এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • শঙ্কু পাঁজার খোয়াবনামা

    শাক্যজিৎ ভট্টাচার্য লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১৫ এপ্রিল ২০১৮ | ১৬১২ বার পঠিত
  • ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ দানীবাবুর শ্বাস উঠতে শুরু করল। বাইরে অঝোরে বৃষ্টি। সাদা ফ্যাকাসে হয়ে আছে চরাচর। মেষলগ্নে চন্দ্র দুর্বল। শঙ্কু আকাশের দিকে তাকিয়ে মনে মনে ভাবল, এবার গেলেই হয়।

    ভাঙা জমিদারবাড়ির তেতলার এই ঘরখানাই যা একটু শক্তপোক্ত আছে। কড়ি বরগা খসে পড়েনি। ইলেকট্রিকের লাইন মাঝে মাঝে বিগড়ে গেলেও মোটের ওপর একটা পাখা ঘ্যাসঘ্যাঁস করে চলা অথবা একটা ষাট পাওয়ারের ছ্যাতলা পড়া টিউবলাইট জ্বালাবার জন্য বড়সড় কোনও ঝামেলা বাধায়নি। সবথেকে বড় কথা, দেওয়ালের ড্যাম্পও খুব বেশি নয়। দানীবাবুর দুর্বল ফুসফুসকে এতদিন তুতিয়ে পুতিয়ে পুষে রাখতে পারা যেত না যদি ছাদ বা দেওয়াল থেকে ড্যাম্প নামত। বড় বড় জানালা বন্ধ করে দাও, ব্যাস। রাক্ষুসে জোলো হাওয়া বাইরে দাঁড়িয়ে গজরাবে। পা আছড়াবে। কিন্তু ভেতরে ঢোকবার লাইসেন্স পাবে না। মোটা দেওয়ালের গায়ে জোরে জোরে লাথি মেরে হিংস্র রাগে পিছু হঠে যাবে আবার ।

    কিন্তু আজ আর শেষরক্ষা হল না। দানীবাবুর গলা থেকে সাঁই সাঁই আওয়াজ উঠছে। চোখ ঠিকরে বেরিয়ে আসতে চাইছে। গ্যাঁ গ্যাঁ করে কিছু একটা বলতে গিয়েও বলতে পারলেন না। পালঙ্কের একটা কাঠের ময়ূরের গলা শক্ত করে চেপে ধরলেন। শঙ্কু জল খাওয়াতে গেল, গলা দিয়ে নামল না। জলের গেলাস পাশের টেবিলে নামিয়ে রেখে শঙ্কু কর্তার মুখে ইনহেলারটা ধরল। প্রবল যন্ত্রণায় মাথা সরিয়ে নিলেন কর্তা। বোঝা গেল, নাকে লাগানোর ক্ষমতাটুকুও আর নেই।

    শঙ্কু মোবাইল ফোন খুলল। দুর্বল সিগনাল দেখাচ্ছে। এই দুর্যোগ, তার মধ্যে আজকেই এমন বিপদে পড়তে হল?

    রিং হয়েই চলেছে। এত ভোরে মানুষের জাগবার কথা নয়। তার ওপর বাদুলে প্রকৃতি গম গম করে ঘুম ডেকে আনে। মানুষ তখন মড়ার মত হয়ে যায়। হাঁ মুখ থেকে লালা গড়িয়ে বালিশ ভিজে যায়। নিঃশ্বাসের গতি ক্ষীণ হয়ে আসে। আধবোজা চোখে হরেক কিসিমের খোয়াব দেখে চলে রাতভোর। যে শিবু ডাক্তার রাত বারোটা পর্যন্ত নাকি রুগী দেখে ফেরে, তার পক্ষে এখন ওঠা আরোই অসম্ভব ব্যাপার।

    কিন্তু কী ভাগ্যি, ফোন উঠিয়েছে ! ঘুমজলে ডুবে থাকা একটা গলা, আচ্ছন্নের মত বলল "হ্যালো"।

    "আমি বলছি শিবুদাদা ! কর্তা তো গেল মনে হচ্ছে !" গলা নামিয়ে প্রায় ফিসফিস করে বলল শঙ্কু।

    ওপাশে একটু নীরব। সম্ভবত মাথা কাজ করতে সময় নিচ্ছে। তারপর শিবু ডাক্তার একটু সচেতন গলাতে বলে উঠল, "কেন রে? আবার কী হল?"

    "শ্বাস উঠেছে। জল গড়াতে পারছে না। গলা দিয়ে আওয়াজ বেরচ্ছে না। শেষ অবস্থা। তোমাকে আসতে হবে।"

    "এই বুড়ো জ্বালিয়ে খেল !" বিরক্ত গলাতে বলল শিবু । "আমারও তো সত্তরের কাছে বয়েস গেল শোঙ্কে ! আমার কি শরীর স্বাস্থ্য বলে কিছু নেই? এই বাদলা ভোরে আসব কী করে ?"

    "সে সব জানি না। এ তল্লাটে তুমি ছাড়া আর আছেটা কে ! হাসপাতালে আমি একা মানুষ কীভাবে নিয়ে যাব? আর যা অবস্থা, নিয়ে যেতে যেতেই তো মরে যাবে! তোমাকে আসতেই হবে শিবুদা !"

    "আচ্ছা আচ্ছা, দেখছি। তুই রাখ এখন," খিটখিটানো স্বরে শিবু ডাক্তার ফোন রেখে দিল।

    দানীবাবুর বাঁ পা-টা কাঁপছে। লাথি মারবেন নাকি? শঙ্কু পাছা এগিয়ে দিল। বরাবরের অভ্যেস বুড়োর। যখন খুব রেগে যান, বাঁ পা কাঁপতে থাকে। স্প্রিং-এর মত লাফিয়ে ওঠে মাঝে মাঝে। শঙ্কুকে তখন পাছা এগিয়ে দিতে হয়। দানী বাবু লাথি মারেন সপাটে । শঙ্কু গড়িয়ে পড়ে যায়। সেটা দেখে দানীবাবুর মেজাজ ঠিক হয়। যেদিন রাগ খুব বেশি থাকে, দুই তিনখানা লাথি শানাতে হয়।

    আজকেও শঙ্কু এগিয়ে গেল এই আশায় যে হয়ত এতে কাজ দেবে। কিন্তু বুড়ো প্রায় অচৈতন্য। পা তোলবার মত জোরটুকুও নেই আর।

    আর পারছে না শঙ্কু। গত তিনদিন সারা রাত জাগা। দানী বাবুর কখন ঘুম ভাঙে, কখন বাই ওঠে তার নেই ঠিক। হয়ত আকাশে ফটফটে জ্যোৎস্না, ঢেউ খেলানো হাওয়া আঁচড়ে নিলে ভেতর থেকে থকথকে আহ্লাদ উছলে উঠবে, ঠিক তখনই দানী বাবুর খেয়াল চাপল, তিনি রসময়ের পিঠে চেপে নদীর ধার ধরে ঘুরে আসবেন।

    "যাবেন কী করে কর্তা? আপনার তো নিচে নামাই বারণ। হার্ট খারাপ, লাংসে জল--"

    "আমার শরীর নিয়ে তোর কাছ থেকে জ্ঞান শুনব নাকি রে আবাগীর পুত? জিন চাপা শালা ! আজ রসময়কে ইছেমতির স্যাদলা বাতাস খাইয়ে আনব"।

    "রসময় তো বললেই এক পায়ে খাড়া ! কিন্তু আপনি যেতে পারবেন না কর্তা । "

    "চোপ !"

    দরজা পর্যন্ত হেঁটেই বিরাশি বছরের দশাসই শরীরটায় হাঁফ ধরে যায়। হাপরের মত ওঠানামা করতে থাকে বুক। তার ওপর চোখেও প্রায় দেখতে পান না। হাতড়ে হাতড়ে শঙ্কুর কাঁধে ভর দিয়ে আবার পালঙ্কে ফিরে এসে শুয়ে পড়েন। হাঁফাতে হাঁফাতে বলেন "কুলোপানা চক্কর দিচ্ছে রে শোঙ্কে ! সব কিছু যেন দুলছে!" তারপর ছেলেমানুষের মত ভেউ ভেউ করে কাঁদেন, "আমার রসময়কে দেখা হল না আর ! যে দীঘি গুলো খুঁড়েছিলাম, আবাদগুলো বসালাম, সেগুলো সব শেয়াল কুকুরে লুটে খেল!"

    দানীবাবুর বুকে হাত বুলোতে বুলোতে শঙ্কু সান্ত্বনা দেয়, "কিচ্ছু লোটেনি কর্তা। আমি আছি তো ! আমি থাকতে দীঘির জল এক ফোঁটাও কমবে না।"

    "আর রসময়?"

    "সে আস্তাবলের ভেতর দাপাচ্ছে, যেমন দাপায়। রোজ বিকেলে তার জন্য কাবলে ছোলা, জল আসে। মুনিষ এসে দলাই মলাই করে। আমি বিকেলবেলা তাকে নদীর পাশ ধরে হাঁটিয়ে আনি। রসময়ের গা কী কর্তা ! যেন মাখন। মাছি বসলে পিছলে যাবে। সে যখন টগবগ টগবগ করে, পায়ের পেশিগুলো লাফায়, দেখলে মনে হয় পাঁচ ছয় কেজি ওজনের কাতলা মাছ ঘাই মারছে।"

    " যা, এখন গিয়ে দেখে আয় কী করছে। দেখে এসে আমাকে জানা"।

    শঙ্কু আস্তাবলে আসে। ভাঙাচোরা ঘর, ডাই করে রাখা গোবরের স্তূপ, হুমড়ি খেয়ে পড়া দরজা আর বিনবিন মশার ঝাঁকের মধ্যে দাঁড়িয়ে বিড়ি ধরায়। ধীরে সুস্থে টান মেরে শূন্য আস্তাবলে চক্কর কাটে। একটা ছেঁড়া কাঁথাকে ভাঁজ করে যত্নে একপাশে সরিয়ে রাখে। ছেঁড়া হলেও পুরনো দিনের দামী মাল। বাজারে এসবের কদর খুব।

    ওপরে উঠে এসে বলে "দেখে এলাম। ঝিমোচ্ছিল। আমাকে দেখেই গা ঝাড়া দিয়ে উঠল। নাক দিয়ে আওয়াজ বার করে গলাটা এগিয়ে দিল। আদর খেতে চায়। তবে আস্তাবলে বড্ড মশা। ওকে কামড়ায়, রক্ত খেয়ে নেয়। গরমও খুব। একটা ইলেকট্রিক লাইন টেনে ফ্যান চালিয়ে দিলে ভাল থাকবে। ব্যবস্থা করব নাকি?"

    "হ্যাঁ কর। সিন্দুক টাকা নিয়ে নিস। তা হ্যাঁ রে, রসময় বেশি মোটা হয়ে যায়নি তো? তাহলে কিন্তু দৌড়তে পারবে না।"

    "নাহ, মোটা কোথায় ! দিব্যি দীঘল ছিপছিপে আছে তো। কলকাতার ডাক্তারের ডায়েট মেনে খাওয়াচ্ছি। ছোলা, গুড়, বার্লি, খড়, সবজি সেদ্ধ--একদম নিক্তিতে মেপে।"

    "কই, আজ একবারও তো ডাকল না !"

    ঐ যাহ, শঙ্কু মনে মনে জিভ কাটে। টেপ রেকর্ডারটা আজ চালানো হয়নি। কয়েকটা ডাক আর খুরের আওয়াজ একটু বাদে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে শোনাতে হবে। মুখে বলে, "ডাকবে কী করে ! ঝিমোচ্ছিল তো ! কাবলে ছোলাটার কোয়ালিটি ভাল নয় । ঝিমুনি ধরিয়ে দেয়। সামনের সপ্তাহে হাট থেকে এক নম্বরের ভাল ছোলা নিয়ে আসব। দাম একটু বেশি পড়বে কিন্তু ।"

    "আনিস। যা টাকা লাগবে নিয়ে যাস।"

    "তবে কর্তা, আপনার ঘোড়ার পেছনে বড্ড বেশি খরচ হয়ে যাচ্ছে এবার !"

    "আমাকে খরচ দেখাতে আসবি না হারামজাদা ! চাকর চাকরের মত থাক। আমাদের বংশ কারা ছিল জানিস? এই বিশ্বাসপুর মৌজা, আর আশেপাশের কয়েক হাজার বিঘে জমি আমাদের ছিল। বারভূঁইয়াদের থেকে জমি আর খেতাব পেয়েছিল আমাদের পূর্বপুরুষ। আমার দাদুর পোষা বাঘ ছিল রে আবাগীর পুত ! তুই ছোটলোক চাকরের জাত, তুই কী বুঝবি এসবের ! একবার শরীরটা জুতের হোক," বলতে বলতে দানীবাবুর চোখ স্বপ্নময় হয়ে এল, মুখ হাসি হাসি, ধরা গলায় বললেন, "তখন রসময়ের পিঠে চড়ে বেরব। দেখবি, প্রজারা গড় হচ্ছে। চালকলা দিয়ে রসময়ের পায়ে সিঁদুর একে দিচ্ছে মেয়েছেলেরা। তখন গ্রাম কে গ্রাম আমার নামে, এই দানী কায়েতের নামে গড় করবে। যেখান যেখান দিয়ে রসময় হাঁটবে, সেখানে বাগান, পুকুর, মন্দির পত্তন হবে। মন্দিরের গায়ে লেখা থাকবে, দানসাগর মহীন বিশ্বেস। তখন হাতির কানের সাইজের আমে গাছ ভরে যাবে। মাছেদের পেটে ডিম আসবে ঝাঁকে ঝাঁকে। তারাদের ভারে ঝুলে থাকবে আকাশ।" ঘুম ঘুম চোখে মন্ত্রের মত উচ্চারণ করে চলেন দানীবাবু,"রাজা, বুঝলি? আমরা হলাম রাজা। গরীব গুর্বোদের যে বুক দিয়ে আগলায় না, সে আবার রাজা কীসের!" শেষ কথাগুলো আর বোঝা যায় না। বিড়বিড় করে বকতে বকতে ঘুমের মধ্যে ঢলে পড়েন কর্তামশাই।

    কড় কড় কড়াৎ শব্দে বাজ পড়ল একটা। হুড়মুড় করে পুরনো নারকোল পাতা খসে গেল। নির্জন বাড়ির পেছনের দিঘীর জল এখন উথালপাথাল। যদি বান এসে যায়, তাহলে দিঘীর তলায় ঘাপটি মেরে বসে থাকা কুমীরটা এবার সোজা জমিদারবাড়ির ভেতরে ঢুকে পড়বে। বহু বছর ধরে এই অঞ্চলে প্রবাদ, দিঘীতে নাকি একটা কুমীর আছে। কেউ তাকে দেখেনি, তবুও আছে। সে থাকুক। কথাটা হচ্ছে, এই অবিশ্রান্ত ঝড়-বৃষ্টিতে যদি বাড়ির কোনও ছাদ বা দালানের থাম আবার ভেঙে পড়ে, তাহলে বিপদ আরো বাড়বে।

    শঙ্কু দানীবাবুর বুকে ম্যাসেজ করতে লাগল, আর বিড়বিড় করে বলল, "আর একটু সবুর করুন কর্তা। শিবু ডাক্তার চলে এল বলে"।

    আর সবুর ! দানীবাবুর শেষ লগ্ন উপস্থিত, এটা একটা বাচ্চা ছেলেও এখন বুঝতে পারবে। সাড়া শব্দও আর দিচ্ছেন না। শুধু বুকের ভেতর থেকে মাঝে মাঝে একটা যান্ত্রিক গোঁ গোঁ আওয়াজ উঠছে। মেষলগ্ন। দুর্বল চন্দ্র। বাবা মহাদেব এলেও কর্তাকে এখন বাঁচানো কঠিন।

    বস্তুত দানীবাবু যে তার নিজের বাবাও হতে পারত, সেই সম্ভাবনা অনেকবার মনে মনে খতিয়ে দেখেছে শঙ্কু। তার আসল বাবাকে মনেও পড়ে না। সে যখন তিন বছরের শিশু, তার জন্মদাতা বাপ দানীবাবুদের লেঠেল হিসেবে জমি দখলের দাঙ্গায় অংশ নিয়ে খুন হয়েছিল। বিশ্বস্ত লেঠেল খুন হবার পরেও কোথাও কোনও হেলদোল হয়নি। বরং তাদের সামান্য জমিটুকু সেই সময়ে দানীবাবু গাপ করে নেন । সেটা নাকি বাঁধা পড়ে ছিল বহু বছর। তাই বলে শঙ্কুরা যে না খেয়ে মরেছিল এমন নয়। শঙ্কুর বিধবা মা ছেলেকে নিয়ে এসে হত্যা দিয়ে পড়েছিল ঠাকুরদালানের সিঁড়িতে । দানীবাবু তখন ছাব্বিশ বছরের ভরন্ত জোয়ান পুরুষ। কী তাঁর স্বাস্থ্য! যেন ফেটে পড়ছে!। ধুতির ওপর পাতলা স্যান্ডো গেঞ্জি চাপিয়ে যখন বড় জামবাটি থেকে আম দুধ খেতে বসতেন, ঠাওর করা যেত না আম নাকি দানীবাবু, কার গায়ের রঙ বেশি জমকালো। মোটা গোঁফ। ঘরের দেওয়াল থেকে তখন হরিণের শিং, মরা বাঘের মাথা, তীরবিদ্ধ মোষেদের সার সার নিষ্পলক পাহারা।

    কিন্তু তিন বছর বয়েস থেকেই জমিদারবাড়ির অন্দরে ভবিষ্যতের বিশ্বস্ত ভৃত্য হিসেবে অবাধ যাতায়াতটাই কারণ নয়। এমনকি শঙ্কুর বাবা মারা যাবার পর তার মা যে পরের বেশ কিছু বছর দানীবাবুর জলপাত্তর হিসেবে থেকে গেল, এবং সেই সুবাদে শঙ্কুকে দানীবাবু বেশ কিছুটা প্রশ্রয়ের চোখেই দেখতে শুরু করলেন, সেটাও বড় ব্যাপার নয়। তার মা নিজেও তখন ভরভরন্ত যুবতী। দানীবাবু নিজের পালঙ্কে আশ্রয় না দিলে শেয়াল কুকুরে ছিঁড়ে খেত। শঙ্কুকে বড় হয়েও গ্রামের মধ্যে আওয়াজ শুনতে হয়েছে 'জলপাত্তরের ব্যাটা' বলে। তেমন কিছু খারাপ লাগে নি, কারণ ততদিনে তার পাছায় দানীবাবুর লাথির সম্মানচিহ্নের বঁড়শি পাকাপাকি বিঁধে যেতে শুরু করেছে। তার ওপর তখন জমিদারবাড়ি গমগম করছে। হাতিশালে শুধু হাতিটাই নেই। হ্যাঁ, জমিদারী প্রথাটা খাতায় কলমে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে বটে । কিন্তু দানীবাবুর প্রতাপ কি তাই বলে নিভে যাবে? নামে বেনামে হাজার হাজার বিঘে জমি, সম্পত্তি, পুকুর, নারকেল গাছের গরিমাকে সামান্য কাগজ কলমের আইন মুছে দিতে পারে, এমন সাধ্য পৃথিবীর কোনও আদালতের আছে বলে শঙ্কুর মনে হয় না। সে অনায়াসে এই জমকালো প্রাসাদের দুর্গাপুজোয় দানী কায়েতের মা মা ডাক ছেড়ে জলভরা চোখে হুংকার, প্রজাপীড়ন, গ্রাম সংস্কার ও পরবর্তীকালে পঞ্চায়েত নামক ব্যবস্থাটিকে দুই আঙুলের ডগায় নৃত্যক্ষম করে তোলবার মায়ার ভেতর মায়া হয়ে মিশে গেল। কিন্তু সেটুকুও বড় কথা নয়।

    বড় কথা হল, শঙ্কু দানী কায়েতকে ভালবেসেছে। যেদিন থেকে তার জ্ঞানচক্ষু উন্মীলিত হয়েছে, সেদিন থেকেই দানী কায়েতের প্রতি এক প্রগাঢ় ভালবাসায় ডুবে আছে সে। এক সময়ে দানীবাবুকে নিজের বাবা ভাবত। এখন ষাট ছুঁই ছুঁই বয়েসে এসে দানী কায়েতকে নিজের সন্তান বলে মনে হয় তার।

    মহীন বিশ্বাস নামটা বহুদিন হল কালের গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে। উদার হাতের জন্য, দান ধ্যান করা, ঋণ মকুব ইত্যাদির কারণে দানী কায়স্থ উপাধিটাই এ অঞ্চলে প্রসিদ্ধ। তা, উপযুক্ত নাম বটে ! কোন ভাগচাষীর মেয়ের বিয়ে হচ্ছে না, সে উপুড় হয়ে দালানে পড়ল। ব্যাস, তিরিশ হাজার টাকা করে দাও বরাদ্দ। বাসরাস্তায় বড় রোদ। চিন্তা কী? দানী কায়েতকে বললেই শেড আর বসার বেদী এসে হাজির। এরপর গরীব গুর্বোরা যদি দানী কায়েতের বুড়ো আঙুলের ধুলো তুলে নিয়ে এসে জিভে ঠেকায়, তার জন্য মহীন বিশ্বাসকে তুমি দোষ দিতে পারবে না।

    আর ছোটলোকদের জন্য দানীবাবুর এক বুক ভালবাসাটাও দেখার মত। জমিদারী নেই তো কী ! অপারেশন বর্গার পর জমি গিয়েছে তো পরোয়া নেই। এরা তবুও তাঁর প্রজাই। বেয়াদপি করলে যেমন চাবুক মারা বা ঘর জ্বালিয়ে দেবার মত কাজে তিনি পিছ পা হবেন না, তা সেরকমও করেছেন অনেক, ঠিক তেমনই বিপদে তাঁর পায়ের তলায় জায়গা মিলবে না এমন তো নয় ! দানীবাবু স্বপ্ন দেখেন যে একদিন তাঁর সাম্রাজ্য রসময়ের পিঠে চড়ে ফেরত আসবে। আর তখন টগবগ টগবগ! মৌজা থেকে মৌজায়, সমস্ত পরগণা জুড়ে তখন রক্ষা কর্তা কে? কার নামে গভর্নমেন্ট থেকে বিডিও, দাগী ডাকাত থেকে পঞ্চায়েত প্রধান, কার নাম শুনে কপালে হাত ঠেকাবে?

    "কে যায়? কার ঘোড়া?"

    "জানো না? দানী কায়েতের পক্ষীরাজ। নাম রসময়!"

    "ওহ, দাঁড়াও দাঁড়াও। পায়ে তেল সিঁদুর পরিয়ে আসি। ধুলো নিয়ে মাথায় ঠেকালেও পুণ্যি!"

    ঘরের মধ্যে অন্ধকার আর একটু জমাট বেধে আসল। ছাই রঙের মেঘের ভারে আকাশ ঝুলে পড়েছে। শঙ্কু জানালা অল্প খুলে বাইরে তাকাল। মহাপ্রলয় রে বাবা ! আজকেই সব কিছু ধ্বংস হয়ে যাক। দানীবাবু আর নড়াচড়া করছে না।

    শঙ্কু এই ছেলেমানুষ বুড়োকে ভালবাসে। ভালবাসে, কারণ প্রবল প্রতাপ এবং রাশি রাশি অর্থের মালিক হয়েও দানীবাবুর বাস্তব বোধ এতই কম যে সমস্ত কিছু খুইয়ে এখন নিঃস্ব হবার পথে। তাঁকে সারাজীবন ঠকিয়ে নিয়ে শঙ্কু গুছিয়ে বসল। তার সুদের কারবার ফুলে ফেঁপে উঠেছে। দুই ছেলের চালের আড়ত এবং মণিহারী দোকান। দোকানের নাম শঙ্কু পাঁজা প্রাইভেট লিমিটেড। প্রাইভেট লিমিটেড নামটা তার বড় পছন্দ, অর্থ না জানলেও। তাই ব্যবসার পেছনে গুঁজে দিয়েছে। পাশের গ্রামে দোতলা বাড়ি, ছেলেদের জন্য সেকেন্ড হ্যান্ড মোপেড। তার সুদের টাকা কলকাতাতেও খাটে। আর এই সবটুকুই হয়েছে দানী কায়েতকে দুয়ে। উঠতি বড়লোক হওয়া সত্বেও শঙ্কু এখনো দানী বিশ্বাসের চাকরের কাজ করে। অম্লান বদনে দানী বাবুর লাথি খায়। মাজা টনটন করে উঠলেও মুখ ফুটে বলে না কিছু।

    "কর্তাবাবু, বহরমপুরের কাছে ঘোড়ার হাট বসেছে। নিয়ে আসি একটা ভাল দেখে শুনে? আপনাকে তো জিন চাপিয়ে বেরতে হবে আবার। বেতো ঘোড়াতে কি আর মানীর মান ইজ্জত থাকে?"

    উত্তেজনায় জ্বলজ্বল চোখে বিছানায় উঠে বসে হাঁপাতে হাঁপাতে কর্তাবাবু বলেন, " কালকেই বেলাবেলি রওনা দে। টাকার চিন্তা করিস না। তোর গিন্নিমার রূপোর বাসনগুলো গিয়ে বেচে আন। ছাতার মাথা পড়ে পড়ে নষ্টও হচ্ছে, কাজেও লাগছে না। আবার যখন পুজোতে নহবত লাগাব, নতুন করে কিনে নেব"।

    "কিন্তু বাসন বেচতে বেচতে তো প্রায় শেষের মুখে। অত টাকা তো পাওয়া যাবে না"।

    অবহেলায় দানীবাবু পাশ থেকে চেকবইটা ছুঁড়ে দেন। " যা লাগবে বসিয়ে নিস। সই করা আছে"।

    "নাম কী রাখবেন কর্তা? বেশ জাঁকালো একটা নাম দিন।"

    কর্তা মিটমিট করে হাসতে হাসতে বলেন, "তোর ভরসায় কিবসে থেকেছি না কি রে বান্দার বাচ্চা? নাম অনেক আগেই ঠিক হয়ে গিয়েছে। রসময়। "

    "রসময়?"

    "হ্যাঁ," আহ্লাদের ভঙ্গীতে কর্তা বিছানায় দোল খান, “কাকদ্বীপে সেই যেবার আমাদের জমিতে ১৩৫৩ সনে ধানলুঠ হল, আমার বাবা তাঁর সেরা লেঠেল পাঠিয়েছিলেন। সে একাই সাত জোয়ানের পাল্লা নিয়ে তাদের ভুঁয়ে লুটিয়ে দিয়েছিল। আয় শালা, কে নিবি দুই ভাগ ধান ! তার নাম ছিল রসময়। বুঝলি?"

    কর্তাবাবু বোঝেন নি। কিছুই বোঝেন না। তিনি যখন বাদার জমিতে বসতি স্থাপনের স্বপ্নে মশগুল, ততদিনে এক এক করে সমস্ত জমি বিক্রি করে দিয়ে শঙ্কু নিজের ঘরের সিন্দুক ভর্তি করেছে। তিনি যখন সহিস মুনিষ মালী দারোয়ান সৈন্য অধ্যুষিত হয়ে সাম্রাজ্য নির্মাণ করছেন নিজের বিছানাতে, ভুতুড়ে জমিদারবাড়ি ছেড়ে সকলে চলে গিয়েছে। জনপ্রাণীও নেই। শুধু মাটি কামড়ে পড়ে আছে শঙ্কু। কারণ কর্তাবাবুর প্রতি তার প্রাণের টান।

    "শঙ্কু, আজ তো লক্ষীবার। ঠাকুরঘর থেকে তো শাঁখ বাজল না?"

    "শাঁখ বেজে গিয়েছে তো। আপনি শুনতে পান নি।"

    "বললেই হল শুনি নি? নিচের দপ্তরে নায়েব বাবু বসবেন শাঁখ বাজলে তবেই। ঝি তখন চা দিয়ে যাবে"।

    "নিচের ঝি পালিয়ে গেছে"।

    কর্তার জীবন থেকে একটা লক্ষীবার ঝরে যায়।

    তেল মশলা বিহীন খিচুড়ি রান্না করে দানীবাবুকে খাইয়ে নিজেও ওই ঘ্যাঁট একটু খেয়ে নেয় শঙ্কু প্রতিদিন। তারপর মেঝেতে শুয়ে পড়ে। তার ছেলেরা রাগারাগি করে। আড়ত, দোকানের হিসেবপত্র না সামলে এত মানী একটা লোক সারাজীবন ধরে এক ফোতো জমিদারের পেছন পেছন ঘুরল। শঙ্কু আমল দেয় না। ছেলেরা তো আর জানবে না, কত ধানে কত চাল হয় ! বৃষ্টিতে পুকুরপাড় যখন কাদা হয়ে থাকত, শঙ্কু শুয়ে পড়ত সটান। দানীবাবু তার পিঠের ওপর দিয়ে হেঁটে যেতেন। আজ শঙ্কুর আড়তে আটজন জোয়ান মদ্দ কাজ করে। শঙ্কু জানেও না তাদের বাড়ি কোথায়। কাজ করো পয়সা নাও, ব্যাস। তবে অন্যায্য কাজ, অধর্মের সুবিধা শঙ্কু কখনো নেবে না। ওভারটাইম হলেই এক্সট্রা পয়সা। পুজোতে বোনাস। ছেলেরা কী করে জানবে, দানীবাবুর সঙ্গে তার সম্পর্ক কেমন !

    বাইকের আওয়াজ কানে আসছে । শঙ্কু জানালা খুলল। শিবু ডাক্তার। কারোর একটা বাইক চেপে চলে এসেছে এই দুর্যোগেও। জয় মা !

    দানীবাবুর দিকে ফিরে শঙ্কু বলল, "ডাক্তার এসেছে কর্তা। আর ভয় নেই। এবার সেরে উঠবেন।" দানীবাবু উত্তর দিলেন না। শঙ্কু ছুটে নিচে নেমে গেল।

    শিবু ডাক্তার ঘরে ঢুকে কয়েক মুহূর্ত দানীবাবুর দিকে তাকিয়ে রইল। তারপর হাতের নাড়ি তুলে আবার রেখে দিল। শঙ্কুর দিকে ফিরে বলল "এ তো মারা গেছে রে !"

    "অ্যাঁ?"

    "কতবার বললাম, নার্সিংহোমে দে। বুড়ো কথা শুনলে তো ! যাক, এখন দেখ কী করবি।"

    ব্যাপারটা যদিও প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু শঙ্কু সম্ভবত ভেতরে ভেতরে বিশ্বাস করতে পারেনি দানীবাবু মারা যাবেন। আকস্মিকতার অভিঘাতে সে হঠাৎ হাউমাউ করে কেঁদে উঠল।

    শিবু ডাক্তার শঙ্কুর পিঠে হাত বোলাতে বোলাতে বলল, "আর কেঁদে কী করবি ! তোর তো বাবার থেকে কোনও অংশে কম ছিল না রে ! জানি সবই। ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি। মানী মানুষ বটে একখানা।"

    কাঁদতে কাঁদতে মাটিতে গড়াগড়ি দিতে লাগল শঙ্কু, "মাথার ওপর থেকে ছাদ সরে গেল গো শিবুদাদা ! আমি এখন বাঁচব কী নিয়ে?"

    শিবু দীর্ঘশ্বাস ফেলল, "যেতে তো সকলকেই হবে রে ! আমি ডেথ সার্টিফিকেট লিখে দিচ্ছি। দেখ, শরিকদের কাউকে খবর দিয়ে আনাতে পারিস কি না। বুড়োর দিকে তো আর কেউ নেই, তাই না? নিঃসন্তান হওয়া যে কত বড় অভিশাপ রে শোঙ্কে, কী আর বলব ! শেষ সময়ে মুখে জল দেবার কেউ থাকবে না। তবু তুই ছেলের দায়িত্ব পালন করেছিস। শেষ জলটুকু তোর হাত দিয়েই গেল। বুড়ো তোকে আশির্বাদ করবে। নে, ওঠ। সৎকারের তো ব্যবস্থা করতে হয়, না কি? "

    শঙ্কু ফোঁপাতে লাগল, "এ বাড়িতে কারোর বাইরে সৎকার হয়নি। বড় বাগানের পেছনে নিজেদের শ্মশান আছে। সেখানেই হবে।"


    দানী বাবু মারা যাবার পরেও কয়েকদিন নিঝুম জমিদারবাড়িতেই থেকে গেল শংকু। মন ভাল নেই। তার ওপর এই বাড়ির একটা বিলি বন্দোবস্ত করতে হয়। স্টুডিও কোম্পানিকে বলা আছে, তারা এসে শুটিং করে যাবে। এছাড়া পিকনিকের জন্য ভাড়া দেওয়া যেতে পারে। সব শরিকই হয় কলকাতায়, না হয় বিদেশে। তারা কেউ বাড়ি নিয়ে চিন্তিত নয়। নিজের ভাগের টাকা পেলেই খুশি। শঙ্কু সকলের সঙ্গে কথাবলে একটা মধ্যস্থতার চেষ্টায় ছিল। সিনেমার জন্য ভাড়া দেবার প্রস্তাবে কেউ অরাজী
    নয়। দানীবাবুকে এসব কথা বলা ভাবাও যেত না। হয়ত আদ্যিকালের দোনলা বন্দুকটা বার করে খুনই করে ফেলতেন। মানুষের মত মানুষ ছিলেন বটে ! তার মা যে এমন দেবতুল্য মানুষের জলপাত্র ছিল, এটা ভাবলেই শঙ্কুর বুকটা দেমাকে অল্প অল্প কেঁপে ওঠে এখনো।

    স্টুডিও কোম্পানির সঙ্গে বোঝাপড়াতে নিজের কমিশন কত রাখবে, সে সব সাত পাঁচ ভাবতে ভাবতে শঙ্কু কর্তাবাবুর বিছানা পরিষ্কার করছিল। তিন দিন বাদে কাজ। কলকাতা থেকে কাল শরিক আসবে। কিন্তু সব দায়িত্ব শঙ্কুকেই নিতে হবে, যা দেখা যাচ্ছে।

    গত কয়েকদিন বৃষ্টির পর মেঘ কেটে গিয়ে ফটফটে জ্যোৎস্না বেরিয়েছে আজ। গাছের পাতা, ঝোপঝাড়, ভাঙা প্রাসাদ দুধেল আলোতে স্নান করে নিচ্ছিল। শঙ্কুর মনে পড়ল, এই রকম জ্যোৎস্নার রাত্রিগুলোতে কর্তাবাবুর সাধ জাগত, তিনি পায়ে হেঁটে বাদা অঞ্চলের হাল হকিকত খোঁজ খবর নিয়ে আসবেন। ইছেমতির পার ধরে হাঁটতে হাঁটতে দূরে নিজের গ্রামের দিকে তাকাবেন। খোঁড়া দীঘিগুলোকে দেখবেন। মন্দিরের মাথায় পিছলে পরা চাঁদকে দুই হাতে ধরবেন।

    কীসের একটা শব্দ হচ্ছে না? নিঝুম রাত বলে কানে বেশি লাগছে।

    দক্ষিণের জানালাটা খুলে দিল শঙ্কু। এখান থেকে বড়বাগান ছাড়িয়ে স্পষ্ট ইছেমতির চর অবধি বহুদূর দেখা যায়।

    মুখ বাড়িয়ে শঙ্কু দেখতে গেল, কোথায় শব্দ হচ্ছে। পাখপাখালি দেয়ালা করছে নাকি? পাশের ভাঙা ঘরগুলোতে বড্ড চড়াইয়ের উৎপাত। স্টুডিও পার্টি আসবার আগে সাফ করতে হবে।

    সঙ্গে সঙ্গে তার নাক ভরে উঠল দুধেল ধানের নরম শিষের গন্ধে। শঙ্কু চমকে উঠল। এই রাত্রে ভুতুড়ে গন্ধ আসে কোথা থেকে?

    আর ঠিক তখনই তার গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল। হতভম্ব মুর্তির মত জানালার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে রইল সে।

    বড়বাগানের ধার ঘেঁসে, যেখানে কর্তাবাবুকে পোড়ানো হয়েছিল, তার ঝোপঝাড়ের সামনে ঘাস খাচ্ছে একটা ঘোড়া ।

    শঙ্কু চোখ কচলে আবার তাকাল।

    কুয়াশায় ঝকমক করছে ঘোড়াটার গা। পেষল শরীর থেকে ছিটকে যাচ্ছে বিদ্যুৎ। পায়ের ভঙ্গী স্থির, কিন্তু সচকিত। যেন ছিলায় টান পড়লেই ছুটে যাবে তীরের বেগে।

    দানী কায়েতের অস্থিভস্মের কাছে দাঁড়িয়ে সে ঘাস খাচ্ছে। অপেক্ষায়, কখন তার পিঠে এসে বসবেন সম্রাট।

    থরথর করে কাঁপতে থাকা শঙ্কুর চোখের সামনে দিয়ে মুহূর্তরা ঝরে গেল। পার্শে মাছের পেটের মত সাদা জ্যোৎস্না বড় বাগানে ছড়ানো শেয়াল, বেড়াল আর মাটির নিচে নিহত রাখালদের লাশের সাদা ফকফকে মুণ্ডুর ভেতর দিয়ে চলাচল করছিল। শঙ্কু পাঁজা বুঝছিল না অফলা আকাশ থেকে গর্ভথোড়ের ম ম করা বিয়োনো ধানের গন্ধ নেমে আসছে কেন। রসময়ের এখন লাফিয়ে উঠতে আর কোনও বাধাই নেই।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১৫ এপ্রিল ২০১৮ | ১৬১২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | 52.110.140.222 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ০৭:৩৮83656
  • বেশ ভালো লাগলো!
  • aranya | 172.118.16.5 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ১০:৪২83657
  • সুন্দর
  • বীণা বিন্তে সৈয়দ | 79.172.190.161 (*) | ১৫ এপ্রিল ২০১৮ ১১:২২83658
  • খুব ভালো লাগল! আমি শাক্যজিতের লেখার বিশাল ভক্ত।
  • সন্দীপন মজুমদার | 233.176.120.37 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩০83662
  • শাক‍্য এখানে নিজের ভাষা অর্জন করেছেন যেটা খুব জরুরী। দ্বিতীয়ত,ডন কিহোতের রেফারেন্সটা খুব লাগস ই ভাবে প্রয়োগ করেছেন। একদম শেষে সামন্ততন্ত্রের শেষ ঝলকানি যে স্মৃতিমেদুরতা আনে সেটুকু মমতা পরাজিত অতীতের প্রাপ্য, অন্তত সাহিত্যের ক্ষেত্রে‌। তবে সেটা আরেকটু অপ্রত‍্যক্ষ হলে ভালো হত। আমার শেষে একবার কার্পেন্তিয়ারের journey back to the source গল্পটির কথা মনে পড়ছিল যেভাবে একটি সার্থক গল্প অন‍্য একটি সার্থক সাহিত্যের কথা মনে করিয়ে দেয়। পন্ডিতরা ইহাকেই বোধকরি inter textuality বলিয়া থাকেন।
  • | 144.159.168.72 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:১০83659
  • বাহ বাহ
  • Prativa Sarker | 125.96.139.10 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৬:১১83660
  • শঙ্কু পাঞ্জা ?
  • Tilak | 37.4.47.48 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৭:২৭83663
  • Khub bhalo hoyeche.
  • Tilak | 37.4.47.48 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৭:২৭83664
  • Khub bhalo hoyeche.
  • i | 134.170.249.225 (*) | ১৬ এপ্রিল ২০১৮ ১২:৪৯83661
  • ডন কুইকহোটে, স্যাঞ্চো পান্জা, রসিনন্টে সকলেই হাজির-আইডিয়া, লেখা সবই অতি উচ্চমানের -
  • কল্লোল | 59.207.48.135 (*) | ১৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৩৩83665
  • ক্যাবাৎ। পড়তে পড়্তে জলসঘর মনে পড়ছিলো। সেই ক্ষয়িষ্ণু ফিউডলিজম, সেই ট্রেডিং ক্যপিটালের বেড়ে ওঠা।
    সন্ধিক্ষণের গল্প।
  • h | 52.110.131.137 (*) | ১৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৬:৫৭83667
  • আমার খুব একটা ভালো লাগে নি, হয়তো শাক্যর কাছে এক্সপেকটেশন বেড়ে গেছে।
  • শিবাংশু | 113.249.4.107 (*) | ১৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৮:৫১83666
  • বাহ...
  • aka | 79.73.9.37 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:৫৭83668
  • শাক্য এটা করলেই পারে, খাসা।
  • h | 212.142.75.56 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৫৪83669
  • কন্ডেসেন্শনের শেষ কথা মাইরি, 'এটা করলেই পারে'। ঃ-))))
  • h | 212.142.75.56 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:১৪83670
  • শাক্য র বেশির ভাগ লেখাতেই, ফিকশন বা নন ফিকশন, পাঠকের একটা ভূমিকা থাকে, তাকে কিসু একটা ভাবতে বা করতে হয় বা অন্য আরো পড়ার প্ল্যান নিতে হয়, ইত্যাদি। এই গল্পটা , সরাসরি ই বলছি, তাদের ই ভালো লাগবে, যাদের কাছে একটা গল্প সুদু বিকেল বেলার চা খাওয়া মাত্র, ম্যাক্স আকাশের মেঘের ফর্মেশন আর আর আলোর খেলার মত কখন কখনো একটা চিহ্ন মাত্র। একটা মেধাবী লেখক, কেন এই লেখার প্ল্যান করেছে, আমার কাছে কোন এক্সপ্ল্যানেশন নাই। ভাষার দক্ষতা, রূপকল্প তৈরীর আশ্চর্য্য ক্ষমতা এগুলো তো নিশ্চয়ি আছে, আমার বাবার জন্মে আমি এরকম রূপকল্প পারবো না, কিন্তু সে টা কোন কথাই না। ভাবনার খোরাকের দিক দিয়ে এটা কিসুই হয় নি।

    ইতিহাস এবং স্মৃতি যে দিনের পারাবারে এসে মেশে, সেটা শাক্য র বেছে নেওয়া পরিসর। মেনে নিতে অসুবিধে নেই, অতি প্রবল পুরুষ ও ইতিহাসের সামনে ধূসর হয়ে যেতে পারে, সব ডিক্টেটর ই কোথাও একটা একাকিত্ত্বের শিকার এবং তাকে নিয়ে গল্প লেখা যেতেই পারে। কিন্তু এই গল্পটা আমার আদৌ প্রত্যাশা মেটায় নি, তমিজ কিংবা কুলসুম কিংবা তমিজের বাপ তাদের স্বপ্নে যখন সন্যাসী বিদ্রোহের নায়ক দের দেখে, গাছ , গাছালি, পুকুর , পুকুরের মাছ যখন ইতিহাসের জীবন্ত বই হয়ে ওঠে, তখন শুধু তারা টেকনিক প্রদর্শন করে না। কেন আমাকে সার্ভান্তেস এর ক্লাসিক টির থেকে নাম ধার করতে হবে কেন। এই সব টেক্সচুয়ালিটি তৈরী করতে গিয়ে শাক্য কেন ইতিহাস আর স্মৃতির সীমান্ত টাকে নিজের লেখার অন্যতম বিষয় করেছিল সেটা ভুলে গেছে। সারামাগো যখন বোরহেস তৈরী কাল্পনিক আইরিশ লেখক হারবার্ট কুইন কে ফার্নান্দো পেসোয়ার কল্পিত সত্ত্বা রিকার্ডো রেইস এর গল্পে নিয়ে আসেন, তখন, ইউরোপিয়ান নভেল এর একটা কন্টিনিউইটি র স্থাপিত ভিত্তির সাহায্য তিনি পান, কিন্তু বিষয়টাই যেখানে ইতিহাস এবং স্ম্রিটির একটা মরণপন লড়াই, সেখানে এই সাংস্কৃতিক আদান প্রদান আমার মধ্যে আগ্রহ জাগাচ্ছে না। একটা কথা বুঝতে অসুবিধে হয় না, বাংলা সমসাময়িক ফিকশনের বিষয়ের পরিধিকে একটা ধাক্কা দিয়ে বড় করার প্রয়োজনীয়তা অনেকেই অনুভব করছেন, ওঁচা থেকে ভালো অন্তত সিরিয়াস লেখালিখির নিরীক্ষা যাঁরা করেন তাঁরা করছেন, কিন্তু এই ইনটারটেক্স্চুয়ালিটি আরোপিত। মানি না, তর্ক আছে। আর্যোর কন্ডিসেনশনে আরো খচে গেলাম ঃ-)))
  • h | 212.142.75.56 (*) | ১৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:১৮83671
  • বাংলা নাটক এই ছায়া অবলম্বন করে ফুল প মারা গেছে, দর্শক দেব এর সিনেমায় চলে গেছে, এই জিনিসে আমার আপত্তি আছে। তর্ক আছে। ইউ ও আস অ্যান এক্সপ্ল্যানেশন। প্রচন্ড রেগে গেছি।
  • তন্বী হালদার | 57.15.100.174 (*) | ২০ এপ্রিল ২০১৮ ১১:১৩83672
  • খুব ভালো লাগলো
  • তন্বী গালদার | 57.15.100.174 (*) | ২০ এপ্রিল ২০১৮ ১১:১৫83673
  • খুব ভালোলাগলো
  • Dibyendu Singha Roy | 167.49.16.205 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০৭:৪৪83674
  • এই গল্প দিয়েই শুরু করলাম। আমি বলতে গেলে বাইনারি সিস্টেম হয় ০ নাহলে ১। আপনার লেখা প্রথম গল্প পড়লাম। অসাধারন। ১ দিলাম।
  • Dibyendu Singha Roy | 167.49.37.13 (*) | ২৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৮:৪১83675
  • কাল রাতে গল্পটা পড়ে সকাল পর্যন্ত খুবই ভালোলাগার রেশ কিছুটা ফিকে হতেই দুটো ছোট্ট ব্যাপার মনে এল। লেখকের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি । জমিদার বাড়িটির ভগ্নপ্রায় দশা যেটা দানী বাবুর যৌবনে ঠিক ছিল কিন্তু দশ বিশ বছরে দেওয়াল ধসে পড়বে এমন হওয়া কি সম্ভব। আর এমন ভঙ্গুর বাড়ির যেখানে দানী বাবুর ঘর ছাড়া বাকি সব প্রায় নেই সেখানে শুটিং পার্টি।
    এগুলো নেহাৎ খুঁত ধরতে হয় বলে খুঁত ধরা। এতো আর গোয়েন্দা গল্প নয়। এতে গল্পের ভাবে কোনও হেরফের হয়না
  • শাক্যজিৎ | 52.110.143.79 (*) | ২৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:০০83676
  • নিজের লেখা নিয়ে কথা বলা যায় না, সেটা উচিতও না। কিন্তু হানু দা এখানে বলেছে 'ইউ ও আস অ্যান এক্সপ্ল্যানেশন', ফেসবুকেও ইনবক্স করেছিল। :) তা, নিজের গপ্পকে ডিফেন্ড করতে তো পারব না, কয়েকটা অন্য কথা লিখে যাই।

    ইতিহাস এবং স্মৃতি যে দিনের পারাবারে এসে মেশে, সেই পরিসরে আমার লিখতে কমফর্ট লাগে। কিন্তু সেটাও একটা পর্যায়ের পর গিয়ে মনোটোনাস হয়ে যেতে পারে। ইতিহাস কোথায় থামবে এবং স্মৃতি কোথা থেকে শুরু হবে, ফিউডালিজম ভাঙবে, ট্রেডিং ক্যাপিটাল মাথা তুলে দাঁড়াবে, অথবা সেই ফিউডালের প্রতিই আনুগত্য রেখে তাকে ভেতর থেকে ফাটাবে, এই দড়ি টানাটানির জায়গাটা আরবান এবং রুরাল দুই আলাদা ডোমেইনে আলাদা রকম হবে। শহর কলকাতায়, মূলত প্রান্তে, মানে মফস্বল যেখানে এখনো আলগা লেগে রয়েছে, এই ভাঙনটা হচ্ছে রিয়েল এস্টেটের হাত ধরে, আনলাইক লন্ডন বা প্যারিসের মত বড় শহরগুলো। জেমস ফ্রায়ারের লন্ডন স্মৃতিকথায় পড়েছি যে লন্ডনের প্রান্তবর্তী মফস্বলী অর্থনীতির মূলে কুঠারাঘাত করেছিল মাইগ্রান্ট ওয়ার্কাররা, মূলত শ্রমিক শ্রেণি। কলকাতায় সেটা না হবার অনেক কারণের মধ্যে একটা হচ্ছে এখানে শহুরে শ্রমিক শ্রেণির সঙ্গে আধা সামন্ততান্ত্রিক-আধা পুঁজিবাদী একটি দেশের গ্রামীণ অর্থনীতির যোগাযোগ অনেক বেশি নিবিড় (যে কারণে মুর্শিদাবাদ বা বসিরহাট থেকে আসা শ্রমিক সপ্তাহান্তে বলেন যে তিনি 'দেশে' ফিরছেন)।

    যাই হোক, এই রিয়েল এস্টেটের রাজনীতি নিয়ে রাঘব বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছিলেন 'অপারেশন রাজারহাট'। কিন্তু চলিত রাজনীতির বাইরেও একটা থাকে, ইতিহাসকে তার নিজস্ব পরিসরে দেখা, যার পলিটিকালি কারেক্ট হবার কোনও দায় নেই। দন কিহোতে স্বপ্নভঙ্গ হয়ে যখন শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন, সাংকো পাঞ্জারা বুঝেছিল যে একটা নতুন যুগ আসছে যেখানে 'নির্যাতিতের রক্ত সারা গায়ে মেখে দানবের মত নাচতে নাচতে' (উক্তিটা মার্ক্সের) নতুন একটা মতবাদ আসছে। কিন্তু তার পরেও রসেনান্তে তার শেষ লাফ দিয়েছিল। এবং বাস্তবে যদি নাও দিয়ে থাকে, তাহলেও দেওয়াটা উচিত ছিল। কলকাতা এবং গ্রামবাংলাতেও, আধা সামন্ততান্ত্রিক শোষণ বলা যাক অথবা সাবেকী মহাজনবৃত্তি , সুদ পাট জমির দালালীর প্রাচীন স্ট্রাকচারটি, সেটা ভেঙে গিয়ে যখন পুঁজিবাদ তার ফুল ফোর্সে আসতে থাকে, তখন পুরনো ফর্মের শোষণব্যবস্থাটিকে ফিরে পড়বার প্রয়োজন থাকে বলেই মনে হয়।

    গ্রাম এবং শহরের দুই ভিন্ন প্রেক্ষাপটে এই প্রসেসটা নিয়ে দুখানা আলাদা গপ্প লিখেছিলাম। একটা গুরুচণ্ডালীতে বেরিয়েছে, নববর্ষ সংখ্যাতে। আরেকটা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের বাংলা সংস্করণে বেরল গতকাল । সেটারও লিংক দিয়ে রাখলাম। এবার এই সাবজেক্ট নিয়ে লেখা শেষ। অনেক হয়েছে।

    https://bengali.indianexpress.com/literature/bengali-short-story-upanibesh-by-sakyajit-bhattacharya/
  • dd | 193.82.17.212 (*) | ২৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:১৬83677
  • শাক্যর ঐ ইন্ডিয়ান এক্ষপ্রেসের গল্পোটি দারুন লাগলো। শেষটা চমকপ্রদ।
  • h | 212.142.90.184 (*) | ২৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৬:২০83678
  • নানা ডিফেন্ড করার কি আছে ঃ-)))) কিন্তু আমার মূল আপত্তি টা ট্রান্সিশন সংক্রান্ত ছিল না। ইতিহাসের কাজ ই হল, ঐতিহাসিক দের মাঝে মাঝেই ভুল প্রমাণিত করা , আর পোলিটিকালি কারেক্ট হবার দায় আমি সাহিত্যে তো দূরস্থান প্রবন্ধেও পাই না। আশা করি তার প্রমাণ দেবার দায়, ঠিক সুপরিচিত প্রবান্ধিক না হলেও আমার আর নেই ঃ-)))) আপত্তি টা ছিল ইউরোপীয় টেক্স্ট এর উচ্চকিত ব্যবহার নিয়ে। আর আপত্তি টা ছিল আকার 'এই সব করলেই পারে' গোছের মন্তব্য টা নিয়ে, কারণ আমার মনে হয়েছিল, নানা প্রবন্ধে তোর যে বক্তব্যের কন্টিনিউইটি, সেটার থেকে গল্প কে আলাদা করে দেখা র কিছু নেই, আর আমি টিভিতে গাইতে পারি সুদু না, রেডিও তে নাচতেও পারি গোছের বৈচিত্রের একটা আকর্ষণ লেখকের থাকে, আমার মনে হয় নি, তোর লেখা এদ্দিন পড়ে, সেটার প্রয়োজনীয়তা তোর আছে। পোলিটিকাল বক্তব্যের যে কন্টেন্শন, বা বলা ভালো কমব্যাট পজিশন, সেটার থেকে সুখী পাঠকের মুক্তির আহ্বান হিসেবে কাহিনী রচনা কে দেখলে মুশকিল। স্কেল টা একেবারেই আলাদা হলেও, জনপ্রিয়তার স্বার্থে, পার্থ চট্টপাধ্যায় কে প্রগতিশীল শীর্ষেন্দু হয়ে জীবন কাটাতে হয়, সেটা দুঃখের। পাঠকের এই দাবী খুব অদ্ভুত। এবং আসলে সাহিত্যে চিন্তাহীনতাকে আস্কারা দিচ্ছে, ধরেই নেওয়া হচ্ছে সমাজ বদল তো ছেড়েই দিন, দার্শনিক অবস্থান নেবার ও প্রয়োজন নেই। তো এই জায়গায় ফাইট আছে, আ স্টোরি ইজ নট অ্যাবাউট ওনলি দ্য স্টোরি অর দ্য টেকনিক অ্যান্ড ইভেন দ্য সাকসেসফুল মেটাফর্স। লিস্ট অ্যাবাউট দ্য ট্র্যাডিশনাল মরাল পজিশন্স।

    আর গ্রাম, কৃষি ইত্যাদির সঙ্গে আমাদের দেশের শহর আর নাগরিকতার সম্পৃক্তি (কখনো নগর হল স্খলন গোছের বৈপরীত্যের চিহ্ন, কখনো কলকেতে নেবুতলার সঙের সাজের মত সেটা নগর গ্রাম আষ্টেপৃষ্টে বাঁধা। এগুলো তোকে নতুন করে বলার কিসু নেই ও। নতুন বিষয় না, সত্যি কথা বলতে কি, বিশের দশক থেকে এখন অব্দি রাজনৈতিক লেখালিখি সুদু না, সামাজিক উপন্যাসেও এইটেই বড় বিষয়। এই বৈপরীত্য আর বৈপরীত্যের প্রজেকশনের মত করে সম্পৃক্তি।

    আমার মূল আপত্তি টা ছিল প্রখ্যাততম ইউরোপীয় সাহিত্যের চিহ্নের ব্যবহার , আমাদের দেশের ভাষার কাজে, কতদূর সঙ্গত, বিশেষতঃ সেই প্রসঙ্গে কতটা গ্রহণযোগ্য, যেখানে স্মৃতি বনাম ইতিহাসের ছায়ায় একটা প্রাচ্য বনাম পশ্চিমের লড়াই আছে, আর তোর পশ্চিম কলকাতার মেমোয়ার টা এটাকে অ্যাড্রেস করেছিল। ইত্যাদি। ঠিক হ্যায়, সাক্ষাতে কথা হবে, মাকু মাকু তক্ক করে নকু কিংবা ফুসু ফুসু দের আনন্দ দিয়ে কি লাভ ;-)

    তোকে খানিকটা ড্র্যাগ করেছি এখানে, সরি।
  • শাক্যজিৎ | 52.110.143.79 (*) | ২৯ এপ্রিল ২০১৮ ০৭:০৪83679
  • এ বাবা, আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে তুমি ইউরোপিয়ান চিহ্নের ব্যবহারে আপত্তি করছ? যেখানে নভেল নামক শিল্পটাই ইউরোপ থেকে আমদানি, মানে এনলাইতেনমেন্তের ফসল? দন কিহোতের রেফারেন্সটা তো সেই কারণেই। দন কিহোতে মার্কড দ্য রাইজ অফ নিউ বুর্জোয়াজি এন্ড দ্য ডিমাইজ অফ দ্য ওল্ড স্ট্রাকচার। সেই কারণেই মিলান কুন্দেরা আর্ট অফ নভেলের একটা গোটা চ্যাপ্টার সার্ভেন্তেসকে দিয়েছিলেন।

    আর এখানে আবার আমরা ওরা কী? কমিউনিস্ট পার্টি নিয়ে দেবেশ রায়ের একটা লেখা ছিল, সত্যজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় উবুদশে আলোচনা করেছিলেন, খুব ইম্পরট্যান্ট লেখা। সেখানে দীপেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়দের রেয়ারেন্স টেনে টেনে দেবেশ দেখিয়েছেন যে কীভাবে কমিউনিস্ট লিটারেচার পাতায় পাতায় বিশ্বসাহিত্যকে রেফার করছে, এমনকি উৎপল দত্ত-র কল্লোল অবধি। এমনকি যে ননী ভৌমিক মানে যাঁর দুই পা পল্লীর কাদায় আবদ্ধ থাকত নাকি, তিনিও শেখভকে গল্পে স্থান দিচ্ছেন। তো, এটা তো হবারই কথা ছিল। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে মনসামঙ্গল যদি আমার ঐতিহ্য হয় তাহলে ডিলান থমাস কেন নয়?

    এর বাইরে রইল গল্পটা গল্প হিসেবে দাঁড়িয়েছে না দাঁড়ায়নি সেই প্রশ্ন। সেসব নিয়ে অ্যাবসলিউটলি কোনও বক্তব্য নাই। পাঠকের ভাল বা খারাপ লাগার ব্যাপার।

    হ্যাঁ, সামনা সামনি তর্ক হোক :)
  • h | 213.99.211.135 (*) | ৩০ এপ্রিল ২০১৮ ০৯:২২83680
  • "এর বাইরে রইল গল্পটা গল্প হিসেবে দাঁড়িয়েছে না দাঁড়ায়নি সেই প্রশ্ন। সেসব নিয়ে অ্যাবসলিউটলি কোনও বক্তব্য নাই। পাঠকের ভাল বা খারাপ লাগার ব্যাপার।" গল্প তো ভালো হয়েছে, কিন্তু সেটা কোন ইসুই না ঃ-))))

    তুই আমাকে বল, রাইজ অফ নিউ বুর্জোয়াজি সম্পর্কে গল্প পড়তে গেলে, লোকে সারভান্তেস পড়বে, না তারাশংকর পড়বে, না তোর এই গল্পটা পড়বে? প্যাঁক দিচ্ছি মনে করিশ না, কারণ ঐতিহাসিক মোমেন্ট তোর ধরার একটা ন্যাচারাল ক্ষমতা আছে বলেই বলছি।
    তুই বলতে পারিশ, সময়টার উপরে ডিপেন্ড করছে, দক্ষিন কলকাতায় তৃণমূল এর উত্তরণ নিয়ে গবেষণা করতে গেলে, আজ থেকে এক্শো বছর পরেও ফ্যাতাড়ু বোম্বাচাক পড়তে হবে, রাঘব বাবুর লেখা পড়তে হবে কলকাতার একস্প্যানশন ব্যাপারটা যে খুব শান্তিপূর্ণ ছিল না সেটা জানতে গেলে , এবং বিরোধীহীন সময়টা সম্পর্কে পড়তে হলে, কাকে পড়তে হবে, সেটা না হয় বোঝার সময় আসে নি, ইত্যাদি।

    নভেল জিনিসটাই ইউরোপীয় এটা যেমন ঠিক , নভেল শুধু ই ইউরোপীয় আর আবশ্যই নেই, এটা তোকে বলে দিতে হওয়ার কথা না। মিলান কুন্দেরা কে ঠিক এই খানেই কমব্যাট করা দরকার। ওনার মূল থিসিস টা কি, হাপসবার্গ এম্পায়ার এর যে আর্বানিটি, সেটাই ইউরোপীয় নভেল এর আর্বানিটি এবং মাইন্ডস্কেপ। এই করতে গিয়ে উনি কি করছেন, সম্ভবত টেস্টামেন্ট বিট্রেড এর একটা চ্যাপটার করে ফেলছেন, তেল আভিভে দেওয়া একটা বক্তৃতায়, ইজরায়েল কে ইউরোপের অংশ বলে দাবী করছেন। দুটো জিনিস জানা সত্ত্বেও, সেটা হল, ইজরায়েল স্টেট এর সেটলার নেচার, এবং তদুপরি, ইঅজরায়েল এর মধ্যে সেন্ট্রাল বা ইস্ট ইউরোপের ইহুদী অভিবাসী দের সঙ্গে বিশ্বের অন্য অংশের ইহুদী অভিবাসীর টেনসন। মিলান কুন্দেরা যতই ইউরোপ বলে চেচান, ইউরোপ এর অংশ ইজরায়েল এর সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলের বাবার ক্ষমতা নেই, এলিয়াস খৌরি র 'গেট অফ দ্য সান' লেখার মত, যেখানে কোমায় চলে যাওয়া এক বিপ্লবী কে তার ই যৌবনের কাহিনী বলে তাকে জাগানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে এক প্যালিস্তিনিয়ান যুবা নার্স, লেবাননের শাবরা শাতিলা রিফিউজি ক্যাম্পে বসে। সত্যের চেহারা টাই বদলে যাচ্ছে।

    উবুদশের প্রবন্ধটা আমি পড়ব। পড়ে বলব। কিন্তু রেফারেন্স আনা আর চিহ্ন ব্যাবহার এ পার্থক্য আছে। ধর নবারুন বাবুর দুর্বলতম কাজ আমার মতে মাসোলিয়াম। একদম হয় নি। কয়েকজন লোক কলকাতায় বসে, লেনিন এর মৃত্যু কে কেন্দ্র করে যে টোটালাটেরিয়ান স্টেট এর পরিস্থিতি সেটা কে নিয়ে আলোচনা করছে, এটা নিয়ে লেখা, একটা প্রবন্ধ কে উপন্যাস করে লিখে দেওয়া হয়েছে। নবারুন এর লেখায় প্রচুর বিশ্ব সাহিত্য থাকলেও, ঠিক সেগুলো ই সম্পদ হয়ে উঠেছে, যে গুলো শহরের ভূগোল কিম্বা সামাজিক অবস্থানের পরিসর চিনতে ও চেনাতে ভুল করে নি। এবং নবারুন বাংলার বাইরের বিভিন্ন স্থানের কনটেক্স্টে যে সব লেখা লিখছেন, তাদের ও জায়গা চেনাতে ভুল হয় নি। চিতা মানুষ গল্পটা তোর মনে থাকার কথা। ক্লিয়ারলি একটা পোস্ট গ্লোবালাইজেশন স্টীল অ্যান্ড গ্লাস সিটি নিয়ে লেখা।

    আমার পজিশন মোটামুটি এই, যে , ভাষা ঐতিহ্য অস্মিতা র গেম টা আমি যত বাজে রাইট উইং কিংবা উগ্র ভাষা ন্যাশনালিস্ট দের হাতে ছাড়তে রাজি নই, আর্বান স্পেস এর একটা সুবিধে আছে, বাধ্যতামূলক সহাবস্থান এক ধরণের ন্যারেটিভ নিজে নিজেই তৈরী করে নেয়, যেখানে প্লুরালিটি কে অস্বীকার করা মুশকিল, নেহাত উডি অ্যালেন গোছের সিংগল ট্র্যাক মাইন্ড না হলে। বিশেষত এই সময়ে। তাতে চিহ্ন ব্যবহারে সাবধানতা আনতে হলে ক্ষতি নেই। সম্ভবত ফ্রান্সে ইমিগ্রেট করা আফগান ঔপন্যাসিক আতিক রাহিমির কার্স অন ডস্তয়েভস্কি পড়েছিশ হয়তো। তাতে দেখা যাচ্ছে, একটা রাশিয়ান সাহিত্য পড়া ছেলে, রাসকোলনিকোভ এর মত দেনা আর মানসিক নানা অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে একটা খুন করছে। তার পরে সেন্ট পিটার্সবার্গে না হওয়ার কারণে, ৯০স এর কাবুলে ঘটনা ঘটার কারণে নানা কিছু ঘটছে। বইটা ভালো, কিন্তু বিষয়টা একটা আদতে লিটেরারি গেম, এবং গ্লোবালাইজেশনের পরে তৈরী নতুন পাঠক দের জন্য ই লেখা, যেখানে ফ্লিটিং এক্সপেরিয়েন্সটাই মূল এক্সপেরিয়েন্স। আমি যে একেবারে সিম্প্যাথেটিক নই এই পজিশন টার তা বলছি না, কিন্তু আমার পাঠক বা শখ কিম্বা আহ্লাদের লেখক হিসেবে প্রায়োরিটি আলাদা। এটা আমার মৃদু আপত্তি আছে, তোর টাতেও। আমার কাছে এটার থেকে বেশি ঢের সাকসেসফুল হল, ধর , চাঁদের অমাবস্যা। ওয়ালিউল্লাহ র লেখা। স্ট্রাকচার একেবারেই পশ্চিমি। কিন্তু থ্রিলার জিনিসটা কে যে বাংলার গ্রামে র প্রেক্ষিতে লেখা যায় সেটা দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন এমন ভাবে, এক নিঃশ্বাসে না পড়ে শেষ করা যাবে না, শুধু চিহ্ন নির্মানের উপরে নির্ভর করছে না, বাংলার অতি বাঙালি ধর্মীয় বুজরুকি ই থ্রিলার এ মূল ভিলেন। থ্রিলার এর অবশ্যম্ভাবী নয়ার আর্বান রিয়েলিটি কেই উল্টে দিচ্ছেন। গেম/খেলাধুলো হো তো অয়্সা। হ্যা তোর পক্ষের একটা সাকসেসফুল এক্সপেরিমেন্ট আমি পড়েছি, কিন্তু সেটাও ঐ ইউরোপিয়ান কন্টিনিউ আম এর মধ্যে নিজেকে রেখেছে, হিস্টরি অফ পোর্টেবল লিটেরেচার, এন্রিক ভিলা বা ভিয়া মাতাস। উচ্চরণ টা কি জানি না। তাঁর বক্তব্য হল, গ্রেট কাজ সব হয়ে গেছে, নতুন করে লেখার কিসু নেই, এখন লেখকেরা শুধু গোপন মিটিং এ ভিষণ সাবভার্সিভ ভাবে, বিভিন্ন সময়ের সাবভার্সিভ লেখা পড়বে, আর তার রেফারেন্স ব্যাবহার করে নানা সংকেত চিহ্ন উৎপাদন করবে, এবং সারা প্র্টিহিবীতে মিটিং অর্গানাইজ করাটাই, আর গ্রেট রা কে কে এলো তার হিসেব রাখাই এই কল্পিত মিটিং অর্গানাইজার দের কাজ। গল্পটা শুরুই হচ্ছে, লেনিন ভিয়েনার একটা ফ্ল্যাটে কাগোজ গুচুচ্ছেন, একটা এরকম কনফারেন্স অ্যাটেন্ড করবেন বলে, আশা করছেন নিমন্ত্রন পাবেন কিন্তু পাচ্ছেন কিনা জানা যাচ্ছে না ঃ-))))))))))))))))
    যাই হোক লেখা কেমন হবে, ফাইনাল কথা টা তুই ই বলবি, লেখাটা তোর। অসংখ্য এক্সপেরিমেন্ট ও করবি। একশো বার, কিন্তু শুধু গুড স্টোরি পড়ার জন্য আমি আধুনিক সাহিত্য পড়ি না।
  • h | 212.142.75.130 (*) | ০১ মে ২০১৮ ০৩:৫৫83681
  • বানান টা ভুল হয়েছে। এনরিক ভিয়া মাতাস।তোর হয়তো অনেক দিন আগেই পড়া। আমি ফিলোসোফিকালি চ্যালেন্জ করতে চাই কিন্তু দুর্দান্ত লাগছে এরকম লেখক , এন্টায়রলি বাই চান্স আবিষ্কার করেছি, একে একে পড়ছি, ধরে এনার সব ই পড়ব।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন