ের রাজবাড়ী‌র সামনের অংশে দুটি তলা ভাড়া নিয়ে কোম্পানি বানিয়ে‌ছিল ব‍্যাচেলর মেস। সুদীপ ওখানেই থাকতো। সেখানে বাবা, মাকে রাখা যায় না। সুন্দর‌গড় ছোট জায়গা। তখন সেখানে একটা‌ই থাকার জায়গা - দেবাশীষ হোটেল। তবে আমরা কয়েক ঘর বাঙালী ফ‍্যামিলি‌ম‍্যান থাকতেও ছেলের কাছে দিন সাতেক বেড়াতে এসে ওনারা হোটেলে থাকবেন, সেটা ভালো দেখায় না। 

        আমেরিকা‌য় তো হোটেলে‌র অভাব নেই। তবু বঙ্গ সংস্কৃতি সম্মেলনে আমন্ত্রিত হয়ে বাঙালী কবি, লেখক, শিল্পী অনেকেই ওদেশে প্রবাসী বাঙ্গালী‌দের পরিবারে থেকেছেন। জমিয়ে আড্ডা হয়েছে। সেভাবেই ১৯৮৯তে প্রথম আমেরিকা বেড়াতে গিয়ে নিউইয়র্কে নেমে শীর্ষেন্দু প্রথম উঠেছিলেন নিউ জার্সি প্রদেশের একটি ছোট্ট জনপদ ওয়েন-এ সুলেখিকা আলোলিকা মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি‌তে। গৃহস্বামী ভবানী মুখোপাধ্যায়‌ও অতিশয় ভদ্র, অতিথি‌বৎসল মানুষ। নিউইয়র্কে যামিনী‌দার বাড়িতে থাকার, আড্ডা‌র মনোরম অভিজ্ঞতার কথা কেবল শীর্ষে‌ন্দু নয়, সুনীলের লেখা‌তেও পড়েছি। অর্থাৎ রেস্ত এবং উপায় থাকলে হোটেলে থাকা অবশ‍্য‌ই আরামদায়ক, নির্ঝঞ্ঝাট কিন্তু কারুর বাড়িতে অতিথি হয়ে, ঘরোয়া পরিবেশে, গল্পগুজব করে কদিন কাটানোর অভিজ্ঞতা আবার সম্পূর্ণ অন‍্য গোত্রের ভালো লাগা। তা পয়সা ছড়িয়ে পাওয়া যায় না।

        আমার শ্বশুর, শাশুড়ি‌‌‌ও কয়েকবার বেড়াতে গেছেন ওখানে। বৌমণি‌র বোনের শ্বশুরবাড়ির সাথে ঘনিষ্ঠ এক পাড়াতুতো ছেলে বাবু। বছর সতেরো‌র বাবু ভালো কনে সাজাতে পারতো, বিয়ের মরশুমে পয়সা নিয়ে ‌ঐ কাজ করতো। রান্না করতে পারতো। হয়তো স্বভাবে, কথাবার্তায় একটু মেয়েলি ভাব ছিল বলে পাড়ায় হ‍্যাটা খেয়ে ও নিঃসঙ্গ বোধ করতো। আমাদের সাথে দু বার মাত্র দেখা হয়েছে। সেই স্বল্প পরিচয়ের ভিত্তিতেই সে আমাদের কাছে এসে দিন পনেরো ছিল। তখন আমাদের সদ‍্য বিয়ে হয়েছে। ছ‍্যানাপোনা হয়নি। আমি আটটা‌য় অফিস গিয়ে ছটায় ফিরতাম। স্বভাবে অন্তর্মুখী বৌমণি একা থাকতে অভ‍্যস্থ। তখন ওর সঙ্গী ব‌ই। তবে সেই কদিন শান্ত, ভদ্র ঘরোয়া ছেলেটি ছোট ভাইয়ের মতো বৌমনিকে সঙ্গ দিয়েছে। কুটনো কুটে দিয়েছে। করলা দিয়ে ডাল রান্না করা শিখিয়েছে। আজ‌ও কখনো বৌমণি‌কে বলি, অনেকদিন বাবুর ডাল করোনি তুমি। তাই দিন দশকের জন‍্য সুদীপের বাবা মাও নির্দ্বিধায় আমাদের কাছেই থেকে যেতে পারতেন।

