এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • খেরোর খাতা

  • কবিতা: চল্ মন শৈশবে...

    অখিল রঞ্জন দে লেখকের গ্রাহক হোন
    ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ | ৮৭০ বার পঠিত
  • চল্ মন শৈশবে ....
     
    অখিল রঞ্জন দে, তাং : ১৯/০৯/২০২১ 
     
    সময়ের সিন্দুকে বন্দি রেখেছি আমার
    দূরন্ত শৈশব কে
    আমার যৌবন আমার বার্ধক্য দিয়েছি
    দায়িত্ব ও কর্তব্য কে
    বহু অংশে বন্টিত আমি তবু বন্টন করিনি
    নিজের শৈশব কে।
    স্মৃতির পাতায় রোমন্থন করে তুলে আনি
    জীবনের জ্বালানী কে
    বেঁচে আছি যতো দিন ভুলিবো না কোন দিন
    মধুর সে দিন গুলি
    স্মৃতির কোঠরে মনের গহনে রেখেছি যতনে তুলি।
     
    মনে পড়ে সেই সব দিন গুলি আজি স্তব্দ দুপুরে
    একলা বারান্দাতে
    এমনি দুপুরে লুকিয়ে উঠেছি গাছের উপরে
    এলাচি লিচু খুঁজিতে
    ঢিল ছুঁড়ে আম পেরেছি কতো বার মায়ের
    নজর টি এড়িয়ে
    কাঁঠালের ডালে দড়ি বেঁধে মোরা দুলেছি কতো
    সকালে ও দুপুরে
    বিকেল হতেই দল বেঁধে মোরা মেতেছি কতো
    বাতাবির ফুটবলে।
    কতো মধ্য-রাতে দু-দলেতে ভাগ হয়েছি মোরা
    বিশ্বকাপের তরে
    সেই সব রাতে পরের মুরগি আপন করেছি
    চড়ুইভাতির তরে
    বেঁচে আছি যতো দিন ভুলিবো না কোন দিন
    মধুর সে দিন গুলি
    স্মৃতির কোঠরে মনের গহনে রেখেছি যতনে তুলি।
     
    পাড়ার যতো ছিল বাড়ি মানচিত্র তারি মুখস্থ সবই
    লুকোচুরি খেলে খেলে
    কুমির ডাঙ্গা খেলিতাম মোরা পথের ধারেই
    বারান্দার কোলে কোলে
    বৃষ্টির দিনে ঘরেতে খেলিতাম হরেক রকম খেলা
    রান্নাবাটি, দোকানদারি
    আরো ছিল লুডো,বাগাডুলি,ব্যাবসাহী
    ক্যারাম ও ডাক্তারি
    মায়ের হুমকি বাবার বকুনি পিঠের চামড়ার
    লালচে জ্বলুনী
    এসব কিছুও ছিল সাময়িক, গোয়েন্দা গল্প 
    দিতো মনের জ্বালানী
    সুতো বাঁধা ফরিং উড়িয়েছি যেদিন, উড়েছি
    আসলে আমি ই সেদিন
    বড়ো হলে পরে বুঝেছি আপনি তাদের দিয়েছি 
    কতোটা বেদনা সেদিন।
    উঠেছে ঝড় কুড়াইছি আম মনে আছে সংশয়
    কে উড়াইবে আজি বিজয় কেতন !
    পূজোর ছুটিতে খেলার ছলে মন্ডপ গড়েছি
     মায়ের কাপড়ে
    মাটির প্রতিমা অপটু হাতে গড়েছি মোরা কতো
    দক্ষতার সাথে
    দর্শক ও মোরা পুরহিত ও মোরা প্রসাদ দিয়েছি
    অপরের হাতে
    বেঁচে আছি যতো দিন ভুলিবো না কোন দিন
    মধুর সে দিন গুলি
    স্মৃতির কোঠরে মনের গহনে রেখেছি যতনে তুলি।
     
    পূজোর কদিন নাওয়া খাওয়া ভুলে দিনরাত মোরা
    পূজার মন্ডপে
    ক্যাপভরা পিস্তল দারোগার মন বিঁধছে অসুর
    চলতো গুলির লড়াই
    গুলি চলে যতোবার তার চেয়েও বেশি বার
    পিস্তল বিগড়ায়
    অনুসন্ধানী মন খুঁজতো তখন কি বা কারণে 
    ঘটছে এমন বারংবার
    বছরের ব্যস্ততম দিন ছিল মোদের বিজয়া দশমী
    যেতে হবে অনেক বাড়ি
    হাতেতে সময় ছয় বালিঘরি খাবার তো রকমারি
    নারু নিমকি ঘুগনি ছাড়াও
    লুচি আলুর দম বোঁদে মিহিদানা কৃপণ বাড়িতে
    চলতো সুধু দুই খানা রসগোল্লা ।
    বেঁচে আছি যতো দিন ভুলিবো না কোন দিন
    মধুর সে দিন গুলি
    স্মৃতির কোঠরে মনের গহনে রেখেছি যতনে তুলি।
     
    শীতের স্নিগ্ধতায় সোনালী রোদের আভায়
    খেলা হতো ক্রিকেট
    টেনিস বলে কাঠের ফালিতে ইঁটের উইকেটে
    সে হরেক নিয়মের ক্রিকেট
    গড়িয়ে বল প্রাচীরে ঠেকলে চার দিতে হবে
    সেই বল যদি 
    উড়ে গিয়ে ঠেকে তাহলে ছয়-ছয়টি রান হবে
    প্রাচীর টোপকাই যদি
    আউট হবে তুমি, তোমাকেই বলটি আনিতে হবে
    আরো আছে নিয়োম
    ব্যাটিং দলের সদস্যরাই কেউ অ্যাম্পিয়ারটি হবে
    টেনিস বলে চলতো আরও
    সাতখাপরা, বমবেটে বা হকিও খেলা যেতো।
    ছিল ডাংগুলি, মার্বেলেও .....
    ছুটছে টায়ার কাঠির খোঁচায় ছুটছে আমার মন
    ছুটছে আরো
    তিন চাকার গাড়ি, লাট্টু, ঘুড়ি, তালপাতার বাঁশি
    আরো কতো কিছু যে....
    বেঁচে আছি যতো দিন ভুলিবো না কোন দিন
    মধুর সে দিন গুলি
    স্মৃতির কোঠরে মনের গহনে রেখেছি যতনে তুলি।
     
    স্কুলের স্মৃতি মধুর স্মৃতি তোমাকে কেমনে ভুলি
    বারোটি বছর
    তোমার সঙ্গে মিতালী আমার তা কেমনে ভুলি
    মজার মজার
    ঘটনা গুলো জ্বলছে যে সব স্মৃতির কোণে
    মনি মানিকের রূপটি ধরে।
    টিফিন বেলার আলুকাবলি,কুলের আচার
    কাটি আইসক্রিম,
    আরো যে কতো কি , নিজের টিফিন শেষ
    করে তাই অপরের
    টিফিন কেরে যে খাই, বাধা দিলে নামটি তার 
    ঠিক উঠতো বোর্ডে
    নাক চুলকানোর অপরাধে,শাস্তিও পেতো
    সে হাতেনাতে ।
    দুই পিরিয়ডের মাঝের সময়, কাটাকুটি খেলা
    চলতো সেথায়
    হেরে গেলে ঠিক মাপটি করে বেঞ্চের উপর 
    লুকিয়ে দিতাম চকের গুঁড়ো
    পেন্টের পেছন সাদা হতো বাড়িতে গিয়ে
    ধোলাই খেতো
    পরের দিন স্কুলে তে এসে সেই ছেলেটি 
    গোয়েন্দা হতো।
    ছুটির সময় এক ছুটে শিড়ির কাছে এসে
    পেছনে তে মুখ ফিরিয়ে
    দিতাম ধাক্কা আলতো করে সামনের
    ছেলেটি কে
    ভাবখানা যেন আমাকেই কেউ দিয়েছে ধাক্কা 
    পেছনের দিকের থেকেই।
    তারপরে যদি বৃষ্টির জল রাস্তাতে জমা হতো
    ছপাং ছপাং মনটা যে আমার
    জলচর হয়ে যেতো,ডাঙ্গাফেলে জলেই চলতো
    এগারো নম্বর গাড়ি
    চরন তলে ঢেউ তুলেছে একলা সমুদ্র আজি
    বাড়িতে যে আজ কালবৈশাখীর
    ঝড় উঠবে জানি,তাতেই বা ভয় কিসের মোদের 
    আমরা যে তখন জল পুলিশের
    বিচার সভায় মোদের পক্ষের উকিল হবেন
    বাড়িরই কেউ একজন জানি ।
    বেঁচে আছি যতো দিন ভুলিবো না কোন দিন
    মধুর সে দিন গুলি
    স্মৃতির কোঠরে মনের গহনে রেখেছি যতনে তুলি।
     
    আরও অনেক গল্প আছে,প্রক্সি দিয়ে কেমন করে
    স্কুল পালানো হতো
    কোন শিক্ষকের নাম মালগাড়ি, কেইবা গরুর গাড়ি
    সে সব কথাও পরছে মনে
    বলবো তোমায় অন্যদিনে, পুকুর পাড়ে বসে ।
    ঐ শোন আজ ডাক পরেছে
    আনতে হবে বাজার থেকে কচু-মাংস-মূলো
    এখন তুমি চুপটি করে
    ঘুমিয়ে পরো ছোট্ট ছেলে,সময় পেলেই আবার
    তোমায় ঘুম ভাঙ্গিয়ে গান শোনাবো ।

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • অনুজ বিশ্বাস | 2409:4061:582:2921:3c2c:9acc:e0ed:77c3 | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৬:৩০498393
  • সুন্দর হয়েছে। লেখা চলতে থাক....
  • R. Dhar | 2409:4061:18f:cd3e:7a67:dd5e:6ba4:b7a | ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১০:৪৪498544
  • শৈশবের দিনগুলি মনে পড়ে গেল, ভালো লাগলো ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন