এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • দ্রিঘাংচরিত

    Sam
    অন্যান্য | ০৯ জানুয়ারি ২০১২ | ৮০৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Sam | 117.192.235.177 | ০৯ জানুয়ারি ২০১২ ১৯:২৬516507
  • দ্রিঘাংচরিত

    . জিগ্গুরাট

    জিগ্গুরাট কথা টা শুনেছে অভিমন্যু তালুকদার, অন্তত ছোটবেলায় পড়েছে কোনো ইতিহাস বইতে. কোন ইতিহাস বই, কাদের ইতিহাস, কোথায় পাওয়া যায়, সে সব অবশ্য মনে নেই. থাকলে সে কি insurance এর agent হয়ে ঘুরত? শুভদীপ লাহিড়ি র মত bike এর পেছনে বউ কে নিয়ে ঘুরত, যে সে বউ না, ফিনফিনে সিল্ক এর শাড়ি পরা, যাকে বলে একদম ডাঁসা জিনিস. আর বউ কে পেয়ে শুলো র মুখ টা ও দেখার মতন, যেন ফ্রী তে এক packet বিড়ি পেয়ে গেছে, যখন খুশি টানবে.

    যাক গে, কথা টা হলো যে জিগ্গুরাট, আর সেই জিগ্গুরাট এর মতন দেখতে একটা বাড়ি এই হবিবপুর এ খুঁজে পাওয়া যে সে ব্যাপার না. চা এর দোকানের তারক মন্ডল ও বলে দেয় নি, এই জিগ্গুরাট এর মত বাড়ি টা কোথায় পাওয়া যাবে? সে কি হবিব্‌পুরে? না রানাঘাটে? না বলাগড়ে? তারক মন্ডল এর চা এর দোকান টা রেল লাইন এর ধারে, যেখানে একটা লেভেল ক্রসিং আছে. ঐ দোকানে রোজ সন্ধ্যেবেলা যায় অভিমন্যু, ওটা ই সন্ধ্যাবেলার ঠেক. আগে লোটন, রাকেশ, জয়ন্ত এরা সব আসত, একটু চা, দুটি ফ্লেক, দুটি বিড়ি খেতে, আর চলত একটু আধটু PNPC , কিছু পানুবাজি, এই সব. কিন্তু মাঝে ইলেকশন টা বেধে যাওয়ার পর থেকে ই আর কারোর দেখা মেলে না. অভিমন্যু শুনেছে লোটন এখন সরিত হালদার এর হয়ে কাজ করে, তার সাথে ঘোরাফেরা, ওঠা বসা, দলের পোস্টার সাঁটা. রাকেশ SSC র জন্যে পড়ছে আর জয়ন্ত পড়েছে রানাঘাট কলেজের এক মাগী র পাল্লায়. জয়ন্ত র জন্যে ভারী দু:খ হয় ওর. ছেলে টা পড়াশোনা তে নেহাত খারাপ ছিল না, মাঝে মাঝে তেড়েফুঁড়ে উঠে অনেক পরীক্ষা তে ভালো নম্বর তুলে ফেলত, আবার কখনো ল্যাদ খেয়ে বসে থাকত. এখন যে প্যাঁচ এ পড়েছে, তার থেকে ওকে বাঁচানো খুব চাপের ব্যাপার, আর জেনেশুনে এরকম man -eater এর পাল্লায় যে পড়ে, তাকে বাঁচানো অন্তত অভিমন্যু র দায়িত্ব নয়.

    . অশনি সংলাপ

    পরশু দিন তারক মন্ডল এর দোকানে বসে একটা লেবু চা হাতে নিয়ে ফ্লেক টা সবে ধরিয়েছে আতা (বলতে ভুলে গেছি, অভিমন্যু তালুকদার এর ডাকনাম আতা, ঐ নাম এ ই সবাই আজকাল ওকে চেনে), নভেম্বর মাস এর সন্ধ্যে, বাইরে একটু কুয়াশা র হিন্ট, হালকা ঠান্ডা র আমেজ, অন্ধকার টা সবে কামড় বসাতে শুরু করেছে, কিন্তু এখনো রাস্তা র আলোগুলো জ্বলে ওঠেনি. বাইরে রেল লাইন দিয়ে সন্ধ্যের রানাঘাট লোকাল টা চলে যাবার পর ই সেই সিরিঙ্গে মতন লোক টা কে দেখতে পেল আতা. লোকটা র চেহারা মোটে ও মনে রাখবার মতন নয়. সরু লম্বা চেহারা, গায়ে একটা ফুলহাতা জামা, তলায় ধুসর প্যান্ট, মাথায় কাঁচাপাকা চুল তেল দিয়ে ব্রাস করা, নাকের নিচে একটা অনিল কুম্বলে র মত গোঁফ. লোকটা এদিক ওদিক তাকিয়ে ই টুক করে চা এর দোকানের গুমটি তে ঢুকে পড়ল, তারপরে তারক কে দেকে ফিসফিস করে কি বলতে থাকলো. তখন ই আতা র বোঝা উচিত ছিল যে মাল টা সুবিধের না, এর সাথে জড়িয়ে পড়লে পড়ে পস্তাতে হতে পারে. কিন্তু চা এর দোকানের সেই গথিক পরিবেশ টা ই আতা কে একটু লাগামছাড়া করে দিয়েছিল মনে হয়. তারক লোকটা কে ছেড়ে এবার আতা র দিকে এগুলো. আতা বুঝতে এ পেরেছিল যে এবার কোনো প্রস্তাব আসবে. ভনিতা টোনিতা না করে তারক সোজা আতা র পাশে এসে বসলো.

    - কি আতাবাবু, কাজ পাইলা না অহনো?

    আতা বুঝলো এটা intro মাত্র. এবার কাজের কথা হবে. ওদিকে সিরিঙ্গে ছুঁচালো চোখে নজর রাখছে. সে ও একটু খেলিয়ে বলল: - না রে , কেন, তুই দিবি কাজ?

    - আরে কি ze কও, তুমি হইলা গিয়ে azent , ইংরিজি zana মানুষ, তগ আমি কি kaaz দিমু?
    - আরে বোকচোদ, বেশি না খেলিয়ে বলে ফেল ঐ মাল টা কি বলছে.
    -দ্যাখলে ত, তোমার বুদ্ধি, ঠিক ধৈর‌্যা ফেলায়সে্‌সা.
    -হুম, কাজ টা কি বল.
    -মানে আমি অত zani না, অশনি দা বৈল্লেন আপনাগো zanaitekaaz আসে. অহন আপনি razi থাইকলে অগ সাথে zaan , কথা বৈল্ল্যা দ্যাহেন.
    -অশনি? মানে ঐ সিরিঙ্গে টা?
    -হ.

    আতা র life এ এরকম joboffer কোনদিন দ্যাখে নি. সিনেমা তে দেখেছে smuggler রা এইভাবে নিরীহ লোকজন কে ফাঁসে. কিন্তু এটা সিনেমা নয়, আর এই শহরতলি তে লোকজন politician দের হাতে ফাঁসে, smuggler দের হাতে নয়. সে উঠে গিয়ে সিরিঙ্গে টা র পাশে বসলো:

    -দাদা কি এখানের?
    -না, বগুলা থেকে আসছি.

    লোকটা র গলার আওয়াজ শুনে আরেকটু হলে ই পড়ে যাচ্ছিল আতা. ভীষণ সরু আর কর্কশ গলা. একটা মুরগি র গলা কেটে মাইক এ ধরলে যেরকম আওয়াজ শোনা যাবে, অনেকটা সেই রকম.

    -তআ কাজ টা কিরকম? বে-আইনি কি?
    -কাজ টা আপনাকে দিয়ে হবে কি না সেটা পরিষ্কার করার পর ই নই details এ জানবেন.
    -তআ ত হলো, কিন্তু কাজ টা কি সেটা না জানলে কি করে বলি?
    -বেশ ত, ধরুন গিয়ে কাজ টা কে আমরা বলি ভাব-প্রক্ষেপন.
    -বাহ, বেশ মজাদার শোনাচ্ছে ত. একটু বুঝিয়ে বলবেন?
    -মানে আমাদের কাজ হলো ভাব এর evolution ঘটিয়ে একটা ভাষা আর চিন্তাধারার বিপ্লব আনা. আমি বা আপনি বা সাধারণ মানুষ যা চিন্তা করেন, সেটাকে একটু তুবরিয়ে নতুন ভাবধারা বানানো.
    -দাদা কি অধ্যাপক?
    -না, আমাদের বলে বালিমিত্র. যেমন হলো বিশ্বামিত্র. আমরা তাদের ই legacy বহন করে চলেছি. আমাদের কাজ baalification.
    -সেটা কি?
    -সেটা হলো ভালো ভালো কথাবার্তা কে তুবরিয়ে একটু আধটু বাল এর মত দাঁড় করানো. আমাদের একমাত্র লক্ষ্য ই হলো মানুষের ভাবের ঘরে চুরি করে সুন্দর কেশরাশি কে কুঞ্চিত বাল এ পরিবর্তিত করা. সেই পৌরানিক বিশ্বামিত্র থেকে evolution হয়ে চালুমিত্র, ঝান্টুমিত্র ইত্যাদি বিভিন্ন স্তর এর মধ্য দিয়ে এসে আমরা এখন বালিমিত্র.
    -এই baalification কি? কি করে করেন? একটু উদাহরণ দিন.

    আতা র এতক্ষণে বদ্ধমূল ধারণা হয়ে গেছে যে এই ভদ্রলোক কোনো পাগলা গারদ থেকে এসেছেন. কিন্তু সিরিঙ্গে থামাথামি র লক্ষ্মন না দেখিয়ে সগৌরবে মহিমা প্রচার করতে থাকলো:

    -ধরুন কেউ গান গাইছেন: সে আমার ছোট বোন, বড় আদরের ছোট বোন. এখন আমরা, বালিমিত্রেরা ভাব-ক্ষেপনের মাধ্যমে তার মগজে কেবল ই ঢুকিয়ে দিতে থাকব এই লাইন টি: সে আমার ছোট পোঁদ, বড় বাঁদরের ছোট পোঁদ. কিছুক্ষণ ঠিক গাইবার পড়ে দেখবেন তিনি এই লাইন টি ই আওড়াতে থাকবেন. অতএব আমাদের উদ্দেশ্য সফল, ভাষা বিপ্লবে একধাপ অতিক্রান্ত.

    আতা র মজা লাগছে, সে আর একটু খেলালো.

    -মানে আপনারা ফ্যাতাড়ু জাতীয়?
    -নাহ, তেনারা physically মারেন, আমাদের কাজ মনে. আমরা উড়তে ও পারি না. কিন্তু আমাদের ইচ্ছাশক্তি সাংঘাতিক. এই মুহুর্তে আপনার মনে ভাব-ক্ষেপন করতে পারি. দাঁড়ান.

    সিরিঙ্গে চোখ বুজে দুলে দুলে কি আওড়াতে থাকলো. আতা এইবারে ঘাবড়িয়ে গেল. কে যেন তার মাথার মধ্যে বলতে শুরু করেছে:

    শিখে রাখ baalification ,
    ধন্য বলবে সুধীজন.

    এই একটা লাইন তার মাথার মধ্যে বার দশেক দুরমুশ হবার পর আতা সিরিঙ্গে র পায়ে পড়ে গেল.

    -দাদা, আপনি ভগবান. একটা হিল্লে করে দিন.
    -সেই জন্যে এ ত এসেছি. আপনাকে দেখে ই চিনেছি potential বালিমিত্র. আপনি পারবেন. অনেক খিস্তিখেউর করেন ত? তাহলে এ হবে.baalification আপনার সহজাত. ও দেখে ই বোঝা যায়.
    -দাদা, তাহলে কাজ টা কি? বলুন, ত লেগে পড়ি.
    -লেগে ত পড়তে ই হবে. হাতে সময় বড় কম. ভাষা র বিবর্তন হওয়া কি চাট্টিখানি কথা? কিন্তু করতে হবে ই. বুঝলেন? কোনো নিস্তার নেই. তবে আপনার প্রাথমিক কাজ হচ্ছে জিগ্গুরাট টা খুঁজে বের করা.
    -কি?
    -জিগ্গুরাট, বুঝলেন, ঐ একটা বিরাট মতন বাড়ি. সিঁড়ি আছে. তাতে ই বালিমিত্র দের প্রধান শত্রু রা থাকে. আপনার কাজ আগে তাদের ফিনিশ করা.
    -দাদা প্রথমে ই একটু কঠিন হয়ে যাচ্ছে না? মানে একটু হাত টা পাকাই......
    -না না, ওটি হবে না. যাকে যা assign করেছেন গনাই বাবু, তিনি এক অন্যতম মহান বালিমিত্র. তাঁর কথা মানতে ই হবে. তবে একটা রক্ষাকবচ আছে, সেটা এই যে, কাগজে লিখে এনেছি. জিগ্গুরাট এর সামনে গিয়ে এই মন্ত্রটা বললে এ কেউ আপনার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না. এই নিন:

    আতা পাকানো কাগজ টা হাত বাড়িয়ে নিল. পাক খুলে দেখল চারটি লাইন:

    শারদ প্রাতের শিউলি ঝরা স্বপ্নে,
    বাঁদর বসিয়া হাগিলো তক্তপোষে-
    Holstein গাভীটি র পয়োধর-
    টিপে দিল কোনো অকালপক্‌ক্‌ব মোষে.

    আতা প্রানপনে মুখস্ত করতে থাকলো. সিরিঙ্গে আবার বলে উঠলো:

    -জিগ্গুরাট খুঁজুন. পেলে ই হবে. তারপর আমি আবার দেখা করব. মনে রাখবেন আমার নাম অশনি বোস, আর আমার নম্বর একাত্তর.

    . দ্রিঘাংচু পালা

    পরশুদিন এর সেই ঘটনা র পর থেকে ই আতা হন্যে হয়ে জিগ্গুরাট খুঁজে চলেছে. গোটা হবিবপুর আর রানাঘাট অঞ্চলের সব বড় বড় বাড়ি চষেছে, অনেকবার রক্ষা-কবচ ও আউড়েছে, কিন্তু হ-হতোস্মি. কোথায় বালিমিত্র আর কোথায় তার শত্রু. সন্ধ্যে হওয়ার আগে এখন রানাঘাট এর নিস্তারিণী মন্দির এর সামনে র পুরনো ভাঙ্গা বড় বাড়িতে যাওয়ার প্লান আছে. বলা যায় না, যদি ওটা ই জিগ্গুরাট হয়.

    কামারপাড়া র মোড় থেকে সোজা গিয়ে সড়ক পাড়া র দিকে ঘুরল আতা. সন্ধ্যে হয়ে আসছে. রাস্তা র বাঁকে একটা ঝুপড়ি মত গাছ. তাতে লাল ফুল সন্ধ্যের অন্ধকারে কালো কালো দেখাচ্ছে. রাস্তা র আলোগুলো এখনো জ্বলেনি. হাতের ফ্লেকটা ছুঁড়ে দুরে ফেলে দিল আতা. ভালো লাগছে না. একটু tensed আছে. তার মধ্যে সকাল থেকে ঘুরে ঠিক করে খাওয়া ও হয় নি. গা টা একটু গুলাচ্ছে. গলি র মোড়ে বাঁক নিতে ই সেই শব্দ টা কানে এলো আতা র.

    ঠিক তার মাথার উপর থেকে ঝুপড়ি গাছ টা র মধ্যে থেকে কে যেন বলে উঠলো: ক্ব:.
    একটু থেমে উপরের দিকে তাকালো আতা. প্রথমে নজরে আসেনি অন্ধকারে, এখন একটু ঠাহর করতে ই দেখতে পেল গাছের পাতার মধ্যে গা ডুবিয়ে একটা কালো ধুমসো দাঁড়কাক বসে আছে. কাক টা আবার বলে উঠলো: ক্ব:.

    সহজাত reflex এর মত আতা র মুখ দিয়ে বেরিয়ে এলো: হলদে সবুজ ওরাং ওটাং, ইন্ট পাটকেল চিতপটাং.......

    কাক টা অমনি মানুষের মত বলে উঠলো: ঐ জন্যে এ তদের কিসসু হলো না বাপু. সব টুকে পাশ.

    আতা অনেক কষ্টে নিজেকে সামলে কোনমতে উচ্চারণ করলো: দ্রিঘাংচু....

    -হুম, আমাদের নিয়ে এইসব গুজব, সব ঐ তদের সুকুমার খুড়ো র কীর্তি. জেনে রাখ রে অপগন্ড, ঐ সব হলদে সবুজ কারিকুরি তে কিছু ই হয় না.

    আতা সামলে উঠেছে. একটু শ্বাস নিয়ে বলল: - আপনারা ই কি তবে.....
    -ইয়েস, mydear বালখিল্য, আমরা ই দ্রিঘাংচু, তদের বালিমিত্র দের যম. তুই ত ছোঁড়া ভালো মানুষ, এইসব বালছাল নিয়ে মাথা ঘামাছিস কেন?
    -মানে ভাষা র বিবর্তন...ইয়ে...
    -আব্বে উল্লুক, ভাষা র আবার বিবর্তন কি রে? ও কি বালখিল্য দের হাত ধরে হবে? ও আপনাআপনি হবে রে উজবুক, তোকে কিসসু করতে হবে না তার জন্যে. ভেবে দেখ, ভাব-ক্ষেপন করলে কি হতে পারে? তর ছেলে তোকে বাবা না দেকে খানকি র ছেলে বলে গাল দিলে সইতে পারবি গর্ধভ?
    -না, তআ ত বটে ই......
    -বটে ফটে না, এটা ই সত্য. ঐ একাত্তরের হারামি অশনি টা তর brainwash মেরেছে বুঝলাম. তবে জেনে রাখ, আমরা থাকতে এসব হতে দেব না. আমাদের একটা নৈতিক দায়িত্ব আছে, বুঝলি, কোনো বাপ যাতে তাদের ছেলেদের বানচোত না বলে, কোনো শিক্ষক ছাত্রদের উদগান্ডু না বলে, কোনো বোন তাদের ভাই দের যাতে চুদি র ভাই না বলে ডাকে, সে সব সামলাই আমরা. ঐ বালিমিত্র দের baalification এর দাবাই আমাদের কাছে. দেখ, তুই ছোঁড়া যদি চাস ত তর life এর হিল্লে করে দেব. কোনো বাল বালিমিত্র তর টিকি র ডগা টি ও ছুঁতে পারবে না.
    -সত্যি বলছেন? মানে খিস্তি মারি বটে, তবে এইসব জিনিস ভেবে দেখার ব্যাপার. আমরা এখনো এইসব এর জন্যে ready না. তবে যদি অশনি ধরে......
    -ও নিয়ে ভাবিস না. তোকে একটা মন্ত্র দেব আমি, অদৃশ্য হওয়ার মন্ত্র. ওটা বললে অশনি ত ছার, কোনো মাল তোকে দেখতে এ পারবে না, কুকুর বেড়াল ও না. তবে একটা কথা, আর কিন্তু বালিমিত্র দের দলে ভিড়তে পারবি নে.
    -কুছ পরোয়া নেই, আমি এখন তোমার সাগরেদ দ্রিঘাংচু দাদা.
    -শালা বাঙালি দের ঐ এক ফ্যাচাং, বিপদে পড়লে গান্ডু রা ও দাদা.
    -না না, সত্যি দাদা, এবারে মন্ত্র টা দাও.

    গাছের ডাল থেকে টুপ করে একটা পাকানো কাগজ আতা র মাথায় পড়ল. আতা উপরে তাকিয়ে দেখল ফাঁকা অন্ধকার গাছ, কেউ কোত্থাও নেই. রাস্তা র আলোগুলো ও জ্বলতে শুরু করেছে. আতা কাগজ খুলে দেখল লেখা রয়েছে:

    ইতনষ্ট ততভ্রষ্ট-
    লুঙ্গি পরা জরথ্‌থুষ্ট্র,
    পালের গোদা দুরাচারী-
    গোলাপী nylon মশারি,
    চোলি র পিছে cauliflower ,
    সবুজ রং এর zeropower.
    ছুঁচো বাজি জ্বালাও বরং-
    অং বং চং অং বং চং .

    চারিদিকে তাকিয়ে আতা দেখল, আশেপাশে কেউ নেই. না দ্রিঘাংচু, না অশনি বোস.

    . লুঙ্গি ত্যাগ

    এক সপ্তাহ কেটে গেছে. এখনো অশনি বোস এর দেখা পায় নি আতা. জিগ্গুরাট খোঁজা ও বন্ধ আছে এই ক দিন. তবে নতুন দ্রিঘাংচু মন্ত্র টা মুখস্ত করে রেখেছে আতা. একটা ফ্লেক ধরিয়ে জানলা দিয়ে দেশলাই কাঠি টা ফেলতে গিয়ে আতা খেয়াল করলো সামনে শুলো র বাড়ি র বেডরুম এর জানলা টা বন্ধ. নির্ঘাত শুলো র ডাঁসা বউ টা কাপড় ছাড়ছে. একটু ভাবলো আতা, ভাষা র বিবর্তন নয় তার দ্বারা হলো না, তাই বলে ধোয়া তুলসীপাতা ত আর সে নয়. আর ভাষা যাই হোক, রিপু গুলো কে ছাড়া স্বয়ং মহাপুরুষ রা ও পারে নি, পাতা ত নেহাত insuranceagent. ঘরের দরজা জানলা বন্ধ করে জামাকাপড় খুলে ফেলল আতা, তারপর চোখ বুজে দুলে দুলে ঘাড় নেড়ে আউড়াতে লাগলো:

    ইতনষ্ট ততভ্রষ্ট-
    লুঙ্গি পরা জরথ্‌থুষ্ট্র,
    পালের গোদা দুরাচারী-
    গোলাপী ..........................

  • achintyarup | 115.111.248.6 | ১০ জানুয়ারি ২০১২ ০০:১৬516508
  • ওরে দারুণ রে
  • ranjan roy | 115.118.229.69 | ১০ জানুয়ারি ২০১২ ০১:০৬516509
  • এতদিন ছিলে কোথা দূর্বাদলশ্যাম?
    যাই বলো বাপু, তব লেখা অতি ঘ্যাম!
  • Sam | 117.192.228.9 | ১০ জানুয়ারি ২০১২ ২০:৫৪516510
  • প্রগলভ নুনু - বৃত্তান্ত

    শুয়োরের বাচ্চাগুলো লিজ্জত পাঁপড় খেতে বসেছিল. সুন্দর একটা সুসজ্জিত কচুবনে বসে ওরা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সৌভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে নিহারিকা র নুনুসমৃধ্‌ধ চক্রান্ত কে প্রায় বিপথে ঠেলে দিয়েছিল, হঠাত ই বিনা মেঘে চর্যাপদ এর মত এসে পড়ল নুনু-দলপতি শ্রীমান গলকম্বল পান্ডে.

    ব্যাপারটা একটু ধাঁধালো ঠেকলে বিষদভাবে এর বর্ণনা দেওয়া দরকার. কাজে ই আমাদের ফিরে যেতে হবে ২৫ শকাব্দ পিছনে এমন এক যুগ এ, যেখানে রাজা ছিলেন সম্রাট লাঙ্গুলাহত লায়েক. তখন ছিল হিমযুগ, কিন্তু ice - cream পার্লার এ কেউ ই pedicure করাতে আগ্রহী ছিলেন না. নুনু সেনা র কোনো অস্তিঙ্কÄ ই ছিল না তখনের বন্ধুর ভূ-প্রকৃতি তে. মতাদর্শের মিল না থাকলে ও তখন বাঘ আর মেরু-ভল্লুক এক ঘাটে হিসি করত. সম্রাটের সেনা সংখ্যা ছিল ১০২৩ ৩/৪ আর নুনু-সেনা র প্রবর্তক শ্রী উত্‌কটেন্দ্র ভৌমিক তখন বাবলা গাছে র ঝুলন্ত বাদুড় এর গায়ে কাঠ পিপড়ে ছেড়ে দিতেন. এইভাবে ঝালে-ঝোলে-অম্বলে দিন কেটে যাচ্ছিল. সম্রাট রোজ সকালে লুঙ্গি পরে অসিযুধ্‌ধ করতেন আর অমাত্যেরা তেল মেখে গণসঙ্গীত গাইতেন. হঠাত ই ঘটে গেল সেই অভাবনীয় ঘটনা. আজ থেকে ঠিক ২৫ শকাব্দ আগে. যখন মহারানী চঞ্চুবতী সবেমাত্র এক গেলাস কুমরোফুল এর সরবত নিয়ে বাগানে বসেছেন, সখিগণ দুলে দুলে গাইছেন:

    আয় আয় মালবিকা,
    হাতে ধর চামচিকা,
    উঠোনে পাতিয়া পিঁড়ি মাজিবি দাঁত.

    সম্রাট তক্তপোষের ধারে দুই হাতে ভর দিয়ে কুলিকুচি করছেন. অমাত্যগণ পরস্পর এর দিকে চেয়ে চোখ টেপাটেপি মকশ করছেন. হঠাত ই উত্‌কটেন্দ্র ভৌমিক এর অন্তর্বাস এ কোনো দুষ্ট পিপীলিকা প্রবেশ করলো. শুধু প্রবেশ করে ই সে থামল না, নুনু সেনা র ভবিষ্যত একনায়কের জনন-দন্ডের অগ্রভাগে সে নিজস্ব কুকর্মের স্বাক্ষর রাখল. উত্‌কটেন্দ্র ভৌমিক এর ভবহ কান্না এক পক্ষকাল এর আগে থামল না. তার সুদৃশ্য জনন-দন্ড টি অগ্রভাগে পিপীলিকা স্বাক্ষর নিয়ে গদা র রূপ ধারণ করলো. এমতাবস্থায়, এটা অনুমান করা কঠিন নয়, যে এই ভবহ বিপর্যয় উত্‌কটেন্দ্র ভৌমিক কে বাধ্য করলো বানর-অবধ্য নুনু সেনা সৃষ্টি করতে. পরবর্তী ১০ শকাব্দ সেই নুনু সেনা র গড়ে ওঠার আর রাজ্‌দ্‌রহের ইতিহাস. কিন্তু সে এক অন্য গল্প.

    আজ নুনু সেনা র চরম কুচক্রী মধুচক্রাধিপত্নি র নাম নিহারিকা, যিনি রাজভক্ত শুয়োরের বাচ্ছা দের পাঁপড় দলন উত্‌সব ভন্ডুল করার এই চক্রান্ত রচনা করেছিলেন. ওরা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সৌভ্রাতৃত্বের মাধ্যমে নিহারিকা র নুনুসমৃধ্‌ধ চক্রান্ত কে প্রায় বিপথে ঠেলে দিয়েছিল, হঠাত ই বিনা মেঘে চর্যাপদ এর মত এসে পড়ল নুনু-দলপতি শ্রীমান গলকম্বল পান্ডে.

    তারপর? তারপরের ইতিহাস সুধু ই কচু-কাটার ইতিহাস.
  • ranjan roy | 115.118.215.195 | ১১ জানুয়ারি ২০১২ ০০:১০516511
  • রোজ অন্তত: একপাতা চাই!
  • kc | 178.61.96.29 | ১১ জানুয়ারি ২০১২ ০০:১৩516512
  • পচ্ছি।
    নুনি ফিরে আসছে।
  • Sam | 117.192.253.142 | ১২ জানুয়ারি ২০১২ ০১:৪০516513
  • নুনু-প্রেম

    এই সুরভিত কৃষ্ণাগিরি তে গুম্ফবতী দের খুব একটা দেখা মেলে না. নুনু সেনা দের একাংশ যখন কৃষ্ণাগিরি অতিক্রম করছিল, তখন সেই গুম্ফবতী দের দেখা পাওয়া গেছিল. উদ্ভিন্নযৌবনা সেই গুম্ফবতিদের কৃষ্ণ গুম্ফরাশি র প্রেমে যে কিছু নুনু সেনা পরেনি, একথা বলা ঠিক নয়. আজকের কাহিনী সেই নুনু-গুম্ফ প্রেম এর. এক অনুল্লেখিত ইতিহাস এর পাতার মত যা কাল এর commode এ ফ্লাশ করা হয়ে গেছে.

    নুনু সেনা র অভিন্নহৃদয় সেনানায়ক শ্রী গলকম্বল পান্ডে র আদেশে যখন নুনু সেনা রা গাত্রোত্থান করলো তখন সন্ধ্যাকালীন ঝালমুড়ি র মত বাতাস, কর্ণপটহে ঝড় তুলে হস্তিবাহিনী র অন্ডকোষ এর ফাঁক দিয়ে বয়ে চলেছে. কিঞ্চিত উষ্মা আর প্রগলভতার মধ্যে দিয়ে নুনু সেনাদের সন্ধ্যাকালীন শিশ্নাহ্নিক সেরে দক্ষিন নুনু র প্রধান শ্রীমান গুহ্য রতন একটা বানরের পুরীষের মতন রং এর পাথরের উপর বসে শ্বাস -মৈথুন এর প্রস্তুতি নিছিলেন, এমন সময় ঘটল সেই অঘটন, যা চিরদিন এর মত নুনু সেনাদের মাথা নেতানো পুই-আরোহীর মতন হেঁট করে দিল.

    গুম্ফবতী রা চিরকাল ই শক্তিশালিনী. এনাদের সুপরিপক্‌ক্‌ব দেহবল্লরী, সুপুষ্ট গুম্ফ এবং সুমধুর কন্ঠস্বর যে দেখেছে বা শুনেছে, সে ই প্রাত:কৃত্য ভুলে কোশাকুশি হাতে দুগ্‌ধ দোহন করেছে. সেই বিশেষ দিন টি র পৌন:পুনিক প্রাক্‌ক্‌বালে, গুম্ফবতী শ্রীমতি জম্বুকি প্রস্তরখন্ড নিয়ে উতে্‌ক্‌ষপণ মকশ করছিলেন. সকাল পেরিয়ে দুপুর ও দুপুর পেরিয়ে সন্ধ্যা হলো, যখন জম্বুকি তাঁর শেষ প্রস্তর্খন্দতি উতে্‌ক্‌ষপণ করলেন কৃষ্ণাগিরি র দিকে. আর ততক্ষনাত একটি ভনক চিত্‌কার ও পতন এর শব্দ তাঁকে সাময়িক বধির করে দিল.

    গুহ্য রতন ঠিক যে মুহুর্তে শ্বাস মৈথুনের জন্যে পরনের লুঙ্গি টি প্রসারিত করলেন, ঠিক সেই মাহেন্দ্রক্ষণে জম্বুকি প্রক্ষেপিত প্রস্তর খন্ড টি প্রচন্ড বেগে এসে লাগলো তাঁর বর্তুলাকার প্রজনন-স্থলী তে. পরক্ষণে ই প্রবল চিত্‌কার ও পতনের শব্দে কৃষ্ণাগিরি আন্দোলিত হলো. গুহ্য যখন চক্ষু উন্মেলিত করলেন, তিনি দেখলেন একটি পরমাসুন্দরী গুম্ফ.

    তারপর? তারপরের ইতিহাস কেবল প্রেমদান এর ইতিহাস.
  • Sam | 117.192.231.235 | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ২২:২৩516514
  • কবন্ধ শয়তান এর কাহিনী

    ঢং করিয়া একটা বাজিল. পার্ক স্ট্রিট এর একটি নিশিনিলয় হইতে এক সুদীর্ঘ ছায়া বাহির হইল. সেই ছায়া র এক হস্তে একটি সবুজ শিশি ও অন্য হস্তে প্রলয়্‌নাথ বিশী র সদ্য কর্তিত মুন্ড. কিন্তু দময় ভগবান এর অপূর্ব লীলাখেলায় সেই কর্তিত মুন্ড হইতে উষ্ণ শোনিতের পরিবর্তে "টপ টপ" শব্দে ঝরিতেছে প্রগাড় পীতবর্ণ হিসি. গোয়েন্দা কৃষ্ণকমল একটি সুউচ্চ গৃহের বাতায়ন হইতে সেই চলন্ত ছায়ার উপর তীক্‌ষ্‌ঞ নজর রাখিতেছিলেন. তাঁহার সুদৃশ্য মুখমন্ডল টি ঋষি কাপুর এর মুখোশে ঢাকা. চলন্ত ছায়া রাস্তা পার হইয়া একটি পুরাতন কালো রং এর মোটরগাড়ি র দিকে ধাবিত হইল. উত্তেজিত কৃষ্ণকমল পকেট হইতে একটি মিশি র কৌটা বাহির করিলেন. দেখিতে উহা নিরীহ একটি ইস্পাত এর কৌটা হইলে ও উহাতে কৃষ্ণকমল এর স্নাইপার খানি ভাঁজ করিয়া রাখা আছে. কৌটা খানি উপুর করিয়া কৃষ্ণকমল হাত এর উপর ধরিতে স্নাইপার খানি পাতলা রুমাল এর ন্যায় বাহির হইয়া আসিল. তিনি বাম হস্তে উহার অগ্রভাগ ধরিয়া একখানি প্রবল ঝটকা দিলেন...ততক্ষনাত পুরা স্নাইপার খানি কৃষ্ণকমল এর হাতে র উপর খুলিয়া আসিল.

    চলন্ত ছায়া গাড়ি র দরজা খুলিয়া হিসি মাখা মুন্ড টি পেছনের সিট এ রাখিয়া দিল. তাহার পর পকেট হইতে একখানি রুমাল বাহির করিল. তাহার পর সেই ছায়া নিজের মুন্ড টি দুহাতে ধরিয়া অনায়াসে ঘুরাইতে ঘুরাইতে খুলিয়া ফেলিল. ঠিক যেমন কেহ বম এর ঢাকনা খুলিয়া থাকে. এই পৈশাচিক দৃশ্য দেখিয়া কৃষ্ণকমল এর পশ্চাতে দন্ডায়মান প্রতুল এর মস্তকের প্রতিটা চুল খাড়া হইয়া উঠিল. কৃষ্ণকমল তাহা অনুধাবন করিয়া ইশারায় প্রতুল কে চুপ করিয়া থাকিতে বলিলেন. চলন্ত ছায়া নিজ মুন্ড টি অনায়াসে রুমালে বাঁধিল, এবং সামনের সিট এ যত্ন করিয়া রাখিল. কার্যত চলন্ত ছায়া এই সময় অন্ধ. এই সুযোগ এর সদ্ব্যবহার করিবে ভাবিয়া কৃষ্ণকমল তাঁহার স্নাইপার টি তাক করিলেন. প্রচন্ড "ঢিসুম" শব্দে রাত্রি র নিরবতা কে বিঘ্ন করিয়া স্নাইপার গর্জিয়া উঠিল.

    কিন্তু একি? কৃষ্ণকমল নিজ চক্ষু কে বিশ্বাস করিতে পারিল না. চলন্ত ছায়া ততক্ষনাত ঘুরিয়া অনায়াসে বন্দুকের গুলি টি দুটি আঙ্গুলে ধরিয়া ফেলিয়াছে. মুন্ডহীন, স্কন্ধকাটা সেই অপার্থিব জীব টি কোন দৈবশক্তি বলে বন্দুকের গুলি দেখিয়া ফেলিয়াছে. প্রতুলের হাত হইতে দূরবীন খানি লইয়া কৃষ্ণকমল ছায়া টি কে পর্য্যবেক্ষণ করিলেন. তখনি তাঁহার চোখে পরিল সেই অমানুষিক দৃশ্য টি. গাড়ি র পিছনের সিট এ রাখা বিশী র মুন্ড হইতে দুইখানি চক্ষু উত্‌পাটিত করা হইয়াছে. পিশাচসিধ্‌ধ সেই ছায়া কোনো শয়তান এর আশির্বাদে দুইখানি চক্ষু আপন অন্ডকোষে প্রতিস্থাপিত করিয়াছে. সেই ছায়ার নিম্নাঙ্গ সম্পূর্ণ উলঙ্গ এবং চক্ষু দুইখানি অন্ধকারে ব্যাঘ্রের চক্ষের ন্যায় জ্বলিতেছে. পার্ক স্ট্রিট এর সেই ভনক নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে ছায়া র নিম্নাঙ্গের দিকে দৃষ্টিপাত করে কৃষ্ণকমল শিহরিয়া উঠিল. ঠিক যেন একটি লম্বা নাসিকার দুই পার্শ্বে দুটি জ্বলন্ত হলুদ চক্ষু.... ঠিক যেন নরকের পুতিগন্ধময় অন্ধকার ভেদ করিয়া উঠে আসা শয়তান এর মুখমন্ডলের প্রতিফলন............................ ক্রমশ...
  • Sam | 117.192.226.98 | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১২ ২১:৫০516515
  • কবন্ধ শয়তানের কাহিনী - অন্তিম ভাগ

    গোয়েন্দা কৃষ্ণকমল শিহরিয়া দ্বিতীয়বার স্নাইপার তাক করিলেন কবন্ধ শয়তান এর দিকে. কিন্তু এইবারে সেই ছায়া আরো চঞ্চল, আরো সজাগ হইয়া উঠিয়াছে. উপরন্তু প্রথম বুলেট টি র আক্রমনে চকিত শয়তান টি মুহুর্মুহু অন্ডকোষ দুলাইয়া শত্রু র সন্ধান করিতেছে. নিশিথের সেই সূচিভেদ্য অন্ধকারে দোদুল্যমান অন্ডকোষ এর উপর দুটি পীতবর্নীয় চক্ষু ঝড়ের নৌকাবক্ষে দুটি অপার্থিব লন্ঠনের ন্যায় কাঁপিতেছে. গোয়েন্দা কৃষ্ণকমল ঘটনা র গুরুত্ব উপলব্ধি করিয়া দ্বিতীয়বার "ফায়ার" করিলেন না. বন্দুকের গুলিতে এই শয়তান মরিবার নহে. ইহাকে বোধ করিবার অন্য উপায় খুঁজিতে হইবে.

    ইতোমধ্যে সেই চলন্ত ছায়া মোটর গাড়ি টি তে উঠিয়া বসিয়াছে. কিন্তু কবন্ধ সেই ছায়ার দৃষ্টিশক্তি কেবলমাত্র অন্ডকোষে আবদ্ধ. কাজেই চালকের সিট এ ছায়াটি শীর্ষাসন এর ভঙ্গিতে বসিয়াছে ও দুই পা এর দ্বারা স্টিয়ারিং চালনা করিতেছে. এই দৃশ্য দেখিয়া প্রতুলের মূর্ছা যাইবার অবস্থা. পার্ক স্ট্রিট এর সেই রাত্রে অন্ধকার বৃখে্‌শর ছায়ার মধ্য দিয়ে এইরূপ চালক কোনো গাড়ি চালাইয়া গেলে অনেক পথিকের ই মূর্ছা কেন, হৃদস্পন্দন বন্ধ হইবার উপক্রম হয়. কৃষ্ণকমল অপসৃয়মান গাড়িটি র ছায়া র প্রতি চাহিয়া একটিমাত্র দীর্ঘশ্বাস ফেলিলেন.

    প্রতিপদ গুহের সন্ধানে যে সকল তান্ত্রিক ও দৈবশক্তি র আরাধক রা ছিলেন, সকলের সান্নিধ্যে ই আসিয়াছেন কৃষ্ণকমল. কিন্তু এইবারে তাহারা ও হতাশ করিলেন. কবন্ধ শয়তান কে মরিবার উপায় তো দূর অস্ত, কেহ তাহার বর্ণনা শুনিয়া ই মূর্ছ যাইলেন. কৃষ্ণকমল বুঝিলেন প্রতিপদ গুহ দোর্দন্ডপ্রতাপ বড়বাবু হইতে পারেন, কিন্তু কবন্ধ শয়তান এর নাম শুনিয়া ই তাঁহার মনে ভয় এর সঞ্চার হইয়াছে . অত:পর ভরসা একমাত্র উপস্থিত বুদ্ধি এবং প্রচন্ড সাহস. এই সাহসে ভর করিয়াই কৃষ্ণ এবং প্রতুল শহরের বাহিরে অবস্থিত লোমাগ্নি মহাশ্মশান এর দিকে যাত্রা করিলেন.

    লোমাগ্নি মহাশ্মশান অতীব ভবহ স্থান. বহুকাল পূর্বে এই স্থান অতীতের অত্যাচারী রাজা লোমদেব এর বধ্যভূমি ছিল. কালের বিবর্তনে উহা এখন মহাশ্মশান, কিন্তু সেই ভবহতা আজ ও বিদ্যমান. অমাবস্যা র নিশ্ছিদ্র অন্ধকারে সুবিশাল মহীরুহ হইতে অতীতের আর্তনাদ ঝড়িয়া পড়িতেছে. যাহারা মরিয়া ও মরে নাই, সেই সব অমানুষিক প্রেতাত্মাদিগের চারণভূমি এই স্থান. কৃষ্ণ এবং প্রতুল সভয়ে দেখিল কিছু বৃক্ষের উপর মানুষের অর্ধ-ভক্ষিত দেহাবশেষ ঝুলিতেছে, কভু বা চলিতে চলিতে পায়ের নিচে পড়িতেছে মানব উদর হইতে কর্তিত অন্ত্র-যকৃত-প্লীহা. চারিদিকে ভনক পূতিগন্ধ. উভয়ে অনুধাবন করিল নরক শব্দের আসল অর্থ.

    কিছুদুর অগ্রসর হইবার পর সহসা প্রতুল লক্ষ্য করিল অন্ধকারে দুটি হলুদ চক্ষু তাহার প্রতি নির্নিমেষে তাকাইয়া আছে. কোনরকম শব্দ করিবার আগে ই কবন্ধ শয়তান তীব্র বেগে প্রতুলের দিকে ধাবিত হইল এবং প্রতুল এর মস্তক টি দুই বজ্রের মত কঠিন ও বলশালী হস্তে ধরিয়া মোচড়াইতে লাগিল. প্রবল যন্ত্রণা ও বিস্ময়ে প্রতুল চিত্‌কার করিয়া উঠিল "কৃষ্ণ, বাঁচাও.....". কৃষ্ণ প্রতুল কে ছাড়াইয়া কিছুখানি অগ্রসর হইয়াছিল. সহসা এই চিত্‌কার শুনিয়া সে ঘুরিয়া দাঁড়াইল. পশ্চাতে এই ভনক দৃশ্য দেখিয়া সে মুহুর্তের জন্য কিংকর্তব্যবিমুড় হইয়া গেল. পরক্ষণে ই প্রতুল জিহ্‌ব্‌হা র তলা হইতে লুক্কায়িত "ব্যারেটা" খানি বাহির করিয়া উপর্যুপরি তিনটি ফায়ার করিল কবন্ধের শরীর লক্ষ্য করিয়া. কিন্তু হা হতোস্মি, কবন্ধের শরীরে গুলি র কোনো প্রভাব পড়িল না. সে দুই হাতে প্রতুল এর মস্তক ঘুরাইয়া প্রায় ধর হইতে আলাদা করিয়া ফেলিবার উপক্রম করিল . হঠাত ই কৃষ্ণের খেয়াল হইল কবন্ধ শয়তান মরিবার পূর্বে বাঙ্গালী ছিলেন. বাঙ্গালী রা মরিলে ও তাহাদের সহজাত প্রবৃত্তি ও স্বভাব নষ্ট হয় না. অতএব সেই চরম মুহুর্তে আপন উপস্থিত বুদ্ধি র উপর নির্ভর করিয়া কৃষ্ণ শ্মশান এর মাটি হইতে এক খানি বংশদন্ড উঠাইলেন ও সবেগে উলঙ্গ ছায়াটি র পাযুদেশে ঢুকাইয়া দিলেন. যেমন করিয়া জোঁক এর মুখে লবন পড়িলে তাহা শিকার কে ছাড়িয়া দেয়, ঠিক তেমনি একটি গগনভেদী হাহাকার করিয়া সেই চলন্ত ছায়াটি প্রতুল কে ছাড়িয়া মাটি তে লুটাইয়া পড়িল. কৃষ্ণ বংশ দন্ড টি ধরিয়া আর একটু শক্তি র সহিত মোচড়াইয়া শয়তান এর পাযুদেশে প্রথিত করিল. একটু গোঙানির ন্যায় আওয়াজ করিয়া শয়্‌তানটি উপুর হইয়া পড়িল. তাহার পর কৃষ্ণ ও প্রতুল এর চক্ষের সম্মুখে কবন্ধ শয়তান এর দেহটি মাটি র ন্যায় ঝুরঝুরে হইয়া ঝড়িয়া পড়িল.

    কৃষ্ণ প্রতুল এর নিকট আসিয়া উহাকে মাটি হইতে তুলিয়া ধরিল. শয়তান কে মরিতে দেখিয়া প্রতুল একটু বল পাইয়াছে. সে কৃষ্ণ কে শুধাইল, "ভাই কৃষ্ণ, এই বংশ-দান কি করিয়া আবিষ্কার করিলে?" কৃষ্ণ স্মিত হাসিয়া বলিল, "প্রতুল, বন্ধু আমার, শিশির ঝরিলে ঝরে ঘাসে, আর বাঙ্গালী মরিলে মরে বাঁশে". এই কথাটি র সমর্থনে ই যেন মহাশ্মশান এর নিস্তব্ধতা ভঙ্গ করিয়া শৃগাল ডাকিয়ে উঠিল, "হুক্কা হুয়া". কৃষ্ণ ও প্রতুল হাত ধরাধরি করিয়া শহরের পথে প্রস্থান করিতে লাগিল........................ শেষ.
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল প্রতিক্রিয়া দিন