এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • অধ্যাপক ও পাগোল

    DB
    অন্যান্য | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ | ৮৯১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • DB | 160.129.67.107 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ২০:২৮691919
  • অবশেষে ১৮৯৬ সালের এক হিমশীতল কুয়াশাচ্ছন্ন দুপুরে স্বয়ং ডঃ জেমস মারে কেই আসতে হল বার্কশায়ারের ক্রোথর্ণ গ্রামে আসতে । জনৈক ডঃ ডবলিউ সি মাইনরের সঙ্গে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে । বড়ই বিচিত্র চরিত্রের মানুষ এই ডঃ মাইনর । প্রায় বিশবছর যাবত ডঃ মারের সঙ্গে পত্রবিনিময় মাধ্যমে Oxford English Dictionary , ইংরেজি ভাষার একটি আধুনিক নির্ভরযোগ্য অভিধান রচনার নানান খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন । এই বিশাল কর্ম যজ্ঞে আরো কয়েক হাজার বিশিষ্ট ভাষাবিদদের সহায়তা ছাড়াও বিভিন্ন ইংরেজি শব্দের অর্থ ,তার উচ্চারণভঙ্গী ,বিভিন্ন কালে ও বিভিন্ন জায়গায় সেই শব্দে্র প্রয়োগরীতির বৈচিত্র্য সম্পর্কে ডঃ মাইনরের অভিমতকে বিশেষ গুরুত্ব দিতেন Oxford English Dictionary র সম্পাদক ডঃ মারে এবং সেই কারণেই বহুবার পত্রবন্ধু ডঃ মাইনরের সঙ্গে সাক্ষাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সনির্বন্ধ অনুরোধ জানিয়েছেন মাইনরকে ,একবারের জন্য অক্সফোর্ডে আসতে । কিন্তু কিছুতেই রাজি করান যায়নি ডঃ মাইনরকে । বার্কশায়ারের ক্রোথর্ণ ছেড়ে এক আধ দিনের জন্য অক্সফোর্ডে আসতে ডঃ মাইনরের অনীহা বা অপারগতার পিছনে কি কারণ থাকতে পারে বোঝা অসাধ্য ছিল ডঃ মারের । বস্তুত ডঃ মাইনরও অক্সফোর্ডে যেতে এবং ডঃ মারের সঙ্গে সাক্ষাতে তাঁর অনীহা অথবা অপারগতার জন্য কোন কারণ দর্শানর প্রয়োজন বোধ করেননি কখনই । কাজেই পর্বতকেই শেষে আসতে হল মোহম্মদের কাছে ।
    ডঃ মারে অক্সফোর্ডে তাঁর গুরুদায়িত্বের বোঝা সাময়িক ভাবে নামিয়ে রেখে ট্রেনে চেপে অক্সফোর্ড থেকে ক্রোথর্ণ স্টেশন ,যেটি সেকালে ওয়েলিংটন কলেজ স্টেশন নামেই পরিচিত ছিল ,এসে নামলেন । অক্সফোর্ড থেকে রওয়ানা হবার আগে তার মারফৎ সাক্ষাতের দিনক্ষণ সবই ঠিক করে নিয়েছিলেন । স্টেশনে ডঃ মারের জন্য অপেক্ষা করছিল কোচয়ান সহ ঝকঝকে একটি ল্যান্ডো গাড়ি । অতিথীকে নিয়ে বার্কশায়ারের গ্রাম্য পথ দিয়ে ল্যান্ডো মিনিট কুড়ি চলার পর পপলার গাছের ছায়া ঢাকা পথ মাড়িয়ে এসে পৌঁছল একটি সুবিশাল লাল রঙের প্রাসাদোপম বাড়ির সামনে।
    ডঃ মারেকে নিয়ে ল্যান্ডো গাড়ি দ্বারে এসে থামার সঙ্গে সঙ্গেই এক ভৃত্য অত্যন্ত গম্ভীর মুখে অতিথীকে নিয়ে হাজির করল দোতলার ঘরে । ঘরটির দেওয়াল জোড়া আলমারি ভর্তি বই তার মাঝে এক বিশাল মেহগনী কাঠের টেবিলের ওপাশে এক প্রবল ব্যক্তিত্বশালী পুরুষে উঠে দাঁড়িয়ে ডঃ মারেকে অভ্যর্থনা জানালেন । প্রত্যুত্তরে ডঃ মারে ও সামনের দিকে ঝুঁকে অভিবাদন জানিয়ে দীর্ঘদিনের সহযোগী - না দেখা বন্ধুর সঙ্গে প্রাথমিক আলাপন এর যে বয়ান আসার পথে সযত্নে মুখস্ত করতে করতে এসেছেন তাই আবৃতি করতে শুরু করলেন – “ গূড আফটারনুন মহাশয় । আমি লন্ডনের ফিলোলজিক্যাল