এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • মনু শর্মার প্যারোল নিয়ে যে দু-চার কথা আমরা জানি বা জানিনা

    শ্রাবণী লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৯ নভেম্বর ২০০৯ | ৫৯৮ বার পঠিত
  • এমনিতে দিল্লী শহর ও তার আশেপাশে রোজ গড়ে দু-তিন খানা মার্ডার যাকে বলে জলভাত বা এদেশী ভাষায় আম বাত। পুলিশকে শুধোলে বলবে ও আর এমনকী, বড়ে শহর মে অ্যায়সী ছোটী ছোটী বাতেঁ হোতি রহতী হ্যায়। শুধু পুলিশকে ই বা বলি কেন আমজনতার মনোভাবও তো একই ধরণের। রেপ বিশেষ করে গাড়িতে তুলে নিয়ে গ্যাঙ রেপ আর খুন, এ দুটো নিউজ যে কোনো কাগজের রোজের খবর, শুধু নাম ঠিকানা বদলে যায়। আমরাও সকালে হাই তুলতে তুলতে ঐ নিত্যনৈমিত্তিক খবরগুলোতে অলস চোখদুটো একবার বুলিয়ে নিয়েই চলে যাই বড় বড় দেশ বিদেশের হেডলাইনে। শিউরেও উঠিনা, বিস্ময়ে হতবাকও হইনা। হ্যাঁ তবে কোনোদিন যদি ডেলি খবরে রেপ বা মার্ডার না দেখি সেদিন কেমন লাগবে, কাগজটা পানসে ঠেকবে কিনা জানিনা, এত বছরে জানার অবকাশ হয়নি এখনও।

    প্রথম পাতাতেই দেখা যায় এরকম দু তিনটে খবর, একটু সাদামাটা খুন বা রেপ হলে দ্বিতীয় বা তৃতীয় পেজে। তবে সে শুধু ঐ ঘটনার পরের দিন সকালে। তারপরে কি হয়, আদৌ সমাধান হয় কিনা, দোষী শাস্তি পায় কিনা এসব আর বিশেষ জানা যায়না যদি না কেসটি হাই প্রোফাইল অপরাধ হয়। এবার প্রশ্ন আসে অপরাধের আবার হাই প্রোফাইল কি!

    অপরাধ তখনই হাই প্রোফাইল হয় যখন সংশ্লিষ্ট পক্ষের কেউ,(বেশীর ভাগ ক্ষেত্রেই অপরাধী তরফে) কোনো প্রভাবশালী পরিবার হয়। সাম্প্রতিককালের দিল্লীর কিছু এরকমই কেসের তালিকায় উপরের দিকে আছে বছর দশেক আগেকার জেসিকা লাল হত্যার কেস। অপরাধী মনু শর্মা হরিয়ানার একজন বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতার পুত্র, এছাড়াও কেসে নানাভাবে জড়িত রামানিরা মা ও মেয়ে,যোগরাজ সিং, বিকাশ যাদব ইত্যাদির মত দিল্লীর হাই সোস্যাইটির তথাকথিত এলিটেরা। এইসব মহামহিম দের উজ্জ্বল উপস্থিতি ও কেসকে কেন্দ্র করে নানা নাটকীয় ঘটনাবলী একে অন্য মাত্রা দিয়েছে।

    সাধারণত এহেন হাই প্রোফাইল কেস আজকাল মিডিয়ার মাতামাতির চোটে মাঝে মাঝেই খবরে এলেও শেষ অবধি আমাদের দেশের পুরনো ছেঁড়াখোড়া আইনের ফাঁকফোকরে আর পুলিশ ও সরকারী নানা বিভাগের দুর্নীতির কারণে দোষীর শাস্তিটাস্তি অবধি গড়ায়না। অপরাধী আলালের দুলালদের জেলে কিছুদিন আয়েশ আরাম করিয়ে, "যাও বাবু আর দুষ্টুমি কোরোনা যেন, কেমন' এরকম বলে টলে আদর করে ছেড়ে দেওয়া হয় প্রমাণের অভাবে। কিছু ক্ষেত্রে শাস্তি হলেও সে প্রায় না হওয়ারই মত (সঞ্জীব নন্দা বি এম ডব্লিউ কেস দ্রষ্টব্য)।

