এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

  • লীলাবতীর মানসকন্যা

    সুশান কোনার লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ০৮ মার্চ ২০২০ | ১৯৫৮ বার পঠিত
  • উত্তর ইতালির (করোনা ভাইরাস এর দৌরাত্ম্যে যে অঞ্চল সম্প্রতি খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে) বিখ্যাত শহর মিলান - কেতার (fashion) অন্যতম রাজধানী, দু-দুখানা প্রথমসারির ফুটবল সংস্থার নিবাস - শিল্প-স্নস্কৃতিতে চিরকাল এক নম্বরে। প্রায় দু দশক আগে, মিলান বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপিকার সঙ্গে কিঞ্চিত কাজকর্মের সুবাদে যাবার সুযোগ হল। (আমাদের মতো সরকারী দাক্ষিণ্যে পড়াশোনা করতে যাওয়া হাভাতেদের অবশ্য মিলানের খ্যাতির কারণগুলো নিয়ে মাথাব্যাথা করার খুব সুবিধে ছিলনা।) তা সে যাই হোক সে যাত্রা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিথিশালায় বন্দোবস্ত করা যায়নি। অমন শহরে হোটেলও অতি ব্যয়বহুল। কাজেই থাকার ব্যবস্থা হল শহরের উপকণ্ঠে মেরাতে গ্রামে, বিশ্ববিদ্যালয়ের মানমন্দির-সংলগ্ন ছাত্রাবাসে। একদিন গ্রামের ছোট্ট দোকানটিতে কেনাকাটি করতে গেলুম - আলাপ হল মধ্যবয়সী পসারিণীর সঙ্গে। তাঁর বিশুদ্ধ ইতালীয় বুলি, আমার ইংরিজি - কাজেই আলাপ কি রকম হল তা সহজেই অনুমেয়। ইশকুল বেলায় শেখা দুএকটি ল্যাটিন শব্দের সাহায্যে কোনমতে কয়েকটি ডিম আর মাখন কেনা গেল। কিন্তু ক্রেতা সম্পর্কে তাঁর কৌতূহল অশেষ। স্বাভাবিক। তখনও পৃথিবীর প্রত্যন্ত আনাচকানাচ ভারতীয় পর্যটকে গিজগিজ করত না। অবশ্য খানিক পরে বোঝা গেল কৌতূহলের মূল কারণ। ইউরোপের অনেক ধনী পরিবারেই এশিয়া (মূলত দূরপ্রাচ্য) থেকে গৃহকর্ম সহায়িকা নিয়োগ করা হত তখন (এখনও হয় কি? আমার জানা নেই)। আমি ঠিক কোন পরিবারে নিযুক্ত হয়েছি সেটাই আসলে তিনি জানতে ইচ্ছুক। অনেক কষ্টে যখন বোঝাতে পারলাম আমি স্থানীয় osservatorio (অর্থাৎ কিনা observatory) তে গবেষণা করতে এসেছি, মুখটি উজ্জ্বল হয়ে উঠল। আকাদেমিক, আকাদেমিক (academic) বলে প্রবল উৎসাহে আমার হাত দুটি ধরে নেড়ে দিলেন। আর খুব যত্ন করে পসরা গুছিয়ে দিলেন। অর্থাৎ কিনা - 'বিদ্বান সর্বত্র পূজ্যতে'।

