এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • পরিযায়ী

    পূবালী রাণা লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ১০ মে ২০২০ | ২৩৬৬ বার পঠিত
  • ৮ই মে, ২০২০।রবীন্দ্র জয়ন্তীর সকালটা শুরুই হয়েছিল খুব খারাপ একটা খবর দিয়ে।
    মধ্যরাতে রেললাইনে ঘুমন্ত ষোলো জন শ্রমিককে পিষে দিয়ে চলে গেছে রেলের চাকা।
    মধ্যপ্রদেশ থেকে মহারাষ্ট্রে বাড়ি ফিরতে চাওয়া ষোলোজন পরিযায়ী শ্রমিকের রক্তমাখা দেহাবশেষ, শুকনো রুটি আর চটি ছড়িয়ে আছে রেললাইন জুড়ে।
    এ খবর জেনে ঘরে বসে গুমরোনো ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না আমাদের। প্রায় দিন বিকেলের দিকে আমি পাশের জঙ্গলে বা ক্ষেতে যাই। সদ্য বোরো ধানকাটা শেষ হয়েছে চাষিরা ধান ঝাড়াই বাছাই করছে। দেখতে দেখতে সন্ধ্যে হয়ে আসে।
    সেদিনও পাশের জঙ্গলে একটু হেঁটে দ্রুত বাড়ি ফিরছিলাম। পশ্চিম আকাশে মেঘ কালো করে আসছিল। আমি দ্রুত পা চালিয়ে ফিরছিলাম। হঠাৎ কানে এলো কান্নার শব্দ।
    ওরা ন থেকে দশ জন ছিল। ওদের হাতে পোঁটলা আর পিঠে মলিন কতগুলো ব্যাগ।পথ চলতে পারছিল না।তাই লাঠিতে ভর করে চলছিল কেউ কেউ। ওরা কাঁদছিল ডুকরে ডুকরে, বলছিল "গরীবের কেউ নেই"।
    ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুরের ব্লক ওয়ানে আমাদের গ্রাম।
    গ্রামের যে রাস্তাটা উড়িষ্যার দিকে চলে গেছে সেই পথ দিয়ে ওরা হাঁটছিল।আমরা ওদের থামালাম।জিজ্ঞেস করলাম,কোথা থেকে এসেছে আর কোথায়ই বা যাবে! লোকগুলো কথা বলতে ভয় পাচ্ছিল।একটু থেমে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে চারিদিক দেখতে লাগল।কাঁদতে কাঁদতে ফের চলতে লাগল কোনো জবাব না দিয়ে।আমরা আবার আটকালাম।জানতে চাইলাম একই কথা।কোথা থেকে আসছে ওরা?ওদের মধ্যে একজন বলল,মূর্শিদাবাদে বাড়ি।ওরা হেঁটে জঙ্গলের রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরছে।ভিন কোনো রাজ্যে কাজে গেছিল! এমন সময় দেখলাম পেছনে লোকাল পুলিশের গাড়ি।ওরা কোনোরকমে বলল পুলিশ ওদের বর্ডার পার করে দিতে চাইছে।কিন্তু ওরা তো বাংলার মানুষ!! তবে??
    আমরা গিয়ে পুলিশের সঙ্গে কথা বললাম। পুলিশ বলল, সরকারের অর্ডার আছে ওদের উড়িষ্যার বর্ডার পার করে দেওয়ার।আমরা পুলিশ অফিসারকে প্রশ্ন করলাম,ওরা এই অবস্থায় উড়িষ্যায় যাবে কেন? উড়িষ্যা সরকার ওদের নেবেই বা কেন? তাছাড়া প্রচন্ড ঝড়বৃষ্টি আসছে, এই অবস্থায় এতোবড় জঙ্গল ওরা পার করবে কী করে?
    ওদের পায়ের অবস্থা এতোটাই খারাপ ছিল ওরা ঠিক করে হাঁটতে পারছিল না।
    আমরা যথাসম্ভব নম্র ভদ্রভাবে পুলিশ অফিসারকে বললাম,আমরা আজ রাতটুকু অন্তত ওদের শেলটার দিতে চাই।ওরা অভুক্ত অবস্থায় কত দিন ধরে হাঁটছে তার ঠিক নেই!
    পুলিশ অফিসারের কথা অনুযায়ী ওরা নাকি বেআইনিভাবে রাস্তায় হাঁটছিল!রাস্তার আবার আইনি বেআইনি! ভারতবর্ষের নাগরিক। পরিযায়ী শ্রমিক।অবশ্য পরিযায়ী আর শ্রমিক- এ দুটো শব্দই বাবুদের শব্দ।ওরা মানেই জানেনা এই শব্দ দুটোর।ওরা মজুর।ওরা ছোটোলোক।ওরা কাজ হারিয়ে বাড়ির পথ ধরেছে পায়ে হেঁটে।
    রাষ্ট্রের দায়িত্ব তাদের বাড়ি পৌঁছে দেওয়া।কিন্তু তা তো দূরের কথা।পুলিশ তাড়াহুড়ো করে কোনোক্রমে বর্ডার পার করে দিয়ে দায় সারতে চায়!এড়াতে চায় নিজের দায়িত্ব।
    আমরা ওদের খাবার সঙ্গে দিতে চাইছিলাম খুব করে। কিন্তু সেটাও দিতে দিল না পুলিশ।বাবা লুকিয়ে কিছু টাকা ওই হেঁটে আসা লোকগুলোর হাতে দিতে চাইলে, নিল না ওরা।ওরা হতাশ,ওরা ক্ষুধার্ত!ওরা মজদূর।খেটে খায় ওরা।বাড়ি ফিরতে চায়।
    আমার মনে হচ্ছিল ওরা হয়তো রাতেই জঙ্গলে পড়ে মরে থাকবে।ঠিক যেমন রেললাইনের ওপর ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়া ১৬ জন শ্রমিকের আর বাড়ি ফেরা হলো না! সরকার ওদের বাড়ি ফেরানোর ব্যবস্থা না করে বেড়াল পার করতে চেয়েছে!ওরা গরিব বলেই ওদের জীবনের কোনো দাম নেই?এদিকে বিদেশ থেকে বিশেষ বিমানে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে "ইণ্ডিয়ান সিটিজেন"দের।
    এখানে প্রবল দুর্যোগ শুরু হলো।ওরা হয়তো একজন একজন করে মুখ থুবড়ে পড়বে, আর মরে যাবে।
    'রাষ্ট্র' শব্দটা টাকা ক্ষমতা প্রতিপত্তির প্রতিশব্দ। নিঃস্ব রিক্ত মাইলের পর মাইল হেঁটে চলা শ্রমিকের কোন দেশ নেই!নেই ঘরে ফিরতে চাওয়ার অধিকারটুকু ।