         আমাদের এক সহকর্মী সাইট ইঞ্জিনিয়ার ছিল উদয় চাঁদ হাতি। ইংরেজি‌তে সে স‌ই করতো U.C.Hati. ফলে ওর প্রসঙ্গে কেউ কেউ মজা করে বলতো You See হাতি? দলছুট দাঁতাল না হলে অতিকায় শরীর সত্ত্বেও হাতি অতি শান্ত প্রাণী। পদবীতে হাতি না থাকলেও স্বভাবেই উদয় ছিল শান্ত। ও জানতো ওর পদবী নিয়ে অন‍্যেরা আড়ালে মজা করে। তবু কখনো গায়ে মাখেনি। সেবার গরমের ছুটিতে উদয়চাঁদ সপরিবারে দেশের বাড়ি ছুটি কাটাতে যাবে।  সুদীপের বাবা মা আসছেন শুনে সুদীপের অমায়িক হাতিদা বললে, ওনারা তো আমাদের বাড়িতে‌ই থাকতে পারে‌ন। সুদীপকে ঘরের চাবি দিয়ে দেশে চলে গেল উদয়। সুদীপের বাবা মা সুন্দর‌গড়ে এসে দিন দশেক হস্তিনিবাসে‌ সুন্দর‌ কাটিয়ে গেলেন।

        চাকরি‌সূত্রে যেখানে গেছি তার আশপাশে চেনা, অচেনা কিছু জায়গা দেখে নিয়েছি। তখন ইন্টারনেট, গুগল ম‍্যাপ ছিল না। তাই নতুন জায়গায় যাওয়ার আগে কলকাতার উড স্ট্রীটে সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার অফিস থেকে ঐ এলাকা‌র কিছু লার্জ স্কেলের টোপো শিট বা ডিটেল ম‍্যাপ কিনে নিয়ে যেতাম। স্থানীয় একে তাকে জিজ্ঞাসা করে‌‌ও কিছু খোঁজ পাওয়া যেতো। বলোদাবাজারে থাকতে টোপোশিট দেখেই খুঁজে পেয়েছি‌লাম বিলাসপুরের কাছে খাড়ং জলাশয়। ১৯৯২ সালে প্রজাতন্ত্র দিবসের ছুটিতে কয়েকজন মিলে সেখানে গিয়ে বেশ আনন্দ হয়েছিল। সেবার সুদীপ‌ও ছিল দলে। 
      চার বছর সুন্দরগড়ে বসবাসকালে তার আশপাশে গোঘর ক‍্যাঁয়তারা, হিন্দুস্তান জিংকের খনি, কোয়েলি গোঘর, গুড়াবাসা, মহাবীর পাহাড় বা আরো দুরে পূবে রৌরকেলার কাছে টেনসা ভালি, বোনাইগড় হয়ে খণ্ডধার প্রপাত বা পশ্চিমে হীরাকুঁদ বাঁধ, সম্বলপুর ছাড়িয়ে বড়গড়ের দিকে পৌরাণিক গন্ধমাদন পর্বতের নীচে নৃসিংহনাথ এমন অনেক জায়গায় ঘুরে নিয়ে‌ছি। 
         
        লোকমুখে খোঁজ পেয়েছিলাম গুদগুদা জলপ্রপাতের। এখন গুগল ম‍্যাপে দেখছি জায়গটা সুন্দর‌গড় থেকে দক্ষিণ-পূর্বে কুচিন্ডা হয়ে ১১০কিমি দুরে ঘন অরণ্যে‌র মাঝে। তার উত্তরে বামরা-গাঙপুর, পূবে বুডাবাহাল ও দক্ষিণে মারগড়-কৈলাস ফরেস্ট রেঞ্জ। তখন অবশ‍্য জায়গা‌টা সম্পর্কে  কোনো ধারণা‌‌ই ছিল না। এখন দেখছি ওখানে পর্যটক আকর্ষণে অনেক কিছু হয়েছে। রাস্তা চলে গেছে প্রপাতের নিকটে। ফলে ভীড় বেড়েছে। তখন ছিল নির্জন, আদিম জঙ্গল। ওড়িয়াতে গুদগুদা নামের কী অর্থ জানিনা তবে হিন্দি‌তে গুদগুদি মানে কাতুকুতু, বাংলায় যা সুড়সুড়ি। ওটা  একটা Cascading Waterfall. তবে নামের আসল মানে যাই হোক, ভাবলাম ধাপে ধাপে পাহাড়ের গা বেয়ে নামায় জলের আদরে পাহাড়ের হয়তো সুড়সুড়ি লাগে, তাই ঐ নাম - গুদগুদা প্রপাত বা সুড়সুড়ি ঝর্ণা।

