এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ল র ব জ হ

    Sam
    অন্যান্য | ৩০ অক্টোবর ২০১২ | ৬৯৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Sam | 127.202.107.221 | ৩০ অক্টোবর ২০১২ ২১:৫৬577508
  • আজ, সুকুমার রায় এর জন্মদিনে ওনার লেখা নকল করলাম, শ্রদ্ধা নিবেদন ও বলা যায়। আশা করি কপিরাইট ভাঙ্গিনি, পুলিশ ও ধরবে না।

    ল র ব জ হ
    সে কি কাণ্ড। দেখতে দেখতে এক খানা গোটা মোষ যুধিষ্ঠির এর রথের মতন চার আঙ্গুল শূন্যে ভেসে উঠে টলমল করতে লাগলো। আমি ত এসব দেখে খণ্ড ত এর মত মুখ করে ভাবছি থাকি না পালাই। হঠাত অবিকল মানুষের গলায় মোষটা বলে উঠলোঃ “হ্যাঁ রে, কটা বাজল?” আমি আমতা আমতা করে কিছু একটা বলতে যাব, হঠাত পেছন থেকে কে যেন বলে উঠলোঃ “ওকে জিগ্যেস করছিস কেন রে দুমু, ওর কাছে কি ঘড়ি আছে?” আমি পেছন ঘুরে দেখি একটা ছোট্ট বাঘ। ঠিক যেন বনসাই করা। অবিকল আসল কেঁদো বাংলার বাঘের মত দেখতে। শুধু সাইজটাই একের দশ ভাগ। উপুর হয়ে বসে থাবা চাটছে। আমি বোকার মত জিগ্যেস করলামঃ “ইয়ে, দুমু কে?”
    বাঘ একটা বিরাট হাই তুলে তাচ্ছিল্যের ভঙ্গীতে মোষটা কে দেখিয়ে বললঃ “ওই যে, ও। ওর ভাল নাম ধৃষ্টদ্যুম্ন, আমি দুমু বলে ডাকি”। আমি ঘাবড়ে গিয়ে জিগ্যেস করলামঃ “আর আপনি?” বাঘটা আবার তাচ্ছিল্যের ভঙ্গীতে একটু ঘাড় বেঁকিয়ে আমার দিকে তাকাল। তারপর আস্তে আস্তে বললঃ “আমার নাম শতকরা”। আমি একটু সন্দেহের ভঙ্গীতে বল্লামঃ “যাহ্‌, শতকরা আবার নাম হয় নাকি?” বাঘ একটা মৃদু হুঙ্কার দিয়ে বললঃ “কেন? শতকরা তে কি দোষ? আমার গোটা নাম দিয়ে আমি আমার সাইজ মাপতে পারি। তোদের নাম দিয়ে ওসব করা যায় না”। আমি অবাক হয়ে বল্লামঃ “কি রকম”?
    বাঘ থাবা দিয়ে ল্যাজের গোড়া একটু চুলকে নিল। তারপর বলতে লাগলোঃ “দেখো বাপু, আমার পদবি হল গিয়ে ভ্যারিয়েবল। প্যারামেট্রিক ও বলতে পার। সহজভাবে বুঝাতে গেলে, এই যে আমার সাইজ দেখছ, এটা সবসময় এরকম থাকে না। প্রতি অমাবস্যেতে শতকরা পাঁচ ভাগ করে বাড়ে। এইভাবে বেড়ে বেড়ে এখন আমার পুর নাম হল শতকরা ত্রিশ”। আমি জিগ্যেস করলামঃ “আর শতকরা ১০০ হয়ে গেলে পরে”?
    “হু হু বাওয়া, তখন আবার ফুটো বেলুনের মত চুপসে আবার শতকরা পাঁচে ফিরে আসি”।
    আমি বললামঃ “সে কি, সে আবার হয় নাকি”? অমনি পেছন থেকে সেই উড়ন্ত মোষটা বিছছিরিভাবে খ্যা খ্যা করে হাসতে লাগল। তাকে দেখে বাঘটা ও চোখ টোখ বুজে, দাঁত ছিরকুটে করে, হেউ হেউ করে হেসে উঠল। আমি ভীষণ রেগে গিয়ে যেই তাদের বকতে গেছি, অমনি দেখি মোষটা হাসি থামিয়ে বলছেঃ “খেয়েছে, ভরবেগ আসছে”। বলার সাথে সাথে দেখি মোষটা সুন্দর গোলাপি পাখা মেলে ফ্যাত ফ্যাত করে উড়তে উড়তে পালিয়ে গেল। পেছন ফিরে দেখি ওমা, বাঘটা ও সুযোগ বুঝে কোথাও গা ঢাকা দিয়েছে। আমি জঙ্গলের মধ্যে একা একা কি করব ভাবছি, এমন সময় সামনের কচু গাছের সারি ফাঁক করে দেখি একটা চকচকে মাথা উঁকি দিচ্ছে।
    দেখতে দেখতে সেই মাথা কছুগাছ ঠেলে আমার সামনে এসে হাজির। দেখি একটা কালো, মোটা পান্তুয়ার মতন দেখতে একটা মানুষ। তার গায়ে একটা লেদার জ্যাকেট, পরনে ধুতি, আবার পায়ে মুগুরছাপ অজন্তা হাওয়াই। লোকটার মাথাটা ঠিক মঙ্গলগ্রহের মতন পরিষ্কার করে কামানো। আমার সামনে এসে একটু লজ্জা লজ্জা মুখ করে আধো আধো গলায় বলে উঠলঃ “আজ্ঞে, অধীনের নাম শ্রী ভরবেগ ভট্টাচার্য। আপনাকে দেখে যারপরনাই আহ্লাদিত হলাম। আপনার বন্দনা সঙ্গীত গাইছি, দয়া করে আশীর্বাদ করবেন”।
    এই বলে লোকটা হঠাত করে হেঁড়ে গলায় গাইতে শুরু করলঃ
    “ময়ূরপঙ্খী ছুঁচোবাজিরা-
    তোমার চরণে দেবে হাজিরা।
    খুলে যাবে ঢিলেঢালা পেন্টুল,
    সেলুনে বাজবে আল-জাজিরা।
    গরম তাওয়ায় নাচে পপকর্ণ-
    নরম হাওয়ায় কত লন্ঠন-
    দুলবে, ফুলবে আর ভাসবে,
    পুষ্পবৃষ্টি দেবে পাজীরা”।
    ভীষণ রেগে আমি লোকটাকে খুব করে ধমকাতে যাচ্ছি, হঠাত শুনি পেছনে বাজনার আওয়াজ। দেখি ঝোপের আড়ালে উড়ন্ত মোষটা গানের তালে দুলে দুলে বেহালা বাজাচ্ছে আর বনসাই বাঘ টা খুব আহ্লাদি আহ্লাদি হয়ে হাঁ করে হাততালি দিচ্ছে।
    ক্রমশঃ
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খারাপ-ভাল প্রতিক্রিয়া দিন