সেটা ছিলো একটা নিমবসন্তের কাল। মন্দমন্থরে নেমে আসা দুঃসময়ের কালো ছায়ার দিন। ভারতবর্ষ অনেক পালাবদল দেখেছে। বিংশশতক পড়ার পর এইবার প্রথম মানুষকে এতোটা নিষ্ঠুর ভবিতব্যের সম্মুখীন হতে হলো। বিশ্বযুদ্ধের চাপে পর্যুদস্ত ঔপনিবেশিক দস্যুদের কেউ যেন মরণকামড় দিতে প্ররোচিত করেছিলো। 'ভালো' ইংরেজরাও মুখোশ ছিঁড়ে মন্দ ইংরেজদের সঙ্গে একাত্মবোধ করতে শুরু করেছে। ভারতবর্ষ সাম্রাজ্যের লক্ষ্মী। সেখান থেকে নিহিত স্বার্থে আঘাত কোন হিজ ম্যাজেস্টিস অনারেবেল সাবজেক্ট সহ্য করবে। ১৯১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে ভারতসচিব মন্টেগু মহা ... ...
চড়ুই পাখি ও ভোরের রোদ্দুর
-----------------------------------
মেয়েরা বড়ো হলে মায়ের বন্ধু হয়ে ওঠে । একটু বড়ো হলেই তাদের পরস্পর কলকাকলির মধ্যে বাবা যেন বেশ বেমানান । বাবা কি মেয়েদের 'বন্ধু' হয়ে উঠতে পারে । বোধ হয় না । বাবার সঙ্গে অনেক কথা বলা যায়, কিন্তু 'বন্ধুত্ব'..........? সেটার স্তর আলাদা । পাহাড়ের সঙ্গে কি বন্ধুত্ব হয় । পাহাড় মেঘ দেয়, ছায়া দেয়, সবুজের শান্তি এনে দিতে পারে । কিন্তু তার তো নদীর ভাষা জানা নেই । সে শুধু প্রতিধ্বনি ফিরিয়ে দিতে পারে । মা আর মেয়েরা সেই ভাষা জানে, নিজের মতো ... ...
ঈশ্বর ও পৃথিবী নামক মননের দুই মেরুর মাঝখানে যে বিপুল নদী, বন, উপত্যকাময় মানুষের জটিল সেরিব্রাল উপনিবেশ, মধ্য সাম্রাজ্য ঠিক তার কেন্দ্রে। এই কারণেই প্রাচীনতম জীবিত সভ্যতাটি এখনও সারা পৃথিবীর মনস্কতার লক্ষ্য, কৌতূহলের উৎস। রাজনৈতিকভাবে চীন ( পুরোনো বানানটাই লিখি) একটা নেশন, কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এটি একটি মহাদেশ। তার দক্ষিণপ্রতিবেশী ভারতবর্ষের মতো'ই। ব্যপ্তির দিক দিয়ে অধিক, জটিলতার দিক দিয়ে হয়তো একটু কম হতে পারে। তবে এতো সাধারনীকরণ করা যায়না হয়তো। কারণ চীন ইতিহাসপূর্ব কাল থেকে এক উদার গ্রহীতা। সব অস ... ...
অহনি অহনি ভূতানি গঞ্চংতিয় যমালয়ম ।
শেষ স্থাবরম ইচ্ছন্তি কিম আশ্চর্যম অতহ পরম ।।
(বনপর্বঃ মহাভারত)
মৃত্যু না থাকলে কী কী হতো বলা যায়না। হয়তো অনেক কিছুই অন্যরকম হতো। তবে এটা ঠিক যে পৃথিবীতে কোনও ঈশ্বরের কল্পনাও থাকতো না। কোনও গোষ্ঠীবদ্ধ 'ধর্ম'ও থাকতো না নিশ্চিত। প্রনাবি ( প্রমথনাথ বিশী) একটি গল্প লিখেছিলেন, " ভগবান কি বাঙালি ?" সেখানে তিনি বলেছিলেন এই বিষয়টি নিয়ে পৃথিবীর বৃহত্তম থিসিসটি লেখা হবে। কারণ এটাই হবে মানুষের শেষ থিসিস। যেহেতু ভগবান বাঙালি প্রমাণ হয়ে গেলে পৃথিবীতে আর কোনও ... ...
সে দাঁড়িয়ে আছে প্রায় একহাজার বছর ধরে। একভাবে, ত্রিভঙ্গমুদ্রায়, একটা সাজানো কুলুঙ্গির ফ্রেমে। দু'হাত মাথার উপর, ধরে আছে বৃক্ষশাখা। ওষ্ঠাধরের হাসিটি লিওনার্দো কোনওদিন দেখতে পেলে মোনালিসা আঁকা ছেড়ে দিয়ে পায়রা পুষতেন। তাহার নামটি শালভঞ্জিকা। তার চারপাশে অজস্র নায়িকা, যক্ষী, সুরসুন্দরী নিরীহ দর্শকদের বেঁধে রাখে মোহমদির অপাঙ্গমায়ায়। দেবা না জানন্তি, আপ্তবাক্যের একটি পাথুরে প্রমাণ। মন্দিরটা তৈরি হয়েছিলো একাদশ-দ্বাদশ শতকে। কলিঙ্গ শিল্পস্থাপত্যের শেষ উজ্জ্বল নিদর্শন এবং একটি ব্যতিক্রমী সৃষ্টি। ... ...
"শুধু উদ্দীপনায় কোনো কাজই হয়না ; আগুন জ্বালাইতে হইবে, সঙ্গে সঙ্গে হাঁড়িও চড়াইতে হইবে। ..... আমরা অনেক সময় কল্পনা দ্বারাই খুব বেশি পরিমাণে চালিত হই, দেশের কাজ করিতে হইলে মনে ভাবি যেন ধুমধামের সহিত মস্ত একটা অট্টালিকা গড়িতে হইবে, একটা চূড়া প্রস্তুত করিতে হইবে, যেন কোনো-একটা সমারোহব্যাপার--আমাদের চেষ্টা এইভাবে একটা সুবৃহৎ কল্পনায় পর্যবসিত হইয়া যায়।"
১৯০৪ সালে ৩১শে জুলাই কার্জন রঙ্গমঞ্চে রবীন্দ্রনাথ দ্বিতীয়বার তাঁর 'স্বদেশী সমাজ' প্রবন্ধের পরিবর্ধিত পাঠটি শুনিয়েছিলেন সমবেত বৃহৎ সংখ্যক শ্রোত ... ...
বিরিয়ানি মৃত্যুর মতো'ই, গ্রেট লেভেলার। রাজাগজা থেকে হেলেচাষা, বিরিয়ানিতে সবার রুচি রয়েছে। প্রথমযুগে একটি ধর্মবিশেষের সঙ্গে একে যুক্ত করা হতো, এখন সে বালাই'টি বেশ কমেছে। কিন্তু বিদায় হয়নি। খোদ লখনউ বা হায়দরাবাদে বহু জনতা আছেন যাঁরা এই পদার্থটিকে যথেষ্ট 'গ্রহণযোগ্য' মনে করেন না। মানে ঐ ম্লেচ্ছ সংযোগগত মাত্রাটির জন্য। যাকগে চিত্রগুপ্ত মহাশয় তাঁদের পুনর্জন্ম বরাত করবেন। আমিন।
-----------------------------------
বিরিয়ানি নিয়ে লিখতে গেলে একটা মহাভারত না হলেও, শ্রীশ্রীচন্ডী নামিয়ে ফেলা যায়। সার ... ...
মানুষ লেখালিখি শুরু করার ঢের আগে থেকে মৌখিক পরম্পরার শ্রুতিসাহিত্যের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করে রেখেছিলো। পৃথিবীর সর্বদেশে প্রাচীন শাশ্বতসাহিত্যের বিভিন্ন ধারা কথকতার সূত্রেই লোকপ্রিয়তা অর্জন করেছিলো। হোমারের ইলিয়াড থেকে ঋগবেদ, মহাভারত, রামায়ণ ইত্যাদি এই শ্রুতিপরম্পরারই অঙ্গ।
'সাহিত্য' শব্দটির শিকড় লুকিয়ে আছে 'সহিত' শব্দটির সঙ্গে। অর্থাৎ এই শিল্পটি একা মানুষের খেলাধূলা নয়। স্রষ্টা ও গ্রহীতার পারস্পরিক সম্পর্কের দ্বান্দ্বিক সমীকরণের সঙ্গে তার সার্থকতা নিহিত আছে। যেমন শ্রদ্ধেয় সুধীর চক্রবর্ত ... ...
" দুর্গো দৈত্যে মহাবিঘ্নে ভববন্ধে কুকর্মণি।
শোকে দুঃখে চ নরকে যমদন্ডে চ জন্মনি ।।
মহাভয়েহতিরোগে চাপ্যাশব্দো হন্তুবাচকঃ ।
এতান হন্ত্যেব যা দেবী সা দুর্গা পরিকীর্তিতা ।।" (শব্দকল্পদ্রুম)
ঋগবেদে দশম মন্ডলের ১২৫শ দেবীসূক্ত দেবীপূজার প্রাচীনতম মন্ত্র। এই সূক্তটি অম্ভৃণ ঋষির ব্রহ্মবাদিনী কন্যা বাকে'র একটি উক্তি। তিনি তপস্যাবলে ব্রহ্ম-তাদাত্ম্য লাভ করেছিলেন। সিদ্ধির সেই উপলব্ধি লাভের পর তিনি অনুভব করেছিলেন সবই ব্রহ্মের অংশ এবং তিনি নিজের মধ্যে সমস্ত দেবতা, চরাচর বা সার্বভৌম বিশ্বক ... ...
একবার কোনও স্বঘোষিত রবীন্দ্রসঙ্গীত অথরিটি এসে জর্জদাকে এই গানের সূক্ষ্মতর দিকগুলি নিয়ে কিছু 'মূল্যবান' দিগদর্শন দিতে এসেছিলেন় জর্জদা সব শুনে বলেছিলেন‚ " বোজসি‚ কানা অন্ধরে পথ দেখায়়" এ ব্যাপারটা দেখা যায়, বিভিন্ন পত্রিকায় কেউ কেউ দায়িত্ব নেন আরেকজনের লেখায় বানানসংস্কার করার। সেহেন দায়িত্বশীল মানুষদের নিজস্ব বানানবোধ, যে রকম দেখি, এক কথায় 'ভয়ানক'। ।
-----------------------------
আমার বাবা বলতেন বানান দেখে একটা লোকের ক্লাস চেনা যায় । মানে বানান শুধু কোনও একটা বিশেষ ভাষার লিখিত রূপের উপর ... ...