এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • টইপত্তর  অন্যান্য

  • ভাষা নিয়ে খাসা কথা

    Kulada Roy
    অন্যান্য | ২৫ জুলাই ২০১১ | ১১৮৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Kulada Roy | 74.72.54.134 | ২৫ জুলাই ২০১১ ২২:০৩483766
  • নাতি খাতি বেলা গেল শুতি পারলাম না
    -------------------------

    আমাগো সইন্দাকালে পাইত্যাল ডাকত। তাগো ন্যাজ বটা না। খাড়া খাড়া। মাজে মাজে জুনি জ্বলত। সেজন্যি বাতি না আঙ্গালেও চলত। আর কুড়আ পুষলি মাফে ধরত।

    বাপা মাফ--এই কইরাইতো খাতি নাতি বেলা গেল---শুতি পারলাম না। তরে ধরি কুন সুমায়! তরে মাফ কইরা দিছি।

    এইগুলা আমার মায়ের শব্দ। পাইত্যাল হইল পাতি শিয়াল। পাতি শিয়ালের লেজ বাঁকা না—সোজা। আর বাঁকা নয়—বেঁকা। বাঁকা শব্দটিকে মা কইত, বটা। সলোক হইলে বিছন বইটা রাখা হত। সলোক মানে সকাল। বিছন মানে বিছানা। পাইত্যাল আর কুউরির ব্যবধান মার কাছেই শেখা হইছে। মা কয়েছেলো, দ্যাকপি বাপ, যাগো ন্যাচ খাড়া—হ্যারা পাইত্যাল। আর যাগো ন্যাজ বটা হ্যারা কুউরি। কুউরি ঘেউ ঘেউ কিরা ডাকে। আর পাইত্যালে ন্যাজ নাড়ে আর খাজুর খায়, একজন ডাকে—হুক্কা হুয়া। সাথে সাথে অন্যরাও যুগাড় শুরু কইরা দ্যায়—হুক্কা হুয়া।

    জোনাকি পোকা হল জুনি। জুনি মিটির মিটির কইরা জ্বলে। খাটাশে ধইরা নিয়া যাবে বইলা মা কখনো মুরগী পোষে নাই। মুরগীকে মা চিরকাল কুড়আই কইছে। মার মা আমগো আজিমাও কখনো কুড়আ পোষে নাই। পাক পাক পুষত। পাকপাক মানে হাঁস। রাজোহাঁস নয়—পাতি হাঁস। রাজোহাঁস পোষে রাজার ছাওপোনারা। আমার আজামশাইরা রাজা তো নয়ই—রাজার বাড়ির কইতাল নয়, প্যায়দাও নয়। তারা হৈল নমা—মানে নমশুদ্র। এই নমাগো মায়া হাঁসের সঙ্গে মদ্দা হাঁসের নাড়ুই ছিল। বড় খেঁচাখেঁচি করত। এইটা আজামশাইর বড় বেরক্তি লাগত। কারণ এই সুমায় তার প্‌ৎকেত্তন গাওয়ার সুমায়। প্‌ৎকেত্তন মানে পদাবলী কীর্তন। আবার কোনো সময় পথ কীর্ত্তন বা নাগর কীর্তনকেও প্‌ৎকেত্তন বলা হত। আজামশায়ের চালের বাতায় ঝুড়ি রাখা থাকত। সেখানে বসত করত কৈতর। মানে কবুতর। সবই জালালি। জালালিরা বাকবাকুম কইরা সারা বাড়ি মাতম তুলত। আবার বরিশালে সারাবাড়ি নামে একটি শব্দ আমার মেয়ের মা বইলা থাকে। যেমন গুণে গেঁথে ছিমতি দেখল, ঘরে নগত কড়কড়া টাকা নাই। আছে কিছু ঝন ঝন্নাত সিকি, দুআনি, একআনি খুচরো। সেগুলো বারবার গুণছে। কইলাম, কত হইছে? মুখ গুমড়াইয়া কইল-- সারাবাড়ি মোটে পাঁচসিকা মাত্তর। সারাবাড়ি শব্দটি সকল বা মোট শব্দটির অনুরূপ।

    আমার মামাবাড়িতে ক্যাটক্যাইট্টা ছিল। আমাদের বাড়িঘরেও দেওয়ালে দৌঁড়ায় বেড়াইত। মাঝে মাঝে কেউ কোনো সত্যি কথা কইয়া ফেললে ক্যাট ক্যাট কইরা ডাইকা উঠত। ওটা টিকটিকি। আরেকটা নামও ছিল এই প্রাণীটার—নামটি হল জেটি। জেটির ডিম সাদা। খুব ছোটো। কুঁচ বরণ সাদা—আকারে সামান্য বড়। এই ডিম পাট খড়ির আগায় রাইখা গোড়ায় ফুঁ দিলে হাওয়ায় ভাসতে থাকে। তিড়িং বিড়িং কইরা নাচে। ফস্কাইয়া পইড়া যায় না। আবার সামান্য ঘুরতেও থাকে। খুব জমাটি খেলা। ডিম মানে আণ্ডা। শুধু মা সৈর কইরা দিত, বাপারে, খুব খেয়াল কইরা—দেহিস, জেটির ডিম য্যান মুহির মইদ্যে না ঢোহে। ঢুকলি প্যাট খারাফ হইবে। আমাগো মুখে কোনোদিন ক্যাটকাইট্যা বা জেটির ডিম ফসকাইয়া পড়েনি। আমার সেরসার মতো বাও বাতাস দিয়া ডিমির নাচনা খেলছি।

