এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • কাক স্য প রিবেদ্না ও ভার তীয় উচ্চ ম ধ্য বিত্ত

    ananyo
    অন্যান্য | ০৯ জুলাই ২০১২ | ৮৪৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ananyo | 127.201.115.32 | ০৯ জুলাই ২০১২ ১০:২৪553194
  • চারিদিকে টপাটপ্ মরছে। এ এক আজব প্রতিযোগিতা। খবরের কাগজের সাংবাদিকেরা বড় গাছের তলায় ওত পেতে বসে দিনে কটা কাক মরছে তার খবর যোগাতে।কাকেদের মাথা থ্যাঁতলানো কিনা? গড় বয়স কত? তারা কিসে মোলো- বজ্রপাত না বাজপাখি? চ্যানেলে চ্যানেলে 'বঞ্চিত ভাইদের' জমজমাট তরজা; মানুষের মৃত্যু নিয়ে এত মাতামাতি আবার হয়না! সে সম্পোক্কে ঔ চ্যানেল আর ঐ বানচো----- ক্ষমা করবেন, ঔ দিদির ভাইদের বক্তব্য আলাদা আলাদা।
    এরা যাবতীয় অকালকুষ্মান্ডতা ও ধাষ্টামো চেপে রাখার জন্য মুখের দাড়ি,চোখের মোটা ফ্রেমের চশমা,হাতের হোল্ডে হুইস্কি আর মেইনল্যান্ড চিন বা ওয়েস্টল্যান্ড আমেরিকা অথবা মুখ-গ্রন্থের দেশ-কাল- সীমানা পেরিয়ে কোনো বিষয়ে অবিরাম জ্ঞান বর্ষণ করে সময় এর ধর্ষণ করে যেতে পারে অনর্গল; প্রয়োজনে ঘরে বসে শুধু বোকা বাক্স বা ইন্টারনেট দেখেই কাউকে দোষী-নির্দোষ, মাওবাদী বা কামাওবাদী, মার্কসবাদী বা ফুকোবাদী মায়ে ভারতীয় সমাজের শ্রেণী বিশ্লেষণ ও করে ফেলতে পারে। অবসশ্য যদি বিষয় একটু গুরুপাক বা অসুবিধাজনক হয় তাহলে খাবার টেবিলে সবটা ঢেকুরের সাথে বাতাসে মেলাতে কষ্ট হয়। যেটুকু হজম হলো ভালো, আর যেটুকু হলনা সেটা নিয়ে পরের দিন সক্কাল সক্কাল হাউসিং কমিটির সেক্রেটারীর সাথে বাজারে থলি দুলিয়ে আবার জাবরকাটা শুরু----
    এই হলো গিয়ে আমাগো মহান দেশের মহান মধ্যবিত্ত, তাদের মহান কীর্তিকলাপের ওপর আরেকটু অনুবীক্ষণের নজর চালানোর উদ্দেশ্যে ও আরেকটু পাকা ধানে মই দেওয়ার জন্য নিচের প্রবন্ধটা লেখা হয়েছে। ইংলিশেই আসে, চাপ নিবেন না -অজ্ঞানতা আবার আশিব্বাদ কিনা ------
    http://toanewdawn.blogspot.in/2012/07/ignorance-is-bliss-brief-retrospection.html
  • rupam deb | 127.201.121.41 | ০৯ জুলাই ২০১২ ১৯:৫৪553195
  • ঠিক ঠিক।।।
  • মঙ্গলধ্বনি | 68.97.205.175 | ১০ জুলাই ২০১২ ০৫:৫০553196
  • আমরা একটি রাষ্ট্রের বিলোপ সাধন করব- যেটা নৈরাজ্য নয় :: অরুন্ধতি রায়
    মূল লেখা: http://www.mongoldhoni.net/2012/07/09/we-will-end-up-in-a-state-of-not-anarchy-arundhati-roy/

    অনুবাদ: আরিফ ইসলাম

    অরুন্ধতি রায়ের মত একক ভাবে ভারতের সমালোচনা এ যাবৎ কাল পর্যন্ত এতটা হয়নি। বলতে গেলে তিনি এমন একটা যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন যার শুরু হয় পোখরান’দের সাথে, যেটা পরবর্তিতে নর্মদা’র দিকে সরে যায় এবং অন্যান্য বিদ্রোহ থেকে শুরু করে গণ-সংগ্রাম ও মাওবাদীদের জনযুদ্ধ পর্যন্ত প্রসার লাভ করে। তিনি তার লেখার মাধ্যমে ভারতের সরকার ও সরকারের পোষ্য অভিজাতশ্রেণী, কর্পোরেট নামক দৈত্যদের এবং সাম্প্রতিক সময়ের আন্তর্জাতিক অর্থসংস্থান ও পুঁজিবাদের সম্পূর্ণ গঠনকে চ্যালেঞ্জ করেছেন। আদালত অবমাননার দায়ে তাকে ২০০২ সালে একদিনের জন্যে জেলে যেতে হয় এবং ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত কাশ্মির বিষয়ক ‘আজাদি’ই একমাত্র পথ’ (Azadi—the only way) শিরোনামে একটি সেমিনারে অন্যদের সাথে মিলে ভারত বিরোধী বক্তৃতা দেয়ার অভিযোগে অরুন্ধুতি রায়’কে অভিযুক্ত করে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করা হয়।
    পাণিনি আনন্দ’র কাছে দেয়া অরুন্ধুতি রায় এর সাক্ষাতকারের চুম্বক অংশ নিচে তুলে ধরা হলো:

    প্রশ্ন: রাষ্ট্রদ্রোহ কিংবা বেআইনী কার্যক্রম (প্রতিরোধ) আইন, অথবা, AFSPA (Armed Forces (Special Powers) Act) এর মত আইন, যা বৃহত্তম গণতন্ত্রের নামে দালালী করে থাকে; এগুলোর সম্পর্কে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী?
    অরুন্ধতি: আপনি ‘দালাল’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন বলে খুশি হলাম। ভারতের গণতন্ত্র ব্যাখ্যা করতে গেলে এটা একটা উপযুক্ত শব্দ। অবশ্যই এটি মধ্যবিত্ত শ্রেণীর গণতন্ত্র। কাশ্মির অথবা মণিপুর বা ছত্তিশগড়ের মতো জায়গায় গণতন্ত্রের নাম-গন্ধও নেই। এমনকি কালো বাজারেও এই গণতন্ত্রের ছোঁয়া পাওয়া যায় না। কতগুলো আইন আছে, যেমন ইউএপিএ [UAPA (Unlawful Activities (Prevention) Act)], যা মূলতঃ ইউপিএ [UPA (United Progressive Alliance)] সরকারের পোটা [POTA (Prevention of Terrorist Activities Act)]-এর সরকারি সংস্করণ মাত্র আর আফসপা [AFSPA], এগুলো এমনই হাস্যকর রকমের কর্তৃত্বের দাবীদার যে, আইনগুলো লোকজনকে আটক, এমনকি শাস্তির মেয়াদ উত্তীর্ণ হবার পরেও তাদেরকে হত্যা করতে রাষ্ট্রকে সমর্থন করে। স্বাভাবিক কারণেই এদেরকে গণতন্ত্রের মধ্যে স্থান দেয়া যায় না। কিন্তু যতদিন ধরে তারা [এই গণবিরোধী আইন] মূলধারার মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মধ্যে প্রভাব ফেলছে না; যতদিন ধরে তারা মনিপুর, নাগাল্যান্ড বা কাশ্মিরের মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে, অথবা হতদরিদ্র বিরুদ্ধে কিংবা মূলভূখণ্ডের মুসলমান ‘সন্ত্রাসী’দের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে; ততদিন পর্যন্ত এটাকে কেউ খুব বেশি কিছু মনে করবে বলে মনে হয় না।

    প্রশ্ন: জনগণ রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পরছে, নাকি রাষ্ট্রই তার জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়ে পরছে? ’৭০-এর জরুরী অবস্থার সময়কাল; অথবা লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়া সংখ্যালঘু, যা পূর্বে ছিল শিখ’রা, এখন মুসলিমরা; এ বিষয়টাকে আপনি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন?
    অরুন্ধতি: কিছু লোক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যাচ্ছে। আর রাষ্ট্র তার অধিকাংশ নাগরিকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করেছে। ’৭০-এর জরুরী অবস্থা নিজেই একটি সমস্যা হয়ে দাড়িয়েছিল; কারণ ইন্দিরা গান্ধি’র সরকার নির্বোধের মতোই মধ্যবিত্তশ্রেণীকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছিল, যথেষ্ট বোকামি করেছে নিম্নবিত্ত আর ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিতদের সাথে মধ্যবিত্তদের মিলিয়ে ফেলে।
    বর্তমানে দেশের অধিকাংশ অংশেই ‘জরুরী অবস্থার’ মতোই কঠোর অবস্থা বিরাজ করছে। কিন্তু এই অবস্থা রাষ্ট্রীয় বাহিনীর মহড়া আর শক্তি প্রদর্শনের ওয়ার্কশপে পরিণত হয়। যা তাদের আরো দক্ষ, আরো আগ্রাসী করে তোলে। আমি আগেও বলেছি: একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র গঠনের শুরু থেকে ভারত সরকার সৃষ্ট যুদ্ধগুলোর দিকে লক্ষ্য করুন; উদাহরণস্বরূপ দেখুন, যখন সেনাবাহিনী তার ‘নিজস্ব’ জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক দিল, যেমন, নাগাল্যান্ড, আসাম, মিজোরাম, মনিপুর, কাশ্মির, তেলেঙ্গানা, গোয়া, বঙ্গ, পাঞ্জাব এবং (শীঘ্রই আরো সংযুক্তি আসছে) ছত্তিশগড়ে, তাহলে অন্তত এতটুকু বুঝতে পারবেন, এটা একটা ক্রমাগত যুদ্ধরত রাষ্ট্র। এবং সর্বদাই আদিবাসী জনগণ, খ্রিষ্টান, মুসলিম, শিখ প্রভৃতি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে; কখনোই মধ্যবিত্ত, উচ্চ-বর্ণের হিন্দুদের বিরুদ্ধে নয়।

    প্রশ্ন: কিভাবে রাষ্ট্র এককভাবে সহিংসতার চক্র সংযত রাখবে যদি না বাম ‘সন্ত্রাসী দলগুলোর’ বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ না নেয়? পদক্ষেপ না নিলে কী অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিপন্ন হবে না?
    অরুন্ধতি: আমার মনে হয় না, ‘সন্ত্রাসী দলগুলোর’ বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়া উচিত হবে না- এ নিয়ে কোন ব্যক্তি ওকালতি করছে, এমনকি ‘সন্ত্রাসীরা’ নিজেদের জন্যেও করছে না। সন্ত্রাস বিরোধী আইন কাদের উপর প্রয়োগ করা হবে তারা এই নিয়ে কোন প্রশ্ন তুলেনি। তাদের যা করার তারা তা করছে, তারা এটা ভালোভাবে জানে এর ফলাফল কি হবে, আইনত নাকি অন্যপন্থায়। তারা তাদের আক্ষেপ প্রকাশ করছে এবং এমন একটা সিস্টেমের আমূলে পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম করছে যার আপাদমস্তক অবিচার আর অসাম্য দিয়ে মোড়া। তারা নিজেদেরকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে দেখে না। যখন আপনি ‘সন্ত্রাসী’ বলেছেন, যদি আপনি CPI (Maoist) কে নির্দেশ করে বলেন, যদিও আমি মাওবাদী আদর্শ সমর্থন করি না, তবুও অবশ্যই আমি তাদেরকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে দেখি না। আমি স্বীকার করছি, তারা সশস্ত্র, তারা আইন বহির্ভুত। কিন্তু তারপর যখনি কেউ কর্পোরেট রাষ্ট্র ঠুঁটো জগন্নাথদের বিরোধিতা করেছে তাকেই এখন মাওবাদী আখ্যা দেওয়া হয়, যেখানে কিনা তারা মাওবাদীদের অন্তর্ভূক্ত হওয়া তো দূরের কথা, এমন কি মাওবাদী আদর্শকে পর্যন্ত সমর্থন করে না! নিষিদ্ধ সাহিত্যকে পুঁজি করে সীমা আজাদ’এর মত মানুষকেও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। তাহলে এখন ‘সন্ত্রাসীর’ কী ব্যাখ্যা দাঁড় করাবেন আপনি, ২০১২ সালে? মূলতঃ অর্থনৈতিক নীতির কারণে এই বিপুল বৈষম্য, এই ক্ষুধা, এই বাস্তুচ্যুতি, আর এগুলোই অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিপন্ন করছে- যে লোকগুলো এই নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে আর যাই হোক তারা অভ্যন্তরীন নিরাপত্তা বিপন্ন করছে না। আমরা কী রোগের উপসর্গ নাকি রোগ প্রতিরোধ করতে চাই? রোগটা “সন্ত্রাসবাদ” নয়। এটা সমাজের আগাগোড়া মোড়া অবিচার। এমনকি আমরা যদি একটি গ্রহণযোগ্য ন্যায়ের সমাজও গড়ে তুলি, নিশ্চিতভাবে সেখানেও মাওবাদীদের অস্তিত্ব থাকবে। ঠিক তেমনি অন্যান্য ‘চরমপন্থী’ দলগুলোও, যারা সশস্ত্র প্রতিরোধ, অথবা সন্ত্রাসী হামলায় বিশ্বাসী, তারাও টিকে থাকবে। কিন্তু তাদের আজকের মতো সেই জনসমর্থন সমর্থন থাকবে না। একটি দেশ হিসেবে আমাদের নিজেদের প্রতি লজ্জিত হওয়া উচিত এই অশ্লীলতা, এই দৈন্যতা এবং প্রকাশ্যে ও গোপনে জাতিগত ও ধর্মীয় গোড়ামী সহ্য করার জন্যে, যেগুলো আমরা প্রতিনিয়তই চারপাশে দেখছি। (প্রধানমন্ত্রী পদে নরেন্দ্র মোদি! সুস্থ মস্তিস্কে কী কেউ এমনটি কল্পনা করতে পারবে?) আমরা ভান করা পর্যন্ত বন্ধ করে দিয়েছি যে আমাদের ন্যায়বিচারের বোধটুকু রয়েছে। সমস্ত কাজেই আমরা সবাই কর্পোরেশন আর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নতজানু হয়ে করে আছি।

    প্রশ্ন: রাষ্ট্র কী ফোনে আড়ি পাতা কিংবা সোশ্যাল নেটওয়ার্কে আক্রমণের মাধ্যমে অরওয়েলীয় বিগ ব্রাদার এর মত আচরণ করছে?
    অরুন্ধতি: সরকার এতটাই নির্লজ্জ হয়ে গেছে যে, আমাদের প্রত্যেকের উপর সবসময় গোয়েন্দাগিরি করার জন্য অনুমতি দিয়েছে। যদি এর বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত কোন প্রতিবাদ দেখা না যায়, তবে কেন তা (গোয়েন্দাগিরি) করা হবে না? সকল ক্ষমতাসীন প্রতিষ্ঠানের প্রকৃতি হল জনগণকে নিয়ন্ত্রনাধীন রাখা, এটাই নয় কী? যখনি পুরো দেশ আরও ধর্মীয় ও রক্ষণশীলতায় পরিণত হচ্ছে; লক্ষ লক্ষ মঠ ও মন্দির আর মসজিদ ও চার্চ পরিদর্শন করছে লক্ষ লক্ষ মানুষ, প্রার্থনা করছে- ভগবান কিংবা অন্য কেউ তাদের অসুখী জীবনে সুখ দান করবে। ঠিক তেমনি আমরা রোবটের যান্ত্রিক যুগে প্রবেশ করছি, যেখানে কম্পিউটার প্রোগাম করা কোন যন্ত্র আমাদের সবকিছু নির্ধারণ করে দেবে, আমাদেরকে নিয়ন্ত্রণ করবে সম্পূর্ণরূপে- তারাই নির্ধারণ করে দিবে কোনটা নৈতিক আর কোনটা অনৈতিক, কি কি ক্ষতিপূরণযোগ্য সদৃশ্য ক্ষতি গ্রহণযোগ্য আর কোনটা নয়। ধর্মীয় বাণী ভুলে যান। কম্পিউটারই সিদ্ধান্ত নেবে কোনটা সঠিক আর কোনটা ভুল। বর্তমানে নজরদারীর জন্যে এমন কিছু ক্ষুদ্রাকারের ডিভাইস (যন্ত্রাংশ) তৈরি হয়েছে যেগুলো আমাদের প্রতিটা পদক্ষেপ রেকর্ড করতে পারে। ভারতে এখনও আসেনি, কিন্তু শীঘ্রই আসছে, আমি নিশ্চিত। ইউআইডি [UID (Unique Identification Number)] এমনি একটি নিয়ন্ত্রণ ও নজরদারীর সম্প্রসারিত মাধ্যম, কিন্তু লোকজন তা পাওয়ার জন্যে একজনের উপর আরেকজন ঝাঁপিয়ে পড়ছে। চ্যালেঞ্জ হলো, কিভাবে তা কাজ করতে হবে; মনস্তাত্ত্বিক খেলা ও নজরদারীর এই পর্যায়ে এসেও কিভাবে এই প্রতিরোধ অব্যবহত রাখা যায়!

    প্রশ্ন: আপনি কেন মনে করেন, এখানে কারাগারে থাকা সংকটাপন্ন বিচারাধীনদের নিয়ে রাষ্ট্রের মধ্যে ব্যাপক জনগণের তেমন কোন প্রতিক্রিয়া নেই, মানুষ রাষ্ট্রদ্রোহ কিংবা এনকাউন্টার নিয়ে ব্যতিব্যস্ত? এই নন-ইস্যু কী কতগুলো মানবাধিকার সংগঠন দ্বারা তৈরী করা?
    অরুন্ধতি: অবশ্যই সেগুলো নন-ইস্যু নয়। এটা একটা বিশাল সমস্যা। হাজার হাজার মানুষ কারাগারে, হয় তারা রাষ্ট্রদ্রোহ অথবা UAPA এর আইনানুযায়ী অভিযুক্ত, বিস্তৃতভাবে বলতে গেলে তাদের উভয়কেই মাওবাদী কিংবা মুসলিম ‘সন্ত্রাসী’ সন্দেহ করা হয়। অত্যন্ত আপত্তিজনক যে তাদের সেখানে কোন আনুষ্ঠানিক অবস্থানই নেই। আমাদের সবাইকে অন্তত এই বোধটুকু নিয়ে যেতে হবে যেগুলো বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শনের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে আর ব্যক্তিগত মানবাধিকার কর্মীদের তাদের পৃথক পৃথক অঞ্চলে ক্রমানুসারে সাজানো তথ্য থেকে পেয়েছি। নির্যাতন হয়ে গেছে সরকার আর তার পুলিশ সংস্থা’র কাছে পুরোপুরি গ্রহণযোগ্য। এনএইচআরসি [NHRC (National Human Rights Commission)] এর একটি রিপোর্টে শুধুমাত্র গত এক বছরে ৩০০০ কারা মৃত্যু’র কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আপনি প্রশ্ন করছেন, কেন এখানে জনগণের তেমন প্রতিক্রিয়া নেই? কারণ, যারা প্রতিক্রিয়া দেখাবে, তাদের সবাইকে হয় কারারুদ্ধ, নয় হুমকি কিংবা সন্ত্রাসী বলে আখ্যা দেয়া হবে। এছাড়াও, এনজিওগুলোর মধ্যকার সহপরিচালনা ও অনৈক্য এবং রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন আর নজরদারীর বাস্তবতায় আমি জানি না এখানে গণ-আন্দোলনের কোন ভবিষ্যৎ আছে কিনা। হ্যাঁ, আমরা আরবের ‘বসন্তকালের’ দিকে চেয়ে থাকি, কিন্তু একটু গভীরভাবে তাকিয়ে দেখুন, সেখানে কিভাবে মানুষগুলো ব্যবহৃত হয়েছে এবং খেলার পুতুলে পরিণত হয়েছে। আমি মনে করি, আসছে বছর বিদ্রোহ, গণ প্রতিরোধের উপরে প্রধান্য পাবে। এবং দুর্ভাগ্যবশত, “সন্ত্রাসবাদ”ই হলো সেই বিদ্রোহের তীব্রতম রূপ।

    প্রশ্ন: রাষ্ট্র প্রদত্ত আইন, একটি সক্রিয় পুলিশ বাহিনী, গোয়েন্দা বাহিনী, এমনকি সশস্ত্র বাহিনী ব্যতিত আমরা কী অরাজকতায় পর্যবসিত হব না?
    অরুন্ধতি: আমরা একটি রাষ্ট্রের বিলোপ সাধন করব- যেটা নৈরাজ্য নয়, কিন্তু যুদ্ধ চলবে যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা গণমানুষের ক্রমবর্ধমান প্রকটাকার সংকট মোকাবেলা করতে পারছি। যখন আপনি ধনীদের সেবার জন্যে আইন তৈরি করবেন, যে আইন তাদের সম্পত্তি ধরে রাখতে সাহায্য করবে, আরও এবং আরও সমৃদ্ধ করবে, তখনি ভিন্নমত পোষণ করা এবং বেআইনি কার্যকলাপ হবে সম্মানজনক, তাই না? অবশেষে আমি এই বিষয়ে নিশ্চিত নয় যে, আপনি লক্ষ লক্ষ মানুষকে দীন-দরিদ্র করা চালিয়ে যাবেন, তাদের জমি, জীবিকা চুরি করে শহরের দিকে ঠেলে দেবেন, বস্তি উচ্ছেদ করে তাদেরকে আবার ধাক্কা দেবেন আর এই প্রত্যাশা আপনি করতে পারেন সেনাবাহিনী, পুলিশ আর কারাগারের সাহায্যে খুব সহজেই তাদের ক্রোধ দন্তমূল থেকে অপসারণ করতে পারবেন। কিন্তু সম্ভবতঃ আমি ভুল। হয়তো আপনি তাদেরকে ক্ষুধার্ত রাখতে পারেন, কারাদণ্ড দিতে পারেন, হত্যা করতে পারেন। এবং মানুষের মুখোশে এটাকে বিশ্বায়ন বলে উচ্চারণও করেন।।

    (এই সাখাৎকারটি “রেভল্যুশনারি ফ্রন্টলাইন” থেকে নেওয়া হয়েছে)

    মূল লেখা: http://www.mongoldhoni.net/2012/07/09/we-will-end-up-in-a-state-of-not-anarchy-arundhati-roy/
  • রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য | 233.223.134.27 | ১৬ জুলাই ২০১২ ২২:২৭553197
  • ananyo বাবু
    আপনার একটা লেখা থেকে বেশ কিছু ঝেড়ে একটা প্রবন্ধ লিখেছি, গৌহাটি ধর্ষন কাণ্ডের জন্য । ওটা মালদার একটা সাপ্তাহিকে ছাপা হবে । টোকা বা প্লেগিয়ারিজম অমার্জনীয় অপরাধ । তবে, আপনার অই লাইন গুলো আমি টুকলী করতে বাধ্য হয়েছি।
    আপনার এই অংশটার থেকে ঝেড়েছি :-
    "চারিদিকে টপাটপ্ মরছে, ধর্ষণ হচ্ছে। এ এক আজব প্রতিযোগিতা। খবরের কাগজের সাংবাদিকেরা বড় গাছের তলায় ওত পেতে বসে থেকে, দিনে কটা কাক মরছে তার খবর যোগাচ্ছেন। কাকেদের মাথা থ্যাঁতলানো কিনা? গড় বয়স কত? তারা কিসে মোলো- বজ্রপাত না বাজপাখি? চ্যানেলে চ্যানেলে 'বঞ্চিত ভাইদের' জমজমাট তরজা।"
    কাতর আবেদন ছিল আপনার কাছে ।
    আমি কি এখন লেখাটা পাঠাতে পারি?
    ইতি
    রামকৃষ্ণ
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। চটপট মতামত দিন