    এ ক্ষেত্রে কিন্তু জেসিকার পরিবার দীর্ঘ সাতবছর লেগে থেকে পাবলিক সেন্টিমেন্ট ও মিডিয়ার সঠিক ব্যবহার করে শেষপর্যন্ত দোষী মনু শর্মাকে শাস্তি দেওয়াতে সক্ষম হয়েছে। তবে খুব সহজ ছিলনা তাদের এই যাত্রা, মাঝে বাধাবিঘ্ন এসেছে প্রচুর। সাক্ষীদের কিনে নেওয়া হয়েছে, সূত্র গায়েব করা হয়েছে। লোয়ার কোর্টে প্রমাণের অভাবে অপরাধীকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। তবু তারা, বিশেষ করে জেসিকার বোন সবরিনা হাল ছাড়েননি। কিছুটা এই সাত আট বছরে দেশের রাজনৈতিক দলীয় ওঠাপড়াও তাদের সহায়ক হয়েছে বিচারের মোড় ঘোরাতে। সব মিলিয়ে শেষ অবধি একদম হিন্দী সিনেমার স্টাইলে লাস্ট সিনে সত্যমেব জয়তে।

    এখানেই শেষ হয়ে যাওয়া উচিৎ ছিল এই কাহিনীর, বড়জোর ছোটখাট উপসংহার, যেমন প্রিয়দর্শিনী মাট্টু আর নীতিশ কাটারা (এখানে বিকাশ যাদব আর সাইড রোলে নেই একেবারে লীড আর্টিস্ট!) কেসেও সুবিচারের জন্য লড়াইয়ে জেসিকার পরিবার ও আরো অন্যান্য সহৃদয় ব্যক্তি হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। ফাইট ফর জাস্টিস,হয়ে উঠেছে প্রভাব প্রতিপত্তি ওয়ালা অপরাধীদের বিরুদ্ধে সাধারণের জেহাদ।

    কিন্তু শেষ হয়েও হলনা, দুহাজার ছয়ের ডিসেম্বরের পর আবার এমাসে হেডলাইনে ফিরে এল মনু শর্মা। লোকে জানল মনু সেপ্টেম্বর থেকে জেলের বাইরে প্যারোলে। এখন নভেম্বর। মনু শর্মার প্যারোলে সাময়িক ছাড়া পাওয়ার কাহিনীটি যেমন করুণ তেমনই হৃদয়বিদারক, শুনলে চোখের জল ধরে রাখা যায়না। তিনটি মূল কারণ দর্শানো হয়েছে এই আবেদনটিতে। তার প্রথমটি হল গুরুতর অসুস্থ মাকে দেখার (যা হয়ত বা শেষ দেখা) জন্য। দ্বিতীয় ব্যবসাপাতি দেখাশোনার অভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, তাকে একটু সামলে আসা আর তৃতীয় হল পিতামহীর মৃত্যুর পরের শেষ কিছু আচার পালন।

    তার আগে প্যারোল সম্বন্ধে দু চার কথা যা আমি বা আমার মত পাঁচজনে জানি।

    প্রতিবছর দিল্লীতে প্রায় শ চারেক প্যারোলের আবেদন জমা পড়ে। তার মধ্যে মেরেকেটে শখানেক মঞ্জুর হয় আবেদনের গুরুত্ব অনুযায়ী। এবছর এখনও অবধি একশ বত্রিশ'খানি আবেদন এসেছে, যার মধ্যে অষ্টআশিটি অমীমাংসিত, তেত্রিশটি বাতিল ও মাত্র এগারটি মঞ্জুর হয়েছে। যে কোন রাজ্য সরকারের ক্ষমতা আছে প্যারোলের কারণ বৈধ না হলে আবেদন বাতিল করা। কিরকম গুরুত্বপূর্ণ আবেদনই বিবেচিত হয় তা মনুর আবেদনের যুক্তি দেখলেই বোঝা যায়।

    ১৯৮৮র টেম্পোরারি রিলিজ অ্যাক্টের সেকশন ৩ অনুযায়ী রাজ্য সরকার জেলবন্দীকে সাময়িক ভাবে ছাড়তে পারে জেল ম্যানুয়ালে বর্ণিত কিছু কারণ অনুসারে। এই কারণগুলি হল কোনো নিকট জনের অসুস্থতা বা মৃত্যু,কয়েদীর নিজের শারীরিক সমস্যা,নিজের অথবা কোনো নিকট আত্মীয়ের বিবাহ যেখানে তার উপস্থিতি একান্ত জরুরী ইত্যাদি। এছাড়াও কয়েদীর নিজের অথবা পিতার অবিভক্ত চাষের জমিতে কাজের জন্যও প্যারোলে ছাড়া যেতে পারে।

    যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত আসামী তিন বছর জেল খাটার পরে জেল কর্তৃপক্ষের কাছে প্যারোলে বাইরে যাবার আবেদন করতে পারে যুক্তিযুক্ত কারণ দেখিয়ে এবং তার জন্য জেলের রিপোর্টে তিন সিজনে গুড কনডাক্ট থাকা জরুরী । কারণের গুরুত্ব অনুযায়ী কোনো কয়েদী এক বছরে একাধিক বারও (শারীরিক অসুস্থতা) ছাড়া পেতে পারে কিন্তু মোট সময় কখনই বছরে ছ সপ্তাহ ছাড়াতে পারবেনা। সাধারণত একবারে একমাসের জন্য প্যারোল দেওয়া হয় যেমন দেওয়া হয়েছিল মনুর ক্ষেত্রে। এসব ছাড়াও বিশেষ অবস্থায় জেল কতৃপক্ষ বিবেচনা করে কয়েদীকে পুলিশ পাহারায় ছাড়তে পারে কিছু সময়ের জন্য।

    মনু ছাড়া পায় ১৮ ই সেপ্টেম্বর একমাসের জন্য, হিসেবমত এক্ষেত্রে প্যারোলের সময়সীমা হল ১৮ই অক্টোবর অবধি। মনুর মেয়াদ বাড়ানো হয় ২১ শে অক্টোবর, আরো একমাস অর্থাৎ ২২শে নভেম্বর অবধি। হিসেব করলে দেখা যাচ্ছে ১৮ থেকে ২১ শে অক্টোবর প্যারোল ছাড়াই মনু জেলের বাইরে রইল অথচ জেল কর্তৃপক্ষ, পুলিশ বা মিডিয়া কারোরই কোনো মাথাব্যথা হলনা! হিসেব অনুযায়ী ১৮ তারিখে তার জেলে সারেন্ডার করা উচিত ছিল। তবে আইনে বলা হয়েছে যদি কেউ দশ বা তার বেশী দিন সারেন্ডার না করে তখনই ব্যবস্থা নেওয়ার কথা। দশের কমদিনের ব্যাপারে আইন নীরব, তাই এটা মনুর অপরাধের মধ্যে পড়েনা!

    প্যারোলের আবেদন জেল থেকে পাঠানো হয় সরকারের হোম ডিপার্টমেন্টে। সেখানে আবেদনটির যৌক্তিকতা খতিয়ে দেখা হয়। পুলিশ ভেরিফিকেশন হয়। সব ঠিক থাকলে হোম মিনিস্টারের সই হয়ে ফাইল যায় লেফট্যানেন্ট গভর্নরের আইনী বিভাগে। সেখান থেকে ছাড়পত্র পেলে লে: গভর্নর জেল কতৃপক্ষের কাছে সুপারিশ করে আসামীকে প্যারোলে ছাড়ার জন্য। প্রাথমিক প্যারোলের আবেদন যদি গভর্নর নাকচ করে দেন তাহলে হাই কোর্টে আবেদন করা যেতে পারে।
    মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত স্বয়ং হোম মিনিস্টার। নিজে সই করেছেন মনুর প্যারোলে এবং প্যারোল এক্সটেন্সনে। যদিও পরে মুখ্যমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বলেছেন তার আবেদনের মঞ্জুরীতে সই করা কাজ তিনি করেছেন,স্ক্রুটিনি করা হোম ডিপার্টমেন্টের কাজ। এও বলেছেন যে মনুর প্যারোল সমস্ত নিয়ম মেনেই হয়েছে। লে: গভর্নরের অফিস পুরো বিতর্কে এই বলে হাত ধুয়ে নেয় যে হোম ডিপার্টমেন্ট সর্বোপরি হোম মিনিস্টারের সইয়ের ওপর নিয়মমাফিক ছাপ দেওয়ার বেশী কিছু করতে পারেন নাকি তারা!

    অতএব মনু তিহারের বাইরে। কোথায়? কোথায় আবার, মায়ের বিছানার পাশেই হবে, এত সিনেমা আর সিরিয়াল দেখার পরেও এটুকু অনুমান করতে পাবলিকের অসুবিধে হয় নাকি! জনতা আর একটু কল্পনাশক্তি কে প্রসারিত করুন, একটুও ভেবে নিতে অসুবিধে হবেনা যে ডাক্তারদের সব ভবিষ্যদ্বাণী কে নস্যাৎ করে দিয়ে বেটার উপস্থিতি কিরকম জাদুশক্তিতে মা কে চাঙ্গা করে তোলে। ভালবাসা ঠিকঠাক হলে মরা বেঁচে ওঠে, একডজন গুলি খাওয়া হিন্দী সিনেমার হিরো প্রেমিকার স্পর্শে গান গেয়ে দৌড়তে শুরু করে, আর এ তো পৃথিবীর অন্যতম পবিত্র মা ছেলের ভালবাসা। যমের দুয়ারে কাঁটা দিতে এর চেয়ে অব্যর্থ আর কিছু হয় নাকি?

    কিন্তু এই মিডিয়া, আমাদের দেশের নিলাজ নাকাম মিডিয়া, এদের তো আর এসব মানবিক বোধ নেই। তাই মনুর অসুস্থ মৃত্যুপথযাত্রী পঞ্চাশ বছরের বৃদ্ধা মা চণ্ডীগড়ে কোথায় প্রেস কনফারেন্স করছিল সে খবর প্রকাশ করে হইচই ফেলে দেয়। মনুকে দেখার পর ভাল হয়ে গিয়ে তিনি যেতে পারেন না প্রেস কনফারেন্সে বা স্বামীর সাথে ইলেকশন প্রচারে! নাহয় তাকে দেখে কারুর মনে হয়নি যে তিনি সদ্য রোগমুক্ত, তাতেই বা কী। ওঁদের সব দুধ ঘি ফলের শরীর, রোগে শোকেও ওদের চেহারার চমক একইরকম থাকে!

    মনুর বাবা বিনোদ শর্মা সম্প্রতি প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী হরিয়ানার সবচেয়ে ধনী রাজনীতিক। হরিয়ানার রাজনীতিতে একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, নিজে ছেলের ছেলেমানুষীর চোটে খাতায় কলমে দায়িত্বে না হলেও যাকে বলে কিংমেকার, ব্যাকস্টেজে থেকে কলকাঠি নাড়ান বলে খ্যাতি আছে। একাধিক হোটেল, স্যুগার মিল মিডিয়া হাউস ও আরো অন্যান্য ব্যবসা দেখাশোনা করে মনুর ভাই। তাতে কি? তিহারের রিপোর্ট যা প্যারোল আবেদনের সঙ্গে যায় তাতে মনুর অপুর্ব সংযত ব্যবহারের সাথে সাথে অ্যাকিউট ব্যবসা বুদ্ধির ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। অতএব এই ব্যবসা বুদ্ধি জেলে না পচিয়ে তার নিজের পরিবারের ভালোর জন্য ব্যবহার করতে কিছুদিনের জন্য বাইরে যেতে চাওয়ার মধ্যে কোনো অন্যায় বা অযৌক্তিকতা থাকতেই পারেনা।

    পিতামহী মারা গেছেন এপ্রিল ২০০৮ এ। শেষ কাজ ২০০৯ এর সেপ্টেম্বরে হয় কিনা এসব পুরোহিত পণ্ডিতদের পাঁজির হিসেব তো সাধারণ গাঁওয়ার লোকজন করে থাকে। মডার্ণ আলোকপ্রাপ্ত পরিবারে আঁখ যখন খোলে তখনই সবেরা। পিতামহী যবেই মরুক মনু বাইরে এলেই শেষ কাজ!