    আমগো বাড়িতি মেয়ুরও ছিল। বিলাইও ছিল। বাবা খেতি বইলে সাদা বিলাইটা থালার পাশটিতে থাবার উপরে মুখটি রাইখা পিড পিড করত। ফাঁকে ফাঁকে আঁইটাটা, কাঁটাটা আর দুএক গ্রাস মাখানো ভাত বাবার ফেলত। উইঠা আইসা বিলাইটা গিলত। আবার থাবার উপরে মুখটি রাইখা সেইভাবে শুইয়া থাকত। আর কাল মেয়ুরটি লেজ উড়াইয়া ঘুর ঘর করত—উল্লি ঘুল্লি খাইত। মাঝে মাঝে হালকা কইরা ম্যাও ম্যাও করত। মানে দ্যাও দ্যাও। বাবা শুইনা কইত, দুধ আউটানোর দেরী কত? এইডার খাবা নাবা লাগবি না? আমগো একা খালিই হইবে? আর তখন কাছে পিঠে থাকা ভুলু কুউরডা ঘেউউ ঘেউউ কইরা আওয়াজ দিত, আমার জন্যি হী হইতেছে। আমি কি উইড়া আছি? উইড়া আইছি নিহি আমি?

    এইবার বাবার ঢেকসি কইরা হেকসি ওডার পালা। হেকসি খাইলেই মা দৌঁড়ায় আসত। হাতে জলের গেলাস। গেলাস থেইকা জল ঢক ঢক কইরা খাইয়া কইত, আর হেকসি দিত। হেকচি দিতি দিতি কইত, অরে কুউউর, তুই ঢক কইরা ফরকি নাচতিছিস ক্যান। তরে কি পথের মইদ্যে খাবার দিতি হবে? তুই আবার কবে কোন নবাবপুত্তুর হইলি?

    বাবার ততক্ষণে ঢেকসি ঠিক হইয়া গেছে। আর ভুলু কুহুরডাও সুড় সুড়াইয়া কাছে আইসা বইছে। বাবা উইঠা গিয়া পাতের সব ভাত ঢাইলা দিছে। মহাআনন্দে সে খাওন শুরু কইরাছে। এইবার বাবার প্রাণে আরাম খেলতেছে। আরামে আরও কিছু ভাত চাইয়া নিছে। একটা জাম বাটি ভইরা টগবগানো দুধ আইনা দিছে। লগে এক দলা মুছি পাডালি। বাবা পুরোটা খাবে না। কিছু খাইয়া রাইখা দিছে। কালা মেয়ুরডা ল্যাজ তুইলা নাইচা পড়েছে। বাবার দিকে চাইয়া ম্যাও কইরা উঠেছে। মায়ের পায়ের কাছে পুরা তিন পাক ঘুইরা চুক চুক কইরা দুধ খায়। দেইখা মায়ে চোখে আনন্দাশ্রু। তুরা বাঁইচা থাকগো বিলাই, মেয়ুর আর কুউর। তরা আছিস বইলা লোকডা চাইরডা পরাণদ্যা খাইতেছে। খাওন দাওন শেষ হইলে বাবার খাটের নিচে ঘুর ঘুর করবে। আর সাদা বিলাইটা বাবার সিথানের বালিশটির পাশে একটু ঘুমৈবে। এইটুকু আয়েশ তার আছে।

    বিড়ালদুটার আদাড়ে-বাঁদাড়ে চরাখরার স্বভাব-চরিত্তির নাই। আদাড়টি আমগো কলতলা থেইকা পুস্কন্নিতে নাইমা গেছে। আইটা কাঁটা আর থিকথিকা জলকেদা এই আদাড়ে আছে। সেখানে মাছির ভ্যানভানানি আছে। ঠাকুরদা কদিন পর পর পয়চরিস্কার করে। এখানে নামলে ছুৎ লাগবে। শিতির মইদ্যেও ছেনান করন ছাড়া ঘরে যাওন যায় না। মার অর্ডার। বাঁদাড়ে চুলবেলি থাকতি পারে। চুলবেলির চোখতো নয়—পুরা আগুন। চোখে চোখ পড়লিই পুইড়া ঝামা হওন ছাড়া উপায় নাই। এই হেতু নো আদাড়—নো বাঁদাড়। আমগো বাড়ির সামনে বটতলার রাস্তাটা। রাস্তার পাশ দিয়া পৌরসভার পয় নিষ্কাশন ড্রেন—সেইটাকে বলা হয় বড় আদাড়। বর্ষাকালে এখানে জলে ভইরা যায়। তখন আমরা মোটেই লাফ দিয়া নয়—ফাল দিয়া ড্রেনটি পার হইতাম। কে কত আগে ফাল দিয়া ওপারে যাইতে পারে তার জন্যি আমাদের মধ্যে একটা ফালাফালিও ছিল। আর কেউ যদি এইটা নিয়া অসল্লি করত গোংড়ার মত—মা সোজা তারে শোনানি দিত, বাপারে, বেশী বাইড়ো না। ঝপাৎ হইয়া যাইবা।

    আমগো বাড়ির পিছনে একটি সবজি বাগান ছেলো। সারা বছর সেখানে মরিচ, বেগুন, ডাটা, ফলত। শীতকালে শীম বটবটি পালংশাগ। সেখানে কয়েক ছোপ আইটা কলাগাছও ছেলো। ছোপ মানে ঝাড়। আমারা বাগানটাকে কইতাম খোলা। খোলায় লেম্বুগাছও ছেলো। আমার ঠাকুরদা লাগায়ছেলো। কাগজী লেম্বু। বাসনা মেলা। বাসনার ফুরায় গেলিও বাসনার শ্যাষ নাই। বাড়িটা থেইকা যখন আমাদের বাইর কইরা দেওয়া হল—গাছটির উপর মায়ের খুব মায়া ছেলো। তবে কাছেই দখলদাররা ক্যাচ ক্যাচ করত। সেই জন্যি আমরা তার আশেপাশে আর যাওয়ার সাহস পাই নাই। গাছটা একদিন মইরা গেল। মার সেদিন চোখে জল—এই জলের জল আমগো পুস্কন্নিরেও হার মানাইছেলো।

    আমগো মাতুল বাড়ি বা মামাবাড়িতে এই খোলাকে বলত চল্লা। চল্লায় বড় বড় কুমড়াও হত। জালি বা কচি কুমড়ার ভর্তা খাইলে স্বগ্গে রুহিদাসের ঘণ্টা বাজাত। আজিমা ইচা মাছ দিয়া কুমড়ার ঘ্যাটও ভাল পাক করত। ইচা মাছ মানে চিংড়ি। চল্লার জাংলায় লাউ শশাও ধরত। জাংলা মানে মাঁচা। কয়েকটা কোম্বাগাছও ছেলো। তবে কোম্বা শব্দটি কইতেন আমার আজামশাই। আর আমার মায়ের কাছে—সোজা সাপটা ফাইয়া। ফাইয়া পাইড়া আন। ভাইজা দেই। ঠাকুরদা আবার কোম্বা বা ফাইয়া খাইত না। খাইত পেঁপে। এই শব্দটি তার কাছে পুরা কোলকেত্তাই। নো দোশলা।

    আমার ঠাকুরদা কিছুদিন কোলকেত্তায়ও ছেলো। গোল্ড রিমের চশমা পরত। আর চুলে টেরি কাটত। লোকে কইত, বিদু রায় মউদা মাতাল হৈলেও পাতাড়ি লোক না। পাতাড়ি মানে বাজে লোক। ছল্লিবল্লি জানত না। তার চ্যাত ফ্যাতও ছিল। চ্যাত মানে চেতন। কৃষ্ণযাত্রা গাইত। ফ্যাত মানে জানিনা। তবে ফ্যাতরা মানে কিরপিন বা কুতুর কুতুর কিপটে।

    ঠাকুরদা বিকালে বাসায় ফিইরাই হাঁক দেতো—কইরে আমার গুড়াগাড়া, কহানে গেলি। আইসা পাড়। তখন সব পোলাপান ছুইটা আসত। আর হাঁকাহাঁকির কামও নাই। গুড়াগাড়ারা সব রেডিই থাকত। সবাই জানে এই সুমায় ঠাকুরদা সন্দশ নিয়া ফেরবে। গুড়াগাড়ারে ভাইঙ্গা গুড়া গুড়া কইরা দেবে। এর মধ্যে আমিই ছেলাম একটু ক্যাজা। এজন্যি মাঝে সাজে ঠাকুরদার কান্ধেও চড়বার সুযোগ পাইতাম। আর যেসব গুড়াগাড়া গাছ থেইকা ফলপাকড় পাড়তে গিয়া সড়াৎ কইরা পিসলাইয়া পড়ত, গায়ে পায়ে ছাল যাইত, তাগো দেইখা ঠাকুরদা কইতো, কিরে শালা, কেতরাইয়া কেতরাইয়া হাটস ক্যান। চুরি করতি গেছিলি? এই কেতরানো গুড়াগাড়াডাও ঠাকুরদার আরেক কান্ধে। আর যারা আইলসা অমিশুক টাইপের তাগো বলা হইত—কুঁজড়া। কুঁজড়াদের কোনো কাম করতি বলা হলি তারা সব সুমায়ই আটক ঠেকত। তাগো কুজড়াপনার আরেকটা উদাহরণ ছেলো, খাবার রেডি হওন মাত্রই সবার আগে পাকঘরে পাতড়া পাইতা বইসা পড়ত। এখানে পাতড়া মানে পাতের জন্য ব্যবহৃত থালা। শব্দটা পাত মানে পাতা থেইকাই এসেছে। বড় বড় খরচের খাওনের সুমায় লাইনে বসে সগলে খাইতে বসত। পাছায় নিচে দুগ্গা কলাপাতা। আর থালার বদলি কলাপাতা। এই কলাপাতাই ছেলো পাতড়া। পরে গাঁও গেরামির কেলাবে সমিতিতে পাতড়া বদলি টিনের থালা থাকত। যে ব্যবহার করবে—তারা কেলাবে আরও পাঁচটি নতুন থালা কিন্যা দেবে। এই ছেলো বিধান।

