এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • আন্তর্জাতিক নারী দিবস নিয়ে বিভিন্ন সময়ে লেখা কিছু কবিতা 

    Chirasree Debnath লেখকের গ্রাহক হোন
    ০৭ মার্চ ২০২২ | ৬৩১ বার পঠিত
  • নারী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সময়ের কয়েকটি লেখা। কি লাভ হয়েছে, কিছুই না। 

    চিরশ্রী দেবনাথ

    পুনর্বার 

    যত সব দুঃখদুয়ারী মেয়েরা 

    আমি তাদের মধ্যে নেই

    কত হাজার সংগ্রামে যাদের কেটেছে পা

    আমি তাদের মধ্যে নেই

    পুরুষ হাত রাখেনি হাতে

    বলে যাদের অভিমান

    আমি তাদের মধ্যে নেই

    ভালোবাসা নিংড়ে যারা 

    পুড়ে গেছে কোনো এক সকালে

    আমি তাদের মধ্যে নেই 

    সব শর্ত নিজের কাছে বাজি রেখে

    একে একে হেরে গেছি সবখানে

    কেউ দেখে ফেলার আগে

    উন্মুক্ত হৃদয় ভরে গেছে পরাজয়ের সুখে

    দোপাট্টা উড়িয়ে পেতেছি হাত আবারো নিখাদ

    হে খোদা... হে ঈশ্বর ইনতেজার ফরমাও, আতশ জ্বালাও,

    আসমান... এই খোলা আসমান আমার, 

    ভুলে গেছি বাকি সব অগ্নিভ প্রতিবাদ

    মিছিলে হেঁটে যারা কেড়ে নিয়েছে

    অধিকার, আমি তাদের ক্লান্ত পা

    ঘরে ফিরে হেঁটে গেছি আধখানা রাত 

    বিছানায় যেতে যেতে মেখেছি ক্রিম

    বলিরেখার নীচে আঙুল চালিয়ে

    কেড়ে নিতে চেয়েছি দুপুরের রোদ

    তারপর বলেছি এই দুরন্ত ভ্রমণে,

    আবারো মেয়ে হতে চাই 

    তোমাদের তৃষ্ণার্ত মুখে এঁকে দিতে অরণ্য, 

    মেয়ে হয়ে বার বার ডুবে যেতে চাই। 

    বিভাজিত মেঘ
    .........................

    দুজন সমকামী মেয়ের অর্ধেক আকাশ নেই

    দেহতত্ত্বের অন্ন সুবাসে

    তাদের শরীরে জারিত পূর্ণ আকাশ

    এই ভূমিকায় একটি  গ্রহণ ছেয়ে যাবে

    সে গ্রহণের দায় কোন সন্তানের নয়

    ক্যাকটাসে যে ফুল ফুটে চল্লিশটি বছর পর

    একমেয়ে অন্য মেয়ের চুলে গুঁজে দিয়েছে সেই গন্ধ

    " বাহারো ফুল বরষাও "

    বৃষ্টি জ্বলছে আঁধারে, ডুবছে পরিধি 

    এখানে পতন হোক দিগন্তের

    পাতাল ছুঁয়ে দেখুক কেউ কেউ ...

    কন্ঠীবদল

    শ্যামলীরাই বোষ্টমী। জেলা উত্তর ত্রিপুরা। গ্রাম "পলাশকুঞ্জ "।

    সাড়ে কুড়ি বছরে কন্ঠীবদল।
    তখন ফাগুনমাস। বেহায়া বাতাস। দুজোড়া ধুতি চাদর।

    পলাশফুল পড়ে পড়ে পিছল হয়ে থাকে আখড়ার প্রাঙ্গন।
    তিলক মুছে তিনবার মাছ খাওয়া হয়েছে।
    দুবার মুরগীর ঝোল। তিনখানা হিন্দি ফিল্ম। নাচ গান।
    এটুকুই অবৈধ বসন্ত। বাকি সব কীর্তন। সপ্তমীর জ্যোৎস্না।

    শিউলি, কাঞ্চন, রঙহীন জবা তুলে তুলে নারায়ণের চরণে।
    দোলের দিন সবুজ রঙ, গোলাপী আবির, 
    সঙ্গীর পুরাতন মুখে ভিক্ষাকষ্ট  শুধু। 

    পুন্যের মাস। কার্তিকের কুয়াশা মেখে মেখে শহরের অলিগলি ঘোরা হয়। 

    একজন মরল, দ্বিতীয়জনের লগে কন্ঠীবদল। 
    শ্যামলীরাই  হাসে না। নামগান করে। 

    তৃতীয়জন এলেই বা কি। বয়স তার এখন সাঁইত্রিশ। 

    ভরা হাতে মাছ কাটতে ইচ্ছা হয়। রক্ত ধুয়ে তেলে হলুদে জমিয়ে গন্ধ ছাড়তে ইচ্ছা হয়।
    না হয় সন্ধ্যাবেলা একটু তুলসীতলা। বাকি মাছভাত আর রমণ।

    সে হবার জো নেই।
     অথচ ভক্তি নেই। 

    ঘোর সংসার বুকের ভেতর। 
    ঘরবাড়ি উঠোন চুলা আর পুকুরঘাট সমেত।

    গাছভর্তি আমের বোল। কষা মিষ্টি গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে ফাগুন চৈত্র মাসে, আর পুকুরের জলে গা ধুতে ধুতে লাক্স সাবানের ফেনায় ফেনায় ধুয়ে যাচ্ছে বোষ্টমী রঙ। 
    তিলকের মারপ্যাঁচ,  তুলসীমালার বৈরাগ্য।

    ট্রেনে কইরা আসাম যাওয়ার সময় দুই মেয়ের সঙ্গে দেখা।
    ভরা যৌবন।
     বিবাহের রঙ নাই কপালে। কিন্তু বোঝা যায় মাংস ছুঁয়েছে তারা। কই কন্ঠীবদল তো হয় নাই।

    জীবন্ত স্বাধীন। শ্যামলীরাই কীর্তনের সুর তোলে। দশটাকা, দশটাকা দেয় দুজনে।

    কয় আশীর্বাদ করো যেন  আজ রোজগার হয়, আমরাও বোষ্টমী, ঘর আছে,  ঘর নাই। বাইরে বেরুলেই  টাকা।

    বাড়ি ফিরলে জিগায় টাকা আনছো নি?
    তবুও তোমাদের  তো ভণিতা নাই, শ্যামলীরাই তর্ক করে।

    হি হি ! ভণিতা ! ছুরির মতো হাসি। নাহ্ ভণিতা নাই, রঙখেলার দিন কৃষ্ণ আসে খেলতে।

    তার চোখে দেখা যায় এই  বসন্তকাল।
    গোপী মেয়েদের ব্যথা।

    কত কত রঙ নিয়ে আমরা পদাবলী লিখে যাই।
    `মানুষ ভুল করে ভাবে ধর্মের গান, অথচ এসব আসলে নাড়ি ছেঁড়া অশৌচ কাল। 

    বেত্রবতী
    .........

    বালিশ, বিছানা এবং কিছুটা 
    একান্ত মনখারাপ ছেড়ে
    জানালা খুললো বেত্রবতী

    বসন্তকালীন রোদ ঢেকে দিল
    তার ছোট স্তন,  খড়খড়ে কালো গাল, 
    শুকনো ঠোঁট, আর ঝড়ো চোখকে।

    ঘুম ভেঙে যাওয়ার আগে 
    বেত্রবতীর এই শারীরিক রাজ্যপাট
    নিগূঢ় বসন্তে অভিমানী থাকে...

    বেত্রবতীর সব ব্রণ দাগ রেখে গেছে অবেলায়, 
    কৈশোর আছড়ে পরে বারংবার
    নিঃসার একান্ত অভিসারে তারা সমুদ্র শুশুক...

    বেত্রবতীর দিন ভালো লাগে না
    রাত কেবলি রাত কেন হয় না এ জীবনে..

    দীর্ঘ এক সানাই কেন বেজে যায় না নহবতে
    তার সব নিজস্ব প্রেমেদের স্বয়ম্বর হতেই থাক্..
    গায়ে মাথায় মুখে বেত্রবতী মেখে নেয় অলীক সুখ
    বিবাহিতা কেবলি বিবাহিতা তার এই অবৈধ বিলাস। 

    কারা যেন আঁশটে মুকুলগন্ধ লিখে যায় 
    ঋতুর ঘাটে ঘাটে পাত্র চাই বিজ্ঞাপনে,

      দিনশেষের রজঃস্বলা,  এই বসন্তযাপন 
    গা কুটকুটে অসহ্য ব্যথা, তাকেই কেন শুধু? 

    কিছু শিমূল, কিছু আবির বেত্রবতীর ঠোঁটে
    একটি কামড় রেখে যাবে, 
    কথা হয়ে উড়ে গেছে সাতজন্ম পরে..

    তাই দীর্ঘ, দীর্ঘ এই সব রাত
    বেত্রবতীকে জেগে থাকতে হয়, 
    রূপং দেহি, রূপং দেহি, রূপং দেহি...

    বেত্রবতী মা হয়, তার সব সন্তানেরা অযোনিসম্ভূত।
    কুৎসিত ছোপ ছোপ দাঁতে, গিলে ফেলে মুকুল মদিরা 
    কষা স্বাদে চোখ বন্ধ হয়ে আসে 
    একান্ত একান্ত এই সুখবিলাস 

    তাম্রবরণা বসন্তে বেত্রবতী ফুটতে থাকে
    নিখাদ কালো দহন হয়ে... 
    জানালা বন্ধ করে দেয় বেত্রবতী

    জন্ম, জন্ম এবং আরো
    সাতজন্ম পর সে প্রিয়া হবে। 

    ছবি মেয়ে 
    ..................

    ধর্ষণের পর থেকে এক ছবিমেয়ে
    শুধু সঙ্গমের ছবি আঁকে
    মোহ, সাপ, কলা, রস, ছোঁয়াচে অসুখ
    ছড়িয়ে ছড়িয়ে আঁকতে থাকে বাৎসায়ন 
    আনতচোখের মেয়েটি দিনের পর দিন
    হয়ে উঠছে অশ্লীল কেবলি অশ্লীল
    তার চোখে ঢেউ হয়ে নেমে আসে জোয়ারের শরীর
    এতো শরীরী সে তো ছিল না কখনো
    আমলকী রঙের  মেয়েটির বারান্দার
    একপাশের ঘরে ঝুলে থাকা
    দেয়ালে   এখন শুধু নোংরা ছবি
    মোমরঙা ঊরুতে যে তিল ফুটেছিলো
    সেখানে সে তার পেন্সিল ডোবায় 
    দীর্ঘ পথ খুলে যায়, এতো এতো মেয়ে সেখানে
    চারদিকে ফুল ক্ষত, সাদা নখের আঁচর

    আচ্ছন্ন এক রাজপথ ... রঙে জলে ভেজা,

    ছবির পর ছবি বসে আছে হাঁটু ভেঙে

    ছবিরও যোনি থাকে, যোনিতে  তুলি
    তুলিতে আঁকছে সেই মেয়ে শ্বেত মরুভূমি...

    আন্তর্জাতিক নারী দিবস এবং 
    যোদ্ধানী

    ..............

    ধর্মনগর শহর থেকে পাশের গ্রামে যাবো।
     
    একটি জিপে বসলাম।

     আমার সঙ্গে সহাস্যবদনা রুখুসুখু এক মহিলা।
     
    সস্তার হ্যান্ডলুমের শাড়ি, চড়া বেগুনি রঙ।
    লাল রঙের ব্লাউজ। 
    কাঁধে  চকচকে নীল ভ্যানিটিব্যাগ। 

    দুজনে গায়ে গা লাগিয়ে বসা হলো।
     
    আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, কই যাইবেন? কুটুম বাড়ি? 

    আমি হেসে বললাম, হ। 

    ....মনে মনে "আহা কুটুম বাড়ি, কাঁঠাল কাঠের পিঁড়ি , নাইল্যাশাকের বড়া, আমড়া বোলের টক, নিখাদ গল্প অবসর কোথায়, কে যেন রেখেছে আমার জন্য  এক চৈত্রের মধ্যাহ্নে? "

    আমি জিজ্ঞেস করলাম, কি করেন আপনি।

    তিনি ততোধিক দ্রুততায় উত্তর দিলেন, "পার্টি করি "।

    আমি টগবগ করে উঠলাম।

    মাথায় দুম করে বাজলো, পঞ্চায়েতে ফিফটি পার্সেন্ট রিজার্ভেশন, 
    সাবাস ! 
    তাকিয়ে রইলাম। কোথায় রুখুসুখু চেহারা!
     
    বসন্তের রক্তাক্ত পলাশ, যেন জ্বলছে, সঙ্গে নেয়নি নিভে যাওয়ার ঠিকানা। 

    আত্মবিশ্বাসী উচ্চারণ।

    মেয়ের বাপ কইছিলো, মাধ্যমিক পাশ করছে,  দোকানদার পাত্র পাইছি, বিয়া দিমু ওখন।

    আমি রাজী হইছি না, মেয়েরে পলিটেকনিকে ভর্তি করাইছি। পড়তাছে।

    গ্রামে তিনডা চোলাই মদের দোকান আছিলো, আমরা সবাই মিইল্যা  দিছি উঠাইয়া। 
    ওখন একটাও নাই।
    পঞ্চায়েতের মিটিং এ কইছি আমরার গ্রামের একটা মাইয়্যার গায়ে যদি শ্বশুরবাড়িতে হাত ওঠে, খবর আছে  !

    দুইহাজার এক, ভারত সরকার ঘোষণা করেছিল মহিলা স্বশক্তিকরণ বর্ষ...
    হচ্ছে তাহলে, ধীরে ধীরে একটি তেজ জন্ম নিচ্ছে মেঠো পথে, নিকোনো উঠোনে। 

    এই জ্বলজ্বলে মহিলাটির নাম জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে হলো না। 
    নাম দিলাম আমি, "যোদ্ধানী "

    যোদ্ধানী থামছে না। বলে যাচ্ছে।
     কমলার কোয়ার মতো পুরু ঠোঁট চেপে চেপে বলছে, 

    গোলাপী বেগম, পাঁচ বছর আগে তিন তালাক দিয়া বাইর কইরা দিছিলো মরদ।
     গোলাপীরে বুঝায়া সংখ্যালঘু সিটে দাঁড় করাইছি। পঞ্চায়েতের  মেম্বার হইছে । 
    গলা ফাটাইয়া, মাথা উঁচা কইরা বক্তৃতা দেয়। 

    জিপের খোলা জানলা দিয়ে তখন  ধূ ধূ লাল মাটির বাতাস ...BeBoldforChange 

    আজ তিন তালাক, উড়ে গেছে ...
    দীর্ঘতম কালবৈশাখী হয়েছে  সংসদের ইতিহাসে। 

    তবুও...
    লোকসভায় ফিফটি পার্সেন্ট সংরক্ষণ , এখনও আদায় করা যাচ্ছে না, বিরোধ চলছে 
     
    অর্ধেক আকাশ আর কত লাগে?  হচ্ছে তো সব! আহ্! 

    গন্তব্য এসে যাচ্ছে।
    যোদ্ধানীর দিকে তাকালাম, সিঁথিতে দগদগে সিঁদুর, শাঁখা, পলা, লোহা সব আছে।
     
    এ মেয়ে MeToo জানে না, আমি নিশ্চিত।

    আমি জানি সে ভালো আছে, 

    সহবাস দুজনের সম্মতিতে হলো কি না, এ নিয়ে কোনদিন সে মাথা ঘামায়নি।

    তার পরনের ক্যাটক্যাটে বেগুনি রঙের শাড়ি
     ক্রমাগত সম্ভ্রান্ত, নত করে দিলো আমাকে

    তাকিয়ে মনে হলো,

    আন্তর্জাতিক নারী দিবসের দিন অনেকেই বেগুনি পরেন, 
    হয়তো এসব কিছু না জেনেই,  
    কি অসহনীয় সুন্দর হয়ে ফুটছে যোদ্ধানী,

    দুহাত দিয়ে সে ছাপ দিচ্ছে ধুলোতে, আকাশে

    আমরা দেখছি বেগুনি, লাল, সাদা আর গোলাপীতে চীৎকার করছে বর্ণমালা, 

    PressforProgress, ...PressforProgress...PressforProgress. 

    ##############################

    বিঃ দ্রঃ...BeBoldForChange, slogan of 2017, International womens day

    PressforProgress, slogan of 2018, international womens day

    © চিরশ্রী  দেবনাথ

    আর ইউ ভার্জিন? 
    ............

    ফুলের মতো কোমল যোনি 
    নরম ঘাস, কচি ব্লেড!
     সেলাই হবে, 
    ঝরবে রক্ত
    শরীরে মাখানো সাদা রঙ
    অনিশ্চিত মৃত্যুর প্রসাধন, অভ্রকুচির টিপ

    কি যন্ত্রণা, মা!, মাগো?

    বড়ো হবে, প্রতি মুহূর্তে কষ্ট যোনিদেশে 
    পাথরের মালায় ভীষণ যন্ত্রণার রজঃপাত
    দীর্ঘতম ইনফেকশন কৈশোরের নীল পথে, 
    কিংবা  ফ্যাকাশে মৃত্যু

    হলুদ বিবাহের রাতে
    স্বীকৃত পুরুষ খুলবে সেলাই
    সোনালী কুমারীত্ব, তোমারই শুধু! 
    চরাচরে পবিত্রতম নিষ্ঠুরতা,
    কি বলো এশিয়া, আফ্রিকা, ইউরোপ! 
     কুড়ি কোটি ফিমেল জেনিটাল মিউটিলেশন এখনো? 

    যখন শুনলাম, 
    একটি বিশুদ্ধ গ্যালাক্সি
    এবং সাতখানা পৃথিবী এই মহাকাশে...লুকিয়ে আছে অন্ধকারে 
    সেই থেকে বড়ো জানতে ইচ্ছে করে , 
    তোমাদেরও কি নারী আছে,
    আছে ভার্জিনতার পরীক্ষা এবং  নারী দিবস?

    © চিরশ্রী দেবনাথ

    মৃত পাখিরা 

    .........©চিরশ্রী দেবনাথ

    একটি হিজাব এবং ওড়নার মধ্যে খানিকটা পার্থক্য ...প্রেমের 

    হিজাব নিয়ে কোনও গান নেই, চুপ! 

    ওড়না উড়িয়ে, দোপাট্টা ভিজিয়ে যখন তখন বৃষ্টি ঝরে, 

    মেঘ জমে ওঠে অকাল ঋতুতে, রামধনু অসময়ের। 

    এই ছোট্ট শহরের ছোট্টবেলা থেকে আসা দোকানে, 

    আগে কোনো হিজাব বিক্রি হতো না,এখন প্রচুর! 

     

    ঝলমলে হিজাবগুলো সার দিয়ে ঝোলানো, মৃত পাখিদের মতো। 

     যাদের ভালো লাগে তারা পরুন। 

     আমার মনে হয়,

    তাদের চুলে, গলায়, কাঁধে একটু কি হলকা বাতাস

    বয়ে যেতে পারে না, একটি অনাবৃত বনাঞ্চল। 

    এ পৃথিবীর ধুলোটিও তো, নরম,  তারও একটু 

    ছুঁয়ে দেখতে ইচ্ছে করে,

    বন্দী ঋতুটির বড়ই ছটফটে স্বভাব। 

     

    শ্রী রাধা

    ....চিরশ্রী দেবনাথ

    ফেলে এসো রাধা যমুনাতীর

    তমালতরু ও বালক প্রেমিক

    ফেলে এসো  ঘাসে ছাওয়া তৃনভূমি

    জোৎস্নাশাসিত সঙ্গসুধা

    ধুয়ে দাও গৌরবর্ণ

    ফুলের সাজ আর সুগন্ধ বিলাস

    যদি সাজাই আমার সাজে

    কালো রঙে ঢেকে যাক শ্যামের আদর

    তীব্র তিলখানি লুকিয়ে যাবে 

    খড়ি ওঠা চামড়ায়, আগুনরঙা চুল

    কোটর চোখে খোলা নদী

    ডুব দাও শ্যাম

    দশম স্কন্ধ  শ্রীভাগবত ক্লোজ

    ঘুচে গেছে রাস, পরকীয়া রক্তে হোলি

    মেঘের পথে হাত ধরেছে রাধা আমার, 

    নিকষ কালো  রাধা  

    দিলাম এনে বড়ু চন্ডীদাস, 

    কলম উঠিয়ে রইলেন যে বড়ো, 

    এ যে বিষমকথা 

    রূপহীন অপুষ্ট নারী দিয়ে

    কি আর হয় কাব্যকথা

    এসো এসো রাধা ঝুলন দোলায় দুলি 

    তোমায় দিলাম  শ্যামহীন বৃন্দাবন 

    তোমার সঙ্গে আছি এক পৃথিবী 

    ( সব গুলোই বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশিত)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • প্রত্যয় ভুক্ত | ০৭ মার্চ ২০২২ ১৫:৫৭504753
  • সব কবিতাগুলোই যেন টুকরো টুকরো ছবি,ভাল-খারাপ কিরকম লাগল বলতে পারব না একবাক্যে, কিন্ত এটুকু বলতে পারি,প্রতিটি শব্দ‌ই বড় ছবি ফুটিয়ে তুলতে পেরেছে মনের চোখে,telling words have been used surprisingly and ngl,quite efficiently,অনেক কিছু অনুভব করাল এইসব কবিতা,ধন্যবাদ এই কোলাজের জন্য। <3 
  • Chirasree Debnath | ০৭ মার্চ ২০২২ ১৬:২০504754
  • ধন্যবাদ আমার, মতামত পেয়ে খুব ভালো লাগল, আমার। ভালো থাকুন
  • Neptune_Pluto | 103.221.255.242 | ১২ মার্চ ২০২২ ০১:৪১504829
  • ভালো সব কবিতা 
  • সে | 2001:1711:fa42:f421:b8d2:1393:53fc:ba4d | ১৩ মার্চ ২০২২ ০৫:১২504855
  • পড়ছি।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে প্রতিক্রিয়া দিন