    মা তো ভাল হল, তবে কি এবার মুন্না মানে মনু যাবে তিহারে ওয়াপস? তাই কি হয়, এসেই যখন পড়েছিস বাবা দুদিন থেকে দেখেশুনে ঝুলন্ত ব্যবসাকে ঠিক করে যা, বাবার ইলেকশন টাও তো আর ফ্যালনা নয়। অতএব প্যারোলের মেয়াদ বাড়ানো হোক। সে আর এমন কি কথা! আরও এক মাসের এক্সটেনসন হল একই প্রক্রিয়ায় তাতে সই করলেন আবার হোম মিনিস্টার!

    এদিকে প্রথমবারই দিল্লী পুলিশের ভেরিফিকেশন রিপোর্টে মনুর প্যারোল আবেদনের কারণকে অযৌক্তিক বলা হয়েছে। কোনো এক অজ্ঞাত কারণে হোম ডিপার্টমেন্ট এই রিপোর্টটিকে অগ্রাহ্য করে চন্ডীগড় পুলিশের রিপোর্ট যেটি মনুর পক্ষে ( চণ্ডীগড়ের মনুর বাবা ও পরিবারের প্রভাব বিপুল ) সেটির ওপর ভিত্তি করে ফাইল ক্লিয়ার করে। মনুর প্যারোল আবেদন সমস্ত নিয়ম মেনে সব বিভাগ ঘুরে মঞ্জুর হতে সময় লাগে মাত্র সাত দিন।

    এই পর্যন্ত পড়ে যারা একটু হাঁফ ছাড়বেন এই ভেবে যে অন্তত কোনো একটা প্রক্রিয়ায় সরকার ঢিলেঢালা নয় প্রমাণ হল, তারা একটু ধৈর্য্য ধরুন।

    সুপ্রিম কোর্টের একটি নির্দেশ অনুযায়ী প্রত্যেক আসামীকে বছরে একবার প্যারোলে ছাড়া উচিত যাতে তারা পরিবারের সঙ্গে এক হতে পারে। আসামীদের শোধনের প্রক্রিয়ায় সহায়তার জন্যই এই উপায়। রাজ্যের হোম ডিপার্টমেন্টের দায়িত্বে আসে কারণ খতিয়ে দেখে আসামীদের প্যারোল দেওয়ার কাজ। কার্যক্ষেত্রে কিন্তু এই ব্যবস্থায় সাধারণ অপরাধীদের কোনো লাভ হয়না, ক্ষমতার সম্পূর্ণ অপব্যবহার হয়ে থাকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। সাধারণ অপরাধীদের সত্যিকার দরকারে তারা হয় একেবারেই প্যারোল পায়না অথবা এত দেরীতে পায় যে পেয়ে কোনো কাজের কাজ হয়না। সরকারের ঘরে বিফল হয়ে এরা বাধ্য হয় হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে। সম্প্রতি একাধিক এধরণের কেসে দিল্লী হাইকোর্ট সরকারকে এ ব্যাপারে ভৎসনা করেছে ও নির্দেশ দিয়েছে প্রতিটি প্যারোল কেসের মীমাংসা দশ দিনের মধ্যে করতে হবে। অবশ্য সব নির্দেশ যে সব সময় অক্ষরে অক্ষরে মানতে এমন কোনো নিয়ম আছে নাকি! সাধারণ প্যারোল আবেদনের পুলিশ ভেরিফিকেশনের জন্যই আট থেকে দশ মাস লেগে যায়।

    ভেরিফিকেশনের অসঙ্গতি নিয়ে প্রশ্নের জবাবে শীলাজী বিবৃতি দেন যে মনুকে প্যারোল তার জেলের রিপোর্টে গুড কনডাক্টের ওপর ভিত্তি করে দেওয়া হয়েছে, এরকম টা হতেই পারে। রাজ্যের দণ্ডমুণ্ডের কর্ত্রী যিনি তাঁর মোটামুটি স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্য দিল্লীবাসীর বেশ প্রিয়, এক তো তাঁর নিজের সই করা কাগজের দায় এড়ানো ঠিক মেনে নেওয়া যায়না। এর ওপর চাপে পড়ে উল্টোপাল্টা বেআইনী যুক্তি দিলেন। ওনার জানা নেই যে শুধু গুড কনডাক্টের ওপর ভিত্তি করে প্যারোল দেওয়ার ব্যাপারে রিট পিটিশন (১১২১/০৯) করা হলেও তা এখনও বিচারাধীন, এই নিয়ম এখনও চালু হয়নি। যেটা দিনের আলোর মত পরিষ্কার সেটা মুখ্যমন্ত্রী বেকায়দায় দলের চাপে পড়ে কাজটি করে ফেলেছেন। দলও এবার নির্বাচনে নতুন বলে বলীয়ান হয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তাই গতবছর পিতামহীর মৃত্যুর সময় মনু প্যারোলে বেরোয়নি, দেড় বছর পরে বেরিয়েছে তার কাজ করতে! বিরোধীরা চিৎকার করেছে সাধ্যমত, কিন্তু এদেশে এখন কাদায় পড়া,ঘরপোড়া,মেরুদণ্ডহীন বিরোধী, শাসকদের পোয়াবারো। তাই বাজারে আগুন, নিলামীতে পি এস ইউ আর প্যারোলে মনু!

    সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল, হিসেবমত আরও মেয়াদ বাড়িয়ে বাড়িয়ে সারা জীবনটাই মনুবাবার প্যারোল হয়ে যেতে পারত, কিন্তু ভবিতব্য! তাঁতির কাল এঁড়েগরু আর মনুর কাল বার, বি এ আর ক্যাপিটালে! সেই কবে এক বারে জেসিকাকে ড্রিঙ্ক চেয়ে ব্যর্থ মনোরথ মনু বাধ্য হয়েছিল ঘোড়া টিপতে, সেই নিয়ে এতকাণ্ড! তা বলে সে তো আর বারের বাইরে থাকতে পারেনা চিরটাকাল। তাই আবার বারে মনু। প্যারোল চণ্ডীগড়ের জন্য তো কী হয়েছে, বার তো দিল্লীরই বেস্ট, বন্ধুও। তাই অশোক হোটেলের বারে পৌঁছল মনু বন্ধু সমভিব্যাহারে। সবই ঠিক আছে, শুধু এবারে বারে তার মুখোমুখি আর একজন সাধারণ উঠতি মডেল বার্টেন্ডার নয়, প্রতাপে সামাজিক প্রতিপত্তিতে তারই সমকক্ষ একজন। দিল্লী পুলিশ কমিশনার ওয়াই এস দাদওয়ালের ছেলে প্রণয়ের সাথে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় মনু মহারাজের ও বন্ধু সাহিল ধিঙ্গরার। কমিশনার তনয়ও কম যায়না, ফোন তুলে পুলিশকে জানায় মনুর দিল্লী অবস্থানের খবর। পুলিশ তৎক্ষনাৎ হাজির তাদের রাজপুত্রের খিদমতে। অবশ্য ততক্ষণে বিপদের গুরুত্ব বুঝে আসামী খিড়কী দুয়ার দিয়ে ভাগলবা, বেশীদূরে নয় অবশ্য, পাশের বারে। সেখানের মালিক অর্জুন রামপাল নিজে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে সিসি টিভি ফুটেজ, মনুর উপস্থিতির প্রমাণ। সায়ন মুন্সী জেসিকা কেসে পাল্টি খেয়ে যে অপরাধ করেছিল বুঝি তারই কিছুটা প্রায়শ্চিত্ত করল তার ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতুতো ভাই!

    মনু কিন্তু পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় ঠিক দশ বছর আগেকারই মত। ধরা পড়লে প্যারোলের আইন অনুযায়ী ভবিষ্যতে আর প্যারোল পাওয়া মুশকিল হয়ে যেত। পুলিশ ধরে নিয়ে যায় সাহিলকে ও জেসিটি কর্তা সমীর থাপর কে ভুল করে। গোটা নাটকে এটি একটি কমিক রিলিফ। থাপরের মত হোমরাচোমরা ব্যক্তিত্ব সুড়সুড় করে চলে যান পুলিশ স্টেশনে কেননা উনি নাকি ভেবেছিলেন বারের সামনে ওনার ফারারি আওয়াজ করছিল বলে লোকে পুলিশ কমপ্লেন করেছে! পুলিশের বক্তব্য সমীর ধিঙ্গরার পক্ষ নিয়ে তাদের সঙ্গে বচসা করেছে। যাইহোক সে এক অন্য নাটক!

    পুলিশের দ্রুত অ্যাকশন, নজিরবিহীন তৎপরতা এবং সর্বোপরি মিডিয়ার চিৎকার, সব মিলিয়ে পুরো পোল খোলার আগেই গুটি গুটি পায়ে মনুর তিহারে প্রত্যাবর্তন। প্যারোলের বারো দিন তখনও বাকী। মনু শর্মার তিহার প্রত্যাবর্তনের দিনই প্রত্যেক নিউজপেপার অফিসে তার মাকে লেখা এক চিঠির ফোটোকপি পাঠানো হয়। মায়ের লাডলা অসুস্থ মাকে ফেলে দূরে চলে যেতে বাধ্য হল শুধু এই পোড়া দেশের জালিম মিডিয়ার চাপে। নাহলে সে অনায়াসেই এই দু:সময়ে মায়ের পাশে থাকতে পারত কেউ টেরটিও পেতনা। এছাড়াও লিখেছে যে সে কোনোদিনও তার জীবনে মায়ের শেখানো মূল্যবোধকে অবহেলা করেনি, তবু আজ সে বাড়িতে বা বারে না থেকে তিহারে আছে, সে শুধুই তার ভাগ্যের দোষে! চিঠির এমন করুণ বয়ানে দেশের প্রতিটি মায়ের চোখ জলে ভরতে বাধ্য!

    যাইহোক, সব ভাল যার শেষ ভাল, ছাড়াগরু আবার খোঁটায় বাঁধা। মাঝখান থেকে বন্ধুর বার মেম্বারশিপ জপ্ত আর দিল্লী পুলিশ বনাম সমীর থাপরের ছোট এক অঙ্কের প্রহসন। আমরাও কাগজের প্রথম পাতায় চোখ রেখে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলি, রোজ রোজ ঐ মনু শর্মা, দাদওয়াল সমীর থাপর, বোর করে ছেড়ে দিচ্ছিল! ওবামা, চীন, এসব গুরুত্বপূর্ণ খবর কি তেল নিতে গেছে নাকি!

    আমরা আম জনতা শুধু দেখেশুনেই ক্ষান্ত, প্রশ্ন করিনা। তাই কেউ জানতে চাইনা যদি প্রণয় দাদওয়ালের মত বড়ে বাপ কা বেটার জায়গায় এবারও কোনো উঠতি মডেল, বার্টেন্ডার বা বারের অন্য কর্মচারী থাকত এ পক্ষে তাহলে? হয়ত এবারও ঘোড়া ছুটত, হয়ত বা ছুটত না। না ছুটলে মনুর প্যারোল সংবাদ ও তা লঙ্ঘনের খবর সবার অজানাই থেকে যেত, পুলিশের কোনো তৎপরতাই দেখা যেতনা। ঘোড়া ছুটলেও হয়ত হইচই হত, খবর হত, পুলিশ আগের বারের মতই মনুর পক্ষে থেকে প্রমাণ লোপাট করত। ধরা পড়লেও যাবজ্জীবন দণ্ডধারীর আর নতুন করে কি দণ্ড হত? দেশের শাসন ব্যবস্থা, আইনী ফাঁক, দুর্নীতি, ক্ষমতায় আসীন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের প্রভাব খাটিয়ে নয়কে ছয় করা, এসব তো অধরাই থেকে যেত।

    এই ঘটনা মনু-সাহিল বনাম প্রণয় কাহিনী হয়ে মিডিয়ায় নিউজ না হলে হয়ত কেউ টেরই পেতনা মনু কোথায়। সেক্ষেত্রে মনুর জীবনই হয়ত লম্বা এক প্যারোল হয়ে যেত। কারণ প্যারোল জাম্প করাও এদেশে খুবই নিয়মিত ঘটনা এবং খুব সহজ বিশেষ করে কয়েদী যদি মনুর মত প্রভাবশালী বাপের ছেলে হয়, যার পেছনে পুরো দেশের সরকার আছে। মূলত বিটি মহান্তির কেস নিয়ে মিডিয়ার হইচই য়ের পরেই তিহার জেল কতৃপক্ষের টনক নড়ে। তারা দিল্লী পুলিশের সাহায্য চায় এইসব প্যারোলে ছাড়া পেয়ে নিখোঁজ কয়েদীদের ধরতে। এ সম্পর্কে তারা হাইকোর্টেও অ্যাপিল করে দিল্লী পুলিশকে এ নিয়ে নির্দেশ দেওয়ার জন্য যাতে তারা জানায় গত ন'বছরে প্যারোল জাম্প করা বিভিন্ন অপরাধীর কথা যাদের অধিকাংশই খুনের কেসের অপরাধী। এরপরে পুলিশও তৎপর হয় এ ব্যাপারে। এই বছরে দিল্লী পুলিশ সাতষট্টি জন অপরাধীকে ধরেছে যারা কোনো না কোনো সময় প্যারোল জাম্প করেছে। এখনও এগারো জন ফেরার। বিভিন্ন প্যারোল জাম্পারের মধ্যে আছে বিটি মহান্তির মত হাই প্রোফাইল অপরাধী ছাড়াও টেররিস্ট, খুনী, বাইকার গ্যাঙের বান্টি ইত্যাদি। সমীক্ষায় দেখা গেছে প্যারোল জাম্প করে অপরাধীরা অনেকেই আবার নিজের পুরনো অপরাধের জগতে ফিরে যায়, কেউ কেউ একেবারে ধরাছোঁয়ার বাইরে অর্থাৎ বিদেশেও চলে যায়।

    প্যারোলে কয়েদীদের গতিবিধির ওপর নজর রাখার দায়িত্ব প্যারোল অফিসারের। সে দায়িত্ব যদি ঠিকঠাক পালন করা হয় তাহলে এত লোকে প্যারোল জাম্প করেই বা কি করে আর মনু শর্মা চণ্ডীগড় থেকে দিল্লী আসেই বা কি করে প্যারোল অফিসারের চোখ এড়িয়ে কে জানে!

    সব দেখেশুনে মনে হয় যে উদ্দেশ্য সামনে রেখে সুপ্রীম কোর্টের প্যারোল সম্বন্ধীয় নির্দেশ,তা পুরোপুরি অসফল। যেধরণের অপরাধীদের কথা মাথায় রেখে এই টেম্পোরারি রিলিজের ব্যবস্থা তাদের কোনো উপকারেই আসছেনা এই সিস্টেম, উল্টে একদল অসাধু রাজনীতিক ও অপরাধীদের মিলিত চক্রের হাত শক্ত হচ্ছে। তিহারে অনেক অসুস্থ অশক্ত বৃদ্ধ অপরাধী ও আন্ডারট্রায়ালরা দরকারী চিকিৎসার জন্যও বাইরে আসতে পারেনা অথচ মনু শর্মা, বিকাশ যাদব, আর কে শর্মা, বিটি মহান্তির মতরা চাইলেই যখন খুশী বাইরে।

    এতদিন অপরাধী শাস্তি পেয়ে জেলে গেলেই সবাই জানত কাহিনী শেষ, কিন্তু প্রথমে বিটি পরে মনু শর্মা আবার নতুন করে এদেশের অন্ধা কানুনের এমন কিছু অন্ধকার দিক সামনে এনে দিল যা প্রতিটি সুস্থ সাধারণ নাগরিককে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করবে।

    ২৯শে নভেম্বর, ২০০৯

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৯ নভেম্বর ২০০৯ | ৫৯৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। পড়তে পড়তে মতামত দিন