    আমরা কখনো আখ খাই নাই। চিরকাল কুশোরই খাইছি। শক্ত কুশোর দামে সস্তা। গালটাল ছুইলা যাইত। এইটারে কইতাম—খাইল কুশোর। আর যেটা নরম—তার নাম গ্যাণ্ডারী। গেণ্ডারী খুব সহজেই ছাইলে খাওয়া যাইত। খাইল কুশোর জাতি বা কাটারি দিয়া কাইটা খাইতে হইত।

    আমরা সিনান করতি যাইতাম গদ্দার মার কুয়োয়। ওখানে কেদামাটির মইদ্যে ভ্যাদা মাছ সান্দাইয়া থাকত। আমরা পা দিয়া চাইপা চাইপা ধইরা ফেলতাম। আর আমগো বাড়ির পিছনের মাঝারি পুকুরটি হইল পুয়ৈর। এইটার জল ছিল কালা। আর কচড়িতে ঢাকা। কচড়ির দাড়িতে কৈ মাছ পলাইয়া থাকত। শীতের দিনি বেহানবেলা এই কচড়ি ধইরা টান মাইরা উঠাইলেই মাছটি দাড়ির সাথে উইঠা আইত। ডাঙায় উঠাইয়া দাড়ি থেকে মাছটিকে ছাড়াইয়া নিলেই হইল। খুব সহজে ধরন যায়। পোলোরও দরকার নাই।

    আর বাড়ির মইদ্যে যে ঘাট বাঁধানো পুকুরটি ছিল সেইটা কিন্তু কুয়ো নয় বা পুয়োরও নয়, সেইটার নাম পুস্কন্নি। এই পুস্কন্নির জলেই আমাদের কাপড় কাঁচা। ঝাজৈরে কইরা মায়ের চাল ধোয়া। এই পুস্কন্নির জল ছাড়া ভাতের বন্ন সাদা হইত না। সোয়াদে মিঠা। কলের জলে ভাত কষটা কষটা। খাওনের যুগ্যি হয় না। এই হেতু পুস্কন্নিতে কেউ সিনানও করত না। সিনান নিসেদ।

    আমগো বাড়ির পিছনে একটা মঠখোলাও ছিল। সেখানে আমার ঠাকুরদার বাবা-মার চিতা ইট দিয়া বাঁধানো। কোনো ধরা চুড়া ছিল না। মাঝখানে দুটো শিউ ফুলের গাছ। শিউ ফুল মানে শেফালী ফুল। ফুলে মঠের উপরে সাদা হইয়া থাকত। আর আমরা এই শিউ ফুলির ডালে হাত পা ঝুলাইয়ায়ে ঝুল্লি খাইতাম। পাশে ছেলো মাইজা ঠাকুরদার মঠ। পাশে তাঁর এক মাইয়ার মঠ। অকালে মারা গিছিলো লক্ষ্মী ঠাকুরুনের মত মাইয়াটি। যারা অকালে মারা যায় তারা লক্ষ্মী ঠাকুরুণ অথবা কার্তিকের মত নবকান্তিময়। তাগো জন্যি আমগো এই খাটড়া গ্রামের নিচুপাড়ার লোকদের মইদ্যে একটা আপশুস জিঁইয়া থাকত। জিঁইয়া মানে বাঁইচা থাকা। আমার বড় ঠাকুরদা কৃষক ছেলেন। তার কোনো ছেলে ছেলো না। বড়পক্ষের একমাত্র মাইয়াটি সাতচল্লিশে দণ্ডকারণ্যে চইলা গেছিলো। সুতরাং বড় ঠাকুরদা বলা যায় নি:সন্তানই। তার চিতাটি পাকা নয়। অজ্জিনাল চিতা-মাটি। মাটি-চিতা। তার প্রতি গড় করি। তার সনে পাথরের থালে বাল্যকালে দুধ ভাত খাইতাম । কইতাম ‘বিরাজমোহন রায়। মাঠে হাল বায়।অ।‘ তার তরে মঠ দিয়ে কাম কি? তার তরে মাঠই সইরে শালা। আর সবই কালা।