       সুদীপের বাবা আমুদে, হাসিখুশি মানুষ‌। এমন মিশুকে সিনিয়র সিটিজেনের সাথে দিব‍্যি আড্ডা দেওয়া যায়। সুদীপের মা শান্ত নির্বিরোধী কিন্তু হাসিখুশি মানুষ। একদিন সেই হস্তিনাপুরের ড্রয়িং রুমে সান্ধ‍্য চায়ের আড্ডা বসেছে। সুদীপ, ওর বাবা মা, দ‍্যাবা দেবী, কম্পিউটার বিভাগের রণজয় আর আমরা দুজন। দেবী‌র সেই দুর্ঘটনার পর বেশ কিছুদিন কেটে গেছে। ও তখন শরীরে মনে সুস্থ। আবার কোনো হুল্লোড়‌বাজির জন‍্য ওর পা চুলকুনি, মন সুড়সুড়ুনি শুরু হয়ে গেছে। আড্ডায় আমি বলি, কী দেবী, যাবে নাকি সামনের রবিবার সবাই মিলে গুদগুদা জলপ্রপাত? দেবী পত্রপাঠ একপায়ে খাড়া, বলে, কিচ্ছু আগাম জানার দরকার‌ নেই, তাতে সাসপেন্স নষ্ট, আমি জানি আপনি বেড়ানোর নামে পাগল, আপনি জায়গা বেছেছেন মানে, তা নিশ্চয়ই ভালো হবে। আমার প্রস্তাবে, দেবী‌র উৎসাহে, বাকি সবাই সোৎসাহে রাজি হয়ে গেল। সুদীপের বাবা মাও বেড়াতে এসে কদিন ধরে হস্তিনিবাসে‌ই বসে আছেন। ওনাদের‌ও একটু আউটিং হবে। সে জন‍্য‌ও বলা।

        রবিবার ছুটি বলে সাইটে কোম্পানির তরফে মাসিক ভাড়ায় নেওয়া দীনেশের ট্রেকার গাড়িটা ভাড়া নেওয়া হয়েছে। হাত পা ছড়িয়ে বসার প্রচুর জায়গা তাতে‌। দীনেশ নিজেই চালায় ওটা। ও জায়গা‌টা চেনে, আগে গেছে ওখানে। দীনেশ থাকে সুন্দর‌গড় থেকে আট কিমি দুরে কান্দাবাহাল গ্ৰামে। রবিবার সকাল সাতটায় সুন্দর‌গড়ে এসে আমাদের তুলে র‌ওনা হয়েছে। কান্দাবাহালের আগে কেরাই চক থেকে গাড়ি ঝাড়সুগুদা‌র হাইওয়ে ছেড়ে বাঁদিকে কুচিন্ডা‌‌র রাস্তায় ঢুকলো। ওটা শর্টকাট। সে রাস্তায় গাড়ি চলাচল বেশ কম কিন্তু নির্জন রাস্তার পথশোভা মনোরম। নটা নাগাদ পৌঁছে গেলাম ঘন অরণ‍্য‌ময় পরিবেশে গুদগুদা জলপ্রপাত। গাড়ি একটু দুরে দাঁড়ালো। আমাদের কিছুটা হেঁটে যেতে হলো। জলধারা পাহাড়ের ওপর থেকে অনেকগুলো ধাপে নামছে। আমরা অবশ‍্য ছোট শেষ ধাপটাই দেখতে পাচ্ছি। বাকি‌টা দেখতে হলে ঘন জঙ্গলে‌র মধ‍্যে দিয়ে সংকীর্ণ পাহাড়ি শুঁড়িপথ ধরে অনেকটা ওপরে যেতে হবে। সাথে মহিলা, বয়স্ক‌রা আছেন, অচেনা জায়গা, তাই ওসব এ্যাডভেঞ্চারে গেলাম না।

       সেদিনটা ছিল মে মাসের ৩১ তারিখ। বলোদাবাজার থাকতে শুনেছি ঐ সময়টা ছত্তিশগড় এলাকায় লোকমুখে ন-তপ্পা বলে পরিচিত। মানে মে মাসের শেষ আর জুনের প্রথমে জ্বালাময়ী সেই নয়টা দিনে বর্ষা আসার আগে ভয়ঙ্কর গরম পড়ে। ওড়িশাতেও তার প্রভাব টের পাওয়া গেল। আশপাশ পাহাড়, জঙ্গলে ঘেরা। তাই গরম লাগছে বেশ। তখন‌ও ঝর্ণায় মোটামুটি জল রয়েছে। মানে ঘোর বর্ষায় এ প্রপাত ভালো আকার নেবে।  বাড়ি থেকে সবাই জলখাবার খেয়ে বেরিয়েছি। এতো তাড়াতাড়ি ক্ষিধে পায়নি। সামনেই ঝর্ণার জলে সৃষ্ট টলটলে জলাশয় দেখে থাকা গেল না। আমি সুদীপ, রণজয় জলে ঝাঁপিয়ে‌ছি। দ‍্যাবা সাঁতার জানে না বলে নিজের ও আমার বৌয়ের সাথে পারের কাছে কোমর জলে রয়েছে। আমরা তিনজনে সাঁতারে প্রথম ধাপের কাছে গিয়ে পাথর ধরে উঠলাম। ফুট পনেরো ওপর থেকে জলে কয়েকটা ডাইভ মারলাম।  এই ঘোর গরমেও জল বেশ ঠান্ডা। বেশ লাগছিল। তখন ডিজিটাল ক‍্যামেরা ছিল না তাই আমার পেনট‍্যাক্স ফিল্ম ক‍্যামেরায় কিছু ছবি তোলা হলো। 
      
     
        জল থেকে ওঠার একটু  পরেই গরম লাগতে শুরু করেছে। আমি লুঙ্গি আর একটা পাতলা জ‍্যালজেলে  আদ্দির পাঞ্জাবী পরেছি। দ‍্যাবা, রনজয়, সুদীপ জামা খুলে স‍্যান্ডো গেঞ্জি পরে ঘুরছে। আলোচনা হচ্ছে দুপুরে কী খাওয়া হবে। এটা আমাদের প্ল‍্যানিংয়ে বড় ভুল হয়ে গেছে। সাথে গাড়ি ছিল। সুন্দর‌গড় থেকেই রসদ নিয়ে আসা উচিত ছিল। আনি নি। ভেবেছিলাম আশেপাশে কিছু পাবো। এখন হলে হয়তো পাওয়া যেতো। তখন জায়গা‌টা একদম আদিম। তাই কিছু‌ই পাওয়া গেল না। আমরা ছাড়া রবিবারেও আর কেউ আসে‌ওনি ওখানে। কিছু ডিম ছিল সাথে। সুদীপের মা এনেছেন একটা পাকা কাঁঠাল। প্রথমে সেটা ভেঙে খাওয়া হলো। 

         তারপর কাঠকুটো জেলে ডিমসেদ্ধ করা‌র প্রকল্প শুরু হলো। বৌ এনেছিল একটা বড় ডেকচি। কাঠ, পাতার আঁচে সেটার তলা অচিরেই মুখপোড়া হনুমানের মতো হয়ে গেল। তবু জল আর ফোটে না। আগুনের থেকে ধোঁয়া বেশি। ঘেমে নেয়ে চোখ জ্বলে একসা। আমরা বলেছিলাম রান্না যখন হচ্ছে‌ই না তখন আর মেয়েদের হাত লাগিয়ে কাজ নেই। এটুকু  আমরা, মানে,  ছেলেরা‌ই করবো। তা শুনে দেবী একটু দুরে মাদুরে মা লক্ষ্মী‌র ঘটের মতো থাপন জুড়ে বসে বলেছে, বাব্বাঃ, বাঁচা গেল। বাড়ি‌তে তো রোজ আমরা‌ই রাঁধি, বলো বৌদি। বাইরে আজ তোমাদের পালা। বৌমণি হাসে, মাসীমা‌ও মিটিমিটি হাসছেন। বয়স্ক হলেও মেশোমশাই‌ও ছেলে, তাই দর্শক হিসেবে দাঁড়িয়ে থাকতে তাঁর পুরুষাকারে বাঁধছে। তিনি‌ কাঠ পাতা সংগ্ৰহ করে আনছেন। অবশেষে তৈরি হলো ডিম সেদ্ধ।  সাথে  পোড়া পাতার ফ্লেবার ওয়ালা চা। কিন্তু ঐ গরমে তাতেই আমরা হেদিয়ে একসা।
     
     
        মাটিতে পাতা মাদুরে আমরা হা-ক্লান্ত হয়ে বডি ফেলেছি। দীনেশ দুর থেকে আমাদের দৌড় দেখে একটা চারতলা টিফিন ক‍্যারিয়ার নিয়ে হাজির হয়। তাতে ছিল বেশ কিছু ঘরে বানানো পরোটা ও আচার। বলে, আপনাদের তো দুপুরে কিছুই খাওয়া হলো না। আমি জানতাম এখানে কিছু পাওয়া যায় না। তাই বেশি করে বানিয়ে এনেছিলাম। নিন যা হয় সবাই মিলে খান। আমার আলাদা আছে। সবার ভাগে দুটো করে পড়লো। তখন তাই লাগলো অমৃত। দীনেশের পরোটা চিবোতে চিবোতে‌‌ই দেবী আমায় আড়ালে বলে, আচ্ছা মুখার্জী‌দা, অখদ‍্যেটা যখন জানতো এখানে কিছু পাওয়া যায় না সেকথা তো ও সুন্দর‌গড়ে‌ই বলতে পারতো। আমরা দোকান থেকে তো কিছু কিনে আনতে পারতাম। বলি, ধরে নাও আমরা যেমন আনতে ভুলেছি, দীনেশ‌ও তেমনি বলতে ভুলেছে। All are part of the game.  
       
     
      একটু বাদে মৃদুমন্দ বাতাস ব‌ইতে শুরু করলো। অসহ‍্য গরম ভাবটা আর লাগছে না। জনহীন অরণ্য‌ময় পরিবেশে কিছুক্ষণ হাসি মস্করা আড্ডার পর আমরা চারটে নাগাদ র‌ওনা হলাম সুন্দর‌গড়ের দিকে। একটা ছুটির দিন সবাই মিলে উন্মুক্ত প্রকৃতির কোলে সুড়সুড়ি ঝর্ণার সান্নিধ্যে বেশ কাটলো। মনে হোলো এখানে শীতে এলে আরো ভালো লাগতো। 
     

    ছবি - আন্তর্জাল
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • অন্যান্য | ০২ অক্টোবর ২০২৩ | ৩৬৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Kishore Ghosal | ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৫:২৫524243
  • বাঃ বেশ ভালো লাগল। 
  • Samaresh Mukherjee | ০৪ অক্টোবর ২০২৩ ১৬:০৫524244
  • মাননীয়,
    কিশোর ঘোষাল, হীরেন সিংহরায়

    প্রায় উনত্রিশ বছর আগে ওড়িশায় এক রবিবারের আউটিং ও তার প্রেক্ষিতে আজ‌ও স্মৃতি‌তে রয়ে যাওয়া কয়েকটি মানুষের আখ‍্যান এই হালকা চালের লেখা‌টি। তা যে সিরিয়াস বিষয়ে লিখতে অভ‍্যস্থ, চিন্তাশীল মানুষের ভালো লাগবে, আশা করিনি।
    অনুপ্রাণিত হলাম। ধন‍্যবাদ
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন