এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • বংলাভাষার ফ্যাচফ্যাচ 

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ | ১৭১৯ বার পঠিত | রেটিং ৪.৮ (৫ জন)
  • অধিক ফ্যাচফ্যাচ করে লাভ নেই। আমরা, বাঙালিরা মাতৃভাষার জন্য বিস্তর ঘাম, রক্ত ইত্যাদি ঝরিয়েছি ঠিকই। তার প্রমাণ, আসামের উনিশ, পূর্ববঙ্গের উনিশ, পশ্চিমবঙ্গের একষট্টি। কিন্তু এত যুদ্ধবিগ্রহের পরও আমরা বহুটুকরো, রাজনৈতিকভাবে, এবং তারচেয়েও বড় কথা মনোজগতে। বঙ্গভাষীরা কেউ বিশেষ কারো খোঁজ-টোজ রাখেনা। আসামে এনআরসি নিয়ে হুজ্জুতি হলে, সেটা যে বঙ্গভাষীদের সমস্যা, এটা আমরা প্রতিষ্ঠাই করতে পারিনি। তা, সে পুরোনো কেচ্ছা, এখন বিশ্বের বৃহত্তম ডিটেনশন ক্যাম্প তৈরি হয়ে গেছে আসামে, কঠোর বিকল্পের আর কোনো পরিশ্রম নেই, ফলে ওসব চুকে বুকে গেছে, আমরাও ভুলে মেরে দিয়েছি।

    পূর্ববঙ্গের ক্ষেত্রেও তথৈবচ। তিনদিন আগে যে রবীন্দ্রমূর্তি চুরি হয়ে গেছে ঢাকায়, পশ্চিমবঙ্গের লোকেদের মধ্যে দেড়জনও তার খবর রাখেন কিনা সন্দেহ। রবীন্দ্রনাথ আর চুরি বললেই অর্ধেক লোক বলবেন, কী, সেই নোবেল চুরি? সে তো অনেকদিন আগেই হল। এবং এটা শুধু পশ্চিমবঙ্গের সমস্যা তা নয়, পূর্বেও জিজ্ঞাসা করুন, অনুব্রত মন্ডল কে, কেন তিনি জেলে? কেই বা অভিজিৎ গাঙ্গুলি? সব্বাই হাঁ করে থাকবে। এপার সম্পর্কে পূর্ববঙ্গের সাংস্কৃতিক আলাপ বলতে, "ইন্ডিয়া চুর", আর "পাঠান দেখানো উচিত কিনা" এই নিয়ে তক্কো। 

    আমাদেরও অবিকল একই। হিমন্ত বিশ্বশর্মা শুনলে পশ্চিমবঙ্গের অর্ধেক লোক হাঁ করে বলবে, সেটা আবার কে? বিশ্বকর্মার ভাই নাকি? শেখ হাসিনা সম্পর্কে শুধু এইটুকু জানা আছে, যে, জ্যোতিবাবুকেও তিনি বলতে পারতেন, "আমিও হাসিনা"। ব্যস জিকে ফিনিশ। অথচ নীতীশ কুমার কে, জিজ্ঞাসা করুন, কিংবা রবীশ কুমার, কিংবা যোগি আদিত্যনাথ, কিংবা শারুক্ষান, গড়গড় করে জীবপনীপঞ্জি আউড়ে দেব আমরা।

    এর দোষ ঠিক আমাদের নয়। ৪৭ এর পর থেকে "কেন্দ্রীয় ন্যারেটিভ" বলতে এই উপমহাদেশে হিন্দি এবং দিল্লিকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে দেওয়া হয়েছে। ওরাই কেন্দ্র। এবং কেন্দ্রের হাতিয়ার হল বলিউড আর ক্রিকেট। বাকি সব খুচরো, অর্থাৎ আঞ্চলিক। আমরা সেই ন্যারেটিভের গ্রাহক হয়েছে, বা হতে বাধ্য হয়েছি। অতএব, আমাদের ফ্যান্টাসিতে শারুক আর জবানিতে কোহলি। কণ্ঠে বলিউডি সঙ্গীত, আর মনের মধ্যে "জাতীয় টিভি"তে মুখ দেখানোর বাসনা। আমাদের এফএম হিন্দিতে গান গায়, সিনেমা হল পাঠানের এর কাছে নতজানু। এবং তাতেই আমাদের আনন্দ, দাসের যেমন হয় প্রভুর বিজয়ে। এই প্রভুর কাছে, হাসিনা-বিশ্বশর্মা-মমতা সব তুচ্ছ। সব আঞ্চলিক। নিচু জাত। 

    এবং এর দোষ ঠিক আমাদের নয়, তাও নয়। নিজেদের খন্ডিত এবং দাস হয়ে যাবার এই পুরো প্রক্রিয়াটা গড়গড়িয়ে হয়ে গেছে, আমরা মেনে নিয়েছি। মেনে নিয়েছি মানে, টুঁ শব্দটিও করিনি, বৈধতা দিয়েছি। আমরা মানে পশ্চিমবঙ্গ। বাংলাদেশ কিছু প্রতিরোধ করেছে, তাদের হাত ধরেই বিশ্ববাজারে বাংলা ভাষার যা পরিচিতি, ভারতীয় বাঙালিদের কেউ পোঁছেনা, নিজেরাই নিজেদের পোঁছেনা। আমাদের বুদ্ধিজীবীদের চোখের সামনে দিয়ে বলিউডকে পাম্প দিয়ে ফোলানো হয়েছে, বুদ্ধিজীবীরা জয়গান গেয়েছেন। টিভিতে 'জাতীয় কার্যক্রম'এর নামে হিন্দি ঠোসা হয়েছে দশকের পর দশক ধরে, সচেতন জনতা আপ্লুত হয়েছেন। রেডিও থেকে বাংলা মোটের উপর তুলে দেওয়া হল, সবাই দেখেশুনে আরামকেদারায় পায়ের উপর পা তুলে বসেছেন। 

    বছরে একবার একুশে ফেব্রুয়ারি পালন করে এ পাপ যাবার না। প্রকৃত যুক্তরাষ্ট্রের দাবী তুলুন। হিন্দি সিনেমা-চ্যানেলের উপর অতিরিক্ত ট্যক্সোর দাবী করুন। সম্প্রচার এবং শিক্ষা রাজ্যতালিকায় নিয়ে আসার দাবী করুন। এবং ভারত-বাংলাদেশ অবাধ যাতায়াতের দাবী করুন। এছাড়াও, রাষ্ট্রীয় পতাকার পাশাপাশি বাঙালির জাতীয় সঙ্গীত এবং জাতীয় পতাকার দাবী করুন (আমি এইসব গান-টানের খুব একটা ভক্ত না, কিন্তু যেভাবে জাতি এবং রাষ্ট্রকে ঘেঁটে দেওয়া হচ্ছে, তাতে এটা জরুরি মনে হচ্ছে)। এসব বাদ দিলে, শুধু শুধু "বাংলা আমার মা" শুনতে-টুনতে ভালই, কিন্তু অর্থবহ কিসুই না।
     
    পুঃ ভাষাদিবস এলেই, প্রমিত বাংলার হাতে কেমন 'আঞ্চলিক' বাংলা অবদমিত, সে নিয়ে হাহাকার করা বন্ধ করুন। স্থানীয় বাংলা কিঞ্চিৎ প্রান্তিক, সে নিয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু সে সব ভাষাতেই। মিসিসিপির ইংরিজি হলিউডের কাছে কিঞ্চিৎ প্রান্তিক, নিকারাগুয়ার স্প্যানিশও তাই। এগুলো ভাষার আভ্যন্তরীন সমস্যা। অন্য ভাষার আগ্রাসনের সঙ্গে তুলনা করতে হলে, চলিত-ভাষায় তাকে বলে মুড়ি-মিছরির-একই-দর। আর সদাজাগ্রতদের ভাষায় বলে হোয়াট্যাবাউটারি। 

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • Suman Mukherjee | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১১:৩৩516639
  • বঙ্গের ন্যারেটিভ, ভাষাগত ক্ষত 
    একুশে বাড়িয়া ওঠে, নখকুনির মত
  • | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:১৪516643
  • ক্কি ভাল লেখাটা। থ্যাঙ্কু  ল্যাদোশ।
    বাংলাও,  প্রায় গোটা ভারতই ওই দিকে ধাবমান।
     
  • r2h | 165.1.172.196 | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৯:২৫516649
  • "প্রমিত বাংলার হাতে কেমন 'আঞ্চলিক' বাংলা অবদমিত, সে নিয়ে হাহাকার করা বন্ধ করুন।" - এইটা বুঝলাম না। এই নিয়ে হাহাকার হয় বুঝি? হয় হয়তো, চারদিকে কী হচ্ছে তার সব খবর তো আর আমি রাখি না।

    তবে ঐ প্রমিত বনাম আঞ্চলিক ব্যাপারটা অনেকটা হিন্দি বনাম আঞ্চলিকের মতই লাগলো শুনতে।

    অবশ্য আমার একটা বড় বিরক্তির জায়গা আছে, তথাকথিত আঞ্চলিক বাংলাকে 'প্রমিত'পন্থীদের আদৌ বাংলা হিসেবে অস্বীকারের চেষ্টা। ক'দিন আগেই তো এখানে সাদেকুজ্জামনের লেখায় এই নিয়ে এক প্রস্থ হলো। আজও শুভাপ্রসন্ন নাকি দাওয়াত, পানি নিয়ে আপত্তি করেছেন - ওসব নাকি বাংলায় অন্য ভাষার অনুপ্রবেশ। বুবুভাতে প্রকাশিত ষষ্ঠ পাণ্ডবের লেখায় চাচা ফুফু নামাজ দোয়া তালিম রোজা-র 'প্রমিত বঙ্গানুবাদ' বিষয়ে নানান কথা হয়েছে।

    ইংরেজির ডায়ালেক্ট, অ্যাকসেন্ট ইত্যাদি নিয়ে নানান গোলমাল আছে, কিন্তু ওদের তো পার্টিশন নেই। স্প্যানিশের অবশ্য নানান ঝামেলা আছে। ক'বছর আগে নিউ ইয়র্কের ক্যাফেতে স্প্যানিশভাষীকে সার্ভ করতে অস্বীকার করায় খুব গোলমাল হলো।

    তবে একই ভাষাভাষী পড়শিদের মধ্যে এরকম লজ্জাজনক অপরিচয় থাকলে স্থানীয় আঞ্চলিক জাতীয় এইসবের গোলমালে কোথা থেকে কী হবে তা দেখার জিনিস।
  • &/ | 151.141.85.8 | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২২:০২516653
  • বিশ্বকর্মার ভাই! ঃ-)
  • aranya | 2601:84:4600:5410:8979:c126:7f9d:c7e7 | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০০:৫৫516659
  • চাচা ফুফু নামাজ দোয়া তালিম রোজা-র 'প্রমিত বঙ্গানুবাদ' - এই শব্দ গুলোর অনুবাদ করতে হয়েছে !!!! :-((
  • Debanjan Banerjee | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২০:২৬516681
  • খুবই ভালো লেখা | একদম ঠিকঠাক লিখেছেন |
     
    চালিয়ে যান |
  • :|: | 174.251.160.146 | ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৪:১৬516716
  • "ভারত-বাংলাদেশ অবাধ যাতায়াতের দাবী করুন" -- এই দাবীটার প্রয়োজনীয়তা কী? 
  • দীপ | 42.110.147.135 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:৫১516730
  • একটি ভাষার গুরুত্ব কয়েকটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে। তার মধ্যে অন্যতম ভাষার ব্যবহারিক প্রয়োগ। বাংলা ভাষাকে সর্বস্তরে ব্যবহার করতে হবে। স্কুল, সরকারি অফিসে বাংলাভাষা ব্যবহার করতে হবে। সরকারি চাকরিতে বাংলাভাষা অন্যতম বিষয়রূপে রাখতে হবে। তবেই বাংলাভাষার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে।
    যদিও বাংলাভাষা আবশ্যিক করলে অনেকে আবার ফ্যাসিবাদ খুঁজে পান! 
    এরপর প্রয়োজন সেই ভাষা নিয়ে উচ্চতর গবেষণা। তারজন্য অন্যান্যভাষা নিয়ে চর্চা করতে হবে। সংস্কৃত, ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে চর্চা করতে হবে। এই চর্চা বাংলাভাষাকে আরো সমৃদ্ধ করবে। 
    অবশ্য সংস্কৃত নিয়ে কথা বললে অনেকে আবার হিন্দুত্ববাদ খুঁজে পান!
  • দীপ | 42.110.147.135 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:০৩516731
  • কান্নাকাটি করে ভাষার মর্যাদা রক্ষা হয়না! দক্ষিণ ভারত লড়াই করে নিজেদের ভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছে, তারাও ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে। বাংলাদেশ‌ও এক‌ইভাবে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছে। 
    শুধু ফেসবুক/ব্লগে কান্নাকাটি করে কিছু হয়না!
     
     
  • দীপ | 42.110.147.135 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:১৫516732
  • ২১শে ফেব্রুয়ারি র অসামান্য আত্মত্যাগ  আজ বাংলাদেশের গণ্ডী ছাড়িয়ে সারা বিশ্বে প্রচারিত। এই লড়াই কিন্তু আমাদের দেশেও হয়েছে। মানভূম অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে ভাষা আন্দোলন হয়েছে, তার ফলে পুরুলিয়া পশ্চিমবঙ্গের সাথে যুক্ত হয়েছে। শিলচরে‌ও ভাষা আন্দোলন হয়েছে, ১১জন বীরের মৃত্যুবরণ করেছেন। এই ঘটনাগুলো ও চূড়ান্ত গর্বের বিষয়। কিন্তু এগুলো নিয়ে কাউকে বিশেষ আলোচনা করতে দেখিনি। 
    যদি সত্যিই নিজের ভাষাকে ভালোবাসেন, শ্রদ্ধা করেন; তবে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করুন। নিজের ভাষার জন্য লড়াই করুন!
  • দীপ | 42.110.147.135 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:২৩516733
  • আরেকটু অপ্রিয় কথা মনে করিয়ে দিই। বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে একজনের নাম অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তিনি ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। ১৯৭১ সালে পাকবাহিনী তাঁকে ও তাঁর ছেলেকে হত্যা করে। যদিও বর্তমান বাংলাদেশের কিছু ঐতিহাসিক ও সাংবাদিক বাদে কাউকে এঁকে দিয়ে বিশেষ আলোচনা করতে দেখা যায়না!
    গত তিন বছরে এখানেও দেখেছি বলে মনে পড়েনা!
     
  • দীপ | 42.110.147.135 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:২৯516734
  • সরি, নিয়ে।
     
  • dc | 2401:4900:1cd0:c2c7:75a9:2e90:aa89:1e5 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:৩৯516735
  • বাংলা ভাষায় পানি ফুফু চাচা নামাজ দোয়া তালিম রোজা ইত্যাদি ইত্যাদি নানান শব্দ এলে অসুবিধে কি? ভালোই তো! বা ধরুন সরি চাওয়া, বা ইট বেটা ইট (অন্য একটা টইতে দেখলাম), এসব নানান ফ্রেজ এলেও ভালোই তো হয়! অবশ্য না এলেও কিছু না, আসবে কি আসবে না সে তো ব্যবহারকারীরাই ঠিক করবে। ভাষা অনবরত পরিবর্তন হয়, একশো বছর আগে বাংলা ভাষা যেমন ছিল আজ সেরকম নেই, একশো বছর পর আবার এখনকার মতো থাকবে না। বা হয়তো ভাষাটাই থাকবে না। 
  • দীপ | 42.110.147.135 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:৪৭516736
  • এখানে কেউ কি অসুবিধা জানিয়েছে?
    তবে বাবা থাকতে জোর করে আব্বু বলতে হবে, এটাও ঠিক বুঝতে পারলাম না।
    যখন উপযুক্ত প্রতিশব্দ থাকেনা, তখন অবশ্য‌ই অন্য ভাষা থেকে শব্দ নিতে হয়।‌ সেটা খুবই স্বাভাবিক। ভাষা প্রবহমান, নতুন শব্দ আসতে থাকে।
  • দীপ | 42.110.147.135 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:৫১516737
  • 'ওইখানে তোর বাপজি ঘুমায়
    ওইখানে তোর মা
    কাঁদছিস তুই
    কী করিব দাদু পরান যে মানে না!'
     
    কবর - জসিমউদ্দিন
     
    এখানে জসিমউদ্দিন কিন্তু আব্বা/আব্বু শব্দের প্রয়োগ করেননি।
  • dc | 2401:4900:1cd0:c2c7:75a9:2e90:aa89:1e5 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:৫৩516738
  • "আব্বা হলো একটি গানের দল।" 
     
    এখানে আব্বা শব্দের প্রয়োগ হয়েছে। 
  • দীপ | 42.110.147.135 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৪:৫৬516739
  • তা প্রয়োগ করতে কেউ বারণ করেছে বলে তো মনে হয়না!
  • উফফ | 2001:67c:6ec:203:192:42:116:191 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:৪২516751
  • মামু পরের লেখাটাও এখানে দাও। নাইলে এই  চাড্ডিদিপ্তাস্লিমা এ লেখাটাকে গোভাগাড় বানিয়ে ছাড়বে।
  • ar | 108.26.161.231 | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২১:৪৩516759
  • বাবা শব্দটা তো তুর্কী ভাষা থেকে বাংলাতে এসেছে। কাকা মনে হয় আদতে আফ্গান-পার্শী শব্দ। তো!!!
  • বিপ্লব রহমান | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৫:০৫516832
  • "আমরা, বাঙালিরা মাতৃভাষার জন্য বিস্তর ঘাম, রক্ত ইত্যাদি ঝরিয়েছি ঠিকই। তার প্রমাণ, আসামের উনিশ, পূর্ববঙ্গের উনিশ, পশ্চিমবঙ্গের একষট্টি। " 
     
    উহু, সেটি একুশ হবে।  সৈকত দা,  লেখার শুরুতেই গুরুতর ভ্রান্তি,  সংশোধন দিন প্লিজ। 
  • বিপ্লব রহমান | ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৫:২০516833
  • *পুনশ্চে নিবেদন দুই নোক্তা, 
     
    ১. অমর একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা শহীদ দিবস আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পেলো কীভাবে?

    ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় ও এতে ১৮৮টি দেশ সমর্থন জানালে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। 

    এর পর ২০০০ সালে ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালন করা হচ্ছে।

    ২. বলা ভাল, একুশের হাত ধরেই আসে একাত্তর, স্বাধীনতা। বাংলাদেশ আসলে ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৭১ --  ইতিহাসের এই তিন দাগে বাঁধা। 

    -- আপনাদের আলোচনা চলুক। শুভ 
     
  • দীপ | 2402:3a80:196c:1552:1b55:b428:4472:29a3 | ০৪ মার্চ ২০২৩ ২২:৩৬516983
  • শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত। 
     
    ডিসেম্বর বিজয়ের মাস, ভারতীয় ভাষা পরিবারের ঐতিহ্যবান শাখা বাংলাভাষার ভিত্তিতে গঠিত হওয়া রাষ্ট্রের অঙ্কুর প্রোথিত হয়েছিল যে মাসে।খান সেনার নরখাদক বাহিনীর শীর্ষ নরখাদক আমের আবদুল্লাহ খান নিয়াজির আত্মসমর্পনের ছবি বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের ইতিহাসের মাইলস্টোন।জেনারেল অরোরার সামনে হোস্টলার খুলে রাখা একটা সমাপতন।শুরু কিন্তু বহু আগে।১৯৪৮ সালে।যার সঙ্গে জুড়ে যান কুমিল্লার এক উজ্জ্বল সন্তান ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত।ভারতে স্বাভাবিক ও সম্পন্ন জীবনযাপনের হাতছানি ছেড়ে যিনি পরে রইলেন মাতৃভূমি কুমিল্লার মাটিতে।
     
    ১৯৪৮সালের মার্চ মাস।স্থান নবজাতক রাষ্ট্রের রাজধানী করাচি।মহাম্মদ আলী জিন্নার সাধের পাকিস্তানে তখন একটাই ভাষার আধিক্য।উর্দু।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে চোস্ত ইংরেজিতে সেকথা জানিয়ে দিয়ে গেছেন।'উর্দু এন্ড অনলি উর্দু শ্যাল বি দ্য ষ্টেট ল্যাঙ্গুয়েজ অফ পাকিস্তান'।
     
    ডঃ অশোক মিত্র নিজে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল হলে।আবেগে উদ্বেলিত ছাত্ররা আওয়াজ তোলে 'কায়েদে আজম জিন্দাবাদ,রাষ্ট্র ভাষা বাংলাও হোক'।নবগঠিত পাকিস্তানের প্রতি কোনও বীতরাগ গরিষ্ঠ বাঙালি মুসলমান ছাত্রছাত্রীদের ছিল না।তাঁদের দাবী মাতৃভাষা সমমর্যাদার আসন পাক।ক্রুদ্ধ নয়নে, রোষায়িত ভঙ্গিমায় ক্ষয়রোগ আক্রান্ত ভারতীয় লিব্রেলদের নয়নের কর্নিয়াকায়েদে আজম হলত্যাগ করেন।ঐটা বোধয় জনৈক ক্ষয়রুগীর জীবনের সবচে বড় সাফল্যের কবর খোঁড়ার সূত্রপাত ঘটিয়েছিল।
     
    যাই হোক ৪৮এর ফেব্রুয়ারিতে করাচিতে ফিরে যাওয়া যাক।করাচির অধিবেশন ছিল আক্ষরিক অর্থে ঐতিহাসিক।পাকিস্তানের গণপরিষদের আসনে সেদিন মুলতুবি আনলেন কুমিল্লার এক আইনজীবী।ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত।রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে যুক্তি তাঁর শানিত।
     
    “দেশের ছয় কোটি নব্বই লক্ষ নাগরিকের মধ্যে চার কোটি চল্লিশ লক্ষ মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেন। তা হলে আপনিই বলুন মহাশয়, রাষ্ট্রভাষা কী হওয়া উচিত?... একটা রাষ্ট্রের রাষ্ট্রভাষা তো সেই ভাষাই হওয়া উচিত, যাতে বেশির ভাগ মানুষ কথা বলেন।” তৎকালীন নবগঠিত পাকিস্তানের জনসংখ্যা ভিত্তিক পরিসংখ্যান ধীরেন্দ্রনাথের বক্তব্যকেই তুলে ধরবে।তিন জনের থেকে সমর্থন পেলেন।
     
    জবাবি উত্তরে লিয়াকত আলী ধীরেন্দ্রনাথকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করলেন।বাংলার মুসলিম লীগের হোতারা নিশ্চুপ রইলেন।
     
    লিয়াকত বললেন “উপমহাদেশের কোটি কোটি মুসলমানের দাবিতে পাকিস্তানের জন্ম এবং তাঁদের ভাষা উর্দু। কাজেই বেশির ভাগ জনগণ যে-ভাষায় কথা বলেন, তাকে প্রাধান্য দিতে যাওয়া ভুল হবে।” তিনি পাকিস্তানকে ‘এক জাতি, এক দেশ, এক ভাষা’র তকমা দিতে চাইলেন, ১১ মার্চ গণপরিষদে ‘রাষ্ট্রভাষা উর্দু’ মর্মে বিল পাশ হল।এখনও সেবিলের জোরে ভূমিজ পাঞ্জাবি, বালুচি, সিন্ধি, কচ্ছি, মেমনি ,পুস্তু ভাষা ব্রাত্য।ইসলাম ও একমাত্র উম্মাহর ধোঁয়াটে, কাঠামোহীন, অবাস্তব নেশনের ধারণা ছাড়া পাকিস্তানের কোনও বুনিয়াদ ছিল না।বাংলা ভাষার পক্ষে মশাল জ্বালিয়ে রাখলেন ধীরেন্দ্রনাথ।পক্ষে কেবল তিনজন প্রতিনিধি।
    প্রেমহরি বর্মা, ভূপেন্দ্র কুমার দত্ত এবং শ্রীশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।বিপুল ভোটে উর্দু রাষ্ট্রভাষার স্বীকৃত পেল।কি অদ্ভুত অধিবেশনে স্পিকার একজন বাঙালি ।তাজিমুদ্দিন খান।
     
    ধীরেন্দ্রনাথ তেঁজগাঁও বিমানবন্দরে ফিরে অভূতপূর্ব জনসমর্থন পেলেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা দুহাত ভরে সমর্থন দিলেন বাংলা ভাষার এই দুরন্ত ক্রুসেডারকে।১১মার্চ সাবেক পূর্বপাকিস্তানে পালিত হলো বাংলা ভাষা দিবস।
     
    এককথায় রাষ্ট্রের চোখে তখন থেকেই শূলের মতো বিঁধেছিলেন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত।৬৫র ভারত পাক যুদ্ধে গৃহবন্দি হলেন।আর একাত্তরে ময়নামতির সেনা ক্যাম্পে পাকি নরমেধের অন্যতম বলি হলেন ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত।
     
    কি ভাবে?কুমিল্লার ময়নামতির সেনাক্যাম্পের খৌরকার রমণী শীলের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন রশীদ হায়দার।নিজের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিগ্রন্থে তাঁর উল্লেখ নিম্নরূপ।
     
    'ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের উপর যে অমানবিক নির্যাতন হয়েছে তা দেখে কোন সুস্থ ও বিবেকবান মানুষের চোখের জল সংবরণ করা সম্ভব নয়। সাখাওয়াত আলী খান প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে জানা যায়
     
     “ধীরেন বাবু সম্পর্কে বলতে গিয়ে রমণী শীলের চোখের জল বাঁধন মানেনি। মাফলারে চোখ মুছে তিনি বলেন, ‘আমার সে পাপের ক্ষমা নেই। বাবু স্কুলঘরের বারান্দায় অতি কষ্টে হামাগুড়ি দিয়ে আমাকে জেজ্ঞেস করেছিলেন কোথায় প্রস্রাব করবেন। আমি আঙ্গুল দিয়ে ইশরায় তাকে প্রস্রাবের জায়গা দেখিয়ে দিই। তখন তিনি অতি কষ্টে আস্তে আস্তে হাতে একটি পা ধরে সিঁড়ি দিয়ে উঠানে নামেন। তখন ঐ বারান্দায় বসে আমি এক জল্লাদের দাড়ি কাটছিলাম। আমি বারবার বাবুর দিকে অসহায়ভাবে তাকাচ্ছিলাম বলে জল্লাদ উর্দুতে বলে, ‘এটা একটা দেখার জিনিস নয়-নিজের কাজ কর।’ এরপর বাবুর দিকে আর তাকাবার সাহস পাইনি। মনে মনে শুধু ভেবেছি বাবু জনগণের নেতা ছিলেন, আর আজ তাঁর কপালে এই দুর্ভোগ। তাঁর ক্ষতবিক্ষত সমস্ত দেহে তুলা লাগান, মাথায় ব্যান্ডেজ, চোখ ও হাত বাঁধা অবস্থায় উপর্যুপরি কয়েকদিনই ব্রিগেড অফিসে আনতে নিতে দেখি।” 
     
    এভাবেই জনসমক্ষে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের শেষবার দেখা যায়।তাঁর দেহ পাওয়া যায়নি।পরবর্তী কালে তাঁর উত্তরপুরুষ তাঁর স্থাবর, অস্থাবর সম্পত্তি দাবি করতে গেলে, মৃত্যুর শংসাপত্র চাওয়া হয়।অনাদায়ে তাঁকে ফেরার ঘোষণা করা হয়।কারণ সেটি বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু পরবর্তী বাংলাদেশ।যেখানে রাষ্ট্রপিতার ঘাতকের দল কেউ বাংলাদেশের দূতাবাসে ও প্রশাসনে সর্বোচ্চ সম্মান নিয়ে চাকুরীরত।
     
    তথ্যসূত্রঃ
     
    ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, বদরুদ্দীন ওমর।
    আনিসুজ্জামান, রশীদ হায়দার ও মিনার মনসুর সম্পাদিত (১৯৯৫)। শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত।
  • দীপ | 2402:3a80:196c:1552:1b55:b428:4472:29a3 | ০৪ মার্চ ২০২৩ ২২:৩৮516984
  • ভাষাশহীদ মৃত্যুঞ্জয় ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে নিয়ে বেশ‌ কিছু তথ্য সবার সঙ্গে ভাগ করে নিলাম।
  • দীপ | 42.110.138.123 | ১৮ মার্চ ২০২৩ ১৮:২৪517530
  • দীপ | 42.110.138.123 | ১৮ মার্চ ২০২৩ ১৮:৩৩517531
  • ভাষার জন্য শুধু কান্নাকাটি করে লাভ হয়না! লড়াই করতে হয়! যা দক্ষিণভারত করেছে, বাংলাদেশ করেছে! 
     
    প্রত্যেকটি স্কুলে আবশ্যিক বাংলা রাখতে হবে; সরকারি কাজ বাংলা ভাষায় করতে হবে! 
    তবেই বাংলাভাষার গুরুত্ব বৃদ্ধি পাবে!
     
  • দীপ | 42.110.144.20 | ০৮ এপ্রিল ২০২৩ ০১:০৩518437
  • ৭১ এর সেই সব দিন-
    সেই সব সময়ের স্বাক্ষী আমরা হারিয়ে গেলে আর কেও থাকবেনা সঠিক ইতিহাস লিপিবদ্ধ করবে| এখনকার প্রজন্মকে বলার কেও থাকবেনা | দিনের পর দিন কি খেয়েছি, কী হবে , কেমন অনিশ্চয়তা। পাশের বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গেলো। আমাদের দেশ গ্রাম নাই। কোথায় যাবো। 
    শিউরে উঠি ভাবলে।
     
    এক ঐতিহাসিক দলিল- 
     
    আজ ১৪ ডিসেম্বর ২০২০| পুরো মাসটাই বিজয়োৎসব এর মাস | এক নদী রক্ত পেরিয়ে স্বাধীনতার মাস এটা | বাঙালীদের জন্য বা বাংলাদেশি জনগনের জন্য এই মাস খুব আবেগজনিত মাস | খুশি আনন্দ ,সেই সাথে স্বজন হারানোর বেদনায় মিশ্রিত মাস | ৭১ এর দিনলিপি নিয়ে লেখা আমার বই " ফানুস " এর কিছু অংশ তুলে দিলাম |
     
    -----------------------------------------------
                                       আমার হাতে ৭১ ভয়াবহ রাতের সেই ঘটনার পরে একটা ডাইরি আসে। ক’লাইন পড়েই বুঝলাম
      সবই ১৯৭১ প্রথমদিকের ।
    সেই ভয়াবহ দিন নিয়ে বড় ভাই লিখেছে।
     
     
    এই ঘটনাটি আমার জীবনের সাথে জড়িত। ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চের সেই কালো রাতে পাক হানাদার বাহিনী ও তাদের অনুচররা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ঝাঁপিয়ে পড়ে,- আমি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছি। আজ সেই ভয়ংকর দিনগুলির কথা খুব করে মনে পড়ছে, তখন আমি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ বর্ষের ছাত্র। আমাদের ফাইনাল পরীক্ষা যখন আসন্নপ্রায় তখনই পূর্ব পাকিস্তানে গোলযোগ চূড়ান্তভাবে দানা বেধেছে। আমরা যখন পরীক্ষার প্রস্ত্ততি নিচ্ছি ঠিক তখনই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষিত হল। ঐ দিনটি ছিল আমার জীবনে দুঃস্বপ্নের মত, যেটা পরবর্তীতে আমার ধর্ম ও রাজনৈতিক চেতনার আমূল পরিবর্তন এনে দিয়েছে।
     
     ২৫ শে মার্চের সন্ধ্যায় আমি শেরে বাংলা হলে ছিলাম। কিছুদিন আগে যখন জেনারেল ইয়াহিয়া খান পূর্ব পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানের কথা বললেন, তখন থেকেই এখানকার অবস্থা ভালো যাচ্ছিল না। ছাত্ররা ধর্মঘট করেছিল। পরীক্ষা আসন্ন হওয়ায় আমি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। যাই হোক,
     পরে রাজনৈতিক গোলযোগের কারনে পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করা হল এবং যার ফলে বেশির ভাগ ছাত্র তাদের বাড়িতে ফিরে গেল। যেহেতু আমি প্রত্যক্ষভাবে ছাত্র রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম, তাই হলে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম যাতে প্রয়োজন মাত্রই সংগ্রামে অংশ গ্রহণ করতে পারি। 
     
    ২৫ শে মার্চের কয়েকদিন আগে থেকেই একটা গুজব রটে আসছিল যে, শেখ মুজিব ও জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না এবং, ফলত, যে কোন সময় আর্মি নামানো হতে পারে। মিডিয়া কিন্তু চতুরতার সাথে ফলাও করে প্রচার করছিল যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সুফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কিছু পত্রিকা এটাও লিখেছিল - জেনারেল ইয়াহিয়া প্রস্তুতি নিচ্ছে পূর্ব বাংলার দায়ভার বেসামরিক সরকারের হাতে ছেড়ে দেওয়ার, যেখানে মুজিব এবং ভুট্টোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে। এই ধরণের ভুয়া খবরের প্রেক্ষিতে অনেক বাঙ্গালি ভেবেছিল অবশেষে ১৫ বছর পরে তারা স্বাধীনতার স্বাদ গ্রহণ করতে যাচ্ছে। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে তা ঘটেনি। ২৫ শে মার্চের সেই কালো রাতে পাকিস্তানী ইসলামিক আর্মি ভয়ংকর রূপ ধারণ করে তারা তাদের ব্যারাক থেকে বের হয়ে আসে, -বাঙ্গালিদের তারা এমন শাস্তি দেবে যেন তা আজীবন মনে থাকে;- সত্যিই তাই হয়েছে।
     
    এটা আমার একান্ত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা।
     
     সে দিন একটু সকাল সকাল ঘুমাতে গিয়েছিলাম, খুব সম্ভবত তখন রাত ন’টা বাজে। সারাদিন বেশ ব্যস্ত কাটায় খুব ঘুম পাচ্ছিল। হঠাৎ করেই, রাত ১১টার দিকে, একটানা গুলির শব্দে আমার গভীর ঘুম ভেঙ্গে গেল। প্রথমে ভেবেছিলাম, এটা হয়ত বাঙ্গালীদের বিজয় উৎসব, তবে খুব শীঘ্রই আমি আমার ভুল বুঝতে পারলাম। জানালা খুললাম-বাইরে গভীর অন্ধকারে ছেয়ে ছিল। রাস্তার হালকা বাতিগুলো বন্ধ ছিল। খুব কষ্ট করে দেখলাম, রাস্তায় অসংখ্য মিলিটারিদের গাড়ি এবং রাইফেলধারী মিলেটারিরা ছুটোছুটি করছে। মাঝে মধ্যে ওদের সার্চ লাইটে ওদের অবস্থা স্পষ্ট দৃশ্যগত হচ্ছিল। অসংখ্য সৈনিক দৌড়াচ্ছিল আর এদিক-ঐদিক এলোপাথাড়ি গুলি করছিল। দেখতে পাচ্ছিলাম, মিলিটারিদের বড় একটা অংশ আমাদের ক্যাম্পাসের সবটা ঘীরে ফেলেছে, এমনকি আমার হলের সিঁড়িতে মিলিটারিদের উর্দু ভাষায় কথা বলা শুনতে পাচ্ছিলাম। বুঝতে আর বাকি রইল না কি ঘটছে। ভাগ্যিস সঙ্গে সঙ্গে লাইট অফ করে ফেলেছিলাম। আমি বিছানার ওপর উঠে পড়েছিলাম। বন্দুক এবং মেশিনগানের অনর্গল গুলির শব্দে আমার কানে তালা লাগার উপক্রম।
     
     আমি নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। রুমে একাই ছিলাম, আস্বস্ত করবার মত কেউ ছিল না সেখানে। দুর্ভোগ যেন বেড়েই চলেছে, আমি ভয়ে কেঁপে উঠে বিছানায় পড়ে গেলাম। সহসা, একগুচ্ছ গুলি কানের কাছ দিয়ে নিকটবর্তী জানালা দিয়ে বের হয়ে গেল। ধরেই নিয়েছিলাম, আমি মরে যাচ্ছি। বেশি কিছু না ভেবেই গুলির ঝাঁক থেকে নিজেকে বাঁচাতে বিছানার তলে ঢুকে পড়লাম। বুকে ভর দিয়ে শুয়ে পড়লাম আর মেঝে শক্ত করে ধরে রইলাম, যেন সেটাই আমার জীবন। লাগামহীনভাবে সারারাত্রি গুলিবৃষ্টি চলতে থাকল।
     