    এই মঠখোলার মাঝে বাঘডাসা বা কাউয়া মইরা গেলে কুইয়া গন্ধ বাইর হত। সে গন্ধে পরাণে বাঁচা দায়। তবে বড়দ্দি এই গন্ধে চোখে কুয়ো দেখত। কুয়ো মানে কুয়াশার মত আন্ধার দেখা। কুয়াশার মইদ্যে সব আড়াল হইয়া যায়। মাজে সাজে চিতরাইয়া শুইয়া পড়ত। শরীলে জুত পাইত না। হাইতনার ধারে তব্দ হইয়া বইসা থাকত। সে সুমায় তার ভাতরাঙাও দেখা দিত। কুইতা কুইতা কইত, অ বিনা, চাইরডা ভাত দ্যাও—আমার বাতরাঙা হইছে। মা কাঁচাকলা আর ফাইয়া সেদ্ধ কইরা বড়দ্দিকে খাইতে দিত। আর দিত লেবু কচলাইয়া জলভাত। দুফরে পেতা সিংয়ের বেনুন। খাইয়া দুইদিনির মইদ্যেই পুরা ঝরঝইরা। তারপর বড়দ্দি আবার পাড়া পড়শিগো বউঝির সাথে কাউতলী শুরু করত। এইটা নিয়ে সেইটা নিয়া ঝই ঝামেলাও কম হইত না। এইসব নিয়া আগরবাগর করলিই মা আমাদের ছেচা দেতো। কইত, ফারাক যা। ফারাক যা। বড় মাইনসের কতার মইদ্যে থাহিস না। হ্যাতে আমরা কখনো বড় মাইনসের কথায় থাকি নাই।

    আমগো ন ঘরটি ছেলো আদতে গোয়াল ঘর। বাবা এইটার চাদ্দিকে পাঁচ ইঞ্চি ইটের দেওয়াল গাঁইথা দিয়াছিল। সেখানে বাবার মুদিখানার মালপত্তর রাখা হত। এই ঘরে কিছু নেংটি ইন্দুরও ছেলো। এই হেতু ঘরটি নাম গুদোম ঘর। পরে আমরা যখন বাড়ি থেইকা উচ্ছেদ হইলাম—তখন এই গুদোম ঘরেই উইঠা ছিলাম। বোঝা গেছিলো—বাবার কিছুটা ভবিষ্‌য়্‌ৎ চিন্তাও ছেলো। গুদোম ঘরের উপরে টিনের ছাবড়া আর এক পাশে মাটির টালি। এই চাল দিয়ে বৃষ্টিরকালে জল পড়ত। তাই দেইখা আমগো পাগল ঠাউম্মা বিড়বিড়াইত, তরা হাসস ক্যা, আমগো চাল দিয়া জল পড়বে না কি সরব্‌ৎ পড়বে। সরব্‌ৎ পড়লি মন্দ হইত না। কিন্তু কোনোকালেই সরব্‌ৎ পড়ে নাই। জলই পড়েছে।

    মুশকিল হল—বর্ষাকালে পূবাল হাওয়া বইলে জলপড়নের চাইয়াও গভীর দুশ্চিন্তা বাবার মার কপালে ভাজ ফেলাইত। তখন হাওয়ার সাথে জল বাড়ত ফালিয়ে ফালিয়ে। ডাঙার জল বাড়ির কাছে শ্বাস ফেলত। কখনো উঠোনে খলবলানি করত। আর দমকা হাওয়ায় আমগো ঘরের চাল নইড়া উঠত। মা কইত, দৈ মা দুগ্গা, দৈ মা দুগ্গা। দুগ্গা ঠাইরেন না বাঁচাইলে আর কে বাঁচায়? আর শিল পড়লি উঠোনে একটা কাঁঠাল কাঠের পিড়আ পাইতা দেত। আর ছুইড়া দিত সৈরষা দানা। আমরা ভাডি বুনডি সগ্গলে মিলা এইভাবে বাঁইচা থাকতাম। এই পূবাল হাওয়ারে বলে সাইরা।

    সাইরা আসার আগে ঘরের খামটামে দড়ির বান্দন দেওয়া হত। আর চালে পুডিং। আর শিরলি কাগু আইসা অং বং কইরা বাড়ির উঠোনে ফালাইয়া ফালাইয়া চিক্কুর পাড়ত। এইভাবে সাইরা আসার আগে ঘরের কাম কাজ সাইরা রাখা হইত।

    আমগো ঘরটা ছেলো ছোটোখাটো। অনেক পরে বাবা একটা বারান্দাও দিয়াছেলো। খোলা বারান্দা। বেশ হাওয়া খেলত। গরমকালে মান্দুর পাইতা বারান্দায় আমরা ঘুমাইতাম। শুক্রবারে রেডিওতে সৈনিক ভাইদের জন্য অনুষ্ঠান দুর্বার হইত। সেইখানে গান গাইত আব্দুল আলীম, হলুদিয়া পাখি সোনারো বরণ পাখিটি ছাড়িয়া দিল কে। আর অজিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় আকাশ বানী থেইকা আকাশ ভাইঙা হাইসা পড়ত। ডালুর মা কইত, এই লোকে এইরকম কালা কুইষ্টা হাসন করে ক্যা, অ্যা? হ্যার মায়ে কি হ্যার মুহে মদু দেয় নাই?
    শুককাগু মাজে সাজে খাডি কথা কইয়া ফেলাইত। কাগু কইত, হ্যার মায়ে আসল মদু পাবে কইগো খুড়ি? পাইতে হৈলে সুন্দরবন যাওন লাগপে। আর সগ্গলতো ভেজাল।
    এর পরে আমগো পাগল ঠাউম্মা হাত তুইলা চিক্কুর পাড়ত, মদুর মা মআরা গেইছে। অরে, তুরা আইসা দ্যাখ, মদুর মা মইরা গেইছে।

    এই বারান্দার এক ধারে দরমার বেড়া দিয়া একটা খোপমতো করা হইছিল। ওখানে ছোডো ভাডি ঘুমাতে। মাজে মাইদ্যে গোপালসাধু। গোপাল সাধু আইত নিশি রাইতে। চইলাও যাইত সলোক হওয়ার আগে। আমাগো চালের উফরে কখনো শিশির পড়ে নাই। পড়েছে চিরকাল নিশির। নিশি রাইতে শিশির পড়ে কিবা? পড়লে নিশিরই পড়বে। আমগো চালে নিশিরই পড়ত। মার খুব হাইস ছেলো, বরান্দায় একটা ফৈটা চাল হোক। বাবা বেরক্ত হইয়া কয়েছিলো, অত বাবুগিরি চাও ক্যা?
    --বাবুগিরি হইল কোনহানে? বাদলা হৈলে দাঁড়ান যায়। বারান্দায় বিষ্টি ঢোকে না। আর ছ্যান্ডেলও রাখন যায়। জেবনে কি হাইস থাকবার পারে না?
    এই একবার মা একটু ফোস করে বাবার উপরে কথা কয়েছিল। এইটা ইতিহাস। ইতিহাসে আনেক রাজোহাস আছে। পাতি হাঁস নাই।
    পাতি হাঁস কয়--জেবনের হাউস আবার কি? হ্যা দিয়া খায় না—মিথায় দ্যায়? ফলে ফৈটা চালটা আর হয় নাই। তবে একটা সিঁড়ি করা হইছেলো। একটা মাত্র ধাপ। বেলা গেলি সেখানে বইসা মা চাল বাছত। চালে সোনা নয়—দানা নয়, গেদা গেদা কাঁকুড়। মাজে সাজে কুঁচফল। এই কুঁচফল দিয়া একটা মালা গাঁথাও হইছেলো। সেই মালা গলায় দিয়া আমরা মামার বাড়ি যাইতাম। ঝড়ের দিনে আম নয়—জাম কুড়াইতাম। বরই কুড়াইয়া কোচড় ভইরতাম।

    দুফরবেলা কেউ কেউ হাউসশি ছাড়ত। আর চত্তির মাসে পুস্কন্নীর জল পইচা গেলি সান্নিক জ্বর হইত। এইজন্যি আমগোর আজা মশাইর দাওয়াই ছেলো, কাউয়া ঝিঙ্গার পাতা বাইটা মাথায় পট্টি দ্যাও। আর গরম জলে বাসক পাতা সিদ্দ কর। সেই জল দিয়া সিনান কর। সান্নিপাতিক ফতে। তারপরও যদি জ্বরজারি থাকেই তাইলে কেশির মার কাছে যাও। জ্বর তো জ্বর—জ্বরের ঠায়ুরদাও ফিনিস। মনে রাইখো, রইদের মইদ্যে ফরকি নাচন নট।

    আমগো বাড়িতে অনেকগুলা বোরৈ গাছ ছেলো। একটা ছেলো পুস্কন্নীর পাড়ে। নীচে ছাইগাদা। একটু ডাঙর হৈলেই আমরা গাছে চইড়া বসতাম। তাই দেইখা নোয়াদ্দদি চেচাইয়া কইত, অল। আল। তুরা অল। অর মানে নাম—নাইমা পড়। শুক কাগু শুধু বলত, লাম। গাছ থেইকা লাম। শুক কাগুর লাম আমরা কখনো করিনি। কিন্তু নোয়াদ্দির ক্যাচর ম্যাচর শুইনা না অইলা পারণ ছেলো না।

    এই আমগো নোয়াদ্দি। কুটিকালে বালবিদবা হইয়া আমগো বাড়ি আইছেলো। তার ছোটো বুনডি এই বাড়ির মেজবাবুর তিন নম্বর বউ। অতি সুন্দর। আর নোয়াদ্দি কালা কুচ্ছিত। সারা জনম ভর বুনডির দেখভাল করতি করতিই তার বেলা গেছে। কহনো বইসা খায় নাই। কখনো তাঁর নিজের নাতি খাতি শুতি করতি পারে নাই। আমগো গুড়াগাড়ারে গাছে উঠতি দেখলিই ধাইয়া আইছে, অলতে কইছে। বুনডির সহায় সম্পত্তি সৈর কইরা রাখছে। আর শেষকালে সেই পুরনো বাড়িটার বারান্দায় শুইয়া থাকছে। পুরা বিছন ধরা। দালানটির দোতলা থেইকা একদিন তার দাদা বেড়া ভাইঙা পইড়া গেছে। ছাঁদটি ভাইঙা পড়ছে। খোপে খাপে পাখির বাসা গাইড়া বইছে। আর বাড়ির গুড়াগাড়া ডগডগাইয়া উইঠা বাড়ি ছাইড়া চইলা গেছে। নিজের বুনডির একটা চোখ আন্দা কইরা ফেলাইছে হ্যার দক্ষিণা নাতি। আর নিজের —নাই। ছানি পড়া। কোনো চক্ষু নাই। পুরা আন্দা। মাঝে মাঝে বাতাসে বরইগাছের ডাল নড়ে। ছাইগাদায় বোরৈ ঝইরা পড়ে। কেডা কেডা জলে পড়ে। এইসব দেখনদারির করার দিন নাই। নড়ন চড়ন নাই। ছিঁড়া কাথায় শুইয়া আমগো নোয়াদ্দি মাজে সাজে ক্যাটক্যাইটার মত টিক টিক কইরা কয়, অল। অরে নাড়ুল্লিরা, তুরা অল। কে অলে? কে বলে? কে টলে?

    তবু মেলাদিন পরে মেলা বছর পরে আমার পায়ের শব্দ শুনলি ঠিকই বুঝতি পারে। নইড়া চইড়া ওঠে। ফ্যাস ফ্যাস কইরা কয়, অদ্দা, কবে আইলিরে?
    আমরা কখনো আসিনি। আমরা চিরকাল আইছি। আমরা কখনো নাইতে যাই নাই। নাতি গেছি। আমরা কখনো খেতে যাই নাই। খাতি গেছি। কখনো শুইতেও আমগোর যাওয়া হয় নাই। অল কইরা শুতিই গেছি। আমগো পায়ে গাব্বুর গাব্বুর ধুলোমাটিকেদা।
    আর অহন হো শুতিও নয়—সিদে হুইতা পড়ছি। উডনের উপায় নাই। বেলা চইলা যায়। তারে ঠেকান কঠিন।

    .
    এইটুকু লিখে মনে হল—কেন লিখলাম। কেন এই ভাষায় লিখলাম? এটা আমার মা বলত—এখনো বলে। ফোন করলেই বলে, বাপারে, ঠিক সুমায় মতো খাইয়া লইস। নাইলে ভাতরাঙা হইলে তরে খাইতে দেবে কেডা?

    খাওন শব্দটার সঙ্গে মুখের কথা এসে গেল। মুখের ভাষাও এলো। রবীন্দ্রনাথ মুখের ভাষায় সাহিত্য করার কথা বলেছিলেন। সেটা কোন মুখের সাহিত্য? বাওনের মুখ? না, নমা শুদ্দুরগো মুখের কথা? সেইটা হিন্দুর মুখের কথা? না, মুসলমানদের? সে কি শহুরে মুখ? না, গাঁও-গেরামের মুখ? সেটা কি নোয়াখালির মুখ? না, সিলেটি? আনু মাহমুদের মুখ? না, হাছান মাহমুদের মুখ? সংখ্যা গরিষ্ঠের মুখ? না, সংখ্যা লঘুদের মুখ? কাদের মুখ? বাঙালীদের? না, বাংলাদেশীদের? আওয়ামী লীগদের? না, বিএনপির? কমিউনিস্টদের? না, জামাতিদের? পশ্চিমবঙ্গের মুখ? না, বাংলাদেশের?

    এইখানে ধন্ধে পড়ে গেলাম। মহাধন্ধ। ধন্ধে পড়িয়া বগা ফান্দে কান্দে রে।
  • pi | 72.83.102.200 | ২৬ জুলাই ২০১১ ১০:৫০483774
  • জুনি, সারাবাড়ি, ক্যাটকাইট্টা এগুলোও কি ভাতরাঙা, পাইত্যালের মত একজনের বানানো শব্দ, নাকি ঐ অঞ্চলের ?
  • Kulada Roy | 74.72.54.134 | ২৬ জুলাই ২০১১ ১৭:১৪483775
  • এলো সবই ঐ অঞ্চলের শব্দ। এর মধ্যে সারাবাড়ি শব্দটি বরিশালের। আমাদের গোপালগঞ্জ এলাকায় ছাড়াবাড়ি বলে একটি শব্দ আছে। সে হল--ছেড়ে দেয়া ফাঁকাবাড়ি।
  • achintyarup | 59.93.243.28 | ২৬ জুলাই ২০১১ ২১:১৯483776
  • ভারি মিষ্টি লাগে এই ভাষা আমার কানে। কিন্তু কুলদাবাবু, এত চন্দ্রবিন্দুর উচ্চারণ কি এই ভাষায় আছে? কিম্বা ড-য়ে শূন্য ড়?
  • Nina | 12.149.39.84 | ২৬ জুলাই ২০১১ ২২:০৯483777
  • জাস্ট অপূর্ব্ব! যেন সমস্তটা একটা গানের মতন শোনাল আমার কানে---
    ইছামতী নদীতি
    নোকা লাগি ফালাতি
    মোআ লাগি কান্দিতি

    বাবা গাইতেন , বাবার মামাবাড়ীর গল্প শোনাতে বল্লে---:-))
    প্রাণের ভাষায় সাহিত্য করেন কুলদাভাই!
  • kc | 89.203.49.18 | ২৬ জুলাই ২০১১ ২৩:৫৭483778
  • কি সুন্দর, কি সুন্দর। কুলদাভাই আপনাকে সাদর প্রণাম। খুব ভাল লাগল লেখাটি।
  • Kulada Roy | 74.72.54.134 | ২৭ জুলাই ২০১১ ০৮:৪২483779
  • pi, Achintyarup, Nina, KC দাদা
    সবাইকে ধন্যবাদ। কিন্তু আর কেসিদাকে ডাবল প্রণাম।
  • pi | 72.83.87.117 | ২৭ জুলাই ২০১১ ০৯:১৪483780
  • কিন্তু কুলদাদাদার মূল প্রশ্নখানির কী হইল ?

    এ ভাষা নি:সন্দেহে পড়তে মিষ্টি, বুঝলে আরো মিষ্টি।
    তাহলে এরকম আঞ্চলিক ডায়লেক্টে লেখা হলে মানে বলে দেওয়া ফুটনোট ও চাই। তাই তো ?

    কারণ জুনি থেকে জোনাকি যাওবা আন্দাজ করে নেওয়া যায়, কিন্তু জেটি থেকে টিকটিকি ?
  • kc | 194.126.37.78 | ২৭ জুলাই ২০১১ ১০:১৩483781
  • তা কেন? এরকম আঞ্চলিক ভাষায় যে সাহিত্য হবে সেটা মূলত হবে যাঁরা ওই আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলেন তাঁদের জন্য, সাহিত্যে মানে নিজের কথ্য ভাষায় লেখা সাহিত্যে সবারই অধিকার আছে। ফুট নোট দিয়ে আমরা যেটা পড়ব সেটাতো অনুবাদ সাহিত্য, যেটা ওই আঞ্চলিক ভাষার মানুষগুলো মানে মার্জিনের লোকেরা এত দিন পড়তে বাধ্য হচ্ছেন।

    কত কষ্ট করে 'মার্জিন' কথাটা ঢোকালাম। তাও মামু, বোধি বা রঙ্গন ক্ষেউ আঁচড়টিও কাটবেনা এখানে। :)
  • dukhe | 122.160.114.85 | ২৭ জুলাই ২০১১ ১৩:১০483767
  • ঢোঁড়াইতেই তো কত ফুটনোট আছে । অসুবিধে কী ?
  • Du | 14.99.255.181 | ২৭ জুলাই ২০১১ ১৩:১৫483768
  • অপুর্ব্ব ! কি মিষ্টি কি মধুর।
    জেঠি অসমীয়াতেও টিকটিকি।
  • Kulada Roy | 74.72.54.134 | ২৭ জুলাই ২০১১ ১৭:৪০483769
  • কথোপকথন ১৮০১--
    ---------------
    আসোগে ঠাকুরঝি নাতে যাই।
    ওগো দিদি কালি তোরা কি রেন্ধেছিলি।
    আমরা মাছ আর কলাইর ডাউল আর বাগুন ছিঁচকি করেছিলা।
    তোরদের কি হইয়াছিল।
  • achintyarup | 121.241.214.38 | ০১ আগস্ট ২০১১ ০০:৫৮483770
  • কুলদাবাবুর লেখাটার প্রিণ্ট আউট নিয়ে নিলাম। বাড়ি গিয়ে আবার মন দিয়ে পড়ব। বাবাকে পড়াব।
  • de | 203.199.33.2 | ০১ আগস্ট ২০১১ ১৭:১৬483771
  • লেখাটা পড়ে মন-কেমন করে উঠলো, ঠাম্মা আর দিম্মার কথা মনে পড়ে গেলো -- এই মিষ্টি ভাষা গুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেলো আমাদের জীবন থেকে!
  • pi | 82.83.82.13 | ২৫ আগস্ট ২০১২ ০৯:১৩483772
  • এইত্তো , এটা খুঁজছিলাম।
  • nina | 78.34.167.250 | ২৫ আগস্ট ২০১২ ০৯:২৭483773
  • মনটাই ভাল হয়ে গেল--আবারও।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন