এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • শিক্ষক দিবসের এবং আমরা

    Bratin
    অন্যান্য | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ১৫৬৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Bratin | 11.39.57.120 | ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১০:৩১718267
  • আমাদের বাড়ির পরিবেশন টা ছিল শিক্ষক ময়।বাবা স্ট্যাট।সেজকাকা ম্যাথস এবং নকাকা ফিজিক্স। ছোটকাকা কেমেষ্ট্রি র। কিন্তু তিনি শিক্ষকতার জগতে আসেন নি। ONGC তে ইঞ্জিনিয়ার।

    সেই অর্থে ভূগোল ছাড়া কোন দিন কোন টিচার রের কাছে পড়তে হয় নি।

    প্রথম টিচার বাবা। একেবারেই ছেলে বেলায় বছর চারেক বয়েসে আমাকে দাবা খেলা শেখান। এবং আমি টুক করে খেলে টির প্রেম এ পড়ে যাই।বাবা কাকা তো বটেই পাড়ার র লোক জনের সাথে কত খেলেছি তার ইয়ত্তা নেই।সুযোগ পেলেই দাবার ঘুঁটি বানিয়ে আমি রেডি।

    বাবা অঙ্ক ছাড়া ছোট ছোট প্রবলেম বানিয়ে দিতেন। ধাঁধা টাইপস। তখন বাবা কিশোর ভারতী, সাপ্তাহিক আনন্দমেলা( আনন্দবাজার পত্রিকা) , পক্ষিরাজ,ঝলমল এই গুলো তে নিয়মিত এইসব লিখতেন। এ গুলো কে সলভ করতে করতে কখন নিজের অজান্তে ই অঙ্ক কে ভালোবেসে ফেলেছি।

    সেজকাকা র কছে প্রথম অঙ্ক কষি ক্লাস এইট এ। একটা এক্সট্রা আটকে গিয়েছিলম।সেটা কে কিছু তেই জায়গা করতে পারছিলাম না। সেই শুরু।কাকা র অঙ্ক শেখানোর স্টাইল টা ছিল একটু অন্যরকম। অল্প থিয়োরি শিখিয়ে( যেটা না হলেও নয়) কাকা অঙ্ক করানো শুরু করতো। ছবি আঁকা টা মাস্ট। আর সিরিজ ইত্যাদি র ক্ষেত্রে কাকার বিশেষ টেকনিক ছিল কিছু মনে না রেখে অনায়সে সমস্যা করা যেত।

    পরবর্তী কালে স্ট্যাট বেশীর ভাগ বাবা র কছে ঈ শেখা।

    শিক্ষক দিবসে র প্রাক্কালে আমার এই দু গুরু কে আমি শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি।
  • bip | 183.67.3.44 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৭:০০718276
  • আমার বাবা মা দুজনেই হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন। দাদুওশিক্ষক। সেই হিসাবে, আমার ও শিক্ষক হওয়ার কথা। সেই দিকেই এগোচ্ছিলাম। কিন্ত হঠাৎ করে একাডেমিক্সে মোহভঙ্গ হওয়ায়, লাইফে সব ঘেঁটে যায়। যাইহোক এই লেখা শুধুই ঋণ স্বীকার করার চেষ্টা মাত্র।

    ক্লাস টু থেকে সিক্স পর্যন্ত আমার গৃহশিক্ষক ছিলেন অশ্বিন বাবু। উনি প্রাইমারী স্কুলের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক -কিন্ত উনার সব থেকে বড় পরিচয় ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামী। একঘন্টা পড়াতেন। কখনোই প্রথাগত পাঠ না-উনার মুখে শুনতাম স্বাধীনতা সংগ্রামী বিপ্লবীদের গল্প। উনাদের ছেলেবেলা, স্কুল বেলার গল্প। কতশত বীরেদের গল্প। কোনদিন স্কুলের সিলেবাসে কি আছে পড়ান নি। উনি বলতেন তোমার জীবনে শিক্ষকের দরকার নেই-দরকার অনুপ্রেরণার। এইভাবেই অজান্তে ইতিহাসের প্রতি এক নিবিড় ভালোবাসা উনি গড়ে দিয়েছিলেন।

    আমি মাধ্যমিকে ছিলাম করিমপুর জগন্নাথ হাইস্কুলে। আমাদের সময়ে গ্রামের স্কুলে শিক্ষকতার মান বেশ উঁচুই ছিল। গ্রামের স্কুলে সব থেকে বড় সুবিধা এই যে, ওখানে জীবনে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার হতে হবে এসবের চাপ ছিল না। সহপাঠিদের অধিকাংশের বাবারা ছিল করিমপুর শহরের ব্যবসায়ী। ছোট বড় মাঝারী। ফলে খেলার সময় ছিল অফুরন্ত- পড়াশোনা ভাল লাগলে কর। না করলে বাবার দোকানে বসবে। এই ছিল বন্ধুদের এটিচুড! এই স্কুলের যেসব শিক্ষকের কথা না বলেই না-তাদের মধ্যে বাংলার শিক্ষক অরুন চ্যাটার্জি, ইতিহাসের পার্থ রুজ এবং বিজ্ঞানের শ্যামল বাবু। অরুনবাবু কোনদিন সিলেবাসে কি আছে দেখতেন ও না। উনি ক্লাস নিতে ঢুকলেই স্যার আজ শনিবারে চিঠি নিয়ে হয়ে যাক এই হত আমাদের আবদার। বা রবীন্দ্রনাথ কেন শেষের কবিতা লিখতে বসলেন। সাহিত্য যে নিছক বইএর বাঁধন না, অপার সম্ভাবনা, তা উনার কাছেই শেখা। পার্থ রুজ যখন যোগ দেন আমরা ক্লাস নাইনে পড়ি। ক্লাস নাইনে তখন প্রাচীন ভারতের ইতিহাস পড়তে হত-উনি বিশ্বভারতীতে পি এই চ ডি করছিলেন। সেই প্রথম আমরা বুঝি যে ইতিহাস যে গল্প বলে তার পেছনে কত নথি, কত গবেষনা থাকে। উনি উনার ভান্ডার উজার করে পড়াতেন। শ্যামল বাবুর স্পেশালিটি অঙ্ক ক্লাসে। উনি ভীষন জটিল অঙ্ককেও সহজ ভাবে দেখতেন। উনার কাছ থেকে লাইফে প্রথম শিক্ষা পাই যে কোন অঙ্ক জটিল লাগছে মানে, আসলেই অঙ্কটাই ঠিক ঠাক ভাবে বুঝি নি। আগে বোঝ, তারপরে সমাধানে হাত দেবে। এর ভিত্তিটা উনিই গড়ে দিয়েছিলেন।

    নরেন্দ্রপুরে দুবছরের উচ্চমাধ্যমিক আরেকটা অভিজ্ঞতা। মাধ্যমিকে প্রথম হওয়া ছেলেটি বাদ দিয়ে বাকী প্রায় সব র‍্যাঙ্কাররাই একসাথে ভর্তি হল। গ্রামের স্কুলে অত চাপ ছিল না। কিন্ত এন ডিপিতে সবাই আই আই টি জয়েন্টের জন্য দৌড়াচ্ছে। নরেন্দ্রপুরে আমাদের সময়ে কতগুলো দুর্দান্ত শিক্ষক ছিলেন। প্রথমেই ইনঅরগানিক কেমিস্ট্রিতে আরোগ্য সাহার [ এভিএস] কথা আসবে। উনি আবার কোলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডি এস সি পান। এটমিক স্টাকচার পড়াতেন। সম্পূর্ন বই ছাড়া- ইতিহাস থেকে একেকটা এক্সপেরিমেন্ট কি করে এটমিক স্টাকচারের দিক খুলে দিল-পূরোটা একদম ম্যাজিক রিয়ালিজম। স্টাটে ছিলেন প্রবাদপ্রতিম পি গিরি। সংখ্যা যে কথা বলে, সেটা উনিই হাতে নাতে শিখিয়ে ছিলেন। ফিজিক্স ডিপার্টমেন্ট ছিল বেশ খাজা। নরেন্দ্রপুরে সেরা শিক্ষক ছাত্ররাই। আমরা এ ওর কাছ থেকে শিখতাম। শেখানোর চেষ্টা থেকেই নিজে সব থেকে ভাল শেখা যায়, এটাই নরেন্দ্রপুরে শেখা। পাশাপাশি সত্যাদা বা স্বামী সূপর্নানন্দের কথা না বললে এই লেখা অসম্পূর্ন থাকবে। উনি ব্রহ্মানন্দে নিজের রুমে রাত দশটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত ভারতীয় দর্শনের ক্লাস নিতেন। অপশনাল। মাত্র ছ সাত জনই থাকত। মাঝে মাঝে হত। হিন্দু দর্শনের প্রায় সবকিছুই উনার ওই ক্লাসগুলো থেকেই শেখা। এখন ত উনি গোলপার্কের অধিকর্তা। মাঝে সাঝে পেপারে উনার ছবি দেখি।

    আই আই টি খরগপুরের ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টে পাঁচ বছরে ভালো শিক্ষক হাতে গুনে ছিল চারটি। অধ্যাপক জিপি শাস্ত্রী এবং ডি বসু অসাধরন। যেমন মাপের মানুষ, তেমন মেধা। উনারা যেভাবে ছাত্রদের ইন্টেলেকচুয়ালি চ্যালেঞ্জ করতেন, সেটা আমাদের জীবনের সেরা ক্লাসরুম অভিজ্ঞতা। ভাল শিক্ষক ছাত্রদের ইন্টেলেকচুয়ালি চ্যালেঞ্জ করবেন-এটা ছাত্রদের ডেভেলেপমেন্টের জন্যই দরকার। এছাড়া এইচ এন আচার্য্যর কথা লিখব। উনি ইলেকট্রনিক্স এর পেপারগুলো নিতেন। উনার একটা শিক্ষা ভোলার না-যে প্রথমেই তালগাছের মতন ন্যারো ডোমেনে নিজেকে টেনো না। পৃথিবীতে অনেক কিছুর বেসিক শেখার আছে। যেকোন ফিল্ডে ভাল কাজ করতে গেলে সব সাবজেক্টের বেসিক গুলো শেখা অনেক বেশী কাজের।

    আই আই টিতে ইলেকট্রনিক্স এবং টেলিকম ডিপার্টমেন্টে পি এই চ ডির সময় দুজনের কথা না বলেই না। প্রথমজন এন বি সি বা এন বি চক্রবর্ত্তী। আমি যখন পি এই চ ডিতে ঢুকি উনার বয়স সত্তর। উনি আমার গাইডের গাইড। পি এই চ ডির সময় আমাকে প্রচুর পার্শিয়াল ডিফারেন্সিয়াল ইকোশেন সলভ করতে হত। উনাকে কোন কিছু প্রবলেম বল্লেই বলে দিতেন , ওই বেল সিস্টেম টেকনিক্যাল জার্নালে ওমুকের ১৯৩৪ সালের পেপারটা দেখ!! পুরো ফটোজেনিক মেমোরি। ভারতে ইলেকট্রনিক্স গবেষনার ইতিহাসে এন বি সি একজন প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব। উনার কাছে অনেক শিখেছি। আরেকজন প্রফেসর অজয় রায়। অজয়দা এখন শিবপুরে ভিসি। কিন্ত উনি ছাত্রদের সাথে নানান টাইপের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতেন। তাতে সিস্টেম থেকে পলিটিক্স সব কিছুই থাকত।

    নিউ জার্সিতে, জীবনের প্রথম চাকরীতে একজন অসাধরন লোককে মেন্টর এবং শিক্ষক হিসাবে পেয়েছিলাম। প্রফেসর এডেল সালে। অরিজিন্যালি ইজিপ্টের লোক। এম আই টির ইলেক্ট্রিক্যালের অধ্যাপক ছিলেন-আমাদের কোম্পানীটা ছিল উনার দ্বিতীয় স্টার্টাপ। উনি বলতেন আর এন্ডিতে ভুল হবেই, তাই বুক চিতিয়ে গর্ব করে ভুল স্বীকার করবে। নইলে পুরো ডেভেলেপমেন্টটাই মাখাবে। এডেল লোক হিসাবেও অসাধারন ছিলেন। জীবনে এত খ্যাতি, টাকা-কিন্ত সম্পূর্ন নিরাহঙ্কার। উনার শর্ট ফ্রেজ ছিল-ক্যান বি ডান-ইউ হ্যাভ টু উইশ ফর ইট!

    জীবনে শিক্ষক কে? শিক্ষক সেই, যে অনুপ্রেরণা যোগায় নতুন কিছু শেখার জন্য। সবার কাছ থেকে সব পরিস্থিতি থেকেই শিখে যেতে হয় এই জীবনে। শেখাটা এক চলমান প্রবাহ। কাজের মাসি থেকে প্রফেসার সালে-আমার সারাজীবনই মনে হয়েছে সবার কাছ থেকেই কিছু না কিছু শেখার আছে।
  • সিকি | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৭:০৪718277
  • আহা! একে বলে যুগলবন্দী। :D
  • h | 212.142.105.15 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৭:৫৪718278
  • বিপ আর ব্রতীন দুজনের স্মৃতি চারণ ভালো লাগলো।
  • Bratin | 11.39.38.7 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১২:১৯718279
  • পাই/ বা অন্য কেউ একটা লেখা দিতে চা ই।

    সেটা অলরেডি আমার সেলের ড্রাইভে সেভ করা
    আছে।কীভাবে দেবো একটু বাংলা করে বলো
  • Abhyu | 113.218.236.215 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৩:১৭718280
  • বাহ খুব ভালো হবে। লেখাটা পড়ার জন্যে অপেক্ষা করি, বুলবুলভাজায় বেরোবে?
  • pi | 174.100.177.10 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৩:২৩718281
  • এখানে দিতে চাও ? তাহলে কপি পেস্ট করে দিলেই হবে। ইউনিকোডে লেখা তো ?
  • Abhyu | 113.218.236.215 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২০:০৩718282
  • পাই, বোতিন্বাউ আমাকে মেল করেছেন এই লেখাটা গুরুতে চিপকে দেবার জন্যে। লেখাটা "বিদ্যামন্দির পত্রিকায় প্রকাশিত"। তো, আমার পক্ষে যেহেতু এটা ইউনিকোডে টাইপ করা সম্ভব নয়, তাই লিটারালি চিপকে দিলাম। বাকিটা তুমি বুঝে নিও।


  • potke | 126.202.19.124 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২০:৩৯718283
  • অভ্যু, তোর তো এখন কোনো কাজ নেই, টাইপ করে দে!
  • dc | 132.178.16.164 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২০:৪৩718268
  • লেখাটা পড়তে গিয়ে একটাই প্রশ্ন মনে এলোঃ এত ঘন্টা কেন?
  • Abhyu | 113.218.236.215 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২০:৫৯718269
  • আহা অন্য এক জায়গায় প্রকাশিত লেখা গুরুতে পুনঃপ্রকাশের জন্যে দিয়েছে, তার উপর ব্রতীন্দার লেখা, পাই নিজেই টাইপ করে নেবে।
  • Bratin | 11.39.36.36 | ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ২১:০৮718270
  • প্রচুর বড় ।টাইপ করা চাপ

    কিন্তু সে ই কী সব ফর্মে সেন্দ করলে বাংলা ছুপকে দেওয়া যায় না
  • avi | 113.220.208.200 | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৮:০১718271
  • দিব্যি লেখাটা। কলেজে আমার এক বন্ধু কাম রুমমেট ছিল, পুরুলিয়া বিদ্যাপীঠের, সেও ঘুমের ব্যাপারে অত্যন্ত প্যাশনেট ছিল। ঃ)
  • Ranjan Roy | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৯:২৮718272
  • বেশ পড়া গেল তো! অভ্যু ও ব্রতীনকে থেন্কু!
    ঘন্টা ও ঘুম-- এ দুটো বাদ দিয়ে আশ্রম জীবন হয় নাকি?
    আমরা দুভাই (সিক্স ও ফাইভ) নতুন ভর্তি হয়ে প্রেয়ারে পাশাপাশি লাইনে বসে খুব ঘুমোতাম। চারমাসের মথায় রামকানাই মহারাজ ডেকে পাঠিয়ে কষে বকলেন।
    -- ব্যাটারা ঘুমোচ্ছে যেন ঢেঁকির পাড় পরছে। একটা উঠছে তো আর একটা পড়ছে!
    ব্রতীন, এখনও স্বপ্নে সেই ঘন্টার শব্দে উঠে পড়া দেখি!
  • Bratin | 11.39.36.120 | ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১৫:৫৫718273
  • ডিসি , অভি আর রঞ্জন দা অনেক ধন্যবাদ ।লেখা টা পড়ার জন্যে। ঃ))
  • rabaahuta | 161.191.175.196 | ১৯ অক্টোবর ২০১৬ ২১:৫৩718274
  • প্রতিবছর শিক্ষক দিবসে আমি জলধরবাবুর কথা লিখি। মনে লেখার ইচ্ছে থাকে অন্তত। তো, একই জলধরবাবু একই গল্প, নতুন করে তো লেখার কিছু নেই, আগের লেখাই ছপিয়ে দিই। এইবার কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছিলাম না, আজ পুরনো টই ঘাঁটতে ঘাঁটতে পেয়ে গেলাম। দেরী হয়ে গেল, তবে তাতে কিছু আসে যায় না।

    Name: জুলু সর্দার লোচবক্ষুলা

    IP Address : 149.72.158.28 (*) Date:01 Sep 2015 -- 02:33 AM

    আমার অক্ষরপরিচয় দায়িত্ব জলধরবাবুকে দেওয়া হয়েছিল। উদয়পুর টাউনে (রাজস্থানের উদয়পুর না কিন্তু, ত্রিপুরার),তা বোধয় ষাট সত্তর বছরের ঐটাই পুরনো দস্তুর ছিল, জলধরবাবুর কাছে হাতেখড়ি। পুরনো লোকেরা জলধরবাবুকে জল্লাদবাবু বলে উল্লেখ করতো বটে, তবে আমি কোনরকম জল্লাদ্সুলভ দোষ বা গুন তাঁর মধ্যে দেখিনি। তখন তিনি নবতিপর, মোটে কানে শোনেননা। আমার পড়াশুনোর সময় আবার টেবিল চেয়ার গুলো বের করে উঠোনে বেশ একটা আরামদায়ক কোণ দেখে পেতে দেওয়া হতো, সেখানে জলধরবাবু শ্লেটে অ আ ক খ লিখে দিয়ে হাল্কা রোদে আগেরদিনের আনন্দবাজারের হেডলাইন গুলো পড়তে পড়তে চা জলখাবার খেতেন আর আমি কাছে পিঠে গাবলু আর বাহাদুরের সঙ্গে খেলাধুলো করতাম (ওরা আমাদের পোষা কুকুর, নেড়ি হলে কি হবে, তোমরা একটু হাসো তো বললে হাসি হাসি মুখে দাঁত দেখাতে পারতো)। আর জলধরবাবু আমাকে মাঝে মাঝে বলতেন পড়ার সময় খাওয়ার জন্যে বায়না করা ঠিক নয়। কেন বলতেন কে জানে। তারপর একসময় অক্ষরজ্ঞান চমৎকারভাবে হয়ে গেছে বলে মা বাবার কাছে আমার অনেক প্রশংসা করে তিনি বিদায় নিলেন।

    তার বছরখানেকে পরে অবশ্য আমি সত্যিই অ আ কখ শিখতে শুরু করি, তবে সে অন্যগল্প। মোদ্দা কথা হচ্ছে জলধরবাবু আমার খুবই প্রিয় শিক্ষক, স্কুল কলেজের না হলেও।
  • Lama | 52.111.137.8 | ২০ অক্টোবর ২০১৬ ১৫:১৬718275
  • অক্ষরজ্ঞানের না, চরিত্রবলের প্রশংসা করেছিলেন
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে মতামত দিন