এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  স্বাস্থ্য

  • “অন্ধ বিশ্বাসের উপনিবেশ” – কয়েকটি পর্যবেক্ষণ

    ডঃ জয়ন্ত ভট্টাচার্য
    আলোচনা | স্বাস্থ্য | ১৯ জুলাই ২০২২ | ৯৩৩৫ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৪ জন)
  • জুলাই মাসের ১৬ তারিখে (২০২২) একটি বহুল প্রচারিত বাংলা দৈনিক সংবাদপত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে “অন্ধ বিশ্বাসের উপনিবেশ” (লেখক স্থবির দাশগুপ্ত) শীর্ষক উত্তর-সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়েছে। প্রবন্ধটিতে কর্পোরেট মিথ্যাচার ও দুর্নীতি, কোভিড টিকার মাঝে লুকিয়ে থাকা “নির্মিত অন্ধ বিশ্বাস”, কর্পোরেট পুঁজি কিভাবে ডাক্তার-বিজ্ঞানী-সাধারণ মানুষ নির্বিশেষে (সম্ভবত জনস্বাস্থ্য কর্মীদের এ তালিকার বাইরে রাখা হয়েছে) সবার ক্ষেত্রে মানসিক উপনিবেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হয় এবং এরা কর্পোরেটদের তৈরি করা তথ্যের নির্বিচার ব্যবহার করে এক ধরণের মানসিক দাসত্বের শিকার হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা কিভাবে কর্পোরেটদের হাতের ক্রীড়নক হয়ে ওঠে এবং, সর্বোপরি, রাষ্ট্রের তরফে কোনভাবেই “লোকস্বাস্থ্যের নীতিমালা, নৈতিকতা ও ন্যায্যতা রক্ষা করা অসম্ভব” বলে “প্রস্তাবিত চুক্তি ও প্রকল্পগুলোর বিরুদ্ধে স্রেফ ‘না’ বলা ছাড়া” আর কোন রাস্তা আমাদের সামনে নেই – এরকম পরস্পর-সংযুক্ত বিভিন্ন ধর্মী বিষয়কে স্বল্প পরিসরে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাওয়া হয়েছে।

    জুলাই মাসের ১৬ তারিখে (২০২২) একটি বহুল প্রচারিত বাংলা দৈনিক সংবাদপত্রে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে “অন্ধ বিশ্বাসের উপনিবেশ” (লেখক স্থবির দাশগুপ্ত) শীর্ষক উত্তর-সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়েছে। প্রবন্ধটিতে কর্পোরেট মিথ্যাচার ও দুর্নীতি, কোভিড টিকার মাঝে লুকিয়ে থাকা “নির্মিত অন্ধ বিশ্বাস”, কর্পোরেট পুঁজি কিভাবে ডাক্তার-বিজ্ঞানী-সাধারণ মানুষ নির্বিশেষে (সম্ভবত জনস্বাস্থ্য কর্মীদের এ তালিকার বাইরে রাখা হয়েছে) সবার ক্ষেত্রে মানসিক উপনিবেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হয় এবং এরা কর্পোরেটদের তৈরি করা তথ্যের নির্বিচার ব্যবহার করে এক ধরণের মানসিক দাসত্বের শিকার হয়, বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা কিভাবে কর্পোরেটদের হাতের ক্রীড়নক হয়ে ওঠে এবং, সর্বোপরি, রাষ্ট্রের তরফে কোনভাবেই “লোকস্বাস্থ্যের নীতিমালা, নৈতিকতা ও ন্যায্যতা রক্ষা করা অসম্ভব” বলে “প্রস্তাবিত চুক্তি ও প্রকল্পগুলোর বিরুদ্ধে স্রেফ ‘না’ বলা ছাড়া” আর কোন রাস্তা আমাদের সামনে নেই – এরকম পরস্পর-সংযুক্ত বিভিন্ন ধর্মী বিষয়কে স্বল্প পরিসরে ছুঁয়ে ছুঁয়ে যাওয়া হয়েছে।

    লেখাটির মাঝে কিছু সত্য আছে। আবার সত্যকে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে লেখকের নিজের মর্জিমাফিক বিজ্ঞান ও জনস্বাস্থ্যের ব্যাপারে অনেক কিছুই বলা হয়নি, দুয়েকটি বিষয় এবং প্রধানত ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালের অ্যাসোসিয়েট এডিটর (“বরিষ্ঠ সম্পাদক” নন, সত্যের খাতিরে বললে) পিটার দোশীর একটি বা দুটি প্রবন্ধকে হাতিয়ার করা হয়েছে। এর বাইরে অসংখ্য গবেষণাপত্র আছে ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল, ল্যান্সেট, নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন-এর মতো আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মান্য জার্নালগুলোতে। এবং এ জার্নালগুলো কর্পোরেটদের টাকায় নিয়ন্ত্রিত হয়না। এসব জার্নালে স্বাধীন গবেষণাপত্র ছাপা কর্পোরেট ফান্ডিংয়ের বদান্যতা ছাড়া। যদি বিজ্ঞানের এই স্বাধীন পরিসর না থাকে তাহলে বলা ভালো – প্রপঞ্চময় এ কর্পোরেট বিশ্বে কেউ স্বাধীন নয়। স্বাধীন হওয়া সম্ভবও নয়, “জ্ঞানাঞ্জন শলাকয়া” ফুটিয়ে না দিলে।

    এখানে একবার স্মরণ করে নেওয়া ভালো – যখন বিভিন্ন রকম সাক্ষ্যপ্রমাণ, উপাত্ত বা সম্ভাবনা থেকে শুধুমাত্র নিজের অনুকূলে বা পক্ষে যায় এরকম উপাত্ত, প্রমাণ বা সম্ভাবনাকেই বাছাই বা নির্বাচন করা হয় তখন যে হেত্বাভাস বা অনুপপত্তি (অর্থাৎ ভ্রান্ত যুক্তি) সংঘটিত হয়, তাকে যুক্তিবিদ্যায় পক্ষপাতদুষ্ট বাছাই বা ইংরেজি ভাষায় চেরি পিকিং (Cherry picking) বলা হয়। পক্ষপাতদুষ্ট বাছাই ইচ্ছাকৃতভাবে বা অজান্তেই হতে পারে। তবে জনবিতর্কে এই ভ্রান্তি একটি বড় সমস্যা।

    আমি শুরু করি আলোচিত প্রবন্ধের প্রধান বা একমাত্র হাতিয়ার পিটার দোশীদের প্রবন্ধটি দিয়ে – “Covid-19 vaccines and treatments: we must have raw data, now - Data should be fully and immediately available for public scrutiny”। প্রবন্ধটি ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালে ১৯ জানুয়ারি, ২০২২-এ প্রকাশিত হয়েছিল। প্রবন্ধের সহ-লেখক ছিলেন আরও ২ জন – ফিওনা গডলি এবং কামরান আব্বাসি, কেবলমাত্র পিটার দোশী নয়।

    স্থবির দাশগুপ্তের প্রবন্ধে ব্যবহৃত সমস্ত তথ্যই আহরিত হয়েছে এই একটি প্রবন্ধ থেকে, এর অতিরিক্ত কোন প্রবন্ধ থেকে নয়। এমনকি ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নালের (এখন থেকে বিএমজে) পূর্বোদ্ধৃত প্রবন্ধে ব্যবহৃত শব্দবন্ধও ব্যবহার করা হয়েছে দাশগুপ্তের আলোচিত প্রবন্ধে। দোশীর প্রবন্ধে বলা হয়েছিল “মেমরিজ আর শর্ট”। দাশগুপ্তের প্রবন্ধে এর বাংলা করে বলা হল – “কিন্তু লোকস্মৃতি ক্ষণস্থায়ী”। বিএমজের প্রবন্ধে বলা হয়েছিল – “Pharmaceutical companies are reaping vast profits without adequate independent scrutiny of their scientific claims. The purpose of regulators is not to dance to the tune of rich global corporations and enrich them further; it is to protect the health of their populations. We need complete data transparency for all studies, we need it in the public interest, and we need it now.” এ কথাগুলো ভিন্ন স্বরে এবং বিশেষ আঙ্গিকে বঙ্গীকরণ হয়েছে দাশগুপ্তের প্রবন্ধে।

    ১৯ জানুয়ারি, ২০২২-এ বিএমজে-তে দোশীদের প্রবন্ধটি প্রকাশের পরে ২৪ জানুয়ারি একটি সংশোধনী প্রকাশিত হয়। এখানে বলা হয় – “This editorial by Peter Doshi and colleagues (BMJ 2022;376:o102, doi:) originally stated that the Medicines and Healthcare Products Regulatory Agency (MHRA) has “stopped posting information released in response to freedom of information requests on its website.” The online version has been corrected to say that MHRA’s posting is delayed, not stopped completely. MHRA posted no additional freedom of information requests on its website between 14 August and 28 December 2021. Since 29 December, however, it has posted a selection of materials for responses from July to September.” অর্থাৎ, প্রবন্ধটির একটি ছোট সংশোধনী প্রকাশের প্রয়োজন পড়লো।
    বিজ্ঞানে এরকম ঘটাই তো স্বাভাবিক। কোন একজন মানুষ বা সংস্থা কিংবা জার্নাল বা গোষ্ঠীর কাছে একমাত্র সত্যের কোন লুকনো হীরক খনি নেই। এখানে কোন তত্ত্ব বা ধারণা বা পরীক্ষালব্ধ ফলাফল পেশ করা হয়। আন্তর্জাতিক মহলে বিজ্ঞানী এবং গবেষকরা এ নিয়ে চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণ করেন। পরিণতিতে, গৃহীত হয় কিংবা পরিবর্তিত বা বাতিল হয়। এভাবেই বিজ্ঞান এগোয়।

    পিটার দোশীর আরেকটি প্রবন্ধের যৌক্তিক এবং বৈজ্ঞানিক ভিত্তিকে প্রশ্ন করে বিএমজে-তে অন্য একটি প্রি-প্রিন্ট প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছিল “Comment on the BMJ opinion of the associate editor Peter Doshi about “Pfizer and Moderna’s 95% effective vaccines—we need more details and the raw data” শিরোনামে ফেব্রুয়ারি, ২০২২-এ। লেখকেরা হলেন ভিয়েনা ইউনভার্সিটির পদার্থবিদ্যার দু’জন অধ্যাপক - Dieter Suess এবং Florian Slanovc। আরেকজন ছিলেন Sabrina Dorn, যাঁর অ্যাকাডেমিক পরিচয় দেওয়া হয়নি। তাঁদের প্রবন্ধের সিদ্ধান্ত ছিল – “In summary, we conclude that Peter Doshi’s claim contradicts any reasonable assumption about the false negative rate of the used PCR tests. Furthermore, his argument that false negative tests due to an increase in the false negative rate decrease the reported efficacy of the phase III study, does not hold in principle if in both groups the PCR tests show the same false negative rate.”

    দাশগুপ্তের প্রবন্ধে অন্তর্লীনভাবে রয়েছে, কোভিড টিকার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন – কারণ সমস্ত ট্রায়াল কর্পোরেটদের নিয়ন্ত্রিত, তাদের তৈরি ভূতুরে লেখকেরা (ghost writers) এসব গবেষণাপত্র লেখে এবং বিভিন্ন বিখ্যাত, প্রথমসারির জার্নালে প্রকাশিত হয়। আর আমাদের মতো চিকিৎসক-বিজ্ঞানী-সাধারণ মানুষের দঙ্গল মানসিক উপনিবেশের প্রভাবে চোখ বন্ধ করে এগুলোকে গিলে নিই।

    বিএমজে-তেই ২৭ এপ্রিল, ২০২২-এ প্রকাশিত হয়েছিল “Public health impact of covid-19 vaccines in the United States: observational study” শীর্ষক গবেষণাপত্র। ৭ পৃষ্ঠার এই গবেষণাপত্রে বলা হয় – “In addition to individual level benefits, we observed that vaccines protect communities against severe disease and infection. Higher coverage of vaccines seemed to confer greater levels of community benefits ... Vaccines should be deployed strategically with public health and social measures based on ongoing levels of transmission.” সহজ কথা হল, ভ্যাক্সিন তৈরির নেপথ্যে পূতিগন্ধম, কদর্য কার্যকলাপকে মনে রেখেও টিকার কার্যকারিতা নিয়ে কথা বলা যায় ৩টি স্তরে – ব্যক্তির উপকার, কমিউনিটির উপকার এবং পাবলিক বা জনস্বাস্থ্যের উপকার।

    এর আগে বিএমজে-তে (১৭ মার্চ, ২০২১) প্রকাশিত হয়েছিল “Vaccinating the world against COVID-19: getting the delivery right is the greatest challenge” শিরোনামের প্রবন্ধ। এতে খুব স্পষ্ট ভাষায় বলা হল – “Protecting the global community from the COVID-19 pandemic is not ‘rocket science’, it is much harder than that. Timely delivering the COVID-19 vaccine to the global population will require a strategic all-of-government approach, and an unprecedented all-of-society approach that spans government and the private sector, crossing entrenched economic divisions between
    the Global North and South, as well as burgeoning antiscientific movements that threaten to scuttle dramatic advances before they can even be brought to market.”

    ল্যান্সেট-এ (১৩ জুলাই, ২০২২) প্রকাশিত হয়েছে সুদীর্ঘ গবেষণাপত্র “Effectiveness of a fourth dose of mRNA COVID-19 vaccine against all-cause mortality in long-term care facility residents and in the oldest old: A nationwide, retrospective cohort study in Sweden”। গবেষকদের কোন কর্পোরেট সংস্থা বা অন্য কেউ ফান্ডিং করেনি। এখানে বলা হল – “These findings suggest that a fourth dose may prevent premature mortality in the oldest and frailest even after the emergence of the Omicron variant, although the timing of vaccination seems to be important with respect to the slight waning observed after two months.”

    ল্যান্সেটে (২৩ জুন, ২০২২) প্রকাশিত হয়েছিল – “Global impact of the first year of COVID-19 vaccination: a mathematical modelling study” শিরোনামে গবেষণাপত্র। গবেষকদের ফান্ডিং এসেছিল Schmidt Science Fellowship in partnership with the Rhodes Trust; WHO; UK Medical Research Council; Gavi, the Vaccine Alliance; Bill & Melinda Gates Foundation; National Institute for Health Research; and Community Jameel প্রভৃতি জায়গা থেকে। এই ফান্ডিংয়ের উৎসকে কর্পোরেট ফান্ডিং বলা শক্ত। এখানে বলা হয় – “COVID-19 vaccination has substantially altered the course of the pandemic, saving tens of millions of lives globally. However, inadequate access to vaccines in low-income countries has limited the impact in these settings, reinforcing the need for global vaccine equity and coverage.”

    ১৫ জুলাই, ২০২২-এ ল্যান্সেট-এ প্রকাশিত হয়েছে “ Vaccine effectiveness of one, two, and three doses of BNT162b2 and CoronaVac against COVID-19 in Hong Kong: a population-based observational study”। এদের ফান্ডিংয়ের উৎস হল "কোভিড-১৯ ভ্যাক্সিন ইভাল্যুয়েশন প্রোগ্রাম" এবং "চাইনিজ সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন-এর জোগানো অর্থ – কর্পোরেট পুঁজি নয়। প্রবন্ধের সিদ্ধান্ত – “Third doses of either BNT162b2 or CoronaVac provide substantial additional protection against severe COVID-19 and should be prioritised, particularly in older adults older than 60 years and others in high-risk populations who received CoronaVac primary schedules. Longer follow-up is needed to assess duration of protection across different vaccine platforms and schedules.”
    মোদ্দা কথা হল যে প্রায়-ব্যতিক্রমহীনভাবে এবং কর্পোরেট প্রভাব ছাড়াও কোভিড ভ্যাক্সিন নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অতি বৃহৎ ট্রায়ালগুলো হচ্ছে এবং ভ্যাক্সিনের কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে।

    ১৫ জুলাই, ২০২১-এ নেচার-এ প্রকাশিত হয়েছিল “A long-term perspective on immunity to COVID”। এটি নেচারের আমন্ত্রিত গবেষণাপত্র ছিল। স্বাভাবিকভাবেই কোন ফান্ডিংয়ের প্রসঙ্গ আসেনি। এই স্টাডিতে বলা হয়েছিল – “In evaluating vaccine efficacy, we should not expect the high antibody concentrations characteristic of acute immune reactions to be maintained in the memory phase. It is an old misconception”।
    ক্লিনিকাল এথিক্স জার্নালে (মার্চ, ২০২২) প্রকাশিত হয়েছে (কোন ফান্ডিং ব্যতিরেকে) “How to continue COVID-19 vaccine clinical trials? The ethics of vaccine research in a time of pandemic”। গবেষণাপত্রে সিদ্ধান্ত হিসেবে জানানো হল – “given that currently approved vaccines are clearly more effective than placebo in at least preventing the occurrence of symptomatic COVID-19, we argue that they should be used as controls in future studies, unless there are “compelling scientific reasons to use placebo” which should be clearly identified and documented.”

    কোভিডকালে জনস্বাস্থ্য এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা



    নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিন-এ (আগস্ট ৫, ২০২১) হার্ভার্ড T.H. Chan School of Public Health, Boston-এর তরফে প্রকাশিত প্রবন্ধটি ছিল “Fundamentals of Public Health — A New Perspective Series”। এ প্রবন্ধে বলা হয়েছিল – “The Covid-19 pandemic has awakened many physicians to the value of viewing wellness and disease through the lens of public health as well as that of clinical medicine ... a well-structured and adequately financed public health system would benefit all subpopulations — including children, among whom disparities in prevention and care have profound, life-long effects”। এখানেও কোন কর্পোরেট বদান্যতা ছিলনা।

    আমরা করোনা অতিমারির মৃত্যু মিছিলের সময়ে এবোলার সময়টিকে একবার স্মরণ করি। আইএমএফ এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের চাপে ১৯৯০-এর দশক থেকে শুরু হয় “স্ট্রাকচারাল অ্যাডজাস্টমেন্ট প্রোগ্রাম”। এর ফলে হাই-টেক যন্ত্রপাতি কেনা শুরু হয়৷ প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা একেবারে ভেঙ্গে যায়। যখন এবোলা শুরু হয়েছিল তখন স্বাস্থ্যকর্মীদের কাছে সামান্য গ্লাভস বা মাস্কও ছিলনা।

    কেনেথ শেরিল এবং ক্যারোলাইন সমারভিল তাঁদের “AIDS, Ebola, and Politics” প্রবন্ধে (আমেরিকান পলিটিক্যাল সায়ান্স-এর মুখপত্র পলিটিক্যাল সায়ান্স-এর ২০১৫ সালের জানুয়ারি সংখ্যায় প্রকাশিত) বলেছিলেন যে সিয়েরা লিওন এবং লাইবেরিয়াতে গৃহযুদ্ধের ফলে এবোলা মারাত্মক চেহারা নেয় এবং এই গৃহযুদ্ধের প্রধান কারণ ছিল – “দুর্নীতি এবং কর্তৃত্ববাদী শাসন এবং তদুপরি ঠাণ্ডা যুদ্ধের পরিসমাপ্তিতে পশ্চিমী বিদেশী সাহায্য হারানো” এবং “আইএমএফ-এর তরফে স্ট্রাকচারাল অ্যাডজাস্টমেন্ট পলিসিসমূহকে চাপিয়ে দেওয়া।”
    এর ফলশ্রুতিতে কয়েক হাজার মানুষ এবোলায় অসহায়ভাবে মারা গেছে। মধ্যপ্রাচ্যে তেলের দখল নেবার জন্য আমেরিকা যুদ্ধের জন্য ব্যয় করেছে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বেশি। ম্যালেরিয়া নির্মূল প্রোগ্রামের জন্য বরাদ্দ ১০০ মিলিয়ন ডলার। আর এখন তো আমেরিকা চিনের সাথে “সখ্যের” অজুহাতে খোদ WHO ছেড়েই বেরিয়ে গেছে। যদিও সাম্প্রতিককালে আবার যোগ দিয়েছে।

    ১২ ডিসেম্বর, ১৯৯১, ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ লরেন্স সামার্স একটি গোপন নোট তৈরি করে সহকর্মীদের মধ্যে বিলি করেন, মতামত চান। ১৯৯২-এর ফেব্রুয়ারি মাসে বিখ্যাত পত্রিকা The Economist নোটটি প্রকাশ করে দেয় “Let Them Eat Pollution (ওদেরকে দূষণ খেতে দাও)” শিরোনামে। নোটটির মোদ্দা কথা ছিল, ধনী বিশ্বের সমস্ত প্রাণঘাতী, দূষিত আবর্জনা আফ্রিকা বা কম উন্নত দেশগুলো তথা LDC (Less Developed Countries)-তে পাচার করতে হবে। এজন্য একটি স্বাস্থ্যের যুক্তিও দিয়েছিলেন সামার্স। তাঁর বক্তব্য ছিল আমেরিকার মতো দেশে ১,০০,০০০ জনে ১ জনেরও যদি দূষিত বর্জ্যের জন্য প্রোস্টেট ক্যান্সার হয় তাহলেও এর গুরুত্ব আফ্রিকার মতো দেশগুলোতে যেখানে ৫ বছরের নীচে শিশুমৃত্যুর হার ১০০০ শিশুতে ৫ জন তার চাইতে বেশি। এবং সেখানেই প্রথম বিশ্বের দেশের এই দূষণ পাচার করতে হবে, পাচার করতে হবে এই বিষাক্ত বর্জ্য। এরকম “চমৎকার ও অভিনব” ধারণার পুরস্কার হিসেবে ক্লিন্টন প্রশাসনে ৭ বছর U.S. Treasury Secretary পদে ছিলেন। সে মেয়াদ শেষ হলে হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। এসব পুরস্কারের কথা থাক। সামার্স এখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বিডেনের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা।

    এরকম একটা প্রেক্ষিতে আমরা যদি স্বাস্থ্যের চোখ দিয়ে দেখি তাহলে সহজেই বুঝবো স্বাস্থ্যের জগতে দু’ধরনের নাগরিকত্ব (health citizenship) তৈরি হল। একটি পূর্ণ রাশি ১, আরেকটি ০। আধুনিক জাতিরাষ্ট্রের নাগরিকত্বও এরকম integer দেখা হয় – হয় ০ কিংবা ১। এখানে ভগ্নাংশের কোন জায়গা নেই। যেমনটা আজকের ভারতে এবং বিশ্বে দেখছি আমরা। স্বাস্থ্য নাগরিকত্বের প্রশ্নটিতে আমাদের মনোযোগ দেবার প্রয়োজন এ জন্য যে বিশ্ব স্বাস্থ্যের দুনিয়ায় একজন নাগরিক নৈতিকভাবে স্বাস্থ্যের সমস্ত সুবিধে ভোগ করার অধিকারী, “স্বাস্থ্য আমার অধিকার” এই শ্লোগানের বাইরে। এরকম স্বাস্থ্য নাগরিকত্বের অবস্থান থেকে মান্য জনস্বাস্থ্য গবেষক এবং দার্শনিক (যিনি social determinants of health-এর ধারণার প্রবক্তাও বটে) মাইকেল মার্মট প্রশ্ন করেন – “রোগীদের কেন চিকিৎসা করছো এবং যে পরিস্থিতিতে থেকে তাদের অসুখ শুরু হয়েছিল সেখানে আবার ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছ?” প্রশ্ন করেন সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটানোর জন্য – “আমরা কি হয় ব্যক্তি চিকিৎসক কিংবা ডাক্তার-সমাজ হিসেবে যুক্ত হবোনা?” (“Shouldn’t the doctor, or at least this doctor, be involved?”) (The Health Gap, 2016) আমাদের কাছে সত্যিই কি এসব প্রশ্নের সদুত্তর আছে?

    নিওলিবারাল অর্থনীতি, অতিবৃহৎ বহুজাতিক সংস্থা, নিওলিবারাল অর্থনীতির বাহক ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন এবং পৃথিবীর বড়ো রাষ্ট্রগুলোর চাপে হু নিজের অবস্থান বদলাতে বাধ্য হচ্ছে। “সকলের জন্য স্বাস্থ্য”, “স্বাস্থ্য আমার অধিকার” এবং “সংহত প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা”-র ধারণা ১৯৭৮ থেকেই নিঃসাড়ে বদলাতে শুরু করে। প্রথমে আসে “সিলেক্টিভ প্রাইমারি হেলথ কেয়ার (বেছে নেওয়া প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা)”, তারপরে এলো GOBI (growth monitoring, promotion of oral rehydration, promotion of breast feeding, immunization) এবং পরবর্তীতে খুব খোলাখুলি ভার্টিকাল বা রোগ-কেন্দ্রিক প্রোগ্রাম। কমিউনিটির অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি জীবন্ত ও সক্রিয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রোগ্রাম পরিত্যক্ত হল। এর বিষময় ফল আমরা এই অতিমারির সময়ে প্রত্যক্ষ করছি।

    যদি একটি উজ্জীবিত, প্রাণবন্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে আমরা গত প্রায় ৫০ বছর ধরে তিলেতিলে মেরে না ফেলে, একটি কাঠামো-সর্বস্ব ব্যবস্থা হিসেবে না রেখে যেমনটা ১৯৭৮-এর আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ঘোষণা করা হয়েছিল যে প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থাই হবে দেশের স্বাস্থ্যব্যবস্থার প্রাথমিক ভিত্তি তাহলে একেবারে প্রাথমিক স্তরে আমরা করোনা আক্রমণের সময়ে “টেস্টিং, কনট্যাক্ট ট্রেসিং এবং আইসোলেশন”-এর কথা ভাবতে পারতাম। রোগী এবং সরকার উভয়েরই বিপুল খরচ বাঁচার সম্ভাবনা ছিল। আলমা-আটা সনদের ১০ নম্বর ধারায় যা বলা হয়েছিল তার মূল কথা ছিলো – পৃথিবীর দূরতম প্রান্তের স্বাস্থ্যের সুযোগহীন মানুষটির জন্যও প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা সুরক্ষিত করতে হবে এবং এজন্য স্বাধীনতা, শান্তি, দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনা এবং নিরস্ত্রীকরণের নীতি গ্রহণ করতে হবে যার মধ্য দিয়ে একটি দেশের সুষম বিকাশের জন্য আরো বেশি মানবসম্পদ সৃষ্টি হতে পারে।

    এদেরকে কে বাঁচাবে? একমাত্র সক্রিয় ও জীবন্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা এদের বাঁচাতে পারে। যদি এক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা না যায় তাহলে কোভিডে যত মানুষের মৃত্যু হবে তার চেয়ে বেশি মৃত্যু হবে এ রোগগুলোর জন্য। নেচার-এর “The Pandemic’s Future” (৬.০৮.২০২০) প্রবন্ধের শেষে মন্তব্য করা হয়েছে – “কোভিড-১৯ সংক্রামক ব্যাধির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে দিয়েছে কয়েক বছরের জন্যতো বটেই, এমনকি কয়েক দশকও হতে পারে।” বলা হয়েছে – “একটি সংক্রামক ব্যাধির হাত থেকে (পড়ুন কোভিড) মানুষকে রক্ষা করতে গিয়ে আরেক সংক্রামক ব্যাধিতে মানুষ মারা যাচ্ছে সেটা হল এমন এক শেষ হিসেব যা মানুষ কখনো চায়না।”
    কে দেবে এর উত্তর? রাষ্ট্র, রাজনৈতিক নেতারা কিংবা আক্রান্ত জনসাধারণ? সময় এবং ইতিহাস সেকথা বলবে।

    আসুন, আমরা প্রহর গণি! এই তমসার প্রহরকে চিরে দেখার চেষ্টা করি। কিন্তু অবশ্যই সমস্ত চিন্তা কর্পোরেট এবং রাষ্ট্র গ্রাস করে নিয়েছে এরকম ধারণার বেড়াজাল থেকে বেরোতে হবে। স্বাধীন বিজ্ঞানচর্চা এখনও হয়, হয়ে চলেছে। একে লঘু করা খুব ন্যায্য অবস্থান নয় – কি বিজ্ঞানের দিক থেকে, কি জনস্বাস্থ্যের অবস্থান থেকে।



    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৯ জুলাই ২০২২ | ৯৩৩৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Anirban M | ১৯ জুলাই ২০২২ ১৯:৩৩510048
  • খুব ভালো লাগল ডঃ ভট্টাচার্য। ড: দাশগুপ্তের লেখায় ষড়যন্ত্র তত্ত্বের ছায়া এত দীর্ঘ যে তা প্রায় বিজ্ঞান বিরোধিতার পর্যায়ে চলে গেছে। আপনি ধরে ধরে দেখালেন বলে আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। 
  • a | 2a03:e600:100::29 | ১৯ জুলাই ২০২২ ২০:৪১510049
  • বিশ্বাস গিলায় টিকা তর্কে বহুদূর।
    কি আর করবেন? সক্রিয় জীবন্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থার বদলে কর্পোরেটকে পেটমোটা করাই যখন সরকারের লক্ষ্য। স্রোতের বিরুদ্ধে লড়াই তো লোকে হারার জন্যই করে।
  • Biplab Banerjee | ১৯ জুলাই ২০২২ ২১:১০510050
  • ঋদ্ধ হলাম
  • উত্তান বন্দ্যোপাধ্যায় | 2402:3a80:1cd5:9efb:678:5634:1232:5476 | ২০ জুলাই ২০২২ ০২:০০510059
  • এইসব টিকাগুলি কি বিজ্ঞানের নিয়মে তৈরি হয়েছে নাকি বিপণণের নিয়মে? তথ্য নিয়ে বিচার করুন না মহা মহা চিকিৎসকগণ বা বিজ্ঞানকর্মী বন্ধুরা !
    অতিমারির উৎস ,  তার আসল ব্যাপকতা , মারণক্ষমতা , উপসর্গহীন লোকেদের ওপর সন্দেহের বশে জোর-জুলুম , মুখোশের অবৈজ্ঞানিক বাধ্যবাধকতা , অপরীক্ষিত ভ্যাকসিনের বিপদ - এসব নিয়ে প্রশ্ন তুললেই বিজ্ঞানবিরোধী , এমন কি সর্বাধিক বিকৃত পত্রিকার মতে দেশের শত্রু হিসেবেও 'তকমা'  দেওয়া শুরু হয়েছিল। ক্রমাগত তারস্বরে চলতে থাকা মূলধারা মিডিয়ার একপেশে প্রচার জনমানসে এমন আতঙ্ক , ভীতি এবং হিস্টিরিয়ার সঞ্চার করে যে অনেকেই সরকারি বয়ানের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলাকেই প্রায় ধর্মদ্রোহিতার চোখে দেখতে শুরু করেন।তীক্ষ্ণ যুক্তি এবং তথ্যগুলি অনেকের মধ্যে এমন অস্বস্তির সৃষ্টি করে যে অতিমারির অতিনাটক নিয়ে প্রশ্ন তুললেই 'চক্রান্ত তত্ত্বের সমর্থক' বলে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছিল।
    সেই সময় অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন তুললেও মিডিয়ার স্ব-ঘোষিত বিশেষজ্ঞরা রক্তচক্ষু দেখিয়ে চুপ করিয়ে দেবার চেষ্টা করত। দুঃখ হলো কিছু মানবতাবাদী বিজ্ঞান ও মানবাধিকারকর্মীও ভুল করলেন প্রতিবাদ না করে। এ রকমই অস্বস্তিকর একটি প্রশ্ন ছিল কোন্ তথ্যের ভিত্তিতে এবং কাদের পরামর্শে আমাদের দেশের সরকার লকডাউনের মতন এমন একটি পদক্ষেপ নিলেন যা জনস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অপরিচিত এবং অপরীক্ষিত ?
    শুধু তাই নয় , জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও মহামারী বিদ্যায় 'লকডাউন' শব্দটির অস্তিত্বই নেই ,  বরং তা ছিল মধ্যযুগীয় শাসন ব্যবস্থার একটি উপাদান। 
    উত্তর দেবার কোন দায় ছিল না , কারণ তখন যুদ্ধ চলছে অদৃশ্য এক ভাইরাসের বিরুদ্ধে। যুদ্ধটা যে আসলে সমাজের নিচুতলার মানুষের বিরুদ্ধে , বিজ্ঞান ও যুক্তির বিরুদ্ধে ,  এমনকি মানবতার বিরুদ্ধে তা অচিরেই প্রমাণ হলো।
    মাইলের পর মাইল শুধু পথ হেঁটে প্রাণ হারালেন প্রায় এক হাজার পরিচায়ী শ্রমিক । ক্লান্ত , ক্ষুধার্ত এবং তৃষ্ণার্ত মানুষদের সাহায্যে এগিয়ে এলো না কোন নির্বোধ যুদ্ধের সেনাপতিরা। বিপুল অর্থ খরচ করে আকাশ থেকে পুষ্পবৃষ্টি করা হলো ফ্রন্টলাইন চিকিৎসক সেনানিদের। হাসপাতালে চিকিৎসকেরা তখন ব্যারাকের সেনাই বটে !  রেজিমেন্টেড চিকিৎসা পদ্ধতি চালু হলো । নিত্যনতুন রেজিম বা প্রোটকলের অদল বদল , অপরীক্ষিত ও বিপজ্জনক  নানা ওষুধের অবারিত ব্যবহার যুদ্ধের মোক্ষম অস্ত্রে পরিণত হলো। যুদ্ধের পরিভাষায় অপ্রয়োজনীয় এবং অন্যায় মৃত্যুকে 'কোল্যাটারাল ড্যামেজ' এর বলি হিসেবে ধরা হয়। এখানেও তাই হলো ।
    কিন্তু যারা এমন চিকিৎসার প্রোটকল রচনা করলেন এবং রোগ প্রতিরোধের এমন নিদান দেখালেন যা অসুখটির থেকেও মারাত্মক । তারা কোন তথ্যের ভিত্তিতে , কোন অধিকার বলে এবং কাদের নির্দেশে জনস্বাস্থ্য নিয়ে আনাড়ির মতো এমন বিপজ্জনক খেলায় মত্ত হলেন?
     
    সাধারণ মানুষের গত শোয়া দুবছরের দুর্দশা আরো ভয়াবহ ও চিরস্থায়ী করতে সরকারি স্তরে প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে। খবরে প্রকাশ, সংসদে পেশ হতে চলেছে "জনস্বাস্থ্য বিল ২০২২"। এই প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসেবে প্রস্তাবিত জাতীয় জনস্বাস্থ্য আইনের খসড়া নিয়ে নীতি আয়োগ ও কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আদান প্রদানের কথাও জানা গিয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের মতে, ২০১৭র জনস্বাস্থ্য বিলের খসড়ার আদলেই তৈরি হয়েছে এই নতুন বিল। কোভিড জমানার তিন বছর আগে তৈরি হওয়া সেই খসড়ার কিছু মনিমুক্ত:-
    ক) পোষাকি নাম- The Public Health (Prevention,Control and Management of Epidemics, Bio-terrorism and Disasters)Bill,2017.
    খ) নাম থেকেই স্পষ্ট জনস্বাস্থ্য এখানে উপলক্ষ মাত্র । নইলে মহামারি, জৈবসন্ত্রাস আর বিপর্যয় কী উপায়ে এক ছাতার তলায় জায়গা পায় ? অসুস্থ নাগরিককে জৈব সন্ত্রাসবাদী হিসেবে  চিহ্নিত করতেই কি এই বিল?
    গ) আশ্চর্যের বিষয় "সামাজিক দূরত্ব" এই ধারণাটি ২০২০ - এর মার্চের পরে গোটা বিশ্বের নজরে এলেও ২০১৭ - এর ফেব্রুয়ারিতে প্রকাশিত খসড়ায় সেটির গুণাগুণ ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
    ঘ) জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও আপৎকালীন পরিস্থিতি তৈরি হলে বা পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে যদি সরকার মনে করে তবে এই আইন লাগু হবে। আইন বলবৎকারীর বিরুদ্ধে কোন মামলা করা যাবে না।
    ঙ) স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরী পরিস্থিতি কোথাও তৈরি হয়েছে কিনা জানতে দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী বা সরকার মনোনীত কোন ব্যক্তি যে কোন নাগরিকের বাসস্থানে কোন নথি ছাড়াই তল্লাশি চালাতে পারবেন।
    চ) আক্রান্ত বা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এই রকম ব্যক্তি বা গোষ্ঠী কে বিচ্ছিন্নবাসে পাঠাতে , স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে , চিকিৎসা করাতে , এমনকি টিকাকরণ করতেও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠী র কোন সম্মতি লাগবে না।
    ছ) প্রয়োজনে বাজার-দোকান শিক্ষা বা অন্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া যাবে।
    জ) সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা আছে মনে হলে যেকোনো জিনিস ধ্বংস করা যাবে।
    ঝ) এই আইন না মানলে দু বছর পর্যন্ত কারাবাস বা এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
    ঞ) সংবিধান অনুযায়ী স্বাস্থ্য রাজ্যের বিষয়ে হলেও এই আইন বলবৎ থাকাকালীন রাজ্য সরকার গুলি জনস্বাস্থ্য বিষয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তই মেনে চলতে বাধ্য থাকবে।

    আইনের সাঁড়াশি আমাদের ঘাড়-মটকানোর আগে কিছু প্রশ্ন:-
    ১) ৯৭ বছর কোন মহামারি/ অতিমারি না-হলেও ২০১৭-এ সরকার কেন মহামারী রুখতে বিল আনলো?
    ২) সেই প্রস্তাবিত বিলের সঙ্গে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কোভিড বিধির এত মিল কেন?
    ৩) মহামারী / অতিমারি রুখতে সরকারের দায়িত্বের দিকটি কেন বিলে অনুপস্থিত?
    ৪) জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত আপৎকালীন পরিস্থিতি কীসের ভিত্তিতে ঠিক করা হবে বা কারা করবে?
    ৫) জনস্বাস্থ্যের কথা বলা হচ্ছে অথচ জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত সকলের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য , পানীয় জল , বাসস্থান , প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার কোন অঙ্গীকার নেই কেন ২০১৭ সালের বিলে? (২০২০ সালের কোভিডের কথা তো তখন অজানা!)
    ৬) ব্রিটিশ রাজত্বের "মহামারী আইন ১৮৯৭" রদ করার অজুহাতে তার মানবাধিকার পরিপন্থী অংশগুলি প্রস্তাবিত আইনে আরো মজবুত করা হলো কেন এটা কি স্বাধীন দেশের নাগরিককে পরাধীন করার চেষ্টা? 
     
    মুষ্টিমেয় বৃহৎ কর্পোরেট পুঁজির বাদ দিলে,গোটা দেশের অর্থনীতি তখন লকডাউনের ঠেলায় শুয়ে পড়েছে,চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় অন্যান্য গুরুতর অসুখ বিসুখে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে, তখনও আমরা‌ প্রশ্ন করিনি, জনস্বাস্থ্য আসলে কী ও তার সুরক্ষার নামে কেন উন্মাদনা?
    •এমনিতেই আমাদের দেশে প্রতিদিন গড়ে অপুষ্টিজনিত এবং সংক্রামক অসুখে ২০০০ শিশুর মৃত্যু হয়।[১]
    •নির্দিষ্ট চিকিৎসা থাকা সত্ত্বেও, প্রতিদিন গড়ে ১৪০০ অর্থাৎ প্রতি বছর প্রায় ৪.৮ লক্ষ মানুষ আমাদের দেশে যক্ষায় বা টিবি রোগে মারা যায়।[২]
    •পথ দুর্ঘটনায় আমাদের দেশে প্রতিদিন প্রায় ৪১৫ জনের এবং বছরে দেড় লাখ লোকের মৃত্যু হয়,[৩] যা পৃথিবীর মধ্যে সর্বোচ্চ।

    এসবগুলো কেন সংবাদ সংস্থায় চর্চিত বিষয় হয় না ? 

    আজ তো জবাব দিতেই হবে যে কোভিডের নামে এহেন অন্যায় যা নাগরিক জীবনকে নরক করে দিয়েছে , বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদের নামে !

    সূত্র:-
    [১] https//thewire.in/health/infant-deaths-india
    [২] https://www thehindubisinessline.com/news/national/india-must-fight-tb-harder-as-disease-claims-1400-every-day/article9600480.ece
    [৩] https://economictimes.com/news/politics-and-nation/road-accident-scenario-more-dangerous-than-coronavirus-in-india-says-nitin-gadkari/articles how/80899508.cms
     
     
    আজ জবাব চাওয়া হোক -

    প্রায় আড়াই বছর আগে , তালি ও থালি বাজানোর জগঝম্পে শুরু হয়েছিল অভিনব এক ত্রাসের আবহসংগীত।জনজীবন স্তব্ধ করে দেবার নতুন কৌশলের সাথে আমরা পরিচিত হয়েছিলাম- জনতা কার্ফু। ২৪ মার্চ, ২০২০, মাত্র চার ঘন্টার নোটিশে সারা দেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল।[১] ঘটনার আকস্মিকতায় আমরা এতটাই বিহ্বল ছিলাম যে, সেদিন প্রশ্ন করিনি, যে অসুখে সেই দিন অবধি মাত্র ১২ টি মৃত্যু ও ৫০০ টি সংক্রমণ ঘটেছে,[২], তাকে মোকাবিলা করতে গোটা দেশের ১৩৮ কোটি মানুষকে তালাবন্দি করে ফেলতে হবে , এ কেমন বিজ্ঞান বা যুক্তিবাদ?

    সূত্র:-
    [১] https://www.bbc.com/news/world-asia-india-52360757
    [২] https://www.thehindu.com/news/national/pm-announces-21-day-lockdown-as-covid-19-toll-touches-10/article31156691.ece
     
  • উত্তান বন্দ্যোপাধ্যায় | 2402:3a80:1cd5:9efb:678:5634:1232:5476 | ২০ জুলাই ২০২২ ০২:২১510060
  • পুনশ্চ: জয়ন্তবাবুর লেখার শেষের দিকের কয়েকটি লাইন তুলে দিলাম।:-
     
    "[এদেরকে কে বাঁচাবে? একমাত্র সক্রিয় ও জীবন্ত প্রাথমিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা এদের বাঁচাতে পারে। যদি এক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা না যায় তাহলে কোভিডে যত মানুষের মৃত্যু হবে তার চেয়ে বেশি মৃত্যু হবে এ রোগগুলোর জন্য। নেচার-এর “The Pandemic’s Future” (৬.০৮.২০২০) প্রবন্ধের শেষে মন্তব্য করা হয়েছে – “কোভিড-১৯ সংক্রামক ব্যাধির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে দিয়েছে কয়েক বছরের জন্যতো বটেই, এমনকি কয়েক দশকও হতে পারে।” বলা হয়েছে – “একটি সংক্রামক ব্যাধির হাত থেকে (পড়ুন কোভিড) মানুষকে রক্ষা করতে গিয়ে আরেক সংক্রামক ব্যাধিতে মানুষ মারা যাচ্ছে সেটা হল এমন এক শেষ হিসেব যা মানুষ কখনো চায়না।”]"]্্
    _________________
     
     
    তাহলে কে দায়ী? রাষ্ট্রের নয় , অতি রাষ্ট্রীক কোনো সংস্থাও নয় , কর্পোরেটও নয়, আবার হু, ল্যানসেট , সিডিসি সবাই পবিত্র ধাম। প্রচুর তথ্যের বিয়ে শেষে উপসংহার কেমন যেন এক অতিসরল ভাষ্য। 
    অদ্ভুত লাগলো।
     
  • জয়ন্ত ভট্টাচার্য | 59.94.30.24 | ২০ জুলাই ২০২২ ০৯:০১510067
  • উত্তানবাবুর এত লম্বা কথার উত্তর দেওয়ার জন্য যে ধৈর্য এবং পরিশ্রম দাবী করে তা আমার এখন আর নেই। সংক্ষেপে বলি -
    গোটা লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়লে সিদ্ধান্তের এই বিপত্তি হতনা। সংক্ষিপ্ত পরিসরে ১৯৭৮ থেকে কর্পোরেট পুঁজির চাপে ১৯৭৮ পরবর্তী সময়ে হু-র অবস্থান পরিবর্তনের কথা স্পষ্ট ভাষায় বলা হয়েছে। 
    এমনকি লরেন্স সামার্সের গোপন নোটের কথাও মনে করা হয়েছে। 
    বিজ্ঞানের কোন দেবতা, বাবাজি বা Holy Grail নেই। যখন যতটুকু জানা যায়, যা যৌক্তিকভাবে বোঝা যায় সেটুকুই বিজ্ঞানের পুঁজি। 
    বিজ্ঞানে ছায়ার সঙ্গে কুস্তি করে গাত্র হল ব্যথা হয়না।
  • mou | 2a0b:f4c2:1::1 | ২০ জুলাই ২০২২ ১২:৪৩510071
  • উত্তানবাবুকে ধন্যবাদ। জনস্বাস্থ্য আইনটির দিকে তাকালেই যৌক্তিকভাবে বিজ্ঞানটা বেশ বোঝা যাচ্ছে।
  • তমা দাস। | 2409:4061:2d31:951d:9561:2ff9:4f32:804c | ২০ জুলাই ২০২২ ২১:২৪510081
  • ঋদ্ধ হলাম। 
  • উত্তান বন্দ্যোপাধ্যায় | 43.251.90.241 | ২১ জুলাই ২০২২ ০১:২২510084
  • ডাঃ জয়ন্তবাবুর লেখাতেও  উনি দুইদিকে দুলেছেন। তৃতীয় অন্যর মতামত নিলে ভাল। 
    স্থবির দাশগুপ্তর লেখায় কোথায় খামতি সেটা ডিরাইভড হয়নি কিন্তু ডাঃ জয়ন্তবাবুর লেখায়।  ডাঃ জয়ন্তবাবু  একাধিকবার বলেছেন এই সমস্ত ঘটনার পিছনে চক্রান্তকারী হু বা কর্পোরেটরা নয় , আবার অন্যদিকে উনি এটাও বুঝিয়েছেন যে জনস্বাস্থ্য কে ব্যর্থ করার খেলাও চলেছে - গোপন নথির উদাহরণ দিয়েছেন , ইত্যাদি।
    শেষে উপসংহারে তাই ঘোলা জলের ঘোলাটে দৃষ্টি তে মনে হয়েছে যে মানুষের কাছাকাছি থাকার জন্য ওনাকে বৃহৎ শক্তির শোষন ও তঞ্চকতা , কপটতাকে উন্মোচন করতেই হবে , আবার এও বলেছেন , যদিও কর্পোরেট রা এমন কোন চক্রান্তে নেই - যারা বলেন , বরং তারাই চক্রান্ততত্ত্বের থিয়োরি সামনে আনেন। তাই বলেছি , ব্যাপারটা অদ্ভুত ঠেকলো।
    এর উত্তর তাই ভাবলাম "কোভিড - অন্য ভাষ্য" তেই দেওয়া উচিত। তাই রিভার্টোর লিখেছি।
    তবে বিজ্ঞান সম্পৃক্ত কোন বিষয় এক স্থবিরতায় থাকে না - এ ব্যাপারটা বুঝেছি সংজ্ঞা হিসেবে , কিন্তু বলার সময়ে কোভিড সংক্রান্ত অন্যায়ের এক কনাও লেখেন নি এটাও দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
  • Milan Joardar | 111.93.173.11 | ২১ জুলাই ২০২২ ১৫:২৯510089
  • চোপ, বিজ্ঞান চলছে! 
    এখানে ক্ষমতার দম্ভে একরাশ ছাইপাঁশ গেলানোর স্বীকৃতি রয়েছে। কিন্তু, বিরুদ্ধ-মত শোনার 'ধৈর্য আর পরিশ্রম' নেই।
    আর কে না জানে কোভিড আর কর্পোরেট-এর হাত ধরেই সাম্য সমাগত।
    সাবাশ, কমরেড!
  • বামদেব ঘড়ুই | 202.142.78.197 | ২১ জুলাই ২০২২ ২১:৫২510097
  • অনেক ধৈর্য নিয়ে এবং পরিশ্রম করে, তবেই এইরকম একটি জঘন্য বাংলা ইংরেজি মেশানো খিচুড়ি ভাষার প্রবন্ধ পড়ে ওঠা সম্ভব।সম্মানীয় ডাক্তার বাবুকে বলবো, বাংলা অথবা ইংরেজি আপনি যেই ভাষায় স্বচ্ছন্দ বোধ করেন সেই ভাষাতেই লিখুন। 
    আপনি বলেছেন, দাশগুপ্তর লেখাতে কিছু সত্য আছে। তাহলে বাকি কোন কথা গুলি অসত্য? কোনটি সত্য এবং কোনটি অসত্য, যদি সৎ সাহস থাকে স্পষ্ট করে বলুন।
    আপনি বলেছেন উনি সত্যকে ব্যবহার করে নিজের মর্জি মাফিক বিজ্ঞান ও জনস্বাস্থ্য নিয়ে অসম্পূর্ণ বক্তব্য রেখেছেন। সত্যকে ব্যবহার করা কি অন্যায়? নাকি আপনার মত অর্ধসত্যকে ব্যবহার করে লোকের চোখে ঘোলাটে চশমা পরিয়ে দেওয়াটাই দস্তুর? 
    পিটার দোশীর যে লেখাটি স্থবির দাশগুপ্ত উল্লেখ করেছেন, সেই লেখাতেই লেখক পরিচিতি হিসেবে লেখা আছে সিনিয়র এডিটর। এই শব্দের বাংলা কি হবে বলে আপনার মনে হয়? 
    বাংলা ভাষা নিয়ে আপনার যথেষ্ট অভিমান আছে, কিন্তু কতদূর কান্ডজ্ঞান আছে, সেটা আপনার বিচিত্র বাক্য গঠন দেখলেই বোঝা যায়।
    জনস্বাস্থ্য নিয়ে আপনার জ্ঞান সুবিদিত। সোজাসাপ্টা উত্তর দিন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কি বর্তমানে কর্পোরেট,বিশেষত বৃহৎ ফার্মা কোম্পানিগুলির ক্রীড়নক নয়? 
    ব্রিটিশ মেডিকেল জার্নাল, ল্যান্সেট, নেচার -এইসব পত্রিকার নাম একমাত্র আপনিই জানেন, এবং সেগুলির পাঠোদ্ধার একমাত্র আপনিই করতে পারেন, তাই আপনাকে প্রশ্ন করছি, কোন প্রবন্ধের নিচে কেন লেখকের কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট বা স্বার্থের সংঘাত কিছু আছে কিনা কেন তা স্পষ্ট করতে হয়? 
    আপনি যে তথাকথিত প্রবন্ধটি লিখেছেন, তাতে কোন স্বার্থের সংঘাত আছে কিনা দয়া করে আমাদের জানাবেন?
  • জয়ন্ত ভট্টাচার্য | 2409:4061:213:cdc5:568f:346a:26f6:598a | ২১ জুলাই ২০২২ ২২:৫৮510098
  • আমি সচরাচর ব্যক্তিগত আক্রমণকে উপেক্ষা করার চেষ্টা করি। কিন্তু বামদেব ঘড়ুইয়ের আক্রোশ এবং বিবমিষা মিশ্রিত আক্রমণের জন্য কিছু কথা বলতে বাধ্য হচ্ছি।
    (১) মানুষটি মনোযোগ দিয়ে লেখা পড়েন নি। আসলে "authority-worship"--এর উন্মাদনা তীব্র হলে স্বাভাবিক ভাবেই ণত্বসত্ব জ্ঞানের বিলুপ্তি হয়। এটাই স্বাভাবিক। 
    (২) স্থবির দাশগুপ্ত কি বলতে চেয়েছেন বলে আমি মনে করি সেকথা লেখার শুরুতেই বলেছি। 
    (৩) আমার স্বল্প জ্ঞানের জন্য বাংলা-ইংরেজি মিশিয়ে লিখেছি প্রাজ্ঞজনেরা বুঝে নেবেন এই ভরসায়। এতে লেখার কোন মানহানি হয় বলে বোধহয় কেউই মনে করেন না।
    (৩) আমি স্থবির দাশগুপ্তের দেওয়া একমাত্র রেফারেন্স নিয়ে বলেছি "দোশীদের"। ওঁদের লেখা আবার ভালো করে দেখুন। 
    (৪) বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার ফান্ডিং নিয়ে অল্প আলোচনা করেছি। সবাইকে দ্রুত ক্রীড়নক বানাবেন না। তাহলে আর স্বাধীন পরিসর কোথাও খুঁজে পাবেন না। বাজার তো আপনাদেরও নিত্যদিন নির্মাণ করে। বাজারের বাইরে অবস্থান করে তবে বাজার-বিরোধী বুকনির কোন বাস্তবতা থাকে। 
    (৪) অমনোযোগী পাঠের সবচেয়ে নিদারুণ উদাহরণ হল আমি সবকটি রিসার্চ পেপারের ফান্ডিংয়ের উৎস উল্লেখ করার পরেও আবার আমাকে প্রশ্ন করছেন।
    এখানেই শেষ। সত্য সেলুকাস, কি বিচিত্র এই দেশ! পুঁটি মাছের কথাও আমাদের মনে আসতে পারে।
    বাংলায় লেখা একটি প্রবন্ধ পরে পোস্ট করছি। 
  • বামদেব ঘড়ুই | 202.142.78.197 | ২২ জুলাই ২০২২ ০০:০০510103
  • বর্তমানে হু এর প্রধান অর্থদাতা কে? 
    পন্ডিতমশাই নিশ্চয়ই জানবেন, বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন এবং গ্লোবাল এলেন্স ফর ভ্যাকসিনস এন্ড ইমুনাইজেশন সংক্ষেপে গাভী এই দুটি সংস্থা একত্রিতভাবে, সাম্প্রতিককালে ওকে সবচেয়ে বেশি অর্থ যোগান দিয়েছে। ২০১৯ এর হিসাব অনুযায়ী মোট অর্থের ১৬ শতাংশ। যা পৃথিবীর অন্য যেকোনো রাষ্ট্রের দেওয়া অর্থের তুলনায় বেশি। দুটি সংস্থায ই মহামতি বিল গেটসের মালিকানাধীন। এই সংস্থাগুলি দাবি করে যে তারা অর্থ অনুদান দেয় না, বিনিয়োগ করে।
    কয়েক মাস আগে হু এর প্রধান পুস্তিকার মুখবন্ধে লিখেছেন এখন  জনস্বাস্থ্যে বিনিয়োগের জন্য  হু 
    সবচেয়ে লাভজনক সংস্থা। এক ডলার বিনিয়োগ করলে ফেরত আসবে ৩৫ ডলার। পুস্তি কাটির নাম A Healthy Return। 
    বাজারি বুকনি কাকে বলে, সেটা তীদ্রসের পুরো মুখবন্ধটা পড়লে আরো ভালো বুঝতে পারবেন।
    ডাক্তারবাবু এদিক ওদিক নানান তথ্য হাত রে বেড়ান, এবার এই পুস্তিকাটি ডাউনলোড করে একটু চোখ বুলিয়ে নিন। বুঝতে পারবেন অন্ধের হস্তি দর্শনে আপনি কতখানি সার্থক।
    বিরোধী বক্তব্য এবং প্রশ্নগুলোকে মনোযোগ দিয়ে শুনুন। ছেদো অজুহাত দেখিয়ে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করবেন না।
  • π | ২২ জুলাই ২০২২ ০০:০৯510106
  • জনস্বাস্থ্য তো বরাবরই হেলদি রিটার্ন! 
    আ স্টিচ ইন টাইম সেভস কত যেন লাইভস?  শোনেননি বাম্বাবু? 
     
    DALY ও শুনেছেন কি?  বা, মানেটা জানেন?  কবে থেকে ব্যবহারে?  জানাবেন, বাম্বাবু।
  • বামদেব | 202.142.78.197 | ২২ জুলাই ২০২২ ০০:৩৪510113
  • http://36. https://apps.who.int/iris/bitstream/handle/10665/354372/9789240050006-eng.pdf
    জ্ঞানী লেখক ও নামগোত্র হীন স্তাবকএই লিঙ্ক টা খুলে দেখুন।  কোন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দিতে কেন যে এরা শরমে মরে যান সেটা যেমন সন্দেহজনক তেমনি আশ্চরযের ও
  • জয়ন্ত ভট্টাচার্য | 59.94.29.248 | ২২ জুলাই ২০২২ ০৯:১৭510131
  • এরকম উত্তেজিত যারা হয়ে পড়েছেন এবং critique-কে তীব্র ব্যক্তিগত আক্রমণের স্তরে নিয়ে যাবার কুশলতা দেখাচ্ছেন তাদের বৌদ্ধিক ও মানসিক অবস্থানের জন্য ধন্যবাদ। দুটি বিষয় কষ্ট নিয়ে ভেবে দেখতে পারেন।
    (১)  philanthropocapitalism আজ কিভাবে ফিনান্স ক্যাপিটালের নতুন চেহারা হচ্ছে
    (২) স্বাস্থ্য কিভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবায় রূপান্তরিত হল, হয়ে উঠলো commodity. 
    (৩) ১৯৭৮ থেকে হু কিভাবে ধীরে ধীরে নিজের অবস্থান বদলাতে বাধ্য হল। শুধু কোভিডের পরে হু-কে নিয়ে গেল গেল রব তুলে কোন লাভ হবেনা।
  • জয়ন্ত ভট্টাচার্য | 59.94.29.248 | ২২ জুলাই ২০২২ ০৯:১৭510130
  • এরকম উত্তেজিত যারা হয়ে পড়েছেন এবং critique-কে তীব্র ব্যক্তিগত আক্রমণের স্তরে নিয়ে যাবার কুশলতা দেখাচ্ছেন তাদের বৌদ্ধিক ও মানসিক অবস্থানের জন্য ধন্যবাদ। দুটি বিষয় কষ্ট নিয়ে ভেবে দেখতে পারেন।
    (১)  philanthropocapitalism আজ কিভাবে ফিনান্স ক্যাপিটালের নতুন চেহারা হচ্ছে
    (২) স্বাস্থ্য কিভাবে স্বাস্থ্য পরিষেবায় রূপান্তরিত হল, হয়ে উঠলো commodity. 
    (৩) ১৯৭৮ থেকে হু কিভাবে ধীরে ধীরে নিজের অবস্থান বদলাতে বাধ্য হল। শুধু কোভিডের পরে হু-কে নিয়ে গেল গেল রব তুলে কোন লাভ হবেনা।
  • জয়ন্ত ভট্টাচার্য | 59.94.29.248 | ২২ জুলাই ২০২২ ০৯:৩৫510132
  • হু নিয়ে আমার এ লেখাটি পড়লেও পড়ে দেখতে পারেন। এ লেখার আরেকটি ভার্সন গুরুচণ্ডালীতেই বছর তিনেক আগে প্রকাশিত হয়েছিল। 
     
  • dc | 2401:4900:1cd0:b700:2853:5b3f:59b0:2ede | ২২ জুলাই ২০২২ ০৯:৪৪510133
  • ডঃ জয়ন্ত বাবুকে বলার ছিল যে আপনার লেখাটা আর রিবাটাল খুবই প্রাসঙ্গিক মনে হলো। এই ধরনের সামারি লেখা খুব জরুরি, বিশেষ করে ডেটা ড্রিভেন বা এভিডেন্স বেসড রিসার্চের দিক থেকে। লেখায় আপনি যে সোর্সগুলো ব্যবহার করেছেন, লেখার শেষে সেগুলোর একটা লিস্ট দিয়ে দিলে বোধায় আরেকটু ভালো হতো। 
     
    আরেকটা বলার ছিল, অ্যান্টি ভ্যাক্সার দের সাথে বেকার তর্ক করে সময় নষ্ট করার দরকার আছে কি? ওনাদের একটা নির্দিষ্ট অ্যাজেন্ডা থাকে, যেটা আপনি হাজার চেষ্টা করলেও পাল্টাতে পারবেন না। আমার মতে সোভারেন সিটিজেন, ফ্ল্যাট আর্থার, অ্যান্টি ভ্যাক্সার ইত্যাদিদের সাথে এনগেজ করার চেয়ে নিজের কাজ করাটা বেটার :-) 
  • cb | 2a0b:f4c2:1::1 | ২২ জুলাই ২০২২ ১০:২২510134
  • অ্যান্টি ভ্যাক্সার, এনভায়রনমেন্টালিস্ট, হিউম্যান রাইটস ওয়ার্কার এদের সঙ্গে তর্ক বেকার। বাংলায় এদের ব্যাগড়াবাদি বলে। আমাদের প্রিয় প্রধানসেবক এদের ঠাণ্ডা করে দেবেন। 
  • জয়ন্ত ভট্টাচার্য | 2409:4061:2e0f:1ed9:7ddf:c767:4868:858f | ২২ জুলাই ২০২২ ১১:১৪510139
  • ধন্যবাদ dc, cb!
  • উত্তান বন্দ্যোপাধ্যায় | 43.251.90.241 | ২২ জুলাই ২০২২ ১৬:৫৭510146
  • এ্যান্টিভ্যাক্সার কারা? তারাই যারা কোনভাবেই কোনো ভ্যাক্সিনেই বিশ্বাস রাখেন না। এখানে তো প্রসঙ্গটি অন্য। কেউ ভ্যাক্সিন নেবার পরেও তো বুঝতে পারেন বা প্রতিবাদ করতে পারেন । তার মানে যারা ভ্যাক্সিন নিয়েছেন মেনে নিয়েছেন , আর যারা ভ্যাক্সিন নেন নি মেনে নেননি - এই বাইনারি তে বিতর্ক করলে ভাল , কারণ তাতে যুক্তিবাদ উধাও করে দেওয়া যেতে পারে , প্রয়োজনে হুমকিরও আমদানি হতে পারে। ভ্যাক্সিন যারা নিয়েছেন তারা অধীর আগ্রহে ছিলেন ভ্যাক্সিন কবে আসবে আর আমরা সবাই মুক্তি পাবো , এটা তো মিথ্যে ভাষ্য। ভ্যাক্সিন নেওয়ার জন্যে ভ্যাক্সিন কোম্পানি , মিডিয়া ও সরকারের মতোই 'চাপ' এ বিশ্বাস করতেন কিছু আগুণখোর বিপ্লবীও। বলা বাহুল্য , বাম নামী বিপ্লবীও। যেন এমনই , কোথাও জবরদস্তি করা হয়নি , সবাই ভালবেসে নিয়েছেন। যারা নিয়েছেন , তাদেরও এতোদিন বাদে তো এ বোধোদয়ও আসতে পারে নাকি যে 'হলো টা কি' !
    বিতর্কটা - কে ভ্যাক্সিন নিলেন আর কে নিলেন না , এটা নয়। প্রথমতঃ কোনও নীতিমালাই গ্রহণ করা হয়নি ভ্যাক্সিন দেওয়ায় , এবং এই যে নিদান ,সেটাও অপরীক্ষিত। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন আসে সুপ্রীম কোর্ট কেন ম্যানডেটরি ভ্যাক্সিনেশন বাতিল করলো? তারমানে , ম্যানডেটরি ভ্যাক্সিনেশন চলছিল। এবার প্রশ্ন আসে , কেন তা চলছিল? তাতে কার স্বার্থ সুরাহা হচ্ছিল? স্বভাবতই প্রশ্নগুলো পর পর চলে আসে। এ্যান্টিভ্যাক্সার দাগিয়ে দিয়ে বা হুমকি দিয়ে প্রশ্নের উত্তরে পাশ কাটানো যায় অবশ্য। এই তো ? যাতে RTPCR নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না , যাতে মোট মৃত্যু কত , কিভাবে এসব নিয়ে চুল চেরা প্রশ্ন করা যাবে না , যাতে প্রোটকল বা চিকিৎসার নিদান নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না , যাতে প্যানডেমিক কি , কেন ও কতটা বা তার সংজ্ঞা কি ছিল বা কেন পাল্টালো এসব নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না , হু নিয়ে বা সিডিসি নিয়ে প্রশ্ন করা যাবে না , হু কেন চাইছে প্যানডেমিক ট্রিটি বা দেশগুলোই বা নতুন করে স্বাস্থ্য আইন  কেন বদলাতে চলেছে প্রশ্ন করা যাবে না - এই তো !
  • ঋদ্ধিমান বসু | 103.52.247.71 | ২২ জুলাই ২০২২ ১৯:৫৫510149
  • অ্যান্টিভ্যাক্সার বলাটা ও একটা ষড়যন্ত্র কিন্তু। অ্যান্টিভ্যাক্সার মানে কি - যারা সবরকমের ভ্যাক্সিন এরই বিরুদ্ধে, ভ্যাক্সিনেশন প্রক্রিয়া তেই বিশ্বাসী নয়। সেরকম কেউ একেবারে নেই তা বলছি না। তবে বেশিরভাগই, এবং এখানে যারা তর্ক করছেন, তাঁরা কিন্তু ছোটবেলা থেকে নানান ভ্যাক্সিন নিয়ে বড় হয়েছে। আমিও তাই। এঁরা শুধু কোভিড ভ্যাক্সিনের বিরোধিতা করছেন, নানান সঙ্গত কারণে। এখন এদের সবাইকে অ্যান্টি ভ্যাক্সার বলে দাগিয়ে দেওয়া, মানে অনেকটা সেই কোভিড ভ্যাক্সিন স্কেপটিক দের ফ্যাট আর্থার বলে দাগিয়ে দেবার মত; একটা ক্যাটেগরি তে ফেলে দেওয়া। এরকম ক্যাটেগরি তে ফেললে, মূর্খ, অশিক্ষিত ইত্যাদি, ওদের কথা ফালতু এসব বলে নিজেকে স্বান্তনা দেওয়া যায়। 
    এটা মেন্সট্রিম মিডিয়ার প্রোপাগ্যান্ডা। যারা কোভিড ন্যারেটিভ এ ব্রেনওয়াশড হয়েছেন, তাদের যে এইটাও খুব পছন্দ হবে বলাই বাহুল্য।
     
  • বামদেব ঘড়ুই | 202.142.78.197 | ২২ জুলাই ২০২২ ২০:০৮510152
  • অত বিচলিত হবেন না জয়ন্ত বাবু। পাল্টা প্রশ্নগুলো আরো তীব্র হবে। আপনার স্তাবকরা ঠান্ডা করে দেবার ভয় দেখাচ্ছে। তাতে লাভ কিছুই হবে না। 
    দারুন একটি কাজের কথা বলেছেন ,phillanthrocapitslist এখন ফিনান্স ক্যাপিটাল এর নতুন চেহারা নিয়েছে। সঠিক বলেছেন।
    প্রশ্ন হচ্ছে ১.আজকের দুনিয়ায় সবচেয়ে বড় phillanthrocapitslist কে? 
    ২.যে অসরকারি সংগঠনের মাধ্যমে philanthropic কাজকর্মের আড়ালে রাষ্ট্রগুলির নীতি কে প্রভাবিত করছে phillanthrocapitslist রা, বিশ্বের সর্ববৃহৎ এবং সবচেয়ে ক্ষমতাশালী সেই সংগঠন টির নাম কি? 
    ৩। ২০০৫ সাল থেকে এইরকম যে NGO ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রক কে নিয়ন্ত্রণ করছে তার নাম কি? 
     
    প্রশ্নগুলির উত্তর দিতে হয়তো শরমে মরে যেতে পারেন, কারণ ওই নামগুলি উচ্চারণ করলে অ্যান্টি  -ভ্যাকসার তকমমাটি গায়ে লেগে যাবার সম্ভাবনা থেকে যায়। তাই আপনার বিরম্বনা কমাতে উত্তরগুলো দিয়ে দিচ্ছি।
    ১. বিল গেটস
    ২. বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন
    ৩.PHFI (পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া)
  • জুতো বোস | 185.125.207.176 | ২২ জুলাই ২০২২ ২০:৩৯510153
  • জুতো বোস | 185.125.207.176 | ২২ জুলাই ২০২২ ২০:৩৯510154
  • জুতো বোস | 185.125.207.176 | ২২ জুলাই ২০২২ ২০:৪০510156
  • জুতো বোস | 185.125.207.176 | ২২ জুলাই ২০২২ ২০:৪০510157
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে প্রতিক্রিয়া দিন