     তারপর, এক সময়, হঠাৎ করেই রাজ্যের নীরবতা নেমে আসলো। আর কোন বন্দুক বা মেশিনগানের শব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। মনে হল সব থেমে গেছে। আমি খুব সতর্কতার সাথে বিছানার তল থেকে বের হয়ে বিছানার ওপর বসলাম। হাত ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি, তখন রাত ৩টা কিম্বা কাছাকাছি একটা সময় ছিল। হঠাৎ করেই তীব্র চিৎকারের সাথে সাথে তীব্র আলোয় ঝলসে ঊঠল চারপাশ। বাইরের দিকে না তাকিয়ে পারলাম না, ভাঙ্গা জানালার ভেতর দিয়ে দেখলাম, অনেকগুলো টাঙ্ক বস্তি তাক করে আগুন ছুড়ে মারছে।
     
     বস্তিটা ছিল আমাদের ঠিক হলের পেছনেই পরিত্যক্ত রেল লাইনের ধার জুড়ে। লক্ষ্য করলাম মানুষ-জন সব ছুটছে। অনেকগুলো মাথা বস্তি ছেড়ে এদিক ওদিক ছুটোছুটি করছে। যারা আগুন থেকে নিজেদের বাঁচানোর চেষ্টা করছে বুলেটের আগুনে ঝলসে দেওয়া হচ্ছে তাদের বুক। চারিদিকে শ্রাবণের বৃষ্টিপাতের মত গুলি বর্ষণ করা হচ্ছিল, আমি একট্রাক সৈন্য দেখতে পেলেও প্রকৃতপক্ষে ওরা ছিল পিপড়ের ঝাঁকের মত। 
     
    এটা আমাকে টিভিতে দেখা ভিয়েতনাম যুদ্ধকে কেন্দ্র করে বানানো সিনেমাগুলোর কথা মনে করিয়ে দিল। শুনতে পাচ্ছিলাম মানুষের বাঁচার আকুতি ও চিৎকার। জানালা বন্ধ করে দিলাম এই ভয়ে যে ওদের একটা গুলিই আমার জন্য যথেষ্ট। মেঝেতে বসে পড়লাম, এবং তৎক্ষনাৎ উপলব্ধি করলাম আমার পালাবার পথ চতুর্দিক থেকে বন্ধ।
     
    খুব ধীর গতিতে এই নীরব ঘাতক রাতের অবসান ঘটিয়ে সূর্যের আগমন ঘটল। তখনো বাইরে মিলিটারীদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখলাম। আসলে কী ঘটছে জানার জন্য আমি আমার রেডিওটা, যথাসম্ভব আস্তে, চালু করলাম। ঢাকা রেডিও সম্প্রচার কেদ্রটি বন্ধ ছিল, ফলত, কলকাতার রেডিও চ্যানেল ধরালাম। ওরা পূর্ব পাকিস্তানের চলতি ঘটনা নিয়ে কোন খবর পেশ করল না, শুধু জানালো, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান শেখ মুজিবের সাথে আলাপ সেরে পাকিস্তানে ফিরে গেছেন। সুতরাং করাচির চ্যানেল ধরলাম, এখন আমি যা শুনতে ব্যকুল ছিলাম তা শুনতে পেলাম। ঘোষণা দেওয়া হল, জেনারেল ইয়াহিয়া জাতির উদ্দেশ্যে ভাষন দিতে যাচ্ছেন।
     
     আমি তার কথাগুলো শুনলাম। মনে হচ্ছিল আমি গভীর মাতাল কারও কথা শুনছি। তার সব কথা এই মুহূর্তে ঠিক মনে করতে পারছি না, তবে কিছু কথা আমার এখনো মনে আছে। সে বলেছিল, ‘মুজিব একজন দেশদ্রোহী, সে অবশ্যই শাস্তি ভোগ করবে।’ ভাষণ এই বলে শেষ করলো- ‘মুজিবকে ধরা ও শাস্তির জন্য ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ সংবাদ ছড়িয়ে পড়ল যে শেখ মুজিব ও ড. কামাল হুসাইনকে বিচারের জন্য পশ্চিম পাকিস্তানে ধরা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি ভুট্টোকে বলতে শুনলাম, ‘আল্লাহকে ধন্যবাদ, পাকিস্তান রক্ষা পেয়েছে।’
     
    তখনো ওদের গুলি করা থামেনি, বাতাসে একধরণের বিশ্রী দুর্গন্ধ পাচ্ছিলাম, পরে বুঝতে পারলাম ওটা ছিল লাশ পোড়ার গন্ধ। কোন দমকল বাহিনীর গাড়ির হর্ন শুনতে পেলাম না, যদিও দমকল বাহিনীর অফিসটা ছিল হলের ঠিক পাশেই। সকাল ৮টার দিকে আস্তে আস্তে গুলির শব্দ থেমে আসলো। আমি জানালা দিয়ে দেখলাম ট্যাঙ্কগুলো আমার দৃশ্য থেকে সরে যাচ্ছে। আমি পূনরায় বিছানায় ঝুঁকে পড়ে রেডিওটি চালু করলাম। দরজায় কড়া নাড়ার শব্দ শুনতে পেলাম। জমে গেলাম ভয়ে। অনুভব করলাম, আমার শরীরের রক্ত চলাচল কিছুক্ষণের জন্য যেন থেমে গেছে। সবকিছু ধুসর দেখতে শুরু করলাম। নড়াচড়া করতে পারলাম না, বিছানায় সমস্ত শরীর যেন গেঁথে গেছে। কিছুক্ষণ পর আবারও শব্দ হল-খুব চাপা শব্দ। এখন আমি উপলব্ধি করলাম, আর্মি হলে এতক্ষণ দরজা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করত। আমার মনে হল এটা অন্য কেউ, সুতরাং দরজার কাছের জানালাটির কাছে গিয়ে উঁকি মারলাম। দেখলাম মঞ্জু আমার পাশের রুমের বাসিন্দা হামাগুড়ি দিয়ে অপেক্ষা করছে। দরজারটা একটু ফাঁক করে জানতে চাইলাম কি ব্যাপার। 
     
    সে ফিসফিস করে বলল তার রুমমেট আশরাফের কি যেন হয়েছে সুতরাং তার সাথে আমাকে যেতে বলল। আমি তার মত করে হামাগুড়ি দিয়ে তার পিছন পিছন চললাম,
     রুমে গিয়ে দেখি আশরাফ মেঝেতে পড়ে আছে, চোখ খোলা কিন্তু মুখ আটকা। চারিদিকে পানি ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল। আমি কারণ জানতে চাইলে মঞ্জু বলল, এটা পানি না আশরাফের প্রস্রাব। আমাকে সে বলল, আশরাফ বেশ কয়েকবার প্রস্রাব করে ফেলেছে এবং এখন আর সে কোন কথায় বলছে না। আমি আশরাফকে ডাকলাম, সে শুধু আমার দিকে তাকাল কিন্তু কোন কথা বলল না। বুঝতে পারলাম সে ভয়ে আড়ষ্ঠ হয়ে গেছে। মঞ্জুকে বললাম, আমাদের উচিৎ ওর কানে কানে বলা যে মিলিটারিরা চলে গেছে, এবং প্রায় পনের থেকে বিশ মিনিট বলার পর সে বিড় বিড় করে কি যেন বলল। কিছুক্ষণ পর সে বলল, ‘প্লিজ, প্লিজ, আমাকে একা রেখে যেও না।’ 
     
    আমি আশরাফকে বললাম, যাই ঘটুক না কেন আমরা তিনজন একত্রেই থাকব। যদি মরি তো একসাথেই মরব। আমার কথায় আস্তে আস্তে আশরাফ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসল। আমরা খুব খুধার্ত ও পিপাসার্ত ছিলাম। আমরা ছাতা পড়া পাউরুটি ও পানি খেলাম। তারপর আমরা ভাগাভাগি করলাম কে কিভাবে ভয়ঙ্কও রাতটি অতিবাহিত করেছি।  
     
     
    দুপুরের দিকে লক্ষ্য করে দেখলাম, মিলিটারিরা আমাদের এলাকা ছেড়ে চলে গেছে। আর কোন গোলাগুলির শব্দ নেই, নেই কোন যানবাহনের শব্দও। ক্যাম্পাসের চারিদিকে শুধু শ্মশানের নীরবতা। ভেবে দেখলাম, পালানোর এই উপযুক্ত সময়। রেডিও চালু করে জানতে পারলাম ঢাকায় অনির্দিষ্ট কাল পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে। আমরা অত কিছু না ভেবে পালানোর সিদ্ধান্ত নিলাম,
     - যা হয় হবে, যদি কারফিউ ভাঙ্গার অপরাধে রাজপথে গুলিবিদ্ধ হয় তবুও। আমি সিদ্ধান্ত নিলাম আজিমপুরে মনজুদের সরকারী বাসভবনে আশ্রয় নেয়ার। আশরাফ আর মঞ্জু আজিমপুরের কোয়াটারে থাকত। আমি হামাগুড়ি দিয়ে আমার রুমে গেলাম এবং নিজের জুতা আর রেডিওটা হাতে নিলাম। তারপর আমরা যতটা সম্ভব নিজেদেরকে আড়াল করে সিড়ি বেয়ে নামলাম। নিচে নেমে দেখলাম ফটকে তালা লাগান। দারোয়ান দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে গেছে। পরে বুঝতে পারলাম সে আসলে আমাদের বাঁচানোর জন্যই এটা করেছে। 
    হতাশ হয়ে দোতলায় আমাদের রুমে ফিরে আসলাম, সিদ্ধান্ত নিলাম, একতলার বেলকনি থেকে ঝাঁপ দেয়ার। প্রথমে ভেবেছিলাম, রেডিওটা রেখে যাব, পরে ভেবে দেখলাম আশে পাশে কি হচ্ছে সেটা জানার এটাই এখন একমাত্র উপায়। আমরা তিনজন প্লান অনুযায়ী বাগানে ঝাঁপ দিলাম। ভাগ্য সুপ্রসন্ন আমাদের কারও কোন চোট লাগল না। 
    এরপর আমরা তিনজন তিন দিকে চলে গেলাম। আমি হাঁটতে হাঁটতে শহীদ মিনারে গেলাম। ওখানে শতশত লাশ পড়ে আছে। সে এক বীভৎস দৃশ্য। 
    এরপরে আমার মা, বাবা, ভাই বোনদের কে খুঁজে বের করার উদ্যেশে হাঁটা শুরু করলাম।
    অবশেষে হাঁটতে হাটতে ফার্মগেইট পেরিয়ে এক জাগায় আমাদের আশ্চর্যজনক ভাবে মিলন হলো,যা ছিল এক অভূতপুর্ণ দৃশ্য। কল্পনা করিনি মা, বাবা, ভাই বোনদের কে এমন করে ফিরে পাবো। 
     
    পরবর্তিকালে বড় ভাইয়ের ডাইরির প্রতিটা লেখা আমার চোখে যেন স্বর্ণের মতন জ্বলজ্বল করে। 
     
    (ফানুস)
     
    (আফরোজা আলম)
  • রমিত চট্টোপাধ্যায় | ০৯ এপ্রিল ২০২৩ ০৮:০৩518472
  • LCM যে ব্লগ পোস্ট টা দিয়েছেন, খুব ভালো লাগল পড়ে। সঠিক দিক গুলো পয়েন্ট করা হয়েছে। তবে লেফট ব্রেন রাইট ব্রেন ব্যাপারটা লেখক বোধহয় সিরিয়াসলি নিয়ে ফেলেছেন। যদিও সেটা পুরো লেখার সামান্য অংশ।
  • দীপ | 42.110.137.155 | ১৯ মে ২০২৩ ১৫:৪৬519905
  • দীপ | 42.110.137.155 | ১৯ মে ২০২৩ ১৫:৫২519906
  • সবার মাতৃভাষা বিকশিত হোক, সমৃদ্ধ হোক! 
    ভাষাশহীদদের সশ্রদ্ধ প্রণাম!
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন