এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • সাধু কালাচাঁদ, ট‍্যাঁপা-মদনা, পটলা ও রুনু

    কুশান গুপ্ত লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৪৫৮১ বার পঠিত
  • 'ভালো লাগছে না রে তোপসে' বা 'ডিলাগ্রান্ডি' বললে বাঙালি মননে এক ধরনের রিফ্লেক্স অ্যাকশন কাজ করে যেন। ফেলুদা/তোপসে, টেনিদা, ঘনাদা ইত্যাকার নামগুলি বাঙালির আড্ডার স্বাভাবিক উপাদান। এই অনুষঙ্গগুলি দিয়ে বাঙালি তার হিউমারের অভ্যাস ঝালিয়ে নেয়, কিছুটা আক্রান্ত হয় নস্টালজিয়াতেও।

    তবে, এইসবের মধ্যে বাল্যবেলায় পড়া কিছু কিশোরচরিত্ররা হারিয়ে গেছে, কিছুটা উপেক্ষিতই যেন তারা। ক'জন আর নগণ্য সাধু কালাচাঁদকে মনে রেখেছে? ট্যাঁপা-মদনা বললে আমরা ক'জনই বা সহসা আবার ক্লাস ফোরের পূজাপ্রাক্কালে চলে যাই? এইসব চরিত্ররা আমাদের কিশোরবেলায় ছিল, সেই নিরুপদ্রব সময়ে, যখন আমরা ততটা ফারাক করতে শিখিনি লেখকে-লেখকে। গোগ্রাসে ছড়িয়ে থাকা বঙ্গভান্ডারের বিবিধ রতন তথা নানাবিধ পত্রপত্রিকা নির্দ্বিধায় চেটেপুটে নেওয়ার বেখাপ্পা বয়স তখন। সেই তখন, বহুশ্রুত কাকাবাবু-সন্তুর পাশাপাশি শক্তিপদ রাজগুরুর নগণ্য পটলা কিভাবে যেন অতিপরিচিত মাসতুতো ভাই হয়ে উঠেছিল। এই লেখায় সংক্ষেপে মনে করিয়ে দিতে চাই কয়েকটি ততটা-আলোচিত-নয় চরিত্র। বিস্মৃতির অতলে যারা রয়ে গেল, প্রিয় পাঠক, নিঃসঙ্কোচে তুলে আনুন সেই সব অক্ষরে গাঁথা নুড়ি-পাথর। তাই, আপনারাও লিখুন, এই প্রসঙ্গে যা যা মনে পড়ে। এই লেখা এই বাচাল গদ্যকারের অন্য ভুলভাল লেখার মতই, মূলত স্মৃতিনির্ভর। সন্দীপন তো বলেইছেন, স্মৃতির নির্বাচন ও প্রত্যাখ্যান নিজস্ব নিয়মে চলে, এখানে আমরা কিছুটা অসহায়। তাই যা যা মনে পড়ছে খুব সংক্ষেপে একে একে লিপিবদ্ধ করছি।

    প্রথমেই মনে আসছে সাধু কালাচাঁদের কথা। এই চরিত্রটি শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় অনন্য বয়ানে বুনেছেন। হতকুচ্ছিত, ক্লাস সেভেনের, কালাচাঁদের গায়ে এমনকি মারকিউরোক্রোম লাগানো খোস পাঁচড়াও রয়েছে; কোনো বিশেষ মেধা, কোনো গরিমাই নেই, অথচ কালাচাঁদ যেন এক মূর্তিমান বিপজ্জনক অ্যানার্কির ফ্যাতাড়ু। চৌবাচ্চার ফুটো থেকে জল বের হওয়ার দুরূহ অঙ্ক সলভ করতে ব্যর্থ হয়ে সে গোপনে স্বকল্পিত এক্সপেরিমেন্টের আশ্রয় নেয়। ঘড়ির টাইম ধরে স্কুলের জলের ট্যাঙ্কের তলার ফুটো সবার অগোচরে খুলে দেয় সে, অঙ্কের উত্তর মেলাবে বলে। সারা স্কুলকে সারাদিন তৃষ্ণার্ত রেখে শেষে জোটে হেডমাস্টারের অবধারিত ধোলাই। বাবার হাতে, মায়ের হাতে অকাতরে মার খায় কালাচাঁদ, কিন্তু তার একরোখা জীবনীশক্তি জাগিয়ে রাখে এক নিরুদ্দিষ্ট ভুবন, সেই ফেলে আসা স্কুলে নিলডাউন হওয়ার, বেঞ্চের ওপর কান ধরে দাঁড়ানোর প্রহর, সেই রুগ্ন ও অকিঞ্চিৎকর কৈশোর, যা ধরা নেই কোনো জাগতিক ফোটোগ্রাফে।

    স্মৃতিই ব’লে দিলো, সম্ভবত ১৯৮০ সনের পুজোবার্ষিকী আনন্দমেলায় প্রকাশিত হল আশাপূর্ণা দেবীর 'গজ উকিলের হত্যা রহস্য'। সম্ভ্রান্ত সমাজ থেকে দূরে অন্ধকারজগতের দুই কিশোর ‍ট্যাঁপা মদনার অবিশ্বাস্য আবির্ভাব ঘটল। তারা যেন তাদের প্রখর ইনটুইশন ও বাস্তবতার সম্যক ধারণা থেকে ধরে ফেলতে পারল সামাজিক অপরাধের স্বরূপ, প্রকৃত আততায়ীর ঠিকানা। এক সহৃদয় ব্যক্তির বদান্যতায় তারা সমাজের মেইমস্ট্রিমে আসতে পারল, ঘটল আলোকপ্রাপ্তি। ১৯৮১-পুজোতে আশাপূর্ণা লিখলেন ' ছুটিতে ছোটাছুটি'। ট্যাঁপা মদনা এবার ধরে ফেলল এক দুর্বৃত্তের কারবার। এই দুর্বৃত্ত, ডাক্তারের ছদ্মবেশে, নিরীহ মানুষকে প্রথমে বিচিত্র পদ্ধতিতে উন্মাদে পরিণত করত, ল্যাবরেটরিতে পুরে রাখত, এবং ব্যবসা চালাত। কোনমতে পড়াশুনো জানা ট্যাঁপা-মদনার চরিত্রেও বলবার মত বুদ্ধিদীপ্ত গরিমা ছিল না, কিন্তু ছিল সহৃদয় মানবিকতা, সেই নৈতিকতা, যা প্রান্তিকদের সহজাত। এক সহজিয়া বাস্তববোধ থেকেই তারা ধরে ফেলতে পেরেছিল অপরাধীদের।

    কিন্তু, পরে আর কোথাও ট্যাঁপা-মদনার কাহিনী চোখে পড়ে নি।

    শক্তিপদ রাজগুরুর পটলা পঞ্চপান্ডব ক্লাবের কর্ণধার। সে তোতলা এবং অসম্ভব হুজুগে। তাকে কখন কোন হুজুগে ধরে, সেই কাহিনীগুলিই বিবৃত করেছেন লেখক। সেই হুজুগ ভাঙাতে অসমর্থ হয় বাকি সদস্যরা। একটা গল্প বেশ মনে পড়ছে। পটলাকে নাটকের হুজুগে ধরেছে। সে স্ক্রিপ্টরাইটার, পরিচালক তথা নায়ক। উত্তম পুরুষে লেখা আখ্যানের কাহিনীকার, পঞ্চপান্ডবেরই একজন, পটলার বাড়িতে গিয়ে দেখছে পটলা স্বরচিত নাটকের স্ক্রিপ্টের অংশবিশেষ আবৃত্তি করে চলেছে, কিছুটা গানেরই ঢঙে:

    "কার ঋণ, কিসের ঋণ?
    তোমাদের ঋণ দেবোনা,
    তোমরা সুদখোর, পিশাচ, কসাই"

    বন্ধুরা, এই অংশটি পড়ে, তোতলা পটলাকে দৃশ্যায়িত করে, ক্লাস সেভেনে এতটাই আলোড়িত হয়েছিলাম যে, স্বরচিত এক হাস্যকর সুরে এই অংশটি চুপিচুপি গাওয়ার চেষ্টা করতাম। এবং এই পটলাপ্রয়াস ধরা পড়ে যাওয়ার পর নিজের দিদির উপহাসের পাত্র যে হতো, সে পটলা নয়, এই অধম গদ্যকার, যার বয়েস তখন বারো তেরো।

    রকমারি শারদীয়া কিশোর ভারতীর দৌলতে এক আশ্চর্য কিশোরের সাক্ষাৎ পেয়েছিলাম, যার নাম রুনু। মধুমতী নদীর তীরে পুব বাংলার মাজেদিয়া না কি যেন একটা গ্রাম। আশ্চর্য গ্রামীণ ও সহজ জীবন ফুটে উঠেছিল রুনুর আখ্যানসমূহে। নিতান্ত সাধারণ পরিবারের জাতিতে নমঃশূদ্র রুনু আস্তে আস্তে বড় হচ্ছে, চিনছে গ্রাম থেকে গঞ্জ, গঞ্জ থেকে শহরে বড় হচ্ছে তার বৃত্ত। পারিবারিক বন্ধন ছাড়িয়ে অনাত্মীয়ের বন্ধন কত ব্যাপক হতে পারে, কি অপরূপ হতে পারে ওপার বাংলার নদীবাহিত গ্রামীণ লোকজীবন, তার বিবরণ দিতেন শ্যামাদাস দে নামের এক অপরিচিত লেখক। মনে পড়ছে রুনুর লেখা কৈশোরের ছড়া:

    "আমাদের ছাগলের তিনখানি বাচ্চা:
    একআনি, দুয়ানি আর রুক্মিণী নাম।
    ঘাস খায় কম কম, দুধ দেয় সাচ্চা।
    ছাগলের মধুমতী নাম রাখিলাম।"

    মনে পড়ে গেল রুনুর এক বাল্যসখী ছিল, যার নাম ছিল চুয়া, যার কথা ভাবলেই সেই তেরো বছরেও ঈষৎ বয়স-অনুচিত প্রেম পেয়ে বসত। রুনুশীর্ষক অন্তত পাঁচটি উপন্যাস পড়েছিলাম, যা মায়াময় ও সজল।
    এই মায়াময়তা পেয়েছিলাম বুদ্ধদেব গুহর 'ঋভুর শ্রাবণে'। সেই প্রকৃতির কন্যা বুলবুলি, যে ঋভুকে অবলীলায় বলে, ' বড়লোকের পু, তোর মুখে মারি ছু।' ঋভুর শ্রাবণ পড়ে যদি বুলবুলিতে মায়া না পায় তবে আপনি মরমী পাঠক নন। ঋভুর শ্রাবণ আমাকে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর পড়ার সমতুল্য অভিজ্ঞতা এনে দিয়েছে। ঋভুর অন্যান্য উপন্যাস লেখা হলেও তা 'ঋভুর শ্রাবণ' তুল্য হয়নি। আহা, লিখতে লিখতেই লেখাটির সঙ্গের মায়াবী ইলাস্ট্রেশন মনে পড়ে গেল।

    এবং মনে পড়ে যাচ্ছে দীনেশচন্দ্রের ভাবা, সমরেশ বসুর গোগোলের কথা। পাশাপাশি মনে পড়ছে আশুতোষের জমাটি পিন্ডিদার কাহিনীগুলো, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের রুকু সুকু, প্রফুল্ল রায়ের কাবুল আর টাবুল, এরকম নানান ধরনের চরিত্র।

    এতগুলো চরিত্রের কথা মনে রয়ে গেছে কারণ সত্তর ও আশির দশককে বাণিজ্যিক মনোপলি ও হেজিমনির ব্যারাম বাংলা সাহিত্যকে পুরোটা গ্রাস করতে পারেনি। এই দুই দশক বেদম ফাইট দিয়েছে হরেক কিসিমের পত্র পত্রিকা ও শারদসম্ভার, নানান বৈচিত্রের লেখক লেখিকাদের নিয়ে। যে চরিত্রদের কথা লিখলাম তারা স্বতন্ত্র উপন্যাস ও কাহিনীর অংশ হলেও এই গদ্যকারের কাছে তারা যেন রকমারী পত্রপত্রিকার বাগানে অন্যান্য গাছ গাছালির সঙ্গে মিলেমিশে থাকা স্বাভাবিক গুল্ম ও বীরুৎসমূহ, যাদের স্বকীয় পত্রপুষ্পবিন্যাস সনাক্ত করতে কোনোদিনই সমস্যা হয়নি।

    সেই কৈশোরের আপাতঅপ্রতিভ, নিতান্ত এলেবেলে চরিত্রগুলি ছিল আসলে আমাদের মতই নিষ্প্রভ ও গরিমাহীন, কিন্তু তারা ঠিকানা দিয়েছিল কোনো-গন্তব্য-নেই এমন এক তুমুল নিরুদ্দেশের।