সোসাইটি ও অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারির সম্পাদক ডঃ জেমস মারে। আপনি নিশ্চয় আমার দীর্ঘদিনের সহযোগী বন্ধু ডঃ ডবলিউ সি মাইনর”। ডঃ মারের কথা শেষ হতে না হতেই হঠাতই ঘরের মধ্যে এক অদ্ভুত অস্বোয়াস্তিকর নিস্তব্ধতা নেমে এল । দেওয়াল ঘড়িটার টিক টিক শব্দ ছাড়া আর কোন আওয়াজ নেই । কিছুক্ষণ পরেই কোথাও একটা দরজা খোলার আওয়াজ হল – মণে হল কেউ যেন অত্যন্ত ধীর পদে হেঁটে আসছে এদিকেই ।
    বেশ কিছুক্ষণ থমকে থাকার পর নীরবতা ভঙ্গ করলেন টেবিলের ও প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষটি । বিব্রত ভাবটা কাটাতে গলাটা পরিস্কার করে নিয়ে গম্ভীর গলায় তিনি জবাব দেন –“আপনাকে অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে আমি জানাতে বাধ্য হচ্ছি যে এই ভবনটি Broadmoor Criminal Lunatic asylum এর । আমি প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ । ডঃ মাইনর অবশ্যই এখানে থাকেন কিন্তু তিনি মানসিক অসুস্থতার কারণে বিগত কুড়ি বছরেরও অধিক সময় ধরে এখানে অন্তরীন রয়েছেন”।
  • DB | 160.129.67.107 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ২০:২৯691921
  • আর পাঁচটা দিনের মত জর্জ মেরেট্ট যখন সেদিন রাত থাকতেই বেরিয়ে পড়েছিল রেড লায়ন ব্রিউয়ারিজ এ মর্নিং শিফটের কাজে যোগ দেবার জন্য । ঘুমজড়ানো চোখে স্বামীকে বিদায় জানাবার সময়ে শ্রীমতী মেরেট্ট স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেনি যে তার স্বামী শেষ বারের মত বাড়ি থেকে বের হলেন - কাজের শেষে ক্লান্ত দেহটাকে টানতে টানতে আর বাড়ি ফিরবেননা কোনদিনই। স্বল্পালোকিত নির্জন রাস্তা দিয়ে ধীর পদে কর্মস্থলের দিকে চলতে চলতে এক সময়ে জর্জের মনে হল কেউ যেন পিছন থেকে তাকে অনুসরণ করছে । একটা অজানা আশঙ্কায় জর্জের গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠল – নিজের অজান্তেই তার চলার গতি বেড়ে গেল আর তখনই তার কানে এল পিছন থেকে কেউ যেন চেঁচিয়ে তাকে থামতে বলছে । হাঁটার গতি না কমিয়েই একবার পিছন দিকে ফিরে আধো অন্ধকারে দেখতে পেল একটা ছায়া মূর্তি তার দিকে দ্রুত এগিয়ে আসছে । তার হাতে উদ্যত পিস্তল । আতঙ্কে দিশেহারা হয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করতে করতে এবার জর্জ দৌড়তে আরম্ভ করল । আর ঠিক সেই সময়ে পিছন থেকে ছুটে এল গুলি । প্রথম গুলিটি কান ঘেঁষে বেরিয়ে গেল ।তার পর উপর্যুপরি আরও দুটি গুলি তাকে লক্ষ্য করে ছুটে এল ,তার একটি এসে লাগল জর্জের মাথার পিছনে । রাস্তার ওপরে লুটিয়ে পড়ল জর্জ।
    গুলির শব্দে চমকে উঠেছিল রাতের টহলদারি ডিউটিতে থাকা হেনরি ট্যারেন্ট । ওয়েস্টমিনিস্টারের বিপরিতে টেমস নদীর অপর পারের ল্যাম্বেথ মার্স এলাকাটির য়াইনশৃঙ্খলার ব্যপারের খুব একটা সুনাম যদিও ছিলনা কোনকালেই । খুন রাহাজানি র মত ঘটনা খুব একটা অপরিচীত ঘটনা ছিলনা । তবু এই এলাকায় মানুষ খুন করার জন্য কে কবে বন্দুকের ব্যবহার করেছে কেউ তা মনে করতে পারেনা। খুনের জন্যে বন্দুকের ব্যবহার তৎকালীন ব্রিটেনে এক রকম বর্জিত অস্ত্র বলেই গন্য হত । কারণটা আর কিছুই না – একে তো বন্দুক মহার্ঘ বস্তু ,ব্যবহার করাও ঝামেলার আর সব চেয়ে বড় অসুবিধে হল বন্দুককে লুকিয়ে রাখা সহজ হয়না । বোধ হয় এই সব কারণেই বহুদিন যাবত বন্দুক নামক অস্ত্রের ব্যবহার ব্রিটেনের অপরাধী মহলে “অব্রিটিশ সুলভ আচরণ” বলেই গণ্য হত । গুলির শব্দে চমকে উঠলেও ট্যারেন্ট প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই কাছেপিঠে আরো যে সব রাতের টহলদারি পুলিশ কর্মী ছিল তাদের সতর্ক করে দেবার উদ্দেশ্যে তার হুইসিল জোরে বাজিয়ে দিয়ে দ্রুত এগিয়ে চলল ঘটনাস্থলের দিকে । গুলির শব্দ কানে গিয়েছিল অপর এক পুলিশ কর্মী বার্টনের ও । সে ট্যারেন্টের আগেই পৌঁছে যায় ঘটনাস্থলে । হুইসিলের আওয়াজে সচকিত হয়ে ছুটে আসে উইলিয়াম ওয়ার্ড ও । রাস্তার ওপরে যেখানে জর্জ পড়েছিল সে জায়গাটা রক্তে ভেসে যাচ্ছিল । ট্যারেন্ট ও বার্টন যতক্ষনে একটা ট্যাক্সি ডেকে জর্জের দেহটাকে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাবার উদ্যোগ করছিল ততক্ষণে ওয়ার্ড আততায়ীকে বন্দী করে ফেলে । অবশ্য আততায়ীকে ধরতে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি ওয়ার্ডকে । লম্বা সুবেশ ,কিছুটা গোঁয়ার ধরণের লোকটি স্থির হয়ে দাঁড়িয়েছিল অকুস্থলেই ।তার হাতে ধরা পিস্তলের নল দিয়ে তখনও ধোঁয়া বের হচ্ছিল । “এই লোকটিকে কে গুলি করল”? মাটিতে পড়ে থাকা জর্জকে দেখিয়ে ওয়ার্ড প্রশ্ন করে লোকটিকে । লোকটির সংক্ষিপ্ত জবাব আসে – “আমি” । ওয়ার্ড এবার প্রশ্ন করে “তুমি জান কাকে তুমি গুলি করলে”? আততায়ী এবার খেঁকিয়ে ওঠে “দেখতে পাচ্ছনা ওটা একটা মদ্দ! তুমি কি ভাব আমি কাপুরুষের মত কোন মেয়েমানুষকে গুলি করব”? ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে একটু একটু করে কৌতূহলী জনতার ভীড় হয়ে যাচ্ছে দেখে ওয়ার্ড দ্রুত আততায়ীকে নিয়ে কাছাকাছি টাওয়ার স্ট্রীট থানায় নিয়ে চলল । থানার দিকে যেতে যেতে কিছুটা অন্তরঙ্গভাবে ওয়ার্ড আততায়ীর কাঁধে একটা হাত রেখে বলে চলে “তুমি বোধহয় অন্যকারো সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে এই লোকটিকে গুলি করেছ । কিম্বা হয়তো এই লোকটি তোমার ঘরে অনধিকার প্রবেশ করেছিল কোন বদমতলব নিয়ে আর তুমি নিতান্ত আত্মরক্ষার তাগিদেই লোকটিকে তাড়া করে গুলি করে মেরেছ! সেটা অবশ্য অন্যায় কিছু নয়”।
    “ওহে বাপু ,আমাকে ওসব বুঝিয়ে লাভ নেই। তুমি কিন্তু এখনও আমাকে সার্চ করনি । তুমি কি করে নিশ্চিত হলে যে আমার কাছে আর একটা বন্দুক নেই ,তা দিয়ে আমি তোমাকেও গুলি করে খুন করতে পারি”।
    ওয়ার্ড সহাস্যে জবাব দেয় “আপাততঃ তোমার কাছে যদি আর একটা বন্দুক থেকেও থাকে তবে সেটাকে তুমি পকেটেই রেখে দাও । পকেট থেকে বের করাও চেষ্টা কোরনা ভুলেও । আর সার্চ টার্চ যা করার সে সব থানাতে গিয়েই হবে । আপততঃ লক্ষীছেলের মত থানায় চল দেখি”
  • DB | 160.129.67.107 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ২০:৩০691922
  • জর্জের আততায়ীর দেহ তল্লাসীতে অবশ্য কোন বন্দুক পাওয়া গেল না । যা পাওয়া গেল তা হল চামড়ার খাপে বন্ধ একটা শিকার ছুরি । “ওটা একটা সারজিক্যাল ছুরি । ছুরিটাকে অবশ্য সব সময়ে কাছে রাখিনা...”
    প্রাথমিক জেরায় জানা গেল বন্দী আততায়ীর নাম উইলিয়াম চেস্টার মাইনর । সাঁইতিরিশ বছর বয়স - পেশায় চিকিৎসক এবং জেরার সময় ওয়ার্ডের প্রাথমিক অনুমানি সঠিক বলে প্রমানিত হল । ডঃ মাইনর আমেরিকার সেনাবাহিনীর প্রাক্তন অফিসার – বছর খানেক আগে সে সেনাবাহিনী থেকে অবসর নিয়ে প্রথমে লন্ডন তার পর ইউরোপের নানান শহর ঘুরে , ল্যাম্বেথ অঞ্চলে এসে ৪১ নম্বর টেনিসন স্ট্রীটের একটি ঘর ভাড়া করে অত্যন্ত সাধারণ জীবন যাপন করছে । জেরার সময় পুলিশের তরফ থেকে প্রশ্ন করা হয় -
    “আপনাকে দেখে তো আর্থিক দিক দিয়ে মোটা্মুটি স্বচ্ছল বলেই মনে হচ্ছে ,তবে আপনি এই রকম একটা বস্তিতে পড়ে আছেন কেন ?”
    ডঃ মাইনরের সংক্ষিপ্ত জবাব –“ আমার এখানে থাকা বা কৃচ্ছসাধনের সঙ্গে আমার আর্থিক অবস্থার কোন যোগ নেই”।
    প্রশ্নঃ “তবে কি কারণে আপনি এই রকম অতি সাধারণ লোকের মত বসবাস করেন”?
    ডঃ মাইনর নীরব । বস্তুত পুলিশি জেরায় ডঃ মাইনরের কাছ থেকে আর কোন তথ্যই উদ্ধার করা সম্ভব হয়না থানায় । অগত্যা ডঃ মাইনরকে একজন শান্তিপ্রিয় সাধারণ ব্রিটিশ নাগরিককে খুনের অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত করে নিয়ে যাওয়া হল হর্সমঙ্গার লেনের জেল এ।
    এবার তদন্তে নামল স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড ।যদিও স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের গোয়েন্দারাও কোন রকম সহযোগিতা পেলেননা ডঃ মাইনরের কাছ থেকে । তাদের যাবতীয় প্রশ্নের উত্তরে আগের মতই নীরব থেকেছেন । শুধু একবারই গোয়েন্দাদের জানিয়েছেন যে মৃত ব্যক্তিটিকে তিনি চেনেন না ,তাকে তিনি নিতান্ত ভুলক্রমে গুলি করে হত্যা করেছেন । অগত্যা গোয়েন্দারা অন্যান্য সূত্র ধরে আসামীর সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে শুরু করলেন । আর তখনই একটু একটু করে প্রকাশিত হল এক করুণ জীবনকথা ।
    বছরখানেক আগে উইলিয়াম চেস্টার মাইনর এসেছিলেন ইংল্যান্ডে –মানসিক শান্তির সন্ধানে । উঠেছিলেন ওয়েস্ট এন্ড এর র্যাডলে হোটেল এ । ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপক বন্ধুর কাছ থেকে সুপারিশ পত্র সহ লন্ডনে দেখা করেছিলেন বিখ্যাত চিত্রশিল্পী তথা আর্ট ক্রিটিক জন রাস্কিনের সঙ্গে । রাস্কিন তাঁকে পরামর্শ দেন ছবি আঁকার সরঞ্জাম যা আছে সব বাঁধা ছাঁদা করে ইউরোপের বড়বড় শহরগুলিতে ঘুরেও আসতে এবং মন দিয়ে জলরঙে ছবি এঁকে যেতে । জলরঙের চিত্রকলায় মাইনরের সহজাত দক্ষতা ছিল । কাজেই পোঁটলা পুঁটলি বেঁধে ট্রেনে চেপে মাইনর বেরিয়ে পড়েন ইউরোপ ভ্রমনে । গোয়েন্দাদের ধারণা ডঃ মাইনর ১৮৭১ সালের খৃষ্টমাসের পর পরই ইউরোপ ভ্রমনান্তে ইংল্যান্ডে ফিরে এসে ডেরা গাড়েন ল্যাম্বেথ এ । তার মত এক সম্ভান্ত স্বচ্ছল ঘরের মানুষের পক্ষে বাসস্থান নির্বাচনটা সত্যিই বিষ্ময়কর । তবে পরবর্তী সময়ে ডঃ মাইনর গোয়েন্দাদের জেরার মুখে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিলেন যে ল্যাম্বেথ এর মত অপরাধপ্রবণ এবং সমাজের অত্যন্ত নীচু তলার মানুষ অধ্যুষিত এলাকায় বাসা বাঁধার পিছনে একটিই কারণ ছিল ,তা হল এখানে সহজে এবং সস্তায় মেয়েমানুষ মেলে ভোগের জন্য ।
    আমেরিকার সামরিক বাহিনীর তরফ থেকেও স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড কে ইতি মধ্যেই জানান হয়েছিল যে ডঃ মাইনরের যৌন লালসা ছিল দুর্দমনীয় এবং সেই কারণেই নিষিদ্ধপল্লীতে যাতায়াতের অভ্যাসটি বহুদিনের পুরনো । বিশেষত “গভর্নর্স আইল্যান্ডে” পোস্টিং এ থাকা কালে ছুটির দিন পেলেই ডঃ মাইনর ছুটতেন ম্যানহাটান অঞ্চলের কুখ্যাত পানশালা এবং নারীসংসর্গলিপ্সা চরিতার্থ করতে । সম্ভবতঃ এই সময়েই কোন এক যৌনকর্মী মহিলার সংসর্গে এসে গনোরিয়ার মত যৌন রোগ বাধিয়ে বসেন ।
  • DB | 160.129.67.107 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ২০:৩১691923
  • মাইনরের ঘরের তল্লাসী চালিয়ে কিন্তু এমন কিছু পাওয়া গেলনা যা তার জীবনের অন্ধকার দিকগুলির দিকে কোন রকম আলোকপাত করতে পারে । মাইনরের ঘরে পাওয়া গেল একটি পোর্টম্যান্টো ,তার মধ্যে প্রচুর ক্যাশ টাকা , একটি সোনার ঘড়ি ও চেন ,কিছু পিস্তলের গুলি তার ডাক্তারি সার্টিফিকেট,আমেরিকান সৈন্যবাহিনীতে ক্যাপ্টেন হিসেবে নিয়োগপত্র ,এবং জলরঙে মাইনরের আঁকা কিছু ছবি ,যা দেখে বহু বিশেষজ্ঞদের মতে অতি উচ্চশ্রেণীর চিত্রকলা হিসেবে মান্যতা পাবার যোগ্য ।
    মাইনরের ল্যান্ডলেডি ,শ্রীমতী ফিশারের কথায় ডঃ মাইনর ভাড়াটে হিসেবে খুবই ভালো লোক – যদিও মাঝে মাঝে তার কিছু কিছু আচরণ ছিল বিচিত্র রকমের – মাঝে মাঝে বেশ কয়েকদিনের জন্য হঠাত কোথায় চলে যেতেন । আবার তেমনি হঠাত ফিরে আসতেন আর বিভিন্ন হোটেলের বিল চতুর্দিকে এমনভাবে ছড়িয়ে রাখতেন যাতে সবাই সেগুলি দেখতে পায় ।”
    স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের গোয়েন্দাদের প্রশ্নের জবাবে শ্রীমতী ফিশার আরো বলেন “ ডঃ মাইনরকে সব সময়েই কেমন যেন অস্বাভাবিক রকমের চিন্তিত দেখাত- চাইতেন তার ঘরের সব আসবাব পত্র ঘর থেকে বার করে নিতে কারণ তার ভয় ছিল কেউ হয়ত সবার অজান্তে ঘরের মধ্যে ঢুকে আসবাবপত্রের পিছনে লুকিয়ে থাকতে পারে । বিশেষত ডঃ মাইনর আইরিশদের সম্পর্কে আতঙ্কিত হয়ে থাকতেন ,প্রায়ই তাঁর কাছে জানতে চাইতেন যে শ্রীমতী ফিশারের কোন আইরিশ কাজের লোক আছে কিনা – থাকলে অবিলম্বে তিনি যেন তাদের বরখাস্ত করেন । এমনকি ডঃ মাইনরের দাবি ছিল যে শ্রীমতী ফিশারের কাছে যদি কোন আইরিশ অতিথী আসেন অথবা কোন আইরিশ ব্যক্তিকে তিনি ঘর ভাড়া দেন তবে তা যেন ডঃ মাইনরকে অবশ্যই জানান হয় ।
    যথা সময়ে জর্জ মেরেট্টের হত্যার মামলাটি আদালতে বিচারের জন্য তোলা হল । বহু লোকের সাক্ষ্য নেওয়া হল ,যেমন প্রথম সাক্ষী স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের ই এক গোয়েন্দা,উইলিয়ামসন, আদালতকে জানান , মাস তিনেক আগে আসামী লন্ডনে তার দপ্তরে এসে অভিযোগ জানান যে ফেনিয়ান ব্রাদারহুড নামে আয়ারল্যান্ডের একটি উগ্র জাতীয়তাবাদী সংগঠনের কিছু লোকজন তাঁর ঘরের মধ্যে চুপিসাড়ে ঢুকে পড়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে অনেকদিন যাবত। তাদের উদ্দেশ্য মাইনরকে বিষ প্রয়োগ করে হত্যা করা।
    একবার তো খুব উত্তেজিত ভাবে মাইনর উইলিয়ামসনকে জানান কেউ তাঁকে বিষাক্ত কোন ওষুধ খাইয়ে হত্যা করে ঘটনাটাকে আত্মহত্যা হিসেবে প্রমান করতে চায় !!
    ডঃ মাইনরের এই সব মনগড়া অভিযোগকে অবশ্য বিশেষ পাত্তাদেননি উইলিয়ামসন । নিছক ছিটগ্রস্থের ক্ষ্যাপামি বলেই উপেক্ষাই করে গেছেন ।
    মামলার পরবর্তী সাক্ষী হয়ে এলেন লন্ডনের বেথেলহেম হাসপাতালের কর্মী , উইলিয়াম ডেনেস । বেথেলহেম হাসপাতালে মানসিক ভারসাম্যহীন রোগীদের চিকিৎসা করা হয়। আর পাঁচটা কাজের সঙ্গে ডেনেসের দায়িত্ব ছিল রাত্রে রোগীদের ওপরে কড়া নজর রাখা ,যাতে তারা কোন রকম বেয়াড়াপনা না করে আর কোন ভাবেই আত্মহত্যা না করে বসে ।
    হর্সমঙ্গার লেন কারাগারে বন্দী ডঃ মাইনরের ওপরে বিশেষ নজরদারির জন্য এই ডেনেসকে আনা হয়েছিল বেথেলহেম হাসপাতাল থেকে । আদালতে সাক্ষী দিতে উঠে ডেনেস বলেন – “ধর্মাবতার ,ভারি আজব লোক এই আসামী । আমার গোটা চাকরি জীবনে ঢের ঢের পাগল দেখেছি ,তাদের ওপরে নজরদারি করেছি ,কিন্তু এই রকম উন্মাদ আর দুটি দেখিনি । প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই ইনি আমার ওপরে এই বলে চড়াও হতেন যে কেউ নাকি আমাকে ভাড়া করে এনেছে ওনাকে ঘুমন্ত অবস্থায় শারীরিক ভাবে নিগ্রহ করার জন্য !
    তার পর সেলের মধ্যেই এমন ভাবে থু থু করে ,যেন মুখের ভেতর থেকে কিছু একটা বের করে ফেলে দিতে চাইছে । আবার তার পর পরই খাট থেকে তড়াক করে লাফিয়ে নেমে এসে হামাগুড়ি দিয়ে খাটের তলায় ঢুকে কাদের যেন খুঁজতে থাকে”!!
    ----------------------------
    জর্জ মেরেট্টের হত্যাকান্ডের মামলায় শেষ সাক্ষী হিসেবে আদালতে হাজির করা হল ডঃ মাইনরের সৎ ভাই জর্জ মাইনরকে । জর্জ মাইনরের বক্তব্য পেশ করার আগে বলে রাখা ভালো যে মানসিক অসুস্থতার কারণে ডঃ মাইনরকে আমেরিকার সৈন্য বাহিনী থেকে উপযুক্ত পেনশন ও আনুসঙ্গিক আরো অনেক সুবিধা সহ অবসর নিতে বাধ্য করা হয়েছিল । সেনাবাহিনীর থেকে অবসর নিয়ে মাইনর ফিরে গিয়েছিলেন নিউ হ্যাভেনে তাঁর পারিবারিক বাসগৃহে । কিন্তু সেখানেও খুব শান্তিতে বসবাস করা হয়ে ওঠেনি মাইনরের । জর্জ মাইনরের সাক্ষ্যে সেই অশান্তির কথা বেরিয়ে আসে –“ নিউ হ্যাভেনের বাড়িতে উইলিয়ামের সঙ্গে বাস করাটা আমাদের কাছে একটা দুঃস্বপ্নের মত ছিল ধর্মাবতার ।
    উইলিয়াম প্রতিদিন সকালে উঠে অশান্তি বাধাতেন । ওর ধারণা আমরা বাড়ির সকলে কিছু বদ লোকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে রাত্রে ওঁর ঘুমের সময়ে ওনাকে শারীরিক নিগ্রহ করার মতলব আঁটছি ,আর ওঁর ইচ্ছার বিরুদ্ধে ওঁকে বিষ মাখানো বিস্কুট খাইয়ে হত্যা করার চেষ্টা করছি !!
    মাঝে মাঝে আবার বিড়বিড় করে নিজের মনেই কি সব পাপ টাপের কথা বলে । নিজেকেই শুনিয়ে বলতে থাকে এই অশান্তি ,এই তীব্র মানসিক যন্ত্রনা, সবই তার কৃতকর্মের ফল। সেনাবাহিনীতে কাজ করার কালে নাকি তাকে ভয়ঙ্কর এক পাপকর্ম করতে বাধ্য করা হয়েছিল যার প্রতিফল হিসেবে তাকে এই রকম মানসিক চাপ নিয়ে বাঁচতে হচ্ছে” । জর্জ মাইনরের সাক্ষ্য থেকে জানা যায় যে উইলিয়াম মাইনর প্রায়শই বলতেন একমাত্র ইউরোপে চলে গিয়ে তার পেছনে লেগে থাকা শ্ত্রুদের হাত থেকে তিনি নিস্তার পাবেন এবং সেখানে গিয়ে তিনি নানান জায়গায় ঘুরে বেড়াবেন , আর ছবি আঁকবেন এবং এই ভাবেই তিনি সংস্কৃতিবান ভদ্রলোক হিসেবে সমাজে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত হতে পারবেন । সেই তীব্র বাঁচার ইচ্ছে নিয়ে নিজের বলতে যা ছিল সে সব কিছু সঙ্গে নিয়ে উইলিয়াম চলে এসেছিলেন ইংল্যান্ডে । কিন্তু সুস্থ জীবন তাঁর ভাগ্যে ছিল না । তাই তো সেই অভিশপ্ত রাতে হঠাতই ঘুম ভেঙ্গে গিয়েছিল উইলিয়াম মাইনরের । তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় তার মনে হয়েছিল যেন অন্ধকারের মধ্যে এক ছায়া মূর্তি দাঁড়িয়ে আছে তার পায়ের দিকে বিছানার খুব কাছে ।
    বালিশের তলায় হাত চলে যায় উইলিয়াম মাইনরের , অতি সন্তর্পণে বালিশের তলা থেকে বের করে আনেন পিস্তল । মাইনর কে পিস্তল বার করতে দেখে ছায়ামূর্তি পিছন ফিরে সিঁড়ি বেয়ে নিচে নামতে থাকে ।তার পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে দৌড়তে থাকে। লোকটিকে অনুসরণ করতে করতে মাইনর ও পিস্তল হাতে বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাস্তায় নেমে দেখে একটি লোক দৌড়ে পালাচ্ছে । মাইনরের সন্দেহ থাকেনা যে এই সেই অনুপ্রবেশকারি ছায়ামূর্তি । সে সঙ্গে সঙ্গে হাঁক দিয়ে থামতে বলে এবং তার পরই মাইনর পিস্তল থেকে গুলি চালাতে শুরু করেন । প্রথম তিনটি গুলি লক্ষ্যভ্রষ্ট হলেও চতুর্থটি গিয়ে লাগে লোকটির মাথায় । রাস্তার ওপরে লুটিয়ে পড়ে লোকটি । কাছে গিয়ে মাইনর রাস্তার ওপরে পড়ে থাকা রক্তে ভেসে যাওয়া নিথর দেহটা দেখতে দেখতে যেন আস্বস্ত বোধ করে । লোকটি তারা আর কোন ক্ষতি করতে পারবেনা !!
    আমেরিকান কনসাল এর তরফ থেকে মাইনরের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য যে আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছিল তিনি মক্কেলের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে আদালতের কাছে এই মর্মে আর্জি পেশ করেন যে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের গোয়েন্দারা তাঁর মক্কেলের বাসা ভালো করে পরীক্ষা করে ইতিমধ্যেই আদালত কে জানিয়েছেন যে রাত্রে বাইরের কোন লোকের পক্ষে মাইনরের ঘরে কোনভাবেই প্রবেশ করা অসম্ভব । ঘুমের ঘোরে তাঁর মক্কেল তার শয্যাপার্শে যে ছায়ামূর্তি দেখেছেন তা নিতান্তই তার দুঃস্বপ্নেরই অন্তর্গত ।তাঁর মক্কেল ডঃ মাইনর বস্তুত উন্মাদ । যা বিভিন্ন সাক্ষীর জবানবন্দীতেই পরিস্কার বোঝা গেছে । অতয়েব জুরি র সদস্যবৃন্দ এবং মহামান্য বিচারপতি যেন তাঁর মক্কেলের মানসিক বিকারের কথাটি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে বিচার করেন ।
    মামলার শুনানি যতই এগিয়েছে আদালত কক্ষে উপস্থিত প্রতিটি ব্যক্তির মন ততই বিষাদাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল – আদালত কক্ষের আবহাওয়া ক্রমশই ভারি হয়ে এসেছিল এক কর্তব্যপরায়ণ ,দেশ প্রেমিক , বহু গুনের অধিকারী আমেরিকার অভিজাত পরিবারের এই সংবেদনশীল সন্তানকে এই করুণ পরিনতির দিকে এগিয়ে যেতে দেখে ।
    মামলায় উপস্থিত জুরিরা অবশ্য সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যেহেতু ডঃ মাইনর মানসিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন এবং হত্যাকান্ডটি ঘটার কালে তিনি কোন ভাবেই নিজের নিয়ন্ত্রনে ছিলেননা তাই তৎকালীন ব্রিটিশ আইন মোতাবেক তাকে আইনত নিরপরাধ ঘোষণা করলেও জর্জ মেরেট্টের মৃত্যুর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া গেলনা ।
    মহামান্য বিচারক কাঠগড়ায় নির্বিকার চিত্তে বসে থাকা ডঃ মাইনরকে উদ্দেশ্য করে বিধান দেন – আপনাকে একটি অত্যন্ত সুরক্ষিত জায়গায় রাখা হবে । এই রায়ের পর ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র দপ্তর স্থির করে যে ডঃ মাইনরের মানসিক অসুখের যে অবস্থা তাতে তাকে আজীবন বন্দীদশায় রাখাই মঙ্গল । সেই মত ডঃ মাইনরের স্থায়ী ঠিকানা হয়ে গেল Broadmoor criminal lunatic asylam – ৭৪২ নম্বর আবাসিক হিসেবে ।
  • robu | 233.29.204.178 | ৩০ জানুয়ারি ২০১৬ ২১:৩১691924
  • বাহঃ। চলুক।
  • Lama | 213.132.214.81 | ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১২:০২691925
  • তারপর?
  • Atoz | 161.141.84.108 | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৪:৩৪691926
  • ধৈর্য রাখতে না পেরে উইকিপিসিকে জিগিয়ে এই মাইনর সাহেবের গপ্পো পড়ে ফেল্লাম।
    ঃ-)
  • TB | 118.171.130.188 | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ২৩:৩৪691927
  • The Professor and the madman:A Tale of Murder, Insanity, and the Making of The Oxford English Dictionary বইটাও পড়া যেতে পারতো।
  • Atoz | 161.141.84.176 | ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ২৩:৪৭691928
  • দেখলুম এই মাইনর সায়েব জন্মেছিলেন আমাদের রাবণরাজার দেশে। পরে তেনাকে পাঠানো হয় আম্রিগা।
  • | ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০৯:২৭691920
  • ইন্টারেস্টিং! আম্মো উইকি থেকে পড়েনিলাম।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন