এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • রাজনৈতিক সাংবাদিকতার দৃষ্টিতে গণতন্ত্র - রঙ্গমঞ্চ না ইতিহাস রচনাক্ষেত্র

    বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৮ এপ্রিল ২০২০ | ২৮১৯ বার পঠিত
  • এমনকি মহামারী-জনিত সম্পূর্ণ অভূত পূর্ব সংকট পরিস্থিতিতেও পশ্চিমবংগে রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের মধ্যে এক্তিয়ার প্রশ্নে রাজনৈতিক কুনাট্য ঘটেছে , এবং ঘটে চলেছে। সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সমর্থক,  স্থূল অর্থে আত্মপ্রচার এ আগ্রহী রাজ্যপালের  কোন নিন্দাই যথেষ্ট না, এবং রাজ্য সরকার গুলোর ঘাড়ে সমস্ত কাজ ও নিন্দার ভার দেওয়ার পরিচিত কেন্দ্রীয় পরিকল্পনাটিও নতুন না। একই সংগে রাজ্য সরকারের সং্ক্রমণ এর তথ্য সংক্রান্ত বিষয়ে অযাচিত নিয়ন্ত্রন অবিশ্বাস্য মুর্খামি মাত্র। কিন্তু এই প্রসংগে মেডিয়ার ভূমিকা বা সংবাদ গ্রাহক হিসেবে আমাদের ভূমিকাটিকে কি একটু আয়নার সামনে দাঁড় করানো উচিত? গণতন্ত্রে ক্ষমতার চাপান উতোর এর নাটকীয়তার বিবরণ এবং চর্চা কি আমাদের সত্যিই কোন কাজে লাগছে? প্রয়াত অর্থনীতিবিদ, সাহিত্য সমালোচক অশোক মিত্র প্রতিষ্ঠিত "আরেক রকম" পত্রিকার ২০১৮ র ১৬-৩১ অগাস্ট সংখ্যায়, প্রকাশিত একটি প্রবন্ধ ইনটারনেটে প্রকাশ করা হল। আরেক রকম পত্রিকার পরিচালক বর্গকে অনুমতির জন্য ধন্যবাদ। লেখকই এই অনুমতি যোগাড় করেছেন। মুখবন্ধে ও মূল লেখায় প্রকাশিত মতের  আক্ষরিক বা নির্যাসিতব্য সমস্ত অর্থের সমস্ত দায়িত্ত্বই লেখকের।

    (প্রাসংগিক - এই লেখকের ই লিখিত অশোক মিত্রের অবিচুয়ারি, গুরুচন্ডালিতে পূর্বে প্রকাশিত রচনাটির লিংক)")



    গত ১২ জুলাই ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস আয়োজিত বাৎসরিক রামনাথ গোয়েন্কা স্মৃতি বক্তৃতায় সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি রঞ্জন গোগৈ একটি বক্তৃতা দিয়েছেন। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস তাঁর  সেই বক্তৃতা থেকেই তার পরের দিন তার সংস্করণগুলির শিরোনাম করেছে এই ভাবে, 'Needed: Noisy judges, independent journalists, judiciary on front foot, says Justice Ranjan Gogoi at RNG Lecture'। দুটি মজার বিষয় বেরিয়ে আসছে এই শিরোনাম থেকে।  দেখা যাচ্ছে, নজরদারীর ভূমিকায়, দেশের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত করতে, বিচারব্যবস্থার বিভিন্ন বিভাগ গুলির সঙ্গে,  স্বাধীনচেতা , নির্ভীক সাংবাদিকতাকে অসীম গুরুত্ত্ব দিচ্ছেন প্রবীণ এই বিচারপতি। কিন্তু এই সংক্ষিপ্ত তালিকায় রাজনৈতিক ব্যবস্থার কোন উল্লেখ নেই। গত বেশ কিছু বছর ধরে গণতন্ত্রের স্তম্ভ গুলির মধ্যে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত অংশটির প্রতি অন্য অংশগুলির আস্থা যে খুব ভালো জায়গায় নেই, তা মোটামুটি স্পষ্ট, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত নাগরিকদেরও তাই মত।


    আমরা বিষয়টাকে একটু উল্টো করে দেখবো। রাজনৈতিক সাংবাদিকতার দৃষ্টিতে আমাদের দেশের বর্তমান রাজনীতির স্থান ঠিক কোথায়, তার ভাষ্যেরই বা কিছু খামতি আছে কিনা সেটা বোঝার চেষ্টা করব। আলোচনাটি যাতে অসংখ্য উদাহরণে হারিয়ে না যায়, বা অভিজ্ঞতার প্রতিযোগিতায় না পড়ে যায়, কিছুটা সাধারণিকৃত অবস্থায় থাকে, তার জন্য আমরা খানিকটা সতর্ক থাকবো। রাজনৈতিক সাংবাদিকতার চরমতম উৎকর্ষ বলতে যা বোঝানো হয়, আমরা তাকেই প্রশ্ন করব, বুঝতে চাইবো বিষয় হিসেবে তার অবস্থানগুলির কোনো  সীমাবদ্ধতা রয়েছে কিনা।


    প্রথমে একটু দেখে নেওয়া যাক সংবাদমাধ্যম প্রসঙ্গে আপাতত প্রধান সর্বাধিক  আলোচিত দুশ্চিন্তাগুলি কী?



    পেইড নিউজ


    প্রথমতঃ বৃহৎ সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে বৃহৎ বা তাড়াতাড়ি বৃহৎ হতে চাওয়া বাণিজ্যসংস্থার সম্পর্ক এবং পেইড নিউজের সমস্যা। বিজ্ঞাপণ ক্রোড়পত্র এবং সংবাদ, তাদের পার্থক্য থাকছেনা মোটামুটি এইটেই মূল অভিযোগ। এবং ইনটারনেটের খবর পরিবেশনের ক্ষেত্রে, বিশেষতঃ বিজ্ঞাপিত সংবাদের সঙ্গে সংগৃহিত/সম্পাদিত সাধারণ খবর আলাদা করা কঠিন হয়ে পড়ছে, এটা যথেষ্ট দুশ্চিন্তার বিষয়।এর ভয়ংকরতম দিকটি হল, বিশেষতঃ টেলিভিসন চ্যানেলের ক্ষেত্রে, রাজনৈতিক ক্ষমতাশালী বিভিন্ন মানুষের এই খেলাটিতে জড়িয়ে পড়া, এবং বৃহত্তর ব্যাবসায়িক স্বার্থ শুধু না, ক্ষুদ্র এবং তাৎক্ষণিক রাজনৈতিক  স্বার্থে সংস্থার পরিচালনা। এর মধ্যে আরেক টি অপেক্ষাকৃত স্বল্পালোচিত দিক হল, সংবাদমাধ্যমের দিক থেকে বিজ্ঞাপণ গ্রহনের কোন অন্তত স্ব–আরোপিত এবং নির্দিষ্ট ভাবে প্রকাশিত বাছবিচার থাকা উচিত কিনা।



    রাজনৈতিক অবস্থান এবং চিৎকৃত বিতর্ক


    আমাদের দেশে কড়া রাজনৈতিক অবস্থান নেওয়া  সংবাদমাধ্যম নতুন কোনো ঘটনা না। এখন আরো যেটা দেখা যাচ্ছে, ক্রমশঃ দক্ষিনগামী রাষ্ট্রীয় ভূমিকার সম্পর্কে ধারণার প্রতিফলন ঘটাতে না পারলে, তথাকথিত লিবারাল মিডিয়া সংস্থার  পক্ষে ব্যবসা চালানো কঠিন হচ্ছে অথবা তাঁরা নিজেরাই জাতীয়তাবাদ দেশপ্রেম ইত্যাদি সম্পর্কে সাধারণ ধারণা চিহ্নিত ঘেরাটোপ থেকে বেরোতে পারছেন না।।অথচ তথাকথিত রক্ষনশীল জাতীয়তাবাদী সংবাদমাধ্যম গুলি লিবেরালদের জন্য পরিসর তৈরী করার প্রয়োজন বোধ করছেন না।


    উদার বা রক্ষনশীল মূল্যবোধ দ্বারা পরিচালিত সংবাদ সংস্থা গুলির মধ্যে অর্থনীতির ক্ষেত্রে যেমন সরকারী ভূমিকা হ্রাসের ব্যাপারে বড় কর্পোরেট দের পক্ষে রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরী হয়েছিল বছর কুড়ি আগে, বিশ্বায়নের উত্তেজনার আমলে, তেমনই রাজনৈতিক বিষয়েও দেখা যাচ্ছে যে  রক্ষণশীল শক্তির পক্ষে, অন্তত রক্ষনশীল শক্তির উচ্চকিত উচ্চারণের পক্ষে একটা ঐকমত্য তৈরী হয়েছে। ঐতিহাসিক ভাবে অধিকারের প্রশ্নে বিচ্যুত, ক্ষমতাহীন মানুষদের প্রতি সামান্য সহানূভূতি দেখাতে গেলেও রাজনৈতিক সংবাদে সমতা প্রদর্শনের জন্য অতিরক্ষনশীল মতামত কে জায়গা দিতে হচ্ছে। গণতান্ত্রিক আন্দোলন ছেড়ে দিন, ঐকমত্যে পৌছনোর পদ্ধতিকেও কে তথাকথিত উন্নয়নের বাধা হিসেবে দেখানো হচ্ছে।  বিভিন্ন রঙ এর অতি রক্ষনশীল মতামতের মধ্যেকার ক্ষমতা বিভাজনের জন্য প্রয়োজনীয় কথাবার্তা র পরিসর কেই বিতর্ক পরিচালনায় নিরপেক্ষতা হিসেবে প্রদর্শন করা হচ্ছে, ক্ষমতাশালী রক্ষনশীল গোষ্ঠী গুলির মধ্যে যেন একমাত্র আলোচনা হতে পারে। চিন্তাশীলতার, পরমতসহিষ্ণুতার যেন কোন মূল্য নেই গণতন্ত্রে, উত্তেজনাপূর্ণ কেজো সহাবস্থান ই যেন আমাদের ভবিতব্য, সহমর্মীতার, দুর্বলের প্রকৃত উত্তরণের যেন কোন জায়গা নেই।



    অতি-সম্পৃক্তি


    বৃহৎ গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠান গুলির সঙ্গে সংবাদমাধ্যমের প্রাতিষ্ঠনিক সম্পৃক্তি এবং বহিরাগতের দৃষ্টিভংগীর কার্যত একধরণের অবলুপ্তি ঘটেছে। মূলতঃ দুটি ভাবে  এই ঘটনা প্রতিভাত। শান্তিকালীন এবং যুদ্ধকালীন। 


    শান্তিকালীন উদাহরণ গুলিই জটিল। প্রায়শ দেখা যায়, এক্সক্লুসিভের বিশেষ প্রতিবেদনের লোভে, বড় বড় সংবাদ সংস্থার নামী সাংবাদিকেরা প্রতিষ্ঠানের অংশ হয়ে উঠছেন । তাদের ভাষ্য ক্রমশঃ রাজনৈতিক ক্ষমতার অলিন্দের কোর্ট ড্রামা ছাড়া আর কিছু হতে ব্যর্থ হচ্ছে। এবং সত্যি কথা বলতে কি জনপ্রতিনিধির সঙ্গে সাধারণ মানুষের দূরত্ত্ব কমানো দূরস্থান, দূরত্ব প্রচন্ড বাড়াচ্ছে, এবং আজকের এই ব্যক্তিগত বিশ্বাসনির্ভর সংবাদ নির্বাচনের যে নাগরিক অভ্যাস গড়ে উঠেছে তার জন্য অনেকটাই সরাসরি এই জিনিসটিকে দায়ী করা যায় কিনা ভাবা দরকার। আধুনিক ''রাজনৈতিক মহল' বস্তুটি যে কোথাকার বা কারা বোঝা মুশকিল।  'ওয়াশিংটন', 'ওয়েস্ট উইং' , 'সাউথ ব্লক', 'হোয়াইট হল' বা 'ডাউনিং স্ট্রীট' বা 'ব্রাসেল্স' বা 'নবান্ন' বা এমনকি 'তিরিশের বি' কিংবা 'আলিমুদ্দিন' এই সব ক্ষমতার অলিন্দ বোঝানো শব্দবন্ধ একধরণের রহস্য নির্মাণ এবং ব্যক্তিগত ভাবে সাংবাদিকদের সংযোগ বা পরিচিতির অহংকারের বাড়বাড়ন্ত কে উৎযাপন করা ছাড়া গণতন্ত্র চর্চার আর কোন উপকার করেছে কিনা যথেষ্ট সন্দেহের অবকাশ আছে। সরকারি নীতি কে মানুষের হয়ে প্রভাবিত করার বদলে ক্ষমতার অলিন্দে যাতায়াত উদ`যাপন ছাড়া বিশেষ কিছু হচ্ছে না।


    সংবাদমাধ্যমের যুদ্ধকালীন ভূমিকাটি চমকপ্রদ।  যুদ্ধের সময়ে বিশেষত সরকারপক্ষের বা সেনাবাহিনীর সঙ্গে দুরন্ত ফ্রন্টলাইন কভারেজ করতে গিয়ে সংবাদমাধ্যমের কার্যত সেনাবাহিনীর ভাষ্যের বাহনে পরিণত হওয়া এখন আর নতুন ঘটনা কিছু না। দেশপ্রেমে হাত পা সেঁকে নেওয়ার জন্য দেশবাসীর পক্ষে এই শ্রেষ্ঠ সময়। বিতর্কিত এবং সম্পূর্ণ বেআইনি দ্বিতীয় উপসাগরীয় যুদ্ধের সময়ে ২০০২-২০০৩ এ অভিযোগ উঠেছিল বিবিসি-সিএনেন এবং একটু অন্য অর্থে নিউ ইয়র্ক টাইম্সএর বিরুদ্ধে। ব্রিটেন এবং আমেরিকার নেতৃত্ত্বে তথাকথিত 'আন্তর্জাতিক কমিউনিটি' যুদ্ধের পক্ষে কুযুক্তি সাজাতে কার্যতঃ গোয়েন্দা তথ্য কৃত্রিম ভাবে সাজিয়ে সার বিশ্বের নীতি নির্ধারক প্রতিষ্ঠান গুলিতে প্রায় চক্রান্তের আকারে একযোগে পেশ করে। ইরাক যুদ্ধের সমর্থনে জাতিসংঘে জেনেরাল কলিন পাওয়েল-এর , এবং বৃটিশ পার্লামেন্টে প্রধাণমন্ত্রী টোনি ব্লেয়ারের মিথ্যাচারে ভর্তি বক্তৃতা সাম্প্রতিক ইতিহাসে পশ্চিমের সভ্যতার গায়ে কালিমা চিহ্ন হয়ে রয়েছে। অনেক সংবাদমাধ্যমই তখন এই সব তথ্য কে মূলধন করে মাইলের পরে মাইল নিউজ প্রিন্ট খরচ করেছে , ঘন্টার পরে ঘন্টা প্রচার তরঙ্গ ভরিয়ে দিয়েছে। পরবর্তী কালে যখন যুদ্ধ শুরু হয়, বাগদাদ থেকে বস্তুতপক্ষে ন্যুনতম চক্ষুলজ্জা না রেখে পশ্চিমের সত্যের কান্ডারি বহু টেলিভিশন চ্যানেলই  দখলদারী আক্রমণকারী পক্ষের ভাষ্য হয়ে ওঠার পরিশ্রম করতে পিছিয়ে থাকে নি। বিবিসির রাগে উমরের মত ব্যক্তিগত সাংবাদিক দের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে লড়াই, ব্রিটিশ এবং আমেরিকান সেনাবাহিনী কে সরাসরি 'দখলদারী' শক্তি নামে বিবিসির রিপোর্টেই চিহ্নিত করা, বা জন স্নো সঞ্চালিত চ্যানেল ফোর এর মত দু একটা ছোটো স্টেশনের গড্ডলিকায় গা না ভাসানোর প্রচেষ্টাই আজকের দৃষ্টিতে দেখলে পশ্চিমের সাংবাদিকতার সম্মান রক্ষা করেছিল। এটাকে পরিভাষায় বলা হচ্ছে এম্বেডেড বা অতি-অন্তর্ভুক্ত সাংবাদিকতার সমস্যা। বিশদে না গিয়েও একটা মজার ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে।  বিতর্কিত টেলিভিসন সাংবাদিক অর্ণব গোস্বামির যখন দেশে বিদেশে বেশ সমালোচনা হচ্ছে , তখন অর্ণব গোস্বামি চাতুরির সঙ্গে আত্মপক্ষ-সমর্থনে পশ্চিমি  তথ্যনির্ভর সাংবাদিকতার এই কলঙ্কটির কথা মনে করাতে ছাড়তেন না, সে দর্শকদের পক্ষে তা নানা কারণে যত বিবমিষাই উৎপাদন করুক না কেন।


    আমাদের দেশে এই প্রক্রিয়ার তাৎপর্য্য পরিস্থিতির কারণে কিছুটা অন্যরকম। কার্গিল যুদ্ধের সময় থেকে প্রান্তিক সংঘর্ষের সমস্ত সমস্যাতেই, যুদ্ধরত বাহিনীর এবং নিজেদের দেশপ্রেম দর্শন ছাড়া আর আর বিশেষ কোন উদ্দেশ্য সম্পাদন করতে আমাদের বৃহৎ মাধ্যম গুলিকেও দেখা যায় নি, কে বা আগে প্রাণ করিবেক দান অবস্থা। শান্তিকামী নাগরিকের দৃষ্টিভঙ্গী তো ছেড়েই দিন, যুক্তিনির্ভর প্রেক্ষিত সংক্রান্ত তথ্য প্রায় দুর্লভ, এবং তথাকথিত শান্তি র সময়েও এর ব্যতিক্রম ঘটে না। প্রখ্যাত চেক ঔপন্যাসিক জারোস্লাভ হাসেকের 'গুড শোলজার শোয়াইক' যাঁরা পড়েছেন, বা আমাদের এখানে, ব্রেখট অনূদিত নাট্যরূপটির মঞ্চায়ন যাঁরা দেখেছেন, প্রবাদপ্রতিম বিভাস চক্রবর্তী মহাশয়ের অভিনয়ে, তাঁদের যুদ্ধপ্রস্তুতির বিষয়ে সম্পূর্ণ অনর্থক তীব্র উত্তেজনার সম্পর্কে  রসিকতাগুলি বা একেবারে সত্যজিত-কৃত গুপি গাইনের ''যুদ্ধ করে করবি কি তা বল' মনে পড়তে বাধ্য, যদি না বিচিত্র দেশপ্রেমের চাপে সমস্ত শিক্ষাদীক্ষা, বিচারবুদ্ধি লোপ পেয়ে থাকে।



    গোপন ক্যামেরার স্টিং


    আমাদের দেশের বিজেপির তৎকালীন সর্বভারতীয় সভাপতি বঙ্গারু লক্ষ্মণের টাকা নেবার আলোড়ন সৃষ্টিকারি  ক্লিপিংটি এক ধাক্কায় রাজনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে সাধারণের বিশ্বাসে ফাটল ধরিয়ে দিয়েছিল ।যদিও একটা সময়ে তহেলকা বা আজকের কোবরা পোস্টের প্রামাণ্য নির্মাণে একটা গুরুত্ত্ব হয়তো আছে, তবু ব্যক্তিগত ভাবে আমার একটু কিন্তু-কিন্তু আছে এই পদ্ধতিটি এমনকি উইকিলিক্স এর পদ্ধতি সম্পর্কে।  তথ্যসূত্রের গোপনীয়তা সাংবাদিকতার জগত একটা বিরাট বিষয়। সাংবাদিকেরা দীর্ঘদিন ধরে সূত্রের গোপনীয়তার ব্যাপারে একটা সংস্কৃতি গড়ে তুলেছিলেন। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে গোপন তথ্য দেওয়া মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ত্ব কেউ ই নিতে চাইছেন না। এবং স্টিং অপারেশনের ক্ষেত্রে, দেখা যাচ্ছে, বিচারের আগেই বিচারের একটা সংস্কৃতি শুরু হয়ে যাচ্ছে। তথ্য এবং বিশ্লেষণ নির্ভর সাংবাদিকতার বিষয়টি যেন ক্রমশঃ গুরুত্ত্বহীন হয়ে পড়ছে। তাতে সাংবাদিকতার মানের খুব উপকার হচ্ছে কিনা সন্দেহ আছে। একটা উদাহরণই যথেষ্ট, রাণা আয়ুবের গুজরাট সম্পর্কিত অসম সাহসী বইটি এমনি ঠিক ই আছে। কিন্তু  আসল ফুটেজ না বেরোনো অব্দি, অবহিত 'মহলের' বাইরে খুব বেশি গুরুত্ত্ব দেওয়া মুশকিল। তবে বইটির মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী অংশটি কিন্তু হরেন পান্ড্য হত্যা মামলায় গুজরাটের এক সিনিয়র সাংবাদিকের বিশ্লেষণাত্মক রিপোর্টের একটি অংশ। বলা বাহুল্য সেটি লিখতে, গোপন ক্যামেরা লাগে নি। অন্যদিকে এটাও মনে করানো যেতে পারে, এডওয়ার্ড স্নোডেন বা জুলিয়ান আসাঞ্জ, পৃথিবী ব্যাপী ঠান্ডা/গরম/গোপন যুদ্ধে পক্ষাবলম্বন না করলে গুরুত্ত্বপূর্ণ গোপন তথ্য সরবরাহক আদৌ হতে পারতেন কিনা সন্দেহ। অতএব সত্যিকারে স্বাধীনচেতা সাংবাদিকদের পক্ষে সমসাময়িক অতি বিপজ্জনক। গোপন ক্যামেরার উত্তেজনা, এই সমস্যাটি কে ভুলিয়ে দিচ্ছে।



    সত্য-পরবর্তী বিশ্বাসযোগ্যতা


     ২০১৬ র গ্রীষ্মে ব্রিটেনের ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার গণভোট (ব্রেক্সিট) এর সময়ে, এবং ঐ বছরেই শেষের দিকে আমেরিকায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং এর ফলাফল কে কেন্দ্র করে যে বিষয়টি উঠে আসে, তা হল, টেলিভিসন বা কাগজে বড় নিউজ মেডিয়ার বদলে, প্রচার সর্বস্ব , আংশিক তথ্য নির্ভর প্রকৃত পক্ষে 'ক্যাম্পেন মেটেরিয়াল' কেই লোকে প্রকৃত সংবাদ হিসেবে বেছে নিচ্ছেন সোশাল নেটওয়ার্কিং এ, এবং অতীব উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে  মানুষের বিশ্বাস অনুযায়ী সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে, প্রায় ব্যক্তিগত পছন্দের হলিডে ডিল বা বীমা কোম্পানীর নানা বিনিয়োগযোগ্য পরিষেবার খবরের মত তথ্য পাঠানোর পদ্ধতিতে। পরবর্তীকালে কেম্ব্রিজ অ্যানালিটিক্স এর ভূমিকা ইত্যাদি নিয়ে এত বিশদে এবং যথেষ্ট গভীরতার সঙ্গে এমনকি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমেও আলোচনা হয়েছে আর বিশেষ আলোচনার প্রয়োজন নেই। । শুধু এটুকু বলাই যথেষ্ট, যে ইলেকট্রনিক, বিশেষতঃ সোশাল নেটওয়ার্কিং মাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, এক ধরণের চিন্তাভাবনার পরিসরহীন রাজনৈতিক এজেন্ডা দ্বারা পরিচালিত সংবাদ পরিবেশন হচ্ছে. এর ফল অনেক সময়েই ভয়ানক হচ্ছে। চক্রান্ততত্ত্ব জিনিসটার প্রভাব এখন আর স্বশিক্ষিত, সরকার কে সাধারণ ভাবে সন্দেহের চোখে দেখা আমেরিকান নাগরিক দের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। পদ্ধতিটির জনপ্রিয়তা মোবাইল ফোনের ইনটারনেট সংযোগের মাধ্যমে আজ সমভবত আমাদের দেশে তৃণমূলস্তরেও সুদূরপ্রসারী। এতটাই এর প্রভাব, স্বয়ং অমিত শাহ বিশ্বাস করছেন  যে যদি তাঁরা সোশাল নেটওয়ার্কিংএর মতাদর্শগত এবং প্রতিযোগিতামূলক সংবাদ পরিবেশনের যুদ্ধে জিততে পারেন, ২০১৯এর লড়াই তাঁরা জিতে যাবেন ।



    প্রতিনিধিত্ত্ব


    রাজনৈতিক ব্যবস্থার আলোচনায় , মূলত জনপ্রতিনিধিত্ত্ব কতটা গভীর এবং ব্যাপক তার আলোচনা করা হয়।  আজকাল দেশে বিদেশে সর্বত্রই পপুলিস্ট শব্দটার একটা প্রচলন হয়েছে। কিন্তু কাগজ পড়ে বোঝার উপায় নেই, এর অর্থ এবং অনর্থ দুটি ই পশ্চিমের তুলনায় আমাদের দেশে কোথায় আলাদা এবং ঠিক কোথায় সামঞ্জস্য পূর্ণ।


    পশ্চিমে ব্রেক্সিটপন্থী ইউকিপ পার্টি এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প বা ইউরোপের অভিবাসন বিরোধী পার্টি গুলির উত্থান কে দেখানো হয় সাধারণ ভাবে মধ্যপন্থী রাজনীতির ব্যর্থতা হিসেবে। বলা হয় সে দেশের উৎপাদন শিল্পের মন্দা কর্মহীনতা তৈরী করেছে, এবং সেই কর্মহীনতা থেকেই স্থানীয় সংখ্যাগুরু শ্বেতাঙ্গ দের সামাজিক ক্ষমতার কেন্দ্র থেকে বিচ্যুতির ভীতি, এবং অভিবাসন বিরোধিতা, এর ফলেই শ্বেতাঙ্গ  পপুলিজম-এর সৃষ্টি, ব্যবস্থা সম্পর্কে অবিশ্বাসের সৃষ্টি। অথচ তার সমাধানে আভ্যন্তরীন শিল্প ও সামাজিক সুরক্ষার  নীতিতে শ্রমিক মুখী পরিবর্তনের ব্যবস্থা করে, নতুন দক্ষতা সম্পন্ন কর্মী তৈরী করার জন্য কোন ব্যবস্থাই নেওয়া হয় না।  নীতি র কোপ পড়ে অভিবাসনের থেকেও অভিবাসীর উপরে।এটাও ভুলে যাওয়া হয়, তথাকথিত অর্থনৈতিক সুদিনেও কখনো-ই পশ্চিমে অভিবাসীরা ঠিক সামাজিক নিমন্ত্রন পান নি, কিংবা পপুলিস্টরা তাদের রক্ষনশীল সমাজ দৃষ্টি র বাইরেও পরিষেবা দেওয়ার প্রশ্নে ঠিক জনপ্রিয় থাকছেন কিনা।



    ভারতীয় পপুলিজম


    আমাদের দেশে ‘পপুলিস্ট’  শব্দটা একটু অন্য অর্থে ব্যবহার করা হয়। যেকোনো জনমুখী, মানুষের সামান্য সাহায্য করে  এরকম সরকারী নীতিকেই জনমুখী না বলে জনমোহিনী বলা হয়, নিন্দাসূচক অর্থে। যথারীতি রাজ্যে ও কেন্দ্রের প্রেক্ষিতে তার  অর্থ একটু আলাদা। কেন্দ্রের নীতি নির্ধারণ বা সরকার গঠনের সময়ে, ন্যুনতম সামাজিক ক্ষেত্রে ব্যয় বাড়ানোর সম্ভনা থাকলে, টেলিভিশনের পর্দায় দেখানো হতে থাকে কিভাবে শেয়ার মার্কেটের বিনিয়োগকারীর আস্থা প্রতিমুহুর্তে কমে যাচ্ছে, কারণ ধরেই নেওয়া হয় সামাজিক ক্ষেত্রে সরকারী ভূমিকা বৃদ্ধির পরিবেশের ক্ষতি করবে। এবং অন্যসময়ে  দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক সুরক্ষার বাজেট কমানোর পক্ষে সওয়াল করা হয়, দীর্ঘমেয়াদী সামাজিক সুরক্ষার বদলে এককালীন কিছুটা মূলতঃ অর্থমূল্য বা দ্রব্য ভিত্তিক সহায়তার নীতিকেই একদিকে সমর্থন করা হয়, অথচ সামাজিক দুর্বল অবস্থান সাপেক্ষে সাধারণ ব্যক্তি নাগরিক সামান্য সুবিধা পেলে সেটাকে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি বলে বর্ণনা করা হয়। কটা মূলধারার সংবাদমাধ্যম এই প্রবণতা থেকে নিজেকে সরিয়ে আনার প্রমাণ দাখিল করতে পারবে?


    রাজ্যের ক্ষেত্রে সংবাদ  ভাষ্যে মাঝে মাঝে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করা হয়, অতি-মানবিক ইমেজ সম্পন্ন নেতা নেত্রী দের আবির্ভাব সম্পর্কে, তাঁদের দাক্ষিন্যের রাজনীতিকে, তাঁদের সম্পূর্ণ বিরোধীহীনতার রাজনীতির মৃদু সমালোচনাও করা হয়।  কিন্তু যে দেশে গণতন্ত্রকে সাধারণ ভাবে উন্নয়ন এবং শিল্প বাণিজ্যের বিস্তারের বাধা হিসেবে দেখা হয় তাতে এই বিরোধীহীনতার স্থানীয় ব্যবস্থায় অবাক হওয়ার কি আছে বোঝা কঠিন। আজ মোদীর বিরোধিতা করে বিখ্যাত, অথচ তথাকথিত মুক্ত অর্থনীতির উজ্জ্বলতায় আলোকিত, প্রখ্যাত সাংবাদিক সাগরিকা ঘোষকে দিল্লীর কমনওয়েল্থ গেম্স এর সময় নানা ধরণের প্রস্তুতি সমস্যার সময় প্রচুর দুঃখ প্রকাশ করতে দেখেছি।   টিভিতে বলতে শুনেছি যে দিল্লী তে নানা প্রকারের উন্নয়ন সংস্থার সায়ত্ত্ব শাসনই এই অব্যবস্থার মূল কারণ, গুজরাট বা তামিলনাদুর একক নেতৃত্ত্বের ঐতিহ্যই উন্ননয়নের পক্ষে যেন সহায়ক। সাধারণ ভাবে চীনের অর্থনৈতিক সাফল্য সম্পর্কে গড়পড়তা টেকনোক্রাটিক   মতামতটিও এই,  সেখানে উন্নতি হয়েছে,কারণ তাকে উন্নয়ন রাজনীতি , গণতান্ত্রিক পদ্ধতির চাপ নিতে হয় নি। আরেকটা দিক যেটা আলোচনায় কখনো ই উঠে আসে না, সেটা হল সামাজিক ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকার যত সংকোচন হবে, ব্যয়/বৃদ্ধির হিসাবে যত জল মিশবে,  এই একক ক্ষমতাবিন্দুর দাক্ষিন্যের রাজনীতির প্রভাব তত বাড়বে, এই বিষয়টা  ভবিতব্য বা সময়ের চিহ্ন কিছু না, আগ্রাসী ভাবে সরকারের দায়িত্ত্ব সংকোচনের নীতির ফলাফল মাত্র।



    তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণ, গণতন্ত্রের চর্চা


    এই কয়েকটি বিষয় উল্লেখ তো করা গেল, মোটামুটি সচেতন সংবাদ পাঠক মাত্রেই এগুলির খবর নতুন কিছু না। কিন্তু বর্তমান লেখকের প্রস্তাব হল, এই প্রচলিত তথ্য তত্ত্ব গুলিকে মতাদর্শের ইতিহাসের প্রেক্ষিতে একটু তলিয়ে দেখার অবকাশ রয়েছে।


    অতএব প্রকৃত গণতান্ত্রিক সংবেদনশীলতা এবং আলোচনার পরিবেশ তৈরী করতে সাধারণ মানুষের জন্য নমনীয় সৃজনশীল সফল গণতন্ত্র নির্মাণের প্রশ্নে বিশ্লেষণাত্মক লম্বা গোছের লেখা লিখির একটা প্রয়োজন,  বিশেষত ইতিহাসবোধ সিঞ্চিত রাজনৈতিক বিশ্লেষণের , আলোচনার, একটা গুরুত্ত্ব রয়েছে। সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক রাজনৈতিক স্বার্থের সহনশীল দীর্ঘ আলোচনা কখনোই  অপ্রয়োজনীয় হতে পারে না। রাজনৈতিক সংবাদ মানেই ক্ষমতার অলিন্দের খুঁটিনাটি না, ব্যক্তিগত উচ্চাশার ভাষ্য না, এমনকি শুধু কলংক উ`দ্ঘাটনও না, এটা বোঝানোর দায়িত্ত্ব শুধু রাজনীতির না, সমস্ত ব্যবস্থাটারই, মিডিয়া তার গুরুত্ত্ব পূর্ণ অংশ।


    আপাতত বিচারাধীন হীন বোরা হত্যা কান্ড যখন সর্বসমক্ষে আসে, তখন এই ঘটনার নৃশংসতায় অনেকেই শিউরে উঠেছিলেন, এবং বড়লোক দের জীবনের সম্পত্তির লোভ ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। কিন্তু তখন নব্বইয়ের দশকে ভারতীয় ইন্লেক্ট্রোনিক  মেডিয়াতে নতুন ব্যক্তিগত পুঁজি আসার সময়ে,  সময়ে, বিদেশী বিনিয়োগ নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার সময়কার নানা ধরণের সমস্যা নিয়ে একটা বিশ্লেষণাত্মক লেখা লিখেছিলেন শেখর গুপ্ত। শেখর গুপ্ত আমার প্রিয় সাংবাদিক বা সম্পাদক কোনটাই নন, কিন্তু যেটা ভালো লেগেছিল, সেটা হল, চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের প্রেক্ষিত আলোচনা করতে গিয়ে নতুন গড়তে থাকা মেডিয়া জগতের একটা ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ প্রচেষ্টা হয়েছিল। এই দৃষ্টিভঙ্গীর একটা অভাব কিন্তু সাধারণ ভাবে রয়েছে। আলোচনার দৈর্ঘ্য কে সাধারণ মানুষের ক্রমহ্রাসমান মনঃসংযোগের ক্ষমতার সঙ্গে কমাতে গিয়ে আমরা বিশ্লেষণের মানের ক্ষতি করেছি কিনা ভেবে দেখার দিন এসেছে। রাজনৈতিক রামধনুর অপরপ্রান্তে গিয়ে মনে করানো যায়, যে কৃষি কৃষকের সমস্যা র ও গ্রামীন বিষয়ের প্রখ্যাত সাংবাদিক পি সাইনাথ হিন্দু পত্রিকার র সঙ্গে সংস্রব ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন, মূলতঃ বিশ্লেষণধর্মী বড় প্রবন্ধ লেখার জায়গা সংকুচিত হওয়ায়।


    নব্বই দশক পরবর্তী মিডিয়া ব্যবসা সম্পর্কে যে সব অভিযোগ ওঠে, অতি এবং কখনো কখনো অকারণ চাঞ্চল্যকর ভাবে সংবদ পরিবেশন করার একটা প্রবণতার কথা উঠে আসে, কিন্তু ট্যাবলয়েড সাংবাদিকতার এই পদ্ধতি বহুন ধরেই রয়েছে। বিশ্লেষণের বদলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি ই যার মূল কথা। কিন্তু এই আলোচনার নিহিতার্থ একটি আছে, সেটি হল, নব্বইয়ের দশকের আগে যেন গভীর ভাবে চিন্তা করে শুধুই সত্য পরিবেশিত হত এবং আপামর জনসাধারণ মূলত গম্ভীর ও মননশীল মাথা চুলকানি তে নিমগ্ন থাকতেন। ৪০ এর দশকের সাম্প্রদায়িকতার সময়ে বলুন, ষাঠ সত্তরের দশকের বাম , বিশেষত বাম শ্রমিক আন্দোলনের সময়ে বলুন, স্বাধীনতা পরবর্তী রাষ্ঠ্রীয় সম্প্রসারণের সময়ে বলুন, প্রান্তিক রাজ্যগুলির সমস্যার রিপোর্টিং বলুন, দেশের পররাষ্ট্র নীতি সম্পর্কে বহু ঐতিহ্যশালী মাধ্যমে, বা নিয়ন্ত্রিত ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে আর যাই হোক নির্জলা সত্য পরিবেশিত হয়েছে অথবা গভীর নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষনভিত্তিক বহিরাগতের বিশ্লেষণ হয়েছে, এ দাবী গন্ডমুর্খ ছাড়া কেউ করবে না। তবে দায়িত্ত্বজ্ঞানের একটা প্রকাশ হয়তো ছিল। সাম্প্রদায়িক সংঘাত কে উত্তেজনা পূর্ণ ভাবে বর্ণনা না করে ‘দুটি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ’ এবং বেআইনি কার্যকলাপ হিসেবে দেখার একটা ঐতিহ্য তৈরী হয়েছিল, সামাজিক সংঘাত কে রাষ্ট্র গঠনের সাময়িক এবং ক্ষণস্থায়ী ভ্রান্তি হিসেবে দেখা র একটা ঐতিহ্য ছিল, ভেঙ্গে পড়া বিচার ব্যবস্থায় ন্যায় আদায়ের প্রতিযোগিতা হিসেবে অথবা সরাসরি রাজনৈতিক সংঘর্ষ হিসেবে দেখার প্রয়োজনও হয়তো সব সময়ে ছিল না।


    স্বাধীনতার পরে পরে, নেহরু কথিত শিশু রাষ্ট্রের গঠনের আমলে, সর্বভারতীয় বিশেষতঃ ইংরেজি সংবাদমাধ্যমে, রাষ্ট্রের প্রতি সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গীর একটা অভাব ছিল। প্রান্ত্য অঞ্চলের বা প্রান্তিক বিষয়ের সংবাদে বা বিশ্লেষণে বিশেষতঃ সরকারি ভাষ্যের বাহন হয়ে ওঠাই রীতি ছিল, রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতা প্রমাণের একটা দায় ছিল।  ন্যায় তথা সত্য বা নাগরিকের স্বার্থ সংক্রান্ত ধারণা সর্বদা মূল পরিচালিকা ছিল কিনা সন্দেহ হয়। মজাটা হল চাঞ্চল্য বাড়লেও, মিডিয়ায় ব্যক্তিগত মালিকানা প্রচুর এলেও এই অবস্থানের একটা নতুন প্রকরণ দেখা গেল মাত্র, বিশ্লেষণের মানের উপকার বিশেষ হল না। কিন্তু যেটা আমাদের মানতে হবে, জরুরী অবস্থার সময় থেকে, রাষ্ট্র পরিচালনার বিষয়ে সমালোচনার একটা ধারা শুরু হয়েছিল সেটা ৯০ এর দশকের অর্থনৈতিক সাফল্যের নেশা ও স্বপ্ন খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হল।



    সাংবাদিকতা এবং তদন্ত


    শিল্পোন্নত গণতান্ত্রিক দেশ গুলিতে তদন্তভিত্তিক সাংবাদিকতার (ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম) আদর্শকে যদি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবরতী অর্থনৈতিক স্থিতাবস্থার আমলে সাংবাদিক নিরপেক্ষতার শ্রেষ্ঠ ফসল হিসেবে দেখা হয়, তার একটা পদ্ধতিগত তারতম্যের কথা আলোচনা করতে হয়।সেখান থেকেই আমরা সাংবাদিক বিশ্লেষণ এবং প্রতিবেদন পরিবেশনে  মতাদর্শের ইতিহাসের দৃষ্টিভঙ্গী র প্রয়োজনীয়তা তে ফিরব। পশ্চিমে সিরিয়াস সাংবাদিকতার জগতে জলবিভাজিকাসম ঘটনা হল ওয়াটারগেট তদন্ত। সত্তর দশকের শুরুর দিকের আমেরিকায় সাংবাদিকেরা প্রমাণ করে ফ্যালেন সরকারের পক্ষ থেকে বিরোধী দল এবং তাদের সমর্থক প্রতিনিধিদের আলাপ আলোচনা কথাবার্তার উপরে গোপন নজর রাখা হচ্ছে। এই কথা প্রকাশ্যে আসার পর সরকারকে যারপর নাই অপদস্থ হতে হয়। আমেরিকার এই ঘটনার পাশাপাশি যদি ১৯৯৫-২০০২ এর মধ্যেকার সময়ে ব্রিটেনের সারে কাউন্টির ডিপকাট ব্যারাকে কয়েকজন তরুন সেনানীর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ‘প্রাইভেট আই’ পত্রিকার সাংবাদিকতা দেখি,  তাহলে দেখা যাবে আমেরিকার তদন্তভিত্তিক সাংবাদিকতার মধ্যেও যে দেশপ্রেমের নিগড় রয়েছে , যেখানে পশ্চিম ইউরোপে বা বিশেষত ব্রিটেনে সত্য উ`দঘাটনের প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর মত প্রতিষ্ঠানের গভীরে চলে যেতেও কিছু ক্ষেত্রে অন্তত সাংবাদিকরা পিছপা হচ্ছেন না। এবং এই পর্থক্যের মূল কারণ রাশ্ট্রপরিচালনা বিষয়ে সংবাদমাধ্যমের বহিরাগতের দৃষ্টিভঙ্গে সম্পর্কে আদর্শের তারতম্য। তবে আরো গুরুত্ত্বপূর্ণ বিষয়টি হল, রাজনৈতিক সাংবাদিকতার অভ্যাসে , প্রকাশিত চর্চায় তদন্তভিত্তিক সাংবাদিকতার আদর্শ, কিম্বা ক্ষমতার অলিন্দের গভীর যোগাযোগের প্রয়োজন, কলঙ্ক উদ্ঘাটনের তাড়া, ঐতিহাসিক পর্যবেক্ষণের দৃষ্টি কে কিছুটা দুর্বল করেছে কিনা।


    আমার মতে, দুর্বল করছে। রাজনীতি কে মূলত ক্ষমতার দ্বন্দ্ব হিসেবে তো বটেই,  ক্ষমতাসীনের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব হিসেবে , অথবা যে কোন মুহুর্তে উদ্ঘাটন যোগ্য বে-আইনি চক্রান্ত -মাত্র হিসেবে  দেখার একটা প্রবণতা হয়ত  আমাদের গণতন্ত্রের ক্ষতি করছে। তার কারণ সমসাময়িক আর ক্ষমতার ভাষ্য নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা, এমনকি আধুনিক সাংবাদিকতার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি, তদন্তভিত্তিক সংবাদিকতার মধ্যে গণতন্ত্রকে একটা প্রগতিশীল অর্থে সংস্কারের যোগ্য, দুর্বলের প্রকৃত উত্তরণে সমর্থ ঐতিহাসিক পদ্ধতি হিসেবে দেখার দৃষ্টির অভাব বোধ করা যা্চ্ছে। সামাজিক সংঘাতের তথা ব্যক্তিগত উচ্চাশার  মেকিয়াভেলির প্রমোদ কানন হিসেবে রাজনীতিকে দেখতে গিয়ে  আমরা বিস্মৃত হচ্ছি যে, প্রতিনিধিত্ত্বমূলক রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যেই প্রগতি সম্ভাবনা আছে এবং সেটি ই গণতন্ত্রের ভিত্তি। আর্থিক বা শিল্প নীতি প্রয়নয়নের দিকগুলি কে গণতান্ত্রিক ভাবে নির্ধারিত রাজনৈতিক ব্যবস্থার আওতার থেকে বের করে দেওয়া হচ্ছে,  শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সামাজিক সুরক্ষার প্রনয়নের মাধ্যমে সামাজিক সংঘাতের অবলুপ্তির পথকে রাজনৈতিক আলোচনার বিষয় বস্তুর সঙ্গে সম্পর্করহিত প্রশাসনিক বিষয় বলে দেখা হচ্ছে, এবং ব্যক্তিত্ত্বের সংঘাত কে রাজনীতির প্রধান উপজীব্য হিসেবে দেখা হচ্ছে, বড় সাংবাদিকরাও তাঁদের স্মৃতি চর্চায় বা প্রতিবেদনে , ক্ষমতার অলিন্দের মুখরোচক স্বার্থ সংঘাতের খবর দিতে গিয়ে ভুলে যাচ্ছেন,  চর্চা হিসেবে গণতন্ত্র কে গড়ে তোলাতে এই বিশদ জরুরী নাও হতে পারে।



    সাংবাদিকতার পদ্ধতিগত পরিবর্তন সম্ভব?


    একটা গল্প দিয়ে এই আলোচনা শেষ করা যেতে পারে। বিংশ শতকের তিরিশের দশকে প্রখ্যাত জার্মান তাত্ত্বিক গোষ্ঠী, ফ্রাংকফুর্ট স্কুলের পন্ডিতেরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে তাঁদের গবেষণা তত্ত্বচিন্তার প্রতিষ্ঠানটিকে জেনিভা হয়ে  শেষ পর্যন্ত আমেরিকায় নিউ ইয়র্কে কলাম্বিয়া ইউনিভারসিটি পরিসরে স্থানান্তরিত করতে বাধ্য হয়েছিলেন, সুস্থ চিন্তার পরিবেশ জার্মানীতে তখন আর ছিল না।  টমাস হুইটল্যান্ডের 'ফ্র্যাংকফুর্ট ইন এক্সাইল'[1] বইটিতে এ ব্যাপারে দীর্ঘ আলোচনা রয়েছে। মজার ঘটনা যেটা,  ইউরোপীয় বিশুদ্ধ দর্শন চর্চার ঐতিহ্য থেকে এসে ঐ মহা পন্ডিতেরাও, আমেরিকার সার্ভে-ভিত্তিক নাগরিক সমাজতত্ত্ব গবেষণা পদ্ধতির গতিশীলতার সামনে একটু সমস্যায় পড়ে গেছিলেন।।সংখ্যাতত্ত্বভিত্তিক  সমাজতত্ত্ব গবেষণা পদ্ধতি তাঁদের প্রথম দিকে হজম হয় নি। সমাজতত্ত্বের গবেষণার ইতিহাসে এটা একটি গুরুত্ত্বপূর্ণ ঘটনা, বিংশ শতকের মধ্যভাগে বিধ্বংসী মহাযুদ্ধের সময়কার বাধ্যতামূলক দেশান্তরের এই পার্শ্বকাহিনীটি, এই সংঘাত ,সমাজতত্ত্ব বিষয়টিকে গড়ে উঠতে শেষ পর্যন্ত সাহায্যই করেছিল।


    একটি  প্রস্তাব হল,  বিংশ শতাব্দী তে আমেরিকার  গণতন্ত্রের তথা সংবাদমাধ্যমের বিশ্বকে দেওয়া সে দেশের প্রগতিশীল সাংবাদিকতার সেরা উপহার যদি হয়ে থাকে তদন্তভিত্তিক সাংবাদিকতা, তাহলে সেই উপহারের প্রকৃত ব্যবহার তখনি হবে, যখন সংবাদ বিশ্লেষণ এবং পরিবেশনে ক্ষমতার দ্বন্দ্বের ভাষ্যের থেকে, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ত্বের দায়বদ্ধতা স্মরণ করানোর সঙ্গে সঙ্গে কে গণতন্ত্র কে একটি বিরামহীন ঐতিহাসিক পদ্ধতি হিসেবে দেখা শুরু হবে।একমাত্র তাহলেই রাষ্ট্রের বা দায়িত্ত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির ব্যর্থতা বা দুরভিসন্ধি কে সময়ের চিহ্ন গোছের ভবিতব্যে অবগাহনকারী ভাষ্য থেকে বেরিয়ে এসে, তথ্য নির্ভর , বিশ্লেষণাত্মক চিন্তাশীল আলোচনার সংস্কৃতির সাহায্যে, গণতন্ত্রের চর্চায়  সাংবাদিকতার ভূমিকাকে আরো অর্থপূর্ণ করা যাবে।


    নতুবা রাজনৈতিক সংবাদ কেবলি বিনোদনের কাজ করবে, যেখানে সমস্ত রাজনীতিবিদেরা হয়ে উঠবেন একটু মোটা দাগের কোন্দলপ্রিয় , ক্ষমতার নেশায় বাহ্যজ্ঞানশূন্য সম্ভাব্য অপরাধী সেলেব্রিটি।  এবং দুর্ভাগ্যজনক ভাবে তাই ঘটছে।গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠানগুলি সম্পর্কে মানুষের আস্থা তলানি তে গিয়ে ঠেকছে, এবং বিচিত্র চক্রান্ত তত্ত্বের বা তথ্যভিত্তিহীন রাষ্ট্র পরিচালনা তত্ত্বের বাড়বাড়ন্ত  হচ্ছে। ভুলে গেলে চলবে না, নোটবাতিল কান্ডে ঠিক সেটাই ঘটেছে, এবং শেষ পর্যন্ত অর্থনৈতিক ব্যবস্থা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণ কারী রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বাধিকার ক্ষুন্ন হয়েছে।। এই ধরণের ভ্রান্তির বিপদ ক্রমশ বাড়ছে।এবং আমাদের গণতন্ত্র কে এসব অকারণ নিরীক্ষার সম্ভাবনা থেকে রক্ষা করা জরুরী। জনপ্রতিনিধিত্ত্বকে ব্যাপকতর অন্তর্ভুক্তির চলমান ইতিহাস হিসেবে দেখার একটা প্রয়োজন সম্ভবত তৈরী হয়েছে।


    [1] Frankfurt School in Exile, Thomas Wheatland,  University of Minnesota Press, 2009
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৮ এপ্রিল ২০২০ | ২৮১৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • o | 108.162.219.79 | ২৮ এপ্রিল ২০২০ ২০:৩৪92772
  • বাঃ বেশ ভাল লেখা। প্রায় সবগুলো পয়েন্টই কভার করেছেন। গণতন্ত্রকে বিরামহীন ঐতিহাসিক পদ্ধতি হিসেবে দেখার কথাটায় একমত। কিন্তু এটা ফিল্ড জার্নালিজমের জন্য বেশ কঠিন ব্যাপার বলে মনে হয় দুটি কারণে। এক, সাংবাদিককে যদি ঘটমান বর্তমানের ঐতিহাসিক হিসেবে ধরি, সেটা কিছুটা অবিচার করা হয় কারণ ঐতিহাসিকের ন্যায় হাইন্ডসাইটের সুবিধে সাংবাদিকের থাকে না। ফলে তৃণমূল স্তরে একটি হাসপাতালের বেহাল দশা সম্পর্কে যিনি চমৎকার ফ্যাক্ট-বেসড রিপোর্ট লিখছেন, তিনিই ম্যাক্রো লেভেলে স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওভারঅল খারাপ অবস্থাকে ইন্টারপ্রেট করতে গিয়ে কিছু বাঁধাধরা কনক্লুশনের বাইরে যেতে পারছেন না। দুই, একজন ইন্ডিভিজ্যুয়াল রিপোর্টার অনেকটা অর্গানাইজেশনাল রোল প্লে করতে বাধ্য হন। এটা বর্তমানে আরও বেশি করে সত্য এই কারণে যে এখন রিপোর্টারের তুলনায় নিউজ অ্যাংকারের গুরুত্ব বেশি। এইটে মূলত রাভিশকুমারের অবজার্ভেশন। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে এবং প্রপাগান্ডা মডেলের কথা মাথায় রেখে বাস্তবে কতটা কী করা সম্ভব বলে মনে করছেন? বলাই বাহুল্য, বড় মিডিয়া হাউসের সদিচ্ছার অভাবটা আমি ধরেই নিচ্ছি। আর দ্য ওয়ার ইত্যাদি ফিউ ক্রেডিবল ইন্ডিয়ান মিডিয়া ক্রাউডসোর্সিং করে চালানোর চেষ্টা করছে। সেটা সম্পর্কে লেখকের কী মত?

  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 162.158.159.49 | ২৮ এপ্রিল ২০২০ ২৩:৪৩92777
  • দেখুন এইগুলো র তো কোন সহজ সমাধান নেই। দেশের উপকার, দেশের সাধারণ মানুষের এজেন্সী , ডিগনিটি বাড়ানো টা যদি সাংবাদিকের সংবাদমাধ্যমের পোলিটিকাল জার্নালিকম এর কাজ না হয়, কিছু করা মুশকিল। প্রেসক্রিপশন ঠিক করতে চাইনি, কেন না কোন একজনের করা প্রেসক্রিপশন ই খাটে না।

    ব্যবস্থা যে নেই তা না, প্রেস কাউন্সিল আছে, তাদের কোয়ালিটি কন্ট্রোল রয়েছে। কিন্তু ফ্রিডম অফ এক্সপ্রেসন আর বুজরুকি ধাষ্টামি র মোধ্যে পার্থক্য সামান্য। এই প্রবন্ধটা লেখা, কারণ মডেল টা টা হল, সব আউটলেট ই নানা ব্যবসা করে, পোলিটিকাল জার্নালিজম টা করে পাবলিক সার্ভিস আর ব্যবসার মাঝামাঝি এসে। অ্যাড রেভিনিউ এর বদলে সাবস্ক্রিপশন মডেলে যাওয়া ছাড়া রাস্তা কম। আর কন্টেন্টের কোয়ালিটি ছাড়াও আরো আছে প্ল্যাটফর্ম বানানোর সমস্যা। ইউটিউব-ফেসবুক যে মডেলে চলে, তাতে উইকিলিক্স টিকতে পারে নি টা বড় নিউজ, অনেক ছোটো আউটলেট ও ভাষার কারণে অন্য কারণে টেকা মুশকিল।
    এই প্রবন্ধে যেটা মেন এম্ফাসিস, সেটা হল ন্যারেটিভ স্টাইলের উপরে। একটা ক্রিকেট বা ফুটবল ম্যাচ কে যুদ্ধ হিসেবে দেখানো হোবে না খেলা হিসেবে দেখানো হবে সেটা যেমন ভ্যালু জাজমেন্ট এর প্রশ্ন, তেমনি একটা ভোট কে যুদ্ধ হিসেবে ঘোষণা করে কোন লাভ নেই। আইডিয়াল প্র‌্যাকটিস অফ ডেমোক্রাসি শুড বি রিয়ালি বোরিং। তবে সব পরিবর্তন ই যে হতাশা এনেছে তা ঠিক না। স্কুপ নিউজ এর দায় চলে যাওয়ার পরে, কাগজে কিন্তু অ্যানালিটিকাল লং ফর্মের কদর বেড়েছে। সার্ভে টা ভোট ছড়াও অন্য বিষয়েও হচ্চে। সব চেয়ে বড় কথা, টিভি যতটা এম্বেডেড জার্নালিজম করে, পাওয়ার ন্যারেটিভ এর উত্তেজনা বেচার জন্য, সেই দায় কমায়, কিছুটা ক্রিটিকালিটি বেড়েছে। ভারতবর্ষে ভাবা যেতনা, এমনকি সআধীনতার পরে চল্লিশ পঞ্চাশ বছরে, প্রান্তীয় স্টেট গুলো সম্পর্কে, যুদ্ধ সম্পর্কে, ফরেন পলিসি সম্পর্কে , ইন্ডিপেন্ডেন্ট অপিনিয়ন, মেন্ল্যান্ড পাওয়ার সেন্টার গুলো থেকেই বেরোবে। জুডিশিয়ারি টা বেচে গেল এই একই সময়ে এই যা দুঃখের। চেক্স অ্যান্ড ব্যালান্সেস থাকবে। আপনার স্পেসিফিক প্রশ্নের উত্তরে বলা যেতে পারে, লিবেরালাইজেশন পরবর্তী দুনিয়ায় ভারতবর্ষের সেরা সাংবাদিক দের মধ্যে দুজন, পি সাইনাথ আর বরদরাজন মোটামুটি দুটি মডেল বেছে নিয়েছেন। প্রথম্জন রুরাল রিপোর্টিং, দইতীয়জন সাবস্ক্রিপশন বেস , ইনিশিয়াল পয়সা পেয়েছেন বলে দ্বিতীয়টি হয়েছে অবশ্য।
    আরো বলা যেতে পারে সিচুয়েশন জার্নালিস্ট কে তৈরী করে, জে সিচুয়েশন অর্নব গোস্বামি নামক ছাগল উপহার দিয়েছে, সে সিচুয়েশন ই রভীশ কুমার কে উপহার দিয়েছে, বা বর্খা পুনরাবিষ্কারের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। মাইগ্রান্ট লেবার ক্রাইসিস এর সেরা রিপোর্টিং এই দুজনের।
    তবে একটা জার্নালিস্ট কে কোথাও গিয়ে ইন্ডিপেন্ডেন্ট হতেই হবে। খুব বড় জার্নালিস্ট কে, যারা নিজের ক্রেড তৈরী হয়েছে, তার পক্ষে অর্গানাইজেশনে, খুব বড় অর্গানাইজেশনে থাকা মুশকিল। রাগে উমর কে ইরাক যুদ্ধের পরেই বিবিসি ছাড়তে হয়েছে।
    ফাইনালি আমার মনে হয় ছোটো থেকে বড় কাজে ইন্টিগ্রিটি টা একই লাগে। হাতের কাছের উদাহরণ পল ফুট এবং প্রাইভেট আই। আর সাইনাথ, বড় ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেট স্ট্রাকচারে না গিয়েও, শুধু ইনসিসিভ অ্যানালিসিসের জোরে টেকা কঠিন কিন্তু আছেন টিকে। প্রাইভেট আই এর অবশ্য একটা সুবিধে আছে, সায়েব রা ইরাকি খুন করে মাত্র, নিজেদের দেশের জার্নালিস্ট দের খুন করে না, আমাদের দেশে সেটা গ্যারান্টি করা কঠিন। আর টি আই হবার পরে প্রচুর লোকাল অসাধারণ জার্নালিস্ট কাজ করেছেন, আগে প্রান্তীয় রাজ্য গুলো থেকেও সুজাত বুখারি, পরেশ রা উঠে এসেছিলেন। কিন্তু অনেক সময়ে, নামোল্লিখিত দুজনের ক্ষেত্রে না হলেও, রাষ্ট্রটার চেহারা কেমন হবে, কোন দিকে যাওয়া উচিত, সেটা সম্পর্কে একটু বৃহদাকারে দার্শনিক অভিমুখ না থাকলে শুধুই ইন দ্য মোমেন্ট দিয়ে বেশি দূর জেনেরালাইজেশন মুশকিল।
    জা কঠিন প্রশ্ন এর এমনিতে কোন উত্তর হয় না, মিউজিং করলাম খানিকটা।
    বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত
  • দ্রি | 162.158.158.214 | ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০০:০১92779
  • "... যে বিষয়টি উঠে আসে, তা হল, টেলিভিসন বা কাগজে বড় নিউজ মেডিয়ার বদলে, প্রচার সর্বস্ব , আংশিক তথ্য নির্ভর প্রকৃত পক্ষে 'ক্যাম্পেন মেটেরিয়াল' কেই লোকে প্রকৃত ..."

    সিপিএমের প্রাক্তন পোলিং এজেন্টের ক্যাম্পেন মেটিরিয়ালে অ্যালার্জি! দক্ষিণপন্থীদের সাথে ক্যাম্পেনে হেরে গিয়ে শেষে ... পলায়্ন? গদা, অ্যাপ্রোচে আরেকটু বীররস আনতে হবে।

    তবে বড় মিডিয়ার এই ল্যাজেগোবরে হওয়াতে আমি খুবই খুশী।
  • সিএস | 162.158.22.33 | ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০০:০৪92780
  • বোধি এই সাংবাদিকের লেখা বইটি পড়েছে কিনা জানিনা। ইন্টারভিউটি পড়ে মনে হয়েছিল, উনি ভবিষ্যতের ব্যাপারে বিশেষ আশা দেখতে পাননি, এদেশের সাংবাদিকতায়। বক্তব্য যে সাংবাদিকরাই অপাংক্তেয় হয়ে যাচ্ছে, নিউজ পোর্টাল কোথা থেকে রোজগার করবে তার ঠিক নেই, অর্ণব গোস্বামী ইত্যাদিরা চেঁচিয়ে নিজেদের ফোকাসে রাখতে চাইছে, টিভিতেও বেশী রেভিনিউ নেই।

    সাক্ষাতকারটিও তথ্যমূলক।

    https://caravanmagazine.in/media/sandeep-bhushan-book-the-indian-newsroom
  • দ্রি | 172.69.55.141 | ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০০:১২92781
  • এই লকডাউনে মিডিয়া হাউসগুলোতে বেশ লেঅফ এবং পেকাট হচ্ছে।

    In view of the large number of lay offs and salary cuts announced by several media organisations, the National Alliance of Journalists (NAJ) and Delhi Union of Journalists (DUJ) have accused media owners of using the nationwide lockdown announced to combat the spread of COVID-19 as “an excuse for retrenchment and arbitrary pay cuts”.

    https://thewire.in/media/lockdown-journalists-lay-off-pay-cut
  • o | 108.162.219.239 | ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০০:৩৩92782
  • হ্যাঁ, কঠিন ব্যাপার সে তো মানছি। যাক, আলোচনা চলুক। পড়ছি।

    দ্রি, এত খুশি হবার কিছু নেই। বাজারে কনস্পিরেসি থিয়োরির রমরমা হওয়াটা কোন কাজের কথা নয় মাইরি। ঃ-))

  • দ্রি | 162.158.159.49 | ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০১:০০92784
  • কনস্পিরেসি থিওরি এই টার্মটা মেনস্ট্রীম মিডিয়া ইউজ করে টু ডিসক্রেডিট এনিথিং দ্যাট ডাজন্ট ফিট দা ন্যারেটিভ পুশড বায় দেম। অনেক সত্যি কথা অনেক কনস্পিরেসি থিওরির মধ্যে এম্বেডেড আছে। অনেক মিথ্যে কথা মেনস্ট্রীম রিপোর্টিং এর মধ্যে এম্বেডেড আছে।

    পৃথিবীকে গুলশুন্য করে যাবেন ভাবছেন কী? সেটি হওয়ার নয়। মানুষকে গুলের মধ্যে থেকে সত্যি বেছে খেতে শিখতে হবে। কনস্পিরেসি থিওরি হ্যাজ টেকন দা মনোপলি অফ স্টোরিটেলিং অ্যাওয়ে ফ্রম দা ফিউ বিগ মিডিয়া। ইট ইজ আ গুড থিং।

    তবে নট কোয়াইট। কারন এই সোশাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মও বিগ মিডিয়া। তারাও ইচ্ছেমত সেন্সার করে। সোশাল মিডিয়ায় আরো কম্পিটিশান হওয়া উচিত। তা না হয়ে বড্ড কনসলিডেশান হয়ে গেছে।

    কেউ একজন ক্যাম্পেন করতে পারছে বলে ভয়ে শিউরে ওঠাটা ঠিক ... ডেমোক্র‌্যাটিক না। আপনি করুন না ক্যাম্পেন, যত খুশি।
  • Atoz | 162.158.186.191 | ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০১:১১92786
  • সোশাল মিডিয়া তো একেবারে জ্যান্ত লোককে শব বানিয়ে বিশাল মিছিল দেখিয়ে ---একাকার কান্ড করেছে। এত লোকে শেয়ার করেছে সে আর বলার না। এখন সেদিন একজন কইলেন এ তো কাদম্বিনী কেস, বহুকাল পরে যখন উত্তর কোরিয়ার ভদ্রলোক সত্যি সত্যি পরলোকে যাবেন, তখন বলা হবে "মরিয়া প্রমাণ করিলেন যে আগে তিনি মরেন নাই।"

    কোনো খবরেরই আর বিশ্বাসযোগ্যতা থাকছে না। খবর না নাটক ---তফাৎ করা যাচ্ছে না। লোকেও এ খেলা খেলে যাচ্ছে। কারণ তাদেরই বা কী এসে যায়? ডাইনেও তাদের বিশ বাঁও, বাঁয়েও বিশ বাঁও, সত্যি মিথ্যে বিচারের সুযোগই বা কোথায়?
  • দ্রি | 162.158.159.49 | ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০১:১৭92787
  • আমরা বোধহয় ছোটবেলা থেকেই সবকিছুকে বড্ড বেশী বিশ্বাস করতে শিখি। বইকে, খবর কাগজকে, টিভিকে, বিজ্ঞাপনকে।

    একটা খবর দেখামাত্র বিশ্বাস করা হবেই বা কেন? সোশাল মিডিয়ায় না, টিভিতেও না। বিশ্বাস অত সস্তা নয়। অনেক নেড়ে ঘেঁটে তবে বিশ্বাস।
  • Atoz | 162.158.186.191 | ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০১:২৬92788
  • একেই মনে হয় বলে "সাসপেনশন অব ডিসবিলিফ" না কী যেন। অবিশ্বাসকে শিকেয় তুলে রেখে নাচতে নাচতে সব বিশ্বাস করে খেয়েদেয়ে শান্তির ঘুম। ঃ-)
  • o | 162.158.62.238 | ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০১:২৭92789
  • নাঃ, গুল নয়। লাসওয়েলের কমিউনিকেশন মডেলে সবসময়ই কিছু নয়েজ ঢুকে থাকবে, সে তো ঠিকই। কনস্পিরেসি থিয়োরি নিয়ে মূল প্রবলেমটা হচ্ছে এটা অ্যান্টিইন্টেলেকচুয়ালিজম ইন ডিসগাইস। অবশ্যই সারফেসের নীচে অনেক কিছুই থাকে, মাস মিডিয়ায় কিভাবে খবর ফিল্টারড হয় সে তো হারম্যান-চমস্কির প্রপাগান্ডা মডেল দেখলেই বোঝা যায়। কিন্তু একজন সাধারণ অডিয়েন্সের জন্য মোটিভেশনটা কি? মোটিভেশনটা হচ্ছে যা যা দেখানো হচ্ছে, যেভাবে চারপাশের পরিস্থিতিকে তুলে ধরা হচ্ছে, আই ডোন্ট লাইক ইট। অতএব আমি অল্টার্নেট সোর্স খুঁজছি। পর্দার আড়ালে কী আছে? এতদূর পর্যন্ত ঠিক আছে। মুশকিল হচ্ছে এরপরের পার্টটায় যেখানে বেশিরভাগ লোক সত্য কোনটা খুঁজে বের করার ইন্টেলেকচুয়াল এক্সারসাইজের মধ্যে দিয়ে যেতে রাজী নয়। দে জাস্ট ওয়ান্ট আ ন্যারেটিভ দ্যাট দে লাইক। এইখানে গন্ডগোল। কনস্পিরেসি প্রপোজ করে লাভ নেই। সেটাকে এস্ট্যাবলিশ করতে হবে। না হলে বৌদ্ধিক পরিশ্রমকে বাইপাস করে কনস্পিরেসি আল্টিমেটলি অথরিটারিয়ান পপুলিজমকেই হেল্প করছে। এইটেই সমস্যা। ওপরের লেখাতেও এই সমস্যাকে উল্লেখ করা হয়েছে, হয়ত কনস্পিরেসির কনটেক্সটে নয়, যাই হোক।

  • Atoz | 162.158.186.47 | ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০২:৩৪92790
  • আরে এত সময়, রিসোর্স, মোটিভ কই? মানে, সাধারণ অডিয়েন্সের? যে তারা সত্য খুঁজে বার করবে? পয়সাটা দেবে কে? গৌরী সেন? শার্লক হোমস টোমসেরা খুঁজতেন, সেকালের বিলাতী জমিদারেরা পয়সা দিতেন, তাই। তাও তাদের স্বার্থ থাকতো, সেইজন্যে।
  • o | 172.69.54.206 | ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০৬:৫৯92791
  • আরে পাবলিক ইন্টেলেকচুয়ালরা এখানে একটা বড় রোল প্লে করতে পারেন। কিন্তু সেরকম ইন্টেলেকচুয়ালের অভাব আছে আমাদের দেশে। গৌরি লংকেশ, অরুন্ধতী এঁনারা একটা কালচার হয়ে উঠলে খুশি হতুম। মিডিয়ার একটা কন্টিনিউয়াস ক্রিটিক দরকার। শুধু মিডিয়া কেন, স্টেট পলিসিরও। ভারতে এই জায়গাটা এখনও দুর্বল। সম্ভবত সিভিল সোসাইটি যথেষ্ট পোক্ত নয় বলেই এই সমস্যা।

  • দ্রি | 108.162.229.237 | ২৯ এপ্রিল ২০২০ ১৩:৪২92811
  • "মুশকিল হচ্ছে এরপরের পার্টটায় যেখানে বেশিরভাগ লোক সত্য কোনটা খুঁজে বের করার ইন্টেলেকচুয়াল এক্সারসাইজের মধ্যে দিয়ে যেতে রাজী নয়। দে জাস্ট ওয়ান্ট আ ন্যারেটিভ দ্যাট দে লাইক। এইখানে গন্ডগোল।"

    এই 'মুশকিল'টা তো মেনস্ট্রীম মিডিয়ার পাঠকদেরও আছে। মে আই সে, বেশী আছে? মেনলি মানুষ যা বিশ্বাস করে নিউজে তারই কনফার্মেশান খোজে। আপনার ওয়ার্ল্ড ভিউয়ের সাথে ম্যাচ করলে আপনি সেই কথা সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বাস করবেন। ম্যাচ না করলে হাজার রকম প্রশ্ন করবেন। হিউম্যান মাইন্ড এইভাবেই কাজ করে। এই সাইটেই তো কতবার শোনা যায়, 'আরে এটা তো রাইট উইং নিউজ সোর্স'। (ইমপ্লিকেশানটা হল, অতয়েব আর পড়ার দরকার নেই। খবর বিশ্বাসযোগ্য নয়)। সো ইউ আর নট ইন্টারেস্টেড ইন ইভেন ইনস্পেক্টিং হোয়েদার দা নিউজ কুড বি অ্যাকিউরেট। অন দা আদার হ্যান্ড, লেফট উইং মিডিয়ায় যা লেখা আছে সেটার ক্লোজ ইনাস্পেকশানের প্রয়োজনীয়তা অনেকেই ফীল করেন না। এখন গুরু মূলত লেফট লিবারালদের ঠেক। তাই বায়াসটা এই রকম। রাইট উয়িংদের ঠিক উল্টো বায়াস আছে। তারা লেফট উয়িং মিডিয়ার কোন কথাই বিশ্বাস করে না।
  • দ্রি | 108.162.229.243 | ২৯ এপ্রিল ২০২০ ১৩:৪৮92812
  • পাবলিক ইন্টেলেকচুয়ালে আমার বিশেষ ভরসা নেই। কি সত্যি, কি মিথ্যে (যেটা ডিটারমিন করা এক্সট্রীমলি ডিফিকাল্ট, অফেন ইমপসিবল) সেই নিয়ে যদি কারো ইন্টারেস্ট থাকে, তাহলে নিজে খুঁটে খেতে হবে।

    সেই সময়, রিসোর্স ইত্যাদি না থাকলে, হয় টেক এভ্রিথিং উইথ আ পিঞ্চ অফ সল্ট, অর বিলিভ হোয়াটেভার ইউ উইশ অ্যাট ইয়োর ওন রিস্ক।
  • b | 172.68.146.97 | ২৯ এপ্রিল ২০২০ ১৫:৩৩92813
  • হ্যাঁ, আমারো সেই মত। ডাক্তারের প্রেসকৃপশন একটু নুন জল দিয়ে গুলি পাকিয়ে খেয়ে নিন।
  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 162.158.158.176 | ৩০ এপ্রিল ২০২০ ১১:২৫92837
  • সিএস | 162.158.22.33 | ২৯ এপ্রিল ২০২০ ০০:০৪

    থ্যাংক ইউ, না দেখিনি দেখবো। জেনেরালি মেডিয়াটা , বড় মেডিয়াটা বিশেষ করে রুলিং ক্লাস টুল, অতএব লস হলেও এরা রাখবে। কিছু কিছু ইনভেস্টমেন্ট এর আর কোন কারণ নেই।
    ক্যারাভান এর ইনটারভিউ যা বলছে, বুঝতেই পারছো, আমার লেখাটাতে অনেকটাই কভার করেছি, এখন এটা তো এর তার দেখে লেখা না, বা ওনারাও গুরুচন্ডালি বা আরেক রকম পড়ছেন এরকম কোনো এভিডেন্স নেই ঃ-)))) অতএব কোন অরিজিনালিটি দাবী করছি না , তবে এই জিনিস গুলো সকলেই অবসার্ভ করে কিন্তু সংহত ভাবে বলতে চায় না।

    বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত
  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 141.101.98.93 | ৩০ এপ্রিল ২০২০ ১১:৪৭92839
  • দ্রি গুরু
    প্রথমে একটা খবর দেই, নিটশে বোলে এক জন লোক আমার কাস্টোমার মাইরি। এটা রিসেনট্লি হয়েছে, হবার পর থেকে আমার তোমার আর সৈকত (প্রথম) এর সংগে নিতশে, জর্মন ইডিওলোজি, গ্রুন্ডরিসে, গ্রামশি নিয়ে চেচামেচি মনে পড়লো ঃ-)))

