এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  পথ ও রেখা

  • মায়াবন তাড়োবা

    লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | পথ ও রেখা | ১৬ জুলাই ২০২৩ | ৯২১ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৩ জন)
  • |

    মায়াজঙ্গল এমনই হয় বুঝি! 
     
    সেই গত শীতে আইজল  থেকে আসার পরে আর কোথাও যাওয়া হয় নি, জুনে কয়েকদিন ব্রেক না নিলে আর পেরে উঠছিলাম না। তীব্র গরমে বাঘের সাইটিং ভাল হয় জানি। আর যে কটি প্রাণীকে তাদের স্বাভাবিক বাসস্থানে দেখার ইচ্ছা আছে আমার, বাঘ তাদের মধ্যে একদম এক নম্বরে আছে। বাগ মানে বিগ ক্যাট গোত্রের সবকটাই দেখার ইচ্ছা, তবে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের প্রতি আগ্রহ একটু বেশীই। তা তালেগোলে জিম করবেট ন্যাশনাল পার্কে যাবার পরিকল্পনা বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে, সারিস্কা বা বান্ধবগড়ের এত ছবি দেখি যে কেমন যেন  ধারণা হয়ে গেছে খুব ভীড় হয়। আমি চাইছিলাম একটু কম লোকজন, হই হট্টগোল ছাড়া চুপচাপ ধরণের ঘন জঙ্গল।

    কাছাকাছির মধ্যে পেঞ্চ, তাড়োবা, মেলঘাট আর টিপেশ্বর। খোঁজখবর করে পেঞ্চ তাড়োবা যাওয়া স্থির করলাম। ইচ্ছে ছিল দুই জায়গা মিলিয়ে ৪ রাত ৫ দিনের ট্রিপ। সাফারি বুকিং অনলাইনে হয়। কিন্তু বুক করতে গিয়ে দেখি এক একবারের জন্য পুরো জিপ বুক করতে হবে।  একা গেলে সেটা খুবই খরচসাপেক্ষ হয়ে যাচ্ছে। অতঃপর আরো খানিক খোঁজাখুজি করে  দুই তিনটে পর্যটন সংস্থার সন্ধান পাওয়া গেল যাঁরা শুধুই জঙ্গল সাফারি করান। সেরকমই এক সংস্থার সাথে জুনের শেষে চললাম তাড়োবা। দুই রাত তিন দিনের ট্রিপ, চারটে সাফারি। খরচখুব বেশী না, আর  সবচেয়ে বড় সুবিধে যেটা এঁরা বললেন হোটেলে ঘর শেয়ারের জন্য আরেকজন মহিলা না পাওয়া গেলে আমাকে একটা আস্ত ঘর দেবেন।

    চন্দ্রপুর জেলার তাড়োবা-আন্ধারি টাইগার রিজার্ভ মহারাষ্ট্রের সবচেয়ে পুরানো ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্র এবং অভয়ারণ্য। ১৯৫৫ সালে তাড়োবা জাতীয় উদ্যান ও ব্যাঘ্রপ্রকল্পের সূচনা হয়। তাড়োবা বা তাড়ু হলেন ঘন জঙ্গলে বসবাসকারী জনজাতিদের মধ্যে পূজিত দেবতা, তাঁর নামেই অভয়ারণ্যের নাম রাখা হয়েছিল জনজাতিদের মধ্যে আস্থা জাগিয়ে তাঁদের এই প্রকল্পে সামিল করার জন্য। গোন্দদের মধ্যে কথিত আছে তাড়ু ছিল তাদের গ্রামের এক অসমসাহসী সরপঞ্চ (গ্রামপ্রধান)। গ্রামের লোককে বাঁচাতে জঙ্গলের রাজা বাঘটির সাথে ভয়ংকর যুদ্ধে প্রাণ হারায় তাড়ু। নিজের প্রাণের বিনিময়ে গ্রামবাসীদের সুরক্ষিত করে যায়। তাড়োবা হ্রদের ধারে এক মস্ত গাছের নীচে ছোট্ট এক  মন্দির বানানো হয় তাড়ুর স্মৃতির উদ্দেশ্যে। স্থানীয় বিশ্বাস এখানে পুজো দিয়ে জঙ্গলে ঢুকলে বাঘ কিছু করে না।

