এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • উৎকর্ষ বলব ?

    জিগীষা ভট্টাচার্য লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ | ২৭৮৫ বার পঠিত
  • এন্ট্রান্স দেওয়ার সময় কলেজে ঢুকেই চোখ আটকেছিল স্লোগান আর পোস্টারে , কিছু মুছে দেওয়া, কিছু উঠে যাওয়া , কিছু আবার নতুন নতুন দাবির আড়ালে ঢাকা পড়ে যাওয়া । হাঁ করে দেখেছিলাম, এই সেই প্রেসিডেন্সি ! এইখানেই লোকে ধর্মপালনের মত করে রাজনীতি করে ! এই দাদা দিদিরা যারা প্রচণ্ড ব্যস্ত হয়ে এদিক ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছে এরাই কি তবে "ইউনিয়নের দাদা দিদি" !
     তারপর ভর্তির পর্ব , আবার অবাক চোখে কলেজ থুড়ি বিশ্ববিদ্যালয়টাকে দেখা । হেরিটেজ দেওয়ালগুলোর ওপর বড় বড় করে লেখা “RESPECT EXISTENCE OR EXPECT RESISTANCE” কখনো "একটি কুঁড়ি মাতাল হয়ে বারুদ গন্ধে ফুটবে কবে, সারা শহর উথাল পাথাল ভীষণ রাগে যুদ্ধ হবে . . . "  কখনো বা “হাল্লা বোল” সব মিলিয়ে তো রক্তচাপ একেবারে একশো আশি ছোঁয় ছোঁয় ! তখন কে জানত পিকচার আভি বাকি হ্যায়! বলিউড ফিল্মে যেমন স্টুডেন্টরা পড়াশুনো ছাড়া বাকি সবকিছু করে বেড়ায় তেমনি এখানেও ছাত্র রাজনীতিতে ইলেকশান ছাড়া আর সবকিছু অ্যালাউড।সবই নাকি উৎকর্ষের কেন্দ্র হয়ে ওঠার জন্য !
    কেলাস শুরু, সবে দু’মাস হল স্কুলছুট আমার কলেজলাইফ শুরু । কলেজের প্রতিটা খিলান, সিঁড়ি, করিডোর আমার সঙ্গে এক ঝুলি গল্প করে, কান পাতলেই শুনতে পাই নব্যবঙ্গীয়রা খলবল করছে,বন্ধুরা ব্রেকে বেশি চেঁচামেচি করলে মনে হয় এই বুঝি মেন বিল্ডিং এর কোনা থেকে আচার্য জগদীশ বসু ধমক দিলেন, তার যে এখনও বেতার তরঙ্গের গবেষণা চলছে ! আরেক বসু সুভাষচন্দ্র এই বুঝি দেশপ্রেমের চোটে মেন বিল্ডিঙের সিঁড়ি থেকে এক লাথি মারছেন অধ্যাপক ওটেন সাহেবকে ! আর সেই চিরবৃদ্ধ প্রফুল্ল চন্দ্র, কেমিস্ট্রি ডিপার্টমেন্টের একটা মেয়ে তো সে বুড়োর প্রেমে পড়েছে ! কী মুশকিল !
     
    যাই হোক ! একে একে সেই 'ইউনিয়নের’ দাদা দিদি দের সঙ্গে আলাপ হতে শুনলাম , ওম্মা ! ইউনিয়নই নেই, আর ইউনিয়নের দাদা দিদি! জাঙ্গিয়ার আবার বুকপকেট! তো যাই হোক সেই ইউনিয়ন করা সিনিয়রদের থেকেই গল্প শুনি হাঁ করে (আসলে আমি বড্ড হাঁ করা, নইলে কলেজে বারিস্তার আউটলেট দেখে হাঁ করি!) ইউনিয়ন থাকার সময় কলেজটা কেমন ছিল . . . ঠিক ফিল করে উঠতে পারিনা । আমরা ফার্স্ট ইয়াররা কেউই এটা পারিনা খুব, অভ্যস্ত হয়ে গেছি তো, এই দু বছরে, দিব্যি চলছে কলেজ থুড়ি ইউনিভারসিটি , শুধু ফেস্ট টা হচ্ছেনা এই যা দুঃখু সবার । কিন্তু সত্যিই কি তাই? আমাদের ক্লাসরুমের সমস্যা একইরকম, একটা উড বি ওয়ার্ল্ড ক্লাস ইউনিভারসিটিতে নেই কোনও সস্তা ক্যান্টিন, নেই সস্তা খাতাবইয়ের দোকান , নেই স্টুডেন্টদের জন্য ইন্টারনেটের সুবিধা . . . এরকম গাদা গাদা নেই-এর খবর একটু এদিক ওদিক কান পাতলেই পাওয়া যায় । এদিকে কথা নেই বার্তা নেই চলছে নতুন প্রফেসর নিয়োগ ও পুরনো প্রফেসর বদলি । তাও আবার ডেমো ক্লাস না নিয়ে, আর এই প্রফেসরদের ‘এক্সেলেন্স’ নিয়ে কানাঘুষো তো ইউনিভারসিটির আনাচে কানাচে! শুনছি লাগু হবে CET(Common Entrance Test) । নিজের home university-তে স্নাতকোত্তর পড়ার সুযোগ আর থাকবে না ।  তার ওপর এই পরীক্ষা নাকি হবে MCQ । আমি , এক ইঞ্জিরি অনার্সের ছাত্রী প্রশ্ন পাবো, কিটসের পুরো নাম কি? জন , মদন নাকি আরাবুল !  তাই নিয়েও ধোঁয়াশা । সবার অজান্তে বসছে প্রাইভেট গার্ড , হেরিটেজ বিল্ডিঙের বিউতিফিকেশানের ঠ্যালায় ঘষে ঘষে পোস্টার তুলে দেওয়া দেওয়ালটার গায়ে ঝলমল করছে আলোর মালা, আরও কত কি! ছাত্রদের কোনও অফিশিয়াল বডি নেই, ফলে জানার উপায়ও নেই । কখনও statute body, কখনও সংঘর্ষের ভাঁওতা দেখিয়ে স্থগিত রাখা হচ্ছে নির্বাচন । পাঠানো হচ্ছে এমন সার্কুলার যার কোন ভিত্তিই নেই । সজ্জনে বলে সবই নাকি উৎকর্ষের কেন্দ্রস্থান হয়ে ওঠার জন্য, সবই নাকি মেন্টর গ্রুপের দয়া , আর নিন্দুকে বলে এসবের কারণ নাকি এই আট বিঘের ক্যাম্পাসে ঘাসফুলের ছিটেফোঁটাও না দেখা যাওয়া! এদিকে বছর বছর স্টুডেন্টদের থেকে নেওয়া তিনশো টাকা ইউনিয়ন ফীজ কোন ভাঁড়ারে জমা হচ্ছে তা প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী (!) বাবা বিবেকানন্দই জানেন!
     রাজ্য সরকার বলেছে উচ্ছৃঙ্খল ছাত্র আন্দোলন । তাই নাকি নির্বাচন বন্ধ । দুঃখজনক হলেও সত্যি, রাজ্যের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মদতপুষ্ট ছাত্র সংগঠন দুটির সংঘর্ষে এবছরে আহত যদি অন্তত তিনহাজার জন হয় তবে প্রেসিডেন্সির দশ বছরের ছাত্র সংঘর্ষে আহত টেন্ডস টু জিরো । তেলের শিশি ভাঙল বলে খুকুর পরে রাগ কর, তোমরা যে সব বুড়ো খোকা ভারত ভেঙে ভাগ কর তারবেলা ?!
     সে হনুমানও নেই, সে কলাও নেই । ফলে, অনভ্যস্ত ফার্স্ট ইয়ার আমাদের পক্ষে বুঝে ওঠা সত্যিই কষ্টকর যে ইউনিয়ন না থাকা মানে দিন দিন আমাদের কথা বলার ন্যূনতম অধিকার চলে যাওয়া । প্রেসিডেন্সির ছাত্র আন্দোলনের ঐতিহ্য সাতচল্লিশ থেকে সত্তর পেরিয়ে আজও প্রাসঙ্গিক,  তাকে রক্ষার দায় যদি নাও বোধ করি, তাও, নিজেরা হেসেখেলে নিজেদের ক্যাম্পাসটায় বেঁচে থাকার জন্যই বোধয় একটা সুস্থ স্টুডেন্ট’স বডি প্রয়োজন । যা হচ্ছে হোক যদি চলতে থাকে , তেমন হাল হবে নাতো ,  নীম্যোলার যেমন বলে গেছিলেন , ওরা যখন ধরতে আসবে তখন কেউই থাকবে না যে প্রতিবাদ করবে . .
    এইসব সাতপাঁচ ভেবে সময় নষ্ট না করে কিছু একটা করে ফেলা দরকার এটা আমাদের সবারই মনে হচ্ছিল । তার ফলাফল হিসেবেই প্রেসিডেন্সির ছাত্রছাত্রীদের একাংশের তরফ থেকে দীর্ঘকালীন ধর্না , ভিসি , রেজিস্ট্রার, ডিনকে ঘেরাও, অবস্থান ইত্যাদির পর আশ্বাস মিলল বহু প্রত্যাশিত ছাত্র নির্বাচনের , মনের আনন্দে জমা দিলাম সমস্ত নমিনেশান । ক্যাম্পাসে ইলেকশানের আবহাওয়াই আলাদা, আই.সি , এস.এফ.আই , ডি.এস.ও সব্বাই প্যানেলের নমিনেশান দিতে আর পোস্টার মারতে ব্যস্ত , সব মিলিয়ে একদম হইহই কান্ড , রইরই ব্যাপার !
     
     এর মধ্যে হঠাৎ হরিমোহন কলেজে বহিরাগতদের হাতে পুলিশ খুন এবং স্বপনকুমার সিরিজের হিরোর ন্যায় কোথা হইতে কী হইয়া গ্যাল, ব্রাত্য বলিলেন সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইলেকশান বন্ধ । কি সুচতুরভাবে একটা ঘটনা, যা আবার আদৌ “ছাত্রছাত্রীদের” হাতে হয়নি তার উপর দিয়ে এই নির্দেশ পাস করিয়ে নেওয়া হল সেটা বুদ্ধিমান পাঠকপাঠিকাই ভেবে দেখুন! এক ঢিলে দুই পাখি – খুনিকে ছাত্র বলে চালিয়ে দিয়ে পার্টির ঘাড় থেকে দায় ঝেড়ে ফেলা এবং একইসাথে জনমানসে ছাত্ররাজনীতি শব্দটিকে আরও ভীতিপ্রদ করে তোলা যাতে ছাত্রদের কথা বলার অধিকার শেষ হয়ে যাচ্ছে দেখেও লোকে বলবে যা হচ্ছে ঠিকই হচ্ছে  । ভাবলে অবাক লাগে , মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী প্রেসিডেন্সির প্রাক্তনী , আই.সি-র প্রাক্তনী !
     হরিমোহন কলেজের ছবিই ছাত্ররাজনীতির একমাত্র ছবি নয়, পাওয়া-পাইয়ে দেওয়ার দুর্নীতির আর বোমা-গুলি দিয়ে এলাকা দখলের দলীয়তার বাইরেও ছাত্ররাজনীতি সম্ভব , ইউনিয়ন না থাকলে সত্যিই আমরা পিছিয়ে পড়ব । উঠে যাবে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান , ফেস্ট । উঠে যাবে কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে আমাদের বক্তব্য রাখার প্ল্যাটফর্ম । উঠে যাবে ছোট ছোট পত্রপত্রিকা, ফটোগ্রাফি , নাটক, ব্যান্ড ইত্যাদির প্রয়াস । প্রেসিডেন্সিতে গত তিনবছর ধরে যে অরাজকতা চলছে, যেকোন নতুন প্রয়াস নিতে গেলেই আমাদের নির্ভর করতে হয় ফ্যাকাল্টিদের দয়াদাক্ষিণ্যের , ফেস্ট উঠে গেছে, মূলধনের অভাবে উঠে গেছে একরাশ গ্রাফিটি , পথনাটক, ফোকব্যান্ডের সবে ডানা মেলা প্রচেষ্টা – সমস্ত কলেজ ইউনিভার্সিটিগুলিরই এক দশা হবে । এর হাত ধরে ঢুকবে আই কার্ড চেকিং , সিসিটিভি । এই প্রচেষ্টা শুরুও হয়ে গেছে , মিডিয়ার হাত ধরে বারবার সামনে আনা হচ্ছে বেসু, লোরেটো , জেভিয়ারসের ক্লাস মনিটর মডেলকে । মগজে ঠুকে ঠুকে ঢুকিয়ে দেওয়া হচ্ছে ছাত্রছাত্রী মানেই অধ্যয়নং তপঃ , পরিক্ষায়নং তপঃ , চাকরিয়নং তপঃ । তারা আবার রাজনীতি করবে ? ভাববে সমাজ-সমকাল নিয়ে ? রামঃ !
                         
     এর পরেও আমরা কথা বলব, এর পরেও দেওয়ালগুলো স্লোগান শিখবে, এর পরেও আমরা গান বাঁধব , পুরনো বাড়িটা জুড়ে ছবি আঁকব , এরপরেও আমরা পথে নামব, এরপরেও কথা বলতে দেওয়ার দাবিতে আমাদের আন্দোলন চলবে, প্রেসিডেন্সির সঙ্গে যাদবপুর সহ বাকি কলেজ- ইউনিভার্সিটিগুলির আন্দোলনের মিলিত অগ্রগতি হোক । ঊনিশ তারিখ  প্রেসিডেন্সির ছাত্রছাত্রীরা দল বেঁধে বিকাশভবনে গিয়েও শিক্ষামন্ত্রীর দেখা পায়নি, জমা দিয়েছে ডেপুটেশন । ইতিমধ্যে কলেজ-ইউনিভারসিটিতে পাঠানো নির্দেশিকার “উপদেশ” পর্যবসিত হয়েছে ফতোয়ায়, যা না মানা হলে উপযুক্ত “ব্যবস্থা” নেওয়া হবে , নামানো হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অটোনমির উপর সরাসরি আঘাত । এই একুশে আইনের বিরুদ্ধে ছাত্রছাত্রীদের পথে নামা ফলপ্রসূ হবেই । কাউকে কিছু পাইয়ে দেওয়ার জন্য নয়, আমাদের প্রত্যেকের স্বার্থেই আরও জোরদার আন্দোলন দরকার ।  ইয়ে আজাদি জো তুম না দোগে, হাম ছিনকে লেঙ্গে !
     


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ | ২৭৮৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • ladnohc | 116.209.247.103 (*) | ০৩ এপ্রিল ২০১৩ ০২:০৫77434
  • ছাত্ররাজনীতির সাথে আই-কার্ড্, সিসিটিভির বিরোধ কোথায় সেটা বুঝছি না। নাকি বাইরের লোক আমদানি না করলে ছাত্ররাজনীতি অচল, তাই আই-কার্ডতে সমস্যা! আর সিসিটিভি নিশ্চ​য় ছাত্রদের ঘরে বসানো হচ্ছে না, বসানো হচ্ছে ক্যাম্পাসে, এতেই বা আপত্তি কেন​? শহরতলীর বেশ কিছু কলেজে ছাত্ররাজনীতি, আই-কার্ড্, সিসিটিভি পাশাপাশি র​য়েছে, কোনো প্রবলেম নেই।
  • anirban | 214.28.113.180 (*) | ০৭ এপ্রিল ২০১৩ ০৪:২৭77436
  • খুব ভালো লেখা, জিগীষা। মতামত দেওয়ার অধিকার, ভাবনা-চিন্তা করার অধিকার, অ্যাকটিভিজমের অধিকার অবশ্যই থাকা উচিত। এই অধিকার জোর করে কেড়ে নেওয়াই অন্যায়। যেখানে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের, মতের বাইরে বেরিয়ে ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের মত করে সংগঠিত হচ্ছে, তা খুবই ভালো এবং সুস্থ ব্যাপার। এর সংগে পড়াশোনার কোনো বিরোধ নেই। এবং ঘটনা হল, যাদবপুরে ছাত্র-আন্দোলনের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আন্দোলনকারী ছাত্ররা পড়াশোনা করে না - এটা তথ্যগতভাবে এক্দমই ঠিক নয়। প্রাপ্তবয়স্ক ছাত্র ছাত্রীরা কিভাবে ভাববে, আর কি ভাবে রাজনীতিতে অংশ নেবে, সেটা তারাই ঠিক করবে। বাইরে থেকে কোনো গুরুঠাকুরের বিধান দেবার দরকার নেই।
  • শুদ্ধ | 127.194.225.166 (*) | ০৭ এপ্রিল ২০১৩ ০৪:২৯77437
  • একক, না না। ডাক-টাক কিচ্ছু দিচ্ছি না। আপনার কথিত রোগগুলো তো আছেই। তাছাড়া আমার-ও এখন হাঁটুতে ব্যাথা। হা হা হা হা হা...

    জিগীষা, আরো লিখুন। সম্ভব হলে নানা অবস্থার ছাত্রদের রাজনীতি ও অন্যান্য সমস্যা নিয়ে লিখুন। শহরে, মফস্বলে, গ্রামে ছাত্ররাজনীতির চেহারাগুলোর ফারাক ও সম্ভাবনা-সমস্যা নিয়ে লিখুন। একটা অংশ বলবেনই ছাত্র রাজনীতি চাই না। তাঁদের এই বলার জন্যই সিস্টেম তৈরী করা হয়েছে, এভাবেই তাঁরা শিখেছেন, তাঁদের শেখানো হয়েছে। রাজনীতিতে সর্বত্র সমস্যা আছে।, তাই রাজনীতি তুলে দিতে হবে কিনা জানতে চাইলে এঁরা বলবেন হ্যাঁ, তুলে দিন। ভাববেন না যে তাহলে বিকল্প কি পরে রইলো? রাজনীতি বাদে রাষ্ট্র চলে নাকি? নাকি আপাত রাজনীতিহীন রাষ্ট্র মানে একদলীয় শাসন আসলে। মাথা ব্যাথা হলে মাথা বাদ দেওয়াই সমাধান এখানে। এটা তাঁদের শেখানো হয়েছে সযত্নে, সুকৌশলে। তাঁরাও বন্ধুমানুষ। আমার অন্তত রাগ হয় না তাঁদের উপরে।

    সিসিটিভি (আই কার্ড ৮০তেও ছিল) বসানো হয়েছে বেশ কিছু প্রাইভেট কলেজে। সেখানে ছাত্রভর্তি নেওয়া হয় যখন তখন বলা হয় ক্যাম্পাস করে চাকরী হয়ে যাবে। তারপরে যখন স্বাভাবিক ভাবেই হয় না তখন ছাত্ররা বিক্ষোভ দেখালে প্রাইভেট নিরাপত্তারক্ষীরা শূণ্যে গুলি চালাতেও পারেন। জোকার এক কলেজে এমন হয়ছিল কিছু বছর আগে। মালিক তখনকার মুখ্যমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ এক ব্যাবসায়ী। অতএব তদন্ত হয়নি। আমার পরিচিত কিছু ছেলে ছিল সেখানে। বহু বছর পরে তার জন্য ময়দানে নেমেছিলাম। আলিমুদ্দিন থেকেই সেদিন এক দল মানুষ পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। বেয়াড়া বজ্জাতি সামলানো গেছিল। নীতি অবশ্য তাতে বদলায়নি। তার কয়েক বছর পরে দুর্গাপুরে আবার রাত্রে কলেজ মালিকের গুণ্ডারা ছাত্রদের হস্টেলে ঢুকে কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে ছাত্রদের বলে গেছিল কোনো বিক্ষোভ না। ক্যাম্পাস না হলে না হবে। কথা বললে দুর্গাপুর থেকে জ্যান্ত বেরোবে না। সে মালিক আবার চ্যানেল ব্যবসায়ীও। এক তখনকার মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ। ফলে খাপসুরত জমেছিল সে সব খেল।

    এখনো হচ্ছে এমন। উত্তরবঙ্গের প্রাইভেট কলেজে কলেজে কান পাতলেই জানা যাবে। দক্ষিণবঙ্গেরগুলো বেশীই পুরোনো দলের, তাই একটু চুপচাপ। দু একটা গোলমাল হয়। এই গত বছর যেমন দক্ষিণ বঙ্গের দক্ষিণতম প্রান্তের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মাতাল ডিপার্টমেন্ট হেড, তাঁর এক ছাত্র লক্ষ্ণৌতে এক সেমিনারে তাঁকে রাত্রে মদ্যপ অবস্থায়, মারদাঙ্গা করা অবস্থায় জোর করে রুমে ফিরিয়ে এনেছিল বলে তার পেপার আটকে দেবেন, তার ডিগ্রী আটকে দেবেন বলে ফিরে এসে হুমকি দিয়েছিলেন। তখন ইদানীং দাপুটে শিক্ষা সেল কথাটি বলেনি। তারপরে এদিক ওদিক চাপ পড়ায় কিছু হয়েছে। তবে এসব তো খবরের বিষয় কোনোকালেই নয়। তাই লিঙ্ক থাকে না। এঁরাও জানেন না। এসব কথা লিখুন। সিসিটিভি কেন বসে তার কথাটা একটু খোলসা হোক! কি নজরে রাখতে আর কি কাজে বসে সে সব। এবং ঠিক কোন সময় সে সব ফুটেজ অদৃশ্য হয়ে যায় সে কথাও একটু হোক।

    @ বিদগ্ধজনঃ এই যা সব লিখছি এসব আসলে গল্প কথা। সত্যি বলে ধরে নেবেন না যেন। আমি আসলে বানিয়ে বানিয়ে লিখতে খুব ভালবাসি। যা যা লিখি সব সাজানো ঘটনা। হা হা হা হা হা...
  • pi | 78.48.231.217 (*) | ০৭ এপ্রিল ২০১৩ ১০:০৮77438
  • জোকা আর দুর্গাপুরের সেই কলেজগুলোর এখন কী অবস্থা ?
  • ম্যাক্সিমিন | 69.93.201.118 (*) | ০৭ এপ্রিল ২০১৩ ১০:৪৭77439
  • এটা কি টই না বুবুভা?
  • s | 182.0.249.87 (*) | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০১:০৯77440
  • আবার য্দুপুর। এবার অন্দোলন র‌্যাগিংয়ের শাস্তি মকুব করার জন্য।
    http://www.anandabazar.com/20cal1.html
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন