এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  পরিবেশ

  • মাধব গ্যাডগিল, মানুষ ও প্রকৃতির বাস্তুতন্ত্র

    প্রতিভা সরকার
    আলোচনা | পরিবেশ | ০৫ জুন ২০২২ | ২৪৩১ বার পঠিত
  • ছবি - র২হ


    ২০২২-এর মে মাসে ৮০ বছর হল শ্রী মাধব গ্যাডগিলের। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাস্তুতন্ত্রে পিএইচডি করা এই মানুষটি পরে ওখানেই পড়িয়েছেন বটে, কিন্তু তার সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব বোধহয় বিদেশের সব প্রলোভন জলাঞ্জলি দিয়ে এই দেশে পরিবেশ চিন্তার প্রসারে ঝাঁপিয়ে পড়া। তরুণ বিজ্ঞানীদের নিয়ে ব্যাঙালোরে সেন্টার ফর ইকোলজিকাল সায়েন্সেস প্রতিষ্ঠা করে পরিবেশ বিজ্ঞানকে সিরিয়াস চর্চার বিষয় হিসেবে যথোচিত মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করা।

    নিজের ক্ষেত্রে যতই এগিয়েছেন মাধব, ততই সরে এসেছেন শুধুমাত্র গাণিতিক বাস্তুতন্ত্রের চর্চা থেকে। সংখ্যাভিত্তিক কাগুজে তথ্যকে শিকেয় তুলে রেখে বিশাল দেশের সর্বত্র ছুটে বেরিয়েছেন তিনি, বিশ্বাস গচ্ছিত রেখেছেন প্রকৃতির নৈকট্যে বাস করা সাধারণ মানুষের যাপনলব্ধ জ্ঞানে আর বিস্তৃত এবং প্রত্যক্ষ ক্ষেত্র সমীক্ষায়। ইন্সটিউটের শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ঘরের চাইতে তার প্রিয় হয়ে উঠেছিল এ দেশের জনজাতিদের খুব কাছে থেকে দেখা। কিভাবে এই মানুষগুলি সহজ সরল জীবনযাত্রায় বনস্থলী লব্ধ জ্ঞানে পূরণ করে চলে প্রকৃতির সব সহজাত শর্ত, বস্তুত তাদের জীবনের মূল ভিত্তিই হল পরিবেশ প্রতিবেশের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, এইসব খুঁটিয়ে দেখাই পরিবেশ বিজ্ঞানীর কাছে মুখ্য হয়ে উঠেছিল। শুধু পুঁথিগত জ্ঞান বিতরণ না করে সরেজমিনে খুঁটিয়ে দেখা এবং পুঁথিতে যে তথ্য মেলে না তার উপলব্ধিই মাধব গ্যাডগিলের বৈশিষ্ট। রামচন্দ্র গুহ জানিয়েছেন কিভাবে বান্দিপুর ন্যাশনাল পার্কে দিনের পর দিন পড়ে থেকেছেন এই বিজ্ঞানী এবং হস্তিযূথের জীবন পরিক্রমা খুঁটিয়ে দেখে সে সংক্রান্ত গবেষণার ফলাফল আলোচনা করবার জন্য ছুটে এসেছেন দেহরাদুনে ফরেস্ট রিসার্চ ইন্সটিউটে।

    এই শুকনো পাণ্ডিত্যের প্রতি অনীহা, প্রকৃতি এবং প্রাকৃত মানুষের কাছ থেকে শেখার আগ্রহই মাধবকে আমার প্রিয় পরিবেশবিজ্ঞানী করে তুলেছে। পশ্চিম ঘাট নিয়ে গ্যাডগিল কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়িত হলে আজ ফি বছর কেরালা, গোয়া বন্যায় ভেসে যেত না। রাজনীতি এবং কর্পোরেটের স্বার্থে পরিবেশের ইস্যুগুলিকে হালকা করে দেবার যে প্রচেষ্টা এই দেশে বিদ্যমান, তার প্রকট রূপ আমরা এখন দেখলেও এই প্রবণতার শুরু অনেক আগে থেকেই।

    গ্যাডগিল কমিশনের রিপোর্টের চাইতে আজ ৫ই জুন পরিবেশ দিবসে আমি অবশ্য জোর দিতে চাই মাধবের দেখার চোখটি এবং শেখার মনটির ওপর। কারণ এ দুটোই বড় দুর্লভ এবং এইভাবে দেখত ও ভাবতে শিখলে তবেই আমাদের প্রতিবেশ বাঁচবে, নইলে নয়।

    পশ্চিমঘাটের বনস্থলীতে দাঁড়িয়ে বিদেশ প্রত্যাগত বিজ্ঞানীর প্রথমেই মনে হল দেশের অরণ্য নিয়ে ব্রিটিশ রাজের যথেচ্ছাচারের কথা। দেশ স্বাধীন হবার পরেও বুঝে না বুঝে সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলতে লাগল,পন্ডিত নেহরু নদীপথের স্বচ্ছন্দ গতি আটকে দাঁড়ানো বিশাল বাঁধ গুলিকে বললেন ভারতবর্ষের আধুনিক দেবালয়। ১৯৭১-এই মাধব শুনেছিলেন পশ্চিম ঘাট পর্বতমালার সবচেয়ে পবিত্র,আর তথাকথিত সভ্যতার স্পর্শবিরহিত ছোট ছোট বনাঞ্চলগুলির (আমাদের পঞ্চবটির বড়সর সংস্করণ) অবস্থান হল পুণের কাছাকাছি ( এখন তার কী অবস্থা ভাবতেও ভয় করে। বন্ধু দময়ন্তী যে আবাসনে থাকে তা গড়ে উঠেছে পাহাড়ের পর পাহাড় প্রোমোটারকে বিক্রি করে, ডিনামাইট ফাটিয়ে, বুলডোজার দিয়ে সমতল বানিয়ে।), কারণ এই অংশটির আদিম পবিত্রতা রক্ষার দায়িত্ব ন্যস্ত আছে ওখানকার আরণ্যক মানুষের কাঁধে। তারা ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক ট্র্যাডিশন রক্ষার নামে এই কাজ করে আসছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে। মাধব ঠিক করলেন এই ভূমিজ মানুষগুলির কাছ থেকে পরিবেশ রক্ষার কাজটি হাতে কলমে শিখবেন।

    ভেলহে পাহাড় আর পানশেট বাঁধের অববাহিকা অঞ্চল হয়ে দাঁড়াল কিছুদিনের জন্য তাঁর কর্মস্থল। রোজ সকালে উঠে ট্রেকিং শুরু হত, যে গ্রামগুলি এই পবিত্র বনখন্ড সমূহের কাছাকাছি সেগুলোতেই যেতেন তিনি, নোট করে নিতেন গাছের নাম, প্রজাতি, বৈশিষ্ট । সঙ্গে চলত ওখানকার জীবজন্তু, পরম্পরা এবং বাস্তুতন্ত্র নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা। এই পরিক্রমাতেই তিনি দেখেছিলেন গ্রামবাসীদের সঙ্গে রীতিমতো মিটিং করে ঘুষ নিয়ে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে প্রবেশের অধিকার বিলোবার চেষ্টায় ব্যস্ত বনকর্মীকে।