    ১৯৩৫ সাল থেকে এই অঞ্চলের বিস্তৃত জঙ্গলে শিকার করা বারণ হয়ে যায়। ১৯৮৬ সালে তাড়োবা সংলগ্ন অঞ্চল আন্ধারি অভয়ারণ্য হিসেবে ঘোষিত হয়।  ১৯৯৫ সালে পাশাপাশি দুটি প্রকল্প একত্র করে তাড়োবা-আন্ধারি অভয়ারণ্য ঘোষণা করা হয়। সংযুক্ত অভয়ারণ্যের এলাকা মোট ৬২৫.৪ বর্গকিলোমিটার।পশ্চিমঘাটের চিমুর পাহাড় তাড়োবায় আর মোহারলি কোলসা পর্বতশ্রেণী আন্ধারি অঞ্চলে ছড়িয়ে আছে। পাহাড়ে  পাহাড়ে ছড়ানো ঘন জঙ্গল ক্রমশ উপত্যকায় নেমে এসে তৃণভূমিতে মিশছে বলে এখানে জীববৈচিত্র্য প্রচুর। অভয়ারণ্যের ভিতর ও সংলগ্ন এলাকা মিলিয়ে প্রায় ষাটখানা গ্রামে পঞ্চাশ হাজার লোকের বাস। সরকারের তরফে জঙ্গলের কোর এলাকা থেকে ক্রমশ গ্রামগুলো সরিয়ে বাইরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে প্রাণী ও মানুষ উভয়ের স্বার্থেই।

    ১লা জুলাই থেকে ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাড়োবা কোর বন্ধ থাকে। বাফার এলাকা অবশ্য খোলা। তবে ওয়েবসাইটে এই তিনমাস বন্ধ হিসেবেই লেখা থাকে।  সেই হিসেবে এটা এই সিজনের শেষ সপ্তাহান্ত ট্রিপ। ২৩শে জুন সকালে নাগপুর পৌঁছানোর কথা, বিভিন্ন জায়গা থেকে আসা লোকজনকে স্টেশান ও বিমানবন্দর থেকে তুলে তাড়োবার দিকে রওনা হবে খান তিনেক গাড়ি। ওয়াইল্ড লাইফ ফোটগ্রাফারদের একটা গ্রুপের সাথে আমার মত আরো জনাকয়কে জুড়ে আঠেরোজনের দল তৈরী হয়েছে, তিনটে জিপ লাগবে এক এক সাফারিতে। আমি পুণে নাগপুর এক্সপ্রেস বুক করেছিলাম মে মাসে,মোটামুটি ঠিক সময়েই চলে। ওবাবা সেইদিনই ট্রেন দুইঘন্টা লেট। ফলে সকাল সাড়ে আটটার বদলে সাড়ে দশটায় আজনি স্টেশানে নামলাম।

    এদিকে ২২ তারিখের রাত থেকে নাগপুর চন্দ্রপুর অঞ্চলে নেমেছে তুমূল বৃষ্টি। আজনি হল নাগপুরের ঠিক আগের স্টেশন। আমার জন্য বরাদ্দ গাড়ির বাকী যাত্রীরা আগের রাতেই নাগপুরে এসে হোটেলে ছিলেন,আমি নামতেই ধুম বৃষ্টির মধ্যে সোওজা তাড়োবার দিকে দৌড়। হোটেলে পৌঁছাতে পৌঁছাতে দুপুর দেড়টা। প্রত্যেকের আইডিপ্রুফের সফটকপি দিয়ে সাফারি বুকিং করে রেখেছেন আয়োজক নীতিন রাণে। বুকিং নাম্বার দেখাতে হল তাড়োবা-আন্ধারি গেটে ঢোকার সময়। হোটেল সেখান থেকে আরো প্রায় ৫-৬ কিমি দূরে। হোটেল টাইগার ইনে পৌঁছে আইডি দেখাতেই জানলাম আমার ঘরের অপর বাসিন্দা বহু আগেই এসে গেছেন, সাফারির গাড়ি আসবে আড়াইটে। অতএব আমিও ঝটপট গিয়ে স্নান সেরে একেবারে তৈরী হয়েই নামলাম।

    মোহারলি গেট 

    প্রথম সাফারি মোহারলি গেট, কোর এরিয়া। ঢোকার আগে প্রত্যেকের আইডিসহ নাম বয়স ইত্যাদি বিবরণ আবার ফর্মে লিখতে হল। এরপরে একজন গাইড বরাদ্দ করা হল।  এই লেখালেখি শুধু প্রথমবারের জন্যই। এর পরের সাফারিগুলোয় আইডি আর বুকিং নাম্বার দেখালেই গেটে গাইড বরাদ্দ করে দিয়েছে। তাড়োবা সম্পূর্ণ প্ল্যাস্টিক ফ্রি  জোন, ভেতরে কোনরকম প্ল্যাস্টিকের প্যাকেট বা বোতল নেওয়া যায় না। প্ল্যাস্টিকের জলের বোতলও অনুমোদিত নয়। প্রত্যেক গেটের বাইরে সিল করা এক লিটারের কাচের বোতলে জল পাওয়া যায়, দাম ১৪০/-টাকা। সাফারি শেষ করে বেরোবার সময় কাচের বোতল ফেরত দিলে ১০/-টাকা কেটে রেখে ১৩০/-টাকা ফেরত দেয়। ভেতরে মোবাইল ফোনও নেওয়ার নিয়ম নেই।

    কাচের জলের বোতল যে কোন গেটে পাওয়া যায়। 
     
    গাইড এসে প্রথমেই প্ল্যাস্টিকের কিছু আছে কিনা চেক করেন, একটা ছোট্ট টিনের বাক্স নিয়ে এসে সকলের মোবাইল নিয়ে বাক্সে রেখে তালা লাগিয়ে চাবি গেটের কাউন্টারে জমা করে, বাক্স ড্রাইভারের কাছে রেখে তবে জিপসি ছাড়ে। ড্রাইভার ও গাইডের কাছে ফোন থাকে, তবে স্মার্টফোন নয়, সাধারণ ফিচার ফোন। গাইড বা ড্রাইভারের স্মার্টফোন থাকলেও কাউন্টারে জমা রেখে যেতে হয়। সাফারি হয় দিনে দুবার। ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে নয়টা আর দুপুর তিনটে থেকে সন্ধ্যে সাতটা। একজন ড্রাইভার ও একজন গাইড দিনে একটাই সাফারি করতে পারেন। সকলেই আশেপাশের  বিভিন্ন গ্রামের লোক, কেউ বারোক্লাস পাশ করে কেউ বা গ্র্যাজুয়েশান করে ট্রেনিং নিয়ে ড্রাইভার কিংবা গাইড হয়েছেন। এলাকার বাইরের কাউকে নাকি এইসব কাজে নেওয়া হয় না।

    আমাদের মোহারলি কোরের গাইড ছিলেন গায়ত্রী। উঠেই জানালেন বাঘিনী সোনমের বাচ্চা হয়েছে সপ্তাহ দুই আগে। আজ  সকালে সে আস্তানা থেকে বেরিয়ে জলে পেট ডুবিয়ে বসেছিল। আমরা সেখানেই প্রথম যাবো। বৃষ্টি প্রায় ঘন্টাখানেক হল বন্ধ হয়েছে তবে আকাশ বেশ মেঘলা। সাধারণত গরম যত বেশী হয় বাঘের দেখা পাবার সম্ভাবনা তত বাড়ে, জলের মধ্যে পেট বুক ডুবিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকে বাঘ। রাত থেকে ভালমত বৃষ্টি হয়ে যাওয়ায় সম্ভাবনা খানিক কমেছে, তাও সকালে যেখানে দেখা গেছিল সেই জলাশয়ের ধারে গিয়ে ধর্ণা দিলাম আমরা। আশায় আশায় আরো কটা গাড়ি এসে দাঁড়ালো। কিন্তু নাহ ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করেও লাভ হল না। সোনমের প্রেমিক বজরঙও মোহারলিতেই আছে, তবে শুনলাম গত তিনদিনে তার দেখা পাওয়া যায় নি।      