    (কৃতজ্ঞতা: স্বর্ণেন্দু সেন)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৬ ডিসেম্বর ২০১৮ | ৪৫৮১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • pi | 4512.139.122323.129 (*) | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:২৪65239
  • সেজন্যই তো প্রশ্নটা ছিল,এই বইগুলো পেলে এখনকার বাচ্চারা তাহলে পড়বে ?
  • কুশান | 238912.66.2312.239 (*) | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:০৮65240
  • Pi পড়বে বলেই মনে হয়। তবে আমরা যেভাবে আইডেন্টিফাই করেছি সেভাবে না ও করতে পারে। টেকনোলজি ভাবনার পদ্ধতিও পাল্টায়।
    আমরাই কতটা বই পড়ি এখন? সময় তো ফাইনাইট। সেই সময় তো টেকনোলজি কেড়ে নিচ্ছে। এখন ' ওয়ার এন্ড পিস' বা কালীপ্রসন্নর মহাভারত আমরা পড়তে পারব কতজন?

    Deb হারিয়ে যাওয়া বই এবং লেখক সংক্রান্ত প্রকাশনা কেউ কিছু বের করলে হয় সাইটে নয় ফেসবুকে একটু খবর করবেন। দরকার পড়লে একটা টই খুলে রাখবেন প্লিজ। আমাদের মত অনেকের জন্য।
  • শঙ্খ | 2345.110.015612.152 (*) | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:২৪65241
  • বাহ। এক টুকরো নস্টালজিয়া।

    পাইকে, না, পড়বে না। এখন বিনোদনের হরেক রকম দরজা খুলে গেছে প্লাস সীমিত সময়। এক দুটো পড়লেও পড়তে পারে, কিন্তু তার জন্যে হাইপ চাই।
  • % | 90056.160.011223.3 (*) | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৮:৩৮65242
  • কোন বাচ্চারা?
    এখনকার বাচ্চাদের বেশ কয়েকটা আর্থসামাজিক-ভাষিক-বাচিক ক্লাসিফিকেশন সম্ভব। সেটা করা হোক আগে।
  • Deb | 23.219.781212.195 (*) | ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮ ১০:৩৮65243
  • @কুশান
    আপনি ফেসবুকে বইপোকা বা ওই টাইপের যেকোনো বইয়ের গ্রুপে জয়েন করে নিতে পারেন যদি না থাকেন। আজকাল যেরকম হারে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিজ্ঞাপন আর প্রিবুকিং চালু হয়েছে, না চাইলেও সব খবর মাথায় ঢুকিয়ে দেবে।

    @অল
    বাচ্চারা কি 'পড়বে' কেন, কি 'পড়ছে' নয় কেন? মানে তত্ত্বগত আলোচনা বা স্পেকুলেশন নয় শুধু, ব্যক্তিগত বা পারিপার্শ্বিক অভিজ্ঞতা কি বলে বা বলছে? আর যদি উত্তর না হয়, তাহলে এই বইগুলির টার্গেট রিডার কি শুধুই নস্টালজিয়া আক্রান্ত মানুষজনেরা?
  • শান্তনু | 7845.11.672312.172 (*) | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:০৩65245
  • ছোটবেলা ফিরিয়ে আনার জন্য ধন্যবাদ।
    পিন্ডিদা, রুকু সুকু, কাবুল আর টাবুল আর কিকিরা পড়ে মনে হল আবার সেই ছোট বেলায় ফিরে গেলাম।অসাধরন।
  • kushan | 232312.15.2389.89 (*) | ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৮:২৩65246
  • সাংঘাতিক কথা বলেছেন দীপাঞ্জন। একশো ভাগ সহমত।

    "অভিজ্ঞতা আর কল্পনার ধারাবাহিকতাও মনে হয় অনেকটা হারিয়ে গেছে। যে শ্যামল বাংলা ও বাঙালির স্মৃতি থেকে শ্যামাদাস বা শ্যামল
    লিখতেন তা কিছুটা হলেও শহর মফস্বলে তিরিশ চল্লিশ বছর আগে বেড়ে ওঠা কল্পনাপ্রবণ বাঙালি কিশোরে কিশোরীর অভিজ্ঞতার আওতায় ছিল। সরকারি বেসরকারি বাংলা স্কুলে বিভিন্ন আর্থসামাজিক স্তরের মধ্যে মানসিক আদানপ্রদান ছিল। প্রাক-৯১ অর্থনীতিতে বিভিন্ন স্তরের মধ্যে জিনিও কম ছিল। প্রতি পুজোর বা গরমের ছুটিতে গ্রামে ফেরা ছিল। তা না থাকলেও শিশু মহল ও গল্পদাদুর আসরে বাংলা গান কবিতা ছিল। সে গান কবিতায় বাংলার গ্রাম, নদী, গাছ, আগাছা ছিল। তাই বহির্মুখী পাশ্চাত্যয়িত নাগরিক ফেলুদা-কাকাবাবু-অর্জুন-শঙ্কু-গোগোলের পাশাপাশি অন্তর্মুখী শিকড়খোঁড়া রুনু-কালাচাঁদ-বগলামামা-ট্যাঁপা-পটলা জায়গা পেত - আজ কি আর তা সেভাবে সম্ভব?"
  • suman chatterjee | 127812.51.563412.181 (*) | ২০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:২৯65247
  • কালাচাঁদের গল্প গুলি খুব প্রিয় ছি। বিশেষকরে সাধু কালাচাঁদ অ মেদিনীপুরান।
  • r2h | 2401:4900:314d:83dd:8df:7890:d0d9:1671 | ২৮ জুন ২০২০ ০২:৪৩94669
  • এইত্তো।
    কদিন আগেই আনন্দমেলা বনাম দেব সাহিত্য কুটীর, কিশোর ভারতী ইত্যাদির কিশোর সাহিত্য নিয়ে কথা হচ্ছিল, আমি সাধু কালাচাঁদ কেন অবাস্ত্ব মনে হতো সেসব বলছিলাম।

    দীপাঞ্জন লিখেছেন 'প্রতি পুজোর বা গরমের ছুটিতে গ্রামে ফেরা ছিল'। এইটা যেমন একটা বিরাট বড় গ্যাপ। আমাদের কোন দেশের বাড়ি গ্রামের বাড়ি ছিল না। আমাদের আশে পাশে প্রায় কারোরই কোন গ্রামের বাড়ি ছিল না। এক প্রজন্ম আগের লোকজনের কাছে মাঝে মধ্য গল্প শোনা যেত গ্রামের বাড়ি বলে একটা ব্যাপারের, তবে সেসব অন্য দেশে; কিন্তু আমাদের ছিল না, এবং ব্যাপারটা যেহেতু একেবারে অপরিচিত তাই সেসব নিয়ে কোন অভাববোধও ছিল না।

    অবশ্য পরিচিত অপরিচিত এসবকে আমি বড় কিছু মনে করি না, এইটা আমি পাঠকদের ব্যাকগ্রাউন্ডে বিরাট বৈচিত্রের কথা ভেবে লিখলাম। গাদাগুচ্ছের রাশিয়ান বই, বুড়ো আংলা, রিদয়, অপু দুর্গা - কারো সঙ্গেই রিলেট করার ব্যাপার তো ছিল না। ঋভুর শ্রাবণের কথা এসেছে - এটা আমার অন্যতম প্রিয় পাঠ, অনেক বার পড়েছি।
  • সৌত্রিক দাশ | 2603:7000:c902:3799:8e45:ff:fe9c:55d3 | ২৭ মার্চ ২০২১ ২১:৫১104149
  • আপনার লেখাটি পড়লাম, খুব ভালো লাগল। আমরা হয়তো সমসাময়িক, কেননা আমি আপনার উল্লেখিত প্রায় সব লেখক ছোটবেলা থেকেই পড়ে আসছি। 


    বিশেষত, শ‍্যামাদাস দের রুনুর গল্পগুলো। আমি প্রথম পড়েছিলাম কিশোর ভারতী পূজাশংখাতে, ৭০-এর দশকের কয়েকটি বছরে ধারাবাহিক ভাবে বেরিয়েছে। তারপর একত্রিত ভাবে মিত্র ও ঘোষ দ্বারা 'রুনু রুনু রুনু' নামে প্রকাশিত হয়। 


    আমি প্রকাশক কে জিজ্ঞেস করে শুনলাম বইটি আউট অফ প্রিনট, আর ওদের কোনো ইচ্ছে নেই আবার বের করার।

  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে প্রতিক্রিয়া দিন