    তুমি পুরোনো লোক কেন এসব বাজে মেডিয়া প্রশ্নে ভুল ভাল বোলে কি মজা পাও জানি না।

    স্কেপ্টিসিজম একটা বড় , এবং পৃথিবীর একমাত্র ভরসা টাইপের দার্শনিক স্ট্রেন, সেটার সংগে ব্রেইটবার্ট বা আমেরিকান কনজারভেটিভ রেডিও স্টেশনের কি মিল। সেখানে তো যেটা মূল কারেন্সি সেটা হল, একটা ভুল ভাল কিছু কে অলটারনেটিভ অপিনিয়ন বলে তাড়াতাড়ি বিশআস করানো।
    হ্যাঁ এটা বলতে পারো, গ্লোবালাইজেশনের ফলে সভ্যতার জামা কাপড় ক্রমশঃ খুলতে শুরু করেছে বলেই এই সব উপদ্রব বেড়েছে কিন্তু ফেইল্ড লিবেরালিজম বলার আগে তো এটা তো বলতে হবে, ওয়াশিংটন কনসেন্শাস বা এমনকি ১৯৭৪-৭৫ থেকেই যে ইকোনোমিক রাইটের কনসোলিডেশন হয়েছে, সেটা লিবেরাল প্রোজেক্ট ছিল কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন নতুন কিসু না।
    পাবলিক ইনটেলেকচুয়াল প্রশ্নে আমি অবশ্য খানিকটা কনফিউজ্ড। আমি যেটা বুঝি, শিক্ষিত লোক মাত্রেই পাবলিক ইনটেলেকচুয়াল হবার সম্ভাবনা রয়েছে, সেটা র বারোটা বাজানো হয়েছে, বিজ্ঞান বা অন্য আকাদেমিক চর্চা কে ওভার স্পেশালাইজ করে, যার ফলে শাসক ছাড়া কারো হাতে ইনটারডিসিপ্লিনারি কনভারসেশন এর চাবিকাঠি নেই। এইটেই তাদের সর্ব ব্যাপী ক্ষমতার উৎস, এবং প্রকৃত বিশেশজ্ঞ দের মধ্যে আলাপ আলোচনাকে খেলনা বাটী প্রোজেক্ট দিয়ে সরিয়ে দেবার তাল। তার ফলে যেটা হচ্ছে, পলিসি এবং স্টেট ক্রাফ্ট এ হয় টোটাল ইনটেলেকচুয়াল সাবমিসন হচ্ছে, কম্প্লিসিটি বাড়ছে , অথবা, আমরা রাজনীতি করি না বলে লোকে কোকুনের মধ্যে ঢুকছে। এর থেকে উত্তরন এর কাজ টা জার্নালিস্ট দের খানিকটা করতে হবে, কারণ জার্নালিজম ই একমাত্র পেশা, যেটা তে ইনটার ডিসিপ্লিনারি অ্যাপ্রোচ টা সেমিনার করে আনতে হয় না, ইনটেলেকচুয়াল এনগেজমেন্ট টা সরাসরি মানবজীবন কে ই অ্যাড্রেস করছে। বা করতে বাধ্য হচ্ছে। জানিনা অপ্রাসংগিক হল কিনা, কিন্তু এটা আমি মাথা থেকে সরাতে পারছি না, কয়েক বছর ধরে। প্রশাসনিক জেনেরালিটি যেমন বুরোক্রাসির হাতে অতিরিক্ত ক্শমতা দিয়েছিল, আই এ এস অফিসার কে , মানুষকে লাইনে দাঁড় করানো ছাড়া আর কিছু না জানলেও চলতো, তেমনি ৮০স অনওয়ার্ডস অসংখ্য কনসালটান্ট এ ভরা সরকার, সোশাল আকাউন্টেইবিলিটির বারোটা বাজিয়েছে।

    আর হ্যাঁ এই প্রবন্ধটা যখন লিখেছিলা, তখন হতাশা আর ক্রোধ কে সরিয়ে দিয়ে লিখেছিলাম। খানিকটা অশোক মিত্রের প্রতি ট্রিবিউট হিসেবে। আই ওয়াজ হার্শ ইন দ্য অবিচুয়ারি। আমার মনে হয়েছিল, এই লোক গুলো সামাজিক ইতিহাস স্টাইলের কন্টিনিউয়াস ধারাভাষ্যে, এত ইন্টারেস্ট রাখতো কেনো? সেটা মূলতঃ ইনক্লুসিভ রাষ্ট্র তৈরীর জন্য, সবটাই ব্যক্তিগত উচ্চাকাংখা না। সংবাদ মাধ্যমেও যখন লিখে গেছেন ইপি ডাবিলিউ , ইকোনোমিস্ট , আনন্দবাজার টেলিগ্রাফে, তখন ও মূল ইসু ছিল গণতন্ত্র কে একটা ক্ষমতার চাপান উতোর হিসেবে না দেখে হেডলাইনের বাইরে একটা প্রসেস হিসেবে দেখা, একা করেন নি, অনেকেই করেন, আমি প্রজন্ম টা র কথা বলছি।

    বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত
  • dc | 172.69.134.182 | ৩০ এপ্রিল ২০২০ ১১:৫৫92841
  • নীতশে খ দার দোকানে জিনিস কিনতে আসে? বলো কি?
  • বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত | 162.158.158.126 | ৩০ এপ্রিল ২০২০ ১৩:১৫92843
  • দ্রি , আরেকটা দিক আছে, দ্যাট অ্যামেজেস মি ইন ইয়োর টেক।
    আমেরিকায় কলোনিয়াল পাস্টে বেসিকালি একটা লুটে পুটে খা টাইপের গল্প আছে, সাউথ আমেরিকা তেও আছে, তাই ফেডেরাল কন্ট্রোলের প্রতি তাদের একটা ইনফ্রিন্জমেন্ট এর ভাব আছে, প্লাস সিভিল রাইট্স এর ইতিহাস, জিম ক্রো ইত্যাদি মিলে এখন রেসিস্ট মাত্রেই কনফেডারেসীর আড়ালে, স্টেট ইন্ডিপেন্ডেন্স আড়ালে লুকায়। ট্র‌্যাডিশনাল কনস্পিরেসী ওয়ালা দের সংগে নতুন কন্স্পিরেসী থিয়োরীর লোক দের মেন যেটা পার্থক্য, তারা আর্বান ইনক্লুসন এর ন্যারেটিভ কে চ্যালেঞ্জ করে, ইকোনোমিক রাইট এর , গ্লোবালাইজেশনের ফেলিওর এর দিক নির্দেশ করে এবং গোটাটা বড় মেডিয়া ইন্ডিপেন্ডেন্ট মেডিয়া র কনফ্লিক্ট এর গার্বে, তার সংগে জুটেছে, পার্সোনালাইজ্ড অ্যাড এর টেকনোলোজি।
    কনস্পিরেসী থিয়োরীর ও তো একটা সামাজিক ইতিহাস আছে। সেটা তো মনে রাখতে হবে রে বাবা। আমর যখন তোমার ধরো জিও পোলিটিকাল অবসারভেশন নিয়ে প্যাংক দেই, তখন সেগুলো কে চাঁডের ল্যান্ডিং-অ্যারিজোনা ডেজার্ট এর ইত্যাদি তত্তএর এর সংগে এক করে দেখি তাহলে আমরা যেমন ভুল করবো, তেমনি আবার ব্রেইটবার্টের ইনটেলেকচুয়া ট্র‌্যাডিশন কে ওয়ার্ল্ড জিয়ারি তত্তএর কন্টিনিউএশন হিসেবে না দেখাটাই ভুল হবে। স্পেস্ফিসিটি তো জরুরী। জিও পোলিটিকাল ডমিনান্স এর যেসব গোপন খেলা সেটার দিকে তুমি দৃষ্টি আকর্ষণ করো আমার ভালৈ লাগে, কিন্তু তার সংগে সত্যের নানা ভার্সন ইত্যাদি দার্শনিক অবস্থানের সম্পর্ক কম। এটা বোঝা দরকার, সত্য ইত্যাদি নিয়ে তর্ক টা শুধু পোস্ট মডার্ন তর্ক না, অন্য দিকে বুঝতে হবে, ক্যাপিটালিস্ট স্টেট যখন লিনিয়ার প্রোগ্রেস এর আইডিয়া কে অজুহাত করে রিপ্রেসন করছে, তখন পোস্ট মডার্নিজম বা আইডেন্টিটি পলিটিক্স এর অলটারনেটিভ গুলো উঠে এসেছে, ওয়েস্টার্ন স্টেটের ব্যক্তি সআধীনতার ফাঁকটি ধরে, পরে সেটা কে অর্গানাইজ্ড পরিবর্তন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে কাজে লাগানো হয়েছে, এবং কালে কালে পোস্ট মডার্ন কনসার্ন অ্যাবাউট ট্রুথ আস্তে আস্তে লেট ক্যাপিটালিজম এর একটা রক্ষা কবচ হয়ে গেছে। তুমি ফ্রেডেরিক জেমেসন পড়া লোক তুমি এসব বাজে খেলা ধুলো করে কি মজা পাও জানি না। হ্যাঁ ঠিক ই, সিকিউরিটি এজেন্সীর দুনিয়া র স্টোরি টা পৃথিবীর ক্ষমতার লড়াই দেখার একটা রাস্তা হতে পারে, কিন্তু এই রাস্তা কখনৈ বৈপ্লবিক কেন কোনো ধরণের প্রগতিশীল পরিবর্তন বা রাষ্ট্রের কাঠামো কে প্রশ্ন করতে প্রশ্ন কিছুতেই করবে না। কারণ স্টেট ছাড়া ডীপ স্টেট হয় না। আর্বান নয়ার এর আর্বানিটি ছাড়া কোন বাসস্থান নাই। এগুলো বুঝে তুমি ডকুমেন্টেশন করো আপত্তি নাই, কিন্তু এগুলো তো ক্রোধের জিনিশ না। বোধিসত্ত্ব দাশগুপ্ত
  • lili d / লিলি বালা | ০২ মে ২০২০ ০২:২৮92899
  • কেম্ব্রিজ এনালিটিকা প্রসঙ্গে যখন
    জনমত প্রভাবিত করতে গ্রফিতির কথাও উঠে এলো ..
    ইউকে বলি বা যেখানেই বলি , যখন কোনো প্রসঙ্গে একটা দমবন্ধ অবস্থা ফুটে উঠতে লেগেছে
    গোপনে কোথাও কেউ একটা খুব রিলেটেবল গ্রাফিতি এঁকেছে
    সাথে সাথে সেটায় সোশাল মিডিয়া্র ইনফ্লুয়েন্সাররা ভেড়ার পালের মত দল বেঁধে হুমড়ি খে পড়েছেন
    ব্যস প্রেসার কুকারে থেকে একটু বাস্প বেরিয়ে গেলো
    সব কিছু আগের মতই থেকে গেলো
    ইনফ্লুয়েন্সাররা সামান্য প্রতিক্রিয়া নিয়ে বেশি মেতে টেনশন কমিয়ে দিলেন - খেয়াল করলে এমন কিছুই দেখছি অনেকখানে
    একটা প্যাটার্ন...

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন