এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  অপার বাংলা

  • আমি বাংলার, বাংলা আমার, ওতপ্রোত মেশামেশি…

    বিপ্লব রহমান
    অপার বাংলা | ০৭ অক্টোবর ২০২০ | ২৫৬২ বার পঠিত | রেটিং ৩.৫ (২ জন)
  • ঘটে গেল কিছু নির্মম নৃশংস ধর্ষণ, বাংলাদেশেও। কোথাও আদিবাসী কন্যা তো কোথাও বাঙালি। বর্বরতা এতটাই যে, একাত্তরও লজ্জা পেতে পারে। রইল এই ঘটনাগুলি নিয়েই দু'টি লেখা।

    দেশবিভাগের একটি সুফল হচ্ছে ‘বাংলাদেশ’ নামক নতুন দেশের জন্ম, যার রাষ্ট্রভাষা বাংলা, পশ্চিম পাকিস্তানি জাতিগত নিপীড়নের অবসানে ১৯৭১-এ রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠা।
    তবে দেশবিভাগের নেপথ্যে যে লাখো-কোটি জনতার রক্ত, অশ্রু, আত্মত্যাগ থাকে, তা কখনোই কালের গর্ভে হারিয়ে যায় না, দেশ-হারানোর বেদনাশূল বিঁধে থাকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে, পরানের গহিন ভিতর।
    প্রসঙ্গত, এক টুকরো স্মৃতিকথা। ১৯৯৯ সালে প্রথম চালু হল ঢাকা-কলকাতা সরাসরি বাস সার্ভিস। সৌভাগ্য হয়েছিল, এর পরীক্ষামূলক প্রথম ট্রিপে সাংবাদিক হিসেবে অংশগ্রহণের। শ্যামলী পরিবহনের বাসটির গায়ে লাল-সবুজ বাংলাদেশের পতাকা আঁকা। এই বাস যখন এলেন্স গিনসবার্গের ‘সেপ্টেম্বর ইন যশোর রোড’ ধরে বেনাপোল সীমান্ত পেরিয়ে ওপারে পৌঁছায়, তখন দেখা যায় এক অভূতপূর্ব দৃশ্য।
    ওপারের শত শত গ্রামের মানুষ পথ আটকে বসে আছেন রাস্তায়, শুধু এক নজর বাসটিকে দেখবেন বলে! বাসটি সেখানে পৌঁছাতেই নানা বয়সি নারী-পুরুষে হুলুস্থুল শুরু হয়ে যায়। বাড়ির বউরা শাঁখ বাজান, উলুধ্বনি দেন, ঢাক-ঢোল-কাঁসর বাজতেই থাকে। স্কুলের ছেলেমেয়েরা বাসটিকে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে শুভেচ্ছা জানায়। অসংখ্য মানুষ ঘিরে ধরেন বাসটিকে। আরও দূরের যারা, তারাও কাছে আসার জন্য ঠেলাঠেলি করতে থাকেন! টিমলিডারকে বলে এই বিরল দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করতে বাস থেকে লাফিয়ে নামা। খালি পা, সাদা মলিন থানের এক বৃদ্ধা বাসটিকে ছুঁয়ে হাউমাউ করে কাঁদেন। ঠাকুমা, কাঁদছেন কেন? হট্টগোল ছাপিয়ে বুড়ির মুখের কাছে কান পেতে শোনা যায়, একটিই আহাজারি বার বার, “বাংলাদ্যাশের গাড়ি! আমাগো বাংলাদ্যাশের গাড়ি!”

    এক নিমিষে উন্মোচিত হয় মহাসত্য। এই বিশাল জনস্রোত আসলে দেশবিভাগের শিকার জনগোষ্ঠী। তারা এখনও প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ধারণ করেন ফেলে-আসা পূর্ববাংলা। হারানো দেশের এই বাহনটি যেন তাদের কাছে হারিয়ে যাওয়া সেই দেশই!
    উলটে গেল পাশার দান!
    এটি বিস্ময়কর, যে বাঙালি জাতি পাকিস্তানি জাতিগত শোষণের বিরুদ্ধে সশস্ত্র যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করল, এই জাতিই স্বাধীন দেশে অপরাপর ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর শোষক হয়ে দাঁড়াল। বাঙালি উগ্র জাতীয়তাবাদের নির্মম রোষানলে পড়ল ভিন্ন ভাষাভাষী পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠী।



    পড়ুনঃ উঠে আসো আতঙ্ক আর ভয়ের রাত্রি পেছনে ফেলে

    ১৯৭২ সালের খসড়া সংবিধান রচনারকালে উপেন্দ্রলাল চাকমা, এম এন লারমা সহ পাহাড়ি নেতারা সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি সংবলিত একটি প্রস্তাবনা নিয়ে ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে তাৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবনাটি তীব্রভাবে নাকচ করেন। প্রতিনিধিদলকে সৌজন্যবশত বসতেও বলা হয়নি। উপরন্তু প্রধানমন্ত্রী তাঁদের মুখের ওপর প্রস্তাবনার ফাইল ছুড়ে মেরেছিলেন (দেখুন, লাইফ ইজ নট আওয়ার্স, সিএইচটি কমিশন রিপোর্ট, ১৯৯২)।
    পাহাড়ি নেতা, স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এম এন লারমা ১৯৭৩ সালে সংসদ অধিবেশনে তুলে ধরেন পাঁচ দফা দাবিনামা। এগুলো হচ্ছে :
    “ক. আমরা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা সমেত পৃথক অঞ্চল হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রামকে পেতে চাই।
    খ. আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অধিকার থাকবে, এ রকম শাসনব্যবস্থার প্রবর্তন চাই।
    গ. আমাদের জাতীয় অস্তিত্ব সংরক্ষিত হবে, এমন শাসনব্যবস্থা আমরা পেতে চাই।
    ঘ. আমাদের জমিস্বত্ব, জুম চাষের জমি ও কর্ষণযোগ্য সমতল জমির স্বত্ব সংরক্ষিত হয়, এমন শাসনব্যবস্থা আমরা পেতে চাই।
    ঙ. বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চল থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে এসে যেন কেউ বসতি স্থাপন করতে না পারে, তজ্জন্য শাসনতান্ত্রিক বিধিব্যবস্থার প্রবর্তন চাই।”…

    কিন্তু স্বাধীন দেশের প্রথম সংবিধানে চরমভাবে উপেক্ষিত হয় ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠীর সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি। বর্তমান সংবিধানের মতো সেখানেও ‘বাংলাদেশের নাগরিকগণ বাঙালি বলিয়া পরিচিত হইবেন’–এমন কথা বলা হয়। শুধু তাই নয়, ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ উদ্‌বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিব রাঙামাটির জনসভায় পাহাড়িদের বাঙালি হয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “তোমরা সবাই বাঙালি হইয়া যাও। আমি তোমাদের উপজাতি থেকে জাতিতে প্রমোশন দিলাম।”
    ইতিহাস সাক্ষী, এই উগ্র জাতীয়তাবাদী আগ্রাসী মনোভাবের প্রায়শ্চিত্ত করতে হয়েছিল দেশকে, পাহাড়িদের গেরিলা গ্রুপ শান্তিবাহিনীর সঙ্গে সেনাবাহিনী আড়াই দশকের রক্তক্ষয়ী বন্দুকযুদ্ধে, ১৩ টি গণহত্যায়, প্রায় ৭০ হাজার পাহাড়ি মানুষের একযুগের শরণার্থী জীবনযাপন এবং আনুমানিক পাহাড়ি-বাঙালি ২৫ হাজার মানুষের জীবনদানে। ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য শান্তিচুক্তিতে অবসান ঘটে পাহাড়ে যুদ্ধাবস্থার, বিলুপ্ত হয় গেরিলা গ্রুপ শান্তিবাহিনী, শরণার্থী জীবনের গ্লানি ঘুচিয়ে দেশে ফেরেন দেশান্তরী হওয়া মানুষ, তবে শান্তিচুক্তির মৌলিক শর্তসমূহ এখনও বাস্তবায়িত হয়নি, সেটি অবশ্য ভিন্ন প্রসঙ্গ।

    “বাংলাদেশে বাঙালিরাই আদিবাসী!”
    বাংলাদেশ সরকার ২০১১ সালে একটি উদ্ভট তত্ত্ব দেয়, বঙ্গীয় নৃতাত্বিক ইতিহাস গুলে খেয়ে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ঘোষণা করা হয়, উপজাতিরা নয়, বাংলাদেশে বাঙালিরাই আদিবাসী! আর চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, সাঁওতাল, মুন্ডা, ওঁরাও, কোল, গারো, খাসি প্রভৃতি ৭৫ টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী, ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধে যারা অকাতরে বাঙালির পাশাপাশি সম্মুখযুদ্ধে জীবন দিয়েছে, তারা নাকি বহিরাগত!
    রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এমন জোর প্রচারণাই শুধু চালানো হয়নি, তৎকালীন পররাষ্ট্র মন্ত্রী দীপু মনি মিডিয়ার সম্পাদকদের ডেকে অনুরোধ করেন, ভাষিক সংখ্যালঘুদের ‘আদিবাসী’ অভিধার বদলে যেন ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’ অভিধায় ডাকা হয়। আর সেই থেকে মিডিয়া রাতারাতি ‘আদিবাসী’ অভিধার বদলে ‘ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী’ অভিধাই ব্যবহার করছে।
    জাতিগত এই উগ্র অহমিকার প্রত্যক্ষ হুমকি হচ্ছে, দেশের ক্ষুদ্রজাতি গোষ্ঠীর মানুষের কাছে যেটুকু জমি, জলা, টিলা, বাগান ইত্যাদি সম্পদ রয়েছে, বাঙালি লুণ্ঠনকারী গোষ্ঠীকে সেটুকুও কেড়ে নিতে উস্কানি দেওয়া।
    সেই থেকে বাংলাদেশ এই উগ্র রাজনৈতিক দর্শনে পরিচালিত হচ্ছে, পাহাড় থেকে সমতলে প্রতিনিয়ত বিলুপ্তির পথে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষকে।
    পার্বত্য চট্টগ্রাম কি ডাকাতদের গ্রাম?

    বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাংশে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান নিয়ে গড়ে ওঠা পার্বত্য চট্টগ্রাম হচ্ছে ১৩ টি ভিন্ন ভাষাভাষী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী অধ্যুষিত অঞ্চল। প্রায় প্রতিনিয়ত সেখানে অভিবাসিত বাঙালিদের দ্বারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটছে। কখনও এসব মানবাধিকার লঙ্ঘন সহিংস রূপ নেয়, নেপথ্যে থাকে নিরাপত্তা বাহিনীর প্রত্যক্ষ মদত। জায়গা-জমির বিরোধকে কেন্দ্র করে উজাড় হয় একের পর এক পাহাড়ি গ্রাম।
    বেসরকারি সংস্থা কাপেং ফাউন্ডেশনের পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরের পর এপর্যন্ত ১৭ টি সহিংস ঘটনায় অসংখ্য পাহাড়ি গ্রাম লুঠপাঠ ও উচ্ছেদ হয়েছে। হতাহত হয়েছেন অনেকে। আর এভাবেই পাহাড়ে জেঁকে ভয়ের রাজ্য। সেটি যেন আসলে ডাকাতদেরই শাসনের বৃহত্তর গ্রাম। গ্রামবাসী পাহাড়িরা মাঝে মধ্যেই ডাকাতি-লুণ্ঠনের শিকার হবেন, এ-ও যেন অনিবার্য।

    এমনই এক নির্মম বাস্তবতায় সবশেষ, ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরের বলপাইয়া আদাম এলাকায় পাহাড়ি গ্রামের ভেতরে ঢুকে নয়জন সেটেলার বাঙালি হামলা ও লুঠপাঠ চালায়। এ সময় তারা বাড়ির প্রতিবন্ধী চাকমা মেয়েটিকে গণধর্ষণ করে। লক্ষ্যণীয়, সেপ্টেম্বরেই খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও মহালছড়িতে দুজন পাহাড়ি স্কুলছাত্রী এবং বান্দরবানে এক ত্রিপুরা নারী ধর্ষিত হয়েছেন, আদিবাসী বলে এ পর্যন্ত কোনো ঘটনারই সুরাহা হয়নি।



    পড়ুনঃ উঠে আসো আতঙ্ক আর ভয়ের রাত্রি পেছনে ফেলে

    ওই ঘটনার পর ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের একজন প্রতিনিধি নির্যাতিতা প্রতিবন্ধী মেয়েটির বাড়িতে যান। তিনি দেখেন, মেয়েটির মা বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। আর আহাজারি করে বলছেন, “আমরা কি এদেশের নাগরিক নই? তাহলে কেন আমাদের ওপর এমন অত্যাচার?”
    সাংবাদিক খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, কয়েক বছর আগে বাবা ও ভাই মারা যাওয়ার পর থেকে মেয়েটি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন, তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।
    পাহাড়ের আরো আট-দশটা নির্যাতনের ডামাডোলে প্রতিবন্ধী নারী গণধর্ষনের ঘটনাটিও হয়তো হারিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু এক্ষেত্রে সোচ্চার হয় দেশ। করোনাক্রান্তির ভেতরেই পাহাড়ে তো বটেই, খোদ ঢাকার শাহবাগে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন একের পর এক প্রতিবাদী মানববন্ধন ও সমাবেশ করে।

    আর মেয়েটিকে হাসপাতালে নেওয়ার একটি ছবি ফেসবুকে ভাইরাল হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন, যা পাহাড়ে খুবই বিরল ঘটনা। পুলিশ তৎপর হয়ে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে পলাতক আটজন আসামিকে। তাদের মধ্যে পাঁচজন আবার এরইমধ্যে আদালতে লুঠপাঠ ও ধর্ষণের দায় স্বীকার করে জবানবন্দীও দিয়েছেন।
    অর্থাৎ পাহাড়ে কোনো মানবাধিকার লংঘিত হলে, তা শুধু রাজপথে গড়ালে ও স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলেই সুবিচারের সম্ভাবনা থাকে, নইলে নয়? এ কোন বিচারহীনতার সংস্কৃতিতে আমাদের বসবাস? এই শোষণ-শাসনের অবসান হবে কবে?


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • অপার বাংলা | ০৭ অক্টোবর ২০২০ | ২৫৬২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Prativa Sarker | ০৮ অক্টোবর ২০২০ ০৭:৪৯98177
  • উপমহাদেশের এই  ঘৃণ্য ধর্ষণ সংস্কৃতি বিলুপ্ত হোক! পাহাড়ের আদিবাসীদের জন্য লেখকের যুদ্ধ জয়যুক্ত হোক!        

  • Moulik Majumder | ০৯ অক্টোবর ২০২০ ২১:২৫98202
  • আগ্রাসনের চিিত্র সর্বত্র এক। 

  • ফরিদা মজিদ | 45.251.228.62 | ১০ অক্টোবর ২০২০ ০৫:২৮98207
  • কালানুক্রম অনুসরণ করলে বাংলাদেশে বাঙালিরাই আদিবাসী -- চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, সাঁওতাল, মুন্ডা, ওঁরাও, কোল, গারো, খাসি প্রভৃতি ৭৫ টি ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী পরবর্তীকালে ও সব অঞ্চলে বসবাস শুরু করেছে - এটা তো তর্কের বিষয় না । নৃবিজ্ঞানের ইতিহাস । মুশকিল হচ্ছে ‘আদিবাসী’ লেবেলটাকে বেশী গৌরবের মনে করা । না করলেই হয় -- আমরা সকলে বাংলাদেশের সমসন্মানের নাগরিক ।

  • বিপ্লব রহমান | ১০ অক্টোবর ২০২০ ০৭:১৫98209
  • পাঠের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। 


    ফরিদা, 


    আপনার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, সম্ভবতঃ নৃবিজ্ঞানের ইতিহাস পাঠে গুরুতর ভ্রান্তি আছে,  এটি তর্কেরই বিষয়। 


    কালানুক্রম ধরলে সাঁওতাল, মুণ্ডা,  ওঁরাও, কোল প্রভৃতি জাতিগোষ্ঠীই আদিবাসী,  মোটেই বাংগালীরা নন,  তাছাড়া বাংগালী হচ্ছে মিশ্র জাতিগোষ্ঠী,  বহু বিদেশি জাতির রক্ত এই জাতিগোষ্ঠীতে মিশেছে। 


    "বাংলাদেশে বাংগালীরাই আদিবাসী" -- এটি একই সংগে অল্পবিদ্যা এবং ভয়ংকরী,  এর প্রত্যক্ষ ফলাফল চলতি লেখায় বর্ণনা করা হয়েছে। 


    হাস্যকর এই ফতোয়া মেনে নিলে বাংলাদেশ হয় বিশ্বের প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্র! উফ! ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। 


    উগ্র জাতীয়তাবাদী অহং থেকে মুক্ত হোন। ভাল থাকুন। 

  • কৌশিক বন্দ্যোপাধ্যায় | 2405:201:a001:c05f:a1c0:1f08:a4b0:fe36 | ১১ অক্টোবর ২০২০ ২২:০৬98303
  • বিপ্লব রহমান  একটি অবহেলিত জরুরী প্রসঙ্গ উপস্থাপন করে সাংবাদিক হিসাবে তাঁর দায়িত্ব পালন করেছেন। সমস্যা হলো যে কোনো সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় ব্যাবস্থা যদি নাগরিক সমাজের একাংশের উপরে বলপ্রয়োগের ভরসায় প্রতিষ্ঠিত হয়, তাহলে এমন ঝুঁকি থাকে যে সেই বলপ্রয়োগের ব্যাবস্থা কে অবিরত অনিঃশেষ চালিয়ে যেতে হবে।

  • বিপ্লব রহমান | ১২ অক্টোবর ২০২০ ১৬:২৪98339
  • কৌশিক, 


    আপনাকেও ধন্যবাদ। ঠিকই বলেছেন, প্রতিবাদটি জারি রাখা জরুরি 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে মতামত দিন