আউটডোর জিনিসপত্র – সে খেলাধূলাই হোক বা ট্রেকিং বা হাইকিং সবকিছুতেই বিশাল ইন্টারেষ্ট ছিল এককালে। তবে আজকাল সেই ইন্টারেষ্ট কিছুটা হলেও কমে এসেছে, বিশেষ করে যদি একসাথে ডরমিটারি-তে থাকতে হয় যেখানে খানিক দূরেই জুতো-জামাকাপড়-ব্যাগ রাখা থাকবে। এর কারণটা বিশেষ কিছু নয় – জুতো এবং মোজার গন্ধ। তা সে নিজের জুতো-মোজাই হোক বা অন্যের। নিজেরটা যদিও নাক চেপে সহ্য করে নেওয়া যায়, কিন্তু অপরের জুতো-মোজার গন্ধে একেবারে অন্নপ্রাশনের ভাত উঠে আসে।
তবে একটা ব্যাপার ক্লিয়ার করে নিই – আমি এখানে সিরিয়াস ট্রেকার-দের কথা বলছি না। এই গ্রুপেই প্রচুর ছবি দেখি হিমালয় ট্রেকিং-এর, কি দারুণ সব ট্রেকিং পথ, কি অপরূপ হিমালয়ের সৌন্দর্য্য, কি দারুন সব অভিজ্ঞতা এবং তার সাথে চোখ জুড়ানো ছবি। তাঁদের প্রতি আমার অগাধ শ্রদ্ধা এবং সম্ভ্রম। আমার আজকের গল্প মূলত অ্যামেচার ট্রেকার-স বা মিড-রেঞ্জ ট্রেকারস দের নিয়ে। যাদের কাছে ট্রেকিং-এ গিয়ে রাতে থাকা এবং খাওয়া ব্যাপারটা জরুরী।
আমার কেসটা একটু জটিল হয়ে যায় নিজের আঁতলামো-র জন্য। টাচ-উড এখনো পর্যন্ত শারীরিক দিক থেকে বেশ ফিট – হয়ত গড়পড়তার থেকে একটু বেশীই। ফলে হয় কি হাই আলটিচ্যুড সিরিয়াস ট্রেকিং-এ না গেলে শারীরিক প্রায় কোন কষ্টই হয় না তেমন। অনেক দিন হাই আলটিচ্যুড ট্রেকিং এ যাবার সুযোগ-ও হয় না। ফলে ইদানিং কালে যেখানে ট্রেকিং-এ গেছি, সেগুলো বেশীর ভাগই আমার কাছে গল্প করতে করতে টাইম-পাস হয়ে গেছে। বললে বিশ্বাস করবেন না, মাঝে মাঝে ঘামও হয় না! ব্রুনাই-য়ে মাঝে মাঝেই ট্রেকিং-এ যেতাম জঙ্গলে এবং সেখানে সাতটা ছোট ছোট টিলার মত আছে। একদমই কঠিন লাগত না – এই ট্রেকিং পথটা কভার করতে সাধারণত সাড়ে তিন থেকে চার ঘন্টা লাগত। কিন্তু সেটা বেশ রয়ে সয়ে – ছুটে বা ফিট থাকলে দুই ঘন্টা পনেরো মিনিটের মত লাগে। সেই ট্রেকিংটা আমার ভালো লাগতো খুব – কারণ বাড়ি থেকে ভোর সাড়ে চারটের সময়ে বেরিয়ে, ছটার মধ্যে জঙ্গলে পৌঁছে ট্রেকিং চালু – বেলা দশ বা এগারোটার মধ্যে কেস খতম। কারো জুতোর গন্ধ সহ্য করার গল্পই নেই রাতে।
ব্রুনাই-য়ের ট্রেকিং এর গল্প পরের একদিন লিখব – প্রথম বার যখন যাই দেখলাম সাথের অভিজ্ঞ ট্রেকার লাঠি (হাইকিং স্টিক) থেকে শুরু করে আরো কি সব সাথে নিয়ে যেতে বললেন। তো গেলাম প্রথম দিন – তাঁদের ফলো করে ট্রেকিং শেষ হল, কিন্তু গায়ে একফোঁটা ঘাম এল না! এই রাস্তায় ট্রেকিং শেষ হত ৭২টা মত সিঁড়ি বেয়ে উঠে। যখন ঘাম এল না, তখন এই সিঁড়ি গুলো দৌড়ে বেশ কয়েকবার উঠে নেমে নিজেকে ঘামালাম। তার পর থেকে ট্রেকিং-এর দলে ফিট বলে দাগা খেয়ে গেলাম আমি। কিন্তু বাপের ও বাপ আছে সেটা পরে একদিন বুঝতে পারলাম। আরেক দিন সকালে ট্রেকিং এ গেছি – পাবলিক চলছে চলছে, আমিও যাচ্ছি সাথে – কিন্তু ওই যে শরীর-ই গরম হচ্ছে না! তখন দেখি পাশ দিয়ে কয়েক জন গোর্খা সৈন্য দৌড়াচ্ছে। আচ্ছা এখানে গোর্খাদের ব্যাপারটা ক্লিয়ার করে দিই – ব্রুনাই এই প্রায় ১৯৭০ দশক পর্যন্ত ইংরাজদের কলোনী ছিল। পরে এখানকার রাজা ব্রিটিশ-দের সাথে একটা টাই আপ রেখে দিয়েছে। ব্রুনাই-য়ের নিজস্ব সেনাবাহিনী নেই – কিন্তু বৃটিশ আর্মির গোর্খা রেজিমেন্টের একটা অংশ ব্রুনাই-য়ে থাকে। এরা রাজা এবং দেশকে প্রোটেকশন দেয়। এই গোর্খা সৈন্যরা তিন বছর করে থাকে রোটেশনে – একদল চলে গিয়ে অন্যদল আসে।
এবার ঘটনা হল ব্রুনাই-য়ে ক্রাইম বলে তো কিছুই নেই প্রায় – আর যুদ্ধ তো দূরের কথা! ফলে গোর্খারা সারাদিন করবে কি! কিছু না করলে তো খেয়ে দেয়ে ভুঁড়ি বাড়বে! তাই এরা দৌড় ঝাঁপ করত বিনা কারণে। আমি তো নিজে বেশ জোরেই দৌড়াই সী-বীচ দিয়ে – কিন্তু মাঝে মাঝে দেখি পিঠে বালির বস্তা নিয়ে কোন কোন গোর্খা সৈন্য দৌড়াচ্ছে। এরা বালির বস্তা নিয়ে আমার সমান গতিবেগে দৌড়ায় – আর যারা বিনা বালির বস্তায়, তারা তো আমার থেকে জোরে দৌড়াত বলাই বাহুল্য।
এটা আমার মনে রাখা উচিত ছিল সেই ট্রেকিং দিন সকালে! গোর্খারা জঙ্গলে যে ট্রেনিং করতে – এমনকি সারভাইভাল ট্রেনিং সমেত। নিজের দলের ছেলেপুলের সাথে ট্রেকিং করে পোষাচ্ছে না বলে আমি ভাবলাম গোর্খা গুলোর সাথে যাই – তেনারা আবার দৌড়াচ্ছিলেন। আমিও দৌড়লাম তাদের সাথে – কিন্তু বাঙালি শরীর পারবে কেন গোর্খাদের সাথে! এই পাহাড়ী জঙ্গুলে রাস্তায় কয়েক কিলোমিটার ওদের সাথে পাল্লা দিয়ে দৌড়ে আর তাল রাখতে পারছি না! গভীর জঙ্গলে ঢুকে গেছি ওদিকে – প্রায় হারিয়ে যাবার মত অবস্থা! অনেক কষ্টে রাস্তা খুঁজে বেরিয়েছিলাম। তার পরেই ঠিক করে নিয়েছিলাম বেশী বার খাওয়া ঠিক না – আর শারীরিক দিক থেকে গোর্খাদের সাথে তুলনায় যাবার তো কোন মানেই হয় না!
গল্প কোনদিক থেকে কোনদিক চলে এসেছে – মনে হচ্ছে নিজেই নিজের পিঠ চাপড়াচ্ছি! জুতোর গন্ধের সাথে ট্রেকিং মিশে যাবার আমার প্রথম অভিজ্ঞতা মনে হয় ওই আমেরিকায় হোয়াইট মাউন্টেন-এ ট্রেকিং করতে গিয়ে। আমরা ছিলাম পাঁচ জন – আমি, রব, টনি, ক্রিশ্চিয়ানো আর ব্রায়ান। যত দূর মনে পড়ছে দিন ছয়েকের ট্রেকিং ছিল – মানে পাহাড়ের একদিক দিয়ে উঠে অন্য জায়গা দিয়ে নামা। সারাদিন ট্রেকিং এবং রাতে কিছু নির্দিষ্ট সরকারী হাট-এ রাত্রিযাপন। নিজেরা তাঁবু ইত্যাদি কিছু বহন করি নি। তবে রাতে থাকার হালকা প্রবলেম ছিল – কারণ ট্রেকিং-এর পথ নির্দিষ্ট এবং তার মাঝে মাঝে রাতের থাকার জায়গাও নির্দিষ্ট। তাই অনেক দিন আগে থেকে বুকিং না করলে জায়গা মিলত না। ব্রায়ান আমেরিকান হবার জন্য এবং পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকার জন্য সেই সব বুকিং ইত্যাদি করল (বাই দিন ওয়ে ব্রায়ান ছিল আমাদের পি এইচ ডি-র অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার)।
ট্রেকিং-এর ডিটেলসে যাবার আগে দুটো ঘটনার উল্লেখ করে নিই – ট্রেকিং এর সময় ইনসুয়েরেন্স এর ব্যাপারটা। আমার এই সব বীমা ইত্যাদির ব্যাপারে কিছু জানা ছিল না – ব্রায়ান-ই সব ব্যবস্থা করে রেখেছিল। একদিন আমরা এক কুঁড়ে থেকে সকালের দিকে রওয়ানা দিয়েছি – বেশ বৃষ্টি পড়ছে সেই, আর কেমন যেন সব কুয়াশা কুয়াশা – খুব বেশী দূরে কিছু জিনিস দেখা যাচ্ছে না। আর সেই দিনের রাস্তা ছিল খুব পাথুরে – ভালো আবহাওয়ার দিনে এটা বিশাল কিছু কঠিন রাস্তা নয়। কিন্তু সেদিন পাথুরে রাস্তা এত পিছল যে একবার পিছলে গেলে আর দেখতে হচ্ছে না! পিছলে গেলে কি হবে তা যে একদম সামনা সামনি দেখতে হবে কে জানত! এই সব জায়গায় মোবাইল নেটওয়ার্ক ছিল না তখন। একটা বাঁক পেরিয়ে দেখি এক ভদ্রমহিলা পাথরে পিছলে গিয়ে পা ভাঙে পরে আছে! বিশাল যন্ত্রণাময় ব্যাপার – নড়ার ক্ষমতা নেই! জিজ্ঞেস করে জানা গেল ওরা দুজন বন্ধু মিলে ট্রেকিং এ বেরিয়ে ছিল – বন্ধু সামনের দিকে এগিয়ে গেছে সাহায্য আনার জন্য। কারণ এখানে বসে থাকলে তো হবে না! আর সাহায্য মানে হেলিকপ্টার লিফটিং – আমরা এবার কি করি! উনাকে একা ছেড়ে যেতে আমাদের কারো ইচ্ছে করল না। উনি আমাদের উলটো দিক থেকে ট্রেকিং পথটা ফলো করছিলেন – উনার বন্ধু এগিয়ে গেছে সামনের দিকে মানে আমরা যেখানতা ছেড়ে এসেছি। আমি আর রব থেকে গেলাম – বাকি আমাদের তিনজনা এগিয়ে গেল – উনার বন্ধুর আগে আমাদের ছেলেরাই সাহায্যের ব্যবস্থা করতে পেরেছিল। উনাকে লিফটিং এর পর আমি আর রব রওয়ানা দিলাম – ভাগ্য ভালো যে আমাদের দুজনাই বেশ ফিট ছিলাম, ফলে পোঁছে গেলাম সন্ধ্যের আগেই সেই দিনের রাতের আশ্রয়ে।
আমি আর রব থেকে যাবার কারণটাও ফিটনেস – আমরা দুজনে একসাথেই ফুটবল খেলতাম এবং মাঝে মাঝে ট্রেনিং। তাই আমরা কনফিডেন্ট ছিলাম যে ম্যানেজ করে ফেলব। আমাদের দলে সবচেয়ে আনফিট ছিল ক্রিশ্চিয়ানো – যেমন অনেক ইতালিয়ান হয় আর কি – খেতে ভালোবাসে, লাইফে একটু রিল্যাক্স করে চলবে। আমাকে সবচেয়ে বেশী গালাগাল দিত সে – আমার জন্যই নাকি ওকে এত কষ্ট করতে হচ্ছে ট্রেকিং-এ। মানুষ সুখে থাকতে ভুতে কিলোতে কেন যে আসে এমন কাজে তা যে কোনদিন বোঝার চেষ্টা করেনি! টনি আর ব্রায়ান মোটামুটি ফিট ছিল।
ট্রেকিং এর শেষ দিন আরেক কেলো – যদিও আমরা তখন সতর্ক বার্তা দেখেছি যে জঙ্গল থেকে মশা এবং অন্য কীট পতঙ্গ থেকে দূরে থাকুন। শেষ দিন ট্রেকিং করতে গিয়ে টনির কাফ মাশলের কাছে কি একটা কামড়ে দিয়েছে – পা লাল হয়ে ফুলে এক যাচ্ছে তাই ব্যাপার। বেশ ভয় হয়ে গেল আমাদের, বুঝতে পারছি না বিষাক্ত কিছু কিনা! পাহাড় থেকে তাড়াতাড়ি নেমে টনি-কে নিয়ে যাওয়া হল কাছের হাসপাতাল। ওদের কাছে মনে হয় এমন কামড়ানোর লক্ষণ চেনা ছিল – কারণ প্রাথমিক পরীক্ষার পর কাউকেই তেমন চিন্তিত দেখলাম না! আর একটা কথা বলে নিই, যারা জানেন না তাঁদের জন্য – আমেরিকায় কিছু কিছু জায়গায় বৃটিশ ইংরাজী অ্যাকসেন্ট নিয়ে বেশ ক্রেজ আছে। টনি একে বৃটিশ, তারপরে আবার ওয়েষ্ট মিডল্যান্ডস থেকে – মানে বোধগম্য অ্যাকসেন্ট এর একদম শেষ ধাপে। এক নার্সের উপর ভার পরল টনির পায়ের জায়গা ড্রেসিং করে দেবার। সে মেয়ে দেখি টনির কাফ মাসল-এ হাত বোলাচ্ছে আর বলছে, “ইয়োর অ্যাকসেন্ট ইজ সো বিউটিফুল!” টনি খচে লাল – বলে আমার পা ঠিক করো আগে, তারপর তোমাকে সারাদিন চাইলে প্রেমের কথা শোনাবো আমার অ্যাকসেন্টে!
জুতো-মোজার গন্ধের ব্যাপারটা ক্লীয়ার করে নিই। আমাদের দেশে যেমন আমরা অনেকেই মেনে চলি আর বেশীর ভাগই মেনে চলি না ‘লিভ নাথিং বিহাইন্ড’ ফিলসফি – কিন্তু আমেরিকায় (বা যে কোন সভ্য দেশে) এরা বিশাল সিরিয়াস। ফলে আমরা সবাই সারাদিনের বর্জ্য পদার্থ সাথে বহন করতাম – তা সে চকোলেটের সামান্য খোলা বা চুয়িং-গাম যাই হোক না কেন। সারাদিন ট্রেকিং করে এসে পৌঁছতাম কাঠের বাড়ি গুলোতে – যেগুলো ডর্মিটারি টাইপের। সাথের ছবিতে দেখতে পাবেন অ্যারেঞ্জমেন্ট কেমন ছিল থাকার। কিচেন থাকত – সেখানে বসেই খাওয়া দাওয়া এবং গেমস খেলা। কিছু কিছু হাটে আবার ছিল লাইব্রেরী রুম। যারা রান্না এবং পরিচালনা করত তারা বেশীর ভাগই ইউনিভার্সিটি বা হাইস্কুলের ছাত্র। বাড়তি কিছু রোজকারের জন্য গ্রীষ্মের ছুটিতে এই কাজ গুলো করত – তবে সবাই কাজ করত মূলত প্যাশন থেকে, পরে রোজকার। কারণ রোজগার করতে চাইলে আরো অনেক রেষ্টুরান্ট/পাব-এ কাজ করা যায় সমতল ভূমিতে – এই পান্ডব বর্জিত জায়গায় আসার কোন দরকার ছিল না! এরা গান শোনাতো মাঝে মাঝে কমন রুমে। অনেক বাচ্ছাও থাকত – এই বাচ্ছাদের দিয়ে তাদের বাবা-মা রা কেবল সহজ ট্রেকিং পথটা নিত। পুরো পথ কভার করত না – এমন হাটে এক-দুদিন থেকে আবার ফিরে যেত সমতলে।
সারাদিন বৃষ্টিতে ভিজে সন্ধ্যের সময় কাঠের বাড়িতে পোঁছে গরম কিছু খেয়ে খুব ফ্রেশ লাগছে – কিন্তু তখনো জানি না রাতের বেলা কি বিভিষীকা অপেক্ষা করছে! অনেক রাত পর্যন্ত ডোমিনো এবং আরো নানাবিধ টেবিল গেল খেলে এবং তারো পরে অনেক ভাঁট মেরে ডর্মিটারি-তে শুতে এসেছি। আরো অনেকে আছে রুমে – সবাই দেখি তাদের জুলো এবং ব্যাগ কাছাকাছি রেখে শুয়েছে স্বাভাবিক ভাবেই – অনেকে ভিজে মোজা মেলে দিয়ে এখানে ওখানে! সেই গভীর রাতে যেন দপ করে মাথাটা ঘুরে গেল! কি দুর্গন্ধ সে কি বলে বোঝাবো! সারা রাত প্রায় গন্ধে ঘুম এল না – এমন ভাবে ট্রেনিং এর ইচ্ছে মনের মধ্যে থেকে উবে যেতে লাগলো।
তো এই হল কেস – আচ্ছা যদি এবার কেউ ভাবেন ট্রেকিং মানেই তো কষ্ট, আমি বাপের আদুরে ছেলের মত কথা বার্তা বলছি। তাঁদের জানিয়ে রাখি আমি গ্রামের খাঁটি চাষার ছেলে – শারীরিক কষ্ট থেকে পিছপা নই। এমনকি আগে যেমন বলেছি, বাকি অনেকের থেকেই হয়ত সেই ক্ষমতা কিছু বেশীই! কিন্তু নিজের শরীর-কে কিছুটা কনট্রোল করতে পারলেও, মস্তিষ্ককে বাগে আনার উপায় এখনো শিখিনি! তাই মস্তিষ্ক-কে যদি ভিজে মোজার গন্ধ ঝনঝনিয়ে দেয় তাহলে তা থেকে মুক্তির উপায় আমার জানা নেই। হ্যাঁ বলতে পারেন ভাই জুতো আর মোজা তো বাইরে ছাড়লেই পারো – কিন্তু দীর্ঘদিনের আকাচা জামা-কাপড় এবং শরীরের গন্ধ? সে সব যাঁরা জয় করতে পারেন তাঁরা নমস্য ব্যক্তি সেই ব্যাপারে আমার সন্দেহ নেই।
আমাদের ট্রেকিং ছিল নিউ হ্যাম্পশায়র থেকে হোয়াইট মাউন্টেনে। খুব বেশী উঁচু পাহাড় তো এখানে নেই – আপনি মাউন্ট ওয়াশিংটনে চড়তে পারেন – মাত্রই ২০০০ মিটার উঁচু, কিন্তু বেশ মজা পাবেন। আর প্লীজ হিমালয়ের সাথে তুলনা করবেন না – হিমালয় অন্য জিনিস। যে দেশে যা আছে, তারা তো সেই ভাবেই উপভোগ করবে। মন খুলে ট্রাভেল করুণ – প্রত্যেক জায়গার আছে নিজস্ব সৌন্দর্য্য, নিজের ইতিহাস। আমি তো খুব খুব উপভোগ করেছিলাম – কেবল জুতো-মোজার গন্ধটুকু বাদ দিলে।