    তবে নারীর বিদ্বান (বিদুষী) হয়ে ওঠার পথটি কখনোই সহজ ছিলনা, আজও নেই। অদূর ভবিষ্যতেও যে অবস্থার খুব পরিবর্তন হবে এমন আশা এখনও করা যাচ্ছে না। কারণ মানবসমাজে নারী-পুরুষের বৈষম্যের মূল অতি গভীর। অন্য অনেক প্রাণীই যূথবদ্ধ হয়ে থাকলেও মানবসমাজ প্রথম থেকেই স্বতন্ত্র - নারী-পুরুষের ভূমিকার দিক থেকে। এর কারণ নিয়ে বিস্তর গবেষণা হয়েছে। সকলে যে একমত এমনও নয়। কিন্তু এটা অনস্বীকার্য যে মানুষের শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যই এর প্রাথমিক কারণ। মানুষ এক নখ-দন্ত-লোম-পালক-বিহীন প্রাণী। প্রাকৃতিক শীতাতপ, ঝড়-ঝঞ্ঝা বা শ্বাপদের আক্রমণ - কোনকিছু থেকেই নিজেকে রক্ষা করতে সমর্থ নয় তার শরীর। কাজেই অনিশ্চিত জীবৎকাল। অন্যদিকে জন্মমাত্রেই চিকন বাছুরটি ল্যাগব্যাগে পায়ে উঠে দাঁড়িয়ে দৌড় দেয়, সপ্তাহ দুই এর মধ্যেই নিজে মাঠে চরে ঘাস খায়। ডিম ফুটে বেরোনো পক্ষীশাবকও মাসখানেক এর মধ্যে আকাশে উড়ে বেড়ায়। কিন্তু মাথাভারী মনুষ্যসন্তান এর টলোমলো পায়ে উঠে দাঁড়াতে কমবেশি এক বছর, নিজে হাতে খাওয়া-দাওয়া শিখতে আরও বছরখানেক, আর নিজের খাবার নিজে খুঁজে নেওয়া - বয়সটি দুই-সংখ্যার হবার আগে সে কাজ কোনমতেই সম্ভব নয়। আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যার বিধিব্যবস্থা তৈরী হবার আগে অকল্পনীয় শিশুমৃত্যুর হারও ছিল মানবসমাজের চিরসঙ্গী।

    কাজেই প্রজাতির অস্তিত্ব রক্ষার জন্য মানুষের প্রয়োজন হয়েছে অজস্র শিশুর জন্ম দেওয়ার এবং দীর্ঘ সময় ধরে তাদের লালন-পালন, রক্ষণাবেক্ষণ করার। প্রয়োজন হয়েছে সুরক্ষিত আশ্রয়ের। যে আশ্রয়ের দেখাশোনার দায়িত্ব স্বাভাবিকভাবেই বর্তেছে নারীর ওপর - কারণ জৈবিক কারণেই তাকে সঙ্গ দিতে হয়েছে ক্রমান্বয়ে আসতে থাকা শিশুদের। আর পুরুষ গেছে খাদ্যের সন্ধানে, জীবন-জীবিকার উদ্দেশ্যে।

    তারপর সভ্যতার উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে জীবিকার স্তরবিভাগ হয়েছে। ফলমূলাদি সংগ্রহ এবং শিকারে অভ্যস্ত যাযাবর যূথের বদলে এসেছে কৃষি ভিত্তিক স্থায়ী সমাজ। ধীরে ধীরে জ্ঞানচর্চার প্রয়োজন হয়েছে। মানুষের নিশ্চিন্ত অবসরে ভাবনার সূত্র ধরে এসেছে দর্শন, বিজ্ঞান। নারী কিন্তু তখনও গৃহকার্যেই ব্যস্ত। মনে রাখতে হবে, গৃহস্থালীর সাধারণ দৈনন্দিন কাজগুলিও আধুনিক যন্ত্রপাতি আবিষ্কারের আগে ছিল অত্যন্ত সময় সাপেক্ষ। আর এই যন্ত্রগুলি (washing machine, microwave overn, fridge) মাত্রই বিগত শতাব্দী থেকে সহজলভ্য হয়েছে। নারীর বিদুষী হয়ে ওঠার তাই না ছিল সুযোগ, না অবসর। আর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এইই হয়ে উঠেছে সমাজের অলঙ্ঘনীয় প্রথা।

    অথচ সেই বৈদিক যুগেই (আনুমানিক অষ্টম বা সপ্তম খৃষ্টপূর্বাব্দে) এক নারী কণ্ঠ ঝঙ্কার দিয়ে উঠেছিল - ‘যেনাহম্ অমৃতস্যাম, তেনাহম কিম্ কুর্যাম?' ইনি মৈত্রেয়ী - দার্শনিক এবং ঋগ্বেদের সূত্রকার হিসেবে যেসব ঋষিকাদের নাম পাওয়া যায় তাঁদের অন্যতমা। এইরকম আরও যাঁদের নাম পাওয়া যায় তাঁরা হলেন - গার্গী, লোপামুদ্রা, ঘোষা, অপালা, বিশ্বভারা প্রভৃতি। অর্থাৎ বৈদিক যুগের প্রাথমিক অবস্থায় মেয়েদের শিক্ষালাভের বিষয়ে তেমন বিধিনিষেধ ছিল না। (কালক্রমে অবশ্য নারী শিক্ষার অধিকার হারালো। আর টুলো পন্ডিতদের নিদানে অকালবৈধব্য চিহ্নিত হল বিদ্যাশিক্ষার নিশ্চিত ফল হিসেবে।)

    কিন্তু লক্ষ‍্য করার বিষয় এই যে বৈদিক ঋষিকাদের মধ্যেও প্রায় সকলেই অবিবাহিতা বা সন্যাসিনী, বিবাহিতা হলেও সন্তানহীনা। একবমাত্র লোপামুদ্রাকেই পাওয়া যাচ্ছে সন্তানবতী হিসেবে। অর্থাৎ যূথবদ্ধ আদিম সমাজেও (যা আজকের অণু পরিবারের থেকে একবারেই অন্যরকম) যে সব নারীদের সংসার-সন্তানের দায়িত্ব ছিল না - একমাত্র তাঁরাই হয়ে উঠতে পেরেছিলেন বিদগ্ধা, হয়ে উঠতে পেরেছিলেন ব্রম্ভবাদিনী। ইউরোপেও মধ্যযুগে একমাত্র সেই নারীরাই বিদুষী হয়ে ওঠার সুযোগ পেতেন যাঁরা সংসার ত্যাগ করে সন‍্যাসিনী হয়ে কোন মঠে (monastery) যোগদান করতেন। সেই কাহিনীর পুনরাবৃত্তি আজও হয়ে চলেছে। কাহিনী অবশ্য এইটুকু মাত্র নয়। তবে মোটামুটি এইখান থেকেই শুরু।

    সবাইকে অবশ্য ঐ কাহিনীর মধ্যে আঁটানো যায় না। এ বছর ২৮শে ফেব্রুয়ারী (অর্থাৎ জাতীয় বিজ্ঞান দিবসে) নারী ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রক একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করেছেন। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা কেন্দ্রে তেরোজন পথিকৃৎ নারী বিজ্ঞানীর নামাঙ্কিত তেরোটি বিশিষ্ট গবেষণার পদ স্থাপনা করা হবে। বলাই বাহুল্য এই তেরোজন (পরবর্তীকালে আরো অনেকেই) সেই আদিম ঋষিকাদের উত্তরসূরী - যাঁদের ছকে বাঁধা জীবনে ধরে রাখা যায়নি। ২০০৮ সালে দুই বিশিষ্ট পদার্থবিদ, রোহিণী গোড়বোলে এবং রামকৃষ্ণ রামস্বামীর প্রচেষ্টায় সংকলিত হয় ভারতীয় নারী বিজ্ঞানীদের জীবনীকোষ 'Lilavati's Daughters' - তাঁদের সংগ্রামের, তাঁদের হয়ে ওঠার কাহিনী। এই তেরোজনের সকলেই এই সংকলনে অন্তর্ভুক্ত। এঁরা সকলেই 'লীলাবতীর কন্যা'।

    খুবই আনন্দের খবর। ব্যক্তিগত স্তরেও কিঞ্চিত। কারণ এঁদের মধ্যে দুজনের (আবহাওয়াবিদ শ্রীমতী আন্না মানি এবং জৈবরসায়নবিদ শ্রীমতী দর্শন রঙ্গনাথন) সঙ্গে আমার খানিক পরিচিত হবার সুযোগ হয়েছিল। আমার পড়াশোন-গবেষণার বিষয় আলাদা হওয়ায় এঁদের সঙ্গে পড়াশোনা বা কাজকর্মের আলোচনা অবশ্য কখনো হয়নি। তবুও অতি সামান্য সময়েই এঁরা আমার জীবনে গভীর ছাপ রেখে গেছেন।

    দেশের বিশিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির অন্যতম, কানপুর আই আই টি স্থাপিত হয়েছিল মার্কিন সহযোগিতায় - ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিট‍্যুট অফ টেকনোলজির (এম আই টি) আদলে। জনশ্রুতি, কানপুরের প্রশাসনিক নিয়মকানুনও এম আই টির হুবহু নকল। সত্যি মিথ্যে জানি না, তবে একই বিষয়ে / বিভাগে স্বামী-স্ত্রী দুজনকে যে কোনমতেই চাকরি দেওয়া হতনা (আজও হয় কি?) - সে কথা ভয়ঙ্কর ভাবে সত্যি। আজকের দিনে অধ্যাপক (academic) স্বামী-স্ত্রীর সবচেয়ে বড় সমস্যা - অন্তত একই শহরে দুজনের চাকরির সংস্থান করা (অধুনা যা two-body problem নামে কুখ্যাত)। '৭০ এর দশকের প্রথম দিকে, যখন কানপুর আই আই টির আশেপাশে কোনই আধুনিক গবেষণাগার বা বিশ্ববিদ্যালয় ছিলনা, তখন স্বামী-স্ত্রীর গবেষণার বিষয় এক হলে পেশাগত দিক থেকে কানপুর তাদের কাছে অবশ্য বর্জনীয় হিসেবেই গণ্য হওয়া উচিত ছিল।

    কিন্তু, বিশিষ্ট জৈব-রসায়নবিদ ডক্টর দর্শন রঙ্গনাথন, সেই অত্যাশ্চর্য কাজটিই করে বসলেন। ১৯৭০ সালে তিনি অধ্যাপক সুব্রমনিয়ম রঙ্গনাথনকে (যিনি ইতোমধ্যেই কানপুরে কর্মরত) বিবাহ করে, স্বামীর গবেষণাগারে একজন সাধারণ গবেষক হিসেবে যোগ দিলেন। কোন সময়ে? যখন কিনা দর্শন নিজেই দিল্লীর মিরান্ডা হাউস কলেজের রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান! যে কোন সাধারণ মানুষ এই অবস্থায় পেশা বা পরিবার - কোন একটিকে জীবন থেকে নিশ্চিত বিদায় দিত। কিন্তু দর্শন তো আর সাধারণ ছিলেন না। স্থায়ী অধ্যাপনার পদ না পেয়েও তিনি তাঁর গবেষণা চালিয়ে গেছেন নানা ধরণের সাময়িক বৃত্তির সাহায্যে, কখনো কখনো বা বিনা বৃত্তিতেই।

    তাঁকে যে অন্যায়ভাবে অধ্যাপনার সুযোগ দেওয়া হয়নি তাতেই তো শেষ নয়। স্থায়ী পদ না থাকার কারণে কানপুরের অন্য অনেক অধ্যাপক তাঁকে নানা অছিলায় হেনস্থা করতেও ছাড়তেন না। অথচ দর্শন এই সমস্তই অগ্রাহ্য করে নিজের কাজ করে গেছেন বিন্দুমাত্র তিক্ততা ব‍্যতিরেকেই। ছাত্র-ছাত্রী হিসেবে আমরা আশ্চর্য হয়ে দেখতাম তাঁর চারপাশে এক গভীর মমতার বলয় - যেই কাছে যেত তাকেই আপন করে নিতেন তিনি। দর্শন নিজের স্বামীকে, গভীর শ্রদ্ধা ও ভালবাসা মিশিয়ে উল্লেখ করতেন 'প্রফেসর' বলে, আর দুজনে মিলে একটি যৌথ পরিবারের আদলে গবেষণাগারটি চালাতেন। সত্যি কথা বলতে কি, ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে দুজন প্রায় ঐ গবেষণাগারেই বসবাস করতেন - আর চব্বিশ ঘণ্টা চলত গবেষণার কাজ। অদ্যাবধি আর কোন গবেষণাগারে আমি ওইরকম সহমর্মী আর আনন্দময় পরিবেশ দেখিনি। স্পষ্টতই পরিবেশটি দর্শনের মমতাময়ী ব্যক্তিত্ব আর বিজ্ঞানী হিসেবে প্রখর ঔৎকর্ষের সংমিশ্রণে তৈরী।

