এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • শুভ নববর্ষ 

    Kajal Sen লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৮ মার্চ ২০২৩ | ৫০১ বার পঠিত
  • এখন চৈত্রমাস। বাংলা বছরের শেষ মাস। অর্থাৎ ১৪২৯ শেষ হতে আর হাতে গোণা মাত্র কয়েকটি দিন। তারপরই শুরু হয়ে যাবে ১৪৩০। আবার একটা নতুন বছর। নতুন বছরের প্রথম দিনে অর্থাৎ ১লা বৈশাখে আমরা কাছে থাকা আপনজনের সাথে মুখোমুখি দেখা হলেই উচ্চারণ করব ‘শুভ নববর্ষ’। তারপর বয়স ও র্ষ সম্মানের  বিচারে জুড়ে দিয়ে শুভেচ্ছা, শ্রদ্ধা, প্রীতি, স্নেহ, ভালোবাসা ইত্যাদি। যাদের সাথে মুখোমুখি দেখা হবে না এবং যারা কাছে আদৌ থাকে না, তাদেরকে ‘শুভ নববর্ষ’র  সঙ্গে যাবতীয় অনুষঙ্গ পাঠিয়ে দেব ফোন, হোয়াটস অ্যাপ, মেসেঞ্জার, ট্যুইটর, ফেসবুক এবং আরও  অনেক অনেক প্রযুক্তিগত কৌশলের মাধ্যমে। বেশ কিছুদিন আগে অবশ্য এতসব কিছু আমাদের জীবনে ছিল না। আমরা চিঠি লিখতাম তখন। চিঠি লেখার জন্য ব্যবহার  করতাম ডাকঘর থেকে কিনে আনা পোস্টকার্ড, ইনল্যান্ড লেটার এবং এনভেলাপ বা খাম। সেই শুভেচ্ছাপত্র লেখা হলে তা আমরা ফেলে আসতাম ডাকবাক্সে। যাকে চিঠি লিখতাম, সে যেমন প্রতীক্ষায় থাকত কবে তার হাতে প্রত্যাশিত চিঠিটি এসে পৌঁছবে, ঠিক তেমনি আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষায়  থাকতাম কবে সেই প্রেরিত চিঠির প্রাপ্তিসংবাদ বহন করে আনবে প্রাপকের লেখা চিঠি। আজ আমাদের সাধারণ জীবনচর্যায় এই চিঠি লেখার গুরুত্ব ও প্রয়োজন প্রায় হারিয়ে গেছে বললেই চলে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমাদের জীবন যাপনের গতি ও দ্রুতি অন্য এক পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। আরও স্পষ্ট করে বলা যায়, উন্নততর প্রযুক্তির কারণে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে গেছে আমাদের জীবনযাপনে ও মননে।  মানুষের  সভ্যতার ইতিহাসে এ এক অনন্য উল্লেখযোগ্য অধ্যায়। কিন্তু সেকথার আলোচনা আপাতত থাক। বরং আমরা ফিরে আসি নতুন বছরের প্রসঙ্গে। নতুন বছরের প্রথম দিন শুরুর আগের দিনে আমি ফেসবুকে আমার বন্ধুদের উদ্দেশ্যে আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে একবার লিখেছিলাম – ‘নতুন বছর। নতুন জীবন। নতুন স্বপ্ন। নতুন পৃথিবী’। ঠিক পরের দিন আমার এক ফেসবুকবন্ধু প্রতিশুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছিলেন, আপনি যে সব কিছু নতুন লিখেছেন, তা কি  ঠিক? আমাদের জীবনে  সবই তো পুরনো, নতুন কিছু তো নেই! আমার বন্ধুর কথাটা আপাতদৃষ্টিতে সত্যিই  অস্বীকার করা যায় না। পুরনো বছর শেষ হলে প্রাকৃতিক নিয়মে নতুন বছর শুরু হয় ঠিকই, কিন্তু পুরনো বছরের শেষ দিনটির সঙ্গে নতুন বছরের প্রথম দিনটির সত্যিই কি কোনো পার্থক্য আমাদের প্রতিদিনের  জীবনযাত্রায় লক্ষ্য করা যায়? আর যদি কিছু লক্ষ্য করা যায়ও, তার জন্য আমাদের খুব বেশি উল্লসিত হওয়া কি উচিৎ? কেননা আমাদের অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় সাহিত্যিক  গ্রেট শিব্রাম চক্কোত্তি মশাই তো বলেই গেছেন, তিনি সারা জীবন অনেক পরিশ্রম করার পর উপলব্ধি করেছেন যে, নতুন বছরের জন্য অহেতুক উল্লাসের কোনো মানে হয় না, কেননা নতুন বছরের আয়ু শুধুমাত্র একটি বছর! আর সেই গুরুবাক্য স্মরণ করে আমরাও শুধুমাত্র একটি দিন ‘নববর্ষ’ পালন করি এবং ঠিক তার পরদিন থেকেই জড়িয়ে পড়ি আরও অনেক কর্মকান্ডে। বিশেষত প্রতিটি নতুন বছরের প্রথম মাসেই বাঙালির জীবনে নববর্ষ উৎসবের পাশাপাশি আছে আর একটি উৎসব, রবীন্দ্রজন্মোৎসব, ২৫শে বৈশাখ। এবং এভাবেই বছরের প্রতিটি মাসেই আছে আরও অনেক অনেক উৎসব, যা আমাদের জীবনে বয়ে আনে নতুন নতুন স্বাদ, ভাবনা, উপলব্ধি ও আনন্দ।  আর তাই আমরা প্রতি নিয়তই নতুন নতুন ভাবে বেঁচে থাকি, নতুন নতুন সৃজনে তরতাজা থাকি।

    কাজল সেন

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • প্রশান্ত গুহমজুমদার | 2405:201:900c:8874:20e3:44eb:721a:5d1 | ১৮ মার্চ ২০২৩ ১৮:১৬517529
  • প্রিয়বরেষু,
    বড়ো সুন্দর লিখেছ। 
    ভালবাসা নিও। 
    অভিনন্দন।
    তবু নতুন বছরের শুরুতে প্রার্থনা, আগামী দিনে মানুষ আরো একটু, পরিবর্তন নয়, সুন্দরের দিকে, আনন্দের দিকে যাক। সুস্থতার সুগন্ধ মেখে নতুনের জন্য তাঁর যাপন আনন্দময় হয়ে উঠুক। 
    পড়া যাক সামান্য বিনয় মজুমদারের একটি লেখা:
     
    হাঁসগুলি হেঁটে যায় রেল লাইনের পাশ দিয়ে
    সারি সারি দলে দলে এখন  এ সকালবেলায়।
    এইসব  হাঁস কিন্তু পরস্পর কথা  বলে
    নিজেদের সুখসুবিধার
    হাঁসগুলি ধুতি পরে শাড়ি পরে, 
    সংক্ষেপে বললে
    এইসব হাঁস বস্ত্র পরিহিত, ভাত রান্না করে
    জমি চষে, ট্রেন আর অন্য সব যন্ত্রও বানায় 
    এবং উড়োজাহাজ বসে বসে দেশ ছেড়ে অন্য দেশে যায়
    এইসব হাঁসগুলি; মৃত্যু হলে পরজন্মে এইসব হাঁস 
    বুনো হাঁস হয়ে যাবে উড়ে উড়ে চলে যাবে সাইবেরিয়ায়।
     
    ______
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। খেলতে খেলতে মতামত দিন