    গ্রামবাসীদের সঙ্গে এই প্রত্যক্ষ সংযোগের ফলেই মাধব ধরতে পেরেছিলেন শাইনিং শহুরে ইন্ডিয়ার এক বিরাট ভুল। আমাদের ভুল ভাবনা যে বনদপ্তরের সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিচ্ছে গ্রামবাসীদের লোভ আর বনধ্বংসের প্রবণতা। এখানেই তিনি দেখেন আম, আমলকি আর হরিতকি গাছ গ্রামবাসীদের কাছে এতো পবিত্র যে এদের কান্ডে তারা কুঠারাঘাত কিছুতেই করে না। এমনকি বনভূমি কেটে জ্বালিয়ে সাফ করে বসতি স্থাপনের ১৫ বছরের ইজারা পেলেও না। দেখেছিলেন যেই রাস্তা তৈরি হল,উন্নয়নের রথ পৌঁছল, অমনি সরকারি ইঞ্জিনিয়াররা কাঠ আর কয়লা মাফিয়াদের নিয়ে জায়গামতো পৌঁছে গেল। গ্রামবাসীদের বলা হল উন্নয়নের স্বার্থে তাদের এই এলাকা ত্যাগ করতে হবে, চাষের জমি পাবে ঠিকই, কিন্তু সে অন্য কোথা, অন্য কোনোখানে। ফলে জমির ওপর দাঁড়িয়ে থাকা মহা বৃক্ষগুলিকে যৎসামান্য দামে হলেও বিক্রি করে দেওয়া আশু কর্তব্য। মাধব দেখেছেন অন্যন্যোপায় গ্রামবাসীকে বহু পাখির আবাস,ফলবান ছায়াময় বিরাট গাছকে মাত্র আট আনায় বিক্রি করে দিতে। এইভাবে রাজনীতি,দুর্নীতি এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের রথের চাকায় গুঁড়িয়ে যায় সমস্ত ঐতিহ্য। ফাঁকা হয়ে যায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের বিরাট এলাকা। আমরা ভাবি স্থানীয়রাই যতো নষ্টের গোড়া।

    এরপরের অভিযান বান্দিপুর ন্যাশনাল পার্কে। হাতিদের মোট সংখ্যা নিয়ে দেশে কোনো নির্ভরযোগ্য তথ্য পাওয়া যেত না তখন, উদ্ভিদ ও বন্যপ্রাণী নিয়ে উৎসাহিত মাধব ঠিক করলেন, বান্দিপুর ও নাগারহোলে হাতি নিয়ে কাজ করবেন। যে তিনটে হাতির পিঠে বান্দিপুরে ট্যুরিস্টদের ঘোরানো হত, সারা রাত তারা স্বাধীনভাবে বনে ঘুরে বেড়াত। গলার ঘন্টির আর পায়ের শেকল ছেঁচড়ে চলার আওয়াজে ভোর ভোর বেড়িয়ে পড়া মাহুতরা বুঝে যেত কোথায় চরে বেড়াচ্ছে জীবগুলো। সেখানে পৌঁছে তারা চটপট উঠে পড়ত হাতির পিঠে, তাদের ফিরিয়ে আনত ট্যুরিস্টদের সেবায়।

    এই ফেরার পথটায় তারা মাথার ওপরে গাছের ঘন চাঁদোয়ায় ডুমুর জাতীয় শাখা প্রশাখা দেখলেই সেগুলো ভেঙে হাতির ঘাড়ের ওপর জড়ো করত। হাতিরা ডুমুর জাতীয় গাছের পাতা খেতে ভালবাসে। এই ফেরার পথটা প্রায়ই মাহুতের কোমর জড়িয়ে বসে থাকতেন মাধব গ্যাডগিল। একদিন এই নিরক্ষর মাহুতদের কথোপকথন বিস্ময় এবং শ্রদ্ধা জাগাল তাঁর মনে।

    মাহুতেরা বলাবলি করছিল এই অরণ্য তো কেবল ট্যুরিস্টদের মনোরঞ্জনের জন্য নয়। এটা পাখি,বাদুড়, বাঁদর,কাঠবেড়ালি এবং অন্য অনেক প্রাণীর বসতি। ডুমুর গাছ খুবই উপকারি, কারণ বছরে অনেকবারই এতে ফল আসে আর যখন অন্য কোনও ফল পাওয়া যায় না, তখন শুধুমাত্র ডুমুর ফলে বেঁচে থাকে এমন প্রাণীও আছে। এই যে যথেচ্ছ এই গাছের ডালপালা ভাঙছি, এক মাহুত আরেক জনকে বলল, এতে কিন্তু বনের বিরাট ক্ষতি হচ্ছে। আমাদের ভেবে দেখা উচিত এটা আমরা চালিয়ে যাব কিনা।
    এই আরণ্যকেরা সেদিন যা বলেছিল, মাধব গ্যাডগিল অবাক হয়ে পরে ভেবেছিলেন, এক দশক বাদে যেন ঠিক সেই কথা নিয়েই লেখা হল জন টারবোরগার বিখ্যাত গবেষণাপত্র- আম্যাজনের অরণ্যে রিসোর্স হিসেবে ডুমুর জাতীয় বৃক্ষের ভূমিকা।

    খুবই দুর্ভাগ্য, এইরকম একজন মাটির কাছাকাছি পরিবেশবিদ ও বাস্তুতন্ত্রবিদ, যিনি প্রকৃতির ও মানুষের মধ্যেকার বোঝাপড়াকেই প্রাধান্য দিয়ে এসেছেন, তার চোখের ওপরেই ঘটে যাচ্ছে পরিবেশ লুন্ঠন ও প্রকৃতি ধ্বংস। বোঝাপড়া একটা আছে বটে, কিন্তু সেটা কর্পোরেট এবং শাসকের মধ্যে পশ্চিমঘাট পর্বতমালা ধুঁকছে, হিমালয়েরই বা কী অবস্থা! ২০১৮ সালে কেরালার বিধ্বংসী বন্যার জন্য দায়ী মানুষের লোভ। মাধব গ্যাডগিল ২০১১ সালেই সতর্ক করেছিলেন যে উন্নয়নের নামে যত্রতত্র ভারী শিল্প স্থাপন, খোলামুখ খনি খনন চলবে না। বলেছিলেন তথাকথিত উন্নয়নমূলক কাজকর্ম করতে হবে স্থানীয় জন সম্প্রদায় এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের অনুমতি নিয়ে। অর্থাৎ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে মানুষের জন্য পরিবেশ-বান্ধব উন্নয়ন। গুরুচন্ডা৯ প্রকাশিত হননকালে এইসবই বিস্তারিত লিখেছি। কিন্তু দুঃখ এই যে গ্যাডগিল-মডেল, কঠোর ভাবে যা বাস্তবায়িত না হলে পরিবেশ প্রতিবেশ শেষ হয়ে যাবে, তা এই দেশ প্রত্যাখ্যান করেছে।

    হাসদেও খোলামুখ খনির কথা বলে এই ফুল্লরার বারোমাস্যা শেষ করি। ছত্তিশগড়ের বিশাল অরণ্য। তারই ছায়ায় আত্মগোপন করে আছে উৎকৃষ্ট কোল ব্লক। কেন্দ্রীয় সরকার কর্পোরেটের হাতে তুলে দিতে চায় বহু নজরানার বিনিময়ে। সাধারণ মানুষ চায় না হারিয়ে যাক ১৭০,০০০ হেক্টর জোড়া সবুজ পাহাড়, নদী, অরণ্য। ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী জনমত জানতে চাইছেন। নিচে সেই লিংক রইল। আপত্তি জানান, প্রতিবাদ করুন। এইভাবেই পরিবেশ দিবসে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি শ্রী মাধব গ্যাডগিলকে, এ দেশের জনগণতান্ত্রিক পরিবেশ- ভাবনার জনককে।

    https://forms.gle/oGrRNDZQnAvAmTJ69


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৫ জুন ২০২২ | ২৪৩১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Swarnendu Sil | ০৫ জুন ২০২২ ১৪:২৫508504
  • পরিবেশ নিয়ে লেখালিখি ছাড়াও মাধব গ্যাডগিল কিছু অনন্যসাধারণ ছাত্রও তৈরী করেছেন, যেমন দেবল দেব। শুধু সেটার অবদানও বড় কম নয়।  
  • Prativa Sarker | ০৫ জুন ২০২২ ১৪:৩৬508505
  • স্বর্ণেন্দুকে অনেক ধন্যবাদ। জানতাম না দেবল দেব ওঁরই ছাত্র। 
  • Prativa Sarker | ০৫ জুন ২০২২ ১৪:৩৭508508
  • নিচে লিংকের কথা বলা হয়েছে লেখাটায়, কিন্তু লিংকটি দেওয়া হয়নি। মন্তব্যের ঘরে কি দেওয়া যায়? 
  • Prativa Sarker | ০৫ জুন ২০২২ ১৪:৫৯508512
  • *हसदेव के लिए आपकी राय* 
    मुख्यमंत्री भूपेश जी पूछ रहे हैं कि हसदेव के जंगलों के खनन पर देश तय करेगा | तो आप तय करिए इस सर्वे के माध्यम से और इसे अधिक से अधिक शेयर करिए। 

     *Opinion poll for Hasdeo* 
     CM Bhupesh Baghel wants the nation to decide if it wants to destroy Hasdeo forests for coal. Use this survey to decide and share as much as possible.

    #SaveHasdeo
    #IndiaWithHasdeo
    #ClimateCrisis
    #Biodiversity
    #ClimateChange
    #COP15

    https://forms.gle/oGrRNDZQnAvAmTJ69
  • Prativa Sarker | ০৫ জুন ২০২২ ১৫:০১508513
  • ওপরের লিংকটিতে ক্লিক করে আপনাদের রায় দেবেন।
  • স্বাতী রায় | ০৫ জুন ২০২২ ১৫:৫৬508515
  • @প্রতিভা দি, ধন্যবাদ। এঁকে নিয়ে এত বিশদে জানতাম না।  লিংক টা দিয়ে খুব ভাল কাজ করলে। 
  • dc | 2401:4900:1cd1:6a1b:3c45:2ede:61dd:92b4 | ০৫ জুন ২০২২ ১৯:১০508521
  • "কেন্দ্রীয় সরকার কর্পোরেটের হাতে তুলে দিতে চায় বহু নজরানার বিনিময়ে"
     
    এখানটা পড়ে একটু কনফিউশান হলো। হাসদেও কোল মাইনিং ব্লক তো ছত্তিশগড় সরকার লিজে দিতে চাইছে! এখানে সেরকমই লিখেছেঃ 
     
    Explained: The battle over mining in Chhattisgarh’s Hasdeo forest
    The state government had in March given a go-head for coal mining in an area of 1,136 hectares under the second phase of Parsa East-Kete Basan (PEKB) coal block.
    Congress leader Rahul Gandhi recently expressed his disagreement with a decision taken by his party’s government in Chhattisgarh to allow coal mining in the Hasdeo forest. The state government had in March given a go-head for coal mining in an area of 1,136 hectares under the second phase of Parsa East-Kete Basan (PEKB) coal block.
     
  • dc | 2401:4900:1cd1:6a1b:3c45:2ede:61dd:92b4 | ০৫ জুন ২০২২ ১৯:১৫508522
  • "ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী জনমত জানতে চাইছেন। নিচে সেই লিংক রইল। আপত্তি জানান, প্রতিবাদ করুন।"
     
    এটাও বুঝতে পারলাম না। ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী জনমত জানতে চেয়েছেন বলে তো মনে হচ্ছেনা! কারন ছত্তিশগড় সরকার অলরেডি ডিসিশান নিয়ে ফেলেছে। আর লিংক বলতে যে গুগল ফর্মটা দেওয়া হয়েছে সেটাও ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বানিয়েছেন বলে মনে হলো না। ফর্মের তলায় লেখা আছেঃ  This form was created inside of The George Washington University
    মনে হয়না ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রীর সাথে বা ছত্তিশগড়ের সরকারের সাথে জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির সম্পর্ক আছে। 
  • প্রতিভা | 115.96.154.203 | ০৫ জুন ২০২২ ২০:০৩508526
  • DC, আপনি ঠিক বলেছেন হাসদেওতে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার হাত মিলিয়েছে। না মিলিয়ে বোধহয় উপায় ছিল না, কারণ করোনা কালে মাইনস এন্ড মিনেরালস এক্টে প্রচুর পরিবর্তন করা হয়েছে। এখন অকশনের ক্ষমতাও আছে কেন্দ্রীয় সরকারের। আর এসব লবি তো রাজ্যে কেন্দ্রে সমান ভাবে সক্রিয়। ফলে যে যে পরিবর্তন করা হয়েছে সেগুলো ধরেই এগিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আগের আইন বলবৎ থাকলে এত সহজ হত না।
     
    আপনি লিংক্টা খুললে দেখতে পাবেন  লেখা  আছে cm bhupesh  vaghel wants the nation to decide if it wants to destroy hasdeo forests for coal.use this survey to decide and...ইত্যাদি। হিন্দিটাও দেখবেন। 
  • প্রতিভা | 115.96.154.203 | ০৫ জুন ২০২২ ২০:০৭508527
  • হয়ত বাঘেলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে এ-ই বাক্যবন্ধে। কিম্বা উনিই চ্যালেঞ্জটা ছুঁড়েছেন। হান্ড্রেড পার্সেন্ট নিশ্চিত নই। 
  • প্রতিভা | 115.96.154.203 | ০৫ জুন ২০২২ ২০:১০508528
  • আর জনমতের চাপে সিদ্ধান্ত বদল হয়েছে এমন ঘটনা খুব বিরল নয়। ফলে সবাইকে অনুরোধ নিজের রায় দিন।
  • dc | 2401:4900:1cd1:6a1b:3c45:2ede:61dd:92b4 | ০৫ জুন ২০২২ ২০:১০508529
  • প্রতিভা ম্যাম, ঠিকই, মাইনস অ্যাক্টে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে। 
     
    তবে লিংকে এটা লেখা আছে দেখছিঃ Do you want electricity from coal mined by destroying Hasdeo Arand forests, its rivers, its tribal communities, biodiversity, and wildlife?
     
     সিএম এর নাম কোথাও দেখলাম না। আমার মনে হয় কোথাও কনফিউশান হচ্ছে, কারন ফর্মটা কোন এক বা একাধিক ব্যক্তি নিজেদের উদ্যোগে বানিয়েছে। ছত্তিশগড় সরকার বা মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ফর্মটার কোন সম্পর্ক নেই। ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী অলরেডি লিজ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন, কাজেই তিনি নেশানের থেকে কিছু জানতে চাইছেন না। 
     
    অন্তত আমার ওই লিংক পড়ে এরকমই মনে হলো, আমি ভুলও হতে পারি। 
  • dc | 2401:4900:1cd1:6a1b:3c45:2ede:61dd:92b4 | ০৫ জুন ২০২২ ২০:১৫508530
  • এই সংক্রান্ত বাঘেল এর বক্তব্য আজকের খবরে বেরিয়েছেঃ 
     
    Those who are opposing mining should first switch off power at their own houses, chief minister Bhupesh Baghel said on Saturday while slamming the critics of the two ongoing mining projects of the Hasdeo-Arand region in Chhattisgarh’s Surguja division.
    Baghel was addressing a press conference in Bhanupratappur in Kanker district during his visit there as part of his constituency-wise public interaction drive, Bhent Mulaqat.
     
     
    কাজেই বাঘেলা মনে হয়না কোল মাইনিং এর বিরুদ্ধে কোন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছেন :-)
  • r2h | 2401:4900:3d30:f9d:5bc2:e456:8788:468e | ০৫ জুন ২০২২ ২০:২১508531
  • হুঁ, মুখ্যমন্ত্রী জনমত জানতে চাইছেন খনি নিয়ে, এ কিঞ্চিৎ ইউটোপিয়ান ব্যাপার, হজম করা শক্ত। সে যে জায়গার, যে দলেরই হোন। মুখ্যমন্ত্রীরা জনমত জানতে চান, এর নজির কম। ভোটের সময় নেহাত না জানলে চলে না, তাই।
  • প্রতিভা | 115.96.154.203 | ০৫ জুন ২০২২ ২১:৩২508535
  • তাই হবে। আমাদের দেশের রাজনীতিক তো। তবে জনমতের প্রতিফলন একটা বড় ব্যাপার। এই লিংকটা আমরা সবাই মত দেবার জন্য ব্যবহার করতে পারি তো। 
  • শ্রাবণী | 42.110.147.141 | ০৫ জুন ২০২২ ২২:২০508537
  • কিছুই জানতামনা এই বিষয়ে! চমৎকার লাগল! 
  • শিবাংশু | ০৫ জুন ২০২২ ২২:২০508538
  • গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ  সতর্কতা। মাধব গ্যাডগিলকে কেন্দ্র করে পরিবেশ রক্ষার জন্য মানুষের লড়াই বহুদিন থেকেই চলছে। যদিও সমস্ত সামন্তবাদী সরকার ও পুঁজিবাদী বণিক এই যুদ্ধকে মর্যাদা দেয় না । কিন্তু তা বলে আর  মাঠ ছেড়ে দেওয়া যায় না। বিরামহীন ভাবে প্রতিভা পাঠকসমাজকে এসব কুকৃত্যের প্রতি জাগরুক করে আসছেন । তাঁকে ধন্যবাদ। 
  • পারমিতা | 2409:4060:e99:b4e3:72fb:fa5c:eea9:ee62 | ০৬ জুন ২০২২ ১৪:৩৩508548
  • প্রতিভাদি আমি গ্যাডগিল স্যারের কথা সত্যি শুনিনি আগে। 
  • Rita Banerjee | ০৬ জুন ২০২২ ১৭:৩৬508552
  • যথাযথ বক্তব্য।
  • | ০৬ জুন ২০২২ ১৮:৫৭508557
  • মাধব গ্যাডগিলকে পুণে মুলশি পিম্পড়ি অঞ্চলের বনদপ্তরের অফিসারদের মধ্যে বেশ শ্রদ্ধা লক্ষ করা যায়। সকলেই বেশ শ্রদ্ধাভরে 'গ্যাডগিল স্যার'ের কথা উল্লেখ করেন বটে, কিন্তু পলিসি ঠিক করার সময় আবার একটু সরে যান দিব্বি। আবার দোষ দেন 'ইয়ে সব পল্টিক্স নে ...'ইত্যাদি। 
     
    পুণের গা লাগোয়া পিম্পড়ি চিঞ্চওয়াঢ়  এলাকা। এই চিঞ্চ মানে তেঁতুল আর ওয়াঢ় হল বট। এলাকাটা তেঁতুল আর বটের জঙ্গল ছিল। সব কেটেকুটে সাফ করে মস্ত উন্নয়ন হয়েছে। এত উন্নয়ন হয়েছে যে এলাকার তাপমাত্রা বেড়ে গেছে। তখন ঠিক হল গাছ লাগানো হবে। তা অর এস এসের একটা উইং থেকে জনমত গঠনে নামল। এ আমাদের জায়গা আমরাই থাকি কাজেই আমাদের উচিৎ এর পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য সাহায্য করা। পাবলিক চেগে গেল। এইবার তেনারা এলেন চারাগাছ বিক্রি করতে। তেঁতুলের চারা 150/- টাকা আর বটের চারা ২৫০-টাকা করে। ভাবো একবার সব কেটে বেচে দিয়ে ফ্ল্যাট বানিয়ে বিক্রি করে আবার এত্ত দাম দিয়ে চারা কিনিয়ে বৃক্ষরোপোণ করাচ্ছে! দূর্বৃত্তায়ন আর কাকে বলে! 
     
    ফর্মে সই করে দিয়েছি। তবে এটা মুখ্যমন্ত্রী সার্কুলেট করে নি বটে। তোয়াক্কাও করবে না সম্ভবতঃ। 
  • | ০৬ জুন ২০২২ ১৮:৫৮508558
  • * প্রথম লাইনে 'মাধব গ্যাডগিলের সম্পর্কে' হবে। 
  • স্বাতী রায় | ০৬ জুন ২০২২ ১৯:২০508560
  • তাও অন্তত আর এস এস একটা এক ছিটে হলেও পুণ্যির কাজ করেছে। যমরাজের খাতায় শূন্য থেকে এক হল। 
  • অর্পন বোস | 2409:4060:2e15:f789:a873:5140:c17f:a71a | ২০ আগস্ট ২০২২ ২৩:২৮511212
  • অসাধারন এই লেখাটি পড়ে নুগ্ধ হয়ে গেলাম। শ্রীযুক্ত মাধব গাডগিলকে আমার শ্রদ্ধা ও প্রনাম জানাই। এই মহতি প্রচেষ্টা হয়ত একদিন না একদিন ঠিক কাজে লাগবেই। ঋদ্ধ হলাম গুরু চন্ডালীর পরিবেশ নিয়ে লেখা এই প্রবন্ধটি পড়ে। 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লুকিয়ে না থেকে প্রতিক্রিয়া দিন