    শেষ পর্যন্ত অবশ্য অধ্যয়ন-অধ্যাপনা-গবেষণার জগৎ তাঁর অবদান স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিল। ১৯৯৩ সালে তিনি হায়দ্রাবাদের Indian Institue of Chemical Technology র সহ-নির্দেশিকা নিযুক্ত হন। সারা জীবন স্থায়ী অধ্যাপক পদ না পাওয়া সত্ত্বেও এই (অসম্ভব) নিযুক্তি তাঁর গবেষণার অসাধারণ উৎকর্ষেরই প্রমাণ। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে এই উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক মাত্র ষাট বছর বয়সেই দুরারোগ্য ব্যাধিতে পৃথিবী ছেড়ে চলে যান। Lilavati's Daughter এ দর্শন এর প্রিয় 'প্রফেসর' তাঁর জীবনসঙ্গিনী এবং সহকর্মিনীর জীবন বর্ণনা করতে গিয়ে বলছেন -

    " Darshan! I often said, “You are a star”!
    She was more than that. She was a comet on the chemical horizon, shedding brilliance at prodigious costs of energy and vanishing at the apex of her career.....
    I knew from the beginning that she was better than me and was proud to share my funds and students with her so that she could work on her own problems and publish on her own.....
    What Darshan faced at Kanpur to pursue her research would continue for a long time and one could win this battle only with determination. A very useful strategy for aspiring women scientists in India, is to adopt the approach taken by Darshan, who realized that women scientists will face additional impediments and planned her career taking note of this rather than worrying about it. She set an example to emulate. Till the very end of her life she worked very hard. Her courage and will to fight with no acrimony and with a smile and verve were really special... "

    তিনি অসাধারণ ছিলেন। অসামান্যা ছিলেন। কিন্তু পৃথিবীতে দর্শনের মতো নারীর সংখ্যা নগণ্য। সাধারণ, সামান্যা নারীরা প্রায়শই 'বিদুষী' হয়ে উঠতে পারেন না। বা মধ্যপথে সরে আসতে বাধ্য হন। গত বছর হায়দ্রাবাদে, পদার্থবিদ্যায় লিঙ্গসমতার বিষয় নিয়ে Indian Physics Association দ্বারা আয়োজিত একটি অধিবেশনেও শেষ পর্যন্ত সকলে এই সিদ্ধান্তেই ঊপনীত হয়েছেন। অধ্যয়ন-অধ্যাপনা, বিশেষ বিজ্ঞান-গবেষনার ক্ষেত্রে, অসামান্য নারীরাই এখনও অবধি 'হয়ে' উঠতে পারছেন। সাধারণ, সামান্যা নারীদের বিদুষী হয়ে উঠতে এখনও যুদ্ধ, অনেক কঠিন পথ হাঁটা বাকী। আর এই যুদ্ধ করতে করতে আমরা যখন তিতিবিরক্ত, সামাজিক বিধিবিধান নিয়ে, আমাদের আশেপাশের মানুষজনকে নিয়ে বিক্ষুদ্ধ - দর্শন রঙ্গনাথন এর জীবনদর্শন আমাদের কাছে হার-না-মানা সংগ্রামের এক উজ্জ্বল উদাহরণ। তিনি সমস্যার সমাধান করতে চেষ্টা করেছেন হৃদয় দিয়ে, পৃথিবীকে দেখেছেন মানবিক দৃষ্টি দিয়ে। আমাদের এবং আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নারীদের মধ্যেও সেই হৃদয়বোধ তৈরি হোক, পেশার পারদর্শিতা আর মেধার উৎকর্ষের লক্ষ্যে থাকুক নিবেদিতপ্রাণ পরিশ্রম - যাতে আমরা এই ধূমকেতুর তৈরি আলোকময় পথে নিজেদের পথ করে নিতে পারি।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৮ মার্চ ২০২০ | ১৯৫৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • খাতাঞ্চী | 162.158.166.86 | ০৮ মার্চ ২০২০ ১৯:২৭91297
  • নতুন লজিকে নতুন লেখা সময়ানুক্রমিক না চাপলে বুবুভার লিস্টে আসছে না। তাই তুলে দিই।
  • দ্যুতি | 162.158.165.233 | ০৮ মার্চ ২০২০ ২০:৩১91305
  • আমার খুব প্রিয় দিদি, তাই পড়ে ফেললাম। খুব ভালোলাগলো।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই প্রতিক্রিয়া দিন