    সাধারণত ‘কোর’ এলাকা বলতে ঘন জঙ্গল মনে হয়। কিন্তু নাহ এখানে গাছপালা বেশ ফাঁকাফাঁকা, ঘাসজমিই বেশী। তবে সে বেশ লম্বা লম্বা ঘাস, বড়সড় বাঘ তাতে গুঁড়ি মেড়ে আরামসে লুকিয়ে থাকতে পারে, এমনকি চলাফেরা করলেও ঘাসে ঢেউ দেখা যাবে, বাঘকে নয়। তো যাই হোক বেশ কিছু শম্বর দেখলাম, একাকী বার্কিং ডিয়ার (কাকর) আর দেখলাম পাখী। দুইরকমের নীলকন্ঠ (ইন্ডিয়ান রোলার), বেশ কিছু গোল্ডেন ওরিওল, প্যারাডাইস ফ্লাইক্যাচার, ক্রেস্টেড হানি বাজার্ড (বাংলা নামটা ভুলে গেছি), হাঁড়িচাচা (রুফাস ট্রিপাই)। এক হাঁড়িচাচা মা আবার তার বাসার বাইরে থেক ঝুলে ঝুলে দুখানা গাবলু গুবলু বলের মত ছানাকে কী যেন খাওয়াচ্ছিল। গরমের সময় নাকি দক্ষিণ থেকে নীলকন্ঠ, ওরিওলরা এখানে আসে ডিম পাড়তে। তারপর ছানারা উড়তে শিখে গেলে আবার ফেরত চলে যায়।
     
    শম্বর  

    মিঠু বলেছিল ফেসবুকে সৈকতের কুমীর দেখে দেখে বোর হয়ে গেছে। ভেবেছিলাম জ্যান্ত কুমীরের ছবি তুলে এনে দেব। কিন্তু তাঁরাও বিশেষ দেখা দিলেন না হায়। একজনকে অনেক দূর থেকে দেখলাম বটে, কিন্তু ছবি তুললে খুব কিছু বোঝা যাবে না কাজেই বাদ দিলাম। কোর এলাকায় জিপসি ছাড়াও ক্যান্টার(জানালাবিহীন খোলা বাস) সাফারিও হয়। জিপসির স্পীড লিমিট আছে ১৫ কিমি /ঘন্টা, জোরে চালালে বনবিভাগ দেখতে পেলে ফাইন তো করেই, অপরাধের গুরুত্ব অনুসারে ড্রাইভারকে এক সপ্তাহ বা একমাসের জন্য বসিয়ে দেয়। এমনিতে সাতটা নাগাদ সুর্যাস্ত হয়, দিনের আলো ভালোই থাকে, কিন্তু এদিকে কিউমুলোনিম্বাস মেঘ একেবারে স্তরে স্তরে ঘনিয়ে দ্রুত গিলে নিচ্ছে আলোটুকু, অতএব ফেরার পালা। কিন্তু শেষরক্ষা হল না, গেটের দিকে আধাআধি আসতেই নামল তুমূল বৃষ্টি।         


    তুমূল বৃষ্টি 

    বৃষ্টি একটু কমার পরে মোহারলি গেটের কাছাকাছি। 

    জিপসিগুলো ছাদখোলা, বোধহয় সকালের বৃষ্টির জন্য ড্রাইভারের অংশে ত্রিপল লাগানো ছিল, আমি ছিলাম ড্রাইভারয়ের পাশের সিটে। গাইডসহ পেছনের দুটো সিটের যাত্রীরা ঝুপ্পুস ভিজতে লাগলেন। গাড়িতে ত্রিপল আছে সিটের উপরে টাঙানোর জন্য, কিন্তু ভেতরে কোথাও গাড়ি থেকে নামা নিষেধ আর অত বৃষ্টিতে, প্রায় অন্ধকারে খুব নিরাপদও নয়। অতএব অগত্যা ভিজতে ভিজতেই গেটের দিকে চলা। সকলের ক্যামেরা ব্যাগগুলো আমার কোলে দিয়ে দিলেন। গেটে পৌঁছে টিনের বাক্স খুলে মোবাইল উদ্ধারের পরে সেসবও আমার কোলে। হোটেলে রাতের খাওয়াদাওয়ার পরে সামনের রাস্তায় হাঁটতে বেরিয়ে আবার একপাল চিতল হরিণের সাথে দেখা। আর একটি বড়সড় কাঁকড়াবিছে। পরেরদিন সকালে সাড়ে চারটেয় নেমে পাঁচটার মধ্যে জুনোনা গেটে পৌঁছাতে হবে।

    দুপুরে তাড়োবা প্রধান গেট পেরিয়ে ঢোকা থেকে ভোডাফোন বা এয়ারটেলের কানেকশান বিলকুল গায়েব। জিও চলছে হইহই করে। আমি জিও ব্যবহার করি না, তাই হোটেলের ওয়াইফাই সংযোগ করে  রিসেপশানে বসলাম। ওরেব্বাপরে ব্বাপ সে যে কতরকমের পোকা এসে ঘিরে ধরল কি বলব! কয়েকটি আলো নিভিয়ে দিয়েও লাভ নেই, অন্তত শ’দুয়েক নানারকম, নানা সাইজের পোকা, উইজাতীয় পোকাই বেশী, রিসেপশানে ঘুরে আর উড়ে বেড়াচ্ছে। তা ওদের দোষ নেই, এলাকাটা ওদেরই। মানুষ গিয়ে বাড়িঘর বানিয়ে থাকছে শুধু না আবার চড়া চড়া লাইটও লাগিয়েছে। বেচারিরা তাই কৌতুহলী হয়ে এসেছে দেখতে ব্যপারটা কি। মোটামুটি রাত সাড়ে আটটা নাগাদ একজন এসে মাটিতে নেমে আসা পোকাদের ঝেঁটিয়ে ফেলে দিলেন।


    এ পথ দিয়ে সে গেছে চলে ...

    ২৪ তারিখ ভোর পাঁচটায় আমরা জুনোনা গেটে হাজির। সাড়ে পাঁচটায় গেট খুলতেই ঢুকে পড়া গেল। আজকে আর বৃষ্টি নেই, জুনোনা বাফার এলাকা, ঘন জঙ্গল টিক আর বাঁশের বন এ যাত্রায়ও বাঘের দেখা নাই রে বাঘের দেখা নাই। শুধু পায়ের ছাপ আর গাছের গুঁড়িতে এলাকা চিহ্নিতকরণের জন্য দেওয় আঁচড়ের দাগ দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হল। তাড়োবাঠাকুরের থানটাও দেখলাম, পৌষমাসে নাকি বড় করে পুজো হয়, মেলা বসে চন্দ্রপুর রোডে। পায়ের ছাপ গত রাত্তিরের, অনুসরণ করে কিছুদূর যাওয়া হল। গাইডের আন্দাজমত এক জায়গায় দেখা গেল বাঘবাবাজি সেখানে নেই। কিছু চিতল হরিণ পাতা খেতে খেতে অবাক চোখে তাকায় কেবল। একটা ময়ুর, কোথাও বুঝি ময়ুরীর খোঁজ পেয়েছে ঘুরেফিরে নাচে তাই, আর সাথে তীব্র একটানা মেটিং কল।
     

    "একটু নাচলে হয়" 
     
     

    নৃত্যের বশে সুন্দর হল বিদ্রোহী পরমাণু 
     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    |
  • ভ্রমণ | ১৬ জুলাই ২০২৩ | ৯২১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 2607:fb91:87b:8018:81da:151a:1f60:7385 | ১৬ জুলাই ২০২৩ ২১:০৫521332
  • লেখা, ছবি দুইই খুব ভালো লাগলো। লেখা আরো একটু বেশি থাকলে আমার আরো ভালো লাগতো। কাঁচের বোতলটা অত্যন্ত পছন্দ হলো। এই বজরং এর কথা শুনেছি মনে হচ্ছে। বান্ধবগড়েও যেন এই নামেই একজন জবরদস্ত পুরুষ বাঘ ছিলো।
  • SKM | 49.206.52.136 | ১৬ জুলাই ২০২৩ ২২:৪৯521336
  • সোনাম এর প্রেমিক বাজরাং নয় ।.ছোটা দাড়িয়াল 
  • | ১৬ জুলাই ২০২৩ ২৩:৩০521342
  • কিন্তু এবারের লিটার নাকি বজরঙের। গায়ত্রী তো তাই বললেন।। 
     
    কেকে, এটায় আরেকটু দিলে পরের পর্বটা খুবই ছোট হয়ে যাবে তাই একটু কেটে দিলাম। 
  • দীমু | 182.69.179.140 | ১৬ জুলাই ২০২৩ ২৩:৩২521343
  • ময়ূরের পেখম মেলার ছবিটা দারুণ এসেছে।
  • aranya | 2601:84:4600:5410:d082:4f51:1b64:e52 | ১৭ জুলাই ২০২৩ ০৯:৫৮521359
  • বাঃ। ভাল লাগল। আমরা পেঞ্চ গেছিলাম নভেম্বরে, সেখানেও বাঘের পায়ের টাটকা ছাপ দেখে গাইড বলল অপেক্ষা করতে। ঘন্টা খানেক অপেক্ষা করে সেই স্পট থেকে বেরিয়ে গেলাম। তার মিনিট কুড়ি পরেই অন্য গাড়ীর ড্রাইভারের ফোন। বাঘ বাবাজী ঠিক ঐ জায়গাতেই পথের ওপর বসে সবাই কে রাজকীয় দর্শন দিচ্ছেন। 
    পড়িমড়ি করে ড্রাইভার প্রায় গাড়ী উড়িয়ে নিয়ে গেল, ফেলে আসা জায়গায়, কিন্তু ততক্ষণে বাঘ ভাগলবা :-(
  • সুদীপ্ত | ১৭ জুলাই ২০২৩ ১০:২৭521360
  • ময়ূরটা দারুণ এসেছে! জলের বোতলটা বেশ! পড়ছি
  • | ১৮ জুলাই ২০২৩ ১৩:০৮521389
  • দীমু, সুদীপ্ত, থ্যাঙ্কু থ্যাঙ্কু।, 
     
    অরণ্য, আমাদেরও প্রায় সেরকমই অবস্থা। 
  • প্রতিভা | 115.96.114.17 | ২০ জুলাই ২০২৩ ১৮:০১521470
  • কাঁকড়া বিছের ছবি কই?  
  • সমরেশ হালদার | 115.187.36.24 | ২৫ জুলাই ২০২৩ ২২:২৩521751
  • বেশ সুন্দর লিখেছো তো। আমাদেরও বিনি পয়সায় সাফারি হয়ে গেল। বুকিং করা নিয়ে আরেকটু বিশদ হলে ভালো হত। আর, তোমার কোম্পানির নাম ও যোগাযোগ নং দিলে ভালো হত। যদি আমি কোনদিন যাই, কাজে লাগত।
  • | ২৬ জুলাই ২০২৩ ১৭:১৫521794
  • প্রতিভা, তুলি নি তো।  রাতে একেবারে খালি হাতে হাঁটতে বেরিয়েছিলাম। 
     
    সমরেশদা, দিয়ে দেব আপনাকে।
  • অপর্ণা দত্ত | 2409:4056:d96:52f6:18d1:c715:e4ed:e665 | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ২০:৩২523847
  • এমন এক নি্্শ্বাসে শেষ করার মত ভ্রমণ কাহিনী অনেক দিন পর পড়লাম ❤ 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন