এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • BBC বিড়াল 

    Swati Chakraborty লেখকের গ্রাহক হোন
    ০২ জুলাই ২০২২ | ৩৭০ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • পুলু কাকিমা দুপুরে ভাত খেয়ে সবে গোপাল জর্দা দেওয়া পানটা মুখে পুরেছে, ওমনি মেনি কোত্থেকে এসে বসল নিঃশব্দে। হাওয়ার সাথে মিশে আসে ও। মুখটা বেঁকিয়ে বলল ম্যাগো, কি জোলো দুধ, ছ্যা ছ্যা, মুখটা তেতো হয়ে গেল। দত্ত গিন্নীর গলায় দেখে এলাম একটা মটর হার, নিজের গলায় মটর হার আর এদিকে আধবাটি দুধ দেয় অর্ধেক জল মিশিয়ে। এই কথাটাই পুলু কাকিমার কানে লাগল খট্ করে। আফসোসের গলায় বলল তোকে কত বার বারণ করেছি মেনি অমন এঘর ওঘর করিস নি, তোর কি ওসব পোষায়। দাঁড়া তোর জন্য মাছ আনাচ্ছি। মেনি ভারি খুশি হয়ে আরামে গা এলিয়ে দিল। আস্তে আস্তে নখগুলো গুটিয়ে নিল। কিন্তু বেশিক্ষন তো ওর একজায়গায় ভালো লাগে না। আশেপাশের বাড়িগুলোতে কত ঘটনা ঘটে গেল, কত কি রান্না হল, কাদের রান্নায় বেশি স্বাদ খুললো তা না দেখলে মেনির বড় অস্বস্তি হয়। কোনো কিছুই অজানা থাকা মেনির একেবারেই পছন্দ নয়। উঠে পড়ল তখনি। চলল রাস্তা পার করে ও বাড়ি। হঠাৎ সামনে ঘ্যাঁচ করে থামল একটা বাইক। উঃ কোনোমতে প্রাণে বেঁচেছে। উফ কেনো যে এরা ওকে দেখলে দাঁড়িয়ে পড়ে, অসহ্য। মরণ, যত্তসব উজবুকে বুদ্ধি। ক‌ইরে তোরা সারা রাত কুকুরগুলো যে চেঁচিয়ে মরে সেদিকে তো তাকাস না! আমি একটু এ বাড়ি ও বাড়ি করলেই তোদের যত জ্বালা। এতে কত রিস্ক তোরা কি বুঝিস না? ওদিকে কুকুরগুলো ওত পেতে বসে, আবার অহর্নিশ গাড়ি চাপা পরার ভয়। তবু তো সব বাড়ির খবর সব বাড়িকে দিই। হ্যাঁ, তার বদলে দুধটা মাছটা দেয়। সে আর এমন কি। দেয় তো ভারি মাছের কাঁটা।

    এইসব গজগজ করতে করতে মেনি ঢুকল দে গিন্নীর বাড়ি। আহা পায়েস মনে হচ্ছে, কি সুন্দর গন্ধ! চারদিক ম ম করছে। ঘরে ঢোকার আগে মেনি বেশ করে হাত, পা, চেটে চেটে পরিস্কার করে একেবারে ঝকঝকে হয়ে উঠল। তারপর গুটি গুটি পায়ে ঢুকল একেবারে তুলোর বল সেজে। দে বাড়ির ছোটো মেয়ে আদর করে কোলে নিল। মেনির ওকে দেখে মনে পড়ল কালকে রাস্তায় একটা ছেলের সাথে ঘুরতে দেখেছে ও স্কুলের সময়। মেনির নখগুলো আবার ওর পায়ের নরম মাংস ছেড়ে বেরিয়ে এল। খানিকটা আদরের ঘটার পর ছটফট করে নেমে পড়ল মেনি।তর সয়না আর। তরবর করে নেমে গেল। আলতো পায়ে দৌড়ে ঢুকে গেল অন্দরমহলে। যাই বল আর তাই বল, দে গিন্নীর একটা এলেম আছে। ঘরখানা কেমন সাজানো। নরম সোফায় শুয়ে ভাবতে লাগল। পুলু পিসির কাজের কোনো ছিরিছাদ নেই। সর্বক্ষন মুখে পান পুরে চিবোচ্ছে। না আছে হাতের রান্নার গুন, না আছে শৌখিনতা। তারপর‌ই আবার সোফা থেকে নেমে মেনি গুটি গুটি পায়ে চলল ঠাকুর ঘরের দিকে যেদিকে ভোগ রান্না হচ্ছে। ওই তো রাখা পায়েসের সরাটা, ওঃ দেখেই মনে হচ্ছে একেবারে খানদানি ব্যাপার। হঠাৎ খেয়াল হল ওর চারপাশে কেউ কোথাও নেই। ঘর একেবারে ফাঁকা। পায়েসের গন্ধে একেবারে ভুর ভুর করছে। নাঃ আর সামলাতে পারল না মেনি। একেবারে মুখ দিল গিয়ে পায়েসের বাটিতে। সবে একটু মুখে গেছে কি না গেছে ওমা এর মধ্যে কোত্থেকে চলে এসেছে দে গিন্নীর সেই ছোটো মেয়েটা, একেবারে রেরে করে তেড়ে এসেছে। হ‌ই হ‌ই করে ছুটে এল বাড়ির সকলে। চিৎকার চেঁচামেচি অভিশাপ দিয়ে তাড়িয়ে দিল সকলে, ভাগ্যিস ঠাকুর ঘরের জানলাটা খোলা ছিল। তা না হলে প্রাণটাই যেত আজ। হৃৎপিণ্ডটা প্রায় মুখ দিয়ে বেরিয়ে এসেছিল মেনির। একি রে বাবা এই তো কত আদর করছিলি, সামান্য একটু পায়েসের জন্য তোরা এমন‌ও করতে পারিস? মর, মর, নিব্বংশ হ, সব আঁটকুড়ো হ, অভিশাপ দিতে দিতে মেনি ছুটল পুলু পিসির বাড়ির দিকে। কোনোমতে রাস্তা পার করে, পিসির দরজা খোলাই ছিল। চটি টা একপাশে খুলে, আঁচল দিয়ে মুখ মুছতে মুছতে পুলুদি।.... ওওওও পুলুদি.... একটা পান খাওয়াতো বলে ভিতরে ঢুকল মেনি।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে মতামত দিন