    হিরণ মিত্র



    বিধ্বস্ত, বিপর্যস্ত লাগছিল খুব। কিন্তু এতো সহজেই ভেঙে পড়ব?হাল ছেড়ে দেব?
    অথচ আমরাই তো লড়ার কথা বলি।আমরাই গাই-
    "লড়াই করো লড়াই করো লড়াই করো লড়াই যতদিন না বিজয়ী হও"
    তাহলে সেই লড়াইয়ের রাস্তা, লড়াইয়ের মাধ্যম তো আমাদেরই বেছে নিতে হবে।
    এটা ঠিক যে লকডাউন চলছে।এটা ঠিক যে মিছিল মিটিং ডেপুটেশনের সময় সুযোগ কোনটাই নেই।
    আবার এটাও বাস্তব যে, চোখের সামনে ওই ন দশজন পরিযায়ী শ্রমিককে ওইভাবে উড়িষ্যার বর্ডারের দিকে ঠেলে নিয়ে যাওয়া আটকাতে পারিনি আমি বা আমরা।ভীষণ ভীষণ অসহায় লাগছিল নিজেদের।
    প্রাথমিক ধাক্কাটা সামলে নিয়েই শুরু হল লড়াই।প্রথমেই কয়েকজন ঘনিষ্ঠ মানুষদের জানালাম পুরো ঘটনাটা। তাঁরা নিজেদের সমস্ত শক্তি দিয়ে বিভিন্নভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন।সবার সঙ্গে আলোচনা করে আমরা ঠিক করে ফেললাম ওই মানুষগুলোর কথা যেভাবেই হোক তুলতে হবে প্রশাসনের কানে।
    সেইমতোই শুরু হলো কাজ।
    লোকসভার বাঙালি বিরোধী দলনেতার আপ্ত সহায়ককে ঘটনাটা জানানো,বিভিন্ন ছোট বড় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের খবর দেওয়ার পাশাপাশি ঘটনাটার কথা পোস্ট করলাম ফেসবুকে।
    আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়া কে ব্যবহার করতে চাইলাম মাধ্যম হিসাবে।
    শয়ে শয়ে শেয়ার হয়েছে সেই পোস্ট।বন্ধুবৃত্তের বাইরে থাকা সম্পূর্ণ অচেনা মানুষজন রিঅ্যাক্ট করেছেন, কমেন্ট করেছেন এবং প্রচুর শেয়ার করে ছড়িয়ে দিয়েছেন মানুষের মধ্যে।

    এর মাঝেই পরদিন সকালে আরো প্রায় একশজন শ্রমিক এসে পৌঁছলেন গোপীবল্লভপুরের আমজুরির তেঁতুলবেড়িয়ার মাঠে।
    আমাদের ও জেদ বাড়লো।
    বিভিন্নভাবে উদ্যোগ নিয়ে সংবাদ মাধ্যম থেকে শুরু করে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর পর্যন্ত যোগাযোগ করা হল।
    না আমরা হাল ছাড়িনি।আমরা জানতাম আমাদের ক্ষমতা সীমিত।কিন্তু আমরা হারার আগে কিছুতেই লড়াইটা হারতে চাইনি।
    অবশেষে সন্ধে নামলো।
    তার কিছুক্ষণ আগেই গোপীবল্লভপুর ব্লক ওয়ানের সিভিক পুলিশ সুদীপ্ত বাবু অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে নিজে এসে জানিয়েছেন সেদিন সকালে এসে পৌঁছনো সমস্ত শ্রমিকদের ঘরে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য এসে পৌঁছে গেছে তিনটে বাস।
    জানালেন আগের রাতের ওই ন দশজন শ্রমিককে উড়িষ্যার বারিপদায় আশ্রয় এবং খাবারের বন্দ্যোবস্ত করা হয়েছে।তাঁদেরকেও যত দ্রুত সম্ভব ফিরিয়ে এনে বাড়ি পাঠানো হবে।
    ছবি দেখলাম শ্রমিকরা অপেক্ষা করছেন সুবর্ণরেখার তীরে ঘরে ফেরার বাস ধরার জন্য।বেলাশেষের রাঙা রোদে সুবর্ণরেখার জলের মতোই চিকচিক করে উঠলো চোখ।

    না।কারোকেই ধন্যবাদ জানাবো না।কারণ এই লড়াইয়ে আমরা সবাই সবার সহযোদ্ধা।আমরা প্রমান করলাম হাল না ছেড়ে সবাই মিলে একসঙ্গে লড়ে গেলে লড়াই জেতা যায়।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ১০ মে ২০২০ | ২৩৬৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ১২ মে ২০২০ ২২:২৭93239
  • বাহ বাহ বাহ।
    ভারী ভাল কিরেছেন। জেনেও ভাল লাগে।
  • d | 162.158.207.135 | ১২ মে ২০২০ ২৩:৩৮93247
  •  আমরাও গুরুতে এইসব কিরিবো। বাহ বাহ বাহ 

  • বিপ্লব রহমান | ১৪ মে ২০২০ ১১:২৯93303
  • "না আমরা হাল ছাড়িনি।আমরা জানতাম আমাদের ক্ষমতা সীমিত।কিন্তু আমরা হারার আগে কিছুতেই লড়াইটা হারতে চাইনি।"  

    সেল্যুট!  

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন