এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Monorama Biswas | 71.167.46.249 | ২৪ অক্টোবর ২০১১ ০৭:৩৭492649
  • আইরিনের ব্যাপারটা আমার প্রথম দৃষ্টিগোচর হয় ফেসবুকে। আমার এক ক্লাসমেট ওর স্ট্যাটাসে আইরিন কে অকথ্য ভাষায় গাল দিয়েছে। এক জন মেয়ে যে এমন ভাষায় গাল দিতে পারে– এটা বাংলাদেশে থাকতে আমার স্বপ্নেরও অতীত ছিলো। আমার জানা মতে, আমাদের দেশের নিম্নস্তরের পুরুষ মানুষ এমন গালাগাল ব্যবহার করে থাকে। আর এই দেশে মেয়েরা এই গালাগাল হারহামেশা করতে থাকে।

    তারপর ফেসবুকে আরেকটা আলোচনায় অংশ নিই। সেটা হলো– এই প্রলয়ংকারী শক্তিগুলোর নাম কেনো মেয়েদের নামে নামকরণ করা হয়েছে? অনেকেই দেখলাম ওখানে মেয়েদেরকে ক্ষতিকারক শক্তির প্রতীক রূপে অভিহিত করেছে। হিন্দু মিথোলজিতে দেখি- তাদের দেবীরা মহাশক্তিশালিনী, ভয়ঙ্করী , দুষ্টের দমন, শিষ্টের পালনকœÑ£ । যদিও এরা (হিন্দু) বাস্তবে মেয়েদেরকে মানুষ বলে গণ্য করে কিনা আমার সন্দেহ।

    যা হোক, জানতে পারলাম, আইরিন নামে মহাপরাক্রমশালী, প্রলয়ংকারী হারিকেন ঝড় ধেয়ে আসছে এই EASTCOAST এর দিকে, এর মধ্যে আমাদের নিউইয়র্ক ও আছে। আমাদের এইখানে যখন আসবে তখন তার গতিবেগ থাকবে ঘণ্টায় ৭০-৯০ মাইল। মহাবিপদের কথা!, মহা আতঙ্কের বিষয়! মিডিয়া গুলোর প্রচার দেখে তাই মনে হচ্ছিলো।

    /৫ দিন আগে থেকেই সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হচ্ছিলো আইরিন এলে কি কি করতে হবে। প্রথম থেকেই আমি একটু উদাসীন ছিলাম, কারণ এই দেশের মিডিয়াগুলো তিল কে তাল করতে এদের জুড়ি মেলা ভার।
    বৃহস্পতিবার, ২৫শে আগস্ট, কাজ শেষে বাসায় ফিরছি, এলিভেটরের পাশেই দেখি একটা লিস্ট টানানো- সাত রকমের নির্দেশনা দেওয়া আছে। এই যেমন– ৩ দিনের শুকনা খাবার, জল, টর্চ লাইট, ব্যাটারী, নগদ টাকা সাথে রাখা, জানালাগুলো ভালো করে বন্ধ রাখতে হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।

    পরের দিন শুক্রবার, কাজ থেকে ফেরার সময় বাসার সামনে দুজন প্রতিবেশীর সাথে দেখা। এর আগেও দেখা হয়েছে, কখনো কথা হয়নি। এই সময় আমাকে দেখে জিজ্ঞেস করলো– 'AREYOUREADY?' বললাম– 'NOTYET.' তারা শুনে বিস্মিত হল। তাদের কাছ থেকে জানলাম, আশে পাশের দোকানে ও মার্কেটে কোনো পানি নেই। পানির বোতল সব বিক্রি হয়ে গেছে। প্যানিক অনেক টা সংক্রামক রোগ, আমার মধ্যেও আতংক দেখা দিলো। সবাই জল কিনে ফেলেছে, আমি কিনতে পারলাম না! আমার প্রতিবেশী মহিলা দুজনও আমার জন্যে বেশ উদ্বিগ্ন হলো। আমি তাদেরকে আশ্বস্ত করে বললাম, 'আমার হাসবেন্ড কে বলবো কাল সকালে দূর থেকে পানি কিনে আনতে।' তারা আরো আমাকে মনে করিয়ে দিলো পানি যেন সকাল সকাল কিনে আনি, কারন ১২টার মধ্যে সব দোকান বন্ধ হয়ে যাবে।

    পরের দিন শনিবার, সকাল ৮টার বদলে ৭টায় ক্লিনিকে গেলাম। রূগীদের ঐ ভাবেই ফোন করে জানিয়ে দেওয়া হলো। আমি ব্রেকফাস্ট না করেই ক্লিনিকে গেলাম, ভেবেছিলাম এই দুর্যোগের দিনে কেউ না কেউ APPOINTMENTMISS করবে, আর আমি সেই ফাঁকে ব্রেকফাস্ট করে নেবো। আমেরিকার লোক 'জাতে মাতাল তালে ঠিক।' একজনও APPOINTMENTMISS করলো না । আমিও খেতে পারলাম না। ক্লিনিকে যাওয়ার পর আনা নামে আমার এক এসিস্ট্যান্ট ডেকে বললো, আজ থেকে আমার নাম আর আনা নয় । জিজ্ঞেস করলাম কি তাহলে । উত্তরে সে বললো ‘আইরিন’। আমি ওকে বললাম 'আইরিন খুব POWERFULWOMAN, আমি আইরিন কে খুব ভালবাসি।'

    এক নাগাড়ে রুগী দেখে ১১টার পরই ক্লিনিক বন্ধ করে দিলো। সবারই বাসায় যাওয়ার তাড়া, কারন ১২ টার পর ট্রেন, বাস বন্ধ। আমি বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আমার কর্তা কে বেশ কড়া নির্দেশ দিয়েছিলাম সে যেন কিছু মাছ, তরকারী, মুরগীর মাংস কিনে নিয়ে আসে। যদিও আমি ১০০% জানতাম যে সে বাজারে যাবে না। মহারাজের স্থান সিংহাসনে, তার কি বাজারে যাওয়া মানায়? ক্লিনিক, বাজার বাসার কাছেই। আমি ক্লিনিক থেকে বের হয়েই দেখি টিপ টিপ বৃষ্টি হচ্ছে, এর মধ্যেই ছুটলাম চাইনিজ সুপার মার্কেটে । এই মার্কেট থেকে আমি তাজা মাছ কিনে থাকি। মার্কেটে ঢুকতেই দেখি প্রচণ্ড ভীড়।, এত ভীড় আমি ইতিপূর্বে দেখিনি। তিন কেজি মাছ আর অনেক সবজি কিনে দাম দেওয়ার জন্যে লাইনে দাঁড়ালাম, সে এক বিশাল লাইন, মনে হয় ৫০ জনের পিছনে আমি। তখন আমি ফোনে কথা বলতে ছিলাম, তাই লাইনে দাঁড়িয়ে সময় কাটাতে অসুবিধে হচ্ছিলো না, বরং ভালৈ লাগছিলো। ফোনে কথা বলারও তো সময় পাইনে। খানিক পর দেখি শোরগোল শুরু হয়েছে আমার পাশের কাউন্টারে। আমি তখনও বেশ পিছনে । লাইন ছেড়ে এগিয়ে দেখি একজন স্পানিস মহিলা আর একজন জটাধারী কালো মহিলা মারামারি শুরু করেছে। আমি আর সেই মারামারির বর্ণনা দেব না। এদের এই অনাচার আমার কাছে ভীষণ অরুচিকর মনে হয়। মারামারি দেখার চেয়ে ফোনে কথা বলাই আমার কাছে বেশী উপভোগ্য, আনন্দ দায়ক মনে হচ্ছিলো। খানিক পর দেখি, জটাধারী মহিলা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করছে। দুজন বিশালবপু পুরুষ সেই মহিলাকে ধাওয়া করে ধরে ফেললো। স্প্যানিশ মহিলা দেখি মেঝেতে শুয়ে আছে, তার মাথায় ব্যান্ডেজ বেঁধে দিচ্ছে আরেক মহিলা। একটা ভারী টিনের কৌটা ছুঁড়ে মেরেছে মাথায়, মাথা কেটে গিয়েছে। দেখতে দেখতে দুজন মহিলা পুলিশ চলে এলো। গাম চিবোতে চিবোতে জিজ্ঞেস করলো WHATHAPPENED? WHATHAPPENED? আমি ততক্ষনে বাজারের দাম চুকায়ে বের হয়ে এলাম। বড় ছেলে কে লাইনে থাকতেই ফোন করে বলেছিলাম আসতে । ও এসে ব্যাগ হাতে নিলো। এত বাজার একা বহন করা মুশকিল। ওর কাছ থেকেই জানলাম ওর বাবা কোনো বাজার করেনি, ভীড় দেখে ফিরে গেছে।

    আমরা গাড়ী পার্কিং এর চত্বর পেরিয়ে রাস্তায় আসতেই দেখি পুলিশ হাত কড়া দিয়ে সেই জটাধারী কালো মহিলা কে গাড়ীতে তুলছে। হেঁটে হেঁটে বাসার দিকে আসছি, পথে আমার এক বান্ধবীর হাসবেন্ডের সাথে দেখা, সেও যাচ্ছে আইরিনের জন্যে বাজার করতে। আমাদের দেখে একগাল হেসে বলল 'পানি কিনেছেন, সব রেডি তো?' আমি বললাম 'সব রেডি, তবে পানি কিনি নাই।' সে অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল 'এখনও পানি কিনেন নাই?' আমি বললাম, 'সকালে ক্লিনিকে গিয়েছি, এখন বাজার করে বাসায় ফিরছি, পানি কেনার সময় পাইনি।' এই সব শুনে আমার বড় ছেলে উত্তর দিলো 'বাবা পানি কিনেছে।' শুনে লোকটা আশ্বস্থ হয়ে বাজারের দিকে গেলো, আমরাও বাসার দিকে রওয়ানা দিলাম। খানিক পর আমার ছেলে আমাকে জিজ্ঞেস করলো ‘মা পানি মানে কি?’ আমি বিস্মিত হয়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে উত্তর দিলাম 'WATER'। যে ছেলে পানি চেনে না সে কিভাবে উত্তর দিলো 'বাবা পানি কিনেছে।'

    বাসায় ফিরে ব্রেকফাস্ট আর লাঞ্চ একসাথে করে ঘন্টা খানেক রেস্ট নিয়ে রান্না শুরু করলাম, বেশ কিছু আইটেম রান্না করলাম। সারাদিন আইরিনের জন্যে বেশ ধকল গিয়েছিল, তাই রাত ৯টার মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়লাম। পরেরদিন রোববার ভোর ৫টায় ঘুম ভাঙে । ঘুম ভাঙ্গার সাথে সাথে আইরিনের কথা মনে পড়ে যায়। আজ তো আইরিন আসবে! লাফ দিয়ে উঠে পড়লাম, কাল রাতেই আমাকে বলা হয়েছে আমি যেন সকালে সবজি খিচুড়ি রান্না করি। সাথে ইলিশ ভাজি। আমি যে এ ঘরের অবৈতনিক রাধুনী!

    সব ঘরের জানালা তখনো খোলা, নির্দেশ দেওয়া আছে, জানালা দরজা টাইট করে বন্ধ করতে হবে। চতুর্দিক অন্ধকার, ঝড়-হাওয়া ও বৃষ্টি হচ্ছে, এ যেন বাংলাদেশের বাদলা দিনের আঁদলা দিন। কোথায়ও কোনো সাড়া শব্দ নেই। নিউইয়র্ক তো কখনৈ ঘুমায় না, কিন্তু আমি দেখছি, নিউইয়র্ক ঘুমাচ্ছে। জানালার কাছে গিয়ে দাঁড়ালাম, কিছুক্ষন পর দেখি একটা পুলিশের গাড়ী আলো ফেলে ফেলে যাচ্ছে। সময় যেন থেমে আছে, সময় আর কাটে না । আমি সময় কাটানোর জন্যে খিচুড়ি রান্না শুরু করলাম। মুগের ডাল, বাসমতি পোলাউ এর চাল, আর সবজি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করলাম। একটু বেশীই করলাম। আইরিনের জন্যে আমার এই আয়োজনের কথা ফেসবুকের মাধ্যমে বাংলাদেশী এক বন্ধু কে বললাম, সে শুনে আমাকে এই বলে আশ্বস্ত করলো যে আইরিন আমাকে তার প্রলয় যজ্ঞ থেকে রেহাই দিবে।

    সর্বক্ষণ টিভির দিকে নজর রাখছি। টিভি বলেছে সকাল ৮টার দিক আইরিন আমাদের নিউইয়র্ক পরিদর্শনে আসবে। ৮টার পর পর মনে
    হলো ঝড়ের বেগ বেড়ে গেলো। শো শো শব্দ ও বেড়ে গেলো। মনে হলো এই বুঝি এলো!। জানালার ধারে যেয়ে দেখি রাস্তার অন্যপাশে একটা গাছ উপড়ে পড়েছে। গাছ টা পড়েছে দুইটা গাড়ীর উপর। গাড়ীর মালিকের কথা ভেবে মনটা খারাপ হয়ে গেলো। টিভি তে দেখছি– লং আইল্যান্ডে আর মানহ্যাটানে আইরিনের আক্রমণ। পুলিশ লোকজন উদ্ধার করছে নৌকা নিয়ে। আইরিন নিয়ে এই দেশের সতর্কতা অনেকটা আমার কাছে বাড়াবাড়ি মনে হয়েছে। প্রেসিডেন্ট ওবামা তার অবকাশ যাপন বাদ দিয়ে ফেমা অফিসে যেয়ে বসে আছে। এর চেয়ে ঢের বেশী ঝড় কিন্তু আমি বাংলাদেশে দেখেছি। কিন্তু এত সাজ সাজ রব দেখেনি। CNN এ দেখলাম, কিছু লোক এই ঝড়ের মধ্যেও লং আইল্যান্ড বিচে গেছে। এর মধ্যে আমার কর্তা ঘুম থেকে উঠে গেছে। ও দেখে শুনে বলল 'চল লং আইল্যান্ড বিচে যাই'। আমরা অনেক বার ঐ বিচে গিয়েছি। বিচের পাড় ঘেঁসে সুন্দর হাঁটার আর বসার ব্যবস্থা আছে। আমি ঐ খানে বসে আটলান্টিকের ঐ পাড় থেকে উড়োজাহাজ আসা দেখি। প্রতিমিনিটে একটা করে উড়োজাহাজ উড়ে আসে। আমিও রাজী হয়ে গেলাম বিচে যেতে। কিছুক্ষন পরই ঝড় থেমে গেলো। দুপুরের পর ই আমরা বিচের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলাম। সাথে করে নিলাম আমার এক ছোট ভাই আর তার মেয়ে শ্রেয়া কে। পথে যেয়ে দেখি –রাস্তাঘাট একদম ফাকা। ব্রিজ টোল ফ্রি। কেউ নেই টোলে, সবাই বাসায় বসে আছে। চতুর্দিকে দেখি গাছ গুলো যেমন ছিলো, তেমনই আছে। কোনো গাছই ভাঙ্গে নাই। বিচে যেয়ে দেখি-বেশ বাতাস, বেশ ঠাণ্ডাও। বিচের বালি বাতাসের সাথে উড়ে উড়ে চোখে মুখে লাগছিল। আমি তেমন রেডি ছিলাম না, বিশেষ করে আমার চুল। ধুলি ঝড় যেন আমার চুল নিয়ে ব্যাঙ্গ বিদ্রুপ শুরু করে দিলো। শ্রেয়া দৌড়া দৌড়ি শুরু করে দিলো। ও বিচের জলে পা ভিজালো। আমারও খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো ওর মত ছুটাছুটি করতে। কিন্তু বে-রসিক ধুলি ঝড়ের জন্যে খানিক পর ই গাড়ীতে উঠলাম। ওখান থেকে আমরা সিটি আইল্যান্ডে গেলাম। সিটি আইল্যান্ড হল সমুদ্রের মধ্যে ছোট একটা দ্বীপ। ওখানে অনেক রেস্টুরেন্ট। ছেলেদের খাওয়ানোর জন্যে একটা রেস্টুরেন্ট ঢুকলাম। রাত ৮ টার পর বাসায় ফিরে এলাম। এই হল আইরিনের আগমন ও প্রস্থান পর্ব।

    পরের দিন আমার ক্লিনিক। ক্লিনিকে যাওয়ার আগে বাবাকে ফোন করতে ইচ্ছে হলো। আমার দুই বোন তখন বাড়ীতে, ওরা দুজন ই শিক্ষক, একজন ইডেন কলেজের, অপরজন হাই স্কুলের। সবার সাথে কথা শেষে মার সাথে কথা বলা শুরু করলাম। মা জানতে চাইলো কেমন আছি, কি কি রান্না করেছি ইত্যাদি। আমি মাকে বললাম 'রান্না নিয়ে চিন্তা কর না, আইরিনের কারণে অনেক রান্না করেছি, তিন দিন রান্না না করলেও চলবে।' মা শুনে বললো– 'আইরিন আবার কে?' আমিও অবাক হয়ে বললাম 'আইরিন নিয়ে সারা আমেরিকা তোলপাড়, আর তুমি আইরিন কি জান না।' পাশ থেকে আমার এক বোন মাকে বলে দিল– নিউ ইয়র্কে খুব ঝড় হয়েছে। শুনে মা বলল 'তাই নাকি, আমি তো কিছুই জানি না, কারণ আমাদের এদিকে তো কোনো ঝড় হয়নি, তবে খুব বৃষ্টি হয়েছে, বৃষ্টি হয়ে অনেক ধানের ক্ষেত ডুবে গেছে।' মা বার বার তার ধানের ক্ষেত ডুবে যাওয়ার দু:খ প্রকাশ করতে লাগলো । আমরা যে আইরিন নামক প্রলয়ংকারী ঝড়ের হাত থেকে রক্ষা পেলাম, এটা যেন তার কাছে কিছুই না।

    রবীন্দ্রনাথ ইতিহাস প্রসঙ্গে লিখেছিলেন– 'ঝড়ের দিনে মেঘের প্রচণ্ড তাণ্ডব, বিদেশীর কাছে মুখ্য হইলেও পল্লীর মানুষের কাছে, তাহার গৃহ হারা কিম্বা ফসল হারানোর বিষয়টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ।' সুতরাং আমার মায়ের কাছে তার ধান নষ্ট হয়েছে, এটাই গুরুত্বপূর্ণ। আইরিন নিয়ে আদিক্ষ্যেতা তার বিচার্য নয়।

    আর আমার কাছে মনে হয়েছে ধনীরা একটু বেশী বেশী ভীতু হয়ে থাকে। দশ বছর এই মার্কিন মুলুকে থেকে মনে হয়েছে– যাদের জীবনে মৌলিক চাহিদা পূর্ণ হয়েছে তারা কত না ছোটখাটো ঘটনাকে বড় করে দেখে।
  • kd | 59.93.245.95 | ২৪ অক্টোবর ২০১১ ১৩:০৮492650
  • মনোরমাদেবী, আপনার লেখাটি পড়ে বেশ লাগলো। দু'একটি জিনিস নজর করেছি, জানাই।

    ১) আপনি ও'দেশে মেয়েদের নামে ঝড়ের নামকরণ হয় বলে ফেসবুকে আলোচনা পড়েছেন এবং কারণ হিসেবে মেয়েদের ক্ষতিকারক বলে কেউ কেউ লিখেছে। বক্তব্যটি প্রায় ঠিক, শুধু ""মেয়েদের'' না বলে ""মানুষদের'' বললে একদম ঠিক হতো। আপনি হয়তো খেয়াল করেননি, ঝড়ের নামকরণ প্রতি বছর পুরুষ ও নারীর নামে অল্টার্নেট করে। শুরুতে শুধু মেয়েদের নামে হ'লেও অনেক বছর (দশের থেকে অনেক বেশী) হলো এই নিয়মই চলছে।

    ২) একজন মহিলার বর্ণনায় আপনি লিখেছেন ""স্প্যানিশ''। আপনি কি ""হিস্প্যানিক'' লিখতে চেয়েছেন? স্প্যানিশেরা অতি অবশ্য হিস্প্যানিক কিন্তু সব হিস্প্যানিকেরা স্প্যানিশ নয়। যেমন পেনেলোপি ক্রুজ ও অ্যান্টোনিও ব্যান্দেরাস স্প্যানিশ আর সালমা হায়েক ও ফিদেল ক্যাস্ত্রো হিস্প্যানিক।

    ৩) আমি কলকাতায় ট্র্যাফিক লাইট দেখে (এবং তারপরেও অতি সাবধানে) রাস্তা পার হই। এবং সেইজন্যে রাস্তায় অনেকেই ব্যঙ্গ করে। কেন, এতোদিন বুঝি নি - আপনার লেখা পড়ে বুঝলুম যে বাংলা অভিধানে ""সাবধানী''র প্রতিশব্দ ""ভীতু''। তা হবে। তবে আমি কিন্তু ""বেঁচে থাকা''টাকে মৌলিক চাহিদা বলেই মনে করি, তা আপনি যাই বলুন না কেন।

    যদিও খোলাখুলি লেখেননি, তবে আপনার লেখা পড়ে মনে হলো যে আপনি ও'দেশের মানুষ, পুলিশ ও অন্যান্য সামাজিক ব্যবস্থাকে বেশ নীচু চোখে দেখেন। আপনি ডাক্তার (লেখা পড়ে তাই মনে হলো), সুতরাং উচ্চশিক্ষিত। সে'জন্যে ধরে নিচ্ছি ""নীচু'' একটি আপেক্ষিক শব্দ হিসেবেই ব্যবহার করেছেন। তাই জিগ্যেস করি, দশ বছর আগে আপনি অন্য যে দেশে ছিলেন, সেখানকার মানুশ, পুলিশ এবং সমাজব্যবস্থা নিশ্চয়ই আপনার বর্তমান দেশের তুলনায় ""উচ্চ''মানের - সেটি কোন দেশ? আমার এখনও এই দুনিয়ার অনেক দেশেই যাওয়া হয়নি, জানতে পারলে (এবং ক্ষমতায় কুলোলে) একবার নিজের চোখে এই দেশটিতে কিছুদিন থেকে আসতুম।

    ও হ্যাঁ, আমি প্রতিবছর চৈত্র, বোশেখ ও জস্টি মাস আপনাদের শহরেরই ব্রুকলিন এরিয়ায় থাকি ছেলের কাছে। তাই লোকাল মানুষ ইত্যাদি সম্বন্ধে কিছু কিছু আইডিয়া আছে।
  • maximin | 59.93.210.179 | ২৪ অক্টোবর ২০১১ ১৪:১৫492651
  • ভারি সুন্দর লাগল লেখাটা। সহজ সরল বর্ণনা, সাহিত্যগুণে ভরপুর।
  • madhuchhanda paul | 14.99.47.202 | ০৮ নভেম্বর ২০১১ ১২:১৭492652
  • #২৪৭৮;#২৪৭২;#২৫০৭;#২৪৮০;#২৪৭৮;#২৪৯৪;#২৪৮০; #২৪৮২;#২৫০৩;#২৪৫৪;#২৪৯৪;#২৪৮০; #২৪৫৩;#২৪৮২;#২৫০৯;#২৪৭৯;#২৪৯৪;#২৪৭২;#২৫০৩; #২৪৩৮;#২৪৩৯;#২৪৮০;#২৪৯৫;#২৪৭২;#২৪৫৩;#২৫০৩; #২৪৮৮;#২৪৯৪;#২৪৭৮;#২৪৭২;#২৪৯৪; #২৪৮৮;#২৪৯৪;#২৪৭৮;#২৪৭২;#২৪৯৫; #২৪৭০;#২৫০৩;#২৪৫৪;#২৪৬৮;#২৫০৩; #২৪৭৪;#২৫০৩;#২৪৮২;#২৪৯৪;#২৪৭৮; #২৪০৪; #২৪৭৭;#২৪৯৪;#২৪৮২;#২৫০৭; #২৪৮২;#২৪৯৪;#২৪৫৫;#২৪৮২;#২৫০৭; #২৪০৪; #২৪৬৮;#২৪৭৬;#২৫০৩; #২৪৮৮;#২৪৭৮;#২৫০৯;#২৪৭৭;#২৪৭৬; #২৪৮৯;#২৪৮২;#২৫০৩; #২৪৮৮;#২৪৯৪;#২৪৭৬;#২৪৭১;#২৪৯৪;#২৪৭২; #২৪৮৯;#২৪৫১;#২৫২৭;#২৪৯৪;#২৪৮০; #২৪৭৮;#২৪৭১;#২৫০৯;#২৪৭৯;#২৫০৩; #২৪৫৩;#২৫০৭;#২৪৭২; #২৪৭০;#২৫০৭;#২৪৮৭; #২৪৩৮;#২৪৫৯;#২৫০৩; #২৪৭৬;#২৪৮২;#২৫০৩; #২৪৭৮;#২৪৭২;#২৫০৩; #২৪৮৯;#২৫২৭;#২৪৭২;#২৪৯৪; #২৪০৪;
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন