এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • ভারতের নতুন ইহুদি ও বিশ্ববিবেক

    Eman Bhasha লেখকের গ্রাহক হোন
    ৩০ মে ২০২৩ | ২৪০ বার পঠিত
  • হিটলারের শাসনে ইহুদিদের চেয়েও খারাপ দশা এদেশের সংখ্যালঘুদের! 

    গ্যাস চেম্বারে নিয়ে যাওয়ার আগের দশার কথা বলছি
    ইহুদিদের ওপর মানসিক সামাজিক সাংস্কৃতিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে সেদেশ ও বিদেশের বহু লেখক সমাজকর্মী রাজনৈতিক দল সরব হয়েছিলেন। 

    বলবেন,  ইহুদিদের মতো হত্যা তো হয় নি।
    হয়নি।
    হওয়ার প্রেক্ষাপট রচনা চলছে।
    ২০ কোটি মুসলিম হত্যার ডাক দেওয়া হয়েছে।
    কতজন প্রতিবাদ করেছেন?
    কেউ গেছেন, আন্তর্জাতিক আদালতে?

    একটার পর একটা উপাসনালয় স্থাপত্য দাবি করা হচ্ছে। ১৯৪৭-এর পর যে উপাসনালয় যেভাবে আছে থাকবে-- এই আইন থাকা সত্ত্বেও বিচার চলছে।
    বাবরি মসজিদ ধ্বংসের কারিগর রা বলছেন, আমরা ধ্বংস করে গর্বিত। বিশেষ আদালতের বিচারক বলছেন,না ওরা করেননি। তাঁর পদোন্নতি হচ্ছে।

    কিন্তু এদেশে, বিশেষ করে এরাজ্যে, অনেকের হাবভাব কথা বার্তা ফেসবুকে লেখা দেখে জ্ঞান হয় -- ভারতে যেন কোথাও কিছু ঘটছে না।
    সব ঠিক চলছে।
    সবাই সমান মর্যাদা ও সম অধিকার ভোগ করছেন।
    কাউকে শুধু নামের জন্য পিটিয়ে মেরে ফেলা হচ্ছে না, বা মুসলিম সন্দেহেও মেরে ফেলা হচ্ছে না। ২০১৫ থেকে ২০২০ পাঁচ বছরে সঙ্ঘবদ্ধ পিটিয়ে মারার  লিখিত নথি ৮৩। এর মধ্যে এক পুলিশ অফিসারও আছেন। কারণ তিনি এক মুসলিমকে বাঁচাতে গিয়েছিলেন।

    বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা গোমাংস এনেছেন এই সন্দেহে সহকর্মী  থানায় অভিযোগ করছেন। পুলিশ এসে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠাচ্ছে।

    বলা হচ্ছে লাভ জেহাদ।
    আগে বলা হতো, শিক্ষা নিতে চায় না।  
    এখন পড়াশোনা করে, ভালো ফল করলে বলা হচ্ছে, শিক্ষা জেহাদ।
    ২০১৯ এ ৪২ জন জন্মসূত্রে মুসলিম ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হয়। মাত্র ৬.১৩%। তাও সমালোচনা।  ২০২০তে উত্তীর্ণ হন ৩১ জন। তাতেও সঙ্ঘী সুদর্শন টিভি একে ইউপিএসসি জেহাদ বলে। এবং জামিয়াকে জেহাদি সেন্টার। এবার পাস করেছেন ২২ জন। ৩.২১%। এবার প্রথম হয়েছেন শ্রুতি শর্মা। জামিয়া মিলিয়া প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে পড়ে।

    বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলেও মুসলিম নাম বলে আলোচনা প্রায় নেই।

    একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জামিয়া মিলিয়া,  যেটা কেন্দ্রীয় সরকারের বিচারেও হয়েছিল, ২০২০তে,  ভারত সেরা, সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারে সংঘ পরিবারের সরকারের পুলিশ ও সংঘ পরিবারের সদস্যরা পুলিশ সেজে ঢুকে নির্বিচারে পেটাচ্ছে, প্রতিবন্ধীদেরও বাদ দেয় নি, শৌচাগারের দরজা লাথি মেরে ঢুকে মেরেছে-- তাদের সাফল্য নিয়ে লিখলেও কারো কারো গোঁসা হয়ে যাচ্ছে।
    বলার কী দরকার!
    জামিয়া মিলিয়া, আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রচুর অমুসলিম শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আছেন।
    কজন জানেন।
    একজনের নাম, মুসলিম, তাই বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরির পরীক্ষায় পাস করেও সংস্কৃত পড়াতে পারলেন না।
    বিক্ষোভ হল তাঁর বিরুদ্ধে। চাকরি ছেড়ে দিতে হল।

    অলিখিতভাবে নিয়ম আছে মুসলমানদের ঘরে ভাড়া না দেওয়া, জমি বাড়ি, দোকান ফ্ল্যাট বিক্রি না করার।
    গুজরাটে লিখিত আইন হয়েছে, বিক্রি করা যাবে না।
    জানি আমরা?

    আমার ফেসবুকের বহু প্রগতিশীল বন্ধুকে এ নিয়ে নীরব থাকতে দেখেছি।
    রাজ্য রাজনীতি নিয়ে সরব হোন।
    কিন্তু দেশ নিয়ে ভাবুন।
    মনে দ্বেষ রেখে আপনিও বাঁচবেন না।
    আপনার পেনশন, আপনার ব্যাঙ্ক আমানত, আপনার কথা বলার অধিকার নিশ্চিত নয়।
    পশ্চিমবঙ্গে অন্যায় হচ্ছে। নিশ্চিত।
    কিন্তু আপনি ফেসবুকে সেটা নিয়ে লিখতে পারছেন, মিছিল মিটিংও অনেকটাই করতে পারছেন।
    বিজেপি শাসিত রাজ্য হলে সরকারের সমালোচনা করলে আপনার পেনশন থাকতো না, আপনাকে তুলে নিয়ে যেত। হ্যাঁ তাই হচ্ছে।

    অপ্রিয় সত্য লিখতে নেই।
    বলতেও।
    তবু লিখতে হল।
    'আমরা সবাই খুব ধর্মনিরপেক্ষ আমাদের এখানে জাতপাত নেই-- ওসব নিয়ে বলার দরকার কী?'

    এসব শুনলে মনে হয়, এর চেয়ে সংঘ পরিবারের প্রকাশ্য সদস্যরা ঢের ভালো।
    প্রগতিশীলতার ঢ্যা.... করে না।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন